
গণতন্ত্র নিয়ে তামাশা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কখনো বরদাস্ত করবে না। আগামী নির্বাচনে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও বাংলার মানুষের ভাগ্য বদলের প্রতীক ও উন্নয়নের প্রতীক নৌকা মার্কার বিজয় যেন আমরা নিশ্চিত করতে পারি সেই লক্ষ্যে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অতীতের ন্যায় ২০২৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে স্মার্ট বাংলাদেশের ভিত্তি তৈরি করতে চাই।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের ‘বিশেষ কর্মী সভা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে নগরীর খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামের কর্মী সভায় এ সব কথা বলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান উপস্থিত হলেও তিনি ছিলেন দর্শক সারিতে। মঞ্চে অতিথির আসনে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও নারায়ণগঞ্জ ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা। কর্মী সভায় শুধু বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ওয়ালি আসিফ ইনান।
সভার আগে নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে এক প্রতিক্রিয়ায় দেশ রূপান্তরকে এমপি শামীম ওসমান বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা মঞ্চে নয়, দর্শক সারিতে থাকার ইচ্ছা পোষণ করেছি। আর দর্শক সারিতে থেকে দেখতে চাই, বর্তমান প্রজন্ম ছাত্রলীগ ও তরুণরা কীভাবে আগামীতে প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে যাবে। আমরা মূলত আজকে দর্শক।
কর্মী সভায় সাদ্দাম হোসেন বলেন, সংবাদ উপস্থাপন করা গণমাধ্যমে দায়িত্ব। এখন সম্পাদকীয় নীতিমালা রয়েছে। যদি তাদের নীতিমালা হয় চরিত্র নিয়ে লেখা, ছাত্রলীগের নেতিবাচক নিউজ উপস্থাপন করে মার্কেট ভ্যালু বাড়ানো। কিংবা রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি করা। কিংবা অন্য কারও প্রেসক্রিপশন বাস্তবায়ন করা। এটি কোন ভাবেই বাংলাদেশ ছাত্র সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ আমরা দেখি ছাত্রলীগ যদি ১০০টি ভালো কাজ করে একটি নিউজ হয় না, আর ছাত্রলীগ যদি একটি খারাপ কাজ করে তাহলে ১০০টি নিউজ হয়। এ ব্যাপারে আমরা গণমাধ্যমের সঠিক দায়িত্বশীল ভূমিকা দেখতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের লড়াই এখনো শেষ হয়নি। আমাদের অনেক লড়াই এখনো বাকি রয়েছে। এই লড়াইয়ের শেষ আমাদের দেখতে হবে। আমরা টানা তিনবার ক্ষমতায় আছি। এটি নিয়ে আত্মতৃপ্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যারা জাতির পিতার হত্যাকারী, যারা আমাদের নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে তারা এখনো রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় রয়েছে। অনেকেই গণতন্ত্রের বেশ ধরে রাজনীতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছে। এখন আমরা দেখতে পারছি, দুর্নীতিবাজদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। খুনি, কিলার ও দ-প্রাপ্ত আসামিদের রাজনীতির কথা বলে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আজকে আমরা ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে বলতে চাই, গণতন্ত্রের বেশ ধরে দুর্নীতিবাজদের পুনর্বাসনের রাজনীতিকে ছাত্রসমাজ কখনোই গ্রহণ করবে না কখনোই আপস করবে না। যাদের কাছে বাংলার মানুষের ভোটাধিকারের চেয়ে বাংলার মানুষের লাশ গুরুত্বপূর্ণ তাদের সঙ্গে ছাত্রসমাজ আপসে কখনোই করবে না।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের নেতৃত্বে আগামীতে বাংলাদেশকে পথ দেখাবে। এই নারায়ণগঞ্জ শেখ হাসিনার গণজোয়ারের রাজধানী থাকবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেন, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের জন্মস্থান। এ নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে জেলার ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা কাজ শুরু করবে। এই নারায়ণগঞ্জ থেকেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
প্রায় এক বছর পর পুলিশে সাড়ে ৫ হাজার কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আর এই সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রতারক চক্র। পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। কিছু ক্ষেত্রে নেওয়া হচ্ছে চেক ও খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর।
সম্প্রতি দুটি জেলা থেকে চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে খালি স্ট্যাম্প ও স্বাক্ষর করা চেকের কপি। নগদ টাকা উদ্ধারের ঘটনাও রয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রতারকরা ১৫-১৬ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দিচ্ছে চাকরিপ্রার্থীদের। এভাবে চক্রের সদস্যরা ১০-১২ জনের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিচ্ছেন। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রার্থী আগাম টাকা দিতে রাজি না হলে তাদের কাছ থেকে স্ট্যাম্প ও চেক নিয়ে রাখছেন।
এমন পরিস্থিতিতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রতারক ঠেকানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। কয়েক দিন আগে এ বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মাঠে নামানো হয়েছে আইজিপির বিশেষ মনিটরিং সেলের সদস্যদের। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের কোনো কর্মকর্তা বা সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
জানা গেছে, পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ তদবির-বাণিজ্য ঠেকাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয় পুলিশ সদর দপ্তর। পুলিশের সব কটি রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও পুলিশ সুপারদের কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন আইজিপি। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে একজন পুলিশ সুপার ও একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তদারক টিম গঠন করা হয়। নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিমগুলো দেশের ৬৪ জেলায় সফর করছে। আর্থিক লেনদেনে জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার করার নির্দেশনা দিয়ে সরকারি ফি ১০৩ টাকার বেশি কোনো প্রার্থীর কাছ থেকে না নিতে বলা হয়েছে।
পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে নানা অনিয়ম হয়ে থাকে প্রায়ই। ঘুষ লেনদেনই হয় বেশি। কনস্টেবল নিয়োগের অধিকর্তা হলেন জেলার পুলিশ সুপার। প্রায় প্রতিটি জেলায় রাজনৈতিক নেতাকর্মী, মন্ত্রী-এমপিসহ আমলাদেরও তদবির থাকে। তা ছাড়া এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ পুলিশ সদস্যও নিয়োগে তদবির করেন। এই সবকিছুর নেপথ্যেই থাকে আর্থিক লেনদেন। অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করতেই পুলিশ সদর দপ্তর কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেও দেওয়া হয় বেশ কিছু নির্দেশনা। দালাল ও অসাধু চক্রের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার না হতে চাকরিপ্রত্যাশীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে সচেতনতামূলক সংবাদ। কনস্টেবল নিয়োগ কার্যক্রম শুরুর আগেই আইজিপি সব রেঞ্জের ডিআইজি ও পুলিশ সুপারদের পুলিশ সদর দপ্তরে ডেকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নিয়োগ-প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কঠোর নির্দেশনা দেন।
নজরদারিতে দায়িত্ব পালন করে পুলিশ ইন্টারনাল ওভারসাইট, রেঞ্জ ডিআইজির নজরদারি কমিটি, পুলিশ সদর দপ্তরের একজন পুলিশ সুপার (এসপি) ও একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সমন্বয়ে গঠিত ৬৪টি বিশেষ টিম।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মো. মনজুর রহমান বলেন, ‘সারা দেশের ৬৪ জেলায় প্রথম ধাপে সাড়ে ৫ হাজার পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিছু জেলায় আবেদন জমা পড়ছে। আর এই সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রতারক চক্র। তাদের বিষয়ে কাজ করছে গোয়েন্দারা। ইতিমধ্যে দুটি জেলায় কয়েকজন প্রতারক ধরা পড়েছে।’ তিনি বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে পুলিশে চাকরি হয় না। যোগ্যতার নিরিখেই যোগ্য প্রার্থীরা চাকরি পাবেন। এ বিষয়ে আইজিপি জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন।’
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০১৮ সালে ১০ হাজার পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে নিয়োগে রাজনীতিবিদরা কোটার জন্য পুলিশ সুপারদের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। বিষয়টি গোপন প্রতিবেদনের মাধ্যমে সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছালে সেই নিয়োগ-প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়। চলতি বছরের শুরুতে সারা দেশে সাড়ে ৫ হাজার কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে কোন জেলায় কতজন নিয়োগ পাবেন এবং আবেদেন প্রক্রিয়া বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রকাশ করা হয়। কোনো কোনো জেলায় প্রার্থীর সংখ্যা ১০ হাজারও ছাড়িয়েছে। ধাপে ধাপে সব জেলায় নিয়োগ শেষ করা হবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রতারক চক্রের সদস্যরা খুব চতুর। তারা ১০-১২ জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে রাখে। এর মধ্যে যদি কেউ যোগ্যতার ভিত্তিতে টিকে যান তাহলে তাকে বলা হয়, ‘অমুক স্যারের মাধ্যমে তোমার চাকরিটা হয়েছে। এখন বাকি টাকা পরিশোধ করো, না হলে বাদ পড়ে যাবা।’ তখন না বুঝেই অনেকে টাকা দিয়ে দেন। বিষয়টা অনেকটা ঝড়ে বক পড়ার মতো অবস্থা। তিনি বলেন, এ ধরনের একাধিক চক্র বিভিন্ন সময় সক্রিয় থাকে। তাদের তালিকাও রয়েছে। তাদের ওপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তালিকায় রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক ও পুলিশের আত্মীয় পরিচয়দানকারী লোকজনও রয়েছেন।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, প্রতারণার জন্য ইতিমধ্যে চাঁদপুর জেলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার সময় একজনকে ধরা হয়েছে। সে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেনের কথা আমাদের কাছে স্বীকার করেছে।
মাদারীপুর পুলিশ সুপার মাসুদ আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ১১ ফেব্রুয়ারি মাদারীপুর পুলিশ লাইনস মাঠে রিক্রুট কনস্টেবল নিয়োগের মাঠপর্যায়ে শারীরিক মাপ ও কাগজপত্র বাছাই পরীক্ষা হয়। এ সময় তারা জানতে পারেন প্রতারক চক্রের সদস্যরা মাদারীপুর পোস্ট অফিসের সামনে টাকা লেনদেন করছে। চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে সাকিব আকন নামে এক চাকরিপ্রত্যাশীর পরিবারের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা নিচ্ছে তারা। বিষয়টি জানান পর তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলার ব্রাহ্মন্দী গ্রামের ইউনুস আলী বেপারি ও হোগলপাতিয়া গ্রামের রিপন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। প্রাথমিকভাবে তারা অবৈধ টাকার বিনিময়ে চাকরির প্রলোভন দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। এর আগেও তারা বিভিন্ন জায়গায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে অবৈধ লেনদেন করেছে বলেও জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এবার মাদারীপুর জেলায় ৪৫ জন কনস্টেবল নিয়োগ দেওয়া হবে। এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছিল। তারই ফলে প্রতারকদের আটক করতে সক্ষম হয়েছেন।
জানা গেছে, মাদারীপুরের ঘটনার পর ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী জেলায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। তারা হলেন রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার দাশপুকুর মহল্লার মারুফ শাহরিয়ার, বরিশাল সদরের মঙ্গলহাটা এলাকার শাহাদত হোসেন ও গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চাতৈনভিটি গ্রামের আব্দুল আজিজ। তাদের কাছ থেকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে নেওয়া ৩২টি স্বাক্ষর করা ফাঁকা চেকবই, প্রায় ৫৬ লাখ টাকার অঙ্ক বসানো স্বাক্ষর করা ১০টি চেক, ৫০টি স্বাক্ষর করা ফাঁকা নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, তিনটি স্মার্ট মোবাইল ফোন এবং একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে রাজশাহীর পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, সারা দেশে এখন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে প্রতারক চক্রটি প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল। বিষয়টি জানতে পেরে এদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা এখনো চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে কোনো টাকা নেয়নি। কিন্তু ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্প নিয়েছে স্বাক্ষর করিয়ে। এই ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্প দিয়ে জিম্মি করে পরে টাকা আদায় ছিল তাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, রাজশাহীতে কনস্টেবল পদে আবেদন পড়েছিল ১৮ হাজার। এর মধ্যে শারীরিক পরীক্ষার জন্য ডাক পড়েছিল সাড়ে ৩ হাজার জনের। সাতটি পর্বে শারীরিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে তাদের। এতে উত্তীর্ণরা ১৫ ফেব্রুয়ারি লিখিত পরীক্ষা দিয়েছে। এরপর মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। এত সব পরীক্ষার পর যোগ্য প্রার্থীদেরই চাকরি দেওয়া হবে। কোনো তদবির কাজে আসবে না।
তিনি বলেন, ডিবি পুলিশ প্রথমে মারুফ শাহরিয়ারকে আটক করে। তার মেস থেকে দুটি চেক, ৫৩টি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও একটি স্মার্টফোন জব্দ করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের আরেক সদস্য শাহাদত হোসেনকে আটক করা হয়। তার ভাড়া বাসা থেকে ২০টি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, ২০টি চেক ও একটি স্মার্টফোন জব্দ করা হয়। পরে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বাড়ি থেকে চক্রের আরেক সদস্য আজিজকে আটক করা হয়। তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ২৭টি নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, ২০টি চেক, একটি মোবাইল ফোন।
র্যাংগস গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবদুর রউফ চৌধুরী (৮৬) গতকাল শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গুলশানের নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি ১ ছেলে ও ২ মেয়ে রেখে গেছেন। গতকাল শনিবার বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে তার জানাজা হয়। সেখানে রাজনীতিবিদ, শিল্পপতিসহ সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা অংশ নেন। জানাজা শেষে তার মরদেহ নেওয়া হয় বিক্রমপুরের পৈতৃক বাড়িতে। সেখানে বাদ এশা পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। তারা ছেলে রোমো রউফ চৌধুরী বর্তমানে ব্যাংক এশিয়ার চেয়ারম্যান। এ ছাড়া দুই মেয়ে হলেন রোমানা রউফ চৌধুরী ও সোহানা রউফ চৌধুরী।
এদিকে রউফ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী খাঁন মুকুলসহ বিভিন্ন শিল্প গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা। এ ছাড়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমে শোকবাণী পাঠিয়েছেন।
রউফ চৌধুরী ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের মূল কোম্পানি মিডিয়া ওয়ার্ল্ড লিমিটেডেরও একজন পরিচালক ছিলেন। ‘সকালের খবর’ নামে একটি বাংলা দৈনিক বের করেছিলেন। তিনি ব্যাংক এশিয়ার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক চেয়ারম্যান। তার হাত ধরে দেশে গড়ে উঠেছে ৫০টির মতো প্রতিষ্ঠান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্নাতক করেছেন। অটোমোবাইল, টেলিকম, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং পেট্রোলিয়ামসহ বিভিন্ন শিল্পে বিস্তৃত অভিজ্ঞতা ছিল তার। বাংলাদেশে তিনি দুটি আমেরিকান ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির রেসিডেন্ট ম্যানেজার ছিলেন। যমুনা অয়েল কোম্পানির সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন রউফ চৌধুরী। এর মাধ্যমে দেশে পেট্রোলিয়াম পণ্যের বাজার উন্নয়নে দীর্ঘ ১৫ বছর অবদান রাখার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
এ ছাড়া, ৩৫ কোম্পানির সমন্বয়ে গঠিত র্যাংগস এবং সি রিসোর্সেস গ্রুপ- কোম্পানি দুটি তার গতিশীল নেতৃত্বেই গড়ে উঠেছে। তার নেতৃত্বে অল্প সময়ের মধ্যেই কোম্পানি দুটি বিরাট সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়।
রউফ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘তার জীবন, আদর্শ এবং কর্ম আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। আমি রউফ চৌধুরীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। আল্লাহপাক তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসিব করুন। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি মরহুমের পরিবার যেন এই অপূরণীয় ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারে।’
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বাজারে মাইকিং করে দোকানে ঢুকে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস সরকারকে (৫৩) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দেশীগ্রাম ইউনিয়নের ভোগলমান চারমাথা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আবদুল কুদ্দুস দেশীগ্রাম ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান। এ ছাড়া তিনি দেশীগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। সর্বশেষ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন।
হামলাকারীরা পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির সদস্য ছিল বলে জানিয়েছেন নিহতের ছেলে মো. রুহুল আমীন বলেন।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে দিকে ২০-২৫ জন নিজেদের পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টির সদস্য দাবি করে ভোগলমান চারমাথা বাজারে ঢোকে। তারা হ্যান্ডমাইক দিয়ে বাজারের সব লোকজনকে বাজার ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পুরো এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর ছেলের কীটনাশকের দোকানে বসে থাকা আব্দুল কুদ্দুস সরকারকে কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েক রাউন্ড গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা এলাকা ত্যাগ করে। খবর পেয়ে তাড়াশ থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। এ ঘটনার পর পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে দেশীগ্রাম ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসাক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আব্দুল কুদ্দুস বাজারে ছেলের কীটনাশকের দোকানে বসে ছিলেন। এ সময় দুর্বৃত্তরা হঠাৎ হামলা চালিয়ে তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।’
তাড়াশ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, আব্দুল কুদ্দুসের বুকে গুলি করা হয়।
উল্লাপাড়া-তাড়াশ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অমৃত সূত্রধর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘খবর পেয়ে তাড়াশ থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তবে হামলাকারীরা সর্বহারা পার্টির সদস্য ছিল কিনা সে বিষয়ে পুলিশ কিছুই বলেনি।
জামালপুর সদর উপজেলার বটতলা উচ্চবিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শহীদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ বানিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান করেছে বিদ্যালয় কর্র্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার জামালপুর-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেনসহ অতিথিদের সবাই জুতা পায়ে ওই মঞ্চে ওঠেন। ভাষার মাসে এমন ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেকেই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিদ্যালয়ের মাঠে শহীদ মিনারের বেদিতে মঞ্চ বানানো হয়। আর মূল শহীদ মিনার কাপড় দিয়ে পেছনে ঢেকে রাখা হয়। অতিথিদের সামনে দেওয়া হয় বিশাল টেবিল এবং বসার জন্য চেয়ার। পাশেই বক্তব্য দেওয়ার জন্য ছিল মাইকের স্ট্যান্ড। বেলা ১টার দিকে প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনসহ সব অতিথি একে একে জুতা পায়ে মঞ্চে উঠে চেয়ারে বসেন। বেদিতে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যান্য লোকজনকেও জুতা পায়ে দেখা যায়। অনুষ্ঠানটি সাড়ে ৩টার দিকে শেষ হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক ও বটতলা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল আলম।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আব্দুল জলিল, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এ কে আজাদ বাদল ও সদস্য মো. আবুল খায়ের খোকা মাস্টার, বাঁশচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল আলীম, সহসভাপতি মো. মাহামুদুল হাসান বাচ্চু, মো. শাহজাহান আলী, মো. সরোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো.আব্দুল লতিফ প্রমুখ।
শহীদ মিনারে এভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় ক্ষুব্ধ অনেকেই। এ প্রসঙ্গে জামালপুরের ভাষা ও মুক্তিসংগ্রাম গবেষণা কেন্দ্রের সদস্য জাহাঙ্গীর সেলিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়া অন্য কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। জুতা নিয়ে শহীদ মিনারে পদচারণ করা ভাষাশহীদদের প্রতি অবমাননা এবং আইন অমান্য করা। যারা এ ধরনের আচরণ করবে, তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া উচিত।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক ও বটতলা উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. শফিকুল আলম বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। স্কুল কর্র্তৃপক্ষ সেখানে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আর সবাই তো সেখানে জুতা পায়ে দিয়ে উঠেছে, তাই আমিও উঠেছি।’
বটতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা বলেন, ‘প্রতি বছরই সেখানে অনুষ্ঠান করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় সেখানে করা হয়েছে। প্রধান অতিথিরাই যদি ওঠে, তাহলে আর কী।’
এদিকে সংসদ সদস্য মো. মোজাফফর হোসেনের দাবি, অনুষ্ঠানের মঞ্চ যে শহীদ মিনার, সেটা বুঝতে পারেননি। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সেটা যে শহীদ মিনার, আমি বুঝতেই পারিনি। আমি ভেবেছি সেটা একটি ভাঙা মঞ্চ। কেউ যদি আমাকে বলত, সেটা শহীদ মিনার, তাহলে আমি জুতা নিয়ে উঠতাম না। প্রয়োজনে আমি সেখান থেকে নেমে যেতাম।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা ক্ষমতায় আছি। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আমাদের এখানে একটি দল আছে যারা আন্দোলনের কথা বলে আতঙ্ক ছড়ায়। তারা আন্দোলনের নামে আগুনসন্ত্রাস করে, ভাঙচুর চালায়। মানুষকে পুড়িয়ে মারে, পেট্রল বোমা দিয়ে মেরে ফেলতে চায়। এ কারণে আমরা জনগণের পাহারাদার।
গতকাল শনিবার দুপুরে গাজীপুরের কালীগঞ্জে স্থানীয় উলুখোলা এলাকার একটি রিসোর্টে অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সভায় যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেখানে অভিনয়শিল্পী সংঘের অভিনেতাদের ইক্যুইটি দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশগ্রহণ করেছেন নাটক ও চলচ্চিত্রের পাঁচ শতাধিক অভিনয়শিল্পী।
গতকাল দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এসময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে সম্মাননা স্মারক ও ক্রেস্ট তুলে দেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। পরে কনভেনশন হলে প্রয়াত শিল্পীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সংস্কৃতি কোনো নিয়ন্ত্রণের বিষয় নয়। সেই সংস্কৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে অভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকার এই আইনটি বাতিল করেছে।
বাংলাদেশের নাটকের প্রশংসা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, পশ্চিমবঙ্গের নাটক থেকে গুণে মানে সংলাপে অভিনয়ে আমাদের নাটক অনেক সমৃদ্ধ। আমাদের শিল্পীরা অনেক বেশি ভালো অভিনয় করেন।
এসময় অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবিব নাসিমের সভাপতিত্বে ও অভিনয়শিল্পী রওনক হাসানের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন অভিনেতা আমিরুল হক চৌধুরী, সহিদুল ইসলাম সাচ্চু, ডলি জহুর, দিলারা জাহান, মামুনুর রশীদ, তারিক রহমান খান প্রমুখ।
শিল্পীরা তাদের বক্তব্য বলেন, আমাদের দেশে শিল্পীদের জন্য অ্যাক্টরস স্কুল নেই, এটি খুবই প্রয়োজন। আজকাল অপসংস্কৃতি ইউটিউবে অবাধে চলছে। এই অপসংস্কৃতি দূর করতে হবে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ না করলে আমাদের রুচির দুর্ভিক্ষ ক্রমান্বয়ে বাড়তেই থাকবে।
দিনব্যাপী ওই অনুষ্ঠান অভিনয়শিল্পীদের উপস্থিতিতে মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। ছোটপর্দার প্রায় সব অভিনেতা উপস্থিত হয়েছেন। কেউ ছবি তুলেছেন, স্মৃতিচারণ করেছেন। পরিবারের ছোট সদস্যদের নিয়ে আয়োজন করেছেন চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।
পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলে নয়, এশিয়া কাপ হবে একটি দেশে। আর সেটা শ্রীলংকা। পাকিস্তান তাতে অংশ না নিতে চাইলে তাদেরকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ।
ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দা টেলিগ্রাফ।
বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ যিনি এসিসিরও প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছেন, শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ খেলতে রাজি আছে ভারতসহ চার পূর্ণ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এসিসির নির্বাহী সভায় আলোচনা করা হবে। পাকিস্তান রাজি না হলে ৫ দল নিয়েই হবে এশিয়া কাপ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ অন্য কোনো দেশে আয়োজনে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজমা শেঠির দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন জয় শাহ। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে ভারতেই খেলতে হবে, না হলে না খেলবে। এ বার্তা পিসিবি এবং আইসিসির দুই কর্মকর্তা যারা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করেন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
রিয়াল মাদ্রিদের সংগে ১৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলছেন। ৪০ কোটি ইউরো চুক্তিতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আলো ইত্তিহাদে যোগ দিচ্ছেন।
ক'দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল করিম বেনজেমাকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন -এমন কথাও চাউর হয় স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু সব কিছুতে জল ঢাললেন ব্যালন ডি অর জয়ী। স্পেনের গণমাধ্যম মার্কার দেয়া মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড নিতে গিয়ে বললেন, 'আমি যখন রিয়ালেই আছি তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনো বলবো। ইন্টারনেটে যা প্রচার হচ্ছে তা ঠিক না। আমি এখানে ভালো আছি। শনিবার রিয়ালের ম্যাচ আছে, সব ফোকাস আমার সেই ম্যাচকে নিয়ে।'
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাকে রিয়ালে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেনজেমা বলেন, '২১ বছরের আমি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। এই ক্লাবে খেলার মতো আর কিছু হয় না, সান্তিয়াগো বার্নাবু দারুন এক জায়গা।'
রিয়ালের সংগে চুক্তির মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেনজেমার।
ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলছেন, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন হামলা করে। ওই সময় গুলি ও ককটেলে অন্তত পাঁচজন আহত হন।
তবে বিদ্রোহী প্রার্থীর অভিযোগ, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা মিছিল নিয়ে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে অন্তত ১৫ নেতাকর্মীকে আহত করেছে।
সংঘর্ষের পর ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিক্ষুব্ধরা। পরে রাত সাড়ে ১০টায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আগামী ১২ জুন তারাকান্দা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুল হক, বিদ্রোহী প্রার্থী এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক নুরুজ্জামান সরকার, জাতীয় পার্টির এম এ মাসুদ তালুকদার, ইসলামী আন্দোলনের রফিকুল ইসলাম মণ্ডল।
বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে তারাকান্দা উপজেলা সদর বাজারে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুজ্জামানের প্রধান নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা অবস্থান করছিল। রাত ৮টার দিকে তারাকান্দা উত্তর বাজার থেকে উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিদ্রোহী প্রার্থীর কার্যালয়ের কাছে যেতেই ককটেল ও গুলির শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা।
স্থানীরা জানান, এ সময় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। তাৎক্ষণিক ভাবে আহতদের কারো নাম সংগ্রহ করা যায়নি।
এদিকে ঘটনার পরপর ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কের তারাকান্দার মধুপুর বাজার এলাকায় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে নিয়ে বিক্ষোভ করেন বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুজ্জামানের সর্মথকরা। সড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন আটকা পড়ে। পরে পুলিশ রাত সাড়ে ১০টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
নুরুজ্জামান সরকার বলেন, আমার নেতাকর্মীরা নির্বাচনী কার্যালয়ে অবস্থান করার সময় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে একটি মিছিল বের হয়। সেই মিছিল থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ককটেল, দেশীয় অস্ত্র ও নাইট শুটারগান দিয়ে আমাকে মারার জন্য হামলা করে। অন্তত ১৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলুল হক দাবি করেন, তারাকান্দা উত্তর বাজার থেকে নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করলে সেই মিছিলে অতর্কিতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ও গুলিবর্ষণ করে হামলা করে বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন। এ সময় তার অন্তত পাঁচ নেতাকর্মী আহত হন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, তারাকান্দা থেকে গুলিবিদ্ধসহ আটজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তারাকান্দা থানার ওসি মো. আবুল খায়ের বলেন, সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছে এমন তথ্য আছে আমাদের কাছে। ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে সত্য কিন্তু গুলির বিষয়টি যাচাই করতে হবে। ঘটনার পর সড়ক অবরোধ করলে পরিস্থিতি শান্ত করে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। ঘটনাস্থলসহ আশপাশ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
পলিথিন বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, বিভিন্ন ধরনের পলিথিনজাত মিনিপ্যাকের উৎপাদন, ব্যবহার ও এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সবগুলোই সমস্যা। পলিথিন উৎপাদন ও এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে বাতাসে যেমন কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়, অন্যদিকে এর ব্যবহার প্রাণিকুল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত। প্লাস্টিকের কণা এখন মানুষের রক্তে, মায়ের দুধে, সামুদ্রিক মাছে। শুধু ব্যবহার সম্পর্কিত সমস্যা না, পলিথিনের মাধ্যমে সৃষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও বেশি সমস্যাসংকুল। কারণ এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, কৃষির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে, শহরের নর্দমা বন্ধ করে দিচ্ছে তা আবার রোগ-ব্যাধি ছড়াচ্ছে, জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে এবং সবশেষে শহরকে বসবাসের অনুপযোগী করে দিচ্ছে।
এতসব সত্ত্বেও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ না করা বা বন্ধ করতে না পারার সংকট কোথায় সেটা বুঝতে আমাদের সমস্যা হয়। পলিথিন বন্ধে আইন আছে, নানা ধরনের প্যাকেজিংয়ে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাও অনেক দিন হলো। অন্যদিকে বেশ কিছুদিন ধরে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু তা সহসাই হচ্ছে না। ‘সোনালি ব্যাগ’ নিয়ে অনেক ঢাকঢোল পেটানো হয়েছে কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেই সোনালি স্বপ্ন কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে আসছে এতদিনে।
পলিথিনের ব্যবহার শহরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি যার অনেকটাই অভ্যাসগত কারণে। শহরের মানুষের পলিথিনের ওপর অভ্যস্ততা যেমন বেশি, তেমনি তারা ভুক্তভোগীও বেশি। রাস্তাঘাট, ড্রেন নোংরা হয়ে তো থাকেই, বাড়তি পাওনা দুর্গন্ধ, তৈরি হয় জলজট ও ডেঙ্গুর মতো রোগবালাই। বাসাবাড়িতে পলিথিনের ব্যবহার তো আছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য, বেকারিজাত পণ্যের পলিথিনের ব্যবহার ও পলিথিনের মোড়ক যত্রতত্র নিক্ষেপই এই অবস্থার জন্য দায়ী। শুধু ঢাকা নয় অন্যান্য ছোট-বড় সব শহরে প্রায় একই অবস্থা। আর এগুলোই হচ্ছে পলিথিন নির্ভর অর্থনীতির অনুষঙ্গ কিন্তু এর অনর্থনীতি হচ্ছে পলিথিনের কারণে পরিবেশদূষণ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি। সাধারণভাবে পলিথিন ব্যবহারের ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণ করা হয় না। তবে দূষণের মাত্রা এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে তাতে পলিথিনের অর্থনীতির থেকে এর ক্ষয়ক্ষতির অর্থনীতি যে অনেক বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আসছে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম অনুঘটক হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। অর্থমন্ত্রী তার এবারের বাজেট (২০২৩-২৪) বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন উভয় ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ এর উল্লেখ করেছেন কিন্তু পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে দৃশ্যমান কোনো রূপকল্প এবারের বাজেটে উল্লেখ করতে সমর্থ হননি। এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে শামিল হই সকলে’। গত বছরের এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘একটাই পৃথিবী’। পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহার আমাদের এই একমাত্র পৃথিবীকে দূষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে আইন হয়েছে ২০০২-এ এবং আজ ২০২৩ সাল, এই দীর্ঘ ২১ বছরেও এই আইনের বাস্তবায়ন করা যায়নি। যদিও এবারের বাজেট বক্তৃতায় প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার এর মূল্য সংযোজন কর বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাস্টিক সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। ধরেই নেওয়া যায় শুল্ক বৃদ্ধির এই হার কোনোভাবে পলিথিন নিরুৎসাহিত করার জায়গা থেকে না বরঞ্চ কিছুটা বাড়তি কর আদায়ের চিন্তা থেকে।
পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি সস্তা পলিথিনের ব্যবহার টেকসই ভোগের ধারণার জন্যও কোনোভাবে সহায়ক না। বরঞ্চ এটা এমন এক ধরনের মনস্তত্ত্ব তৈরি করে যা শুধু পরিবেশকেই ধ্বংস করে। যদিও বিশ্বব্যাপী টেকসই ভোগের ধারণার ওপর ভিত্তি করে এখন ‘সার্কুলার অর্থনীতির’ ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সার্কুলার অর্থনীতি শুধু অপচয় কমায় না, প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, দূষণরোধ, বর্জ্য থেকে তৈরি পরিবেশদূষণ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। তাই পরিবেশগত ঝুঁকি, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনীতিকে সার্কুলার অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলা এবং এ সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট ২০৩০ সমূহ অর্জনে সার্কুলার অর্থনীতি অন্যতম হাতিয়ার।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা শহরে রাস্তায় কোনো পেট বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায় না। এর কারণ হচ্ছে এখন পেট বোতলের প্রায় শতভাগ রিসাইকেল করা হয় এবং পেট বোতল সংগ্রহের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে হলেও একটি সংগ্রহ-লাইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু পলিথিনের ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায় না। তবে পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার সার্কুলার ইকোনমির ধারণার সঙ্গেও একেবারে মানানসই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রযুক্তিগতভাবে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন রিসাইকেল করা অসম্ভব না হলেও এটি একটি জটিল এবং অর্থনৈতিকভাবে ব্যয়বহুল যে কারণে পেট বোতলের মতো রাস্তা থেকে পলিথিন সংগ্রহ করতে কাউকে দেখা যায় না উলটো রাস্তাঘাটে এখানে সেখানে পলিথিন পড়ে থাকে।
পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের অনর্থনীতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখন প্রথম দরকার এর ব্যবহার বন্ধ করা, এর ব্যবহারকে অনেক বেশি দামি করে ফেলতে হবে আর এর প্রতিফলন থাকতে হবে বাজেটে। দ্বিতীয়ত, সার্কুলার অর্থনৈতিক চর্চার উৎসাহিত করার জন্য পরিকল্পনা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি, পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগের মতো উদ্যোগগুলোকে সরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ ও বেসরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। সরকার প্রতি বছর বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবেশ দিবস পালন করে কিন্তু দিবস পালন শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই হবে না এর উদ্যোগ কতটুকু বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে তার ওপরও নজর দিতে হবে। তা নাহলে পলিথিনের অর্থনীতির নামে শুধু অনর্থনীতিকে বাড়িয়ে তোলা হবে, আর সেটা হবে টেকসই অর্থনীতি তৈরির সম্ভাবনার অপমৃত্যু।
লেখক : উন্নয়নকর্মী ও কলামিস্ট
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা খাতে ১১ শতাংশ বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ খাতে মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ১২ হাজার ৬৯৬ হাজার কোটি টাকা বেশি।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ প্রস্তাব করেন। সামাজিক সুরক্ষা খাতে প্রস্তাবিত এ বরাদ্দ মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ দশমিক ৫২ শতাংশ।
এ খাতে বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ১ লাখ এবং মাসিক ভাতার হার ১০০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের হিসাবে এ ভাতাভোগীর সংখ্যা ৫৭ লাখ ১ হাজার। আর মাসিক ভাতা ৫০০ টাকা।
বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারী ভাতাভোগীর সংখ্যাও ১ লাখ বাড়িয়ে ২৫ লাখ ৭৫ হাজার এবং মাসিক ভাতা ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৫৫০ টাকা করা হচ্ছে। প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ৫ লাখ ৩৫ হাজার বাড়িয়ে ২৯ লাখ প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর মাসিক শিক্ষা উপবৃত্তি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ১৫০ টাকা বাড়িয়ে যথাক্রমে ৯০০ ও ৯৫০ টাকা এবং উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৯৫০ টাকা করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
প্রস্তাবিত বাজেটে হিজড়া জনগোষ্ঠীর ভাতাভোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৬৫ বাড়িয়ে ৬ হাজার ৮৮০ করা হচ্ছে। এ জনগোষ্ঠীর বিশেষ ভাতাভোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ২০ বাড়িয়ে ৫ হাজার ৬২০ করা হচ্ছে।
অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রমে উপকারভোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ৯৩০ বাড়ানো হয়েছে এবং বিশেষ ভাতাভোগীর সংখ্যা ৯ হাজার ৫০ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ৪ হাজার ৩৮০ জন বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
সামাজিক সুরক্ষা আরও রয়েছে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি। এতে উপকারভোগীর সংখ্যা ৫০ হাজার বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়াও অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কার্যক্রমে উপকারভোগীর ভাতার হার দৈনিক ২০০ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
আগামী অর্থবছর থেকে সর্বজনীন পেনশন চালুর কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন পাস হয়েছে। আশা করছি, ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকেই বাংলাদেশে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করা সম্ভব হবে। শিগগির একটি পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে এবং জনবল নিয়োগের মাধ্যমে এ কর্তৃপক্ষকে কার্যকর করা হবে।’
অর্থমন্ত্রী জানান, প্রস্তাবিত স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হলে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সুবিধাভোগী ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং ৫০ বছরের অধিক বয়স্ক সুবিধাভোগী ন্যূনতম ১০ বছর পর্যন্ত চাঁদা দেওয়ার মাধ্যমে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।