
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সোহরাওয়ার্দী ও আলাওল হল থেকে ধারালো অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা বা কোনো সমঝোতা হয়নি। ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাতে হল দুটিতে এক ঘণ্টা অভিযানে ৬টি রামদা, রড ও লাঠিসোঁটা উদ্ধার করে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি।
জানতে চাইলে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পরিত্যক্ত অবস্থায় হল থেকে ধারালো অস্ত্র, রড ও লাঠিসোঁটা উদ্ধার হয়েছে। কেউ আটক হয়নি। তাই মামলা হয়নি।’ একই বিষয়ে বক্তব্য জানতে চবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর রবিউল হোসেন ভূঁইয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে হলের কক্ষ দখল নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের পর গতকালও ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি দেখা গেছে।
গতকাল বিকেলে ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা গেছে, সোহরাওয়ার্দী, আলাওল ও এফ রহমান হলের সামনে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে দুই প্লাটুন পুলিশ। এ সময় চবি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে হল দুটির সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
তবে হাটহাজারী থানার দায়িত্বশীল এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, হলের কক্ষ দখল নিয়ে তিন দিনের ব্যবধানে দুই দফা সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে গতকাল বিকেল পর্যন্ত কোনো সমঝোতা হয়নি। চবি প্রশাসনও থানায় কোনো অভিযোগ দেয়নি।
এদিকে সংঘর্ষের জন্য এক পক্ষ আরেক পক্ষকে দায়ী করছে। চবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ তার প্রতিপক্ষের ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, আলাওল ও এ এফ রহমান হলে থাকা তার কর্মীদের ডেকে সোহরাওয়ার্দী হলের ছাত্ররা একাধিকবার হুমকি দিয়েছেন। জুনিয়র ছাত্রদের আটকে রেখে র্যাগ দিয়েছেন, সেøজিং করছেন। তাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। ইলিয়াছের অভিযোগ ভিত্তিহীন, বানোয়াট বলে মন্তব্য করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হলের কক্ষ দখল নিয়ে সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে সংঘর্ষে জড়ান শাখা ছাত্রলীগের ‘বিজয়’ গ্রুপের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের উপ আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক নয়ন মোদক আহত হন। জানা গেছে, গত বছরের ৩১ জুলাই কমিটিতে পদ পাওয়া নিয়ে বিজয় গ্রুপ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর ৩০৯ প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ৪১ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি চিহ্নিত করেছে। বড়মাপের এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগেরই ভ্যাট রিটার্নে দেওয়া তথ্যের সঙ্গে ব্যাংকিং লেনদেন ও প্রকৃত অডিটের তথ্যের মিল পাওয়া যায়নি। পণ্য বেচাকেনা, উৎপাদন, লাভ-লোকসানসহ আয়-ব্যয়ের সব হিসাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে।
এসব প্রতিষ্ঠান একাধিক অডিট রিপোর্ট তৈরি করেছে। প্রকৃত অডিট রিপোর্ট গোপন রেখে মিথ্যা হিসাব দিয়ে তৈরি অডিট রিপোর্টের সঙ্গে মিলিয়ে ভ্যাট রিটার্ন দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যাংকিং লেনদেনে রয়েছে প্রকৃত হিসাব।
সম্প্রতি ভ্যাট গোয়েন্দাদের তদন্ত প্রতিবেদন থেকে ফাঁকির এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গত অর্থবছরের (২০২১-২২) ভ্যাট পরিশোধের তথ্য খতিয়ে দেখে গোয়েন্দারা ভ্যাট ফাঁকির বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। এজন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভ্যাট ফাঁকির অর্থ জরিমানাসহ পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাওনা পরিশোধ না করলে প্রচলিত রাজস্ব আইনে মামলা করা হবে। প্রয়োজনে হিসাব জব্দ করা হবে। রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ের লাইসেন্স স্থগিত করা হবে।
এ ছাড়া এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা শাখা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের গত পাঁচ করবর্ষের আয়কর নথি তলব করবে। আয়কর নথি থেকে আয়-ব্যয় ও সম্পদের হিসাব খতিয়ে দেখে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামঞ্জস্য আছে কিনা এবং আয় ও সম্পদ বৃদ্ধির পরিমাণ যাচাই করা হবে। আয়কর ফাঁকি ধরা পড়লে জরিমানাসহ পরিশোধ করতে বলা হবে। এক্ষেত্রেও সময়মতো রাজস্ব পরিশোধ না করলে প্রচলিত রাজস্ব আইনে মামলা করা হবে এবং হিসাব জব্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুর রউফ দেশ রূপান্তরকে বলেন, অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংকে কোটি কোটি টাকার লেনদেন আছে। তারা ভালো মুনাফা করেছে। অথচ বেচাকেনাসহ ভ্যাটসংক্রান্ত হিসাবে লোকসানের কথা বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে থাকে। ভ্যাট রিটার্নের সঙ্গে মিলিয়ে মিথ্যা অডিট রিপোর্ট তৈরি করে। আবার প্রকৃত হিসাব দিয়েও আলাদা অডিট রিপোর্ট তৈরি করে। এভাবে রাজস্ব ফাঁকিবাজ প্রতিষ্ঠানের একাধিক অডিট রিপোর্ট থাকে। তদন্ত করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে। ভ্যাট রিটার্নের সঙ্গে ব্যাংক লেনদেন এবং প্রকৃত অডিট রিপোর্ট মেলে না।
ভ্যাট গোয়েন্দাদের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে জানা যায়, কোটি টাকা বা তার বেশি ব্যাংকিং লেনদেন হয় এমন প্রতিষ্ঠানের গত এক অর্থবছরের ভ্যাট পরিশোধের তথ্য খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গোয়েন্দারা। প্রথম ধাপে এক হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব প্রতিষ্ঠানের অডিট ও ব্যাংকিং লেনদেনের সঙ্গে ভ্যাট রিটার্নের তথ্য মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য মিলিয়ে দেখা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০৯ প্রতিষ্ঠানের হিসাবেই গরমিল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বেশিরভাগের ভ্যাট রিটার্নের তথ্যের সঙ্গে ব্যাংক লেনদেন ও প্রকৃত অডিটের তথ্যের মিল পাওয়া যায়নি। কিছু প্রতিষ্ঠান উৎসে ভ্যাটের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাবে মিথ্যা তথ্য দিয়েও ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান কড়ায় গন্ডায় ক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করেও সরকারি কোষাগারে একটি অর্থও জমা দেয়নি। সব মিলিয়ে রাজস্ব ফাঁকির পরিমাণ ১ হাজার ৪১ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরেও (২০২০-২০২১) একইভাবে ২৩৩টি প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করা হয়েছে।
তদন্তে মেসার্স আলপনা সোয়েটার লিমিটেডের ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ ৩ কোটি ৫৬ হাজার টাকা, জনতা ফেব্রিক্স, টংমুর ইলেকট্রনিক্সের ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, জানশন জুতা ফ্যাক্টরি লিমিটেডের ৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, রুহিতা এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ৪ কোটি ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা, আনিকা ফেব্রিক্স লিমিটেডের ৯৯ লাখ ৪ হাজার টাকা, মেসার্স রাব্বানী এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ৬ কোটি ১১ লাখ টাকা, মেসার্স ওরিয়ন কোম্পানি লিমিটেডের ৮ কোটি টাকা, মেসার্স নূর অপটিক্স লিমিটেডের ৫৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা, স্বপ্ননীড় আবাসিক কোম্পানি লিমিটেডের ১৫ কোটি টাকা, আদ্রিতা আবাসন প্রকল্প লিমিটেডের ৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা, জয়িতা সোয়েটার লিমিটেডের ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকাসহ প্রায় তিনশ প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ভ্যাট ফাঁকির ৩০৯ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় সিগারেট, সিরামিক, মোবাইল, অটোমোবাইল, তৈরি পোশাক খাত ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান, জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ ভাঙা, ওষুধ, ইলেট্রনিক্স, কোমল পানীয়, ব্যাংক, সিরামিক, টয়লেট সোপ, প্রাকৃতিক গ্যাস, আবাসন, ইলেট্রনিক্স, জুতা-স্যান্ডেল, খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনকারী, পোশাক বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান, ওষুধ বিক্রয়কারী, ডায়াগস্টিক ও ক্লিনিক বেশি।
অনলাইন ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় তিন লাখ। এর আগে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল সাড়ে সাত লাখ। এনবিআর থেকে প্রাথমিকভাবে পাঁচটি ব্যাংকের মাধ্যমে অনলাইনে ভ্যাট পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পরে ধাপে ধাপে সব ব্যাংকের মাধ্যমে অনলাইনে ভ্যাট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান এখনো ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভ্যাট পরিশোধ করে থাকে। আর এখানেই বিপত্তি। অনেক প্রতিষ্ঠান ভালো বেচাকেনা করলেও এখনো অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন নেয়নি।
এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, অনলাইনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভ্যাট রিটার্নের তথ্যের সঙ্গে প্রকৃত অডিটের ও ব্যাংক লেনদেনের বিবরণ মিলিয়ে দেখা হলে ভ্যাট ফাঁকি কমে যাবে। এজন্য অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ, রিটার্ন ও অডিট জমা বাধ্যতামূলক করতে হবে। কোনো গরমিল পাওয়া গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ের লাইসেন্স স্থগিত হয়ে যাবে। এতে এনবিআর কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের কিছুই করার থাকবে না। ভবিষ্যতে এনবিআর সে পথেই যাচ্ছে। তবে যাওয়ার গতি আরও বাড়াতে হবে।
ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির শেষ ছুটির দিন গতকাল শনিবার অমর একুশে বইমেলায় বইপাগল পাঠক-লেখকদের পদচারণে মুখরিত ছিল। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে চিরচেনা রূপ ফিরে পায় অমর একুশে বইমেলা। গতকাল শনিবার সকাল থেকেই মেলায় প্রবেশের সব পথে ছিল দীর্ঘ লাইন। সকালের শিশুপ্রহরে শিশুসহ সব বয়সী মানুষের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। তবে অপেক্ষার মধ্যেও বইপ্রেমীদের কোনো বিরক্তি ছিল না, ছিল না কোনো ক্লান্তি। লেখক-পাঠকের আনাগোনায় মুখর হয়ে ওঠে মেলার বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণ। বিভিন্ন স্টল ঘুরে নিজেদের পছন্দের বই কিনতে দেখা গেছে পাঠকদের। বিক্রেতারা বলেছেন, মেলার শুরু থেকেই পাঠকদের আনাগোনা থাকলেও শেষ ছুটির দিনে ভিড় বেশি। তাই বিক্রিও হচ্ছে প্রত্যাশা অনুয়ায়ী।
দেশ পাবলিকেন্সের স্বত্বাধিকারী অচিন্ত্য চয়ন বলেন, ‘এবারের মেলা আগের মেলার চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। করোনার পরে আমরা সুন্দর একটি মেলা করলাম। মেলায় এবার প্রচুর দর্শনার্থী এসেছিল এবং তারা বই কিনছেন। আমরা এবারের মেলায় সন্তুষ্ট।’
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বইমেলায় গতকাল ছিল শেষ শিশুপ্রহর। দিনের শুরুতে মেলা সত্যিই অন্য রকম ছিল খুদে পাঠকদের কারণে। বড়দের ভিড় ও ধাক্কাধাক্কি নেই। মা-বাবার হাত ধরে মনের খুশিতে শিশুদের ঘুরে বেড়ানো। বায়না ধরে বই কেনা। বিকেলে ছুটির দিনে যেমন বরাবর হয়, যা প্রত্যাশা থাকে, তার ব্যতিক্রম হয়নি। চারদিকে মানুষ আর মানুষ। বড় প্যাভিলিয়ন থেকে শুরু করে ছোট ছোট স্টল সর্বত্রই বইপ্রেমীদের ঢল। সবাই বইয়ের ব্যাগ হাতে নিয়ে বের হচ্ছেন।
বই কিনছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমন রহমান। তিনি বলেন, ‘বইমেলা বাঙালির প্রাণের মেলা। ভালোবাসা আর প্রাণের টানে আমরা প্রতিবছরই বইমেলায় ছুটে আসি পছন্দসই বই কিনতে। মেলা আর মাত্র দুই দিন আছে, তাই এখন পছন্দের বইগুলো কিনছি।’
নতুন বই : গতকাল ছিল বইমেলার ২৫তম দিন। মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়, চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। নতুন বই এসেছে ১৮৫টি। বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত মেলায় ছিল শিশুপ্রহর।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘কোভিড-১৯: ভাষার বৈশ্বিকতা ও বাংলাদেশের সাহিত্য এবং কোভিড-১৯: সংস্কৃতির সংকট ও রূপান্তর’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাকিম আরিফ এবং মোহাম্মদ শেখ সাদী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন পারভেজ হোসেন, হামীম কামরুল হক, কে এইচ মাসুদ সিদ্দিকী এবং আবুল হাসান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রফিকউল্লাহ খান।
প্রাবন্ধিকদ্বয় বলেন, ২০২০ সালে বৈশ্বিক বিস্তৃতিতে ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ এমনই এক অতিমারি রোগ, যা মানুষের সৃজনশীলতাকে নানামাত্রায় স্পর্শ করেছে। এই অতিমারির কারণে বাংলা ভাষাসহ সারা বিশ্বের ভাষাসমূহে নতুন শব্দমালা ও পরিভাষার উদ্ভব ঘটেছে। পাশাপাশি কভিডকালীন বন্দি সময়ে বাংলা সাহিত্যে কভিডকেন্দ্রিক সাহিত্যকর্ম রচিত হয়েছে। অতিমারির সময়টিতে আমাদের জীবনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন সংস্কার। ফলে ধীরে ধীরে সংস্কৃতিও রূপান্তরিত হচ্ছে।
আলোচকরা বলেন, কোভিডকাল আমাদের জীবনে নতুন অভিজ্ঞতার সঞ্চার করেছে, আমাদের চিন্তায় এবং জীবনযাত্রায় এনেছে পরিবর্তন। এ সময় আর্থসামাজিক ক্ষেত্রের মতো শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিও অতিক্রম করেছে সংকটময় মুহূর্ত। করোনা আমাদের মনে যে প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে, তা থেকে সারা বিশ্বের সাহিত্যে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। বাংলা সাহিত্যও এর ব্যতিক্রম নয়। সমকালীন বাস্তবতার ভাষ্যকার শিল্পী ও সাহিত্যিকরা তাদের সাহিত্যে করোনার নানামুখী অভিঘাতকে চিত্রিত করেছেন। করোনার ভয়াল অভিঘাতে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও জীবন-সংস্কৃতি যেমন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে, তেমনি ভবিষ্যৎ সংকট মোকাবিলার নানা পথ আমাদের সামনে উন্মোচিত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে রফিকউল্লাহ খান বলেন, ‘করোনার সংকটময় কালে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও মুখোমুখি হয়েছে বিপর্যয়কর পরিস্থিতির। সে-সময় আমরা বিচ্ছিন্নতার অভিজ্ঞতা লাভ করেছি, আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি নানাভাবে রূপান্তরিত হয়েছে। তথাপি বাংলাদেশের মানুষ সাহসিকতার সঙ্গেই করোনা সংকট মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।’
আজকের অনুষ্ঠানসূচি : ২৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার, অমর একুশে বইমেলার ২৬তম দিন। মেলা চলবে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে স্থানীয় সাহিত্যের বৈভব ও জেলা সাহিত্যমেলা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সাইমন জাকারিয়া। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মুন্সি আবু সাইফ, সাহেদ মন্তাজ এবং মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মুহম্মদ নূরুল হুদা।
সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী আফরিন ফারিয়া। শেষ সময়ে নির্বাচিত লেখকের বই কিনতে বন্ধুদের সঙ্গে মেলায় এসেছেন। জানতে চাইলে ফারিয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা উপন্যাস আমার খুব পছন্দ! তার লেখা উপন্যাসগুলো আমাকে খুব উজ্জীবিত করে!
গতকাল শনিবার বিকেলে দেশ রূপান্তরের সঙ্গে এ পাঠকের আলাপ হলে তিনি এসব কথা বলেন।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভ্রমণ সাহিত্য আমার ভালো লাগে। নতুন নতুন অনেক কিছু শেখা যায়। যেগুলো লেখকরা নিজের ভাষায় নিজের ভঙ্গিতে প্রকাশ করে পড়ার তৃপ্তিটা বাড়িয়ে দেয়।
মেলার শেষ সময়ে এসে কেমন লাগছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেলা তো মেলাই, এখানে খারাপ লাগার কোনো প্রশ্নই আসে না। বরঞ্চ ক্রমে ক্রমে ভালোলাগাটা আসলে বাড়তে থাকবে প্রতি বছর। বই যারা ভালোবাসে তাদের জন্য এই জায়গাটা বরাবরের মতো ভালোলাগার জায়গা।
মেলার স্পেস নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, যদিও মেলার স্থান যথেষ্ট, তারপরও যদি জায়গাটা আরেকটু প্রসারিত করা যেত তাহলে আরও কিছু নতুন স্টল হয়তো বসতে পারত আর আমরাও আরও নতুন কিছু বই পেতাম।
পড়ার ক্ষেত্রে কোন বিষয়কে প্রাধান্য দেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেকের লেখা পড়া হয়। তবে কিছু না কিছু আমি নতুন করে শিখি। যথেষ্ট সরল আবরণে লেখা হলে তা পড়ে বেশি আনন্দ পাওয়া যায়। কঠিন বাস্তবতার কাহিনী সুন্দর করে উপস্থাপন করলে শেষ না হওয়া অবধি বই রেখে ওঠা যায় না।
বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে অংশগ্রহণকারীদের একজন ফেরদৌসি লিনু হক। তিনি লেখালেখি করেন লিনু হক নামে। এবারের বইমেলায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তার দুটো বই প্রকাশিত হয়েছে। একটি ‘অবরুদ্ধ নগরের গেরিলা ৭১’, প্রকাশ করেছে অঙ্কুর প্রকাশনী। অপর বইটি ‘মুক্তিযুদ্ধের মানচিত্রে বাংলার নারী’, প্রকাশক অণিমা গ্রন্থ বিলাস।
নিজের বই বিষয়ে লিনু হক বলেন, ‘আমার বই যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে। মুক্তিযুদ্ধে আগ্রহীরা আমার বইয়ের পাঠক। আমি মূলত লিখি আগামী প্রজন্মের জন্য। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের শেকড়। আমরা ক্রমাগত শেকড় থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। শেকড়বিহীন মানুষ শূন্য লতার মতো। একসময় অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে। প্রজন্মকে শেকড়ে ফিরিয়ে নেওয়া আমার লেখার উদ্দেশ্য।’
নিজের লেখা বই নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘একজন নতুন লেখক হিসেবে আমার প্রথম বইয়ের প্রচুর পাঠ-আলোচনা দেখেছি। আমি অন্তর্জালে লেখালেখি করি। লাইক-শেয়ার যত না দেখি, তার চেয়ে শুনেছি বেশি, “আপনার লেখা সবাই পড়ে”, আমি তার প্রমাণও পেয়েছি।’
লিনু হক বলেন, ‘আমার জন্ম পঞ্চাশের দশকে ঢাকার আজিমপুর কলোনিতে। বড় হওয়ার পর ঢাকায় আমাদের বাড়ি নিয়ে আমি একটি স্মৃতি লেখা লিখেছিলাম। প্রথমে অন্তর্জালে, পরে পেন্সিলে। অন্তর্জালে অনেকে এবং পেন্সিলে এক হাজারের বেশি মানুষ পড়েছে, প্রচুর মন্তব্য করেছে, অনেক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া মানুষকে খুঁজে পেয়েছি। দেশ-বিদেশ থেকে মানুষ যারা এ স্মৃতির সঙ্গে জড়িত, তাদের মন্তব্য আমার কিছু ধূসর স্মৃতিকে উজ্জ্বল করে দিয়েছে। এটা আমার কাছে একটা বড় ঘটনা, বড় প্রাপ্তি।’
ঢাকার আজিমপুরের সরকারি কলোনিতে ১৯৫৭ সালের ১৫ জুন জন্ম লিনু হকের। স্কুলে যখন পড়েন, তখন উত্তাল ষাটের দশক। ধীরে ধীরে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন লিনু হক। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন সংগ্রামে। যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেওয়া, তথ্য দেওয়া, দেয়াল লিখন, লিফলেট বিতরণ, পাকিস্তানি শাসকের দালালদের হুমকি দিয়ে চিঠি দেওয়াসহ নানাভাবে তিনি মুক্তিসংগ্রামে যুক্ত ছিলেন।
‘মেয়ে বিচ্ছু আজিমপুরের মুক্তিযোদ্ধা কাহিনী’ তার আলোচিত বই।
চট্টগ্রামে চাঞ্চল্যকর বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন হত্যা মামলার বিচার শেষ হয়নি ২০ বছরেও। পঞ্চম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। পাঁচ বছরে মামলার ৮২ জন সাক্ষীর মধ্যে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে মাত্র ৪ জনের। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় চার বছরে মামলার তারিখ পড়েছে ২৩টি।
মহানগর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর বা সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ গতকাল শুক্রবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মামলা পরিচালনায় বাদীর সহযোগিতা মিলছে না।’
আদালত সূত্র জানাচ্ছে, চাঞ্চল্যকর এ মামলা পরিচালনায় বাদীপক্ষের এখন কোনো আইনজীবী নেই। মামলা পরিচালনা করছে রাষ্ট্রপক্ষ। তাদের (রাষ্ট্রপক্ষ) অভিযোগ, জামাল উদ্দিন হত্যা মামলাকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে বাদী নিহত জামাল উদ্দিনের ছেলে চৌধুরী ফরমান রেজা লিটনের অনীহা দেখা যাচ্ছে। তাকে একাধিকবার আদালত থেকে সমন জারি করেও সাক্ষ্য দিতে আনা যাচ্ছে না।
গত দুদিন এই প্রতিবেদক বাদীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
বাদীর পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, বছরের বেশির ভাগ সময় চৌধুরী ফরমান রেজা লিটন দেশের বাইরে থাকেন। মামলা পরিচালনায় তাদের আগ্রহে ভাটা পড়েছে। পরিবারের দাবি, জামাল উদ্দিন খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ অনোয়ারার বিএনপিদলীয় সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম এবং তার ভাই মারুফ নিজামকে অব্যাহতির সুপারিশ করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অভিযোগপত্র দেওয়ার পর থেকে হত্যাকারীদের বিচারের আশা এক প্রকার ছেড়েই দিয়েছেন তারা।
আদালত সূত্র জানায়, বিএনপি নেতা ও ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন হত্যার প্রধান আসামি ফটিকছড়ি কাঞ্চনপুরের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চৌধুরী। তিনি ২০ বছর ধরে পালিয়ে ছিলেন। গত জানুয়ারি মাসে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠায় আদালত।
১৬ আসামির মধ্যে সাতজন জামিনে আছেন। একজন কারাগারে। ছয়জন পলাতক। বাকি দুজন মারা গেছেন।
২০০৩ সালের ২৪ জুলাই ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন নগরের চকবাজার এলাকায় তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে চান্দগাঁওয়ের বাসায় যাওয়ার সময় অপহৃত হন।
জানা গেছে, জামাল উদ্দিন অপহরণের ঘটনাকে সাজানো নাটক বলে মন্তব্য করে পুলিশ প্রথমে মামলা নেয়নি। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দুই বছর পর অপহরণের ‘অন্যতম হোতা’ আনোয়ারা সদর ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন সদস্য মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার দুই বছর পর ২০০৫ সালের ২৪ আগস্ট ফটিকছড়ি উপজেলার পাহাড়ি এলাকা থেকে জামাল উদ্দিনের কঙ্কাল উদ্ধার করে র্যাব। এর আগে প্রশাসনের পরামর্শ অনুযায়ী অপহরণকারী চক্রকে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকাও দেয় পরিবার। কিন্তু জামাল উদ্দিনকে মুক্তি দেওয়া হয়নি।
জামাল উদ্দিন অপহরণ ও হত্যা মামলাটি করা হয় নগরের চান্দগাঁও থানায়। তার পরিবারের অভিযোগ, ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা জামালকে হত্যা করেছে। ৯ পুলিশ কর্মকর্তা ৩ বছর ধরে মামলাটি তদন্ত করেন। ২০০৬ সালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। অভিযোগপত্রে সরওয়ার জামাল নিজাম ও তার ভাই মারুফ নিজামসহ ২৪ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।
মামলার অন্যতম আসামি মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জামাল উদ্দিনকে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায় ও হত্যার পর লাশ গুমের ঘটনায় জড়িতদের সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দেয়। ২০১৪ সালে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি সুলতান ড্রাইভার জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছিলেন, জামাল উদ্দিনকে কাঞ্চননগরের গহিন পাহাড়ে নিয়ে যান তিনি। গুলি করে হত্যার আগ পর্যন্ত তিনি, কালা মাহবুব, লম্বা মাহবুব ও টেংরা ওসমান জামাল উদ্দিনের সঙ্গে ছিলেন।
সিআইডির তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিহত জামাল উদ্দিন ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহসভাপতি। সে সময় সংসদ নির্বাচনে আনোয়ারা থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন তিনি। মনোনয়ন ঠেকাতে এবং কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তাকে অপহরণ করা হয়েছিল। টাকা পেতে দেরি হওয়ায় খুন করা হয় তাকে।
সিআইডির অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে বাদী আদালতে নারাজি আবেদন করেন। অন্যদিকে মামলার আসামি কালা মাহবুবকে রাজসাক্ষী করায় আপত্তি জানিয়ে মারুফ নিজাম উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নেন ২০০৭ সালে। ২০১১ সালে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন আসামিরা। আবেদনটি খারিজের আদেশ চট্টগ্রাম আদালতে এসে পৌঁছায় ২০১৬ সালে। ২০১৭ সালে আদালত সিআইডির অভিযোগপত্র গ্রহণ করে এবং বাদীর নারাজি আবেদন খারিজ করে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চট্টগ্রামের একটি আদালত আসামিদের মধ্যে অভিযোগ গঠন করে।
২০১৮ সালের ১৩ নভেম্বর নগরের চকবাজার এলাকার এক দোকানদার সর্বশেষ এ মামলায় সাক্ষ্য দেন চট্টগ্রাম দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। মামলাটি বিচারের জন্য ২০১৯ সালের মে মাসে পঞ্চম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে আসে।
বাদী চৌধুরী ফরমান রেজা লিটন কয়েক মাস আগে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘আমার বাবা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারীদের আইনের আওতায় আনতে বছরের পর বছর আইনি লড়াই চালিয়েছি। কিন্তু তা আনা হয়নি। বিচারের আশা করে লাভ কী।’
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কো-স্পোর্টস যতটা না তাদের কর্মগুণে সমাদৃত, তার চেয়ে বেশি আলোচিত নানা নেতিবাচক কারণে। একটা সময় কে-স্পোর্টস ও এর প্রধান নির্বাহী ফাহাদ করিমে আস্থা রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বড় বড় সব চুক্তিও সে সময় হয়েছিল দুই পক্ষের। তবে চুক্তির নানা শর্ত ভঙ্গ করে বিসিবির গুড বুক থেকে কাটা গেছে তাদের নাম।
বিসিবিতে সুবিধা করে উঠতে না পেরে গেল কয়েক বছর ফাহাদ করিম সওয়ার হয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনে। বাফুফের এই আলোচিত সভাপতি একটা সময় বড় গলায় ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, বিসিবির বিপিএলের কঠোর সমালোচনা করে বলেছিলেন, ফুটবলকে জনপ্রিয় করতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মতো সস্তা আয়োজনের প্রয়োজন নেই।
অথচ ফাহাদের পাল্লায় পড়ে সেই সালাউদ্দিনই নিজের বলা কথা ভুলে গেছেন। তৎপর হয়েছেন নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনে। যদিও এমন আয়োজনের জন্য কোনো রকম পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না কে-স্পোর্টসের। যার জ্বলন্ত উদাহরণ ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত না করেই আসর মাঠে গড়ানোর তারিখ ঘোষণা করা এবং অনুমিতভাবেই ঘোষিত তারিখে খেলা শুরু করতে না পারা।
কে-স্পোর্টসের সিইও ফাহাদ করিমের সঙ্গে সালাউদ্দিনের দহরম মহরম বেশ কয়েক বছর আগে থেকে। সেটা কখনো কখনো ফুটবলের স্বার্থ ছাড়িয়ে চলে যায় ব্যক্তিস্বার্থে। সাফল্যপ্রসবা নারী ফুটবলে বেশি আগ্রহ সালাউদ্দিনের। ক্রীড়া-বেনিয়া ফাহাদও সালাউদ্দিনের নারী ফুটবলের প্রতি বাড়তি অনুরাগটা ধরে ফেলে ২০১৯ সালে বাফুফেতে প্রবেশ করেন ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক নারী টুর্নামেন্ট আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
এর পরের বছর টিভি সম্প্রচারস্বত্ব পাইয়ে দিতে বাফুফের সঙ্গে তিন বছরের বড় অঙ্কের চুক্তি করে কে-স্পোর্টস। চুক্তি অনুযায়ী বাফুফেকে ফি-বছর আড়াই কোটি টাকা করে দেওয়ার কথা কে-স্পোর্টসের। সেই অর্থ বুঝে না পেয়ে সম্প্রতি ফাহাদ করিমকে চিঠি দেয় বাফুফে।
বিষয়টি সমাধান না হলে নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে চুক্তি না করার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছিল চিঠিতে। তবে এই চিঠি দেওয়া যে শুধুই আনুষ্ঠানিকতার, তা সালাউদ্দিন-ফাহাদ করিমের হাবভাবেই বোঝা যায়। চুক্তির বিষয়টাকে এক পাশে রেখে আসলে তাদের বড় দুর্ভাবনা নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
পাঁচ তারকা হোটেলে সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানীদের নিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে নামীদামি নায়ক-নায়িকা-মডেল ভাড়া করে এনে ফাহাদ করিম এর মধ্যেই আসরের লোগো, ট্রফি ও বল উন্মোচন করেছেন একাধিক অনুষ্ঠানে। ১ মে হওয়ার কথা ছিল আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফটস। সেদিন ড্রাফটসের জায়গায় হয়েছে ট্রফি ও বল উন্মোচন অনুষ্ঠান। কে-স্পোর্টস যে ফ্র্যাঞ্চাইজিও চূড়ান্ত করতে পারেনি, প্লেয়ার ড্রাফটসটা হবেই বা কাদের নিয়ে?
এই অবস্থা এখনো চলমান। ১৫ মে শুরু হওয়ার কথা ছিল খেলা। সেই তারিখও ভেস্তে গেছে। আসলে অনিয়ম-জালিয়াতির আখড়ায় রূপ নেওয়া বাফুফের প্রতি আস্থা হারিয়েছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। যেচে কেউই চায় না ফাহাদ-সালাউদ্দিনের দেওয়া টোপ গিলতে। এমনকি ফুটবলের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক আছে এমন কোম্পানিগুলোও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
শুরুতে এ আসরটি ছয় দল নিয়ে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল কে-স্পোর্টস। পরে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পেয়ে দলসংখ্যা নামিয়ে আনা হয় চারে। জানা গেছে, বাফুফেকে পৃষ্ঠপোষকতা করা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে বারবার গিয়েও খেলতে রাজি করাতে পারেননি ফাহাদ। অথচ তারপরও এই ফাহাদে সালাউদ্দিনের আস্থা টলেনি।
সম্প্রতি সালাউদ্দিন, বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী ও বাফুফের নারী কমিটির প্রধান মাহফুজা আক্তারের সঙ্গে দীর্ঘ সভা করেন। বৈঠক শেষে বাফুফে ভবন ছাড়ার সময় ফাহাদ করিম যা বলেছিলেন, তাতে পরিষ্কার নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের কোনো অগ্রগতিই হয়নি।
দেশ রূপান্তরকে ফাহাদ বলেছেন, ‘দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত হয়েছে। বাকিগুলো শিগগিরই হয়ে যাবে। বড় কোনো অগ্রগতি হলে আমি সবাইকে ডেকে জানাব।’
গত সোমবার বাফুফের জরুরি সভা শেষে কাজী সালাউদ্দিন নতুন করে লিগ শুরুর তারিখ ঘোষণা করেন। পরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ওমেন্স ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ১০ জুন থেকে শুরু হবে। ১২ দিনে হবে ১৩ টি ম্যাচ। এটা এখন বলা দরকার যে, ফিফা উইন্ডোতে লিগ করছি। যেন বিদেশি খেলোয়াড় আসতে পারে। না হলে আসতে পারবে না।’
নতুন তারিখ ঘোষণা করেছেন ঠিকই। তবে আদৌ নির্ধারিত তারিখে খেলা হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট শঙ্কা।
গত বছর নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই মাঠে ফেরার দিন গুনছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা। সাফ জয়ের পর সালাউদ্দিন শুনিয়েছিলেন গালভরা বুলি। সাবিনাদের নিয়মিত খেলার ব্যবস্থা করবেন। অথচ লিগের কিছু ম্যাচ ছাড়া আর খেলারই সুযোগ আসেনি। অথচ অর্থ সংকটের খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে বাফুফে মেয়েদের মিয়ানমারে পাঠায়নি অলিম্পিক বাছাই খেলতে।
ফিফা উইন্ডোতেও বাফুফে পারেনি দলের জন্য প্রতিপক্ষ জোগাতে। পাঁচ তারকা হোটেলের চোখ ঝলসানো মায়াবী আলো আর সুরের মূর্ছনায় ফাহাদ করিম আয়োজন করেছিলেন লোগো, ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠান। সেখানে গিয়ে সাবিনারাও দেখেছিলেন বাড়তি কিছু উপার্জনের রঙিন স্বপ্ন। তবে বাফুফের অদূরদর্শী সভাপতি অপ্রস্তুত এক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনের দায়িত্ব তুলে দিয়ে যেন সাবিনাদের স্বপ্নটাকেই আরেকবার গলাটিপে ধরতে চাইছেন।
এক লোক হজরত সুফিয়ান সাওরি (রহ.) কে প্রশ্ন করল, নামাজের সময় কাতারের কোন পাশে দাঁড়ানো উত্তম? প্রথম কাতারের ডান পাশে না কি বাম পাশে? তখন সুফিয়ান সাওরি (রহ.) বলেন, প্রথমে দেখো খাবারের জন্য রুটির যে টুকরোটা নিয়েছে তা হালাল না কি হারাম? তুমি কাতারের যেখানেই নামাজ আদায় করো তা তোমার কোনো ক্ষতি করবে না। তুমি নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে খুব ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করো, তুমি নামাজ কোথায় আদায় করবে? অথচ তুমি এমন একটি কাজে লিপ্ত যা তোমাকে নামাজ কবুল হওয়া থেকে বিরত রাখে!
একবার হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে উদ্দেশ করে বলেন, তোমরা কি জানো প্রকৃত দরিদ্র কে? তারা বললেন, দরিদ্র তো সে যার কোনো দিনার-দেরহাম নেই (অর্থকড়ি নেই)। তখন তিনি বলেন, আমার উম্মতের মধ্যে দরিদ্র সে, কিয়ামতের দিন নামাজ, রোজা ও জাকাতের সওয়াব নিয়ে আসবে; কিন্তু সে একে গালি দিয়েছে, ওকে প্রহার করেছে, অন্যায়ভাবে অন্যের মাল ভক্ষণ করেছে, তখন এই লোক তার সওয়াব থেকে নেবে, ওই লোক তার সওয়াব থেকে নেবে, অতঃপর যখন তার সওয়াব শেষ হয়ে যাবে তখন অন্য পাওনাদাররা তাদের অপরাধগুলো এই লোককে দিয়ে দেবে, এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
এরপর সুফিয়ান সাওরি (রহ.) লোকটিকে বলেন, তুমি প্রথম কাতারে নামাজ আদায় করলে তাতে কী লাভ; যদি তুমি মানুষের হক নষ্ট করো, অন্যের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো? সুতরাং তুমি হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ করো।
নবী কারিম (সা.) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র এবং তিনি পবিত্র জিনিস ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করেন না এবং তিনি মুমিন বান্দাদের তাই আদেশ করেছেন যা তিনি নবী-রাসুলদের আদেশ করেছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে রাসুলরা, পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎ কাজ করুন। আপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত।’ সুরা মুমিনুন : ৫১
এই আয়াতে আল্লাহতায়ালা পবিত্র খাবারকে নেক আমলের পূর্বে এনেছেন। অর্থাৎ নামাজ আদায়, দিনের বেলা রোজাপালন, রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি ও কোরআন তেলাওয়াতের পূর্বে হালাল খাবারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহতায়ালা এখানে রাসুলদের উদ্দেশ করে বলেছেন, হে রাসুলরা! তোমরা হালাল খাবার গ্রহণ করো। এরপর তিনি বলেছেন এবং সৎ আমল করো। অর্থাৎ নেক আমলের পূর্বে হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ করো, যাতে হারাম খাবার গ্রহণের কারণে নেক আমলগুলো নষ্ট না হয়ে যায়। এ কারণেই আল্লাহতায়ালা বলেছেন, তোমরা পবিত্র বস্তু গ্রহণ করো এবং সৎ আমল করো।
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) দীর্ঘ সফরে ক্লান্ত ধূলোমলিন চুল ও চেহারাওয়ালা এক লোকের উপমা দিয়ে বলেছেন, সে আসমানের দিকে হাত তুলে বলে, হে আমার রব! হে আমার রব! তিনি বলেন, অথচ তার খানাপিনা হারাম, তার পোশাক-পরিচ্ছেদ হারাম, সে যা ভক্ষণ করে তা হারাম, তাহলে তার দোয়া কবুল হবে কীভাবে?
ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, হালাল খাবার মানুষের মেধা, ইলম ও আমলের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। সুতরাং এ প্রশ্ন করা অবান্তর, আমাদের দোয়া কবুল করা হয় না। দোয়া কবুল না হওয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ না করা। বস্তুত সমস্যা দোয়ার মধ্যে নয়, সমস্যা আমার-আপনার মধ্যে। আপনি খাবারকে পবিত্র রাখুন, দেখবেন আপনার দোয়াগুলো কবুল হচ্ছে।
একজন হারাম কজে লিপ্ত, অন্যায়ভাবে মানুষের হক ভক্ষণকারী, শ্রমিকের পারিশ্রমিক পরিশোধ করেন না, বাড়ির অসহায় কাজের মেয়েটির প্রাপ্য ভাতা প্রদান করেন না, অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন না আর সেই আপনিই আবার অভিযোগ করেন আমার দোয়া কবুল হয় না?
একটু ভাবুন, চিন্তা করুন। সর্বদা পবিত্র খাবার খাওয়ার, পবিত্র পোশাক পরিধানের চেষ্টা করুন। দয়াময় আল্লাহ আপনাকে বঞ্চিত করবেন না।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।