
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক নির্যাতনের শিকার এক ছাত্রীকে আবাসিক হলে তুলে দিতে গিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর। গতকাল বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল গেটের ছিটকিনি লাগিয়ে সামনে অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডি তাকে উদ্ধার করেন।
এদিকে ছাত্র উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করার খবর পেয়ে বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের প্রধান ফটকসংলগ্ন রাস্তার এক পাশে অবস্থান নিতে শুরু করেন সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ সমাজকর্ম বিভাগের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত হন। পৌনে ৫টার দিকে হল গেটে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেন প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। পরে তারা ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক তারেক নূরকে বের করে নিয়ে আসতে চাইলে গেটের ভেতরের দিক থেকে সামনে অবস্থান নেন সংগীত বিভাগের ছাত্রীরা। এ সময় কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী হল থেকে তারেক নূরকে বের করে আনতে চাইলে সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা চিৎকার শুরু করেন। একপর্যায়ে সমাজকর্ম ও সংগীত বিভাগ এবং ছাত্রলীগকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় হল গেটের সামনে দুই-উপাচার্য, জনসংযোগ প্রশাসক, প্রক্টর উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সংগীত বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ঘটনাস্থলে সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাংবাদিকরা আন্দোলনের ফুটেজ ধারণ করতে গেলে সংগীত বিভাগের কয়েকজন ছাত্রী অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এ ছাড়া তারা অভিযোগ করেন, সাংবাদিকরা সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী বিরুদ্ধে নিউজ করেছেন।
রাত সাড়ে ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে সংগীত ও সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠক শেষ হয়। এরপর উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম জানান, আজ বৃহস্পতিবার আবার বসে সিদ্ধান্ত হবে। তার এ ঘোষণার পর সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলের সামনে থেকে অবস্থান প্রত্যাহার করেন।
হল সূত্রে জানা যায়, হল প্রাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে মানসিক নির্যাতনের শিকার সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী সুমাইয়া দুপুর ১টার দিকে হাসপাতাল থেকে ছাত্র উপদেষ্টার দপ্তরে আসেন। এর আগে রাতের সিদ্ধান্ত হয় অভিযুক্ত সংগীত বিভাগের ছাত্রী দোলনের সিট অন্যত্র স্থানান্তর করার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে নিয়ে দেড়টার দিকে হলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর। এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সংগীত বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক শায়লা তাসমিন। সেখানে তার সঙ্গে ছাত্র উপদেষ্টার বাগ্বিত-া হয়। একপর্যায়ে সেখান থেকে চলে যান শায়লা তাসমিন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীরা হল গেটে উপস্থিত হন। তাদের শিক্ষককে অপমান করা হয়েছে উল্লেখ করে তারা হল গেট অবরুদ্ধ করে আন্দোলন করতে থাকেন। এতে হলের মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন ছাত্র উপদেষ্টা। প্রায় তিন ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করা হয়। এদিকে সংবাদ সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত চারজন সাংবাদিকের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন শিক্ষার্থীরা।
সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে দোষীসাব্যস্ত করা হয়েছে। আর এ ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে এলে তাদের বিভাগের সভাপতিকে ছাত্র উপদেষ্টা লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ তাদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংগীত বিভাগের সভাপতি শায়লা তাসমিন বলেন, ‘আমার বিভাগের এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে অন্য বিভাগের এক ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানতে আমি ছাত্র উপদেষ্টাকে ফোন দিই। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। পরে জানতে পারি তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলে আছেন। তখন এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলার জন্য আমি হলে যাই। সেখানে তিনি আমার শিক্ষার্থীদের সামনে আমাকে অপমানজনক কথা বলেন। একপর্যায়ে বলেন “হু আর ইউ”, আপনি কেন এখানে আসছেন। এতে আমি অপমানিত বোধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করি।’
মূল ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে হলের একাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, গত ২০ ফেব্রুয়ারি পানি গরমের হাঁড়ি নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে দোলনের কথাকাটাকাটি হয়। এতে দোলন ক্ষিপ্ত হয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ‘বেয়াদবি’র অজুহাতে তার সিট বাতিল করে গণরুমে দেওয়ার জন্য হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি আবেদনপত্র জমা দেন। তিনি ছাত্রলীগ নেত্রীর ভয় দেখিয়ে ব্লকের ছাত্রীদের কাছে স্বাক্ষর গ্রহণ করেন। এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হল প্রাধ্যক্ষ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে গণরুমে স্থানান্তর করেন।
তবে হল প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ব্লকের শিক্ষার্থীরা হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর একটি আবেদন দিতে গেলে হলের আবাসিক শিক্ষকরা বলেন, ‘সিদ্ধান্ত যা হয়েছে তাই বহাল থাকবে।’ যদিও পরে তারা আবেদনটি গ্রহণ করেন।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সকালে হল প্রাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে সুমাইয়া নামে এক শিক্ষার্থীকে মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠে সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী দোলন, হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক স্মৃতি বালার বিরুদ্ধে। পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওইদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয় দুই ভুক্তভোগীকে ভিন্ন দুই ব্লকে পাঠানোর। এ ছাড়া ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের প্রতিটি কাউন্টারে দিনে গড়ে টিকিট বিক্রি হয় প্রায় ৬০ হাজার টাকার। আর বৃহস্পতি ও শনিবার তা বেড়ে যায় এক লাখ টাকা পর্যন্ত। গতকাল বুধবার বিক্রি হয়েছে আগামী রবিবারের যাত্রার টিকিট এবং টাকায় গড়মূল্য ছিল প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এ তথ্য কাউন্টারের বুকিং সহকারীদের কাছ থেকে নেওয়া।
তবে নিবন্ধনের কারণে যে টিকিট বিক্রি কিছুটা কমে যাবে এ কথা পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলমের কথায়ও উঠে এসেছে। তিনি নিবন্ধন ইস্যুতে সম্প্রতি দেশ রূপান্তরকে বলেছিলেন, আগামী দুই মাস হবে অন্তর্বর্তীকালীন সময়। এ সময়ে টিকিট বিক্রিতে কিছুটা ভাটা কিংবা মানুষ নতুন এ পদ্ধতি মানতে চাইবে না। কিন্তু না মেনে উপায় নেই। নিবন্ধন ছাড়া মেশিন থেকে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে না।
গতকাল সকাল থেকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের ৫ নম্বর কাউন্টারে টিকিট বিক্রি করেছেন বুকিং সহকারী আরিফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘অনেক যাত্রী নিবন্ধন ছাড়াই আগের নিয়মে টিকিট সংগ্রহ করতে এসেছেন। তখন আমরা রেলওয়ের হেল্প ডেস্ক থেকে নিবন্ধন সম্পন্ন করে লাইনে দাঁড়াতে বলি। যারা নিবন্ধন করতে পেরেছেন তারা টিকিট সংগ্রহ করতে পেরেছেন। আবার অনেকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আনেনি বলে ফিরে গেছেন। এ জন্য আমাদের কাউন্টারে কোনো ভিড় ছিল না, হেল্প ডেস্কেই ভিড় বেশি দেখা যায়।’
এ সময় একাধিক বুকিং সহকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফেরত যাওয়া যাত্রীদের হার কিন্তু কম ছিল না। আর এর প্রভাব পড়েছে টিকিট বিক্রির টাকায়। ছয়টি কাউন্টারে গড়ে ৩০ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। অন্যান্য সময় তা ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার পর্যন্ত টিকিট বিক্রি হয়ে থাকে।
নতুন এ পদ্ধতিতে অভ্যস্ত হতে কিছুটা সময় লাগবে বলে উল্লেখ করে পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আবিদুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে নতুন কিছু চালু হতে সময় নেই। এখানেও এর ব্যতিক্রম হবে না। তবে আমাদের হেল্প ডেস্কের কারণে যাত্রীরা স্টেশনে এসে নিবন্ধন করতে পারছে। এ জন্য কাউন্টারের তুলনায় হেল্প ডেস্কে ভিড় বেশি দেখা গেছে।’
রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা দেশেই প্রথম দিনে সাড়া কিছুটা কম হয়েছে। তবে ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে বলে রেলওয়ে কর্তাদের ধারণা।
এদিকে গতকাল চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় তিনি বলেন, টিকিট যার ভ্রমণ তার নিশ্চিত করতে এ নিবন্ধন প্রক্রিয়া। এতে একজনের টিকিট দিয়ে আরেকজন ভ্রমণ করতে পারবে না। এতে কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য কমে যাবে।
১ মার্চ থেকে নিবন্ধনধারী ছাড়া কেউ ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারবে না। এ জন্য প্রত্যেক যাত্রীকে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে BR-Space-NID number- Space- Date of Birth (সাল, মাস, দিন ফরম্যাটে) লিখে ২৬৯৬৯ নম্বরে সেন্ড করতে হবে। ফিরতি এসএমএসে নিবন্ধন সফল না ব্যর্থ হয়েছে তা জানা যাবে। বিদেশি নাগরিকরা পাসপোর্ট নম্বর ও ছবি দিয়ে নিবন্ধন আপলোড করবে। ১২-১৮ বছর বয়সীরা জন্ম নিবন্ধন সনদ আপলোড করে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে। নিবন্ধন হয়ে যাওয়ার পর রেলওয়ে অ্যাপসের মাধ্যমে টিকিট কাটা যাবে। একই সঙ্গে যদি কেউ কাউন্টারে গিয়ে সংগ্রহ করতে চায় তিনি মোবাইল নম্বর বললে বুকিং সহকারী সেই নম্বরের বিপরীতে এনআইডি নম্বর ও নাম পেয়ে যাবে এবং যাত্রীকে টিকিট দেবে। তখন যে টিকিট প্রিন্ট করা হবে সেই টিকিটে যাত্রীরা নাম ও এনআইডি নম্বর থাকবে।
১০০ পস মেশিন হস্তান্তর : গতকাল রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে এনআইডির মাধ্যমে নিবন্ধন করে রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেটিং চালু ও টিকিট চেকিং ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশনে ‘পস মেশিন’ হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন এ মেশিন হস্তান্তর করেন।
বাসস জানায়, এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রেলপথমন্ত্রী বলেছেন, এখন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে নিবন্ধন ছাড়া টিকিট কেনা করা যাবে না। তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে শুধু আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটের জন্য এ ব্যবস্থা চালু হলেও পর্যায়ক্রমে লোকাল ট্রেনেও এটি কার্যকর করা হবে।
‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ‘স্মার্ট রেলওয়ে’ গঠনের অংশ হিসেবে এ ব্যবস্থা চালু করা হলো উল্লেখ করে নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘আমরা যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য একাধিক কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এতদিন টিকিট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যে অভিযোগ ছিল, তা থেকে বের হওয়ার জন্যই ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ কার্যক্রম আমরা শুরু করেছি, যা আজ (গতকাল) থেকে কার্যকর হচ্ছে।’
রেলপথমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে অন্যের টিকিটে ভ্রমণ করলে বিনা টিকিটের যাত্রী হিসেবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া টিটিইদের কাছে পস মেশিন সরবরাহ করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে তারা বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করবে এবং এ টাকা সরাসরি সরকারি কোষাগারে জমা হবে। এখন থেকে অনলাইনে টিকিট বাতিলের জন্য আর কাউন্টারে যেতে হবে না, অনলাইনেই টিকিট বাতিল করা যাবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদত আলী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
যেন ইতিহাসের এক জীবন্ত সংগ্রহশালা। নাম হেরিটেজ আর্কাইভস। স্থানীয় ইতিহাসের অনন্য এ সংগ্রহশালায় রয়েছে ১৮৭২ সালে করা প্রথম আদমশুমারি রিপোর্ট, কিংবা সার্ভে অ্যান্ড সেটেলমেন্ট বা ভূমি জরিপের রিপোর্ট অথবা সরকারি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর লেখা দুষ্প্রাপ্য সব রিপোর্ট। এ ছাড়াও রয়েছে বই-পুস্তক, সাময়িকী, পত্রিকা, ছোট কাগজ, এমফিল-পিএইচডির গবেষণা জার্নাল, লিফলেট, পোস্টার, বুলেটিন, মেনিফেস্টো, স্মরণিকা, ফেস্টুন, ব্যঙ্গচিত্র, স্মারকচিহ্ন, পারিবারিক সরঞ্জাম ও জীবনীগ্রন্থের বিপুল সংগ্রহ। দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের উপকরণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ব্যতিক্রমী এ সংগ্রহশালাটি ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইতিহাস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান।
তিনি তার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাজলার জামরুলতলা এলাকার বাসাতেই গড়ে তুলেছেন সংগ্রহশালাটি। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, তিনতলা সংগ্রহশালাটির নিচতলায় রয়েছে বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী সংক্রান্ত অন্তত ৫ হাজার ২০০ গ্রন্থ। যার মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর জীবনীর ওপর লেখা ৬০০, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ওপর ৩৫০ এবং কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনীর ওপর ২৫০ গ্রন্থ। নিচতলায় আরও রয়েছে দেশের ৬৪টি জেলা নিয়ে লেখা প্রায় ১২ হাজার বই। রয়েছে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, তেল-গ্যাসসহ বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের গ্রন্থ, ডকুমেন্টস, লিফলেট, পোস্টারের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের ম্যাগাজিন।
সংগ্রহশালাটিতে ৭/৩ ফুট আয়তনের ১৭৮টি বইয়ের তাকে আরও রয়েছে কবি আবু বকর সিদ্দিক, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন এবং প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের মতো বিখ্যাত ব্যক্তিদের দেওয়া বই-পুস্তকের কর্নার। ৪০০টি বিষয়ের ওপর সংগ্রহ করা সংগ্রহশালাটিতে রয়েছে প্রায় তিন হাজার শিরোনামে ৩৫ হাজারের মতো সাময়িকী, পত্রপত্রিকা এবং ৩ হাজার ২০০ ছোট কাগজ। আরও রয়েছে স্বল্প ভাড়ায় সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও ওয়ার্কশপ করার জন্য একটি সেমিনার কক্ষ এবং দূর-দূরান্ত থেকে আসা গবেষকদের জন্য থাকা ও রান্নার ব্যবস্থা।
সংগ্রহশালাটির তৃতীয়তলায় রয়েছে পরিবারের ব্যবহারের তালিকা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া জিনিসপত্র সংবলিত একটি পারিবারিক আর্কাইভস কর্নার। যেখানে স্থান পেয়েছে পরিবারের কাজে বিভিন্ন সময়ে ব্যবহৃত হুঁকা, হারিকেন, কুপি, কলের গান, টেলিফোন সেট, রেডিও, কলম, দোয়াত, টাইপরাইটার, সাইক্লোস্টাইল মেশিন, ক্যামেরা, টেপ রেকর্ডার, জাঁতা, খড়ম, পয়টা, পান বাটা, কাঁসার বাসনপত্র, মাটির জিনিসপত্র, কৃষি যন্ত্রপাতি, বিভিন্ন জাতের ধান, মুদ্রা, বিয়ের কার্ড, বিয়ের শাড়ি, আমন্ত্রণপত্র ইত্যাদি।
সমৃদ্ধ এ সংগ্রহশালাটি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জানান, স্থানীয় ইতিহাসের ওপর পিএইচডি করতে গিয়ে দেখেন একই জায়গায় স্থানীয় ইতিহাসের ওপর পূর্ণাঙ্গ কোনো তথ্য নেই। পরে নব্বইয়ের দশকে নেদারল্যান্ডসের একটি আর্কাইভ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি বাংলাদেশেও একটি হেরিটেজ আর্কাইভস গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ১৯৯৮ সাল থেকে লিফলেট, ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার সংগ্রহ করতে শুরু করেন তিনি। ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় এবং রাবির ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও বন্ধুবান্ধবদের সহযোগিতায় সংগ্রহ করতে করতে ২০০২ সালে নিজের বাসায় প্রতিষ্ঠিত হয় ‘হেরিটেজ : বাংলাদেশের ইতিহাসের আর্কাইভস’ নামের এ সংগ্রহশালা।
অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, সংগ্রহশালাটি এতটাই সমৃদ্ধ যে, একজন গবেষক দেশের কোথাও না গিয়ে মাত্র সাত দিন সংগ্রহশালাটিতে বসলে বাংলাদেশের যেকোনো বিষয়ে একটি গবেষণা প্রবন্ধ লিখতে পারবেন। সংগ্রহশালাটি শুক্রবার বাদে প্রতিদিন চার ঘণ্টা গবেষকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে। এখানে প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চারজন গবেষক আসেন। এর মধ্যে রাবির ফোকলোর, চারুকলা, নৃবিজ্ঞান এবং ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরাই বেশি আসেন গবেষণা কাজে। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের অনেক গবেষক এখানে এসে গবেষণা করেন। আর হেরিটেজ আর্কাইভস থেকে প্রতি বছর ‘স্থানীয় ইতিহাস’ নামে একটি গবেষণা জার্নাল প্রকাশিত হয়।
অধ্যাপক মাহবুবর রহমান জানান, ২০১১ সালে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত হেরিটেজ আর্কাইভ পরিদর্শনে এসে অভিভূত হন। পরে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হেরিটেজ আর্কাইভসের জন্য তিনটি ফ্লোর নির্মাণ করে দেন তিনি। ফলে বইপত্র রাখার স্থানের এখন আর তেমন অভাব নেই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনও ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর হেরিটেজ আর্কাইভস পরিদর্শন করেন।
সংগ্রহশালাটি সংরক্ষণের জন্য দেশের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতার আবেদন জানিয়ে অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে সংগ্রহশালাটি একটি ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। হেরিটেজ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান আমি নিজেই। আমার ব্যক্তিগত অনুদানে এটি চলে। বর্তমানে সংগ্রহশালাটি দেখভাল করার জন্য ছয়জন স্থায়ী কর্মী আছেন। সবমিলিয়ে সংগ্রহশালাটি পরিচালনায় মাসে ৫০ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়। সংগ্রহশালার নিজস্ব কোনো আয়ের উৎস নেই। তাই সমাজের বিত্তবান মানুষরা যদি আমাদের আর্থিক সহযোগিতা করে তাহলে সংগ্রহশালাটিকে আরও সমৃদ্ধ করা সম্ভব হবে। এ জন্য সবার সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।’
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাবিপ্রবি আবাসিক হল থেকে এক বৈধ শিক্ষার্থীকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে হল থেকে সাময়িক বহিষ্কর ও একজনকে হলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গতকাল বুধবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান।
বহিষ্কৃত দুই ছাত্রলীগ কর্মী হলেন, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের সাদ্দাম হোসেন পিয়াস ও সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের আশিকুর রহমান। এছাড়া আরেক ছাত্রলীগ কর্মী ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী ইফতেখার আহম্মেদ রানাকে হলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। হলের বৈধ শিক্ষার্থী না হওয়ায় তার হলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। বহিষ্কৃতরা ছাত্রলীগ নেতা সুমন মিয়ার অনুসারী।
বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় তাদের হল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া আরেকজন হলের বৈধ ছাত্র না হওয়ায় তাকে হলে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
এদিকে এ ঘটনাটির অধিক তদন্তের জন্য বন ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ জেড এম মঞ্জুর রশিদকে আহ্বায়ক করে তিন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেইশন এন্ড কমিউনিকেইশন টেকনোলজির সহকারী অধ্যাপক আহসান হাবীব, বন ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইফুজ্জামান ভূঁইয়া।
উল্লেখ্য, গত ২২ ফেব্রেুয়ারি শাহপরান হলের এক আবাসিক ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী মো. দেলোয়ার হোসেনকে হল থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠে সাদ্দাম হোসেন পিয়াসসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় হলের প্রভোস্ট বরাবর একটি অভিযোগ পত্র জমা দেন ভুক্ত ভোগী শিক্ষার্থী। পরে ঘটনাটি তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট জমা দেয় হল কর্তৃপক্ষ।
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় ওরসগামী একটি পিকআপ উল্টে তিন নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৮ জন। গতকাল বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কের আনালিয়াবাড়ী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া লালমনিরহাটে ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হয়েছেন। কুমিল্লার মুরাদনগরে মাটিবাহী ট্রাক্টরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন, মাগুরায় স্থানীয়ভাবে নির্মিত নাটা গাড়ির ধাক্কায় এক যুবক এবং দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে কুকুরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে গিয়ে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের চালক নিহত হয়েছে। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে
টাঙ্গাইলে পিকআপ উল্টে ৩ নারী নিহত : কালিহাতী উপজেলায় পিকআপ উল্টে নিহত নারীরা হলেন জামালপুর সদর উপজেলার গান্দাইল এলাকার মৃত গাদুগানের মেয়ে শাহারা ওরফে শাহানা বেগম (৬০), পেচামানিক এলাকার মাহতাব আলীর মেয়ে নুর জাহান (৫০) এবং টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার গৌরাং এলাকার মৃত জাবেদ আলীর মেয়ে ফিরোজা বেগম (৬০)। এ দুঘর্টনায় আহতরা সবাই জামালপুর সদর উপজেলার গান্দাইল ও পেচামানিক এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, জামালপুর থেকে ছেড়ে আসা একটি পিকআপ ২০ যাত্রী নিয়ে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ওরসে যাচ্ছিল। পিকআপটি কালিহাতী উপজেলার আনালিয়াবাড়ী এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিন নারী নিহত হন। আহত অন্তত ১৮ জনকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লালমনিরহাটে ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ২ : লালমনিরহাটের ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার দুই যাত্রী নিহত হয়েছে। এতে আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়কে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের বুড়িরবাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভাণ্ডার ইউনিয়নের জমিদারবাড়ি এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে নবিউল ও অটোচালক সদর উপজেলার বড়বাড়ি ইউনিয়নের খেদাবাগ এলাকার মজিবরের ছেলে রেজাউল করিম (৫০)।
লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, লালমনিরহাট থেকে একটি অটোরিকশা সাত-আটজন যাত্রী নিয়ে লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়ক হয়ে বড়বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। পথে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের বুড়িরবাজার এলাকায় অটোরিকশাটিকে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক ধাক্কা দেয়। এতে অটোরিকশার চালক ও যাত্রী রবিউল ঘটনাস্থলেই মারা যান। লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে আহত অন্যদের চিকিৎসা চলছে। ট্রাকটি আটক করে পুলিশের হাতে দিয়েছে স্থানীয়রা।
মুরাদনগরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২ : কুমিল্লার মুরাদনগরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক প্রবাসী ও মোটরসাইকেল মিস্ত্রি নিহত হয়েছে। গতকাল রাত ৮টার দিকে মুরাদনগর-ইলিয়টগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের জাহাপুর ইউনিয়নের শুশুণ্ডা এলাকায় মাটিবাহী ট্রাক্টরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বজরিখোলা গ্রামের মৃত ইসমাইল মুন্সির ছেলে রুমানিয়া প্রবাসী রিয়াদুল হাসান রাসেল (২৬) ও কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার লক্ষীপুর (ইলিয়টগঞ্জ) গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে মোটরসাইকেল মিস্ত্রি মোশারফ হোসেন (২৬)।
নিহত রিয়াদুলের খালাতো ভাই মহসিন জানান, রিয়াদুল রুমানিয়া প্রবাসী। তিনি দুই মাস আগে ছুটিতে দেশে আসে। দুপুরে রিয়াদুল ও তিনি মোটরসাইকেলে মুরাদনগরে একটি চাকরির বিষয়ে কথা বলতে যান। কাজ শেষে ফেরার পথে তাদের মোটরসাইকেলটি নষ্ট হয়ে যায়। পরে রিয়াদুল ফোন করে ইলিয়টগঞ্জ থেকে তার বন্ধু মোটরসাইকেল মিস্ত্রি মোশারফকে ডেকে আনে। এরপর তারা মোটরসাইকেলের কিছু সরঞ্জাম আনতে বাখরাবাদ বাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। তাদের দেরি দেখে তিনি রিয়াজুলের মোবাইলে ফোন দিলে কেউ একজন সেটি রিসিভ করে জানায় তারা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে।
মাগুরায় নাটা গাড়ির ধাক্কায় যুবক নিহত : মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় সিদ্দিকের মোড়ে নাটা গাড়ির ধাক্কায় রিপন শেখ (৩৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গতকাল বেলা ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। রিপন খুলনার ফুলতলা এলাকার নুর মহম্মদ শেখের ছেলে। তিনি একটি ফুড কোম্পানিতে চাকরির সুবাদে মাগুরা শহরের স্টেডিয়াম পাড়ায় বসবাস করতেন।
নিহতের স্ত্রী লাভলি বেগম ও সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ১২টার দিকে দোয়ারপাড় এলাকার সিদ্দিকের মোড়ে দোকানে খাদ্যপণ্য ডেলিভারি দেওয়ার জন্য কোম্পানির ভ্যানের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন রিপন। এ সময় দ্রুতগতির একটি নাটা গাড়ি ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নাটা চালক পালিয়ে গেলেও গাড়িটি জব্দ করেছে পুলিশ।
হিলিতে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক উল্টে চালক নিহত : দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে কুকুরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক উল্টে গিয়ে এর চালক মিজানুর রহমান (৩২) নিহত হয়েছেন। গতকাল দুপুরে উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া সড়কের খট্টা মাধবপাড়া ইউনিয়নের হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের বটতলী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মিজানুর উপজেলার খট্টাগ্রামের আইনুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুরের দিকে মিজানুর রহমান ইজিবাইক চালিয়ে বাড়ি থেকে ডাঙ্গাপাড়া বাজারের দিকে যাচ্ছিল। পথে হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের বটতলী এলাকায় কুকুরের সঙ্গে ইজিবাইকের ধাক্কা লাগে। এতে ইজিবাইকটি উল্টে গিয়ে অটোবাইকের নিচে চাপা পড়ে মিজানুর ঘটনাস্থলেই মারা যান।
হাকিমপুর থানার ওসি আবু সায়েম মিয়া বলেন, কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লালমনিরহাটে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম-এবিটির পাঁচ জঙ্গিকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে আদালত তাদের প্রত্যেকের ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাস করে কারাদ- দিয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে লালমনিরহাট আদালতের বিশেষ ট্রাইবুন্যাল-১-এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. মিজানুর রহমান এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তর মুশরত মদাতী এলাকার হাসান আলী ওরফে লাল, তার ভাই আবু নাঈম মিস্টার, একই এলাকার আসমত আলী ওরফে লাল্টু আলী হোসেন ও একই উপজেলার চরভোটমারী এলাকার শফিউল ইসলাম সাদ্দাম।
লালমনিরহাট আদালত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হাই সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৮ সালে ৩০ অক্টোবর রংপুর র্যাব ১৩-এর একটি দল অভিযান চালিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তর মুশরত মদাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে গোপন বৈঠককালে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে আটক করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি পিস্তল, চারটি গুলি, দুটি ম্যাগাজিন, গান পাউডার, বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং বেশ কিছু লিফলেট ও জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন র্যাব-১৩-এর এসআই সুবির বিক্রম দে।
নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নাম পরিবর্তন করে আনসার আল ইসলাম নামে সক্রিয়। জঙ্গি সংগঠনটির পাঁচ সদস্যের সাজা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমনিরহাট দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আকমল হোসেন আহমেদ।
ভাড়া করা বিমানে উড়িয়ে নিয়েও মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রথম ম্যাচে একাদশে রাখল না দিল্লি ক্যাপিটালস। আসরে তাদের শুরুটাও ভালো হলো না। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হারল মোস্তাফিজবিহীন দিল্লি।
ঘরের মাঠে ৫০ রানের জয়ে আসর শুরু করল লক্ষ্ণৌ। ১৯৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দিল্লি থামে ৯ উইকেটে ১৪৩ রানে। ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান খরচায় ৫ উইকেট নিয়ে লক্ষ্ণৌয়ের জয়ের নায়ক মার্ক উড।
এদিন দিল্লির ব্যাটিং ছিল পুরো ফ্লপ। দলের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার ৪৮ বলে ৫৬ রান করেছেন। পাশাপাশি রাইলি রোশো ২০ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলেন। কিন্তু বাকিরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ফলে যা হরার তাই হলো ম্যাচের ফল।
এর আগে স্বাগতিক দলের হয়ে ঝড় তোলেন কাইল মেয়ার্স। এই ক্যারিবীয়ান ৩৮ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন। ২টি চারের সঙ্গে হাঁকান ৭টি ছক্কা। এ ছাড়া নিকোলস পুরান ২১ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলেন। সুবাদে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৯৩ রানের পুঁজি গড়ে লক্ষ্ণৌ।
গত অক্টোবরের পর আর্সেনালের জার্সিতে প্রথম গোলের দেখা পেলেন গাব্রিয়েল জেসুস। তার আবার জোড়া গোল। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের জ্বলে ওঠার দিনে লিডস ইউনাইটেডকে উড়িয়ে ম্যানচেস্টার সিটির চেয়ে ফের আট পয়েন্টে এগিয়ে গেল আর্সেনাল।
ঘরের মাঠে শনিবার প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ৪-১ গোলে জিতে আর্সেনাল। স্পট কিকে দলকে প্রথম এগিয়ে দেন জেসুস। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বেন হোয়াইট ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। এর খানিক পরই জোড়া গোল পূর্ণ করেন জেসুস।
এরপর লিডস একটি গোল শোধ করলেও গ্রানিত জাকার গোলে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।
আন্তর্জাতিক বিরতি থেকে ফেরার পর এটিই প্রথম ম্যাচ ছিল আর্সেনালের। বিরতিতে যাওয়ার আগে নিজেদের মাঠে একই ব্যবধানে তারা হারিয়েছিল ক্রিস্টাল প্যালেসকে।
এই জয়ে ২৯ ম্যাচে ৭২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল গানাররা। ২০০৩-০৪ মৌসুমের পর প্রথমবার প্রিমিয়ার লিগ জয়ের স্বপ্ন দেখছে আর্সেনাল। তাদের সঙ্গে গত লিগের চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট ব্যবধান ৮।
গানারদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে ৬৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে সিটি। একই দিন তারাও নিজেদের মাঠে লিভারপুলকে উড়িয়ে দিয়েছে ৪-১ গোলে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। তাকে প্রায়ই বিভিন্ন ভাইরাল ইস্যু নিয়ে ফেসবুক লাইভে কথা বলতে দেখা যায়। যুবলীগে পদ পেয়েও পরে অব্যাহতি পেয়েছেন। সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে দেশ রূপান্তরের সাথে মুখোমুখী হয়েছিলেন ব্যারিস্টার সুমন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আব্দুল্লাহ আল তোফায়েল।
সামাজিক যোগাযাগ মাধ্যমে আপনি যে ভিডিও আপলোড করেন এর প্রধান উদ্দেশ্য কি টাকা ইনকাম করা?
বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে টাকা ইনকামের সুযোগ আসার কয়েক বছর আগে থেকেই আমি ভিডিও আপলোড করি। আমার প্রথম যে কয়েকটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল তখন মনিটাইজেশন নামে কোন শব্দের সাথে আমরা পরিচিত ছিলাম না। আমার ফেসবুক থেকে যে ইনকাম হয়, ব্যারিস্টারি থেকে যে আয় হয় এবং বিদেশে থাকা আমার পরিবারের মানুষেরা যে টাকা পাঠান তার সব আমি মানুষের জন্য খরচ করি। এর প্রমাণ হিসাবে দেশে বিদেশে আমার নামে কিংবা আমার পরিবারের কারও নামে কোন ফ্ল্যাট নেই।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া স্যার ইস্যু নিয়ে আপনার অবস্থান কি?
স্যার ম্যাডাম মহোদয় এইগুলো নাম নাম মাত্র। আমার প্রশ্ন হচ্ছে কাজে কতটুকু এগোলাম আমরা। একজন মানুষ যে কাজে সরকারী অফিসে যান সেই কাজ টা যদি ঠিক মত হয় তাহলে কি নামে ডাকলেন সেটা কোন সমস্যা বলে আমার কাছে মনে হয়না। এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা কেবল সময়ের অপচয় মাত্র।
আপনি নমিনেশন চাইবেন আওয়ামী লীগ থেকে?
আমি আওয়ামী লীগ থেকে নমিনেশন চাইব। দল যদি আমাকে নমিনেশন দেয় আমি নির্বাচন করব। না হলে দল যাকে নমিনেশন দেবে আমি তার হয়ে কাজ করব।
যুবলীগ থেকে আপনাকে বহিষ্কারের পর আপনার কেমন লেগেছিল, আপনার অবস্থানে কি আপনি অনড়?
আমার কাছে একদম খারাপ লাগেনি। নেতা যাকে ইচ্ছে নিতে পারেন, আবার প্রয়োজন না হলে ফেলে দিতে পারেন। আমাকে যখন যুবলীগে নেওয়া হয়েছিল, তখন হয়তো আমাকে প্রয়োজন ছিল, এখন মনে হয় হয়তোবা আমি যেভাবে কাজ করি তা উনাদের পছন্দ না। তবে যে বক্তব্য দিয়েছিলাম সে বিষয়ে আমি অনড়। একজন ওসি কখনো নির্দিষ্ট এমপি কে খুশি করার জন্য স্লোগান দিতে পারেন না।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আপনাকে কথা বলতে কম দেখা যাচ্ছে কেন ?
দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি তা বিশ্ব পরিস্থিতির অংশ। শ্রীলংকা, পাকিস্তানের মত দেশ দেউলিয়া হয়ে গেছে। আমরা টিকে আছি। আমাদের অধিকাংশ জিনিস আমদানি করতে হয়। তাই এ সমাধান আমাদের হাতে নেই। তবে আমি দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি নিয়ে কথা না বললেও দুর্নীতি নিয়ে কিন্তু প্রতিদিন কথা বলতেছি। দুর্নীতি আর টাকা পাচার যদি বন্ধ করা যেত তাহলে জিনিস পত্রের দাম এত বাড়ত না। তাই বলতে পারেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা আমার অন্য সবকিছুকে কাভার করে।
শোনা যায় অনেকেই রাজনীতি করে কানাডায় বাড়ি কিনছেন, এ বিষয়ে আপনি কি বলবেন?
রাজনীতিকে এখন ওনারা ধারণ করেন না। এমপি পদ টাকে তারা আরও সম্পদ উপার্জনের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করছেন। ওনারা মনে করেন পরেরবার এমপি মন্ত্রী হতে পারেন বা না পারেন টাকা বানিয়ে ফেলি যাতে আর অসুবিধা না হয়।
আব্দুস সালাম মুর্শেদিকে নিয়ে বানানো ভিডিও সরিয়ে ফেলতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন।এটা কি আপনার পরাজয়?
সালাম মুর্শেদিকে নিয়ে আমি অনেকগুলো ভিডিও বানিয়েছি। এর মধ্যে মাত্র ২টা ভিডিও সড়াতে হয়েছে। মামলা চলাকালীন সময়ে মামলার মেরিট যেন নষ্ট না হয় এর জন্য ভিডিও সড়াতে বলা হয়েছে। এটাকে আমি পরাজয় মনে করি না।
বর্তমান সরকারকে অনেকে অনির্বাচিত বলেন, এ বিষয়ে আপনার অবস্থান কি?
সংবিধান মেনে একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। প্রক্রিয়া নিয়ে অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে। রাজনৈতিক বিষয়ে যা ঘটেছে বা ঘটছে তা সবাই দেখতে পাচ্ছেন। এ নিয়ে আমার আলাদা করে বলার কিছু নেই।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুতে আপনার অবস্থান কি?
পারস্পরিক আস্থার অভাব হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের দেশের রাজনীতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওপর বিশ্বাস কতটুকু সেটাও ভেবে দেখতে হবে। একটা সময় আওয়ামী লীগ এই দাবিতে আন্দোলন করেছিল তখন কিন্ত বিএনপি এই দাবি মেনে নেয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিলেই যে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বিষয়টা এমন নয়।
রাজনীতির চেয়ে সামাজিক ইস্যুতে আপনাকে বেশি কথা বলতে দেখা যায়। এটা কি সুবিধাজনক অবস্থান?
একজন সাধারণ মানুষ হিসাবেই আমার রাজনীতিতে আসা। আমার বাবা বা অন্য কেউ এমপি মন্ত্রী নয়। যে আমি এমনি এমনি রাজনীতিতে আসছি। আমি সামাজিক কাজ করতে করতে এ জায়গায় আসছি। আমি যদি রাজনীতিতে পুরোদমে প্রবেশ করি তখনও দেখবেন আমি সামাজিক বিষয় নিয়ে কথা বলব কাজ করব।
সাকিব আল হাসানকে নিয়ে আপনার অবস্থান?
একটা ভিডিওতে তিন লাখ টাকা সাকিবকে দেওয়া নিয়ে আমার মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে সোনারগাঁ হোটেলের লবিতে সাকিব আমাকে মারতে আসেন। আমি মনে করি, সাকিবকে কোটি মানুষ অনুসরণ এখন তিনি যদি জুয়ার এম্বাসেডর হন টাকার লোভে মার্ডারের আসামীর দাওয়াতে যান তাহলে আমাদের দুর্ভাগ্য।
ফুটবল ফেডারেশন নিয়ে আপনার মন্তব্য কি?
আমি সরাসরি বলব বাংলাদেশের ফুটবল ধ্বংস করার কারিগর কাজী সালাউদ্দীন ও আব্দুস সালাম মোর্শেদি। তারা ফুটবল কে এগিয়ে নিয়ে যেতে না পারলেও নিজেরা এগিয়ে গিয়েছেন। ফুটবলকে সিঁড়ি করে তারা নিজেকে সমৃদ্ধ করছেন।
ফুটবল নিয়ে অনেক আগ্রহ আপনার , অগ্রগতি কতদূর?
আমার ক্লাবের অগ্রগতি অনেক। গত দেড় বছরে ১২ জন খেলোয়াড় ঢাকার বিভিন্ন লীগে খেলছেন। ৩ জন খেলোয়ার ব্রাজিলে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছেন। পাশাপাশি সি টিমে থাকা ২/৩ জন ( যাদের বয়স ১২-১৩) আগামীতে জাতীয় দলে খেলবেন এটা আমি চ্যালেঞ্জ করে বলে দিতে পারি।
বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করায় বিদ্যুৎ বিভাগের ১২টি প্রতিষ্ঠান নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে কর্মীদের ‘ইনসেনটিভ বোনাস’ প্রদান করলেও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ক্ষেত্রে এ সুবিধা দিতে অপারগতা জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ বিরাজ করছে।
প্রতি অর্থবছরে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো কী কী কাজ করবে তা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে অন্য সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা দলিল হলো বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা জোরদার করার পাশাপাশি সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতেই এ চুক্তি করা হয়।
সূত্রমতে, বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও কোম্পানির ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য গত ২৯ ডিসেম্বর এক সভায় ইনসেনটিভ বোনাসের সুপারিশ করা হলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী তা অনুমোদন দেয়। গত ২ জানুয়ারি বিদ্যুৎ বিভাগের সহকারী সচিব মোহাম্মদ লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এপিএ অর্জনের সামগ্রিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ১৩টি প্রতিষ্ঠানকে ইনসেনটিভ বোনাস প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শতকরা ৯৯ দশমিক ৩২ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। প্রতিষ্ঠানটিকে তার কর্মীদের ১ দশমিক ৫টি ইনসেনটিভ বোনাস দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া ডিপিডিসি এবং ওজোপাডিকোকে ১ দশমিক ৫টি ইনসেনটিভের সুপারিশ করা হয় যাদের প্রাপ্ত নম্বর যথাক্রমে ৯৬ দশমিক ৬৯ এবং ৯৫ দশমিক ২৩। নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড এবং পিজিসিবি এ চারটি প্রতিষ্ঠানকে ১ দশমিক ২৫টি ইনসেনটিভ বোনাসের সুপারিশ করা হয়েছে। ১টি ইনসেনটিভ বোনাসপ্রাপ্তরা হলো বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ড (৯২.০৮), নেসকো (৯২.২৫) এবং আরপিসিএল (৯৩)। এ ছাড়া ডেসকো, ইজিসিবি এবং বি-আর পাওয়ারজেন শূন্য দশমিক ৫টি ইনসেনটিভ বোনাসের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পরিচালনা বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে সুপারিশ অনুযায়ী কর্মীদের বোনাস প্রদান করে। তবে পিডিবির কর্মীরা এখনো ইনসেনটিভ বোনাস পাননি। আদৌ তা পাবেন কি না তা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
ইনসেনটিভ বোনাস পরিশোধের অনুমোদনের প্রস্তাব অর্থ বিভাগে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে গত ২ জানুয়ারি পিডিবির সচিব মোহাম্মদ সেলিম রেজা বিদ্যুৎ বিভাগে চিঠি পাঠান। এতে বলা হয়, ১টি ইনসেনটিভ বোনাস হিসেবে পিডিবির প্রত্যেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ পিডিবির রাজস্ব বাজেটে সংস্থান আছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে অর্থ বিভাগের এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানোর পর গত ২১ মার্চ তা নাকচ করে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ বিভাগ তাদের চিঠিতে বলেছে, এপিএ অর্জনের জন্য কর্মসম্পাদন সূচক রয়েছে, যা সরকারের প্রতিটি সংস্থার ‘রুটিন’ কাজ। রুটিন কাজের জন্য ইনসেনটিভ বোনাস দাবি করা যৌক্তিক নয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, দেশে অনেক সংস্থা আছে, যাদের বেতনভাতাসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় সরকারের অনুদানে পরিচালিত হয়। এসব সংস্থা বা দপ্তরগুলো এপিএ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে থাকে। এখন যদি পিডিবিকে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বোনাস দেওয়া হয়, তাহলে প্রতিটি সংস্থা থেকে একই দাবি আসবে। এতে সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা বিঘিœত হতে পারে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে পিডিবির ২০২১-২২ অর্থবছরের এপিএর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিপরীতে ইনসেনটিভ বোনাস প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করা হলো।
বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক সচিব ফাওজুল কবির খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, বিদ্যুৎ খাতের অগ্রগতি সন্তোষজনক না। তারপরও এ খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন কোম্পানি বা সংস্থাকে ইনসেনটিভ বোনাস দেওয়া যেতে পারে তাদের কাজের পারফরম্যান্স বিবেচনায়। শুধু পুরস্কার দিলেই হবে না। পাশাপাশি কেউ যদি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয় তাহলে শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে। তবেই কাজের গতি বাড়বে। বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে যদি ইনসেনটিভ বোনাসের কথা উল্লেখ থাকে তাহলে তারা যদি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে তবে এটা তাদের প্রাপ্য।
এ বিষয়ে পিডিবির একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, এর আগেও তারা এপিএর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে বোনাস পেয়েছেন। এবারও বোনাসের আশায় বাড়তি কাজ করেছেন। হঠাৎ বোনাস না পাওয়ার খবর শুনে সবার ভেতর চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
প্রতিষ্ঠানের দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিভাগের আওতাধীন সব কোম্পানি এমনকি পিডিবির সমমনা প্রতিষ্ঠান আরইবি তাদের পরিচালনা পর্যদের সিদ্ধান্তে অন্তত এক মাস আগে এ বোনাস প্রদান করেছে। তাদের কর্মীদের ওই টাকা খরচও হয়ে গেছে। আর আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে অনুমোদন চাওয়ার নিয়ম রক্ষা করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছি। অন্যরা পেলেও পিডিবির কর্মীরা কেন বঞ্চিত হবে? সবার জন্য একই নিয়ম থাকা দরকার।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে একজন নির্বাহী প্রকৌশলী দেশ রূপান্তরকে বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমাদের অনেক সময় অফিসের নির্ধারিত সময়ের বাইরেও কাজ করতে হয়। এ জন্য অনেক সময় পরিবারকে সময় দিতে পারি না। এরপরও যদি বোনাস থেকে বঞ্চিত করা হয় তাহলে কর্মীরা বাড়তি কাজ করতে উৎসাহ হারাবে।’
ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ভাড়া ৫৩ হাজার টাকা। এ রুটের অন্যসব এয়ারলাইনস আরও কম দামে যাত্রী বহন করলেও বিমান করে না। খালি যাবে, তাও কম ভাড়ায় যাত্রী নেয় না বিমান।
ঢাকা থেকে বিমান কত বেশি ভাড়া নেয় তা স্পষ্ট বোঝা যায় নিকটতম প্রতিবেশী শহর কলকাতার দিকে চোখ বোলালে। কলকাতার নেতাজি সুভাষ বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানের তিন ভাগের এক ভাগ ভাড়া দিয়ে কুয়ালালামপুর যাওয়া যায়।
ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে উড়ে যাওয়া এয়ারলাইনসগুলোর মধ্যে বিমানের ভাড়া বেশি। বিমানের ভাড়া শুধু বেশিই নয়, এই এয়ারলাইনস ভাড়া বাড়ানোর নেতৃত্ব দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রথমে বিমান ভাড়া বাড়ায় পরে প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য এয়ারলাইনসগুলো সেই সুযোগ নেয়।
অন্য এয়ারলাইনসের তুলনায় বিমানের ভাড়া বেশি এ অভিযোগ ছিল মূলত জনশক্তি রপ্তানিকারক ও ট্রাভেল এজেন্টদের। তাদের সঙ্গে সম্প্রতি যোগ হয়েছেন সাধারণ যাত্রীরাও। কুয়ালালামপুর, রিয়াদ বা জেদ্দার মতো বাংলাদেশি শ্রমিকপ্রবণ শহরগুলোতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ব্যবহারকারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, দেশের বেসরকারি টেলিভিশন এমনকি খবরের কাগজগুলোতে যেচে এসে বলে যাচ্ছেন বিমান অনেক বেশি ভাড়া নিচ্ছে।
কীভাবে বিমান ভাড়া বাড়ায় জানতে চাইলে একজন জনশক্তি রপ্তানিকারক জানান, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স অর্থনীতিতে কী ভূমিকা রাখে তা নতুন করে বলার দরকার নেই। তাদের কর্মস্থলে পাঠাতে বা ফিরিয়ে আনতে বিমানের বিশেষ কোনো উদ্যোগ নেই। বিমান কোনো দিন কোনো ঘোষণায় বলেনি ‘এ উদ্যোগটি শুধু রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য’। এই শ্রমজীবীদের জন্য বিমানের কোনো ছাড় নেই। বরং যখন যে ‘আদম বাজার’ চাঙ্গা হয় তখন সেখানে ভাড়া বাড়িয়ে দেয় বিমান। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় প্রচুর শ্রমিক যাচ্ছে। সেখানে ভাড়া বাড়িয়েছে সংস্থাটি। শ্রমিক এবং ওমরাহর কারণে জেদ্দার টিকিটই পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলেও তা অনেক বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়।
এ অবস্থা থেকে বিমান কীভাবে বের হয়ে আসতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিমান নানা পলিসি নিতে পারে। বিকল্প রুট চালু করতে পারে। ট্রানজিট দিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে নিতে পারে। এতে যাত্রীরা কম দামে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ যাত্রী যেহেতু শ্রমজীবী তাই তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর বিষয়টিই গুরুত্বপূর্ণ। কত সময় ট্রানজিট নিয়ে গেল তা মুখ্য নয়। ঠিক এ জায়গাটিতেই এগিয়ে আছে আমাদের নিকটবর্তী শহর কলকাতা। ঢাকার তুলনায় অনেক কম দামে কলকাতার যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছতে পারেন। সেখান থেকে পরিচালিত এয়ারলাইনসগুলো সরাসরি বা এক-দুটি ট্রানজিট দিয়ে অনেক কমে যাত্রী বহন করে। বিমান কেন পারে না সেই প্রশ্নটি কেউ তুলছে না।
এক সপ্তাহ পর আগামী ৪ এপ্রিল ফ্লাই (যাত্রা) করার জন্য গতকাল সোমবার দুপুরে ঢাকা কুয়ালালামপুর রুটের বিমান টিকিটের দাম ছিল ৫৩ হাজার ২৭ টাকা। থাই এয়ারওয়েজ ৪১ হাজার ৭৬ টাকায়, ইন্ডিগো এয়ার ৪৩ হাজার ৬৪৪, ইউএস-বাংলা ৪৭ হাজার ১৯, এয়ার এশিয়া ৪৯ হাজার ৪৪৫, মালিন্দো এয়ারওয়েজ ৫৯ হাজার ১৯০ এবং মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের ভাড়া ছিল ৬১ হাজার ৪৭২ টাকা।
অথচ কলকাতা থেকে এয়ার এশিয়া একই দিনে একই গন্তব্যে নন-স্টপ ফ্লাইটে মাত্র ১৭ হাজার ৩৭৯ টাকায় পৌঁছে দেওয়ার অফার ছিল অনলাইনে। এয়ারক্রাফটের মানভেদে একই দিনে বিভিন্ন সময়ে টিকিটটির দাম ২৬ হাজার টাকা পর্যন্ত ছিল। ইন্ডিগো এয়ার চেন্নাইয়ে একটি স্টপেজ দিয়ে ২০ হাজার ৩৩৭ টাকায় অফার দেয়। কলকাতা থেকে কুয়ালালামপুরে যাওয়ার জন্য এয়ার ইন্ডিয়ার টিকিটের দাম ছিল ২৯ হাজার ৬৩৯ টাকা। মুম্বাই এবং সিঙ্গাপুরে দুই স্টপেজ দিয়ে এয়ারলাইনসটি এ ভাড়া নির্ধারণ করে। মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনস মুম্বাইয়ে এক স্টপেজ দিয়ে কলকাতা থেকে ৫৪ হাজার ৩২৬ টাকায় যাত্রীদের নিয়ে যায় কুয়ালালামপুর।
ঢাকা রিয়াদ রুটে আগামী ৩ এপ্রিলের এয়ার অ্যারাবিয়ার ভাড়া ৫৪ হাজার ৯৫১ টাকা। শারজায় একটি স্টপেজ দিয়ে তারা যাত্রীকে গন্তব্যে পৌঁছে দেবে। কলম্বোতে একটি স্টপেজ দিয়ে শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনস রিয়াদ নিয়ে যাবে ৫৬ হাজার ৫৪৫ টাকায়। জাজিরা কুয়েত সিটিতে এক স্টপেজ দিয়ে ৬৫ হাজার টাকায়, গালফ এয়ার বাহরাইনে এক স্টপেজ দিয়ে ৬৭ হাজার ৬৭৭ টাকায়, সৌদিয়া এয়ারলাইনস ৭১ হাজার ৭১১ টাকায় সরাসরি, কুয়েত এয়ারওয়েজ কুয়েত সিটিতে এক স্টপেজ দিয়ে ৭৩ হাজার ২৪৭ টাকায়, ওমান এয়ার মাস্কটে এক স্টপেজ দিয়ে ৭৪ হাজার ২৩২ টাকায়, ফ্লাই দুবাই দুবাইয়ে এক স্টপেজ দিয়ে ৭৪ হাজার ২৬৩ টাকায়, কাতার এয়ারওয়েজ দোহায় এক স্টপেজ দিয়ে ৮২ হাজার ৫৫৭ টাকায়, এমিরেটস দুবাইয়ে এক স্টপেজ দিয়ে ৮৪ হাজার ২৩১ টাকায় রিয়াদ নিয়ে যাচ্ছে। আর ঢাকা-রিয়াদ রুটে বিমানের ভাড়া ১ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৭ টাকা। ৩ এপ্রিল কলকাতা থেকে রিয়াদ যাওয়ার ভাড়াও ঢাকা রিয়াদের তুলনায় অনেক কম।
কলকাতা থেকে মাত্র ৩৫ হাজার ৩২৪ টাকায় রিয়াদ নিয়ে যাচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়া। মুম্বাইতে মাত্র একটি স্টপেজ দিয়ে তারা যাত্রীদের সেখানে পৌঁছে দিচ্ছে। ওইদিন সময়ভেদে তাদের ভাড়া ৪১ হাজার টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করছে। এক স্টপেজ দিয়ে ফ্লাই দুবাই নিয়ে যাচ্ছে ৪১ হাজার ৫৬০ টাকায়। ইতিহাদ এয়ারওয়েজের ভাড়া ৪১ হাজার থেকে ৪২ হাজার টাকা। এয়ার ইন্ডিয়া দিল্লিতে একটি স্টপেজ দিয়ে ভাড়া নিচ্ছে ৪১ হাজার ৪১৯ টাকা। গালফ এয়ার মুম্বাই এবং বাহরাইনে দুই দফা স্টপেজ দিয়ে নিচ্ছে ৪৫ হাজার ৫৮৭ টাকা। ইন্ডিগো এয়ার দিল্লিতে এক স্টপেজ দিয়ে ভাড়া নিচ্ছে ৪৮ হাজার ১৮৭ টাকা। দুবাইতে এক দফা বিরতি দিয়ে এমিরেটস কলকাতা থেকে রিয়াদের ভাড়া নিচ্ছে ৫৪ হাজার ৬৪৬ টাকা। কাতার এয়ারওয়েজ ৫৯ হাজার ১৩৮ টাকায় এবং এমিরেটস ৬০ হাজার ১০৮ টাকায় একটি বিরতি দিয়ে কলকাতা থেকে রিয়াদ নিয়ে যাচ্ছে।
এসব রুটে বিমানের উচ্চমূল্য নির্ধারণই ভাড়া বৃদ্ধির মূল কারণ বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। এর সঙ্গে আছে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর ফ্লাইট কমানো এবং উচ্চ দামের সুযোগ নিতে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের কারসাজি এবং ২০২৩ সালে ডলারের বর্ধিত বিনিময় দর। জেট ফুয়েলের দাম বৃদ্ধিও টিকিটের দাম বৃদ্ধির কারণ।
বিমানের এমডি শফিউল আজিম বিমান ভাড়া বৃদ্ধিতে নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়টি না মানলেও রিক্রুটিং এজেন্ট, ট্রাভেল এজেন্ট বা হজ এজেন্সির তরফ থেকে বরাবরই এ অভিযোগ করা হচ্ছে। অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সাবেক মহাসচিব মাজহার ইসলাম ভূঁইয়া দেশ রূপান্তরকে বলেন, যখন বিমান ভাড়া বাড়ায় তখন অন্য এয়ারলাইনসগুলোও ভাড়া বাড়ায়। বিমান যখন বাড়ায় তখন কোনো সীমা মানে না। তারা ইচ্ছামতো ভাড়া বাড়ায়।
৩৫ বছরের পেশাজীবনের কথা উল্লেখ করে মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিমানের ভাড়ার সঙ্গে কুলাতে পারছি না। একজনকে বাইরে পাঠানোর সব খরচ অনুমান করা যায়, বিমান ভাড়া ছাড়া। কারণ ৫ ডলারের ভিত্তিভাড়া তারা ৩০ ডলার থেকে শুরু করে। বিমান ধারাবাহিকভাবে জ্বালানি খরচ বৃদ্ধির কথা বলে। কিন্তু জ্বালানি খরচ কমছে। যখন কমে তখন বিমান ভাড়া কমায় না। বিমান যেভাবে ভাড়া বাড়ায় তাতে ব্যবহারকারীদের নাভিশ্বাস উঠেছে। এ অবস্থায় সরকারের হস্তক্ষেপ দরকার বলে তিনি মনে করেন।
বিমানের ভাড়া প্রায় মহামারীর সময়ের মতো অবস্থায় চলে গেছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্টরা । বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে শ্রম আমদানিকারক দেশের গন্তব্যগুলোতে ভাড়া বেড়েছে। ঢাকা-জেদ্দা রুটে টিকিট পাওয়াই সৌভাগ্য। এ মাসের শুরুতে যে ভাড়া ছিল ৫০ হাজার তা এখন ৮০ হাজারেও পাওয়া যাচ্ছে না।
বিমান ভাড়া বৃদ্ধির সবচেয়ে বেশি খেসারত দিচ্ছেন প্রবাসী শ্রমিকরা। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি)-ওয়েবসাইট তথ্য দিচ্ছে, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে ২ লাখ ১৩ হাজার শ্রমিক বিদেশে গেছে। যাদের বেশিরভাগই গেছেন মালয়েশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে।
গত বছরের শেষদিকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলা হয়। বাজার নতুন করে শুরু হওয়ার পর ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে টিকিটের দাম আকস্মিকভাবে বেড়েছে। ব্যাংকক, কলম্বো বা অন্যান্য শহরে ট্রানজিট ফ্লাইট দিয়েও অনেক এয়ারলাইন কুয়ালালামপুরে যাত্রী বহন করছে। এতে টিকিটের দাম কমেছে ৩০-৪০ হাজার টাকা।
এবার হজ প্যাকেজে বিমান ভাড়া বেড়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এ টাকা বাড়িয়ে হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর সংশ্লিষ্টরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। হজযাত্রী এবং হাবের ধারাবাহিক বিরোধিতা উপেক্ষা করে বিমান ভাড়া বাড়িয়ে যচ্ছে। এবারও বাড়িয়েছে। গত ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হজবিষয়ক এক সভায় হাবের সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াকুব শরাফতি হজে বিমান ভাড়া কমানোর অনুরোধ করেন। কিন্তু সেখানে উপস্থিত বিমানের এমডি ভাড়া কমানোর সুযোগ নেই বলে জানান। বৈঠকে হজে কেন বিমান ভাড়া বাড়নো হলো তার যৌক্তিকতা জনসমক্ষে তুলে ধরার নির্দেশনা দেওয়া হয় এমডিকে।
ইয়াকুব শরাফতি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করেছি হজের বিমান ভাড়া কমানোর জন্য। বিমান কোনোভাবেই কমাতে রাজি হয়নি।’
বিমানের বর্ধিত ভাড়ার সুযোগে সৌদিয়া দেশ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে যাচ্ছে। কারণ বিমান যে ভাড়া নির্ধারণ করে সৌদিয়াও একই ভাড়ায় হজযাত্রী বহন করে। হজের চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশি হজযাত্রীদের অর্ধেক বহন করবে সৌদি আরবের এয়ারলাইনস।
আটাবের সাবেক মহাসচিব মাজহার ইসলাম ভূঁইয়া জানান, প্রধান এয়ারলাইনসগুলোর পাশাপাশি এয়ার অ্যারাবিয়ান, ফ্লাই দুবাই, সালাম এয়ারের মতো বাজেট ক্যারিয়ার বলে পরিচিত সংস্থাগুলো তাদের প্রিমিয়াম প্রতিযোগীদের তুলনায় কম ভাড়া নেওয়ার কথা। অথচ কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের চেয়ে বেশি নিচ্ছে। বাজেট ক্যারিয়ার বলে পরিচিত সংস্থাগুলোও তাদের প্রিমিয়াম প্রতিযোগীদের চেয়ে মাত্র ৫০০ বা ১০০০ টাকা কম নিচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম প্রতিযোগীদের চেয়ে বেশি ভাড়া নিচ্ছে। অথচ সরকারের কাছে তাদের প্রজেকশন ছিল তারা বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে অর্ধেক মূল্যে যাত্রী নেবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার মনিটরিং কম থাকায় তারা ইচ্ছেমতো ভাড়া নিচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
সময়ের আলোচিত চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। একাধারে উপস্থাপিকা, নায়িকা এবং সংগীতশিল্পীও। সিনেমার বাইরে তিনটি গান প্রকাশ পেয়েছে তার। সে ধারাবাহিকতায় এবারের ঈদে নতুন গান নিয়ে আসছেন তিনি।
গানের শিরোনাম ‘বুঝি না তো তাই’। বাঁধনের লেখা এ গানটির সংগীতায়োজন করেছেন বলিউড র্যাপার মুমজি স্ট্রেঞ্জার। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ফারিয়া। বাবা যাদবের কোরিওগ্রাফিতে ভিডিওতে অংশ নিয়েছেন ফারিয়া ও মুমজি। আসছে ঈদে উন্মুক্ত হবে গানটি। গানটি প্রকাশ করবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্কটেশ ফিল্মস।
সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে গানটির টিজার, যা দর্শকমহলে প্রশংসা কুড়াচ্ছে। এরমধ্যে সোমবার বিকেলে নিজের ফেসবুকে গান ভিডিওর দৃশ্যের একটি ছবি পোস্ট করেন এ গায়িকা। সেখানে ক্যাপশনে লিখেন, মাই হাইট ইজ ৫' ৩'' বাট অ্যাটিচিউড ৬' ১''।
গানটি প্রসঙ্গে নুসরাত ফারিয়া জানিয়েছিলেন, ‘নতুন এ গানটি বেশ আনন্দের সঙ্গে করেছি। আমার আগের তিনটি গানের মতো এটিও বেশ মজার। আমার বিশ্বাস এটি সবার পছন্দ হবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ‘পটাকা’ গানের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ঘরানার গানে প্রথম আত্মপ্রকাশ করেন নুসরাত ফারিয়া। এরপর ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রকাশ পায় ‘আমি চাই থাকতে’ ও ‘হাবিবি’। আসছে ঈদুল ফিতরে এ অভিনেত্রী গায়িকা হিসাবে চতুর্থবার হাজির হচ্ছেন দর্শক শ্রোতাদের সামনে।
দেশে ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভজি ইন্টারনেট সেবা চালু করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক। অন্য অপারেটর গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক একই সেবা চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে সব মোবাইল অপারেটরই দেশের বেশিরভাগ স্থানে ফোরজি সেবা চালু করেছে। আর সে হিসেবেই তারা ইন্টারনেট প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করেছে। কিন্তু গ্রাহকরা ফোরজি ইন্টারনেট কিনলেও দেশের অনেক এলাকায় টুজি-থ্রিজি’র সেবা পাচ্ছেন। তারা অপারেটর কোম্পানিগুলোকে এ ব্যাপারে বারবার অভিযোগ জানালেও এর সুরাহা হচ্ছে না।
জানা গেছে, রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে মোটামুটিভাবে গ্রাহকরা ফোরজি সেবা পাচ্ছেন। তবে এসব এলাকায়ও অনেক সময় ফোরজি থাকে না, থ্রিজিতে নেমে আসে নেটওয়ার্ক। তবে জেলা পর্যায়ে বেশিরভাগ সময়েই থাকে থ্রিজি। আর মফস্বল ও গ্রামাঞ্চলে বেশিরভাগ সময় সেই থ্রিজিও থাকে না, তখন টুজি নেটওয়ার্কই ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে ইন্টারনেট প্যাকেজ যথাযথভাবে থাকার পর তা কাজ করে না, বাফারিং হয়। এতে গ্রাহকরা ত্যক্তবিরক্ত হয়ে উঠছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো সারা দেশের ব্যবসা একত্রে হিসাব না করে এলাকাভিত্তিক ব্যবসার হিসাব-নিকাশ করার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তারা দেখেন, কোন এলাকায় তাদের গ্রাহক সংখ্যা কত, সেখানে কত সিমে ইন্টারনেট চালু আছে। যদি দেখা যায়, তাদের হিসাব মতে তা সন্তোষজনক আছে তাহলে সেখানে ফোরজি সেবা চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বহাল রাখে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক টাওয়ার নির্মাণ করে। কিন্তু যদি দেখে সন্তোষজনক গ্রাহক নেই তাহলে সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় না, এতে সেই এলাকায় ফোরজি পাওয়া যায় না। অথচ শহর এলাকাগুলোতে তারা বেশি ব্যবসা করলেও সেটাকে হিসাবে ধরে না। কিন্তু মফস্বল এলাকা থেকে কল বাবদ প্রয়োজনের বেশি ব্যবসা হলেও তা ইন্টারনেটের সঙ্গে সমন্বয় করে না।
মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিগুলোর ফেসবুক পেইজে প্রতিনিয়ত অসংখ্য অভিযোগ জানান গ্রাহকরা। অভিযোগ অনুযায়ী, অপারেটরদের মধ্যে টেলিটকের নেটওয়ার্কই বেশি দুর্বল। টেলিটকের ফেসবুক পেজের এক পোস্টে মো. ফয়জুল ইসলাম লেখেন, ‘ভাই, নেটওয়ার্ক পাই না সকাল থেকে। মিরপুর-২ নম্বরে বাসা স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাশে। আর আমার গ্রামের কথা না হয় বাদ দিলাম।’ আরাফাত আলী লেখেন, ‘২জিবি নেট কিনলে দেড় জিবি নষ্ট হয়। মেয়াদ ১৫ দিন তাও ফুরাতে পারি না। তাহলে বুঝেন নেটওয়ার্ক কত ভালো।’ কার্জন চাকমা লেখেন, ‘পাহাড়ি এলাকায় ফোরজি নিশ্চিত করুন। আমাদের পার্বত্য এলাকাগুলোতে টেলিটকের গ্রাহক সবচেয়ে বেশি, কিন্তু শুধু থ্রিজি-টুজিতে সীমাবদ্ধ।’ রাসেল আহমেদ লেখেন, ‘গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাংগা গ্রামে থ্রিজি নেটওয়ার্ক তো নেই-ই। মাঝেমধ্যে টুজি’ও নেই। বুঝুন অবস্থাটা। আমাদের থ্রিজি সেবা দেওয়ার চেষ্টা করুন।’
টেলিটকের মহাব্যবস্থাপক (সিস্টেম অপারেশন) নুরুল মাবুদ চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ফাইভজি রেডিনেস প্রজেক্ট শুরু করেছি। যা শেষ হতে এক বছর বা তার কিছু বেশি সময় লাগতে পারে। এর ফলে আমাদের কাভারেজ এলাকাগুলোতে ফোরজি সেবা নিশ্চিত হবে। এছাড়া আমাদের কাভারেজ বাড়ানোরও বড় পরিকল্পনা রয়েছে।’
বাংলালিংকের পেজের একটি পোস্টে মাহাদী হাসান তালহা লেখেন, ‘আমার এলাকায় আপনাদের সিম ব্যবহার করতে হলে ফোন গাছের ডালে বেঁধে লাউডস্পিকার দিয়ে কথা বলা লাগে। এত্তো ফাস্ট কেন আপনাদের নেটওয়ার্ক।’ আকরাম হোসাইন লেখেন, ‘ভাই আপনাদের সবই ঠিক, তবে নেটওয়ার্ক সেøা।’
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অফিসার তৈমুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ফোরজি সেবার জন্য ২৩০০ মেগাহার্জের স্পেকটার্ম প্রয়োজন হয়। কিন্তু টুজিতে তা লাগে মাত্র ৯০০ মেগাহার্জ। আমরা ইতিমধ্যে ৯৫ শতাংশ কাভারেজ এলাকায় ফোরজি সেবা নিশ্চিত করেছি। তবে আমাদের আরও বেশি সাইট লাগবে। যদি সব অপারেটর মিলে আমরা টাওয়ার শেয়ার করতে পারি, তাহলে সব গ্রাহকের কাছে ভালো সেবা পৌঁছে দেওয়া সহজ হবে।’
রবির পেজে এক পোস্টে তানভীর আহমেদ লেখেন, ‘কলাপাড়া থানা শহরে যদি থ্রিজি নেটওয়ার্ক না পাওয়া যায়, এরচেয়ে দুঃখজনক কিছুই হতে পারে না।’ এইচএমএম ইসমাঈল লেখেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার চম্পকনগর ইউনিয়নে রবি সিমের থ্রিজি নেই। অথচ অনেক বছর আগে রবি টাওয়ার বসানো হয়েছে। আমরা রবি সিম দিয়ে ইন্টারনেট চালাতে অক্ষম।’
রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলটরি অফিসার শাহেদ আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের কাভারেজ এলাকায় ফোরজি সেবা রয়েছে। তবে দেখা যায়, অনেক ফোন ফোরজি সাপোর্ট করে না। আর কাভারেজ এলাকা থেকে যতদূরে যাওয়া যাবে, নেটওয়ার্ক তত কমতে থাকবে। এছাড়া আমাদের কিছু জায়গায় নেটওয়ার্কের কাজ চলছে। পাশাপাশি নতুন কিছু টাওয়ার তৈরির কাজও আমাদের চলছে।’
গ্রামীণের পেইজে একটি পোস্টে রহিদুল ইসলাম লেখেন, ‘ভাই আমি যখন গ্রামে যাই তখন নেটওয়ার্কের ঝামেলা হয়।’ সাইদুর রহমান লেখেন, ‘এমন সার্ভিস হলে চলবে? কলরেট, ইন্টারনেটের দাম তো ঠিকই বেশি আপনাদের, বাকি সব অপারেটরদের থেকে।’
গত বছরের ২৮ এপ্রিল টেলিকম অপারেটররা বহুল প্রতীক্ষিত ‘আনলিমিটেড’ ও ‘মেয়াদবিহীন’ ইন্টারনেট ডাটা প্যাক চালু করেছে। তবে এতে গ্রাহকদের খুব বেশি সুবিধা হচ্ছে না। কারণ এজন্য প্যাকেজের দাম বাড়িয়েছে অপারেটররা। আর মেয়াদহীন ইন্টারনেট পেতে প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে একই প্যাকেজ চালু করতে হবে। কিন্তু গ্রাহকের সব সময় একই ধরনের ইন্টারনেট প্যাকেজ নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। ফলে অব্যবহৃতই থেকে যাচ্ছে গ্রাহকের কেনা ইন্টারনেট। এছাড়া মেয়াদবিহীন হিসেবে মোবাইল অপারেটররা যে প্যাকেজ ঘোষণা করেছে তার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে গ্রাহকদের।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সূত্র জানায়, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে সচল সিমের সংখ্যা ১৮ কোটি ২০ লাখ ৬১ হাজার। এরমধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা ৭ কোটি ৯০ লাখ ৯৫ হাজার, রবির ৫ কোটি ৫০ লাখ ১৪ হাজার, বাংলালিংকের ৪ কোটি ৮৫ হাজার এবং টেলিটকের ৬০ লাখ ৬৭ হাজার। আর গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি ৫০ লাখ। এরমধ্যে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১১ কোটি ৩০ লাখ ১৩ হাজার এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি ও পিএসটিএন)-এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ১১ লাখ ৮৭ হাজার গ্রাহক।