
দেশে উৎপাদন হয় না ইয়াবা ট্যাবলেট, অথচ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে সারা দেশ থেকে প্রতিদিন উদ্ধার হচ্ছে গড়ে প্রায় সোয়া লাখ পিস। সর্বোচ্চসংখ্যক ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে ২০২১ সালে, প্রতিদিন গড়ে প্রায় দেড় লাখ। ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে উদ্ধার হওয়া মাদকের পরিসংখ্যান ঘেঁটে এমন ভীতিকর তথ্য পাওয়া গেছে।
গত ছয় বছরে সারা দেশে উদ্ধার হয়েছে ২৫ কোটি ৮৮ লাখ ৯৫ হাজার ৫৭০ ইয়াবা ট্যাবলেট।
অভিযানসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সীমান্ত দিয়ে দেশে যে পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট ঢুকছে তার অল্পসংখ্যকই ধরা পড়ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে। আটক ইয়াবার বেশিরভাগই কক্সবাজার-মিয়ানমার সীমান্ত থেকে আসা। পাচারকারীদের নিত্যনতুন কৌশলের কাছে একপ্রকার ধরাশায়ী হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দেশে ইয়াবার মতো মাদকদ্রব্য ব্যাপক হারে পাচার হয়ে আসা নিয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনী থেকে শুরু করে দেশের অভ্যন্তরে মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা বাহিনীগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ বলছে, তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে নিয়ন্ত্রণ করার। কারবারিদের ওপর তাদের সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে। জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘যারা মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ইতিমধ্যে জামিনে গেছে বা সাজা খেটে বের হয়ে গেছে তাদের ওপর নজরদারি রেখেছি যাতে ফের এ পেশায় জড়িয়ে না যায়। এর বাইরে আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধির মাধ্যমে চেষ্টা করছি এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার।’
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ছয় বছরে সারা দেশে পুলিশ, র্যাব, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি, কোস্টগার্ড ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ২৫ কোটি ৮৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫৭০ ইয়াবা। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ১৮ হাজার ২১৪ ইয়াবা ধরা পড়েছে। ২০১৭ সালে ৪ কোটি ৭৯ হাজার ৪৪৩, ২০১৮ সালে ৫ কোটি ৩০ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪৮, ২০১৯ সালে ৩ কোটি ৪ লাখ ৪৬ হাজার ৩২৮, ২০২০ সালে ৩ কোটি ৬৩ লাখ ৮১ হাজার ১৭, ২০২১ সালে ৫ কোটি ৩০ লাখ ৭৩ হাজার ৬৬৫ ও ২০২২ সালে ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৬৮ হাজার ৫৬৯ ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে। গত ছয় বছরে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়েছে ৬ লাখ ২৯ হাজার ৭৫১টি আর আসামি ৮ লাখ ১৭ হাজার ৫৩৩ জন।
২০০০ সালের পর টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসতে শুরু করে। তারপর এটি খুব দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। তবে দেশে প্রথম ইয়াবার চালান ধরা পড়ে ২০০৩ সালে রাজধানীর গুলশানে।
পাশর্^বর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের নাফ নদী দিয়ে বছরের পর বছর ধরে দেদার দেশে ঢুকছে মরণ নেশা ইয়াবা। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে সরকারের ওপর মহলও অবগত রয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে সরকার ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে। কিন্তু কাজে আসছে না কোনো পদক্ষেপই।
অভিযানসংশ্লিষ্ট শীর্ষ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা মনে করেন, সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা আসা বন্ধ করা না গেলে দেশের ভেতরে অভিযান চালিয়ে কোনোভাবেই ঠেকানো যাবে না। সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সংস্থার তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি জানান, সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে যে পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট ঢুকছে তার ১০-২০ ভাগ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ধরতে পারছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আজিজুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ইয়াবা মূলত মিয়ানমার থেকে আসছে। ইয়াবা চোরাচালান রোধে কক্সবাজারে আমরা একটি বিশেষ টাস্কফোর্স করেছি। কীভাবে মাদক প্রতিরোধ করা যায় সে বিষয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছি। আমরা তৎপর আছি, ইয়াবা যা আসছে তা আমরা উদ্ধার করছি।’
গ্রেপ্তারের পরও কেন ইয়াবার বিস্তার থামছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা মাদক চোরাচালান করে তারা মেধা খাটিয়েই কাজগুলো করে, তারা অনেক দুষ্ট হয়।’ অন্যদিকে ইয়াবায় আসক্তি থেকে বের হয়ে আসা অনেক কঠিন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চিকিৎসার বিষয়ে সোচ্চার রয়েছি। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করছি।’
যে পথে আসে ইয়াবা : কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রয়েছে নাফ নদী। নদীটির ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। ইয়াবার চালানের অধিকাংশই এই নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে মাঝেমধ্যে ইয়াবার বাহকরা গ্রেপ্তার হলেও মূল হোতারা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে টেকনাফের বেশ কয়েকজন মাদক কারবারি আত্মসমর্পণ করলেও ইয়াবা চোরাচালান থেমে নেই। বরং নতুন করে ইয়াবার রুটে দেশে ঢুকছে ক্রিস্টাল মেথ বা আইস নামের মাদকদ্রব্য।
গত বছর মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসে প্রকাশিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) প্রতিবেদনে বলা হয়, কক্সবাজার ও বান্দরবান দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচারের ১৫টি রুট দুর্গম হওয়ায় চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। মিয়ানমারের শান ও কোচিন প্রদেশে কারখানা স্থাপন করে ইয়াবা উৎপাদন করা হচ্ছে। এই ১৫টি পয়েন্টের মধ্যে ১০টি কক্সবাজার আর ৫টি বান্দরবান সীমান্তে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর তল্লাশি থাকায় সম্প্রতি রুটও বদল করেছে ইয়াবার কারবারিরা। কৌশল পরিবর্তন করে তারা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা পাচারে বেছে নিয়েছে সাতটি নতুন রুট। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের মিজোরাম, আসাম ও মণিপুর হয়ে ত্রিপুরার দুটি রুট আর বান্দরবান, কক্সবাজার, বরিশাল, যশোর ও সাতক্ষীরার পাঁচটি রুট।
ইয়াবার বহনের যত কৌশল : ডিএনসি, পুলিশ ও র্যাবের কর্মকর্তারা বলছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনের সুযোগ নিচ্ছে কারবারিরা। ইয়াবা ট্যাবলেট সহজেই বহনযোগ্য। মূলত কাট-আউট পদ্ধতিতে দেশের ভেতরে চলছে কারবার। বাহক প্রাথমিক অবস্থায় জানে না কে গ্রহণ করবে। বর্তমানে বাহকের পেটের ভেতর পাকস্থলীতে করে ইয়াবা বহন বেড়েছে। এ ছাড়া পেঁয়াজ, বেগুন, আসবাব, গাছের গুঁড়িসহ বিভিন্ন মালামালের সঙ্গে বহন করা হয় ইয়াবা। আগে থেকে সোর্সের মাধ্যমে তথ্য না পেলে পরিবহনের সময় সাধারণ তল্লাশি চালিয়ে তাদের শনাক্ত করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আবার পেটে ইয়াবা বহনকারীদের গ্রেপ্তারের পরও পড়তে হচ্ছে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। পেটের মধ্য থেকে ইয়াবা বের করা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। গত বছর আগস্ট মাসে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে অসুস্থ হয়ে একজন মারা যান। পরে ময়নাতদন্তে তার পেটে অর্ধগলিত ইয়াবা পাওয়া গেছে। ইয়াবা ট্যাবলেটের অন্যতম খুচরা বাজার রাজধানী। সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে ঢাকাকে ট্রানজিট হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাফরুল্ল্যাহ কাজল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দেখা গেছে পাঁচ হাজার পর্যন্ত ইয়াবা বিশেষ কায়দায় পেটের মধ্যে নিয়ে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পৌঁছে দিচ্ছে। যানবাহনে চলাচলকারী কতজনকে আমরা চেক করব। তথ্য ছাড়া তো বের করা সম্ভব হয় না। তাছাড়া এদের আটকের পর পেট থেকে ইয়াবা বের করতে গিয়ে মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকে যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের।’
ননীবাবুর আমাদের বাড়িতে আসার সময়টা ছিল সকালবেলা। ঘামে ভেজা সাদা হাফ হাতা হাওয়াই শার্ট পরনে, হাতে একটা ছোট ব্যাগ। গালে কয়েক দিনের না-কামানো দাড়ি। তিনি আসতেন বাবার কাছে। তখন আমি স্কুলের গন্ডি ছাড়াইনি। ভদ্রলোকের আসাটা ছিল অনিয়মিত। দরজা খুলে দিলে বসার ঘরে বসতেন। খুব মৃদু স্বরে প্রতিবার একই প্রশ্ন করতেন, ‘তোমার বাবা আছেন বাড়িতে?’ খুব বেশিক্ষণ বসতেন না। বাবাকে দেখতাম কয়েকটা দশ টাকার নোট তাকে দিতেন। তারপর কিছুক্ষণ নিচু গলায় কথা বলে মধ্যবয়সী ননীবাবু বিদায় নিতেন। যাওয়ার সময় বাবার হাতে লালচে নিউজপ্রিন্টে ছাপা মলিন একটি পুস্তিকা ধরিয়ে দিয়ে চলে যেতেন।
অল্প বয়সে দেখতাম সেই পাতলা নিউজপ্রিন্টে ছাপা পুস্তিকার ওপর কয়কজন মানুষের মুখের ছাপ দেওয়া। কৌতূহল হতো ননীবাবুর পরিচয় জানার। কিন্তু প্রশ্ন করেও তখন বাবার কাছে সন্তোষজনক উত্তর পাইনি। ননীবাবুর আমাদের বাড়িতে আসা বন্ধ হয়নি আরও অনেক বছর। আমার বয়স বাড়ে। সেই পুস্তিকার মলাটে ছাপ দেওয়া মানুষের মাথাগুলোর পরিচয় ধীরে ধীরে জানতে পারি কার্ল মার্কস, ফ্রেডরিখ অ্যাঙ্গেলস, লেনিন, মাও জে দং। তখন এটাও জানতে পারি, ননীবাবু আসলে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়া একটি চরমপন্থি বাম রাজনৈতিক দলের কর্মী। বাবার একদা রাজনীতিতে সম্পৃক্ততার সূত্র ধরে ননীবাবু পার্টির জন্য চাঁদা নিতে আসেন।
একবার হঠাৎ করেই ননীবাবু বাড়িতে আসা বন্ধ করে দিলেন। আমি একটু অবাক হয়ে একদিন বাবার কাছে কারণ জানতে চেয়ে শুনলাম, তিনি গা-ঢাকা দিয়েছেন পুলিশের নজর এড়াতে। গা-ঢাকা দেওয়া শব্দটা নতুন ছিল আমার কাছে। রাজনীতি করার জন্য যে পুলিশ খুঁজতে পারে তা জেনে কেমন একটা অচেনা শিহরণ তৈরি হলো মনে! আর পুলিশের নজর এড়িয়ে লুকিয়ে থাকার ব্যাপারটাকেও বেশ উত্তেজনাপূর্ণ বলে মনে হয়েছিল তখন। গা-ঢাকা দেওয়া বিষয়টা মনের মধ্যে অনেক দিন নতুন হাওয়ার কম্পন তৈরি করেছিল।
বেশ কিছুদিন পর ননীবাবু আবার আমাদের বাড়িতে যাতায়াত করতে শুরু করলেন। তখন মনে হতো, গোপন বামপন্থি রাজনৈতিক দলের কর্মী বোধ হয় এমনই হয়। একটু ঢিলেঢালা, নিরীহ চেহারা। মানুষের ভিড়ে সহজে মিশে যাওয়া। কিন্তু সত্তরের দশকের প্রথম ভাগে বিদেশি পত্রিকায় চে গুয়েভারার ছবি দেখে আমার ভাবনা পাল্টে যায়। ছবিতে দাড়িপূর্ণ মুখের ওই তেজস্বী মানুষটাকে দেখে মনে মনে নিজেকেও বলিভিয়ার জঙ্গলে অস্ত্র হাতে ঘুরে বেড়ানো বিপ্লবী তরুণ বলে ভাবতাম। ওই সময়ে আরেকজন বিপ্লবী তরুণ আমাদের বাড়িতে যাতায়াত করতে শুরু করলেন। আরেকটি নিষিদ্ধঘোষিত বাম রাজনৈতিক দলের কর্মী ছিলেন। তবে তিনি দেখতে একেবারেই ননীবাবুর অবয়বের মানুষ ছিলেন না। রাতেরবেলা সঙ্গোপনে আসতেন তিনি। তখন বাবার মুখে শুনে আন্ডারগ্রাউন্ড আর মুক্তাঞ্চল শব্দ দুটির সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠি। সেই বিপ্লবী মানুষটির দৈহিক গড়ন ছিল লম্বা। মাথায় ঘন চুল। মনে আছে, প্রচুর সিগারেট খেতেন। তার সস্তা সিগারেটের কটু গন্ধে আচ্ছন্ন হয়ে থাকত ঘর। কয়েকবার তাকে দেখেছি রাত গভীর হলে কোনো কোনো দিন আমাদের বাড়িতে ভাত খেয়ে যেতে। তিনিও বেশ অনেক বছর ধরেই অন্ডারগ্রাউন্ড জীবন যাপন করছিলেন। বছরখানেক বাদে হঠাৎ একদিন শুনলাম সেই তরুণ খুন হয়েছেন অন্তর্দলীয় সংঘাতে। বাবার মুখে খবরটা শুনে বেদনাবোধ আমার সঙ্গী হয়ে ছিল অনেক দিন। ননীবাবুর সঙ্গে ঢাকা শহরে আমার আবারও দেখা হয়েছে। তখন বাবাও আর বেঁচে নেই। ভিড়ের মধ্যে হঠাৎ চোখাচোখি হতে তিনি হাত নেড়ে আবার ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেছেন।
আমার মাঝে মাঝে জানতে ইচ্ছে করে, রাজনীতির তীব্র তরঙ্গে সাঁতার কাটতে কাটতে গা-ঢাকা দেওয়া মানুষগুলোর জীবনটা এভাবেই একদিন ফুরিয়ে যায়? তরুণ বয়সে আমিও সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হয়েছিলাম। তখন স্বৈারাচারী এরশাদবিরোধী আন্দোলনের কাল চলছে। বহু তরুণ সশস্ত্র সংঘাতের পথ বেছে নিয়েছে। রাজনৈতিক সূত্রে তখন তাদের দেখতাম রাতেরবেলা পুলিশের চোখ এড়াতে বিভিন্ন বাড়িতে গা-ঢাকা দিতে। তাদের কেউ কেউ আমার বাড়িতেও আশ্রয় নিত। কোমরে পিস্তল গুঁজে তারা ঘুমাতে আসত। তখন উদ্বাস্তু সেই রাতগুলো আমরা পার করতাম গল্প করে। একটু একটু করে গোপনীয়তার বাদাম ভেঙে প্রকাশিত হতো এই শহরের নিচের তলায় আরেকটা শহর যেখানে সতর্ক অস্ত্রের ট্রিগারই বেঁচে থাকার একমাত্র পথ ছিল।
গা-ঢাকা দেওয়ার ব্যাপারটার সঙ্গে পুলিশের গন্ধ জড়িয়ে থাকে। অপরাধী ভাঙতে থাকে রাস্তা, গলি। টপকাতে থাকে বাধা। খুঁজতে থাকে আড়াল। গোপন রাজনীতি আর পুলিশের তাড়া খাওয়া সেই সব মানুষ কিন্তু অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল না। রাজনৈতিক আনুগত্য তাদের দিনের পর দিন পলাতক জীবনে ঠেলে দিয়েছিল। ননীবাবুর সংসার কীভাবে চলত, আমি আজও জানি না। সেই খুন হয়ে যাওয়া তরুণ হয়তো সত্তরের দশকে খুন হওয়া হাজার তরুণের মিছিলে একটি সংখ্যা হয়ে আছেন। তার ইতিকথার পরের কথা আর জানা হয়নি, জানা সম্ভবও না। যে তরুণরা কোমরে অস্ত্র নিয়েই মেঝেতে পেতে দেওয়া চাদরের উপুড় শুয়ে থাকত, তাদের মনের মধ্যে বয়ে যাওয়া ঝড়ের গল্পটা রয়ে গেছে আজও অজানা। শুধু হারানো এক শহরজুড়ে পুলিশের ওয়াকিটকি কাশির শব্দের মতো জেগে থাকে মাঝে মাঝে অবচেতনে। পলায়নপর পায়ের শব্দ, ছায়া আর পলাতক জীবন ম্যাজিকের মতো মনের পর্দায় ঝলসে উঠে হারিয়ে যায়।
দেশে মোট প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ১৮-২৪ শতাংশ দৈহিক স্থূলতা ও অতিরিক্ত ওজনে ভুগছে। তবে সংখ্যার চেয়ে বেশি উদ্বেগজনক হলো, দেশে নতুন করে মানুষের মধ্যে দৈহিক স্থূলতা ও অতিরিক্ত ওজন বাড়ছে। বিশেষ করে গত ২০ বছরে অপ্রাপ্ত বয়স্ক অর্থাৎ শিশু-কিশোরদের মধ্যে দৈহিক স্থূলতা বেড়েছে তিনগুণের বেশি। আগে যেখানে ৪-৫ শতাংশ শিশু-কিশোরের দৈহিক স্থূলতা ও অতিরিক্ত ওজন ছিল, এখন সেটা বেড়ে ১৪-১৫ শতাংশে পৌঁছে গেছে। অর্থাৎ এ সময়ে দৈহিক স্থূলকায় শিশুদের সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে গেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ ও শিশু বিভাগ এসব তথ্য জানিয়েছে। এ দুই বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দেশ রূপান্তরকে বলেছেন, এ দুই শ্রেণির মানুষের মধ্যে দৈহিক স্থূলতা ও অতিরিক্ত ওজনের সংখ্যা দেশের সামগ্রিক বিবেচনায় বেশি। কোনো কোনো দেশে ৫০-৫৫ শতাংশ পর্যন্ত দৈহিক স্থূলতার মানুষ আছে। সেখানে বহু বছর ধরে একই হার রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে মানুষের দৈহিক স্থূলতা অনেক কম ছিল। সে তুলনায় ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে।
তারা বলেন, দৈহিক স্থূলতা ও অতিরিক্ত ওজনের শিকার মানুষ উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচারের পরিবর্তন এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণই এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
এমন অবস্থায় আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব দৈহিক স্থূলতা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে ওয়ার্ল্ড ওবিসিটি ফেডারেশন গতকাল শুক্রবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে সামনের এক যুগে বিশ্বের অর্ধেক মানুষ মুটিয়ে যাওয়ার সমস্যায় পড়বে; অর্থাৎ তাদের ওজন হবে উচ্চতা অনুযায়ী স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি। ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের ৪০০ কোটি মানুষ অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগবে। সবচেয়ে দ্রুত এ সমস্যা বৃদ্ধি পাবে শিশুদের মধ্যে।
শহরে বেশি, গ্রামে কম : বিএসএমএমইউয়ের শিশু বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বিভাগে ২০১৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চিকিৎসা নিতে আসা ১ হাজার ৪৪ জন শিশু-কিশোরের মধ্যে দৈহিক স্থূলতার শিকার ৪০ শতাংশ। এদের মধ্যে অতিরিক্ত ওজন ছিল ২৭ দশমিক ৫৯ শতাংশের, দৈহিক স্থূলতা ছিল ৫৯ দশমিক ০৬ শতাংশের, গুরুতর স্থূলতা ছিল ১২ দশমিক ৭২ শতাংশের ও রোগাক্রান্ত স্থূলতা ছিল শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ শিশু-কিশোরের।
বিএসএমএমইউ ২০১৪ সালের এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী বলেছে, তখন ৬-১৫ বছর বয়সী স্কুলগামী শিশু-কিশোরদের মধ্যে দৈহিক স্থূলতার ছিল ৩ দশমিক ৫ শতাংশের ও অতিরিক্ত ওজন ছিল ৯ দশমিক ৫ শতাংশের। গ্রামে এই হার মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ ও শহরে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। ছেলে শিশুরা বেশি স্থূলতায় ভুগছে অর্থাৎ ১১ দশমিক ৭ শতাংশ। মেয়ে শিশুদের মধ্যে এ হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
এ ব্যাপারে বিএসএমএমইউর শিশু বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সুরাইয়া বেগম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাধারণত দেখা যায় মোট জনসংখ্যার ৭ শতাংশ শিশু-কিশোরের অতিরিক্ত ওজন। কিন্তু মা অথবা বাবার যদি ওজন বেশি থাকে, সে ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ শিশু-কিশোরের ওজন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর যদি দুজনেরই ওজন বেশি থাকে, তাহলে ৭০ শতাংশ শিশু-কিশোরের ওজন বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।’
‘কেন দৈহিক স্থূলতা ও অতিরিক্ত ওজন’ এমন প্রশ্নের উত্তরে বিএসএমএমইউর এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মানুষ যে পরিমাণ ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করে, সারা দিনে যে পরিমাণ ক্যালরি খরচ করে, তাতে দেখা যায় দিন শেষে বেশ পরিমাণ ক্যালরি অব্যবহৃত হিসেবে থেকে যায়। বাংলাদেশের মানুষের যে সামগ্রিক জীবনযাপন পদ্ধতি, তাতে তার বয়সের সাপেক্ষে যে পরিমাণ শারীরিক পরিশ্রম করার কথা, তার চেয়ে কম করেন। এর মধ্যে যার যেটুকু খাওয়া দরকার, সে সেটুকু খায়, আবার কেউ কেউ বেশি খায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন যেকোনো বিল দিতে মোবাইল বা ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করছি। সামাজিক কাঠামোগুলো আস্তে আস্তে কমছে। প্রতিদিন স্কুল-কলেজে আবশ্যিক হওয়ার কথা ছিল খেলার মাঠ। ছেলেমেয়েরা খেলাধুলা করবে। কিন্তু খেলার মাঠ কমছে। তাই আমরা এখন বলছি, খেলার মাঠ থাকুক বা না থাকুক, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপরের ক্লাসে যেতে নির্দিষ্ট পরিমাণ শারীরিক শ্রম বাধ্যতামূলক করতে হবে।’
এ বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে দৈহিক স্থূলতা অন্য দেশের তুলনায় কম হওয়ার কারণ হলো এখানে চর্বিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার প্রবণতা বহু দেশের তুলনায় কম। তারা আমাদের চেয়ে প্রোটিন ও চর্বি বেশি খায়। কিন্তু আমাদের খাদ্যাভ্যাস একদিক থেকে ওদের চেয়ে মারাত্মক। সেটা হলো আমরা প্রোটিন মারাত্মক কম খাই। চর্বি মোটামুটি খাই। কিন্তু কার্বোহাইড্রেট খুব বেশি খাই। গত বছরের এক গবেষণায় আমরা দেখেছি, বাংলাদেশে মানুষ প্রতিদিনের খাবার থেকে যে ক্যালরি পায় তার ৮০-৯০ শতাংশ আসে শর্করা থেকে। অথচ একজন সুস্থ মানুষের শরীরে শর্করা থেকে ৪০-৫০ শতাংশ ক্যালরি আসার কথা। এ শর্করা খাওয়ার পর যখন হজম হয়, শরীরে যদি সে পরিমাণ ব্যবহার না করা হয়, তাহলে চর্বি হয়ে জমা হয়।’
কী ধরনের ক্ষতি হচ্ছে জানতে চাইলে ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, ‘দৈহিক স্থূলতা ও অতিরিক্ত ওজনের কারণে এসব মানুষ দ্রুত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবে। উচ্চ রক্তচাপ, ব্যথা বেড়ে যাবে। যাদের ওজন অনেক বেশি, তাদের ব্যথাও অনেক বেশি। হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট। নাক ডাকা। হার্ট অ্যাটাকের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গেও হার্ট অ্যাটাক সম্পৃক্ত। অতিরিক্ত ওজনের মানুষ বেশি কাজ করতে পারবে না। কর্মক্ষমতা হারাবে। পুরুষ ও নারী দুজনের ক্ষেতেই প্রজনন ক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ধরনের মানুষ বেশিদিন বাঁচবে না। তাদের আয়ু কমে যাবে।’
চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, এ ধরনের মানুষ এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের চিকিৎসকদের কাছে যাবে। এন্ডোক্রাইনোলজি বা হরমোন বিভাগের চিকিৎসকের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি টিম থাকতে হবে। টিমে অবশ্যই পুষ্টিবিদ থাকবেন। এসব মানুষকে স্বাস্থ্যশিক্ষা দিতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে পুষ্টিবিদের সংখ্যা কম। বিএসএমএমইউতে মাত্র দুজন পুষ্টিবিদ আছেন। এখানে থাকার কথা কমপক্ষে ১০০ জন। বারডেমে ১৮ জন পুষ্টিবিদ আছেন। সারা দেশে এখন সরকারি ও বেসরকারি মিলে এন্ডোক্রাইনোলজি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ৩০৮ জন।
কী ধরনের সতর্কতা প্রয়োজন এ ব্যাপারে অধ্যাপক ডা. সুরাইয়া বেগম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাধারণ স্থূলতার কারণ আমাদের অস্বাভাবিক জীবনযাপন, খাদ্যগ্রহণে সমস্যা রয়েছে। জাঙ্কফুড বেশি খাচ্ছি। শারীরিক কর্মকান্ড কম। মোবাইল ও টিভি বেশি দেখছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় মা-বাবার যদি ওজন বেশি থাকে, সে ক্ষেত্রে শিশুর ওজন বেশি হয়। সুতরাং এ ধরনের স্থূলতা আমরা নিজেরাই তৈরি করি।’
এ ব্যাপারে ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, ‘বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী একটা নির্দিষ্ট ওজন থাকা দরকার। গড়ে কারও যদি উচ্চতা ১৩৪ সেন্টিমিটার হয় তাহলে তার দৈহিক ওজন ৭০ কেজির কম হবে। এটা গড় হিসাব। যদি নারী হয় তাহলে তার ওজন আরও ৫ কেজি কম হবে। এটা থেকে যত বেশি ওজন হবে, তত বেশি উদ্যোগ নিতে হবে ওজন কমানোর।’
জামালপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিশি নামের ২৮ দিনের এক কন্যাসন্তানকে ফেলে বাবা-মা উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার তিন দিন পার হলেও খোঁজ মেলেনি বাবা-মা বা কোনো অভিভাবকের। এ নিয়ে গতকাল রাত থেকে জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা।
গত বুধবার বিকেল ৪টার দিকে হাসপাতালে শিশু নিশিকে ফেলে যাওয়া হয়। হাসপাতালে ভর্তির তথ্য মতে, নিশি জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার পাটাদহ ইউনিয়নের কয়রার রকিব ও রোকসানা দম্পতির সন্তান।
হাসপাতাল ও দর্শনার্থী সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে হাসপাতালের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২৬ দিন বয়সী নিশিকে কম ওজন ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি করান রকিব-রোকসানা দম্পতি। ১ মার্চ নিশিকে হাসপাতালের চারতলায় শিশু ওয়ার্ডের করিডরে অপেক্ষমাণ রোগীর এক স্বজনের কাছে দেন নিশির নানি। নিশির মাকে নিচ থেকে আনবেন বলে হাসপাতালের নিচতলায় চলে যান নিশির নানি। আর ফিরে আসেনি কেউ। তাদের জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেন রোগীর ওই স্বজন। নিশির কোনো অভিভাবক খুঁজে না পেয়ে বিষয়টি নার্সদের জানান ওই স্বজন। হাসপাতালে ভর্তির ফরমে দেওয়া মোবাইল নম্বরে কল করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে শেখ রাসেল বিশেষায়িত শিশু সেবাকেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক ও নার্স নিশির কম ওজন এবং শ্বাসকষ্ট দেখে তাকে সেখানে ভর্তি করেন। নিশি হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে শেখ রাসেল বিশেষায়িত নবজাতক সেবাকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জামালপুর সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নের হাজিপুরের সেলিনা বলেন, ‘চার দিন হয় আমার নাতি হাসপাতালে ভর্তি। এ সময় জানতে পারলাম, একটা বাচ্চাকে তার মা ফেলে চলে গেছে। এ কেমন মা! নিজের সন্তানকে ফেলে যায়। বাবা-মাকে খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া উচিত।’
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মো. শরিফ মিয়া, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে তার বাচ্চাকে ভর্তি করেছেন। তিনি বলেন, ‘মানুষ সন্তানের জন্য সবকিছু বিসর্জন দেয়। নিজের জীবন বাজি রেখে বাবা -মা তার সন্তানকে লালন-পালন করে। এ কেমন বাবা-মা! নিজের সন্তানকে ফেলে পালিয়ে যায়?’ বাবা-মাকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
জেনারেল হাসপাতালের শেখ রাসেল বিশেষায়িত নবজাতক সেবাকেন্দ্রের আয়া কোহিনূর বেগম বলেন, ‘বিকেল ৪টার দিকে এক মহিলার কাছে বাচ্চাটাকে রেখে ওর নানি নিচে মাকে আনতে যান। পরে তিনি আর ফিরে আসেননি। পরে বাচ্চাটাকে ভেতরে নিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে।’
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স মাফিয়া সুলতানা বলেন, ‘বুধবার বিকেলে হাসপাতালের করিডরে অপেক্ষমাণ রোগীর স্বজনের কাছে বাচ্চাটাকে রেখে ওর অভিভাবক পালিয়ে যায়। ভর্তির সময় যে মোবাইল নম্বর বা ঠিকানা আমরা পেয়েছিলাম, ওই ঠিকানা অনুযায়ী খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছি, কেউ মোবাইল ধরে না।’
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের শেখ রাসেল বিশেষায়িত হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক জান্নাত আরা মিলি বলেন, ‘কম ওজন এবংশ্বাসকষ্ট নিয়ে শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে। নবজাতকটি সুস্থ রয়েছে। তবে অভিভাবককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালের সহকারী পরিচালককে বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্রশাসনিকভাবে বাচ্চাটার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নবীনগর থেকে বাস ছিনিয়ে নিয়ে রাতভর রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ঘুরে যাত্রী তুলে ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ডিবি।
গতকাল শুক্রবার ডিএমপির মিডিয়া শাখা থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়েছে, রাজধানীতে গভীর রাতে বাসে যাত্রী তুলে বাস ডাকাতি মামলার আসামি গ্রেপ্তার ও আলামত উদ্ধারের ঘটনায় শনিবার বেলা ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার সংবাদ সম্মেলন করবেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এ বাস ডাকাতির ঘটনা নিয়ে ‘রাতভর মৃত্যুর বিভীষিকা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে দেশ রূপান্তর। ওই ডাকাতির ঘটনায় ভুক্তভোগীদের কেউ মামলা না করায় বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অগোচরে ছিল। দেশ রূপান্তরে সংবাদ প্রকাশের পর তদন্তে নামে ডিবি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গ্রেপ্তাররা দুর্ধর্ষ ডাকাত। তাদের দলনেতা খুবই ভয়ংকর। রাজধানী ও এর আশপাশে খুবই হিংস্রভাবে ডাকাতি করে থাকে দলটি। চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আগেও ডাকাতির মামলা রয়েছে। সেসব মামলায় গ্রেপ্তারের পর জামিনে মুক্তি পেয়ে ঘটনার রাতে ফের ডাকাতি করে তারা। এ চক্রে রয়েছে দক্ষ চালকও।
১২ ফেব্রুয়ারি বাস ডাকাতির ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) ডিএমপির দারুস সালাম থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী মো. নাসরুল (৩২)। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নাসরুল রিসাত পরিবহনের ঢাকা মেট্রো-গ-১৩-০৫৯২ বাসটি গাজীপুর থেকে ছেড়ে কোনাবাড়ী-নবীনগর-গাবতলী-যাত্রাবাড়ী-পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা রুটে চালান। গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে যাত্রী না থাকায় বাস কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দারুস সালাম থানাধীন গাবতলী পর্বতা সিনেমা হলের ডানপাশে রাস্তার ওপরে বাসটি রেখে বাসের দরজা লক করে ভেতরে চালক ও তার সহকারী এবং সুপারভাইজার পেছনের সিটে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৮-১০ জন লোক গাড়ির দরজা কৌশলে খুলে বাসে অতর্কিতভাবে উঠে তাদের হাত পেছনে বেঁধে লোহার পাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে ও তাদের মধ্য থেকে একজন চালকের সিটে গিয়ে বাস চালিয়ে শ্যামলীর দিকে যেতে থাকে। এ সময় অন্যরা বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উঁচিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের ফোন ও টাকাপয়সা নিয়ে নেয়। পরে তাদের সবার চোখ বেঁধে বাসের পেছনের সিটের ওপর ফেলে রাখে। কোনো কথা বলতে গেলেই ডাকাতরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নীলাফুলা জখম করে ও মেরে ফেলার ভয় দেখায়। বাসটি চলন্ত অবস্থায় তারা মাঝেমধ্যে বাস থামিয়ে যাত্রী তুলে তাদের মারধর ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে যে, ‘আমরা ডাকাত চুপ করে থাক, যা চাই তা দিয়ে দে নইলে তোদের জীবন শেষ করে দেব’। তারপর ডাকাতরা সাভার থানাধীন কবিরপুরে নেমে যায়। কিছুক্ষণ পর ডাকাতদের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে একে অন্যের হাতের বাঁধন খুলে দেখেন আরও কয়েকজন যাত্রীকে একইভাবে বেঁধে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের নাম ডা. শাওন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলের সামনে থেকে তিনি ওঠেন বলে জানান। ডাকাতরা যখন তাদের ছেড়ে চলে যায় তখন সময় ভোর সাড়ে ৬টা।
ভুক্তভোগী রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের চিকিৎসক শাওন চৌধুরী জয় জানান, তার চোখ বেঁধে বাসের পেছনে নিয়ে বসিয়ে রাখে। তার কাছে থাকা ১২ প্রোম্যাক্স আইফোন, ৭ আইফোন, নগদ সাড়ে চার হাজার টাকা, হাতঘড়ি ও ব্যাংকের এটিএম কার্ড নিয়ে গেছে ডাকাত দল। তাকে মারধরও করেছে তারা।
শষ্যভান্ডারখ্যাত দিনাজপুরের হিলিতে এখন চলছে বোরো ধানের চারা রোপণের ভরা মৌসুম। কিন্তু ঠিক তখনই সেচের অভাবে বীজতলা থেকে চারা তুলেও জমিতে রোপণ করতে পারছেন না হিলির সাদুড়িয়া গ্রামের অন্তত ৪০ জন কৃষক। ইতিমধ্যেই পানির অভাবে ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ এসব কৃষকের কপালে। আর কয়েক দিন পেরিয়ে গেলে সম্ভব হবে না বোরো ধানের চারা রোপণ। তাই দ্রুতই পানির সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তাদের। গেল রবিশস্যের মৌসুমেও পানি না মেলায় মাঠেই শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে তাদের লাখ লাখ টাকার আলু, গম, সরিষাসহ অন্যান্য আবাদ।
সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় পানির অভাবে দেড়শ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপণ করতে পারছে না ভুক্তভোগী এ কৃষকরা। তারা বলছেন, পল্লী বিদ্যুতের অফিসে শত ধরনা দিয়েও সেচ পাম্পে মিলছে না বিদ্যুৎ সংযোগ। তাই মাঠ প্রস্তুত করেও পানির অভাবে রোপণ করতে পারছেন না বোরো ধানের চারা। সময় পেরিয়ে যাওয়ায় জমিতে বোরো ধান আর রোপণ করতে পারবেন কি না সেই দুশ্চিন্তা আর হতাশায় দিন কাটছে এসব কৃষকের। অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে বাধ্য হয়ে আন্দোলনে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তারা।
তাদের একজন কৃষক আবদুর রাজ্জাক। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ মাঠে আমার তিন একর জমি পড়ে রয়েছে, শুধু পানির অভাবে ধান রোপণ করতে পারছি না। লাইন লাগাচ্ছে, আজ পানি দেবে, কাল দেবে, এভাবে করতে করতে সব শেষ। পানির অভাবে আলু ও ধানের বীজ সব মরে শেষ হয়ে গেছে। আজ হবে, কাল হবে করতে করতে দিন তো শেষ হয়ে যাচ্ছে। কোনো ফলাফল তো পাওয়া যাচ্ছে না।’
ভুক্তভোগী আরেক কৃষক আবদুস সালাম বলেন, ‘যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলছেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন পড়ে না থাকে আর এখানে আমাদের শত শত বিঘা জমি পড়ে রয়েছে। আমরা বিদ্যুতের সংযোগ পাচ্ছি না, যার কারণে জমিতে পানি পাচ্ছি না।’
দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ না পেলে বাধ্য হয়ে আন্দোলনে যাবেন বলেন জানান কৃষক সেলিম হোসেন। তিনি বলেন, ‘সব দপ্তরে ঘুরেছি যে এখানে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হোক, কিন্তু কেউ আমাদের এ দুঃখটা বুঝছে না। কী যে হয়েছে! এখানে অনেক দপ্তরের লোকজন আসছে, দেখে যাচ্ছে, কিন্তু কেউ কোনো সাড়া দিচ্ছে না। যদি দুয়েক দিনের মধ্যে বিদ্যুতের সংযোগ দেয় তাহলেও আমরা জমিগুলোতে ধান লাগাতে পারব। কিন্তু অতি দ্রুত যদি এ সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়া হয় তাহলে বাধ্য হয়ে আন্দোলনে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না আমাদের।’
সেচ পাম্পটির মালিক বলাই চন্দ্র বলেন, ‘গ্রামের শত শত বিঘা জমিতে ফসল ফলানোর জন্য এ সেচ পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের অভাবে আজকে আমাদের বেহাল অবস্থা। বিদ্যুতের লোকজনের টালবাহানার কারণে দীর্ঘদিন থেকে সেচ পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছি না। পল্লী বিদ্যুতে গিয়ে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। আজ যাব, কাল যাব এসব বলে তারা কালক্ষেপণ করছে। তাদের কথামতো সব করছি, কিন্তু তারপরও কেন জানি সংযোগ দিচ্ছে না। এতবার হাত-পা ধরছি যে সময় পেরিয়ে যাচ্ছে, অন্তত সংযোগটা দ্রুত দেন। এখন তারা বলছে, তাদের কাজ সম্পূর্ণ করে সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছে, সেখানে যোগাযোগ করতে বলছে। তাহলে আমরা কৃষকরা এখন কোথায় যাব? কার কাছে যাব? আর কার কাছে বিচার চাইব?’
কৃষককের এ সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মমতাজ সুলতানা। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বিদ্যুতের সংযোগের অভাবে সাদুড়িয়া গ্রামের কৃষকদের সেচকাজ ব্যাহত হয়েছে। ইতিমধ্যেই আমি জায়গাটি পরিদর্শন করে বিষয়টি পল্লী বিদ্যুতের এজিএমসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়েছি। কীভাবে এটি সমাধান করা যায় ও অতি দ্রুত সেচকাজ শুরু করে জমিগুলোকে যেন বোরো ধান চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসতে পারি সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ হিলি সাবজোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, ‘বলাইচন্দ্র নামে এক ব্যক্তির সেচ পাম্পের সংযোগের জন্য আবেদন পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে সেটি স্টেকিংভুক্ত করে আবেদনটি সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছি। কিন্তু ৩ পোলের অধিক ৭ পোলের মতো লাইন হওয়ায় সেটি আবারও অনুমোদনের জন্য সদর দপ্তর থেকে ঢাকায় হেড অফিসে পাঠানো হয়েছে। তাদের আদেশসহ মালামাল প্রাপ্তি সাপেক্ষে সংযোগটি প্রদান করা হবে।’
নির্ধারিত সময় পেরিয়েছে। ১০ জনের ব্রাজিল। তবুও এগিয়ে ২-০ গোলে। খেলা গড়ায় ইঞ্জুরি টাইমে। তখনই যেন বেড়ে যায় সেলেসাওদের গতি। মিনিট কয়েকের মুহূর্তে ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-০ গোলে। তবে প্রতিপক্ষ তিউনিশিয়াও কম যায় না। হাল ছাড়েনি তারা। শেষ মুহূর্ত অবধি লড়ে গেছে। তাতে আদায় করেছে একটি গোল। যদিও সেই গোল তাদের নিয়ে যেতে পারেনি পরের ধাপে।
যুব বিশ্বকাপে আন্দ্রে সান্তোসের জোড়া গোলে ম্যারাডোনার মাঠে উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিশিয়ার বিপক্ষে ৪-০ গোলের জয় পেয়েছে ব্রাজিল। এতে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে সেলেসাওরা।
ডিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা মাল্টি পারপাস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শেষ ষোলোর খেলার পুরোটা সময় বলের দখলটা বেশি ছিল তিউনিশিয়ার পায়েই। আক্রমণের ধারও ছিল ভালো। গোলের সুযোগও অনেকগুলো সৃষ্টি হয়েছিল। তবু ফিনিশারদের ছিল ব্যর্থতা। আর সেটা কাজে লাগিয়েছেন ব্রাজিলের যুবারা। শুরুটা অবশ্য তিউনিশিয়ার কল্যাণেই।
খেলার ১১ মিনিটে পেনালটি পেয়ে যায় ব্রাজিল যুবারা। সেখান থেকে গোল আদায় করে নেন মার্কোস লিওনার্দো। ৩১ মিনিটে এই লিওনার্দো ফের দলকে এগিয়ে দেন। তবে এবার আর তিনি গোল করেননি, তবে করিয়েছেন। তার পাস থেকে পায়ে বল নিয়ে তিউনিশিয়ার জালে জড়ান আন্দ্রে সান্তোস।
২-০ গোলের ব্যবধান পেয়ে হৈ হৈ করতে করতে বিরতিতে যেতে পারত ব্রাজিল। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ বাঁশিটা বাজার আগ মুহূর্তেই লাল কার্ড দেখেন রবার্ট রেনান। তার এমন কাণ্ডে ১০ জনের দলে পরিণত হয় ব্রাজিল।
তাতে অবশ্য পরের অর্ধের নির্ধারিত সময়ে কোনো ছাপ পড়তে দেখা যায়নি। ব্যবধানটা যে তখনও ২-০ তেই ছিল। তবে ৯১ মিনিটে ফের গোল আদায় করে ফেলে ব্রাজিল। এবার ম্যাথুস মার্টিনস। তার ৯ মিনিট পর আন্দ্রে সান্তোস নিজের দ্বিতীয় গোল আদায় করে নেন। চার গোলে এগিয়ে থেকে ব্রাজিল যখন জয়ের অপেক্ষা করছিল, ঠিক তখনই ১০৩ মিনিটের সময় প্রথম গোলটি হজম করে সেলেসাওরা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপ আর নির্বাচনী তাপের মধ্যেই আজ জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব পেশ করা হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদের শেষ বাজেট এটি। অনেক যোগ-বিয়োগ কষে বাজেট প্রণয়নের শেষ সময়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রস্তাবিত বাজেটে নির্বাচনী চমক হিসেবে বড় মাপের ব্যবসায়ীদের খুশি করতে সম্পূর্ণ নতুন পথে হেঁটেছেন। ভর্তুকি নাম দিয়ে বড় অঙ্কের ‘কর ছাড়’ দিয়েছেন। অথচ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে রাজস্ব জাল বিছিয়ে সাধারণ আয়ের মানুষকে আটকে ফেললেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো প্রস্তাবিত বাজেট সারসংক্ষেপ, ভর্তুকির নামে ‘কর ছাড়’কে বৈশি^ক মন্দা মোকাবিলার ঢাল হিসেবে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী। এ পদক্ষেপের পরোক্ষ প্রভাবে বাজারে পণ্যের দাম কমার গতিরোধ করবে বলেও সরকারপ্রধানকে জানিয়েছেন।
তবে অর্থনীতির বিশ্লেষকরা বলেছেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ছোটদের কর পরিশোধে চেপে ধরলেও কৌশলে বড় মাপের ব্যবসায়ীদের ঠিকই খুশি করলেন অর্থমন্ত্রী। এ পদক্ষেপের ফলে বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমায় খুব বেশি প্রভাব পড়বে এমন আশা করা কঠিন।
এনবিআরের সাবেক সদস্য কর-বিশ্লেষক ড. আমিনুল করিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আইএমএফের কাছ থেকে কর অব্যাহতি ও কর অবকাশ সুবিধা কমানোর চাপ আছে। এ শর্ত না মানলে ঋণের কিস্তি দেওয়া বন্ধ করা হতে পারে। অন্যদিকে নির্বাচনের আগের বাজেট হওয়ায় বড় মাপের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সুবিধা দেওয়ার চাপ আছে। বিভিন্নমুখী চাপে সরকার সব পক্ষকে খুশি করতেই আগামীতে কৌশলে কর ছাড় রাখছে ভর্তুকির নাম দিয়ে। অন্যদিকে সাধারণ আয়ের মানুষের ওপর কিন্তু ন্যূনতম কর ধার্য করার কথা শুনছি। অনেক মানুষকে রাজস্বের আওতায় আনার কথাও শুনেছি। এভাবে ছোটদের ওপর ঠিকই কর পরিশোধে চাপ বাড়াল।’
একই মত জানিয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের দেশের বড় মাপের ব্যবসায়ীদের অনেকে সরাসরি রাজনীতি করেন। অনেকে রাজনীতি না করলেও সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রেখে চলেন। এরা সমাজের প্রভাবশালী। বাজেট প্রণয়নকালেই এরা সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে নিজেদের পক্ষে সুবিধামতো অনেক কিছু আদায় করে নেন। এবারও তাই হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কৌশলে বড় মাপের ব্যবসায়ীদের খুশি করার চেষ্টা করা হয়েছে। এভাবে আইএমএফের জেরার মুখে বলার সুযোগ থাকছে যে কর ছাড় ও ভর্তুকি দুই হিসাব এক করেছি।’
সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেকে আশায় আছেন এবারের বাজেটে অর্থমন্ত্রী হয়তো জীবনযাত্রার ব্যয় কমাতে সূত্র কষবেন। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার এ বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বড় কোনো রক্ষাকবচ রাখলেন না। কৌশলী অর্থমন্ত্রী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে দেওয়া কথা রেখেছেন। সাধারণ মানুষকে রাজস্ব জালে আটকে ফেলার ছক করেছেন। মূল বাজেটের আকার বাড়ানোর সঙ্গে সমন্বয় করে সরকারের আয়ের হিসাবও বাড়ানো হয়েছে। রাজস্ব আয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫ লাখ কোটি টাকা। এখানে কর খাত থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছ থেকে চলতিবারের তুলনায় ৬০ হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা করলেন। এনবিআরবহির্ভূত খাত থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে করবহির্ভূত খাত থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা হবে। শেষ সময়ের হিসাবকষে শত সংকটের বাজেটে অর্থমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের খুশি করার চেষ্টা করেছেন।
আগামী বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী কর ছাড়সহ ২ লাখ ৮৯ হাজার ২২৮ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব করবেন। জাতীয় বাজেটে নিয়মিত ভর্তুকি হিসাবে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা রাখার কথা আছে। বাকিটা প্রত্যক্ষ কর ছাড় দিয়ে ভর্তুকি খাতে অন্তর্ভুক্তি হিসেবে রাখা হয়েছে। প্রত্যক্ষ কর ব্যয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বেতনসহ অন্য খাতে ৭৭ হাজার ২১৮ কোটি বা মোট কর ছাড়ের ক্ষুদ্রঋণ খাতে ১২ শতাংশ বা ১৫ হাজার ৩১৫ কোটি, প্রবাসী আয় খাতে ৯ শতাংশ বা ১১ হাজার ২৮৭ কোটি, বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি খাতে ৭ শতাংশ বা ৮ হাজার ৩৮০ কোটি, অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক শিল্প খাতে ৪ শতাংশ বা ৪ হাজার ৬১২ কোটি, গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল ৩ শতাংশ বা ৩ হাজার ৪৩৮ কোটি, পোলট্রি ও মৎস্য খাতে ২ শতাংশ বা ৩ হাজার ১২০ কোটি, আইটি এবং সফটওয়্যার খাতে ১ শতাংশ বা ১ হাজার ৪৭৭ কোটি এবং পুঁজিবাজার খাতে ১ শতাংশ বা ৯৬৬ কোটি টাকা।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইস মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এ যেন পুরনো বোতলে নতুন পানীয়। বড়দেরই বিভিন্ন কৌশলে সুবিধা দেওয়া হলো।’
অর্থমন্ত্রী রাজস্ব আদায়ের কৌশল হিসেবে বড় সুবিধা দিলেও ইটিআইএন গ্রহণ ও রিটার্ন দাখিলে কঠোরতা এনেছেন। ইটিআইএন না নিলে ৪০ ধরনের সেবা এবং রিটার্ন দাখিলের সিøপ না নিলে ৩৮ ধরনের সেবা দেওয়া হবে না। এতদিন ইটিআইএন নিয়েও অনেকে করযোগ্য আয় না থাকলে শুধু রিটার্ন দাখিল করেছে, একটি টাকার কর দিতে হয়নি। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত অর্থ বিল বিশ্লেষণ করে বলা যায়, ১ জুলাই থেকে করযোগ্য আয় না থাকলেও ২ হাজার টাকা ন্যূনতম কর দিতে হবে।
সাধারণ আয়ের অনেক করদাতা বলেছেন, খাবারের খরচ অনেক বেড়েছে। বাসা ভাড়া, যাতায়াত, চিকিৎসা সবকিছুই এখন বেশি। এর মধ্যে সাধারণ আয়ের ওপর কর পরিশোধে চাপ দেওয়া হলে ভোগান্তি বাড়বে। সাধারণ মানুষকে কর পরিশোধে বাধ্য করলেও সম্পদশালীদের রাজস্ব ফাঁকি কমাতে, বকেয়া আদায়ে এবং অর্থ পাচার রোধে জোরালো কিছু রাখা হয়নি। এনবিআরের সক্ষমতা বাড়াতেও পুরনো পথেই হেঁটেছেন অর্থমন্ত্রী।
আগামী অর্থবছর থেকে রিটার্ন জমা দিতে দেরি হলে বেশি হারে জরিমানা দিতে হবে। বাজেটে আইন করে জরিমানার পরিমাণ প্রদেয় করের পরিমাণ দ্বিগুণ ৪ শতাংশ নির্ধারণে প্রস্তাব করা হয়েছে।
বড়রা সুবিধা দিয়ে রাজস্ব আদায়ে চাপ বাড়ানোয় জীবনযাত্রার অনেক খাতেই খরচ বাড়বে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি কমাতেও বাজেটে রাখা হয়নি কিছু। আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজারের অস্থিরতা কবে কমবে তা নিয়ে রয়েছে অশ্চিয়তা। তাই গত মাস ছয়েক থেকে বেশি দামে বিক্রি হওয়া চাল, ডাল, আট, ময়দা, ভোজ্য তেল, লবণ, চিনি, মাছ, মাংসসহ সব ধরনের খাবারের দাম আপাতত কমছে না। চিকিৎসা, যাতায়াত, শিক্ষাসহ খাদ্যবহির্ভূত ব্যয়ও কমবে না। গত (নভেম্বর ২০২২-এপ্রিল ২০২৩) ছয় মাসের সাধারণ মূল্যস্ফীতির গড় হার ৮ দশমিক ৯১ শতাংশ।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিশেষ কোনো চাপ নেই, অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতিশীল রাখতে এবারের বাজেটে থাকছে ধারাবাহিকতা।
আজ বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেলে ঘোষিত হতে যাওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটকে 'গরিববান্ধব' উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আরও বলেন, সবাইকে নিয়ে সবার জন্য বাজেট ঠিক করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তার আকার বড় হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১ জুন) রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে জাতীয় সংসদ ভবনে যাত্রার প্রাক্কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাজেট সম্পর্কে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিকেলে জাতীয় সংসদে সাত লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করবেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের লক্ষ্য স্থির করেছে সরকার। সেখানে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে মোট বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা জিডিপির ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে, এমন আশা করছেন অর্থমন্ত্রী।
বাজেটে ৫ লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেট ঘাটতি হতে পারে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। রবিবার (৪ জুন) থেকে সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হবে।
রোমাঞ্চকর ফাইনালে মোহামেডানকে ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপ শিরোপা এনে দেওয়ার অন্যতম নায়ক আহসান আহমেদ বিপু। দীর্ঘদিন সাদা-কালোদের হয়ে খেলা এই গোলরক্ষক কাল দেশ রূপান্তরের শিহাব উদ্দিনকে জানালেন আবাহনীর বিপক্ষে উত্তেজনার ম্যাচে চাপ মাথায় নিয়ে নামা ও পেনাল্টি ভাগ্যে জয়ী হওয়ার পেছনের গল্প…
এত বড় ফাইনালে হঠাৎ করে বদলি হিসেবে নামলেন। এটা কি আপনার জন্য চাপ হয়েছিল?
বিপু : চাপ তো অবশ্যই। গোল আর গোল, ফাইনাল, প্রতিপক্ষ আবাহনী। মানসম্মানের ব্যাপার। এটা কিন্তু একটা ফাইনাল না শুধু, সম্মানেরও ব্যাপার। চাপ তো অবশ্যই ছিল।
তো এই চাপটা সামলালেন কীভাবে?
বিপু : সত্যি বলতে আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস ছিল যে আমরা কামব্যাক করতে পারব। শুধু আমি একা না পুরো দল, হাফটাইমে যখন ২ গোল হয়, আমরা ডাগআউটে একজনও হতাশার কথা বলিনি। আমরা চরম বিশ্বাসী ছিলাম যে এখান থেকে ম্যাচ ঘুরানো সম্ভব। আমাদের অধিনায়ক দিয়াবাতে আত্মবিশ্বাসী ছিল যে ম্যাচে ফেরা সম্ভব।
কিন্তু নামার পরপরই তো একটা গোল হজম করলেন। তাতে কি চাপ বাড়েনি?
বিপু : না বাড়েনি কারণ গতকাল যে ৮টা গোল হয়েছিল তার মধ্যে সবচেয়ে সেরা গোল ছিল ওটা। গোলটা সত্যি বলব আমি নিজের ভুলে হজম করেছি। হাতেও লেগেছিল কিন্তু আটকাতে পারিনি।
পরে তো পেনাল্টি মানে ভাগ্য পরীক্ষাতেও নামতে হলো? তার মানে আপনার ওপর সবার বিশ্বাস ছিল?
বিপু : ওটা জানি না, এটুক বলতে পারি আমাদের কোচিং স্টাফ আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছিল। যেহেতু ফাইনাল, পেনাল্টির একটা সম্ভাবনা তো থাকেই। তো আমাদের আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া ছিল, গোলরক্ষক কোচ কানন ভাই আমাদের নিয়ে পেনাল্টির আলাদা কাজ করেছিলেন। কিছু বিষয় যেমন শুট নেওয়ার আগ মুহূর্ত মানে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করা। আর নিজেও একটু চিন্তাভাবনা রেখেছিলাম। তো প্রস্তুতি আগে থেকেই ছিল। চাপ নেওয়ার ব্যাপারটা আসলে আমি স্বাভাবিক ছিলাম। বেশি কিছু চিন্তা করিনি। এমন সময়গুলোতে বেশি চিন্তা করলে উল্টো চাপে পড়ে যেতে হয়।
পেনাল্টি নিয়ে প্রস্তুতির কথা বলছিলেন। আগে থেকেই কি পেনাল্টির প্রস্তুতি ছিল?
বিপু : সে রকম না। কারণ ফাইনালে আগে থেকেই তো বলা যায় না যে পেনাল্টি হবেই। তবে আমাকে খেলার আগে থেকেই মানে ফাইনালের আগেই বলা হয়েছিল যে খেলা যদি ড্রয়ের দিকে যায় তাহলে নামতে হতে পারে। সেই প্রস্তুতি নেওয়া ছিল। তবে পেনাল্টির একটু আগে নামতে হয়েছিল আরকি।
পেনাল্টিতে দুটো সেভ করলেন। এটা কীভাবে সম্ভব হলো। কী ভাবছিলেন ডাইভ দেওয়ার আগে?
বিপু : সত্যি বলছি আমার কোনো চিন্তাই ছিল না। হয়ে গেছে। আল্লাহ মিলিয়ে দিয়েছেন, এখানে আমার কিছু নেই।
বিশ্বকাপ ফাইনালেও তো পেনাল্টি হয়েছিল। তা তো দেখেছেন। নিজের পেনাল্টি মুখোমুখি হওয়ার সময় ওই রকম কিছু মনে হচ্ছিল?
বিপু : না, ওরকম কিছু না। আমি আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রেখেছিলাম। আর মনে মনে ভাবছিলাম যে দলের জন্য কিছু করতেই হবে। আমি বলতে পারি এই দলটার মধ্যে সবচেয়ে পুরনো খেলোয়াড় কিন্তু আমি। আমি দীর্ঘদিন মোহামেডানে খেলেছি। মোহামেডান থেকে সুপার কাপ জিতেছি, স্বাধীনতা কাপ জিতেছি। তো ক্লাবের জন্য কিছু করার তাগিদটা ছিল।
পেনাল্টিতে প্রথম সেভ করার পর আপনার সাহস কি বেড়ে গিয়েছিল?
বিপু : সাহস তো বেড়েছেই। প্রথম সেভটা যখন করি তখন আমার টিম মেটরাও মানসিকভাবে এগিয়ে গেছে। এরপর আমাদের অধিনায়ক গোল করল। প্রথম গোল করা মানে মানসিকভাবে এগিয়ে থাকা। রাফায়েল কিন্তু আবাহনীর অনেক বড় ব্র্যান্ড। হতে পারে কলিনদ্রেস নামের বিচারে ভারী কিন্তু রাফায়েল এগিয়ে।
প্রথমটা তো সেভ করলেন দ্বিতীয় পেনাল্টি সেভের আগে কী ভাবনা হচ্ছিল আপনার। দ্বিতীয়টা সহজ হয় না কঠিন?
বিপু : ওটা ফিফটি-ফিফটি ছিল। কলিনদ্রেস একটু অপেক্ষা করছিল মারার সময় তাই আমিও ওয়েট করলাম। আর সফল হই। কলিনদ্রেসের শটটা কিন্তু যথেষ্ট পাওয়ারফুল ছিল। আমি সঠিক দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েছি। আর রাফায়েল একটু স্লো শট নেয় সবসময়। আর সবসময় একটু জার্ক করে বাঁদিকে শট নেয়, কাল নিয়েছিল ডানদিকে। আমি অপেক্ষা করায় সঠিক দিকে ডাইভ দিতে পেরেছি।
আচ্ছা আপনার পছন্দের গোলকিপার কে?
বিপু : পিওতর চেক।
বিশেষ কোনো কারণ আছে ওকে পছন্দ করার?
বিপু : ঠিক কেন সেটা বলতে পারব না। তবে ওর সেভগুলো আমার ভালো লাগে। এখন অনেক গোলরক্ষক থাকতে পারে, চেক আমার কাছে এখনো সেরা। বিশেষ করে একটা সেভ দেখেছিলাম ও মাটিতে পড়ে গিয়েও কীভাবে যেন হাত দিয়ে বল ফিরিয়েছিল। চেলসিতে থাকা অবস্থায় সম্ভবত। এছাড়া শুধু একটা না আরও অনেক সেভ করেছে সে। আর একটা ব্যাপার হলো তার ইনজুরির পরও যেভাবে সে খেলা চালিয়ে গেছে এটা আমাকে উজ্জীবিত করে। আমিও ইনজুরির পর খেলছি, ২০১৮-১৯ এ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বসুন্ধরার সঙ্গে ফেডারেশন কাপের ম্যাচ খেলার সময় আমার হাত ভেঙেছিল। এখনো হাতে প্লেট লাগানো আছে।
নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
বিপু : আমার কোনো নিজস্ব লক্ষ্য নেই। আমি খেলে যেতে চাই। কোচরা জানেন আমাকে কোথায় খেলাবেন। জাতীয় দলে খেলার ইচ্ছা তো সবারই থাকে কিন্তু আমি সেই লক্ষ্য নিয়ে আগাতে চাই না। হলে এমনিতেই হবে।
অনেক বছর পর মোহামেডান শিরোপা জিতল। এই ধারা অব্যাহত রেখে সামনেরবার কী লক্ষ্য রাখছেন?
বিপু : গত বছর আমরা সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়ে গিয়েছিলাম সেখানে রেফারিংয়ের কিছু ব্যাপার ছিল আপনারা সবাই দেখেছেন। ইনশাআল্লাহ এই ধারা অব্যাহত থাকবে। আমাদের ফল তো আগের থেকে ভালো হচ্ছে। এটা বড় আত্মবিশ্বাসের কারণ।
দেশের ৬০টি জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে দিনের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। এ ছাড়া দেশজুড়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ আরও দুই দিন থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আজ বৃহস্পতিবার (১ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, ঢাকা বিভাগের ১৩টি, খুলনার ১০টি, রাজশাহীর আটটি, বরিশালের ছয়, রংপুরের আটটি, সিলেটের চার ও ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি জেলাসহ চট্টগ্রাম, সীতাকুণ্ড, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
আগামী দুই দিনে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে এবং বিদ্যমান তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ।
তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।