
দেশে দুই কোটিরও বেশি কিডনি রোগী আছেন। প্রতি বছর ৩৫-৪০ হাজার মানুষের কিডনি সম্পূর্ণ বিকল হচ্ছে। এসব রোগীর বেঁচে থাকার জন্য ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন প্রয়োজন। কিন্তু কিডনি চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় শতকরা ১০ জন এর ব্যয় বহন করতে পারেন। চিকিৎসা করতে গিয়ে অনেক পরিবার আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে যায়। গতকাল শনিবার এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব তথ্য জানান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
বৈঠকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, সবার জন্য কিডনি স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন বীমার আওতায় আনতে হবে।
গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। কিডনিবিষয়ক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস) এ গোলটেবিলের আয়োজন করে।
বৈঠকে ক্যাম্পস প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ বলেন, কিডনি রোগীরা দুর্যোগের সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। আমরা জানি কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক। বিশ্বে ৮৫ কোটি লোক কিডনি রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশে দুই কোটিরও অধিক কিডনি রোগী। দেশে প্রতি বছর ৩৫-৪০ হাজার লোকের কিডনি সম্পূর্ণ বিকলের শিকার হয়। তাদের বেঁচে থাকার জন্য ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, ডায়ালাইসিস সাধারণত সপ্তাহে ২-৩ দিন করতে হয়। দুর্যোগের কারণে ডায়ালাইসিস বন্ধ হলে মৃত্যু এগিয়ে আসবে। আবার দুর্যোগের সময় আঘাত, রক্তক্ষরণ, দুর্যোগ-পরবর্তী ডায়রিয়া ইনফেকশন এসব কারণে তীব্রমাত্রার আকস্মিক কিডনি বিকল হতে পারে। যার জন্য ডায়ালাইসিস প্রয়োজন। তাই কিডনি রোগীরা দুর্যোগের সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। ডা. এম এ সামাদ বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় কিডনি রোগীদের পূর্বপ্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি। যেমন প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রস্তুত রাখা। বিকল্প ডায়ালাইসিস সেন্টার সম্পর্কে আগে থেকে ধারণা নিয়ে রাখা। সাহায্যকারী নেটওয়ার্ক তৈরি করে রাখা। ডায়ালাইসিস পেতে বিলম্ব হলে সাময়িক খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, যেমন পানি কম, মাছ-মাংস কম, পটাশিয়ামযুক্ত খাবার যেমন ফল ও সবজি পরিহার করা।
গোলটেবিল বৈঠকে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ইঞ্জিনিয়ার আলী আহাম্মেদ খান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী, কিডনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন-উর-রশিদ ও বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. নিজামউদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক পন্থায় অধিকার আদায়সহ তাদের মেধা বিকাশের বিভিন্ন কার্যক্রম হয়ে থাকে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের মাধ্যমে। কিন্তু গত ৩৩ বছর ধরে অচল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু)। এতে থমকে আছে শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের কেন্দ্রীয় সংগঠনের কার্যক্রম। আবার দেশের স্বায়ত্তশাসিত চার বিশ্ববিদ্যালয়ে বাজেট অনুমোদন, বার্ষিক প্রতিবেদন পাস, আইন ও নীতিমালা সংশোধন ও অনুমোদনসহ যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সর্বোচ্চ ফোরাম সিনেট। ‘১৯৭৩-এর অধ্যাদেশ’ অনুযায়ী বছরে অন্তত একবার সিনেট অধিবেশনের বিধান রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। কিন্তু গত অর্ধযুগ ধরে সেটাও হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, ছাত্র সংসদ না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে কথা বলার যেমন কেউ নেই, ঠিক অপর দিকে সিনেট না থাকায় সমালোচনা ও জবাবদিহিতার জায়গা থেকে বেঁচে যাচ্ছে প্রশাসন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৬২ সালে যাত্রা শুরু করে রাকসু নামে। এখন পর্যন্ত ১৪ বার রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় রাকসুর ১৯৮৯-৯০ মেয়াদের জন্য। পরবর্তী সময়ে ২০১৯ সালে রাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসন সরব হলেও পরের বছরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ফলে চাপা পড়ে যায় রাকসু সংলাপ।
এদিকে এই দীর্ঘ সময় ধরে রাকসু নির্বাচন না হলেও থেমে নেই রাকসুর চাঁদা। রাকসুর জন্য প্রতি বছর প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ভর্তির সময় গুনতে হয় ১৫ টাকা।
রাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যায়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমাদের অধিকার নিয়ে কথা বলার এখন কেউ নেই। ফলে আন্দোলন করে দাবি তুললেও সেটা প্রশাসনের কান পর্যন্ত পৌঁছায় না। সংস্কৃত বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমিন আশরাফি বলেন, রাকসু সব শিক্ষার্থীর একটি অধিকারের জায়গা। শিক্ষার্থীদের একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া কখনই প্রশাসনের কাছ থেকে ন্যায্য দাবি আদায় সম্ভব না।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ঠিক রেখে মেধাবী নেতৃত্ব গড়ে তুলতে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাকসু নির্বাচন চাচ্ছেন ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা।
দ্রুত রাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, রাকসু নির্বাচনের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিভিন্নভাবে দাবি জানিয়ে আসছি। রাকসু না থাকলেও আমরা সব সময় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকি। কিন্তু রাকসু থাকলে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করতে আরও সুবিধা হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে আমি মনে করি এটিই রাকসু নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময়। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে রাকসু নির্বাচন চাই।
রাবি শাখা ছাত্রদল রাকসু নির্বাচন চায় জানিয়ে সংগঠনটির আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে রাকসু নির্বাচন চাই এবং নির্বাচনে আমরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণও করব।
এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীসহ স্বেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো সবাই চাচ্ছে খুব দ্রুত রাকসু নির্বাচন দিয়ে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের জায়গাটা ফিরিয়ে দিতে।
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউট অব ইংলিশ অ্যান্ড আদার ল্যাঙ্গুয়েজ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন দেশ রূপান্তরকে বলেন, অবশ্যই রাকসু নির্বাচন দরকার। রাকসু না থাকলে আমাদের হাজার হাজার শিক্ষার্থীর প্রতিনিধিত্ব কে করবে?
রাকসু নির্বাচনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, রাকসু নির্বাচন করতে হলে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। যদি সকলে মিলে একটা পরিবেশ আমরা তৈরি না করতে পারি তাহলে একটা ভয় কাজ করে যে, এখানে একটা অশান্ত পরিবেশ তৈরি হবে। আর অশান্ত পরিবেশ তৈরি হলেই তার ইফেক্ট বহুদিন ধরে পড়তে থাকবে। কারণ রাকসু নির্বাচন মানেই ছাত্রভিত্তিক নির্বাচন। সেখানে সবার প্রতি সম্মানবোধ ও সহনশীলতা দরকার আছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের থেকে শিক্ষার্থীদেরই এগিয়ে আসতে হবে।
অর্ধযুগ ধরে হয় না সিনেট অধিবেশন : এদিকে গত অর্ধযুগ ধরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) হয়নি কোনো সিনেট অধিবেশন। সিনেটের আচার্য, সরকার, স্পিকার মনোনীতসহ অধিকাংশ সদস্য পদই শূন্য অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ। আবার রাকসু অচল থাকায় গত ৩৩ বছর ধরে সেখানে নেই কোনো ছাত্র প্রতিনিধি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৪ বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৫ সালের ১৮ মে সিনেট অধিবেশন করেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মিজানউদ্দিন। পরের বছরের ১৯ মে সিনেটের ২২তম অধিবেশনও হয় তার সভাপতিত্বে। তবে এরপর পূর্ণ মেয়াদ পার করলেও কোনো সভা আহ্বান করেননি সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার এক বছর পার করে ফেললেও সিনেট সভা করতে পারেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশের ২০ ধারা অনুযায়ী, সিনেটের সদস্য ১০৫ জন। তাদের মধ্যে উপাচার্য পদাধিকার বলে সভাপতি, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ সদস্য এবং রেজিস্ট্রার হন সচিব। রাবির সিনেটে এই চারজনের বাইরে সব সদস্য পদের মেয়াদই শেষ হয়েছে।
১৯৯৪ সালে সর্বশেষ রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন হয়। নির্বাচিত সেই ২৫ সদস্যের মেয়াদও শেষ হয়েছে দুই যুগের বেশি আগে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে সদস্য হন ৩৩ জন। তাদের মেয়াদও শেষ হয়েছে এক বছরের বেশি আগে। আর রাবি সিনেটে এক বছর মেয়াদের ছাত্র প্রতিনিধি নেই তিন দশক আগে থেকেই। ১৯৮৯-৯০ সালে সর্বশেষ এখানে রাকসু নির্বাচন হয়।
এ বিষয়ে সিনেটের সাবেক সদস্যদের অভিযোগ, উপাচার্যরা নিজেদের ক্ষমতা জাহির করতেই অধিবেশন ডাকেন না। তারা জানান, সিনেট অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। জবাবদিহি করতে হয়, সমালোচিত হতে হয়। সেজন্য তারা এটি এড়িয়ে চলেন।
সিনেটের নির্বাচিত রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট মো. মাসউদুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, বাজেট তৈরি করা, উপাচার্য নির্বাচনের জন্য প্যানেল তৈরি করা, বিভিন্ন ইনস্টিটিউট অনুমোদন দেওয়াসহ নানা ধরনের কাজ সিনেটের মাধ্যমে হয়ে থাকে। সিনেট না হওয়ার ফলে একটা প্রধান ক্ষতি হচ্ছে সরকারের ইচ্ছামতো একজনকে উপাচার্য দিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু এটা হওয়ার কথা ছিল সিনেটে প্যানেলের মাধ্যমে তিনজনের একটি তালিকা আচার্য বরাবর যাবে এবং তিনি সেখান থেকে একজনকে বেছে নেবেন। সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। দ্বিতীয় ক্ষতি, উপাচার্য বাজেট ইচ্ছামতো পাঠাচ্ছেন।
সিনেট সদস্য ও রাবির জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক খালেকুজ্জামান বাজেট এবং উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে দেশ রূপান্তরকে একই কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, সিনেটে নির্বাচিত হয়েও আমাদের কোনো দিন ডাকেননি এই উপাচার্য। শুধু স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানে ডেকেছিলেন।
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম দেশ রূপান্তর বলেন, সিনেটের বেহাল দশা বহুকাল আগে থেকেই। এখন এটার জন্য নির্বাচন দরকার। এ ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রার গ্র্যাজুয়েট প্রয়োজন। আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। সিনেট পূর্ণাঙ্গ করতে হলে ছাত্রদের প্রতিনিধি রাখতে হয়। তাই রেজিস্ট্রার গ্র্যাজুয়েটদের নির্বাচন হওয়া দরকার। সিনেট প্রতি বছরই একটা হওয়া দরকার। কারণ আর্থিক বিষয়গুলো পাস হয় সিনেটে। আশা করছি খুব দ্রুতই সিনেট কার্যকর করতে পারব।
দুই যুগ আগে মাদাগাস্কারের নদী অববাহিকার চিরহরিৎ বনাঞ্চলে দেখা মিলত বাবুইয়ের মতো ছোট্ট এক প্রজাতি পাখির। বাবুইয়ের মতোই বাসা বাঁধার কৌশল তার। আর নদীর জলতরঙ্গের মতোই ছন্দময় গলা। মিষ্টি গলার সুরেলা ডাকের কারণে ডাস্কি তেতরাকা নামে পাখিটি দ্বীপ দেশটিতে পরিচিতি পেয়েছে গানের পাখি হিসেবে। তবে জলপাই-রঙা শরীর আর হলদে গলার পাখিটি ১৯৯০ সালের পর সেখানে আর দেখা যায়নি। প্রাণী বিজ্ঞানীদের কেউ কেউ পাখিটিকে ফেলে দিয়েছিলেন বিলুপ্তির তালিকায়। তবে যারা আশা ছেড়ে না দিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে পাখিটির খোঁজ করেছেন, তারা শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছেন। গত ডিসেম্বর মাসে তিনটি ডাস্কি তেতরাকা পাখির খোঁজ পেয়েছে একদল গবেষক। আর গত সপ্তাহে তারা গানের পাখির ফিরে আসার ঘোষণা দিয়েছেন।
বিবিসি বলছে, দ্য পেরেগ্রেইন ফান্ডের মাদাস্কার কর্মসূচির আওতায় পরিচালিত এক গবেষণায় সন্ধান মিলেছে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিটির। গবেষকরা গত ডিসেম্বর মাসে দেশটির মাসোয়ালা উপসাগরীয় অঞ্চলে দুটি পাখির দেখা পান। পরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্ডাপা এলাকায় দেখা যায় আরেকটি পাখি।
বিবিসি বলছে, গবেষকদের নথি অনুসারে ১৯৯৯ সালে শেষবার দেখা গিয়েছিল ডাস্কি তেতরাকা প্রজাতির এ পাখিকে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাও বিশ্বের বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা ১০ প্রাণীর তালিকায় ফেলেছিল একে।
দ্য পেরেগ্রেইন ফান্ডের মাদাস্কার কর্মসূচির পরিচালক ও গবেষক দলের প্রধান লিলি-অ্যারিসন রেনে দে রোনাল্ড বলেন, মাদাগাস্কার জীববৈচিত্র্য আসলেই অনন্য। এখানে এখনো অনেক কিছু আবিষ্কার হওয়ার বাকি আছে।
তিনি বলেন, ডাস্কি তেতরাকা শুধু মাদাগাস্কারেই পাওয়া যেত। তবে গত দুই যুগে অনেকে ধরে নিয়েছিলেন ডাস্কি তেতরাকা পুরোপুরি হারিয়ে গেছে প্রকৃতি থেকে। তবে আমাদের বিশ্বাস ছিল, এই ভূখণ্ডের বৈচিত্র্যময় প্রকৃতিতে কোথাও হয়তো ঠিকই খুঁজে পাওয়া যাবে সুরেলা গলার পাখিটিকে। আর আমরা শেষ পর্যন্ত পেয়েছি। এখন তার জীবন সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারব। শুধু তা-ই নয়, এ আবিষ্কার মাদাগাস্কারের বাস্তুসংস্থানেরও বিষয় ধারণা দেবে।
রেনে দে রোনাল্ড জানান, এর আগে ২০০৬ সালে তিনি যখন শিক্ষার্থী তখনো হারিয়ে যাওয়া লাল প্যাঁচা ও বিরল প্রজাতির ইগল পুনঃআবিষ্কার করেছিলেন। তখন আন্ডাপা এলাকার বনাঞ্চল ছিল ঘন। কিন্তু এবার দেখা যায় বনের অনেক এলাকাই খালি হয়ে গেছে।
অবশ্য আমেরিকান বার্ড কনজারভেন্সির পক্ষীবিশারদ জন মিত্তারমেরেজ মনে করেন, পাখিটি তার স্বভাবের কারণেই দীর্ঘ সময় মানুষের চোখের আড়ালে থেকেছে। তার ভাষ্য, নদী এলাকা থাকার কারণেই ডাস্কি তেতরাকাকে বনের গভীরে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার পরও আবিষ্কারটি গুরুত্বপূর্ণ। গানের পাখির ফিরে আসা প্রকৃতির জন্য ভালো বিষয়।
দেশে প্রতিদিনই রেললাইনে ট্রেনে কাটা পড়ে কিংবা ধাক্কায় প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। এসব মৃত্যুকে দুর্ঘটনাজনিত কিংবা আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করে অপমৃত্যুর মামলা করে দায় সারছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এমনকি লাশ উদ্ধার হলেও অনেককেই শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। কারণও চিহ্নিত করা যাচ্ছে না।
প্রযুক্তিগত সমক্ষমতার অভাবে কারণ অজানা থেকে যাচ্ছে বলে জানান রেলওয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা।
রেল পুলিশের তথ্য অনুয়ায়ী, গত পাঁচ বছরে (২০১৮-২২) সারা দেশে রেললাইন থেকে ৪ হাজার ৫২৩টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ২০২২ সালে চট্টগ্রাম অঞ্চলে উদ্ধার হয়েছে ১২৯টি মরদেহ। এর মধ্যে পরিচয় শনাক্ত করা গেছে ৮৯টি। বাকি ৩৯ জনের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
চট্টগ্রামের রেলওয়ে পুলিশ কর্মকর্র্তারা বলছেন, পরিচয় শনাক্ত করতে না পারা ৩৯টি মরদেহের ডিএনএ নমুনা তারা সংরক্ষণ করে রেখেছেন। তাদের দাবি, রেললাইন থেকে মরদেহ উদ্ধারের পর যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ঘটনাগুলোর তদন্ত করা হয়।
তবে পরিচয় গোপন রেখে রেল পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলছেন, রেললাইনে মৃত্যুর একটি বড় অংশের কারণ চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। অপমৃত্যুর মামলা করে দায় সারা হচ্ছে। রেল পুলিশের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা না থাকায় পরিচয়ও শনাক্ত করা যাচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার আন্তরিকতার ঘাটতির কারণেও অজানা থেকে যাচ্ছে মৃত্যুর সঠিক কারণ।
রেল পুলিশের এক কর্মকর্তার ভাষ্য, ‘রেললাইন থেকে লাশ উদ্ধার হলে স্বাভাবিকভাবে দুর্ঘটনা বিবেচনায় নিয়ে অপমৃত্যুর মামলা করবে রেল পুলিশ। এ কারণে হত্যার পর আলামত নষ্ট করতে রেললাইনে লাশ ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। কারণ ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুর বিষয়টি দুর্ঘটনা ধরে নিয়ে তদন্ত করে পুলিশ। কোনো অভিযোগকারী না থাকায় হত্যাকা- ধরে নিয়ে তদন্ত করে না।’
গত বছর চট্টগ্রাম অঞ্চলের রেললাইন থেকে ১২৯টি মরদেহ উদ্ধারের পর প্রতিটি ঘটনার তদন্ত হয়েছে বলে দাবি করেন চট্টগ্রামের রেলওয়ে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী হাছান চৌধুরী। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লাশ উদ্ধারের পর হত্যার শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সব ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।’
চট্টগ্রামের রেল পুলিশের শীর্ষ এই কর্মকর্তা জানান, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২ মাসে চট্টগ্রাম এলাকায় ৫৩, লাকসাম এলাকায় ৬৯ ও চাঁদপুর এলাকা থেকে ৭টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রেললাইনে মৃত্যুর কারণ হিসেবে যেসব বিষয় উঠে এসেছে সেগুলো হলো রেললাইনের ওপর দিয়ে অসতর্ক চলাফেরা, কানে হেডফোন বা মুঠোফোনে কথা বলা, রেললাইনে বসে আড্ডা দেওয়া, রেলক্রসিং গেটম্যানের নির্দেশ অমান্য করা, ঝুঁকিপূর্ণভাবে ট্রেনে ভ্রমণ করা ইত্যাদি।
রেল পুলিশ সুপার (চট্টগ্রাম) জানান, দুর্ঘটনা রোধে ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ, পাথর নিক্ষেপ বন্ধে জনসচেতনতামূলক বিট পুলিশিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে রেলওয়ের চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ। এ ছাড়া রেল ক্রসিং পারাপারে সতর্ক হওয়ার বিষয়েও জনসচেতনতামূলক বিট পুলিশিং কার্যক্রম অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।
রেল পুলিশ থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান বলছে, সারা দেশে ২০১৮ সালে ১ হাজার ২; ২০১৯ সালে ৯৮০; ২০২০ সালে ৭১৩; ২০২১ সালে ৭৭৮ ও ২০২২ সালে ১ হাজার ৫০ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে ৩১১ শিক্ষার্থী, ৩৭০ জন চাকরিজীবী ও ২ হাজার ৬৪ জন শ্রমজীবী ছিলেন।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, নিহতদের ৩ হাজার ৪৫৮ জন পুরুষ ও ১ হাজার ৬৫ জন নারী। সবচেয়ে বেশি মারা গেছে ১৯ থেকে ৫০ বছর বয়সীরা, সংখ্যায় তা ২ হাজার ৯৯৩ জন। আবার নিহত ৩৫৩ জনের বয়স ১৮ বছর বা এর চেয়ে কম। পঞ্চাশোর্ধ্ব ছিল ১ হাজার ১৭৭ জন।
জানতে চাইলে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী (অপারেশন) দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রেললাইনে ১৪৪ ধারা জারি থাকে। রেললাইন থেকে লাশ উদ্ধারের ঘটনা পুলিশের পাশাপাশি রেল কর্তৃপক্ষও মনিটর করে। তবে দুর্ঘটনা এড়াতে মানুষকে সচেতন হতে হবে। দেশের বিভিন্ন স্টেশন এবং যেসব জনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্য দিয়ে রেলপথ গেছে, সেসব স্থানে পুলিশের পাশাপাশি আমরাও নানাভাবে প্রচারণা চালাচ্ছি।’
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের পদস্থ এক কর্মকর্তা জানান, ২০১৯ ও ২০ সালে চট্টগ্রাম, ফেনী ও কুমিল্লা থেকে তিনটি মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা করে পুলিশ। পরে তদন্ত করে দেখা যায়, হত্যার পর লাশগুলো রেললাইনে ফেলে যায় খুনিরা। তিনি জানান, এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবরে কুমিল্লা সদর এলাকায় রেললাইন থেকে শরিফুল ইসলাম নামের এক তরুণের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শরিফুলের বাবা সিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলা করতে চাইলেও রেলওয়ে থানা-পুলিশ অপমৃত্যু মামলা নেয়। শরিফুলের বাবার করা মামলার সূত্র ধরে আদালতের নির্দেশে ২০১৯ সালে ঘটনাটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই সংস্থার তদন্তে বেরিয়ে আসে, প্রেমঘটিত কারণে শরিফুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে লাশ রেললাইনে ফেলে যায় খুনিরা। পরে শরিফুলের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
এই কর্মকর্তা বলেন, ‘রেললাইনে লাশ পাওয়া গেলে ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল তৈরি করা ছাড়া স্বজনদের লাশ হস্তান্তর করা হয় না। কারণ সব ঘটনা যে দুর্ঘটনা, এমনটিও নয়।’
দেশে রাজনীতির মাঠ সব দলের জন্য উন্মুক্ত বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবার জন্য রাজনৈতিক অঙ্গন একদম মুক্ত করে দিয়েছি। যে যেমন পারছেন তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। আমরা কিছু বাধা দিচ্ছি না। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও নতুন প্রাইম মিনিস্টার (প্রধানমন্ত্রী), নতুন সংসদ নির্বাচিত হবে। ইলেকশন কমিশন সেই ব্যবস্থাটা করবেন এটাই আমরা মনে করি।’
গতকাল শনিবার যশোরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনো বিশ্বাস করে না যে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসবে। আওয়ামী লীগ কখনোই বিশ্বাস করে না যে, পেশিশক্তির মাধ্যমে, বন্দুকের নলের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সব সময় চিন্তা করে জনগণই তার শক্তি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ১০ বছর পরে আমাদের চরম দরিদ্রতা কেমন ছিল তা জাদুঘরে গিয়ে দেখে আসতে হবে; তা সম্ভব হয়েছে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতার কারণে। আমরা সবাই যদি একসঙ্গে চলি তবে আমাদের অগ্রযাত্রা কেউ ঠেকাতে পারবে না। কেউ বাইরে থেকে এসে সবক দেবে তা হবে না, আমরা নিজেরা চলতে পারি।’
দেশের সব কটি থানা আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১০১টি থানার ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে এবং আরও ৫০টি থানার ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া যশোরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ ৯টি কার্যালয় নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা এখানে থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসডিজি অর্জন করতে হলে সাসটেইনেবল পিস (শান্তি) দরকার। আর সে জন্য সাসটেইনেবল নিরাপত্তা দরকার।’
যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ এমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মঈনুল হক।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিকেলে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে ই-গেট (ইলেকট্রনিক ফটক) সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগের আয়োজনে বেনাপোল বল্ডফিল্ড মাঠে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলনের গতি কমে গেছে, গলার জোর বেড়ে গেছে। তারা বলেছিল ১০ তারিখ দেশ দখল করবে, পরের দিন খালেদা জিয়া দেশ চালাবে, তারেক রহমানের ডাকে তাদের নেতাকর্মীরা হান্ডি, পাতিল, লোটা-কম্বল নিয়ে সাত দিন ধরে এক এক সমাবেশের নামে পিকনিক করেছে। তারা লাল কার্ড থেকে নীরব পদযাত্রার আয়োজন করেছে। আর আজকে শুনলাম নিরীহ মানববন্ধন করবে।
তিনি বলেন, বিএনপি লুটপাটের কথা তুলে আমাদেরকে বর্গি বলে। আপনারা কি হাওয়া ভবনের কথা ভুলে গেছেন? আপনারা কি ভুলে গেছেন আমেরিকা ও সিঙ্গাপুরে বিএনপির পাচার করা হাজার হাজার কোটি টাকার কথা? মনে রাখবেন, বর্গির চেয়েও ভয়ংকর বিএনপি নামক লুটেরা দল। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গিলে খাবে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপির শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রামে সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারীদের মধ্যে বিভিন্ন সংঘর্ষের ঘটনার উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের তরুণ তুর্কিদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। পত্র-পত্রিকায় দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার খবর দেখে আমরা লজ্জা পাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপকর্মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা অপরাধী তাদের শাস্তি দিচ্ছেন। আবরার হত্যায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের শাস্তি হয়েছে। শেখ হাসিনা কাউকে ছাড় দেন না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো রাজনৈতিক শক্তি আমাদের হারাতে পারবে না। তাই নিজেরা নিজেদের শত্রু হবেন না।
প্রয়াত মোছলেম উদ্দিন আহমদের কথা স্মরণ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মোছলেম উদ্দিন দলের একজন নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। মৃত্যুর তিন দিন আগে ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন আমি দেখতে গিয়েছিলাম। তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি চট্টগ্রামে যাব। আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ অভিযান করব। আমাকে সময় দিতে হবে। এককথায় তিনি আওয়ামী লীগের প্রতি একান্ত অনুগত ছিলেন।’
শোকসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আগামী নির্বাচনে না এলে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বিএনপি। তবে বিএনপি নির্বাচনে না এলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উকিল আব্দুস সাত্তারের মতো বিএনপির অনেক আব্দুস সাত্তার তৈরি হয়ে আছে নির্বাচনে আসার জন্য। এ বিষয়টিও মাথায় রাখার জন্য বিএনপি নেতাদের অনুরোধ জানাই।
চট্টগ্রাম নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এই শোকসভার আয়োজন করে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় শোকসভায় প্রধান আলোচক ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কো-স্পোর্টস যতটা না তাদের কর্মগুণে সমাদৃত, তার চেয়ে বেশি আলোচিত নানা নেতিবাচক কারণে। একটা সময় কে-স্পোর্টস ও এর প্রধান নির্বাহী ফাহাদ করিমে আস্থা রেখেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বড় বড় সব চুক্তিও সে সময় হয়েছিল দুই পক্ষের। তবে চুক্তির নানা শর্ত ভঙ্গ করে বিসিবির গুড বুক থেকে কাটা গেছে তাদের নাম।
বিসিবিতে সুবিধা করে উঠতে না পেরে গেল কয়েক বছর ফাহাদ করিম সওয়ার হয়েছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনে। বাফুফের এই আলোচিত সভাপতি একটা সময় বড় গলায় ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ, বিসিবির বিপিএলের কঠোর সমালোচনা করে বলেছিলেন, ফুটবলকে জনপ্রিয় করতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মতো সস্তা আয়োজনের প্রয়োজন নেই।
অথচ ফাহাদের পাল্লায় পড়ে সেই সালাউদ্দিনই নিজের বলা কথা ভুলে গেছেন। তৎপর হয়েছেন নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনে। যদিও এমন আয়োজনের জন্য কোনো রকম পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না কে-স্পোর্টসের। যার জ্বলন্ত উদাহরণ ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত না করেই আসর মাঠে গড়ানোর তারিখ ঘোষণা করা এবং অনুমিতভাবেই ঘোষিত তারিখে খেলা শুরু করতে না পারা।
কে-স্পোর্টসের সিইও ফাহাদ করিমের সঙ্গে সালাউদ্দিনের দহরম মহরম বেশ কয়েক বছর আগে থেকে। সেটা কখনো কখনো ফুটবলের স্বার্থ ছাড়িয়ে চলে যায় ব্যক্তিস্বার্থে। সাফল্যপ্রসবা নারী ফুটবলে বেশি আগ্রহ সালাউদ্দিনের। ক্রীড়া-বেনিয়া ফাহাদও সালাউদ্দিনের নারী ফুটবলের প্রতি বাড়তি অনুরাগটা ধরে ফেলে ২০১৯ সালে বাফুফেতে প্রবেশ করেন ঢাকায় অনূর্ধ্ব-১৯ আন্তর্জাতিক নারী টুর্নামেন্ট আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
এর পরের বছর টিভি সম্প্রচারস্বত্ব পাইয়ে দিতে বাফুফের সঙ্গে তিন বছরের বড় অঙ্কের চুক্তি করে কে-স্পোর্টস। চুক্তি অনুযায়ী বাফুফেকে ফি-বছর আড়াই কোটি টাকা করে দেওয়ার কথা কে-স্পোর্টসের। সেই অর্থ বুঝে না পেয়ে সম্প্রতি ফাহাদ করিমকে চিঠি দেয় বাফুফে।
বিষয়টি সমাধান না হলে নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে চুক্তি না করার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছিল চিঠিতে। তবে এই চিঠি দেওয়া যে শুধুই আনুষ্ঠানিকতার, তা সালাউদ্দিন-ফাহাদ করিমের হাবভাবেই বোঝা যায়। চুক্তির বিষয়টাকে এক পাশে রেখে আসলে তাদের বড় দুর্ভাবনা নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ।
পাঁচ তারকা হোটেলে সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানীদের নিয়ে দেশ-বিদেশ থেকে নামীদামি নায়ক-নায়িকা-মডেল ভাড়া করে এনে ফাহাদ করিম এর মধ্যেই আসরের লোগো, ট্রফি ও বল উন্মোচন করেছেন একাধিক অনুষ্ঠানে। ১ মে হওয়ার কথা ছিল আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফটস। সেদিন ড্রাফটসের জায়গায় হয়েছে ট্রফি ও বল উন্মোচন অনুষ্ঠান। কে-স্পোর্টস যে ফ্র্যাঞ্চাইজিও চূড়ান্ত করতে পারেনি, প্লেয়ার ড্রাফটসটা হবেই বা কাদের নিয়ে?
এই অবস্থা এখনো চলমান। ১৫ মে শুরু হওয়ার কথা ছিল খেলা। সেই তারিখও ভেস্তে গেছে। আসলে অনিয়ম-জালিয়াতির আখড়ায় রূপ নেওয়া বাফুফের প্রতি আস্থা হারিয়েছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। যেচে কেউই চায় না ফাহাদ-সালাউদ্দিনের দেওয়া টোপ গিলতে। এমনকি ফুটবলের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক আছে এমন কোম্পানিগুলোও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
শুরুতে এ আসরটি ছয় দল নিয়ে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল কে-স্পোর্টস। পরে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পেয়ে দলসংখ্যা নামিয়ে আনা হয় চারে। জানা গেছে, বাফুফেকে পৃষ্ঠপোষকতা করা বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে বারবার গিয়েও খেলতে রাজি করাতে পারেননি ফাহাদ। অথচ তারপরও এই ফাহাদে সালাউদ্দিনের আস্থা টলেনি।
সম্প্রতি সালাউদ্দিন, বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী ও বাফুফের নারী কমিটির প্রধান মাহফুজা আক্তারের সঙ্গে দীর্ঘ সভা করেন। বৈঠক শেষে বাফুফে ভবন ছাড়ার সময় ফাহাদ করিম যা বলেছিলেন, তাতে পরিষ্কার নারী ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের কোনো অগ্রগতিই হয়নি।
দেশ রূপান্তরকে ফাহাদ বলেছেন, ‘দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি চূড়ান্ত হয়েছে। বাকিগুলো শিগগিরই হয়ে যাবে। বড় কোনো অগ্রগতি হলে আমি সবাইকে ডেকে জানাব।’
গত সোমবার বাফুফের জরুরি সভা শেষে কাজী সালাউদ্দিন নতুন করে লিগ শুরুর তারিখ ঘোষণা করেন। পরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘ওমেন্স ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ১০ জুন থেকে শুরু হবে। ১২ দিনে হবে ১৩ টি ম্যাচ। এটা এখন বলা দরকার যে, ফিফা উইন্ডোতে লিগ করছি। যেন বিদেশি খেলোয়াড় আসতে পারে। না হলে আসতে পারবে না।’
নতুন তারিখ ঘোষণা করেছেন ঠিকই। তবে আদৌ নির্ধারিত তারিখে খেলা হবে কি না, তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট শঙ্কা।
গত বছর নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই মাঠে ফেরার দিন গুনছেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড়রা। সাফ জয়ের পর সালাউদ্দিন শুনিয়েছিলেন গালভরা বুলি। সাবিনাদের নিয়মিত খেলার ব্যবস্থা করবেন। অথচ লিগের কিছু ম্যাচ ছাড়া আর খেলারই সুযোগ আসেনি। অথচ অর্থ সংকটের খোঁড়া অজুহাত দেখিয়ে বাফুফে মেয়েদের মিয়ানমারে পাঠায়নি অলিম্পিক বাছাই খেলতে।
ফিফা উইন্ডোতেও বাফুফে পারেনি দলের জন্য প্রতিপক্ষ জোগাতে। পাঁচ তারকা হোটেলের চোখ ঝলসানো মায়াবী আলো আর সুরের মূর্ছনায় ফাহাদ করিম আয়োজন করেছিলেন লোগো, ট্রফি উন্মোচন অনুষ্ঠান। সেখানে গিয়ে সাবিনারাও দেখেছিলেন বাড়তি কিছু উপার্জনের রঙিন স্বপ্ন। তবে বাফুফের অদূরদর্শী সভাপতি অপ্রস্তুত এক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজনের দায়িত্ব তুলে দিয়ে যেন সাবিনাদের স্বপ্নটাকেই আরেকবার গলাটিপে ধরতে চাইছেন।
এক লোক হজরত সুফিয়ান সাওরি (রহ.) কে প্রশ্ন করল, নামাজের সময় কাতারের কোন পাশে দাঁড়ানো উত্তম? প্রথম কাতারের ডান পাশে না কি বাম পাশে? তখন সুফিয়ান সাওরি (রহ.) বলেন, প্রথমে দেখো খাবারের জন্য রুটির যে টুকরোটা নিয়েছে তা হালাল না কি হারাম? তুমি কাতারের যেখানেই নামাজ আদায় করো তা তোমার কোনো ক্ষতি করবে না। তুমি নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে খুব ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করো, তুমি নামাজ কোথায় আদায় করবে? অথচ তুমি এমন একটি কাজে লিপ্ত যা তোমাকে নামাজ কবুল হওয়া থেকে বিরত রাখে!
একবার হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে উদ্দেশ করে বলেন, তোমরা কি জানো প্রকৃত দরিদ্র কে? তারা বললেন, দরিদ্র তো সে যার কোনো দিনার-দেরহাম নেই (অর্থকড়ি নেই)। তখন তিনি বলেন, আমার উম্মতের মধ্যে দরিদ্র সে, কিয়ামতের দিন নামাজ, রোজা ও জাকাতের সওয়াব নিয়ে আসবে; কিন্তু সে একে গালি দিয়েছে, ওকে প্রহার করেছে, অন্যায়ভাবে অন্যের মাল ভক্ষণ করেছে, তখন এই লোক তার সওয়াব থেকে নেবে, ওই লোক তার সওয়াব থেকে নেবে, অতঃপর যখন তার সওয়াব শেষ হয়ে যাবে তখন অন্য পাওনাদাররা তাদের অপরাধগুলো এই লোককে দিয়ে দেবে, এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
এরপর সুফিয়ান সাওরি (রহ.) লোকটিকে বলেন, তুমি প্রথম কাতারে নামাজ আদায় করলে তাতে কী লাভ; যদি তুমি মানুষের হক নষ্ট করো, অন্যের মাল অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো? সুতরাং তুমি হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ করো।
নবী কারিম (সা.) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্র এবং তিনি পবিত্র জিনিস ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করেন না এবং তিনি মুমিন বান্দাদের তাই আদেশ করেছেন যা তিনি নবী-রাসুলদের আদেশ করেছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে রাসুলরা, পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎ কাজ করুন। আপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত।’ সুরা মুমিনুন : ৫১
এই আয়াতে আল্লাহতায়ালা পবিত্র খাবারকে নেক আমলের পূর্বে এনেছেন। অর্থাৎ নামাজ আদায়, দিনের বেলা রোজাপালন, রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি ও কোরআন তেলাওয়াতের পূর্বে হালাল খাবারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহতায়ালা এখানে রাসুলদের উদ্দেশ করে বলেছেন, হে রাসুলরা! তোমরা হালাল খাবার গ্রহণ করো। এরপর তিনি বলেছেন এবং সৎ আমল করো। অর্থাৎ নেক আমলের পূর্বে হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ করো, যাতে হারাম খাবার গ্রহণের কারণে নেক আমলগুলো নষ্ট না হয়ে যায়। এ কারণেই আল্লাহতায়ালা বলেছেন, তোমরা পবিত্র বস্তু গ্রহণ করো এবং সৎ আমল করো।
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) দীর্ঘ সফরে ক্লান্ত ধূলোমলিন চুল ও চেহারাওয়ালা এক লোকের উপমা দিয়ে বলেছেন, সে আসমানের দিকে হাত তুলে বলে, হে আমার রব! হে আমার রব! তিনি বলেন, অথচ তার খানাপিনা হারাম, তার পোশাক-পরিচ্ছেদ হারাম, সে যা ভক্ষণ করে তা হারাম, তাহলে তার দোয়া কবুল হবে কীভাবে?
ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, হালাল খাবার মানুষের মেধা, ইলম ও আমলের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। সুতরাং এ প্রশ্ন করা অবান্তর, আমাদের দোয়া কবুল করা হয় না। দোয়া কবুল না হওয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো হালাল ও পবিত্র খাবার গ্রহণ না করা। বস্তুত সমস্যা দোয়ার মধ্যে নয়, সমস্যা আমার-আপনার মধ্যে। আপনি খাবারকে পবিত্র রাখুন, দেখবেন আপনার দোয়াগুলো কবুল হচ্ছে।
একজন হারাম কজে লিপ্ত, অন্যায়ভাবে মানুষের হক ভক্ষণকারী, শ্রমিকের পারিশ্রমিক পরিশোধ করেন না, বাড়ির অসহায় কাজের মেয়েটির প্রাপ্য ভাতা প্রদান করেন না, অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন না আর সেই আপনিই আবার অভিযোগ করেন আমার দোয়া কবুল হয় না?
একটু ভাবুন, চিন্তা করুন। সর্বদা পবিত্র খাবার খাওয়ার, পবিত্র পোশাক পরিধানের চেষ্টা করুন। দয়াময় আল্লাহ আপনাকে বঞ্চিত করবেন না।
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।