
অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের ৯৫তম আসরে সেরা চলচ্চিত্রসহ সাতটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতেছে এক চীনা-আমেরিকান পরিবারের ভিন্ন স্বাদের গল্পের সিনেমা এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ান্স। বাংলাদেশ সময় গতকাল সোমবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের ডলবি থিয়েটারে ঘোষণা করা হয় এবারের অস্কার জয়ীদের নাম।
এবারের অস্কারে সেরা মৌলিক গানের পুরস্কার জিতে ইতিহাস গড়েছে ভারতীয় নির্মাতা এসএস রাজামৌলির ‘আরআরআর’- সিনেমার ‘নাটু নাটু’ গানটি। তেলেগু ভাষায় ‘নাটু নাট’ু গানটি লিখেছেন কালা ভৈরব ও রাহুল সিপলিগঞ্জ। পাশাপাশি প্রবীণ সংগীত পরিচালক এমএম কিরাভানির সুরে কণ্ঠও দিয়েছেন এই দুই তারকা। অস্কারের রাতে মঞ্চে ‘নাটু নাটু’ গানটি পরিবেশনও করেছেন কালা ভৈরব ও রাহুল সিপলিগঞ্জ। পারফরমেন্স শেষ হলে উচ্ছ্বসিত দর্শকদের উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিতে দেখা যায়।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এভরিথিং এভরিহোয়্যারের দুই নির্মাতা ড্যানিয়েল কোয়ান ও ড্যানিয়েল শাইনার্ট পেয়েছেন সেরা পরিচালকের পুরস্কার। অভিনেত্রী মিশেল ইয়ো পেয়েছেন সেরা অভিনেত্রীর অস্কার। পাশর্চরিত্রের দুটি পুরস্কারই গেছে সেই এভরিথিং এভরিহোয়্যারের
দুই কুশলীর হাতে। জেমি লি কার্টিস পেয়েছেন পাশর্^চরিত্রের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। আর কে হুই কোয়ান পেয়েছেন পাশর্^চরিত্রে সেরা অভিনেতার পুরস্কার। ‘দ্য হোয়েল’ সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতার অস্কার পেয়েছেন অভিনেতা ব্রেন্ডন ফ্রেজার।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, এবার অস্কারে ১১ বিভাগে মনোনয়ন পাওয়া এই সাই-ফাই কমেডি ড্রামা যে বড় সাফল্য পাবে, তা অনেকটা অনুমিতই ছিল। এর আগের পুরস্কারের আসরগুলোতেও এভরিথিং এভরিহোয়্যার দারুণ সাড়া পেয়েছিল।
এবার অস্কারে সেরা সিনেমার লড়াইয়ে আরও ছিল অল কোয়াইট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট, অ্যাভাটার : দ্য ওয়ে অব ওয়াটার, দ্য বানশিজ অব ইনিশেরিন, এলভিস, দ্য ফেবলম্যানস, টার, টপ গান : ম্যাভেরিক, ট্রায়াঙ্গল অব স্যাডনেস ও উইমেন টকিং। সবাইকে টপকে গেছে এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ানস।
অবশ্য অল কোয়াইট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট সেরা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রসহ চারটি বিভাগে অস্কার পেয়েছে।
এক নজরে কোন বিভাগে কে জয়ী
* সেরা চলচ্চিত্র : এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ানস
* সেরা অভিনেত্রী : মিশেল ইয়ো (এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ানস)
* সেরা অভিনেতা : ব্রেন্ডন ফ্রেজার (দ্য হোয়েল)
* পার্শ্বচরিত্রে সেরা অভিনেত্রী : জেমি লি কার্টিস (এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ানস)
* পাশর্^চরিত্রে সেরা অভিনেতা : কে হুই কোয়ান (এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ানস)
* সেরা পরিচালক : ড্যানিয়েল শাইনার্ট ও ড্যানিয়েল কোয়ান (এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ানস)
* সেরা মৌলিক চিত্রনাট্য : এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ানস
* সেরা রূপান্তরিত চিত্রনাট্য : উইমেন টকিং
* সেরা অ্যানিমেটেড ফিচার ফিল্ম : গিয়েলমো ডাল টোরস পিনোকিও
* সেরা প্রামাণ্যচিত্র : নাভালনি
* সেরা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র : অল কোয়াইট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট (জার্মানি)
* সেরা মৌলিক গান : নাটু নাটু (আরআরআর)
* সেরা মৌলিক সুর : অল কোয়াইট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট
* সেরা সিনেমাটোগ্রাফি : অল কোয়াইট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট
* সেরা লাইভ অ্যাকশন শর্ট ফিল্ম : অ্যান আইরিশ গুডবাই
* সেরা অ্যানিমেটেড শর্ট ফিল্ম : দ্য বয়, দ্য মোল, দ্য ফক্স অ্যান্ড দ্য হর্স
* সেরা তথ্যচিত্র (স্বল্প দৈর্ঘ্য) : দ্য এলিফ্যান্ট হুইসপারারস
* সেরা ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট : অ্যাভাটার : দ্য ওয়ে অব ওয়াটার
* সেরা সম্পাদনা : এভরিথিং এভরিহোয়্যার অল অ্যাট ওয়ানস
* সেরা কস্টিউম ডিজাইন : ব্ল্যাক প্যানথার : ওয়াকান্ডা ফরএভার
* সেরা শব্দ ধারণ : টপ গান : ম্যাভেরিক
* সেরা প্রোডাকশন ডিজাইন : অল কোয়াইট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট
* সেরা মেকআপ ও হেয়ারস্টাইল : দ্য হোয়েল
২০১৭ সালের ১২ মার্চ পয়ঃবর্জ্য থেকে কর্ণফুলী নদী রক্ষা করতে চট্টগ্রাম ওয়াসাকে একটি স্যুয়ারেজ প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে তিনি ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর একনেক সভায় স্যুয়ারেজ প্রকল্পের ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা গ্র্যান্ট (অনুদান) হিসেবে চট্টগ্রাম ওয়াসাকে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সেই টাকায় নেওয়া প্রকল্পের মাঠপর্যায়ের কাজ ২০২০ থেকে শুরু হলেও এখন শুরু হবে প্রত্যেক গৃহে সংযোগ লাইন তৈরির কাজ।
প্রকল্পের আওতায় ২৮ হাজার গৃহে সংযোগ দেওয়া হবে। ওয়াসা নামের অর্থ হচ্ছে ‘ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যুয়ারেজ অথরিটি’। এই প্রকল্পের আওতায় ২০০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের মাধ্যমে ২০২৬ সালে স্যুয়ারেজ প্রকল্পটি চালুর কথা জানান চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এত দিন নগরীতে পানির ঘাটতি ছিল। এখন আমরা অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে পানির ঘাটতি কাটিয়ে উঠছি। তাই এখন স্যুয়ারেজের দিকে নজর দেওয়া হয়েছিল এবং প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক থাকায় তা দ্রুত অনুমোদনও পেয়ে যাই। এখন আমরা গৃহপর্যায়ে সংযোগের কাজ শুরু করব।’
স্যুয়ারেজ প্রকল্পের পরিচালক ও চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর ৪০ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে আমাদের। পুরো নগরকে ছয়টি জোনে ভাগ করে একটি জোনে এই প্রকল্পের আওতায় স্যুয়ারেজ চালু করা হবে। বাকি পাঁচটি জোনে অন্য প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
সেপটিক ট্যাংকবিহীন নগর হবে চট্টগ্রাম : এই প্রকল্পের আওতায় নগরীতে কোনো সেপটিক ট্যাংক থাকবে না। প্রতিটি বাসা থেকে পয়ঃবর্জ্য সরাসরি পাইপলাইনের মাধ্যমে চলে যাবে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে।
জানা যায়, একটি ঘরে তিনটি উৎস থেকে পানি আসে। একটি হলো বৃষ্টির পানি, অন্যটি রান্নাঘরের ও গোসলখানার ব্যবহার্য পানি এবং টয়লেটের লাইনের পানি ও বর্জ্য। স্যুয়ারেজ প্রকল্পের আওতায় বৃষ্টির পানি চলে যাবে ড্রেনে, আর বাকি সব পানি পাইপলাইনের মাধ্যমে স্যুয়ারেজ লাইনে চলে যাবে। এজন্য পুরো নগরীতে সর্বোচ্চ ২০ ইঞ্চি ও সর্বনিম্ন ৪ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ বসানো হবে। এসব পাইপ দিয়ে বর্জ্য ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে যাবে। সেখানে পরিশোধন হবে।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘যেসব এলাকায় পাইপলাইন বসানো যাবে না, সেসব এলাকা থেকে গাড়িতে করে স্ন্যাজগুলো ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রথমপর্যায়ে নগরীর ছয়টি জোনে ছয়টি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট হবে এবং পুরো নগরীতে দুটি ফিকেল স্ন্যাজ শোধনাগার থাকবে। ছয়টি জোনের মধ্যে প্রথমপর্যায়ে একটি জোন বাস্তবায়ন করা হবে। আর এই জোনে রয়েছে কোতোয়ালি, বাটালিহিল, মাঝিরঘাট, মাদারবাড়ী, আগ্রাবাদ, টাইগারপাস, আমবাগান, নয়াবাজার, চৌমুহনী, উত্তর হালিশহর, হালিশহর আনন্দবাজার এলাকার প্রায় ২০ লাখ মানুষ।’
এখন রোড কাটিং ও গৃহস্থালিপর্যায়ে সংযোগ প্রদানের কাজ প্রথমে কোথায় শুরু করা হবে জানতে চাইলে আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘হালিশহর এবিআইএইচনিউআই ও জি-ব্লক এলাকায় সবার আগে কাজ শুরু করা হবে। এজন্য আমরা সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সুশীলসমাজের সঙ্গে আজ মঙ্গলবার মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছি। রাস্তা কাটার জন্য মেয়রের অনুমোদন পেলেই আমরা কাজ শুরু করব।’
সংযোগের সময় কোনো অর্থ দিতে হবে না : প্রকল্পের পরিচালক আরিফুল ইসলাস বলেন, ‘সংযোগ প্রদানের সময় ভবনের যা যা ক্ষতি হবে আমরা প্রকল্পের আওতায় তা মেরামত করে দেব।’
কিন্তু ভবনের বিদ্যমান সেপটিক ট্যাংকের লাইন ও নালা দিয়ে প্রবাহিত তরল বর্জ্যরে গতিপথ কী হবে জানতে চাইলে আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এসব লাইন ওয়াসার পয়ঃবর্জের লাইনের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হবে। তবে পয়ঃবর্জের লাইন যুক্ত করা হলে বাড়তি কোনো অর্থ দেওয়া লাগবে না। চট্টগ্রাম ওয়াসার বিলের সমপরিমাণ অর্থ পয়ঃবর্জ্য বিল বাবদ পরিশোধ করতে হবে গ্রাহককে।’
পরিবেশ ও নগর বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য : চট্টগ্রাম মহানগরীর সব ভবনের অনুমোদন দিয়ে থাকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। কিন্তু সব ভবনের নিজস্ব সেপটিক ট্যাংক রয়েছে এবং সেগুলোর আউটলেট অবশ্যই নালা বা ড্রেনের সঙ্গে সংযুক্ত উল্লেখ করে সিডিএর উপ-প্রধান নগর-পরিকল্পনাবিদ আবু ঈসা আনসারী বলেন, ‘একটি নগরীর পয়ঃবর্জ্য এভাবে উন্মুক্তভাবে নালা বা ড্রেন হয়ে খালে এবং সর্বশেষ নদীতে গিয়ে পড়তে পারে না। এতে খালের পানি যেমন কালো হচ্ছে, খালের উভয় পাড়ে যেমন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, তেমনি দূষিত হচ্ছে কর্ণফুলী নদীর পানি।’
তিনি আরো বলেন, পরিবেশ তথা জীবনমান উন্নয়নে চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পটি শতভাগ কার্যকর। তবে কোনোভাবেই যাতে ভবনের পয়ঃবর্জের লাইন নালা বা খালে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে নগরীর নালা ও খালগুলোতে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ বিষয়ে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ্ আলী বলেন, ‘জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে খালের মধ্যে সø্যাজ পাচ্ছি অনেক। এগুলো এক্সকাভেটর দিয়ে ওঠে না, আবার পানির স্রোতেও যায় না। এ কারণে খালের পানি কালো ও দুর্গন্ধযুক্ত। এখন স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করা হলে এসব অবস্থা থেকে নগরবাসী মুক্তি পাবেন। নগরের স্বাস্থ্যমান যেমন বাড়বে, তেমনি পরিবেশেরও উন্নতি হবে।’
পরিবেশের উন্নতির কথা স্বীকার করে বিশিষ্ট নগর-পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, ‘এখন তো বহুতল ভবনগুলোর একটি চেম্বারের ওপরের অংশের পানি নালায় গিয়ে পড়ে। আবার খালপাড়ের ভবনগুলো সরাসরি খালে ফেলে বর্জ্য। ওয়াসার এই প্রকল্পের আওতায় এ অবস্থা থেকে নালা, খাল ও কর্ণফুলী নদী মুক্তি পাবে।’
উল্লেখ্য, নগরীর হালিশহর আনন্দবাজার এলাকায় ১৬৫ একর জায়গায় স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট গড়ে তোলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পে মাটিভরাটের কাজ শেষ হয়েছে।
‘জিএমপি ডট গভ ডট বিডি’ নামে একটি ওয়েবসাইট পরিচালনা করে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি)। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পুলিশের এই ইউনিটের পরিচিতি, জরুরি ফোন নম্বর সরবরাহসহ অন্যান্য সেবা দেওয়া হয়। গতকাল সোমবার থেকে ব্যবহারকারীরা এই সাইটে প্রবেশ করতে পারছেন না। ইন্টারনেটে ব্রাউজ করলে ‘৪০৪ নট ফাউন্ড, ডি রিসোর্সে রিকোয়েস্টেড কোড নট বি ফাউন্ড অন দিস সার্ভার!’ উল্লেখ করা হয়। পরে জানা যায় এই ওয়েবসাইটটি জিএমপির নিয়ন্ত্রণে নেই।
অন্যদিকে গত ৪ মার্চ পুলিশের জরুরি নাগরিক সেবা ৯৯৯-এর ফেসবুক পেজ হ্যাক হওয়ার তথ্য ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। হ্যাকাররা সেটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অপ্রাসঙ্গিক বিভিন্ন ভিডিও প্রচার করতে থাকে। এভাবে এ মাসেই পুলিশের দুটি প্রতিষ্ঠানের পেজ ও সাইট হ্যাক হয় তবে ৯৯৯-এর পেজ উদ্ধার হলেও জিএমপির সাইটের নিয়ন্ত্রণ হ্যাকারদের হাতেই রয়ে গেছে।
সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে পুলিশের ব্যবহার করা পেজ বা স্যাইট হ্যাক হলে নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অপরাধীদের হাতে চলে যেতে পারে। ফলে এখনই এটি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে অন্য গুরুত্বপূর্ণ সাইটও হ্যাক করে তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে।
জিএমপির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে জিএমপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ওয়েবসাইটের লিংক দিয়ে বলা হয়, ‘আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ‘জিএমপি ডট গভ ডট বিডি’ হ্যাক হয়েছে। সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত। ওয়েবসাইটটি রিকভার করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ এ বিষয়ে জানতে জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
পরে জিএমপির একজন কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, এই ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে সেটা আজকে (সোমবার) আমরা বুজতে পেরেছি। এখনো সাইটটি উদ্ধার করতে আমরা কাজ করছি, তবে এখনো সম্ভব হয়নি। এতে আমাদের পরিচিতি ও অন্য সাধারণ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে, ফলে সাময়িক অসুবিধা ছাড়া অন্য ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
হ্যাক হওয়া জিএমপির ওয়েবসাইট নিয়ে দেশ রূপান্তরের সঙ্গে কথা হয় অক্টাগ্রাম লিমিটেডের নিরাপত্তা প্রকৌশলী আশিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি সাইটটি প্রাথমিক পর্যালোচনার পর জানান, মূলত জিএমপির ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস সিএসএম দিয়ে তৈরি। ওয়ার্ডপ্রেস নিজে থেকে অনেক সিকিউর। কিন্তু হ্যাক হওয়ার পেছনে দুটি কারণ থাকতে পারে। এমন হতে পারে জিএমপির ওয়েবসাইট শেয়ার করা ওয়েব হোস্টিংয়ে আছে, সেখানের অন্য কোনো ওয়েবসাইট হ্যাক হয়েছে। যেখান থেকে এক্সপ্লইট করে এই ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে। অথবা ওয়ার্ডপ্রেসের প্লাগিন আউটডেটেড হওয়ার কারণে ভালনারেবিলিটি এক্সপ্লইট করে হ্যাক করা হইছে। এ ছাড়া পাসওয়ার্ড ফাঁসের কারণেও হতে পারে।
এদিকে ৯৯৯-এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ হ্যাকিংয়ের শিকার হয়। পেজটিতে বিভিন্ন সময় বিভাগ-সংশ্লিষ্ট সংবাদ ও জনসংযোগমূলক বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করা হতো। তবে হ্যাকের পর সেখানে স্ট্রিমিং সেবাসহ বিভিন্ন ভিডিওর বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়। পেজটিতে প্রথম হ্যাকিংয়ের আলামত মেলে ৪ মার্চ রাত ৮টায়। এরপর থেকেই পেজটিতে নিয়মিত ভিডিও লিংকের পোস্ট করা হয়।
প্রায় দেড় লাখ ফলোয়ার-সমৃদ্ধ পেজটি কোনোভাবেই জরুরি সেবা প্রার্থীদের সেবাদানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়, ফলে মূলসেবায় এর কোনো প্রভাব পড়েনি বলে কর্মকর্তারা জানান।
জানতে চাইলে পুলিশের জরুরি সেবার পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার বলেন, কয়েক দিন পেজটি ব্যবহার করতে সমস্যা হয়েছে। আমরা এটি এখন স্বাভাবিকভাবেই ব্যবহার করছি।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, এই হ্যাকিং কার্যক্রম দেশের বাইরে থেকে হয়েছে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। তবে বিস্তারিত যাচাই ছাড়া এটি বলা সম্ভব না।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনা করতে দেখা যায় অনেককে। মুহাম্মাদ মুশতাক লিখেছেন, ‘পুলিশের অবস্থা যদি এই হয় তাহলে আমার মতো সাধারণ মানুষের কী হবে’।
মোহাম্মদ মোহসিন লিখেছেন, ‘পুলিশের পেজ যদি হ্যাক হয় তবে আমাদের জনগণের কী হবে। পুলিশ চোর-ডাকাতকে কী শিক্ষা দেবে, উল্টো তারাই পুলিশকে শিক্ষা দিচ্ছে।’
নিরাপত্তা প্রকৌশলী আশিকুর রহমান বলেন, সরকারি ওয়েবসাইটগুলোর নিরাপত্তার বিষয়টি সাধারণত গুরুত্ব পায় না। ফলে বিভিন্ন সময় হ্যাক হওয়ার ঘটনা ঘটছে, এটি আগের তুলনায় এখন অনেক বেড়েছে। হ্যাকাররা প্রযুক্তি ব্যবহারে এগিয়ে থাকছে, তার সঙ্গে আমাদেরও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। সাইটগুলো নিরাপদ রাখতে আলাদাভাবে নিরাপত্তার বিষয়টি এখনই গুরুত্ব না দিলে সামনে এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়তে থাকবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. মনজুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, হ্যাক হওয়ার পর আমরা সাইটগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করছি। এ ছাড়া এ ধরনের ঘটনা রোধে আমাদের ওয়েবসাইটগুলোতে নিরাপত্তাজনিত বিষয়গুলো উন্নয়ন করা হচ্ছে।
চুক্তিতে আরও এক বছর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান থাকছেন মো. আনিছুর রহমান। এ নিয়োগ দিয়ে গতকাল সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের এ কর্মকর্তার অবসরোত্তর ছুটি ও এ সংক্রান্ত সুবিধা স্থগিতের শর্তে চুক্তিতে এ নিয়োগ পেয়েছেন। যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী এক বছরের জন্য এ নিয়োগ কার্যকর হবে।
গত বছর ৪ জুন রাজউকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান আনিছুর রহমান। এরপর সরকার তাকে সচিব পদে পদোন্নতি দেয়। সচিব পদমর্যাদায় তিনি রাজউক চেয়ারম্যান।
দেশে গত দুই দশকে তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের মৃত্যুহার ২৭ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে জাতীয় পুষ্টিসেবা। প্রতিষ্ঠানের তথ্য মতে, দুই দশক আগে তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের মৃত্যুহার ছিল ৩০ শতাংশ। কিন্তু দেশের ৪৩৬ হাসপাতালে মৃত্যুরোধে নেওয়া কার্যক্রমের কারণে বর্তমানে মৃত্যুহার এসে দাঁড়িয়েছে ৩ শতাংশের নিচে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় পুষ্টিসেবা আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সব তথ্য জানানো হয়। দেশে মারাত্মক তীব্র অপুষ্টি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত সেবাকেন্দ্রগুলোর চতুর্থবার মূল্যায়ন উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ের প্রচারণামূলক অনুষ্ঠান উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম।
অনুষ্ঠানে লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় পুষ্টিসেবার ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এটিএম রিয়াজ উদ্দিন। তিনি জানান, পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশুদের অসুস্থতা ও মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ মারাত্মক তীব্র অপুষ্টি। প্রতি বছর বিশ্বে পাঁচ বছরের কমবয়সী প্রায় দুই কোটি শিশু মারাত্মক তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় ১০ লাখ (৪৫ শতাংশ) শিশু মারা যায়। এই শিশুদের অধিকাংশ দক্ষিণ এশিয়া ও সাব-সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলে বাস করে। গত দুই দশকে, বাংলাদেশ অপুষ্টির হার কমানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে।
অনুষ্ঠানে একটি সমীক্ষা তুলে ধরে এই কর্মকর্তা বলেন, অপুষ্টিতে আক্রান্ত একটি শিশুর উপার্জনের সক্ষমতা প্রায় ১০ শতাংশ কমে যায়। অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশু খুব সহজেই অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হতে পারে। একজন অপুষ্ট মা সঠিক যতœ ও সেবার অভাবে একটি অপুষ্ট শিশুর জন্ম দেয় এবং ওই শিশুটি ধীরে ধীরে অপুষ্ট শিশু হয়ে বেড়ে ওঠে। শিশুটি যদি মেয়েশিশু হয় তবে সেই মেয়েশিশুটি পরে আবার আরেকটি অপুষ্ট শিশুর জন্ম দেবে। এভাবেই সে অপুষ্ট চক্রের মধ্যে ঘুরতে থাকবে। এ কারণে অপুষ্ট শিশু শনাক্তকরণ চিকিৎসা খুবই জরুরি।
এ সময় জাতীয় পুষ্টিসেবার লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. আবদুল মান্নান বলেন, অপুষ্টির কারণে একটি শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়, যা পরে তার লেখাপড়া, কর্মদক্ষতা, উপার্জন করার সক্ষমতা ইত্যাদির ওপর প্রভাব ফেলে। তবে স্যাম ট্রিটমেন্ট প্রোটোকল অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে দ্রুত অপুষ্ট শিশুটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। ইতোমধ্যেই আমরা মৃত্যু ৩০ থেকে ৩ শতাংশের কমে নামিয়ে এনেছি। এ থেকেই বোঝা যায় হাসপাতালে তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের সঠিক ব্যবস্থাপনা ও ফলোআপের মাধ্যমে অনেক শিশুর জীবন বাঁচানো এবং মৃত্যুর হার হ্রাস করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত অনেক শিশু কোনো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতেই মৃত্যুবরণ করে। আবার অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হলেও মানসম্মত চিকিৎসা না পেয়ে জটিলতার সম্মুখীন হয়। অপুষ্টির চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই মানসম্মত চিকিৎসা নিশ্চিত করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা এবং অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় পার্থক্য রয়েছে। সাধারণভাবে অন্যান্য রোগে আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক চিকিৎসা বা ব্যবস্থাপনা সঠিক হলেও তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে তা জটিলতার সৃষ্টি করে, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। অন্যদিকে সঠিক ও মানসম্মত চিকিৎসা যদি নিশ্চিত করা যায়, তবে অপুষ্ট শিশুদের কোনো জটিলতা হবে না, মৃত্যুহারও কমবে।
মাহদুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত। গতকাল সোমবার বিকেলে বাবুল আক্তারের উপস্থিতিতেই আদালতে অভিযোগ গঠনের শুনানি হয়।
মামলার অপর ছয় আসামি হলেন, মো. কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম ওরফে কালু ও শাহজাহান মিয়া। এর মধ্যে বাবুল, ওয়াসিম, শাহজাহান ও আনোয়ার কারাগারে আছেন। এহতেশামুল জামিনে, কামরুল শিকদার মুসা ও খাইরুল ইসলাম কালু শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন।
অভিযোগ গঠনের বিষয়টি দেশ রূপান্তরকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি আবদুর রশিদ। বাবুল আকতারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাবুল আকতারকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। অভিযোগ গঠনের আদেশ দেওয়ার আগে বাবুল আকতারকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল।’
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে নগরের জিইসি মোড় এলাকায় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানমকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন ৬ জুন বাবুল প্রথমে বাদী হয়ে নগরের পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন।
তদন্ত শেষে পিবিআই ২০২১ সালের ১২ মে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। একই দিন বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পিবিআই।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০১৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থাকাকালে বাবুলের সঙ্গে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নারী কর্মকর্তার সম্পর্ক হয়। এই সম্পর্কের জেরে বাবুলের পরিকল্পনায় মাহমুদাকে খুন করা হয়। এ জন্য তিনি সোর্সের মাধ্যমে তিন লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করেন।
রিয়াল মাদ্রিদের সংগে ১৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলছেন। ৪০ কোটি ইউরো চুক্তিতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আলো ইত্তিহাদে যোগ দিচ্ছেন।
ক'দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল করিম বেনজেমাকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন -এমন কথাও চাউর হয় স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু সব কিছুতে জল ঢাললেন ব্যালন ডি অর জয়ী। স্পেনের গণমাধ্যম মার্কার দেয়া মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড নিতে গিয়ে বললেন, 'আমি যখন রিয়ালেই আছি তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনো বলবো। ইন্টারনেটে যা প্রচার হচ্ছে তা ঠিক না। আমি এখানে ভালো আছি। শনিবার রিয়ালের ম্যাচ আছে, সব ফোকাস আমার সেই ম্যাচকে নিয়ে।'
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাকে রিয়ালে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেনজেমা বলেন, '২১ বছরের আমি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। এই ক্লাবে খেলার মতো আর কিছু হয় না, সান্তিয়াগো বার্নাবু দারুন এক জায়গা।'
রিয়ালের সংগে চুক্তির মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেনজেমার।
পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলে নয়, এশিয়া কাপ হবে একটি দেশে। আর সেটা শ্রীলংকা। পাকিস্তান তাতে অংশ না নিতে চাইলে তাদেরকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ।
ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দা টেলিগ্রাফ।
বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ যিনি এসিসিরও প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছেন, শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ খেলতে রাজি আছে ভারতসহ চার পূর্ণ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এসিসির নির্বাহী সভায় আলোচনা করা হবে। পাকিস্তান রাজি না হলে ৫ দল নিয়েই হবে এশিয়া কাপ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ অন্য কোনো দেশে আয়োজনে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজমা শেঠির দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন জয় শাহ। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে ভারতেই খেলতে হবে, না হলে না খেলবে। এ বার্তা পিসিবি এবং আইসিসির দুই কর্মকর্তা যারা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করেন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।