
রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে গণপিটুনিতে ছিনতাইকারী চক্রের এক সদস্য নিহত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে বাস্তা ইউনিয়নের আবদুল্লাহপুর মধ্যপাড়া এলাকা থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ।
জানা যায়, গত সোমবার অটোরিকশা চোরচক্রের চার সদস্য আবদুল্লাপুর মধ্যপাড়া এলাকার লিটন বাবুর্চির ছেলে অটোচালক মো. সোহাগকে ৩০০ টাকা ভাড়ায় কেরানীগঞ্জের কোনাখোলায় যাওয়া-আসার কথা বলে নিয়ে যায়। পরে অটোরিকশা চোরচক্রের সদস্যরা সোহাগকে শাক্তা ইউনিয়নের বলসতা এলাকার নির্জন স্থানে নিয়ে বেড়ধক মারধর করে এবং চোরচক্রের তিন সদস্য সোহাগের অটোরিকশা নিয়ে চলে যায়। সোহাগের চিৎকার শুনে বলসতা এলাকাবাসী এসে চোরচক্রের এক সদস্যসহ সোহাগকে উদ্ধার করে।
পরে মঙ্গলবার সকাল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ আবদুল্লাহপুর মধ্যপাড়া এলাকার সোহাগের বাড়ি থেকে চোরচক্রের অজ্ঞাতপরিচয় সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে পাঠায়।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন থানার ওসি শাহ জামান।
চারদিকে পাহাড় ও সবুজের অরণ্য। এই সবুজ বিনাশ করে সড়ক নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। পাহাড়ি এলাকায় সড়ক নির্মাণের প্রকৌশলগত জ্ঞানের অভাব কিংবা অপরিকল্পিতভাবে পাহাড় কাটা, রাস্তার প্রায় এক কিলোমিটার অংশ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ক্যাম্পাসের আওতায় চলে যাওয়া বা রেল লাইনের ওপর ব্রিজ নির্মাণসহ নানা জটিলতায় একের পর এক আটকে যাওয়া প্রকল্পটি ইতিমধ্যে ২৭ বছর পার করেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন ও পরিমার্জনে শুরুর ৪০ কোটি টাকার প্রকল্প এখন ৩৫৩ কোটিতে পৌঁছেছে। তারপরও শেষের দেখা নেই ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ ডিটি-বায়েজীদ (বায়েজীদ লিংক রোড) সংযোগ সড়কের।
দীর্ঘদিন ধরে রেললাইনের ওপরে নির্মিত ব্রিজের কাজ প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দেওয়ার পর এখন চলছে। গত সপ্তাহে দেখা যায়, রেললাইনের ওপরের অংশে গার্ডার বসানোর কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। এতদিন রেললাইনের উভয় প্রান্তে গার্ডার বসলেও রেললাইনের ওপরের অংশে খালি রাখা হয়েছিল। রেললাইন বিড়ম্বনার পাশাপাশি রোডের গা ঘেঁষে রয়েছে সুউচ্চ পাহাড়। টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ধসে রাস্তার ওপর পড়তে পারে এবং এতে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা হতে পারে। অর্ধকাটা এসব পাহাড় নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ও রোড নির্মাণ বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) মধ্যে বিরোধ চলছে। পাহাড় কেটে সড়ক নির্মাণের কারণে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ১০ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। অর্ধকাটা এসব পাহাড় কেটে ঝুঁকিমুক্ত করার বিষয়ে শক্তিশালী পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায়ও আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু এখনো এর সুরাহা নেই। যথারীতি আরেকটি বর্ষা আসছে এখনো দাঁড়িয়ে রয়েছে খাড়া পাহাড়। বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে জানমালের ক্ষতি হতে পারে সেই শঙ্কায় গত বছর বর্ষায় এই রোডে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে। এবারও কি একই পথে হাঁটতে হবে?
এই প্রশ্নের উত্তর জানতে কথা হয় রোড বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামসের সঙ্গে। তিনি বলেন, পাহাড়ের বিষয়টি নিয়ে এই সপ্তাহে পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে আমাদের মিটিং রয়েছে। আশা করছি বিষয়টি সুরাহা হবে।’
এদিকে পাহাড় নিয়ে সুরাহার পথ সুগম হলেও জনগণের যাতায়াতের ওপর টোল বসাচ্ছে সিডিএ। চট্টগ্রাম মহানগরীতে নগরবাসীর চলাচলের কোনো পথে টোল নেই (কর্ণফুলী সেতু ও টোল রোড ছাড়া)। এরমধ্যে টোল রোডটি শুধুমাত্র পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের জন্য নির্মিত। কিন্তু ডিটি-বায়েজীদ সংযোগ সড়কে টোল যুক্ত হতে যাচ্ছে। ৩২০ কোটি টাকার প্রকল্প সরকার ৩৫৩ কোটি টাকায় বর্ধিতকরণের অনুমোদনের সময় অতিরিক্ত ৩৩ কোটি টাকা টোল আদায়ের মাধ্যমে পরিশোধের কথা বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, ‘রোড মেইনটেনেন্স আমরা করব। একইসঙ্গে সড়কবাতি স্থাপন, রেললাইনের ওপরে ব্রিজ নির্মাণ, নালা সংস্কার কাজগুলো নতুন করে করা হবে।’ টোল প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘টোল প্লাজা বসবে ফৌজদারহাট অংশে। শহর প্রান্ত দিয়ে এসে টোল প্লাজা ক্রস করলেই শুধুমাত্র টোল দিতে হবে। রোডের সৌন্দর্য উপভোগ করে ফিরে গেলে টোল দিতে হবে না।’
কবে নাগাদ প্রকল্পের কাজ শেষ হতে পারে জানতে চাইলে কাজী হাসান বিন শামস বলেন, চলতি বছরের মধ্যে আমরা কাজ শেষ করে দ্বিতীয় ব্রিজটি চালু করে আনুষ্ঠানিকভাবে তা ওপেন করে দিতে চাই। যদিও ইতিমধ্যে এই রোড দিয়ে অনেক যান চলাচল করছে। কিন্তু ওভারব্রিজটি চালু না করায় তা পূর্ণতা পায়নি।
টোল কবে থেকে যুক্ত হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী হাসান বিন শামস বলেন, ‘আগামী বছর থেকে টোল যুক্ত হতে পারে।’
সড়কের ইতিবৃত্ত বায়েজীদ বোস্তামী রোডের সঙ্গে ঢাকা ট্রাঙ্ক রোডকে (ডিটি রোড) যুক্ত করার উদ্দেশ্যে প্রায় ছয় কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকার ওপর দিয়ে এই রোড নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। ৪০ কোটি টাকার সেই প্রকল্পের অধীনে ব্যাপক হারে পাহাড় কেটে সড়ক নির্মাণ করলেও বর্ষা এলেই পুরো রাস্তাসহ পাহাড়ি ঢলে চলে যেত। ফলে প্রকল্পটি বারবার হোঁচট খায়। এই প্রকল্পের মাঝখানের এক কিলোমিটার অংশ আবার এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন করার সময় তাদের ক্যাম্পাসের ভেতরে চলে যায়। ফলে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরবর্তী সময়ে ২০১৩ সালে নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ক্যাম্পাসের বাইরে দিয়ে নতুন করে বাঁক নিয়ে সড়কের নকশায় পরিবর্তন আনা হয়। দুই লেনের সেই প্রকল্প প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৭২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে এসে আবারও নকশায় পরিবর্তন। এবার দুই লেনের পরিবর্তে চার লেনে উন্নীত করা হয়। যথারীতি বাজেট ৩২০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। ২০২১ সালে এসে তা ৩৫৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী থানাধীন বাইমাইল বাঁশতলা এলাকায় ৩২ জনের একদল হিজড়া বসবাস করেন। বিভিন্ন দোকানপাট, গাড়ি ও বাড়িতে ঘুরে ঘুরে মানুষের কাছ থেকে পাওয়া সহায়তায় চলত তাদের। সহায়তা হয়তো পেতেন তারা কিন্তু এতে মানুষ বিরক্ত হতো। বিষয়টি তাদেরও খারাপ লাগত। তাই হাত পাতার পেশা বাদ দিয়ে তারা এখন উৎপাদনমুখী হয়েছেন। হয়েছেন কর্মমুখীও। এখন আর চাঁদার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় না তাদের। চলতি বছর তারা বাইমাইল এলাকায় ১৩ বিঘা জমি বর্গা নিয়েছেন। সেখানে ধান, পেঁয়াজ, রসুন, মিষ্টি কুমড়া, টমেটোসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্যের আবাদ শুরু করছেন। নিজেরাই ফসলের পরিচর্যা করছেন। নিজেদের বাড়িতে করেছেন গরুর খামারও। তাদের এ উদ্যোগ এরই মধ্যে সবার নজর কেড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ফয়সাল আহম্মেদ ও রমিজ উদ্দিন নামের দুই ব্যক্তি তাদের পরিত্যক্ত ১৩ বিঘা জমি বর্গা দিয়েছেন চাষবাস করতে। এজন্য তাদের কোনো টাকাপয়সা দিতে হয়নি। ওই জমিগুলো ছিল জঙ্গলে ভরা, চাষের অনুপযোগী। তবে হিজড়া সেই জমিকে চাষের উপযোগী করেন। সেখানে ১১ বিঘা জমিতে ধান চাষ এবং দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ, রসুন, টমেটো, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করেছেন।
হিজড়াদের দাবি, সাধারণ মানুষের মতো তাদেরও হাত-পা আছে। তারাও পরিশ্রম করতে পারেন। তাই তারা সাধারণ মানুষের মতো কর্ম করে চলতে চান। এজন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা তাদের প্রয়োজন। সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে তারা স্বাভাবিকভাবে কাজকর্ম করে জীবনযাপন করতে পারবেন।
তাদের ভাষ্য, বিভিন্ন এলাকায় অনেক জমি পরিত্যক্ত রয়েছে। ওইসব জমির মালিকরা যদি তাদের চাষাবাদের সুযোগ দিতেন তবে তারা ভবিষ্যতে আরও ব্যাপক আকারে ধানসহ কৃষি আবাদ করতে পারতেন। তাদের দেখাদেখি অন্যরাও একই উদ্যোগ নিতেন।
শিল্পী নামে এক হিজড়া বলেন, ‘দেশের মানুষ দেখুক। আমাদের সহযোগিতা করলে আমরা কিছু করতে পারি। সমাজের মানুষ সুযোগ দিলে আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারি। সময়মতো ধান কাটতে পারলে নিজেদের চাহিদা পূরণ হয়েও বাজারে বিক্রি করতে পারব।’
তিনি বলেন, মানুষের কাছে চেয়ে যা পাই এতে আমাদের চাহিদা পূরণ হয় না। ফলে নানান চিন্তাভাবনা করে উদ্যোগ নিই। পাশাপাশি কৃষি আবাদও শুরু করি। পরে এ বছর বর্গা নিয়ে ১৩ বিঘা জমিতে ধান, পেঁয়াজ, রসুন, টমেটো, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন ফসল লাগিয়েছি।
গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সমাজের অবহেলিত হিজড়া সম্প্রদায় কৃষিকে পেশা হিসেবে নিয়েছে, যা একটি ভালো উদ্যোগ। আমরা কৃষকদের সরকারিভাবে বিভিন্ন সহযোগিতা দিয়ে থাকি। হিজড়ারা যোগাযোগ করলে আমরা সবার মতো তাদেরও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করব। সমাজে তারা যেন স্বাভাবিক মানুষের মতো চলতে পারে এবং নিজেরা স্বাবলম্বী হতে পারে সে জন্য তাদের কৃষিসংশ্লিষ্ট সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’
কোনো ধরনের সমীক্ষা প্রতিবেদন না করেই কুয়েট সম্প্রসারণ প্রকল্প হাতে নিয়েছিল খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। ২০১৮ সালের অক্টোবরে ৮৩৮ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে কাজ শুরু হলেও গত ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ হয়েছে মাত্র ৩৩ শতাংশ। অথচ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত সেপ্টেম্বরে। নতুন করে ৩৫৯ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে ১ হাজার ১৯৮ কোটি টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন করে প্রকল্পের কিছু খাতে পরিবর্তন ও সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় রেট শিডিউলে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। তাই প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় দুটোই বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
‘খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পটির সংশোধনের কারণ হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বলছে, আগের নির্ধারিত ব্যয়ের চারটি খাত বাদ দিয়ে নতুন করে দুটি খাত সংযুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া পিডব্লিউডির রেট শিডিউল ২০১৪ ও ’১৮ সালের পরিবর্তে ২০২২ সালের রেট শিডিউল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অনেক খাতের ব্যয়ের হ্রাস-বৃদ্ধি হওয়ায় ৩৬০ কোটি ব্যয় বাড়ছে। নানা জটিলতায় নতুন করে ৩ বছর ৬ মাস মেয়াদও বাড়ছে। ফলে নতুন করে প্রকল্পটির মেয়াদ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৭ বছর ৬ মাস।
এটি প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব। কিন্তু এ প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে পরিকল্পনা কমিশন বলছে, এ প্রকল্পটি গ্রহণের আগে সমীক্ষা প্রতিবেদন করা হয়নি। সরকারি অর্থের বিনিয়োগ বা অনুদানের বিষয়ে পূর্বানুমোদন নেওয়া হয়নি। অর্থ বিভাগ ২০২১ সালের আগস্টে একটি পরিপত্র অনুসারে, এ বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। ফলে অর্থের সংস্থান ঋণ ও ইক্যুইটি বা অনুদানের বিষয়ে অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন নিতে হবে। এখন প্রস্তাবিত প্রকল্পটির অর্থের সংস্থানের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন নিতে হবে বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
প্রকল্পটির ব্যয় বাড়ানোর যৌক্তিকতার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ড. জুলফিকার হোসেন গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, নতুন করে যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল সেখানে দুটি করে হল বানানোর জায়গা হচ্ছিল না। তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুটির পরিবর্তে যে দশতলা ফাউন্ডেশন নেওয়া আছে, সেখানে দুটির পরিবর্তে একটি হল করতে হবে। তখন মন্ত্রণালয়ই আবার জানিয়েছে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন না করে নতুন করে কোনো টেন্ডার দেওয়া যাবে না। গত দেড় বছরে দুটির কাজে কোনো টেন্ডার দিতে পারিনি।
প্রকল্পটির ব্যয়ের খাত বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পে বৈজ্ঞানিক ও ল্যাব যন্ত্রপাতি ক্রয় খাতে ৭৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা, অফিস সরঞ্জাম ও অন্যান্য খাতে ৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বৃদ্ধির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি। এ ছাড়া এসব সামগ্রীর ব্যয় প্রাক্কলনের ভিত্তি কী সে বিষয়ে সভাকে জানাতে পারে ও তার বর্ণনা আরডিপিপিতে সংযুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ফটোকপি মেশিন, ল্যাপটপ, ইন্টার অ্যাকটিভ বোর্ড, কালার প্রিন্টারসহ কতিপয় অফিস সরঞ্জামের মূল্য অত্যধিক এবং সংখ্যা বা পরিমাণ বেশি চাওয়া হয়েছে বলে মনে করে পিইসি।
ল্যাবে যন্ত্রপাতির দাম ৭৬ কোটি টাকা বাড়ানোর যৌক্তিকতা কী এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ল্যাবের যন্ত্রপাতি শতভাগই আমদানিনির্ভর। বিশ্ববাজারে এসব যন্ত্রপাতির দাম অনেক বেড়ে গেছে। তাই ২০২২ সালের রেট শিডিউল অনুযায়ী এসব দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পে ভূমি উন্নয়ন খাতে অতিরিক্ত ৩৪ হাজার ১০০ ঘনমিটারের যৌক্তিকতা এবং এ খাতে ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা বৃদ্ধির যৌক্তিকতা কী তা জানতে চেয়েছে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি বা পিইসি। নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ খাতে ৬২ কোটি ৩৮ লাখ, ইনস্টিটিউট ভবন নির্মাণ খাতে ৪১ লাখ, ছাত্র হলের আনুভূমিক সম্প্রসারণ খাতে ২ কোটি ৯৭ লাখ, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবন নির্মাণ খাতে ৪ কোটি ৬৬ লাখ, ভূগর্ভস্থ কেব্ল ওয়ারিং খাতে ৯ কোটি ৫৭ লাখ, স্টাফদের আবাসিক ভবন নির্মাণ খাতে ১৭১ দশমিক ৭৭ লাখ, ইন্টার্নাল আরসিসি রাস্তা নির্মাণ খাতে ৪ কোটি ৮৩ লাখ, ফরেন স্টুডেন্টস ডরমেটরি অ্যান্ড ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি অ্যাকোমোডেশন ভবন নির্মাণ খাতে ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা বৃদ্ধির যৌক্তিকতা জানতে চেয়েছে পিইসি।
প্রস্তাবিত প্রকল্পে ৩৩/১১ কেভি সোলার সিস্টেম স্থাপনসহ সাবস্টেশন নির্মাণ খাতে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, ফিজিক্যাল ও প্রাইস কন্টিনজেন্সি খাতে ৭ কোটি টাকা বৃদ্ধির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন।
প্রস্তাবিত প্রথম সংশোধনী ডিপিপিতে ‘আসবাবপত্র ক্রয়’ খাতে ৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বাড়িয়ে মোট ২১ কোটি ৭৪ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ অতিরিক্ত ব্যয় বৃদ্ধির যৌক্তিক কারণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিকে জানাতে বলা হয়েছে। সেগুলো কোথায় ব্যবহার করা হবে তার প্লেসমেন্ট সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি সংশোধিত প্রস্তাবে।
যেসব খাতে ব্যয় বাড়ছে : অ্যাকোমোডেশন ভবন নির্মাণ, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবন নির্মাণ, স্টাফদের আবাসিক ভবন নির্মাণ, ৩৩/১১ কেভি সোলার সিস্টেম স্থাপনসহ সাবস্টেশন নির্মাণ, ওভারহেড ওয়াটার ট্যাংক, গ্রিন বাউন্ডারি ওয়াল, রিটেইনিং ওয়াল, সারফেস ড্রেন নির্মাণ, ফিজিক্যাল ও প্রাইস কন্টিনজেন্সি খাতে ব্যয় বাড়ছে।
ব্যয় কমছে : ভূমি অধিগ্রহণ, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং প্রক্রিয়া, ওয়াটার পাইপলাইন ও প্রয়োজনীয় ফিটিংস ইত্যাদি খাতে ব্যয় কমছে।
প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ পর্যালোচনা এবং ক্রয় পরিকল্পনায় ক্রয়পদ্ধতি ও ধরন, অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ পিপিজার, ২০০৮ এবং আর্থিক ক্ষমতা অর্পণ বিধি অনুসরণ করে যথাযথভাবে উল্লেখ করা আবশ্যক বলে মনে করে পরিকল্পনা কমিশন। এ ছাড়া গবেষণা ও প্রশিক্ষণ, পরামর্শক ফি বুকস অ্যান্ড জার্নাল ইত্যাদিসহ সব খাতে পরিমাণ বা সংখ্যা থোকের পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট করা প্রয়োজন বলেও মত দিয়েছে কমিশন।
গাজীপুরের শ্রীপুরে এক শিশুকে তারাবির নামাজ থেকে ডেকে নিয়ে চুরির অভিযোগ তুলে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া বান্দরবানে স্বর্ণ চুরির অভিযোগে এক শিশুর ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান ও তার ছেলের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, গাজীপুরের শ্রীপুরে নির্যাতনের শিকার শিশুর নাম সাগর আহম্মেদ। সে লোহাগাছ ফালু মার্কেট এলাকার মনির হোসেনের ছেলে। সোমবার রাতে পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লোহাগাছ গ্রামের ফালু মার্কেট এলাকায় নির্যাতনের এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল মঙ্গলবার গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মোজাম্মেল হক (২৭), রাকিব হোসেন (৩০) ও শরিফুল ইসলাম (৩৫)। তাদের মধ্যে মোজ্জাম্মেল হক পৌর আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক। তার নেতৃত্বেই চলে নির্যাতন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার তারাবির নামাজ শেষের আগেই মোজাম্মেল হক তার লোকজন নিয়ে সাগরকে জোর করে তুলে আনেন ফালু মার্কেট এলাকার তার মাল্টিপারপাস অফিসে। তারা সাগরের হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। পরে চলে বেধম মারধর। সাগর চুরির কথা অস্বীকার করলেও নির্যাতন থামেনি। একসময় তার হাতের দুটি আঙুলের নখ তুলে ফেলেন তারা। খবর পেয়ে সাগরের স্বজনরা এলে তাদেরও মারধর করা হয়।
নির্যাতনের শিকার শিশুর মা আসমা খাতুন বলেন, ‘ওই মাল্টিপারপাস অফিসটি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হকের। সাগরকে সেখানে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হয়। এরপর মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে প্লাস দিয়ে চেপে তার হাতের দুই আঙুল থেঁতলে দেওয়া হয়। খবর শুনে ওখানে গেলে তার লোকজন আমাদের মারধর করেন। পরে বহু অনুরোধ করে তাদের কাছ থেকে সাগরকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই।’ তিনি আরও বলেন, আমার ছেলের বিরুদ্ধে চুরির অপবাদ দেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’
শ্রীপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম মোল্লা বলেন, ‘যেকোনো অপরাধীকেই আইনের আওতায় আনা আবশ্যক। দলীয় বা কমিটির লোক হলেও আইনবহির্ভূত কাজকে আমরা সমর্থন করি না।’
শ্রীপুর মডেল থানার এসআই রিপন আলী খান বলেন, আমরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। শিশু সাগরকে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছি।
এদিকে বান্দরবানে স্বর্ণ চুরির অভিযোগ তুলে সোয়াদ নামে এক শিশুকে নির্যাতন করেছেন বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগরের ইউপি চেয়ারম্যান জসীম উদ্দীন তার পরিবারের সদস্যরা। গত শনিবার এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল সকালে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশু সোয়াদ বলে, ‘স্বর্ণ চুরি করছি বলে ওরা আমাকে প্রচুর মারছে। পা দিয়ে মাথা চাপা দিছে। পিঠে বেল্ট দিয়ে, শলার ঝাড়–র আগা দিয়ে আমাকে মারছে। হিমেল (ইউপি চেয়ারম্যান জসীমের বড় ছেলে) ঘরের দরজা বন্ধ করে আমাকে মারছে। আমি কোনো স্বর্ণ চুরি করিনি।’ সে আরও বলে, ‘ওরা আমাকে বলছে আমার মা-বাবাকে মেরে ফেলবে। চেয়ারম্যানও আমার মাকে মারছে। মারের ভয়ে আমি তাদের বলছি স্বর্ণ চুরি করে আমি আমার মাকে দিয়ে দিয়েছি।’
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুর সঙ্গে থাকা মা সেলিনা আক্তার বলেন, ‘দুই বছর আগে থেকে আমার ছেলেকে ওদের (ইউপি চেয়ারম্যান) বাসায় দিয়েছি। আমার ছেলে কোনো দিন কোনো টাকা-পয়সা চুরি করেনি। গত শনিবার আমার ছেলে স্বর্ণ চুরি করছে বলে আমাকে আসতে বলে। আমি ওদের বাসায় আসি। আমি ছেলেকে চুরির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেই জসীম চেয়ারম্যান আমাকে ঘাড়ে মারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জসীম চেয়ারম্যানের বড় ছেলের নির্যাতনের বিষয়টি আমার ছেলে গেঞ্জি উল্টিয়ে দেখায়। আমাদের বলা হয় ৩ লাখ টাকা দিয়ে যাবি, না হয়ে স্বর্ণ দিয়ে যাবি। আর টাকা না থাকলে জমির কাগজ দিয়ে যাবি। আমরা দিনমজুর মানুষ। আমরা স্বর্ণ চুরি করিনি। ওরা বলছে আমার ছেলে স্বর্ণের চুরি, কানের দুল ও আংটি চুরি করেছে।’ তিনি জানান, ছেলের বাবা লামা থানায় বাদী হয়ে মামলা করেছেন। জসীম চেয়ারম্যানও স্বর্ণ চুরি নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করছেন।
বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ডা. মো. ইস্তিয়াকুর রহমান জানান, শিশুর মুখে, কপালে এবং আঘাতের চিহ্ন আছে। তবে মায়ের ক্ষেত্রে আঘাতের তেমন চিহ্ন দেখা যায়নি।
এদিকে আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন তার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে জানান, অহেতুক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার বিরুদ্ধে একটা মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। মানহানির অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। যা প্রচার করা হচ্ছে তাহা আদৌ সত্য নয়। তার নির্বাচনী প্রতিপক্ষ এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ যোগসাজশে এ নীল নকশা তৈরি করছে।
লামা থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ধারায় চেয়ারম্যানের পরিবারের চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
তিন হাজার টাকার লোভে অন্যের হয়ে ১৫ দিন আগে কারাগারে সাজা খাটতে যান চা বিক্রেতা মুজিবুর রহমান। এবার আদালতের নির্দেশে সেই মুজিবুরই হলেন মামলার আসামি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলমের আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলাটি হয়। মামলা করেন তৃতীয় যুগ্ম চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফারুক।
এখানেই শেষ নয়, নাছির সেজে আসা মুজিবুরের হয়ে মামলা পরিচালনাকারী সেই আইনজীবী তৌহিদুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিস জারি করে তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে আদেশ দিয়েছেন তৃতীয় যুগ্ম চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আঞ্জুমান আরা বেগম। পাশাপাশি প্রকৃত আসামি নাছির আহমদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের পিপি নাছরিন আক্তার চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করায় মুজিবুরের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে চেক প্রতারণার মামলার প্রকৃত আসামি না হওয়ায় মুজিবুরকে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছে আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মীর আহমেদ নামের এক ব্যক্তি নাছির আহমেদের বিরুদ্ধে ২০ হাজার টাকার চেক প্রত্যাখ্যানের মামলা করেন। ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই আদালত নাছিরকে দুই মাসের কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরে নাছির এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি আদালত দুই মাসের পরিবর্তে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে। কিন্তু জামিনে গিয়ে পলাতক হয়ে যাওয়ায় আদালত আসামি নাছিরের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করে।
সূত্রটি জানায়, মূল আসামির নাছির আহমেদের বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়। তিনি থাকেন চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট এলাকায়। চান্দগাঁয়ে ফুটপাতে বসে চা বিক্রি করেন মুজিবুর। সেখানেই তার সঙ্গে নাছিরের পরিচয় হয়। চেক প্রতারণা মামলায় আদালত এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় নাছিরকে। সাজা থেকে বাঁচাতে নাছির তার পরিবর্তে মুজিবুরকে জেল খাটানোর জন্য রাজি করান। দুজনের মধ্যে তিন হাজার টাকার চুক্তি হয়। কারাগারে যাওয়ার দুয়েক দিনের মধ্যে তাকে (মুজিবুর) ছাড়িয়ে আনার কথা জানিয়েছিলেন নাছির।
আদালত সূত্র জানায়, গত ১৩ মার্চ মুজিবুর নাছির সেজে তৃতীয় যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। নাছির তথা মুজিবুরের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন তৌহিদুল ইসলাম। প্রকৃত আসামির পরিবর্তে আরেকজন আসামি আত্মসমর্পণ করার বিষয়টি জানার পর এ আইনজীবী ওকালতনামা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন গতকাল দুপুরে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কারাগারে আসা নাছিরের আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর ১৬ মার্চ জানতে পারি মূলত তিনি নাছির নন। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার নাম মুজিবুর রহমান। বাড়ি ঢাকার সাভারে। কারাগারে আসার পর আসামি মুজিবুর নিজেকে নাছির হিসেবে পরিচয় দেন। তাই বিষয়টি আদালতকে জানানো হয়েছে।’
চট্টগ্রামে টাকার বিনিময়ে একজনের হয়ে আরেকজনের সাজা খাটার ঘটনা নতুন নয়। এর আগে একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুমা আক্তারের পরিবর্তে ২০১৮ সালের ৯ জুলাই কারাগারে যান মিনু আক্তার। মর্জিনা আক্তার নামের পূর্বপরিচিত এক নারী তাকে টাকা দেওয়ার কথা বলে কারাগারে যেতে বলেন। তিনি কুলসুমাকে চেনেন না। ২০২১ সালের ১৬ জুন তিন বছর পর মুক্তি পান মিনু।
প্রথম সেট ২৫ মিনিট, দ্বিতীয়টি ২৮ মিনিটে জিতলেন কার্লোস আলকারাজ। মনে হচ্ছিল কোয়ালিফায়ার ফ্যাভিও কোবোলিকে বুঝি উড়িয়েই দিচ্ছেন শীর্ষ বাছাই।
না, তৃতীয় সেটতে প্রতিরোধ গড়লেন ইতালিয়ান। সময় গড়ালো ঘন্টায়। শেষপর্যন্ত জয় এসেছে ৬৬ মিনিটে। ৬-০, ৬-২, ৭-৫ গেমে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ জিতে রাফায়েল নাদালের উত্তরসুরি ক্লে কোর্টের সর্বোচ্চ আসর শুরু করলেন।
নাদালের চোটজনিত অনুপস্থিতিতে শীর্ষবাছাই আলকারাজ। ২০২১ এ তৃতীয় রাউন্ড, গতবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছিলেন। এবার আরো এগোলে সেমিফাইনালে নোভাক জকোভিচের সংগে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা।
সে দেখা যাবে। আপাতত দ্বিতীয় রাউন্ডে আলকারাজকে টপকাতে হবে জাপানের টি. দানিয়লেকে।
আইপিএলের পঞ্চম শিরোপা জিততে চেন্নাই সুপার কিংসের চাই ১৫ ওভারে ১৭১ রান। আহমেদাবাদে রাত ১২.৪০ মিনিটে শুরু হবে খেলা। গুজরাট টাইট্যান্সের ২১৪ রানের জবাবে খেলতে নেমে ৩ বলে ৪ রান করার পর বৃ্স্টিতে বন্ধ হয় ফাইনাল। অর্থাৎ বাকি ১৪.৩ ওভারে আরো ১৬৭ রান চাই ধোনীর দলের।
নতুন পে-স্কেল কিংবা মহার্ঘ ভাতা নয়, সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়বে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট অনুযায়ী। তাদের বেতন প্রতি বছর যতটা বাড়ার কথা এবার তার চেয়ে বেশি বাড়বে। আর তা চলতি বছরের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়ানো হবে। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়মিত ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশের বাইরে বাড়ানো হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর দেশ রূপান্তরকে বলেন, গত প্রায় এক বছর ধরে দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। সরকারি কর্মকর্তাদের বেশিরভাগের একমাত্র আয় বেতন-ভাতা। বৈশি^ক মন্দার কারণে সরকারও খানিকটা সংকটে আছে। এ পরিস্থিতিতে পে-স্কেল দেওয়ার মতো বড় ধরনের ব্যয় বাড়ানো সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলে সরকারের ওপর চাপ বেশি হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সরকারি কর্মরতদের খানিকটা স্বস্তি দিতে কোন খাতে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় এমন প্রস্তাব চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বাজেটবিষয়ক বিভিন্ন বৈঠকে সরকারি নীতিনির্ধারকরাও এ বিষয়ে আলোচনা করেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যাচাই-বাছাই করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার প্রস্তাব করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে উপস্থাপন করে। চলতি মাসে গণভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে কত বাড়তি ব্যয় হবে তা হিসাব করে পরের বৈঠকে উপস্থাপন করতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বড় ধরনের ব্যয় না বাড়িয়ে একটা উপায় বের করতেও বলেন। শেষ পর্যন্ত ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে নিজেই জানিয়েছেন।
বর্তমানে সরকারি কর্মচারীরা ২০১৫ সালের বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এ বেতন কমিশন প্রণীত হয়েছিল। এ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, আর নতুন বেতন কমিশন গঠন করা হবে না। প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ানো হবে। এ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তা হয়ে আসছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি হিসাব অনুযায়ী, দেশে সরকারি কর্মচারী ১৪ লাখ। বিভিন্ন করপোরেশন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে হিসাব করলে প্রায় ২২ লাখ।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের বাজেটে নিয়মিত ইনক্রিমেন্টের বাইরে আরও কতটা বাড়ানো যায় তা হিসাব করে নির্ধারণ করা হবে। এ কাজ করতে বাজেট প্রস্তাব পেশ করার পর আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে যাচাই-বাছাই শেষে ইনক্রিমেন্টের হার সুপারিশ করবে। এ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের সঙ্গে প্রতি মাসে বেতন বাড়ানো হবে, নাকি গড় মূল্যস্ফীতির হার বিবেচনা করে ইনক্রিমেন্টের হার বাড়ানো হবে, তা খতিয়ে দেখা হবে। ২০তম গ্রেড থেকে প্রথম গ্রেড পর্যন্ত সবার জন্য একই হারে বেতন বাড়নো হবে কি না, তা আরও খতিয়ে দেখা হবে। চূড়ান্ত হিসাব অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শেষে প্রকাশ করা হবে। যে তারিখেই প্রকাশ করা হোক না কেন, আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকরী ধরা হবে।
এখানে মহার্ঘ ভাতা ১০ শতাংশ দেওয়া হলে এ হিসাবে ৪ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ৬ হাজার কোটি এবং ২০ শতাংশ দেওয়া হলে ৮ হাজার কোটি টাকা যোগ করতে হবে। অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হলে আগামী অর্থবছরে সরকারের ব্যয় বাড়বে। আর এতে সরকার ব্যয় কমিয়েও সরকারি কর্মকর্তাদের সন্তুষ্টিতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো পথে হেঁটেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতা বাবদ রাখা হয়েছে ছিল ৭৪ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। খরচ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ১ হাজার ৯৩ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা বাজেট হওয়ার কথা আছে। এ বাজেট সরকারি কর্মরতদের বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ ৭৭ হাজার কোটি টাকা রাখা হতে পারে। সরকারি কর্মকর্তাদের অনেক পদ এখনো খালি আছে। এতে ইনক্রিমেন্ট বাড়ানো হলেও সরকারের ব্যয়ে বড় ধরনের চাপ বাড়বে না।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন জায়েদা খাতুন।
তিনি ঘড়ি প্রতীকে মোট ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগ মনোনিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ সিটির ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাতে রির্টানিং কর্মকর্তা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের অন্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, স্বতন্ত্রপ্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট এবং হাতি প্রতীকের সরকার শাহনূর ইসলাম ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ও ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নির্মিত হয়েছে বিশেষ কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান ‘ও ভোরের পাখি’। ঈমাম হোসাইনের প্রযোজনায় এটি উপস্থাপনা করেছেন তামান্ন তিথি। অনুষ্ঠানটিতে আবৃত্তি করেছেন আশরাফুল আলম, মীর বরকত, রফিকুল ইসলাম, পলি পারভিন, শাকিলা মতিন মৃদুলা, মাসকুর-এ সাত্তার কল্লোল, আসলাম শিশির, সংগীতা চৌধুরী, আহসান উল্লাহ তমাল। প্রচারিত হয় ২৫ মে সকাল সাড়ে ৯টায়।
এছাড়াও নির্মিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘আমারে দেবো না ভুলিতে’। অনুষ্ঠানটিতে গান, কবিতা ও আলোচনার সমন্বয়ে কবিকে সামগ্রিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও বাচিকশিল্পীদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিতে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। ইয়াসমিন মুসতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, শেলু বড়ুয়া, ছন্দা চক্রবর্ত্তী ও ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন প্রফেসর মুন্সী আবু সাইফ। মনিরুল হাসানের প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হচ্ছে ২৫ মে দুপুর ১ টা ০৫ মিনিটে। আরও প্রচারিত হবে সংগীতানুষ্ঠান ‘দোলনচাঁপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতী’। রাত ৯টায় প্রচারিত হবে নাটক ‘বনের পাপিয়া’ (পুনপ্রচার)।