
চিত্রনায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলেন প্রযোজক রহমত উল্লাহ। আদালত মামলাটি পুলিশের বিশেষ শাখা পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছে। গত ১৩ এপ্রিল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালতে রহমত উল্লাহ বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলা ও আদেশের বিষয়টি গতকাল মঙ্গলবার জানাজানি হয়।
এর আগে গণমাধ্যমের কাছে রহমত উল্লাহকে বাটপার-প্রতারক ও আপত্তিকর মন্তব্য করায় শাকিব খানকে লিগ্যাল নোটিস পাঠান তার আইনজীবী। গত ১৮ মার্চ রাতে প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করতে গুলশান থানায় যান শাকিব খান। তবে সেখানে মামলা নেওয়া হয়নি। পরদিন ১৯ মার্চ সন্ধ্যায় মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন শাকিব খান। পরে চাঁদা দাবির অভিযোগ এনে প্রযোজক রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে গত ২৩ মার্চ ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে মামলা করেন। বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ২৬ এপ্রিল আসামিকে হাজির হওয়ার জন্য সমন দিয়েছে আদালত। এরপর রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঢাকা ট্রাইব্যুনালে আরেকটি মামলা করেন শাকিব খান। আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
তীব্র গরমে রাজধানীতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পানির সংকট। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম এবং কোথাও কোথাও উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় পানির সংকট সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ঢাকা ওয়াসা। মঙ্গলবার ঢাকা ওয়াসার কাছে নগরবাসীর পানির গাড়ির চাহিদা ছিল ১ হাজার ৪৯২টি। প্রতি বছর গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় পানির গাড়ির চাহিদা থাকে ৩০০ থেকে ৪০০টি। সেই হিসাবে এ বছর পানির গাড়ির চাহিদা ৩ গুণের বেশি।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু থেকে রাজধানীর আদাবর, শেখেরটেক, মেহেদীবাগ, মনসুরাবাদ, মোহাম্মদিয়া হাউজিং, বাড্ডা, নতুন বাজার, মহাখালী, বনশ্রী, রায়েরবাজার, শনির আখড়া, দনিয়া, যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, পুরান ঢাকা ও মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র পানির সংকট চলছে। ঢাকা ওয়াসার সংশ্লিষ্টরা পানির এই সংকট মোকাবিলার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় পানির চাহিদা মেটাতে রীতিমতো নাকাল হচ্ছে।
বাড্ডার বাসিন্দা ইকরামুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দিনের বেশির ভাগ সময় পানি পাওয়া যাচ্ছে না। আশপাশের এলাকা থেকে পানি এনে বা দোকান থেকে কিনে রান্না ও খাওয়ার কাজ করতে হচ্ছে। রাতে অনেক সময় পানি আসে, তবে পরিমাণ খুব কম। তিনি বলেন, পানি তুলতে সারারাত মোটর চালু করে রাখছি। তারপরও ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে এক বালতি করে পানি দেওয়া যায় না। আমরা ঢাকা ওয়াসাকে নিয়ম মেনে পানির বিল পরিশোধ করছি। কিন্তু ঠিকমতো পানি পাচ্ছি না। এসব দেখার যেন কেউ নেই।’
মিরপুর ১ নম্বরের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, এই গরমে পানি নিয়ে নাকাল হতে হচ্ছে। কোনো দিন দুপুরে, আবার কোনো দিন ইফতারের সময় পানি আসে। সারা দিন পানি থাকে না। প্রচ- গরমে এমনিতেই জীবন অতিষ্ঠ, তার ওপর পানির সমস্যা অমানবিক ব্যাপার। ওয়াসাকে জানানোর পরও বিষয়টির সমাধান হচ্ছে না।
ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, এ সময় রাজধানীবাসীর পানির চাহিদা ২৬০ কোটি লিটার। শীতকালে এই চাহিদা কমে দাঁড়ায় ২১০ থেকে ২৪০ কোটি লিটার। আর ওয়াসার পানির উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে ২৯০ কোটি লিটার। এর মধ্যে ভূ-গর্ভস্থ উৎস থেকে ৬৫ এবং ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে পানি উত্তোলন করা হয় ৩৫ শতাংশ। ঢাকা ওয়াসা প্রায় ৮০০ ডিপ-টিউবওয়েল এবং ৪টি পানি শোধনাগার থেকে এসব পানি উৎপাদন করছে।
এদিকে ঢাকা ওয়াসার মঙ্গলবারের হিসাবে দেখা গেছে, জোন-১ পানির গাড়ির চাহিদা এসেছে ৯০, জোন-২-এ ৯, জোন-৩-এ ২৫০, জোন-৪-এ ১১৮, জোন-৫-এ ৩৯, জোন-৬-এ ৩৩৪, জোন-৭-এ ৭২, জোন-৮-এ ১১৫, জোন-৯-এ ১০০, জোন-১০-এ ২৮৭ ও এসওসি জোনে ৬৬ গাড়ি পানির চাহিদা জমা পড়ে; অর্থাৎ ১ হাজার ৪৯২ গাড়ির চাহিদার বিপরীতে ঢাকা ওয়াসা সরবরাহ করতে পেরেছে ৭৯৫। আর ৬৯৭ জনকে পানির গাড়ি সরবরাহ করতে পারেনি।
ঢাকা ওয়াসার এক প্রকৌশলী বলেন, ‘কাগজে-কলমে ঢাকা ওয়াসা যে উৎপাদন সক্ষমতার দাবি করছে, গ্রীষ্ম মৌসুমে সেটা ঠিক থাকে না। এটা ভরা বর্ষার মৌসুমের বেলায় হয়তো সঠিক। কেননা, প্রতি গ্রীষ্ম মৌসুমে আমাদের পানির সংকট মোকাবিলা করতে রীতিমতো নাকাল হতে হয়। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হতো না। এবার যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, গত ১০ বছরেও এমন অবস্থা লক্ষ করা যায়নি।’
জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার উপব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৗশলী এ কে এম সহিদ উদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘তীব্র গরমের কারণে পানির সরবরাহে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সমস্যাগুলো আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। সেসব নিরসনে ঢাকা ওয়াসার প্রকৌশলী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিরন্তর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। পানির সংকট ও সমস্যা জানা মাত্রই সেসব সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।’
তীব্র তাপপ্রবাহের সঙ্গে দেশব্যাপী যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। রাজধানী ঢাকায় লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় থাকলেও বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামাঞ্চলের মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। গ্রামের এ লোডশেডিং শুধু দিনে নয়, রাতেও ভোগাচ্ছে। এমনকি সন্ধ্যায় ইফতারের সময় ও শেষ রাতে সাহরির সময়ও বিদ্যুৎ থাকছে না। লোডশেডিংয়ের কারণে ঈদের আগে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম। গ্রামাঞ্চলে একদিকে যেমন গরমের কারণে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ঘরে থাকা যাচ্ছে না, তেমনি ফসলের ক্ষেতে ঠিকমতো সেচ দিতে পারছেন না কৃষকরা। সব মিলিয়ে সারা দেশে তীব্র গরমের সঙ্গে টানা লোডশেডিংয়ে জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, তাপমাত্রা না কমলে লোডশেডিংয়ের এ ভোগান্তি কমবে না। যদিও দ্রুতই বৃষ্টি নামবে আবহাওয়া অধিদপ্তর এখন পর্যন্ত এমন সুখবর দিতে পারেনি। ফলে এ বিদ্যুৎবিভ্রাট ঠিক কবে নাগাদ কমবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
এদিকে সারা দেশে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারায় সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। গতকাল মঙ্গলবার প্রতিমন্ত্রী নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দুঃখ প্রকাশের পাশাপাশি আশ্বস্ত করে বলেছেন, সংকট নিরসনে বিদ্যুৎ বিভাগ কাজ করছে। দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
লোডশেডিংয়ের কারণে ইরি-বোরো চাষের শেষ সময়ে এসে জমিতে সেচকাজ ব্যাহত হওয়ায় আশানুরূপ ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। ব্যাটারিচালিত ভ্যান ও অটোচালকরা ঠিকমতো চার্জ দিতে না পারায় তাদের আয় কমে গেছে। শিক্ষার্থীদেরও পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটছে মারাত্মকভাবে। সব মিলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২২ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট। সক্ষমতা থাকলেও চাহিদা অনুসারে বিদ্যুৎ উৎপাদিত না হওয়ার জন্য জ্বালানি সংকট এবং কেন্দ্র মেরামত ও সংরক্ষণের জন্য বন্ধ থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন কর্মকর্তারা। এ ছাড়া বিতরণ ও সঞ্চালন লাইনের ত্রুটির কারণে প্রায়ই বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎবিভ্রাট হচ্ছে। কর্মকর্তারা বলছেন, এ সংকট সামলাতে এখন আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতির জন্য অপেক্ষা করছে কর্র্তৃপক্ষ। তারা আশা করছেন, এ সপ্তাহ শেষে গরম অনেকটা কমে আসবে। আর গরম কমলে চাহিদাও কমবে, তখন বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চাহিদামতো বিদ্যুৎ না পাওয়ায় লোডশেডিংয়ে পুরো জেলার গ্রাহকরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। একই সঙ্গে ব্যাহত হচ্ছে শিল্প উৎপাদন। রমজান মাসে সাহরি, ইফতার ও তারাবির নামাজ কোনো সময়ই বাদ যাচ্ছে না লোডশেডিং থেকে। রোজার শুরু থেকেই গাজীপুরে অসহনীয় লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। বিশেষ করে শিল্প এলাকা গাজীপুরে ঘনবসতি থাকায় পোশাকশ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি কষ্টের মধ্যে দিন পার করছেন। সারা দিন কারখানায় চাকরি করে রাতে ঘুমাতে গেলে লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে তাদের নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে। এ ছাড়া লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি প্রচণ্ড গরমে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে গাজীপুরের শত শত পোশাক কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কারখানার উৎপাদন সচল রাখতে দীর্ঘ সময় ধরে ডিজেল দিয়ে জেনারেটর চালানোর ফলে উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে।
রাজবাড়ীতে দিনে-রাতে লোডশেডিং : কয়েক দিন ধরে রাজবাড়ীতে লোডশেডিং বেড়েছে কয়েকগুণ। দিনরাত মিলিয়ে বিদ্যুৎ যাওয়া-আসার মধ্যেই থাকে। প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি লোডশেডিংয়ের কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। অনেক সময় জেলায় ইফতার, তারাবি ও সাহরির সময়ও বিদ্যুৎ থাকছে না। শহরের তুলনায় গ্রামে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ আরও বেশি। সেচকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, জেলায় চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে জাতীয় গ্রিড থেকে। এ জন্য লোডশেডিং বেড়েছে। সমাধান আসবে কবে তা বিদ্যুৎ বিভাগ বলতে পারছে না। লোডশেডিংয়ের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন জেলা ও উপজেলার শপিং মলের ব্যবসায়ীরা। সন্ধ্যার পর লোডশেডিং হলে ঈদের কেনাকাটা করতে কম আসে ক্রেতারা। আবার যারা কেনাকাটা করতে আসে তারাও ভোগান্তিতে পড়ে। লোডশেডিংয়ের কারণে বিরূপ প্রভাব পড়ছে কৃষিতেও।
সিংগাইরে বিপর্যস্ত জনজীবন : মানিকগঞ্জের সিংগাইরে গত এক সপ্তাহের তীব্র তাপপ্রবাহ ও টানা লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলা লোডশেডিংয়ে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বেচাকেনা কমে যাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাপপ্রবাহের মধ্যে লোডশেডিংয়ে বাসাবাড়িসহ সর্বত্র মানুষ হাঁপিয়ে উঠছে।
চট্টগ্রামে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধির দাবি : বন্দরনগরী চট্টগ্রামে অসহনীয় লোডশেডিং বন্ধে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটি। ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী ও মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘দেশের বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রাম ও এর আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানির জন্য হাহাকার চলছে। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রামে প্রতিদিন গড়ে বিদ্যুৎ প্রয়োজন ১১০০ মেগাওয়াট, সেখানে পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ মেগাওয়াট। আর এ কারণে পুরো চট্টগ্রামে লোডশেডিং বেড়েছে। এর ফলে চট্টগ্রাম ওয়াসাসহ বিভিন্ন শিল্প, কলকারখানা, দোকানপাট, শপিং মল ও বাসাবাড়িতে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে এ অবস্থা আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।’
লোডশেডিংয়ে সরকারের দুঃখ প্রকাশ : সারা দেশে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘এ বছর গ্রীষ্ম, সেচ মৌসুম এবং রোজা একসঙ্গে হওয়াতে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছবে সেটা আমরা আগেই ধারণা করেছিলাম। বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে আমরা আমাদের পূর্ব প্রস্তুতির স্বাক্ষরও রেখেছি। কিন্তু গত ৫০ বছরের তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে বর্তমানে যে নজিরবিহীন দাবদাহ চলছে তাতে ধারণার চেয়েও বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। ফলে দেশের অনেক জায়গায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের প্রচ- কষ্ট হচ্ছে। এ অনাকাক্সিক্ষত দুর্ভোগের জন্য আমরা আন্তরিক সহমর্মিতা ও দুঃখ প্রকাশ করছি। সেই সঙ্গে সবার অবগতির জন্য জানাতে চাই, পরিস্থিতি উত্তরণে বিদ্যুৎ বিভাগ সর্বাত্মক কাজ করছে। শিগগিরই আবারও স্বস্তিদায়ক পরিবেশ ফিরে আসবে।’
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইনও গতকাল নিজের ফেসবুক পেজে একই ধরনের বিবৃতি দিয়েছেন।
* প্রতিবেদনটি নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো এবং সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলার প্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্যে তৈরি
ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে (দক্ষিণ) আগুনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিরা ঈদের আগে আর দোকান খুলতে পারছেন না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, একদিকে যেমন প্রত্যেকের ৪০-৫০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ভস্ম হয়েছে, অন্যদিকে ঈদের আগে স্বল্পতম সময়ে পুড়ে যাওয়া দোকানের সাজসজ্জা করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া দোকান পুনরায় চালু করার আর্থিক সংগতিও নেই বেশিরভাগ ব্যবসায়ীর। এসব ব্যবসায়ী সরকারের সহায়তার দিকে তাকিয়ে আছেন।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ স্বল্প সময়ের মধ্যে পুঁজি সংগ্রহ করে দোকানে বসা তাদের জন্য অসম্ভব। সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা না দিলে অনেক ব্যবসায়ীকে চিরতরে মার্কেট ছেড়ে চলে যেতে হবে।
এদিকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের তালিকা তৈরি করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) জমা দিয়েছে দোকান মালিক সমিতি। সমিতির দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বলছেন, আগুনে মার্কেটের ২২৫টি দোকান পুড়েছে। তাদের সহায়তার জন্য তালিকা করে দেওয়া হয়েছে ডিএসসিসির মেয়রের কাছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের কর্মচারীদের বেতন বোনাস দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে দোকান মালিক সমিতি। অগ্নিকাণ্ডের চার দিন পরও মার্কেটে দেওয়া হয়নি বিদ্যুৎ সংযোগ। ফলে গত সোমবার থেকে অনেক ব্যবসায়ী দোকান খুললেও বেচাকেনা অনেক কম। তবে গতকাল মঙ্গলবার থেকে মার্কেটে জেনারেটরের লাইনের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, নিচ ও দোতলার কিছু দোকান খুললেও তৃতীয়তলার দোকানগুলো বন্ধ। পোড়া দোকানগুলোর বেশিরভাগই পরিষ্কার করা হয়েছে। কেউ পিকআপে করে আবার কেউ ঠেলাগাড়িতে করে মাল এনে দোকান সাজিয়ে তুলছেন। আর যাদের দোকান পুড়েছে তারাও ঘর পরিষ্কার ও সাজসজ্জার কাজ করাচ্ছেন। দোকানিরা বলছেন, আগুনে মার্কেটের বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সব দোকান এখনো বিদ্যুৎহীন। এ গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ না থাকায় ক্রেতা কম আসছে। তবে জেনারেটর দিয়ে মার্কেটে বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মার্কেটের তিনতলার ‘টপ ম্যান’ নামের দোকানের মালিক শাহ আলম শেখকে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে মেরামত কাজ তদারক করছিলেন। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমার তিনটি দোকানই পুড়ে গেছে। এখন দোকানের শাটার লাগানোর কাজ শেষের দিকে। কিন্তু ঈদের আগে মাল ওঠানোর সামর্থ্য নেই। সরকারের সহায়তার দিকে তাকিয়ে আছি।’
একই তলার শফিক গার্মেন্টের মালিক শফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দোকান নিজেই পরিষ্কার করেছি। কিন্তু মাল তোলার সামর্থ্য নেই। তাই ঈদের আগে আর দোকান খোলা সম্ভব হচ্ছে না।’
নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ) সংলগ্ন ফুটপাতে জুতা, স্যান্ডেল, ঘড়ি, ব্যাগ, সানগ্লাস বিক্রি হয়। রোজার এ সময়ে মুখর থাকে ফুটপাতটি। গতকাল ফুটপাতে কয়েকজন সানগ্লাস বিক্রেতাকে দেখা গেলেও ক্রেতা ছিল খুব কম। সাজ্জাদ নামে এক বিক্রেতা জানান, বিক্রি একদম পড়তির দিকে। মার্কেট জমলে ফুটপাত জমবে। মার্কেটের অবস্থা খারাপ। সব ময়লা ফুটপাতে ফেলা হয়েছে। সেগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার হয়নি।
নিউ সুপার মার্কেটের নিচতলায় বাঁধাই করা পেইন্টিং বিক্রি করেন রনি। তিনি বলেন, ‘সোমবার সকালে দোকান খুলেছি। আসরের পর বন্ধ করে দিয়েছি। অন্ধকারের মধ্যে কাস্টমার আসে না। ওইদিন কোনো বিক্রি হয়নি। আজ (মঙ্গলবার) একটা ছবি বিক্রি হয়েছে।’ ব্যবসায়ী শাহজাহান বলেন, ‘গতকাল পর্যন্ত ময়লা পরিষ্কার করেছি। এখন দেখা যাক কী হয়।’
মার্কেটের নিচতলায় ঢুকতেই চোখে পড়ে হোসিয়ারি পণ্যের দোকান অনি মনি সেন্টার। দোকানটির বিক্রয়কর্মী শিহাব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগুনে আমাদের পণ্যের কোনো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু চার দিনের বিক্রি বন্ধ থাকায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আমাদের শেষ ১০ দিনে বিক্রি বেশি হয়। বিদ্যুৎ নেই, কাস্টমার নেই, তাই দোকান বিকেলে বন্ধ করছি। আজকে (গতকাল) সামান্য বিক্রি হচ্ছে।’
কাঁটাবনের ব্যবসায়ী নুর আলম ঘর সাজানোর কিছু সরঞ্জাম কিনতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘দোকানগুলো এখনো রেডি করতে পারেনি। এ জন্য বিকেলের দিকে আসব।’ মজুমদার নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘কিছু কুশন কভার কিনেছি। একটা দোকান থেকেই কিনতে হয়েছে। অন্য দোকানগুলো সেভাবে খুলতে পারেনি।’
ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট দোকান মালিক সমিতির আহ্বায়ক মারুফ হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সোমবার থেকে মার্কেট খুলে দিয়েছি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ২২৫টি দোকান ঈদের আগে খোলা যাচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তার জন্য সিটি করপোরেশন থেকে তালিকা নিয়েছে। মেয়র সাহেবের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। ডিসি অফিসের ত্রাণভা-ার থেকে সহায়তা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। এ ছাড়া দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকেও সহায়তা দেওয়া হবে।’
মার্কেটের বিদ্যুৎ সংযোগ চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ট্রান্সমিটার লাগানো হয়েছে, আশা করছি বুধবার থেকে সংযোগ পেয়ে যাব। এখন জেনারেটরের ব্যবস্থা করেছি।’
ক্ষতিগ্রস্ত দোকান কর্মচারীদের বেতন-বোনাসের বিষয়ে মারুফ হোসেন বলেন, ‘তাদের বেতন দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করব। যদি কোনো ব্যবসায়ীর পক্ষ থেকে তার কর্মচারীদের বেতন-বোনাস দেওয়ার মতো অবস্থা না থাকে, সে ক্ষেত্রে আমরা সহায়তা করব।’
গত শনিবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে (দক্ষিণ) আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৩১টি ইউনিটের প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পরদিন রবিবার সকাল ৯টায় আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভাতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস।
ময়মনসিংহের নান্দাইলে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাযাত্রী শাশুড়ি ও পুত্রবধূ নিহত হয়েছেন। এতে গুরুতর আহত হয়েছে অটোরিকশাটির যাত্রী এক শিশু। গত সোমবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের অরণ্যপাশা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এদিকে গত সোমবার রাত ৯টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সময়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সড়ক দুর্ঘটনায় আরও তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কয়েকজন।
নান্দাইলে নিহতরা হলেন উপজেলার অরণ্যপাশা পূর্বপাড়া এলাকার আবদুল হেকিমের স্ত্রী জহুরা খাতুন (৫৫) ও তার ছেলে উজ্জ্বল মিয়ার স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার (২৪)। আহত শিশু নিহত বৃষ্টি আক্তারের সন্তান।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে ময়মনসিংহগামী একটি অটোরিকশাকে দ্রুতগতির একটি মাইক্রোবাস পেছন থেকে ধাক্কা দেয়।
এতে অটোরিকশা থেকে দুই নারী ও এক শিশু ছিটকে রাস্তায় পড়ে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুই নারীর মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নান্দাইল হাইওয়ে থানার (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মাইক্রোবাস পেছন থেকে অটোরিকশাকে ধাক্কা দিয়ে দ্রুতগতিতে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
আদমদীঘিতে পুলিশ ভ্যানের ধাক্কায় নিহত ১ : বগুড়ার আদমদীঘিতে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত ও এক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহত হয়েছেন। গতকাল বিকেলে বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের আদমদীঘি হাসপাতালের অদূরে পুলিশের আসামি বহনকারী পিকআপের ধাক্কায় আবদুল জলিল (৫২) নামে ওই ব্যক্তি নিহত এবং মোটরসাইকেলের চালক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন আলী (৭০) গুরুতর আহত হন। নিহত আবদুল জলিল আদমদীঘি উপজেলার শিয়ালশন গ্রামের তছির উদ্দিনের ছেলে। আহত বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার শিবপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন আলী তার সম্মানী ভাতা ব্যাংক থেকে তোলার পর বাজার করে মোটরসাইকেলে আবদুল জলিলকে তুলে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে আদমদীঘি হাসপাতালের অদূরে বিপরীত দিক থেকে আসা বগুড়া থেকে নওগাঁগামী আসামি বহনকারী পুলিশের পিকআপ ভ্যান ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেল আরোহী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আবদুল জলিল সড়কে পড়ে গুরুতর আহত হন। তাদের প্রথমে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে দুজনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে আবদুল জলিলকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে আদমদীঘি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিল্লুর রহমান বলেন, ‘পুলিশের আসামি বহনের ভ্যানগাড়ির সঙ্গে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে কি না তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তদন্ত করে বলা যাবে।’
নীলফামারীতে পৌর কাউন্সিলর নিহত : মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে সড়কে তিন পথচারীকে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন নীলফামারীর ডোমার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুবেল ইসলাম (৩৫)। গত সোমবার রাত ৯টার দিকে ডোমার-জলঢাকা সড়কের সুলেমানের চৌপথী তিনবট বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন মোটরসাইকেল আরোহী দুলাল হোসেন। নিহত রুবেল ইসলাম ডোমার পৌর এলাকার চিকনমাটি পূর্ব ধনীপাড়া এলাকার মৃত বাবলু ইসলামের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী দুলাল হোসেন বলেন, ‘কাউন্সিলর রুবেলসহ গত সোমবার দুপুরে তার অসুস্থ শাশুড়িকে দেখার জন্য রংপুর মেডিকেলে যাই। সেখান থেকে ফেরার পথে ডোমার-জলঢাকা সড়কের সুলেমানের চৌপথী তিনবট বাজারে পৌঁছালে হঠাৎ তিনটি ছেলে মোটরসাইকেলের সামনে এসে পড়ে। তাদের দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অন্যদিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় রুবেলের।’
নেত্রকোনায় আনসার সদস্য নিহত : নেত্রকোনার মদন উপজেলায় সড়কে দাঁড়ানো কাভার্ড ভ্যানের খোলা দরজার সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় শিহাব উদ্দিন খান (৪৫) নামে এক আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। এতে মোটরসাইকেলের আরোহী মাহবুবুর রহমান কেষ্টু (৫০) গুরুতর আহত হন। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। নিহত শিহাব উদ্দিন নেত্রকোনা পূর্বধলা উপজেলার খালিশাপুর গ্রামের শমশের উদ্দিন খানের ছেলে। তিনি পূর্বধলার একটি ইউনিয়নের আনসার কমান্ডার পদে ছিলেন। আর আহত মাহবুবুর রহমান কেষ্টু বিএনপির খালিয়াজুরী উপজেলা শাখার এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক।
প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলার প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে তৈরি
দুর্নীতি মামলায় ফারমার্স ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক মাহবুবুল হক চিশতি ওরফে বাবুল চিশতিসহ তিনজনকে ২০ লাখ ৫৯ হাজার ১৪৩ টাকা অর্থদ- দিয়েছে আদালত। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ইকবাল হোসেন এ অর্থদন্ডের এ রায় দেন।
বাবুল চিশতিকে ৯ লাখ ২৪ হাজার ৬৭৩ টাকা, ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ কে এম শামীমকে ৫ লাখ ৬০ হাজার ২০২ টাকা এবং সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব আইটি শাহ আজমকে ৫ লাখ ৭৪ হাজার ২৬৮ টাকা অর্থদ- দেওয়া হয়। এই অর্থ আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ব্যর্থতায় দণ্ডিত প্রত্যেকের কাছ থেকে অর্থ আদায় করার ব্যবস্থা করা হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
রায় ঘোষণার আগে বাবুল চিশতি ও কে এম শামীমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে পরে তাদের আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। অপর আসামি শাহ আজম জামিনে আছেন। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে বিজনেস মিটিংয়ের নামে ২০১৭ সালের ১৯ থেকে ২৮ আগস্ট পর্যন্ত লন্ডন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ভ্রমণভাতা বাবদ ফারমার্স ব্যাংকের ৯ লাখ ২৪ হাজার ৬৭৩ টাকা আত্মসাৎ করেন বাবুল চিশতি। এ অভিযোগে ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট গুলশান থানায় বাবুল চিশতির বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক সহিদুর রহমান। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তিনজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের একই কর্মকর্তা। ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। মামলার বিচার চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষে ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। অন্যদিকে বাবুল চিশতির পক্ষে একজন সাফাই সাক্ষী দেন।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া এবং শরীরচর্চার অভাবের বেশির ভাগ মানুষেরই হার্ট খারাপ হচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে 'খারাপ' কোলেস্টেরল— এ সব মানুষের নিত্যসঙ্গী। তবে রক্তের বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা যদি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে যায়, তা হলে ওষুধ তো খেতেই হবে। সঙ্গে পছন্দের প্রায় সব খাবারেই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাবে। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, রোজকার খাবারে কিছু পরিবর্তন আনলেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই হার্টের যাবতীয় সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
বিরিয়ানি হোক বা পোলাও সঙ্গে মাটনের কোনো পদ ছাড়া জমে না। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, এ ধরনের 'লাল' মাংস খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাই খাসির বদলে মুরগির মাংস খাওয়া তুলনায় স্বাস্থ্যকর।
অনেক চেষ্টা করেও ভাজাভুজি খাবারের লোভ সামলাতে পারছেন না। এই অভ্যাসের ফলেই কিন্তু অজান্তেই বেশির ভাগ মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে চলেছে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভাজার বদলে যদি বেকড খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা যায়, তবে এই সমস্যা অনেকটাই ঠেকিয়ে রাখা যেতে পারে।
সকালের নাশতায় পাউরুটি খান অনেকেই। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, পাউরুটির ওপর মাখন দেওয়ার অভ্যাস ছাড়তে হবে। শুধু পাউরুটি খেতে যদি সমস্যা হয়, তবে ডিম ফেটিয়ে তার মধ্যে পাউরুটি ডুবিয়ে, তা বেক করে নিন। স্বাদ এবং স্বাস্থ্য দুই-ই থাকবে।
মন খারাপ হলে মাঝে মধ্যেই আইসক্রিম খেয়ে ফেলেন। তৎক্ষণাৎ মন ভালো করতে এই টোটকা সত্যিই কার্যকর। কিন্তু সমস্যা হলো আইসক্রিম খাওয়ার অভ্যাসে রক্তে বাড়তে থাকে কোলেস্টেরল। পরবর্তীতে যা হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গরমে তেষ্টা মেটাতে বার বার ঠাণ্ডা পানীয়তে চুমুক দিচ্ছেন। কিন্তু এ পানীয়ে থাকা কৃত্রিম শর্করা যে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করছে, টের পেয়েছেন কী? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই তেষ্টা মেটাতে এবং স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে নরম পানীয় না খেয়ে ফল থেকে তৈরি রস খেতে পারেন।
পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলে নয়, এশিয়া কাপ হবে একটি দেশে। আর সেটা শ্রীলংকা। পাকিস্তান তাতে অংশ না নিতে চাইলে তাদেরকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ।
ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দা টেলিগ্রাফ।
বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ যিনি এসিসিরও প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছেন, শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ খেলতে রাজি আছে ভারতসহ চার পূর্ণ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এসিসির নির্বাহী সভায় আলোচনা করা হবে। পাকিস্তান রাজি না হলে ৫ দল নিয়েই হবে এশিয়া কাপ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ অন্য কোনো দেশে আয়োজনে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজমা শেঠির দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন জয় শাহ। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে ভারতেই খেলতে হবে, না হলে না খেলবে। এ বার্তা পিসিবি এবং আইসিসির দুই কর্মকর্তা যারা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করেন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
রিয়াল মাদ্রিদের সংগে ১৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলছেন। ৪০ কোটি ইউরো চুক্তিতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আলো ইত্তিহাদে যোগ দিচ্ছেন।
ক'দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল করিম বেনজেমাকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন -এমন কথাও চাউর হয় স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু সব কিছুতে জল ঢাললেন ব্যালন ডি অর জয়ী। স্পেনের গণমাধ্যম মার্কার দেয়া মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড নিতে গিয়ে বললেন, 'আমি যখন রিয়ালেই আছি তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনো বলবো। ইন্টারনেটে যা প্রচার হচ্ছে তা ঠিক না। আমি এখানে ভালো আছি। শনিবার রিয়ালের ম্যাচ আছে, সব ফোকাস আমার সেই ম্যাচকে নিয়ে।'
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাকে রিয়ালে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেনজেমা বলেন, '২১ বছরের আমি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। এই ক্লাবে খেলার মতো আর কিছু হয় না, সান্তিয়াগো বার্নাবু দারুন এক জায়গা।'
রিয়ালের সংগে চুক্তির মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেনজেমার।
পলিথিন বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, বিভিন্ন ধরনের পলিথিনজাত মিনিপ্যাকের উৎপাদন, ব্যবহার ও এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সবগুলোই সমস্যা। পলিথিন উৎপাদন ও এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে বাতাসে যেমন কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়, অন্যদিকে এর ব্যবহার প্রাণিকুল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত। প্লাস্টিকের কণা এখন মানুষের রক্তে, মায়ের দুধে, সামুদ্রিক মাছে। শুধু ব্যবহার সম্পর্কিত সমস্যা না, পলিথিনের মাধ্যমে সৃষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও বেশি সমস্যাসংকুল। কারণ এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, কৃষির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে, শহরের নর্দমা বন্ধ করে দিচ্ছে তা আবার রোগ-ব্যাধি ছড়াচ্ছে, জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে এবং সবশেষে শহরকে বসবাসের অনুপযোগী করে দিচ্ছে।
এতসব সত্ত্বেও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ না করা বা বন্ধ করতে না পারার সংকট কোথায় সেটা বুঝতে আমাদের সমস্যা হয়। পলিথিন বন্ধে আইন আছে, নানা ধরনের প্যাকেজিংয়ে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাও অনেক দিন হলো। অন্যদিকে বেশ কিছুদিন ধরে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু তা সহসাই হচ্ছে না। ‘সোনালি ব্যাগ’ নিয়ে অনেক ঢাকঢোল পেটানো হয়েছে কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেই সোনালি স্বপ্ন কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে আসছে এতদিনে।
পলিথিনের ব্যবহার শহরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি যার অনেকটাই অভ্যাসগত কারণে। শহরের মানুষের পলিথিনের ওপর অভ্যস্ততা যেমন বেশি, তেমনি তারা ভুক্তভোগীও বেশি। রাস্তাঘাট, ড্রেন নোংরা হয়ে তো থাকেই, বাড়তি পাওনা দুর্গন্ধ, তৈরি হয় জলজট ও ডেঙ্গুর মতো রোগবালাই। বাসাবাড়িতে পলিথিনের ব্যবহার তো আছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য, বেকারিজাত পণ্যের পলিথিনের ব্যবহার ও পলিথিনের মোড়ক যত্রতত্র নিক্ষেপই এই অবস্থার জন্য দায়ী। শুধু ঢাকা নয় অন্যান্য ছোট-বড় সব শহরে প্রায় একই অবস্থা। আর এগুলোই হচ্ছে পলিথিন নির্ভর অর্থনীতির অনুষঙ্গ কিন্তু এর অনর্থনীতি হচ্ছে পলিথিনের কারণে পরিবেশদূষণ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি। সাধারণভাবে পলিথিন ব্যবহারের ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণ করা হয় না। তবে দূষণের মাত্রা এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে তাতে পলিথিনের অর্থনীতির থেকে এর ক্ষয়ক্ষতির অর্থনীতি যে অনেক বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আসছে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম অনুঘটক হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। অর্থমন্ত্রী তার এবারের বাজেট (২০২৩-২৪) বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন উভয় ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ এর উল্লেখ করেছেন কিন্তু পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে দৃশ্যমান কোনো রূপকল্প এবারের বাজেটে উল্লেখ করতে সমর্থ হননি। এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে শামিল হই সকলে’। গত বছরের এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘একটাই পৃথিবী’। পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহার আমাদের এই একমাত্র পৃথিবীকে দূষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে আইন হয়েছে ২০০২-এ এবং আজ ২০২৩ সাল, এই দীর্ঘ ২১ বছরেও এই আইনের বাস্তবায়ন করা যায়নি। যদিও এবারের বাজেট বক্তৃতায় প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার এর মূল্য সংযোজন কর বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাস্টিক সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। ধরেই নেওয়া যায় শুল্ক বৃদ্ধির এই হার কোনোভাবে পলিথিন নিরুৎসাহিত করার জায়গা থেকে না বরঞ্চ কিছুটা বাড়তি কর আদায়ের চিন্তা থেকে।
পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি সস্তা পলিথিনের ব্যবহার টেকসই ভোগের ধারণার জন্যও কোনোভাবে সহায়ক না। বরঞ্চ এটা এমন এক ধরনের মনস্তত্ত্ব তৈরি করে যা শুধু পরিবেশকেই ধ্বংস করে। যদিও বিশ্বব্যাপী টেকসই ভোগের ধারণার ওপর ভিত্তি করে এখন ‘সার্কুলার অর্থনীতির’ ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সার্কুলার অর্থনীতি শুধু অপচয় কমায় না, প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, দূষণরোধ, বর্জ্য থেকে তৈরি পরিবেশদূষণ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। তাই পরিবেশগত ঝুঁকি, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনীতিকে সার্কুলার অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলা এবং এ সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট ২০৩০ সমূহ অর্জনে সার্কুলার অর্থনীতি অন্যতম হাতিয়ার।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা শহরে রাস্তায় কোনো পেট বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায় না। এর কারণ হচ্ছে এখন পেট বোতলের প্রায় শতভাগ রিসাইকেল করা হয় এবং পেট বোতল সংগ্রহের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে হলেও একটি সংগ্রহ-লাইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু পলিথিনের ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায় না। তবে পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার সার্কুলার ইকোনমির ধারণার সঙ্গেও একেবারে মানানসই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রযুক্তিগতভাবে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন রিসাইকেল করা অসম্ভব না হলেও এটি একটি জটিল এবং অর্থনৈতিকভাবে ব্যয়বহুল যে কারণে পেট বোতলের মতো রাস্তা থেকে পলিথিন সংগ্রহ করতে কাউকে দেখা যায় না উলটো রাস্তাঘাটে এখানে সেখানে পলিথিন পড়ে থাকে।
পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের অনর্থনীতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখন প্রথম দরকার এর ব্যবহার বন্ধ করা, এর ব্যবহারকে অনেক বেশি দামি করে ফেলতে হবে আর এর প্রতিফলন থাকতে হবে বাজেটে। দ্বিতীয়ত, সার্কুলার অর্থনৈতিক চর্চার উৎসাহিত করার জন্য পরিকল্পনা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি, পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগের মতো উদ্যোগগুলোকে সরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ ও বেসরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। সরকার প্রতি বছর বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবেশ দিবস পালন করে কিন্তু দিবস পালন শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই হবে না এর উদ্যোগ কতটুকু বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে তার ওপরও নজর দিতে হবে। তা নাহলে পলিথিনের অর্থনীতির নামে শুধু অনর্থনীতিকে বাড়িয়ে তোলা হবে, আর সেটা হবে টেকসই অর্থনীতি তৈরির সম্ভাবনার অপমৃত্যু।
লেখক : উন্নয়নকর্মী ও কলামিস্ট
গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। এমন অবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না কেউ। তাই বলে গরমের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে তো আর জীবন চলবে না। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যেতে হবে। আর কর্মজীবীদের অফিস ও অন্যান্য কর্মস্থলে। অনেকেরই এই গরমেও কাজের প্রয়োজনে সারাদিন কেটে যায় বাইরে ঘুরে ঘুরেই। গরমকে মোকাবিলা করতে সঙ্গে এই প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো রাখলেই গরমের কাছে নিজেকে হার মানতে হবে না।
পানি পান
গরমের সময় শরীর থেকে স্বাভাবিক ভাবে অনেক বেশি ঘাম বের হয়ে থাকে। যার ফলে দেখা দিতে পারে পানি শূন্যতা। শরীরের মধ্যে যদি পানির পরিমাণ কমে যায় তাহলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। পানি শূন্যতা দূর করতে হলে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে।
বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার পাশাপাশি ফলের জুস কিংবা কচি ডাবের পানি খেতে পারেন। দেহের ত্বককে ভালো রাখতে পানি, শরবত বা জুস পানের বিকল্প নেই। গরমে সময় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার বিশুদ্ধ পানি খেলে ডিহাইড্রেশন এবং পানি শূণ্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
খাবার স্যালাইন
গরমের সময় ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ বের হতে থাকে যার ফলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। এ থেকে মুক্তি পেতে খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। বিকেল বেলা খাবার স্যালাইন খেলে অতিরিক্ত গরমেও শরীরে সতেজতা ফিরে আসে। আবার অনেকেই স্বাদযুক্ত স্যালাইন খান যেমন, টেস্টি স্যালাইন। ভুল করেও এসব খাবেন না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হলো ওরস্যালাইন । তবে আপনাদের মধ্যে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা খাবার স্যালাইন খাওয়ার আগে ভালো কোনো ডাক্তারের মতামত নেওয়া উচিত।
রেড মিট পরিহার করুন
অতিরিক্ত গরমের সময় গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ গরমের সময় বা অতিরিক্ত গরমের সময় গরুর মাংস খেলে শরীরের তাপমাত্রা অনেকাংশে বেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গরু-ছাগলের মাংস ছেড়ে মাছ খেতে পারেন। আর অতিরিক্ত গরমে অবশ্যই অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
সবুজ শাক সবজি
গরমের সময় শরীরকে সুস্থ রাখতে বেশি বেশি করে সবুজ শাক সবজি খেতে পারেন। সবুজ শাক সবজিতে অধিক পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল এবং খনিজ উপাদান থাকে। এতে করে অতিরিক্ত গরমেও শরীর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।তাছাড়াও খেতে পারেন তরমুজ যা শরীরে এনার্জি দিতে পারে।
টক জাতীয় ফল
প্রচুর গরমে সুস্থ থাকার উপায় হিসেবে টক জাতীয় ফল খেতে পারেন। যেমন: কামরাঙ্গা, লেবু, তেতুল, আমরা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে অতিরিক্ত টক ফল খাওয়া ঠিক নয়। যদি কারো এসিডিটির সমস্যা থেকে থাকে তবে টক জাতীয় ফল খাওয়া হতে বিরত থাকুন। টক জাতীয় ফল খালি পেটে খাওয়া যাবে না। এতে করে আরো বেশী অসুস্থ হয়ে পারতে পাবেন।
টক দই
অতিরিক্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে টক দই খেতে পারেন। যারা করা রোদে কাজ করেন বিশেষ করে তাদের জন্য অনেক উপকারী হলো টক দই। রোদের প্রচুর তাপ থেকে শরীরকে কিছুটা হলেও রক্ষা করবে টক দই। টক দই শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে অনেকাংশে সাহায্য করে।
প্রতিদিন গোসল করুন
গরমের সময় প্রতিদিন এক বার করে হলেও গোসল করতে হবে। যদি পারেন তবে দিনে ২ বার গোসল করতে পারেন। গোসল করার ক্ষেত্রে একটু সাবধান থাকতে হবে। বাহির থেকে এসে সাথে সাথে গোসল করতে যাবেন না। একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল করতে যাবেন। কারণ হঠাৎ করে গরম থেকে এসে গোসল করলে ঠাণ্ডা লাগতে পারে।
ঘরেই অবস্থান করুন
অতিরিক্ত গরমে বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বাহিরে যাবেন না । যদিও বিভিন্ন কারণে বাহিরে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে রোদ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার করতে পারেন। যতটুকু সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।
শারীরিক পরিশ্রম কম করুন
গরমের সময় অনেকেই আছে অতিরিক্ত ব্যায়াম করে থাকেন এমনটি করা যাবে না কারণ অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি হয়ে থাকে।
পাতলা সুতি কাপড় পরিধান করা
গরমের সময় পাতলা সুতি কাপড় পরা দরকার। কারণ সাদা কাপড় তাপ শোষণ করতে পারে না বরং তাপের প্রতিফলন ঘটায় ও গরম কম লাগে।
পারফিউম ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
অতিরিক্ত গরমে ঘামের গন্ধ থেকে বেচে থাকার জন্য অনেকেই সুগন্ধি ব্যবহার করে থাকে। তবে অতিরিক্ত গরমে পারফিউম ব্যবহার না করাটাই উত্তম কাজ। কারণ, পারফিউম গরম লাগা বৃদ্ধি করে দেয়।
যদিও ব্যবহার করতে হয় তাহলে হালকা গন্ধের সুগন্ধি ব্যবহার করতে পাবেন। বাজারে কিছু সুগন্ধি পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করলে ঠাণ্ডা লাগে। সেগুলো ব্যবহার করলে আরো ভালো হয়।
ধূমপান পরিত্যাগ করা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা কিনা ধূমপান করে থাকি। ধূমপান করলে শরীরের তাপমাত্রা তুলনামূলক ভাবে বেড়ে যায়। তাই প্রচন্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে ধূমপান পরিত্যাগ করতে হবে। যদিও এই অভ্যাসটি সহজে পরিত্যাগ করা যায় না। তাই যতটুকু পারেন ধূমপান কম করার চেষ্টা করুন।
চা কফি পরিত্যাগ করুন
চা, কফি বা অ্যালকোহল খেলে শরীরের তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। আর যদি অতিরিক্ত গরমে চা, কফি বা অ্যালকোহল খেয়ে থাকেন তাহলে শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাবে যার ফলে হতে পারে হিটস্ট্রোক। তাই গরমের সময় চা কফি বা অ্যালকোহল খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
শান্ত থাকুন
মন মেজাজ গরম থাকলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। রাগের কারণে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং অতিরিক্ত গরমের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় আর দুই তাপমাত্রা এক সঙ্গে হলে কি অবস্থা হতে পারে একবার হলেও সেটা ভেবে দেখবেন।
বিশেষজ্ঞরা অতিরিক্ত গরমে শান্ত থাকার জন্য মতামত দিয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য শান্ত থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।