
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিক থেকে আরেকটি চীনে পরিণত হবে। তিনি বলেন, ‘আমি দেখতে পাচ্ছি বাংলাদেশ আরেকটি চীনে পরিণত হবে, হতে পারে আরও ভালো, কারণ এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব রয়েছে।’ খবর: বাসস
চলতি বছরে চীনা সরকারি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশিদের সম্মানে প্রি-ডিপারচার রিসেপশনে এসব কথা বলেন তিনি। গত রবিবার সন্ধ্যায় চীনা দূতাবাসে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ইয়াও ওয়েন বলেন, আমি দেখতে পাচ্ছি, বাংলাদেশ আরেকটি চীনে পরিণত হবে। এমনকি হতে পারে চীনের চেয়েও ভালো। কারণ এখানে (বাংলাদেশ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব রয়েছে।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পূর্বাভাস অনুযায়ী- আগামী বছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি চীনকে ছাড়িয়ে যাবে। বেইজিং ঢাকার এ ধরনের সাফল্যের প্রশংসা করে। বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে আমরা উৎসাহিত।’
ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘উন্নয়নের দিক থেকে বাংলাদেশ এরইমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশের কাছে মডেল। আর আমাদের (বাংলাদেশ ও চীন) চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো অভিন্ন-উন্নয়ন।’
ইয়াও বলেন, প্রশিক্ষণের প্রথম ব্যাচের অংশগ্রহণকারীরা খুব ভাগ্যবান। কারণ কভিড-১৯ সম্পর্কিত বিধিনিষেধের তিন বছর পর এই ধরনের পরিদর্শন আবার শুরু হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এই কর্মসূচি অংশগ্রহণকারীদের চীনকে আরও ভালোভাবে অধ্যয়ন করতে সাহায্য করবে। কারণ দুই দেশের সব দিক থেকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার নজর রয়েছে। দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কাউন্সেলর সং ইয়াং অনুষ্ঠানটি সমন্বয় করেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ৩২ নম্বর নিউনেটাল (সদ্য প্রসূত) ওয়ার্ডে এক যুগ ধরে আধিপত্য চলছে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ‘লাইফ কেয়ার’-এর। সরকারি এ হাসপাতালে তিনটি পোর্টেবল (বহনযোগ্য) এক্স-রে মেশিন থাকলেও তা বছরের পর বছর অকার্যকর রেখে শিশুদের (সদ্য ভূমিষ্ঠ) জটিল রোগ নির্ণয়ের জন্য শুধু লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। আর এর নেপথ্যে রয়েছে প্রতি মাসে ওয়ার্ডটির চিকিৎসক-নার্সদের লাখ লাখ টাকার কমিশন বাণিজ্য। আধিপত্য ধরে রাখতে লাইফ কেয়ার কর্র্তৃপক্ষ চিকিৎসক-নার্সদের নানান সুবিধা দিচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুর জটিল কোনো শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন পড়ে পোর্টেবল এক্স-রে মেশিনের। ট্রলিতে বহন করে এ যন্ত্রটি এক স্থান থেকে আরেক স্থানে নেওয়া হয়। শিশুর বুক বা মস্তিষ্ক পরীক্ষার জন্য ফি নেওয়া হয় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে রোগী ভর্তি থাকে ১৮০-২০০ জন। প্রতিদিন গড়ে ৪০ থেকে ৫০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয় এ ওয়ার্ডে। একজন চিকিৎসক জানান, সদ্য ভূমিষ্ঠ ৩০ থেকে ৪০ শিশুর বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রতিদিন পোর্টেবল এক্স-রে মেশিন ব্যবহৃত হয়। চমেক হাসপাতালে পোর্টেবল এক্স-রে মেশিন রয়েছে তিনটি। কিন্তু চমেকেরই একটি চক্র লাইফ কেয়ার সেন্টারকে সুবিধা পাইয়ে দিতে লোকবল সংকটের অজুহাতে কোটি টাকা দামের এসব যন্ত্র যথাযথভাবে ব্যবহার করছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি স্বীকারও করেছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান। অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট সাদেকুর রহমান চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘একটি পোর্টেবল এক্স-রে মেশিন আছে আইসিইউতে। বাকি দুটি দিয়ে কাজ চালাই। যখন যে ওয়ার্ডে ডাক পড়ে সেখানে আমরা যাই। তবে লোকবল সংকটের কারণে রোগীদের সেবা ব্যাহত হয়।’
সর্বশেষ গত ২৯ এপ্রিল মো. শফিউল আলম নামে এক যুবককে গ্রেপ্তারের পর ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ‘রাজত্বের’ বিষয়টি আলোচনায় আসে। ওইদিন বেলা ১১টার দিকে ৩২ নম্বর নিউনেটাল ওয়ার্ডে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা উল্লেখ করে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান জানান, মো. শফিউল আলম নামে এক যুবক সেদিন এক রোগীর প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলছিল। সন্দেহ হলে সেখানে কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে সেই যুবক এক আনসার সদস্যকে মারধর করেন। পরে প্রমাণ হয় যে আনসার সদস্যকে মারধর করা যুবক লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল। এরপর তার বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় চমেক হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার কামরুজ্জামান বাদী হয়ে মামলা করেন।
নগরের পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদিকুর রহমান জানান, শফিউল আলমের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন শফিউল এবং তার সহযোগীরা (অজ্ঞাত) বিভিন্ন সময় চমেক হাসপাতালে বিনা অনুমতিতে অনুপ্রবেশ করে হাসপাতালে আসা গ্রামের অসহায়, কম শিক্ষিত ও গরিব দুস্থ রোগীদের ভুল বুঝিয়ে লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ অন্যান্য প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার নামে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ঘটনার দিন একজন রোগীকে ভুল বুঝিয়ে আসামি শফিউল লাইফ কেয়ারে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সেখানে কতর্ব্যরত সহকারী প্লাটুন কমান্ডার আনিছুর রহমানসহ কয়েকজন আনসার সদস্য বাধা দিলে তাদের মারধর করে শফিউল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে চমেকের কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা। এ সময় তাকে ছাড়িয়ে নিতে ঘটনাস্থলে আসেন লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার আবদুর রব। তিনি এসেই মামলার বাদীকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক আবদুর রব বলেন, ‘আসলে এটা একটা ভুল বোঝাবুঝি। ১৫ বছর আগে আমাদের কর্র্তৃপক্ষের পৃষ্ঠপোষকতায় ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে “ওয়াইফাই” লাগানো হয়। চিকিৎসকরা স্পিড বাড়ানোর জন্য বললে ঘটনার দিন ওয়াইফাই টেকনেশিয়ানের সঙ্গে সমন্বয় করতে ওই ওয়ার্ডে যান শফিউল। সেখানে আনসার সদস্যদের সঙ্গে কোনো মারামারি হয়নি। আর এক যুগ ধরে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে আধিপত্য ধরে রাখতে লাইফ কেয়ার কর্র্তৃপক্ষ প্রতি মাসে চিকিৎসক-নার্সদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিষয়টিও ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।’
এদিকে এক যুগ ধরে ৩২ নম্বর নিউনেটাল ওয়ার্ডে লাইফ কেয়ারের ‘আধিপত্যের’ জন্য রোগী কিংবা তাদের স্বজনদের দুষছেন ওই ওয়ার্ডের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শাহীন। তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগীদের সব লেভেলে সুন্দর সেবা দিতে চেষ্টা করছি। আমার সহকর্মী সহকারী অধ্যাপক ডা. মাসুদুর রহমানসহ নার্সরা মিলে কাজ করছি। দালাল ধরতে ওয়ার্ডে চিকিৎসক-নার্সদের সমন্বয়ে পাঁচটি টিম করেছি। কিন্তু দালালরা আমাদের চেয়ে চালাক। একজন প্রসূতি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসার পর দালালরা তাকে ঘিরে ধরে। ভর্তির টিকিট কাটা, চিকিৎসক দেখানো সব দায়িত্ব পালন করেন দালালরা। ওয়ার্ডে ভর্তির সময় সংশ্লিষ্ট দালালকে “আত্মীয়” বলে পরিচয় দেওয়ার জন্য রোগী বা প্রসূতির শিখিয়ে দেওয়া হয়। ওয়ার্ডে আসার পর নার্স বা হাসপাতাল কর্মচারীরা তো দালালদের চেনেন। এ সময় বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রসূতি বা রোগীকে অবহিত করলে তারা তা আমলে নেন না।’
লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের একক আধিপত্য বজায় রাখার বিনিময়ে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের চিকিৎসক-নার্সদের মাসিক সুবিধা দেওয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ডা. মো. শাহীন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘লাইফ কেয়ার থেকে চিকিৎসক তো প্রশ্নই উঠে না। নার্সরাও ভালো। তবে দুষ্ট লোকগুলো হলো চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা।’
তবে চমেক হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এক যুগ ধরে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে রাজত্ব চালাচ্ছে লাইফ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এ ওয়ার্ডে অন্য কোনো বেসরকারি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের লোক বা দালাল ঢুকতে পারে না। এ প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়াইফাই সুবিধা চালু করা হয়েছে। এ ওয়ার্ডে লাইফ কেয়ারের দালালরা ২৪ ঘণ্টায় তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করে। লাইফ কেয়ারের দালালদের সঙ্গে যোগসাজশ ছিল ওই ওয়ার্ডের সাবেক একজন নার্স ইনচার্জের। সম্প্রতি ওই নার্স ইনচার্জকে নার্সিং মেট্রন অফিসে বদলি করা হয়।
অভিযোগ আছে, সাবেক এ নার্স ইনচার্জ বুকের দুধ খাওয়াতে প্রসূতি মায়েদের নিরুৎসাহিত করতেন। হাসপাতালের বাইরে বিভিন্ন দোকান থেকে ‘বেবি ফুড’ বা কৃত্রিম দুধ কিনতে বাধ্য করতেন। সংশ্লিষ্ট প্রসূতির স্বজন সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর জন্য দুধ কেনার সময় একটি টোকেন দিতেন দোকানদার। ওই টোকেন দেওয়া হতো সাবেক ওই নার্স ইনচার্জকে। এরপর তিনি মাস শেষে দোকানগুলো থেকে কমিশন নিতেন।
চমেক হাসপাতাল ঘিরে কিছু বেসরকারি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের অপতৎপরতার কথা তুলে ধরে হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার শামীম আহসান বলেন, শুধু লাইফ কেয়ার নয়, জেনেটিক, এপিক, পপুলারসহ বেশ কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিজেদের লোক দিয়ে হাসপাতালের রোগী ও স্বজনদের জিম্মি করে রেখেছে। হাসপাতাল ঘিরে আছে ২৬টি ওষুধের দোকানের সিন্ডিকেট। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আছে তাদের দালাল। হাসপাতালে সরকারিভাবে সব ধরনের ওষুধ সাপ্লাই থাকলেও তারা রোগী বা স্বজনদের ভুল বুঝিয়ে সর্বস্বান্ত করছে। ওষুধ বিক্রির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগী কিংবা তার স্বজনদের ভুলভাল বুঝিয়ে নিজেদের পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায় দালালরা। দালাল এবং বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি সম্পর্কে তথ্য দিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান আরও বলেন, ‘চমেকের আইসিইউতে ভর্তি থাকা একজন রোগীকে ভাগিয়ে নিতে পারলে দালালরা পায় ৩০ হাজার, একজন সাধারণ রোগীর ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ হাজার, অস্ত্রোপচারের একজন রোগীর ক্ষেত্রে পায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। রোগীদের জন্য হাসপাতালে সরকারিভাবে প্রায় সব ধরনের ওষুধ সরবরাহ থাকলেও বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির মেডিসিন রিপ্রেজেন্টেটিভ (এমআর) বিভিন্ন ওয়ার্ডে (বিশেষ করে সন্ধ্যার পর) ঘোরাঘুরি করে। তারা রোগীর কাছ ওষুধ বিক্রির নামে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেয়।’
খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ দেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মারা গেছেন। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় রাত ১২টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। অধ্যাপক নুরুল ইসলাম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি অব আমেরিকার অধ্যাপক আদনান মোর্শেদ গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে অধ্যাপক নুরুল ইসলামের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি মৃত্যুর আগপর্যন্ত খাদ্য নীতিবিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) ইমেরিটাস ফেলো হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ১৯৮৭ সালে তিনি সংস্থাটির মহাপরিচালকের জ্যেষ্ঠ নীতি পরামর্শক হিসেবে যোগ দেন।
সুদীর্ঘ কর্মজীবনে অধ্যাপক নুরুল ইসলাম জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) অর্থনীতি ও সামাজিক নীতি বিভাগের সহকারী মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) চেয়ারম্যান ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন।
বিশ্বের বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং অ্যাকাডেমিক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন অধ্যাপক নুরুল ইসলাম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইয়েল, অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ এবং লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস। দেশ-বিদেশে ২৫টির বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে তার।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পরিস্থিতি কাভারের জন্য সাংবাদিকতায় ২০২৩ সালের সর্বোচ্চ সম্মাননা পুরস্কার পুলিৎজার জিতে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এপি ও নিউ ইয়র্ক টাইমস। স্থানীয় সময় গত সোমবার নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এবারের পুলিৎজার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিকতায় সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হচ্ছে পুলিৎজার।১৯১৭ সাল থেকে নিয়মিত এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। একাধিকবার এ পুরস্কার জিতেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট এবং ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের মতো বিখ্যাত পত্রিকাগুলো।
পুলিৎজারের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয় পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ডকে। ইউক্রেনে মস্কোর আগ্রাসন কাভারেজ করে পাবলিক সার্ভিস এবং ব্রেকিং নিউজ ফটোগ্রাফির ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতেছে সংবাদমাধ্যম এপি। পূর্ব ইউক্রেনের বন্দরনগরী মারিওপোলের রুশ অবরোধের পরিস্থিতি তুলে ধরেছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সংবাদকর্মীরা। এই ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাওয়া এপির সাংবাদিকরা হলেন মিসতিসলাভ চেরনভ, ইভজেনি মালোলেতকা, ভাসিলিসা স্তেপানেঙ্কো ও লরি হিনান্ট।
এপি’র জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং নির্বাহী সম্পাদক জুলি পেস বলেন, এপি সাংবাদিকরা পুরো যুদ্ধজুড়ে ইউক্রেনে সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বিশেষ করে সংঘাতের মানবিক দিকটি ফুটিয়ে তুলেছিলেন তারা।
অন্যদিকে ইউক্রেনের বুচা শহরে রুশ বাহিনীর সংঘটিত হত্যাকাণ্ড কাভারেজের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনের পুরস্কারটি গেছে নিউইয়র্ক টাইমসের ঘরে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত নিয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করায় ন্যাশনাল রিপোর্টিং ক্যাটাগরিতে পুরস্কার জিতে নিয়েছেন ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদক ক্যারোলিন কিচেনার। অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগে পুরস্কার জিতেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসও ব্রেকিং নিউজ বিভাগ ও ফিচার ফটোগ্রাফি বিভাগে পুরস্কার জিতে নিয়েছে। এ বছর সাংবাদিকতায় ১৫টি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয়েছে পুলিৎজার সম্মাননা। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেকে পাবে ১৫ হাজার ডলার করে।
ঝাঁজ বেড়েছে পেঁয়াজের। আদায় লেগেছে আগুন। চিনিতে মজুদ সংকট দেখিয়ে চলছে যাচ্ছেতাই। হঠাৎই গত ৫ মে আরও এক দফা বেড়েছে ভোজ্য তেলের দাম। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম হয়েছে আকাশচুম্বী। অনেক পণ্যের ক্ষেত্রে দ্বিগুণের বেশি দাম বাড়তেও দেখা গিয়েছে।
সর্বশেষ বাজারের তথ্য অনুযায়ী প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩১০ টাকা করে। যা গত এক মাস আগেও ১৪০-২২০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। কেজিতে ২৫-৩০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা, ২০-২৫ টাকার আলুর কেজি ৪০ টাকা ও ১২৫ টাকার চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা করে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কোনো কারণই ছাড় দেন না আমাদের ব্যবসায়ীরা। কোনো না কোনো ছুতা পেলেই মজুদ সংকট দেখিয়ে অস্থির করে তোলেন নিত্যপণ্যের বাজার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে নিত্যপণ্যের বাজারে উত্তাপ দেখা দেয়। মুখিয়ে থাকা অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ইউরোপের যুদ্ধের প্রভাবকে টোপ হিসেবে কাজে লাগিয়ে দেশের ভোজ্য তেলের বাজারে অস্থির করে তুলে। সরকার নানা সময় পদক্ষেপ নিয়েও চালকের আসনে বসা ব্যবসায়ীদের সরাতে পারেনি। উল্টো ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমঝোতা করে বাজার সমন্বয় করেছে। তবে তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।
কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ব্যবসায়ীরা শক্তিশালী এটি আপনাকে স্বীকার করতেই হবে। এমপি, মন্ত্রী থেকে শুরু যেহেতু সব স্থানে তাদের আধিপত্য রয়েছে। এছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারের আমলারা ব্যবসায়ীদের থেকে সুবিধা নিয়ে জনগণের ক্ষতি করছে। এর একটা বড় উদাহরণ হতে পারে, ব্যবসায়ীরা যখন যা দাবি করছেন তারা তাই মেনে নিচ্ছেন। তবে সব কিছু ছাপিয়ে সরকারের সদিচ্ছা থাকলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হতো। তাদের সদিচ্ছা নেই বলেই অবৈধ মজুদকারী ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, নতুন করে বাজারে আলু-পেঁয়াজের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তারা ভাবছে চিনি, ভোজ্য তেল ও মুরগির বাজার নিয়ে সিন্ডিকেটকারী ব্যবসায়ীদের যথাযথ শাস্তি না হওয়ায় নতুন করে আলু-পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই ক্ষেত্রে বলব, দেশে আইন রয়েছে। কিন্তু আইনের সঠিক প্রয়োগ নেই। যার ফলে ব্যবসায়ীরা যে যখন ইচ্ছে তাদের মতো খাদ্যপণ্য স্টক করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাদের হাত থেকে দেশের সাধারণ মানুষকে রক্ষায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ জরুরি।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ভোক্তা অধিদপ্তর দাম নির্ধারণ করে দেয় না। এর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাজারে হঠাৎ করে পেঁয়াজ ও আদার দাম বেড়েছে। এসব পণ্যের ক্ষেত্রে সরাসরি কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সিদ্ধান্ত নেবে। কৃষকের স্বার্থে বর্তমানে আইপি বন্ধ করে রাখা হয়েছে। যেন কৃষক তাদের ন্যায্য মূল্য পায়। যতদিন পর্যন্ত আইপি বন্ধ থাকবে ততদিন পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তবে বাজারে পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক কোনো বিষয় চোখে পড়লে আমরা ব্যবস্থা নেব।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শহরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে রিটার্নিং অফিসার মো. ফরিদুল ইসলাম মেয়র, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করেন।
এদিকে প্রতীক পেয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী, সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড এবং সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। রিটার্নিং অফিসারের হাত থেকে প্রার্থীরা নিজ পছন্দের প্রতীক নিয়ে এলাকায় চলে যান। সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ জন, ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা আসনে ৭৮ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৩ জন প্রার্থীসহ সর্বমোট ৩২৯ জন প্রার্থী লড়ছেন।
মেয়র পদে দলীয় প্রতীক ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত প্রতীক থেকে তাদের পছন্দের প্রতীক দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সংরক্ষিত এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নির্ধারিত প্রতীক থেকে তাদের পছন্দের এবং একই প্রতীক একাধিক প্রার্থীর দাবি থাকলে ওই ক্ষেত্রে লটারির মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আজমতউল্লা খানের দলীয় প্রতীক (নৌকা), জাতীয় পার্টির প্রার্থী এমএম নিয়াজ উদ্দিন পেয়েছেন দলীয় প্রতীক (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান পেয়েছেন (হাতপাখা), জাকের পার্টির প্রার্থী মো. অলিউর রহমান (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন (টেবিল ঘড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম (হাতি) প্রতীক, গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম (মাছ) প্রতীক, স্বতন্ত্র প্রার্থী হারুন অর রশীদ (ঘোড়া) বরাদ্দ পেয়েছেন।
প্রতীক পেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমতউল্লা খান দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রচারণা শুরু করেন। তিনি চান্দনা চৌরাস্তায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে গাজীপুর জেলা ও মহানগর যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। পরে তিনি নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রচারণায় যান।
আজমতউল্লা খান বলেন, জনগণের সেবার যে কাজগুলো আছে, অধিকারগুলো আছে তা সুনিশ্চত করার জন্য আমি আপনাদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছি। আমরা আজ এখান থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করছি। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে নির্বাচনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠে প্রচারণা চালাবে।
সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন রিটার্নিং অফিসারের হাত থেকে তার পছন্দের (টেবিল ঘড়ি) প্রতীক বুঝে নেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নগরবাসীর কাছে মেয়র পদে (টেবিল ঘড়ি) প্রতীকে একটি ভোট চাচ্ছি এবং সবার সহযোগিতা কামনা করছি। তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি একটি সুষ্ঠু ভোট উপহার দেওয়ার আহ্বান জানান। এ সময় তার সমর্থনে অডিটরিয়ামের বাইরে শত শত কর্মী-সমর্থক ঘড়ি ঘড়ি বলে সেøাগান দিতে থাকেন। পরে তিনি ওখানে কিছুক্ষণ থেকে কর্মী-সমর্থকদের ভিড় ঠেলে তার নিজ বাড়ি পার্শ্ববর্তী কানাইয়া এলাকায় যান। এ সময় সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম মায়ের সঙ্গেই ছিলেন। তিনিও মায়ের জন্য ভোট চান।
লাঙ্গল প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্য সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমি আশা করি ওই নির্বাচনে আমরা (লাঙ্গল) জয়ী হব। আমি নির্বাচিত হতে পারলে একটি সুন্দর সিটি করপোরেশন গড়ে তুলব। একটি সুন্দর নগরী হবে, মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান বলেন, আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সব প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। ইভিএম নিয়ে জনমনে যে নেতিবাচক ধারণা রয়েছে তা দূর করতে হবে। ২৫ মে প্রশ্নবিদ্ধ কোনো নির্বাচন হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গাজীপুর থেকে কঠোর আন্দোলনের সূচনা হবে।
গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এদের মধ্যে ১৮ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন। এখানে ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আজ গাজীপুরে যাচ্ছেন : প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল আজ বুধবার গাজীপুরে আসবেন। তিনি প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন। সকাল সাড়ে ১০টায় গাজীপুর শহরের রাজবাড়ি রোডে পিটিআই শহীদ আহসান উল্লা মাস্টার অডিটরিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর হোসেন এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মো. ফরিদুল ইসলাম জানান, গাজীপুর সিটি নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের জন্য প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হবেন।
১৯ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ : এদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে জন্য ১৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের তারিখ থেকে ভোট গ্রহণের দুদিন আগ পর্যন্ত অর্থাৎ ৯ মে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধি সংক্রান্ত মোবাইল কোর্ট অভিযান চালাবেন তারা। এ ছাড়া নির্বাচনে আচারণবিধি প্রতিপালনে দায়িত্ব পালনের জন্য আরও তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া এবং শরীরচর্চার অভাবের বেশির ভাগ মানুষেরই হার্ট খারাপ হচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে 'খারাপ' কোলেস্টেরল— এ সব মানুষের নিত্যসঙ্গী। তবে রক্তের বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা যদি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে যায়, তা হলে ওষুধ তো খেতেই হবে। সঙ্গে পছন্দের প্রায় সব খাবারেই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাবে। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, রোজকার খাবারে কিছু পরিবর্তন আনলেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই হার্টের যাবতীয় সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
বিরিয়ানি হোক বা পোলাও সঙ্গে মাটনের কোনো পদ ছাড়া জমে না। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, এ ধরনের 'লাল' মাংস খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাই খাসির বদলে মুরগির মাংস খাওয়া তুলনায় স্বাস্থ্যকর।
অনেক চেষ্টা করেও ভাজাভুজি খাবারের লোভ সামলাতে পারছেন না। এই অভ্যাসের ফলেই কিন্তু অজান্তেই বেশির ভাগ মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে চলেছে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভাজার বদলে যদি বেকড খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা যায়, তবে এই সমস্যা অনেকটাই ঠেকিয়ে রাখা যেতে পারে।
সকালের নাশতায় পাউরুটি খান অনেকেই। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, পাউরুটির ওপর মাখন দেওয়ার অভ্যাস ছাড়তে হবে। শুধু পাউরুটি খেতে যদি সমস্যা হয়, তবে ডিম ফেটিয়ে তার মধ্যে পাউরুটি ডুবিয়ে, তা বেক করে নিন। স্বাদ এবং স্বাস্থ্য দুই-ই থাকবে।
মন খারাপ হলে মাঝে মধ্যেই আইসক্রিম খেয়ে ফেলেন। তৎক্ষণাৎ মন ভালো করতে এই টোটকা সত্যিই কার্যকর। কিন্তু সমস্যা হলো আইসক্রিম খাওয়ার অভ্যাসে রক্তে বাড়তে থাকে কোলেস্টেরল। পরবর্তীতে যা হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গরমে তেষ্টা মেটাতে বার বার ঠাণ্ডা পানীয়তে চুমুক দিচ্ছেন। কিন্তু এ পানীয়ে থাকা কৃত্রিম শর্করা যে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করছে, টের পেয়েছেন কী? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই তেষ্টা মেটাতে এবং স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে নরম পানীয় না খেয়ে ফল থেকে তৈরি রস খেতে পারেন।
পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলে নয়, এশিয়া কাপ হবে একটি দেশে। আর সেটা শ্রীলংকা। পাকিস্তান তাতে অংশ না নিতে চাইলে তাদেরকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ।
ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দা টেলিগ্রাফ।
বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ যিনি এসিসিরও প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছেন, শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ খেলতে রাজি আছে ভারতসহ চার পূর্ণ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এসিসির নির্বাহী সভায় আলোচনা করা হবে। পাকিস্তান রাজি না হলে ৫ দল নিয়েই হবে এশিয়া কাপ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ অন্য কোনো দেশে আয়োজনে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজমা শেঠির দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন জয় শাহ। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে ভারতেই খেলতে হবে, না হলে না খেলবে। এ বার্তা পিসিবি এবং আইসিসির দুই কর্মকর্তা যারা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করেন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
রিয়াল মাদ্রিদের সংগে ১৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলছেন। ৪০ কোটি ইউরো চুক্তিতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আলো ইত্তিহাদে যোগ দিচ্ছেন।
ক'দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল করিম বেনজেমাকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন -এমন কথাও চাউর হয় স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু সব কিছুতে জল ঢাললেন ব্যালন ডি অর জয়ী। স্পেনের গণমাধ্যম মার্কার দেয়া মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড নিতে গিয়ে বললেন, 'আমি যখন রিয়ালেই আছি তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনো বলবো। ইন্টারনেটে যা প্রচার হচ্ছে তা ঠিক না। আমি এখানে ভালো আছি। শনিবার রিয়ালের ম্যাচ আছে, সব ফোকাস আমার সেই ম্যাচকে নিয়ে।'
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাকে রিয়ালে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেনজেমা বলেন, '২১ বছরের আমি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। এই ক্লাবে খেলার মতো আর কিছু হয় না, সান্তিয়াগো বার্নাবু দারুন এক জায়গা।'
রিয়ালের সংগে চুক্তির মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেনজেমার।
পলিথিন বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, বিভিন্ন ধরনের পলিথিনজাত মিনিপ্যাকের উৎপাদন, ব্যবহার ও এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সবগুলোই সমস্যা। পলিথিন উৎপাদন ও এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে বাতাসে যেমন কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়, অন্যদিকে এর ব্যবহার প্রাণিকুল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত। প্লাস্টিকের কণা এখন মানুষের রক্তে, মায়ের দুধে, সামুদ্রিক মাছে। শুধু ব্যবহার সম্পর্কিত সমস্যা না, পলিথিনের মাধ্যমে সৃষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও বেশি সমস্যাসংকুল। কারণ এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, কৃষির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে, শহরের নর্দমা বন্ধ করে দিচ্ছে তা আবার রোগ-ব্যাধি ছড়াচ্ছে, জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে এবং সবশেষে শহরকে বসবাসের অনুপযোগী করে দিচ্ছে।
এতসব সত্ত্বেও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ না করা বা বন্ধ করতে না পারার সংকট কোথায় সেটা বুঝতে আমাদের সমস্যা হয়। পলিথিন বন্ধে আইন আছে, নানা ধরনের প্যাকেজিংয়ে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাও অনেক দিন হলো। অন্যদিকে বেশ কিছুদিন ধরে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু তা সহসাই হচ্ছে না। ‘সোনালি ব্যাগ’ নিয়ে অনেক ঢাকঢোল পেটানো হয়েছে কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেই সোনালি স্বপ্ন কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে আসছে এতদিনে।
পলিথিনের ব্যবহার শহরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি যার অনেকটাই অভ্যাসগত কারণে। শহরের মানুষের পলিথিনের ওপর অভ্যস্ততা যেমন বেশি, তেমনি তারা ভুক্তভোগীও বেশি। রাস্তাঘাট, ড্রেন নোংরা হয়ে তো থাকেই, বাড়তি পাওনা দুর্গন্ধ, তৈরি হয় জলজট ও ডেঙ্গুর মতো রোগবালাই। বাসাবাড়িতে পলিথিনের ব্যবহার তো আছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য, বেকারিজাত পণ্যের পলিথিনের ব্যবহার ও পলিথিনের মোড়ক যত্রতত্র নিক্ষেপই এই অবস্থার জন্য দায়ী। শুধু ঢাকা নয় অন্যান্য ছোট-বড় সব শহরে প্রায় একই অবস্থা। আর এগুলোই হচ্ছে পলিথিন নির্ভর অর্থনীতির অনুষঙ্গ কিন্তু এর অনর্থনীতি হচ্ছে পলিথিনের কারণে পরিবেশদূষণ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি। সাধারণভাবে পলিথিন ব্যবহারের ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণ করা হয় না। তবে দূষণের মাত্রা এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে তাতে পলিথিনের অর্থনীতির থেকে এর ক্ষয়ক্ষতির অর্থনীতি যে অনেক বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আসছে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম অনুঘটক হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। অর্থমন্ত্রী তার এবারের বাজেট (২০২৩-২৪) বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন উভয় ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ এর উল্লেখ করেছেন কিন্তু পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে দৃশ্যমান কোনো রূপকল্প এবারের বাজেটে উল্লেখ করতে সমর্থ হননি। এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে শামিল হই সকলে’। গত বছরের এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘একটাই পৃথিবী’। পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহার আমাদের এই একমাত্র পৃথিবীকে দূষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে আইন হয়েছে ২০০২-এ এবং আজ ২০২৩ সাল, এই দীর্ঘ ২১ বছরেও এই আইনের বাস্তবায়ন করা যায়নি। যদিও এবারের বাজেট বক্তৃতায় প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার এর মূল্য সংযোজন কর বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাস্টিক সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। ধরেই নেওয়া যায় শুল্ক বৃদ্ধির এই হার কোনোভাবে পলিথিন নিরুৎসাহিত করার জায়গা থেকে না বরঞ্চ কিছুটা বাড়তি কর আদায়ের চিন্তা থেকে।
পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি সস্তা পলিথিনের ব্যবহার টেকসই ভোগের ধারণার জন্যও কোনোভাবে সহায়ক না। বরঞ্চ এটা এমন এক ধরনের মনস্তত্ত্ব তৈরি করে যা শুধু পরিবেশকেই ধ্বংস করে। যদিও বিশ্বব্যাপী টেকসই ভোগের ধারণার ওপর ভিত্তি করে এখন ‘সার্কুলার অর্থনীতির’ ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সার্কুলার অর্থনীতি শুধু অপচয় কমায় না, প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, দূষণরোধ, বর্জ্য থেকে তৈরি পরিবেশদূষণ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। তাই পরিবেশগত ঝুঁকি, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনীতিকে সার্কুলার অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলা এবং এ সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট ২০৩০ সমূহ অর্জনে সার্কুলার অর্থনীতি অন্যতম হাতিয়ার।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা শহরে রাস্তায় কোনো পেট বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায় না। এর কারণ হচ্ছে এখন পেট বোতলের প্রায় শতভাগ রিসাইকেল করা হয় এবং পেট বোতল সংগ্রহের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে হলেও একটি সংগ্রহ-লাইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু পলিথিনের ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায় না। তবে পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার সার্কুলার ইকোনমির ধারণার সঙ্গেও একেবারে মানানসই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রযুক্তিগতভাবে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন রিসাইকেল করা অসম্ভব না হলেও এটি একটি জটিল এবং অর্থনৈতিকভাবে ব্যয়বহুল যে কারণে পেট বোতলের মতো রাস্তা থেকে পলিথিন সংগ্রহ করতে কাউকে দেখা যায় না উলটো রাস্তাঘাটে এখানে সেখানে পলিথিন পড়ে থাকে।
পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের অনর্থনীতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখন প্রথম দরকার এর ব্যবহার বন্ধ করা, এর ব্যবহারকে অনেক বেশি দামি করে ফেলতে হবে আর এর প্রতিফলন থাকতে হবে বাজেটে। দ্বিতীয়ত, সার্কুলার অর্থনৈতিক চর্চার উৎসাহিত করার জন্য পরিকল্পনা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি, পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগের মতো উদ্যোগগুলোকে সরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ ও বেসরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। সরকার প্রতি বছর বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবেশ দিবস পালন করে কিন্তু দিবস পালন শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই হবে না এর উদ্যোগ কতটুকু বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে তার ওপরও নজর দিতে হবে। তা নাহলে পলিথিনের অর্থনীতির নামে শুধু অনর্থনীতিকে বাড়িয়ে তোলা হবে, আর সেটা হবে টেকসই অর্থনীতি তৈরির সম্ভাবনার অপমৃত্যু।
লেখক : উন্নয়নকর্মী ও কলামিস্ট
গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। এমন অবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না কেউ। তাই বলে গরমের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে তো আর জীবন চলবে না। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যেতে হবে। আর কর্মজীবীদের অফিস ও অন্যান্য কর্মস্থলে। অনেকেরই এই গরমেও কাজের প্রয়োজনে সারাদিন কেটে যায় বাইরে ঘুরে ঘুরেই। গরমকে মোকাবিলা করতে সঙ্গে এই প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো রাখলেই গরমের কাছে নিজেকে হার মানতে হবে না।
পানি পান
গরমের সময় শরীর থেকে স্বাভাবিক ভাবে অনেক বেশি ঘাম বের হয়ে থাকে। যার ফলে দেখা দিতে পারে পানি শূন্যতা। শরীরের মধ্যে যদি পানির পরিমাণ কমে যায় তাহলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। পানি শূন্যতা দূর করতে হলে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে।
বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার পাশাপাশি ফলের জুস কিংবা কচি ডাবের পানি খেতে পারেন। দেহের ত্বককে ভালো রাখতে পানি, শরবত বা জুস পানের বিকল্প নেই। গরমে সময় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার বিশুদ্ধ পানি খেলে ডিহাইড্রেশন এবং পানি শূণ্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
খাবার স্যালাইন
গরমের সময় ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ বের হতে থাকে যার ফলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। এ থেকে মুক্তি পেতে খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। বিকেল বেলা খাবার স্যালাইন খেলে অতিরিক্ত গরমেও শরীরে সতেজতা ফিরে আসে। আবার অনেকেই স্বাদযুক্ত স্যালাইন খান যেমন, টেস্টি স্যালাইন। ভুল করেও এসব খাবেন না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হলো ওরস্যালাইন । তবে আপনাদের মধ্যে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা খাবার স্যালাইন খাওয়ার আগে ভালো কোনো ডাক্তারের মতামত নেওয়া উচিত।
রেড মিট পরিহার করুন
অতিরিক্ত গরমের সময় গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ গরমের সময় বা অতিরিক্ত গরমের সময় গরুর মাংস খেলে শরীরের তাপমাত্রা অনেকাংশে বেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গরু-ছাগলের মাংস ছেড়ে মাছ খেতে পারেন। আর অতিরিক্ত গরমে অবশ্যই অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
সবুজ শাক সবজি
গরমের সময় শরীরকে সুস্থ রাখতে বেশি বেশি করে সবুজ শাক সবজি খেতে পারেন। সবুজ শাক সবজিতে অধিক পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল এবং খনিজ উপাদান থাকে। এতে করে অতিরিক্ত গরমেও শরীর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।তাছাড়াও খেতে পারেন তরমুজ যা শরীরে এনার্জি দিতে পারে।
টক জাতীয় ফল
প্রচুর গরমে সুস্থ থাকার উপায় হিসেবে টক জাতীয় ফল খেতে পারেন। যেমন: কামরাঙ্গা, লেবু, তেতুল, আমরা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে অতিরিক্ত টক ফল খাওয়া ঠিক নয়। যদি কারো এসিডিটির সমস্যা থেকে থাকে তবে টক জাতীয় ফল খাওয়া হতে বিরত থাকুন। টক জাতীয় ফল খালি পেটে খাওয়া যাবে না। এতে করে আরো বেশী অসুস্থ হয়ে পারতে পাবেন।
টক দই
অতিরিক্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে টক দই খেতে পারেন। যারা করা রোদে কাজ করেন বিশেষ করে তাদের জন্য অনেক উপকারী হলো টক দই। রোদের প্রচুর তাপ থেকে শরীরকে কিছুটা হলেও রক্ষা করবে টক দই। টক দই শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে অনেকাংশে সাহায্য করে।
প্রতিদিন গোসল করুন
গরমের সময় প্রতিদিন এক বার করে হলেও গোসল করতে হবে। যদি পারেন তবে দিনে ২ বার গোসল করতে পারেন। গোসল করার ক্ষেত্রে একটু সাবধান থাকতে হবে। বাহির থেকে এসে সাথে সাথে গোসল করতে যাবেন না। একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল করতে যাবেন। কারণ হঠাৎ করে গরম থেকে এসে গোসল করলে ঠাণ্ডা লাগতে পারে।
ঘরেই অবস্থান করুন
অতিরিক্ত গরমে বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বাহিরে যাবেন না । যদিও বিভিন্ন কারণে বাহিরে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে রোদ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার করতে পারেন। যতটুকু সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।
শারীরিক পরিশ্রম কম করুন
গরমের সময় অনেকেই আছে অতিরিক্ত ব্যায়াম করে থাকেন এমনটি করা যাবে না কারণ অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি হয়ে থাকে।
পাতলা সুতি কাপড় পরিধান করা
গরমের সময় পাতলা সুতি কাপড় পরা দরকার। কারণ সাদা কাপড় তাপ শোষণ করতে পারে না বরং তাপের প্রতিফলন ঘটায় ও গরম কম লাগে।
পারফিউম ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
অতিরিক্ত গরমে ঘামের গন্ধ থেকে বেচে থাকার জন্য অনেকেই সুগন্ধি ব্যবহার করে থাকে। তবে অতিরিক্ত গরমে পারফিউম ব্যবহার না করাটাই উত্তম কাজ। কারণ, পারফিউম গরম লাগা বৃদ্ধি করে দেয়।
যদিও ব্যবহার করতে হয় তাহলে হালকা গন্ধের সুগন্ধি ব্যবহার করতে পাবেন। বাজারে কিছু সুগন্ধি পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করলে ঠাণ্ডা লাগে। সেগুলো ব্যবহার করলে আরো ভালো হয়।
ধূমপান পরিত্যাগ করা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা কিনা ধূমপান করে থাকি। ধূমপান করলে শরীরের তাপমাত্রা তুলনামূলক ভাবে বেড়ে যায়। তাই প্রচন্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে ধূমপান পরিত্যাগ করতে হবে। যদিও এই অভ্যাসটি সহজে পরিত্যাগ করা যায় না। তাই যতটুকু পারেন ধূমপান কম করার চেষ্টা করুন।
চা কফি পরিত্যাগ করুন
চা, কফি বা অ্যালকোহল খেলে শরীরের তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। আর যদি অতিরিক্ত গরমে চা, কফি বা অ্যালকোহল খেয়ে থাকেন তাহলে শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাবে যার ফলে হতে পারে হিটস্ট্রোক। তাই গরমের সময় চা কফি বা অ্যালকোহল খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
শান্ত থাকুন
মন মেজাজ গরম থাকলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। রাগের কারণে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং অতিরিক্ত গরমের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় আর দুই তাপমাত্রা এক সঙ্গে হলে কি অবস্থা হতে পারে একবার হলেও সেটা ভেবে দেখবেন।
বিশেষজ্ঞরা অতিরিক্ত গরমে শান্ত থাকার জন্য মতামত দিয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য শান্ত থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।