
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের বাকি মাত্র পাঁচ দিন। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা চালানোর সময় আরও কম। আগামী মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে বন্ধ হয়ে যাবে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। তাই শেষ সময়ে এসে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। ভোট চেয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মায়ের পক্ষে কাজ করে ‘শোকজ খাওয়া’ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও এখন কাজ করছেন দলের প্রার্থীর হয়ে। কোথাও কোনো সহিংসতার ঘটনা না ঘটলেও জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন।
৯ মে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা তাদের প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমতউল্লা খানের পক্ষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ৫৭টি ওয়ার্ডে চালানো হচ্ছে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা। কর্মীরা দল বেঁধে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন নৌকার পক্ষে।
অপর দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের পক্ষে তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট জাহাঙ্গীর আলম সমর্থকদের নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী সাবেক সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান ও হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম রনিও।
জানা গেছে, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থিত এবং তার সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে মহানগর আওয়ামী লীগের যে দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে শোকজের চিঠি দেওয়া হয়েছিল, সেই সব নেতাকর্মী প্রথম দিকে অনেকটা নীরব ছিলেন। পরে বিভিন্ন থানায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে সবার মান-অভিমান ভাঙিয়ে তাদের নৌকার পক্ষে প্রচারণায় নামানো হয়।
দুই প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন
আগের দিনের হামলার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। তিনি হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজনকে দায়ী করেছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমতউল্লা খান।
গতকাল দুপুরে মহানগরীর ছয়দানা এলাকায় তার বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘অন্য প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে পারে, আমি মহিলা তাই ভোট চাইতে গেলে বাধা দেওয়া ও হয়রানি করা হয়। আজমতউল্লা খানের লোকেরা যা করেছে, তা আমি ভাবতেই পারিনি।’ তিনি বলেন, ‘যারা আমার টেবিল ঘড়ি মার্কায় ভোট দেবে, আমি তাদের নিরাপত্তা চাই।’
জায়েদা খাতুনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র। সম্প্রতি তাকে আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। জায়েদা খাতুন তার ছেলেরও নিরাপত্তা চেয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার ভোটের প্রচারের সময় জায়েদা খাতুন ও জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলা হয়। ভাঙচুর করা হয় তাদের গাড়ি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘বৃহস্পতিবারের হামলার ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ করেছি, কিন্তু কোনো ফল পাইনি।’
সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম তার মায়ের প্রচারে বাধা, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলারও অভিযোগ করেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমতউল্লা খানের পক্ষে গতকাল বিকেলে টঙ্গী প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্যাহ মন্ডল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইলিয়াস, গাজীপুর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আনোয়ার সাদত সরকার।
আতাউল্যাহ মন্ডল বলেন, ‘স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী জায়েদা খাতুনের ছেলে এবং আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ওপর হামলার ঘটনাটি একটি সাজানো নাটক। তিনি যে কয়েক দিন পরপর সুন্দর নাটক তৈরি করতে পারেন, তা গাজীপুরবাসীসহ দেশবাসী জানে।’
আতাউল্যাহ মন্ডল দাবি করেন, ‘তাদের গণসংযোগে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়। জাহাঙ্গীর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদক থাকাকালে বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতাকর্মীকে কৌশলে আওয়ামী লীগে পদপদবি দিয়েছেন। তারাই এখন তার ওপর হামলা করছে।’
প্রার্থীদের প্রচার
আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমতউল্লা খান গতকাল টঙ্গী বাজার বড় মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে মুসল্লিদের সঙ্গে কুশলবিনিময় করেন। পরে তিনি টঙ্গী বিসিক, পাগার, ফকির মার্কেট, মরকুন, টিঅ্যান্ডটি, গোপালপুর, স্টেশন, বলমালা রোড, হাজি মার্কেট, গাজীপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও পথসভায় বক্তব্য দেন।
গাজীপুর মহানগর যুবলীগের উদ্যোগে নৌকা প্রতীকের পক্ষে নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য ভোগড়া স্কুল মাঠে নির্বাচনী সভা হয়েছে। মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেলের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন সকালে তার বাসভবনে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর বিকেলে তিনি বোর্ড বাজার, ছয়দানা মালেকের বাড়ি, তারগাছ, জয়বাংলা সড়ক, তারগাছ, কুনিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় বক্তব্য দেন।
জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এম এম নিয়াজউদ্দিন ৪১ নম্বর ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন স্থানে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচারপত্র বিলি করেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম রনি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেন।
মানুষটাকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল শান্তিনগর বাজারের সামনে। প্রকাশ্য দিবালোকে সেই প্রথম কাউকে খুন হতে দেখি। কী নাম ছিল নিহত ওই মানুষটির? জানি না, আততায়ীরাও অজ্ঞাতনামা। বাজারের রাস্তায় চুরির দায়ে গণপিটুনিতে লোকটা মরে গেল। চারপাশে ভিড় ফেটে পড়ছিল, রোদ ঝরে পড়ছিল, মানুষের দৈনন্দিন শব্দে ভরে উঠছিল সত্তরের দশকের এক দুপুর। সম্ভবত একটা চোখ উপড়ে নেওয়া নিথর মৃতদেহটাও অনেকক্ষণ পড়ে ছিল ঘটনাস্থলেই। কিশোর বয়সে দেখা সেই ভয়ংকর ঘটনার এখন বয়স প্রায় ৫০ বছর। উজ্জ্বল রৌদ্রের দিনে দাঁতে দাঁত চাপা হিংসার কী ভয়ংকর ছায়া দেখেছিলাম মানুষগুলোর মুখে! দেখেছিলাম আঘাত করতে এগিয়ে আসা সাধারণ মানুষগুলোর মুখ কত সহজেই হিংসার ভাষায় অনুবাদ হয়ে যায়।
খুনিদের মুখ কেমন হয়? তাদের বিশাল লম্বা হাত থাকে না। রূপকথায় রাক্ষসের বিবরণের সমিল বড় বড় কান থাকে না, মাথায় শিং থাকে না। কিন্তু তারা ভয়ংকর হয়। খুব ঠান্ডা মাথায় একটা আড্ডা থেকে উঠে গিয়ে তারা যে কাউকে মেরে ফেলতে পারে। স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার অংশ? হয়তো তাই। আমার পর্যবেক্ষণ অন্তত তা-ই বলে।
আশির দশকের গোড়ার দিকে আরেক দুপুরে মনিরকে খুন করার চেষ্টা করা হবে জানতাম না আমি। মালিবাগ মোড়ে প্রকাশ্য দিবালোকে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলার পরিকল্পনার নির্দিষ্ট কোনো ছকও ছিল না বলেই জানি। সে যাত্রা মনির খুন হয়নি। ভয়াবহভাবে জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে এসেছিল। তাকে খুন করতে চাওয়া তরুণদের কেউ-ই ভয়ংকর রাক্ষসের মতো দেখতে ছিল না। কিন্তু একটি ম্লান রেস্তোরাঁয় বসে তারা ভেবেছিল মনিরকে সরাতে হবে। আর তা না হলে তাদের মরতে হবে। আরও কয়েক বছর পর অবশ্য এক দিবালোকে প্রকাশ্যেই খুন হয়ে যায় মনির। সেই শহরের এক রেললাইনের পাশে তাকে পিটিয়ে খুন করে অন্য কয়েক যুবক। মনিরের প্রাণহীন মুখের ওপর কিছু মাছি রক্তের ঘ্রাণ নিতে উড়ে এসেছিল কি না, জানা নেই। কিন্তু খুনিরা কেউ ধরা পড়েনি জানি। পরবর্তী সময়ে দেখেছি সেই খুনের খেলোয়াড়দেরই প্রতিক্রিয়াহীন মুখ। খুব সাধারণ মুখায়ববে খুনের চিহ্ন অথবা রক্তের ছিটে খুব সহজেই শুকিয়ে যায়। তারপর খুনিরা মিশে যায় আর দশজনের ভিড়ে।
অনেক অনেক দিন আগে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের টিএসসির মোড়ের মাথায় আরেকজনকে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন হতে হতে বেঁচে যেতে দেখেছি। শরীরে কাটা রাইফেলের নল ঠেকিয়ে পরপর দুবার গুলি করার পরেও বেঁচে গিয়েছিল এক যুবক। সেদিন সৌভাগ্যবশত প্রতিপক্ষের রাইফেলের বোল্ট কাজ না করায় নিশ্চিত মৃত্যু তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল জীবনের মধ্যে। হিংসার আগুনে পোড়া সেই যুবকদের মুখের রেখায় হতাশা আর নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা আরেকজনের মুখে বিস্ফোরিত বিস্ময়ের আলো দেখে পাথর হয়ে গিয়েছিলাম। মনে হয়েছিল, জীবনের নাছোড়বান্দা প্রেমিক মৃত্যু এত সহজে হাত ছেড়ে দেয়! সেদিন খুন করতে আসা যুবকরা খুব সহজ ভঙ্গিতে মোটরবাইকে উঠে চলে যায়। বেঁচে যাওয়া যুবকের আশ্রয় হয় পুলিশের ভ্যান।
সাংবাদিকতার সূত্রে খুন-জখমের পৃথিবীর খলনায়কদের খুব কাছে থেকে দেখেছি। আজও মাঝে মাঝে ভাবি, মেরি শেলির উপন্যাসের সেই দানব ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের মতো এই দানবরা কোন বাঁশিতে জেগে উঠত? তাদের পেছনে অর্থ, অস্ত্র কারা জোগান দিত? তাদের পরিচয়ও কিন্তু খুব গোপন কোনো বিষয় নয়। কেউ জানতে চাইতেই পারেন খুনিদের ঘুম কি উপদ্রুত? তাদের জেগে থাকা কি ভয়াল? তারা কি রহস্যময়? ৪০ বছরের বেশি সময় আগে সেই শহরে রাজনৈতিক হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত নটদের দেখে আমার উল্টোটাই মনে হয়েছে। জনারণ্যে তাদের অতি স্বাভাবিক চলাফেরায় চমকে উঠেছি কখনো কখনো।
একটা খুন অথবা একজন খুনির দর্শনটা কী আসলে? যাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তার সংসার আর স্বজনদের কাছে তো পুরোটাই শূন্যতা অথবা শূন্যস্থানের যন্ত্রণা ছাড়া আর কিছু নয়। সে শূন্যতা পূরণ হয় না।
নব্বইয়ের দশকে সাংবাদিক হিসেবে সেই শহরের একজন পেশাদার খুনির সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য অনেকবার পরিকল্পনা করেছি। তখনকার অন্ধকার জগতের কয়েকজন কুশীলবের সূত্রে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। একজন পেশাদার খুনির ভেতর মহলের গল্প, কয়েকটি আলোচিত রাজনৈতিক হত্যাকান্ড সম্পর্কে ছড়িয়ে থাকা অস্পষ্ট কাহিনিগুলোর ভেতরের কথা জানাটাই ছিল উদ্দেশ্য। আমার কাছে সত্যি কাহিনিটা অজানাই থেকে গেছে। সেই পেশাদার খুনিও অনেক বছর আগে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। যত দূর মনে পড়ে তাকেও খুন করা হয়েছিল। আসলে খুনিরা ভবিষ্যৎহীন মাছের মতো ভেসে যেতে থাকে একদিন অন্য শিকারির বড়শিতে ধরা পড়বে বলে।
রাজনীতি করতে করতে প্রবীণ, ‘বুড়ো হাড়ে’ ঘাস জমছে। দীর্ঘ সময় রাজনীতি করেছেন তারা, ২৫-৩০ বছর তো হবেই। একসময় ছাত্রদল করতেন, এখন সাবেক; তারপরও বিএনপির রাজনীতিতেই যুক্ত আছেন তারা। তাদের কয়েকশ এখনো পদবঞ্চিত।
বিএনপি বলেছিল, ছাত্রদল থেকে যারা বাদ পড়বে তাদের যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। কিন্তু বঞ্চিতরা কোথাও নেই, তারা দৃশ্যমান নয়। যুবদলেও নেই, স্বেচ্ছাসেবক দলেও নেই; ছাত্রদলে তো নেই-ই। তাদের এতিম-দশাই বলতে হবে।
এই তিনটি অঙ্গসংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার পর পদবঞ্চিত নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রথমে ছাত্রদল, পরে যুবদল ও সর্বশেষ স্বেচ্ছাসেবক দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে। তিনটি সংগঠনের কোথাও আমরা নেই। আমরা বাদ পড়েছি।’
উল্লিখিত সংগঠনটির তিনটির শীর্ষ নেতারা বলেছেন, সময় শেষ হয়ে যায়নি। যারা যোগ্য তাদের পদায়ন করা হবে।
পদবঞ্চিত নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন রাজনীতি করার পরে এখন আমাদের কোথাও পদ নেই। এটা নিজের জন্য যেমন বিব্রতকর তেমনি পরিবারের কাছেও কিছু বলার থাকে না। না করেছি বিয়ে, না করেছি ব্যবসা, না করেছি চাকরির চেষ্টা। সব হারিয়ে আমরা নিঃস্ব। আমাদের এ অবস্থার জন্য দায়ী সংগঠন তিনটির শীর্ষ নেতারা।
তারা বলেন, ‘তারপরও আমরা দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের (বিএনপি) রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছি। আশা করছি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাদের দিকে তাকাবেন।’
গত বছর ৪ সেপ্টেম্বর এসএম জিলানীকে সভাপতি ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজীব আহসানকে সাধারণ সম্পাদক করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের পাঁচ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি (আংশিক) ঘোষণা করে বিএনপি। ছয় মাস পর ঈদের আগে আগে গত ২০ এপ্রিল ২১৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন করে বিএনপি। ২৫১ সদস্যের মধ্যে ২১৩ সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বিভাগীয় পদসহ বাকি পদগুলো পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়। কমিটি ঘোষণার পর পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
বাদপড়াদের মধ্যে রয়েছেন গত কমিটির সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রদল নেতা মির্জা ইয়াসিন আলী। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘২০০০ সাল থেকে ছাত্রদল করছি। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলাম একসময়। সর্বশেষ স্বেচ্ছাসেবক দলের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক ছিলাম। ২৩ বছর ধরে রাজনীতি করে এখন পদবঞ্চিত। অথচ আমার নামে এখন ১০টি মামলা।’
বাদপড়াদের মধ্যে আরও রয়েছেন হাজি নাছির উদ্দীন মোল্লা, নেছার উদ্দিন সফি, জসিম হাওলাদার, মনিরুজ্জামান মনির, মো. রাসেল খান, শাহ আলম রনি মৃধা, আবদুল মমিন, মো. আল মামুন, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
গত কমিটির ২৮৬ জনকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গত কমিটিতে চারশর বেশি নেতা ছিলেন। কিন্তু মিটিং ডাকলে একশজনও উপস্থিত হতেন না। কর্মসূচিতে উপস্থিতিও কম ছিল। সে হিসেবে তিনশজনকে বাদ দেওয়ার কথা। এখনো কিছু পদ খালি আছে। যারা যোগ্য তাদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’
যুবদল : সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও মোনায়েম মুন্নার নেতৃত্বে যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয় চলতি বছর ২২ ফেব্রুয়ারি। কমিটি ঘোষণার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পদবঞ্চিত নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।
পদবঞ্চিত তারিক উজ জামান তারেক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘১৯৯০ সালে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর পৌর শাখা ছাত্রদলের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হই। সর্বশেষ রাজীব-আকরাম কমিটির তিন নম্বর সহসভাপতি ছিলাম। সেই কমিটি বিলুপ্তির পর সাইফুল আলম নীরব ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর নেতৃত্বে যুবদলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে শুরু করি। কিন্তু কমিটিতে জায়গা হয়নি। ভেবেছিলাম সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও মোনায়েম মুন্নার নেতৃত্বে যুবদলের নতুন কমিটিতে জায়গা হবে। কিন্তু হয়নি।’
তারেকের মতো বাদপড়া সাবেক ছাত্রদল নেতারা হলেন শোয়াইব খন্দকার, আশরাফুর রহমান বাবু, তারিকুজ্জামান, হুমায়ুন কবির, আবুল হাসান, জাকির হোসেন খান, মনিরুজ্জামান রেজিন, আবদুল ওয়াহাব প্রমুখ।
পদবঞ্চিতদের যুবদলে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না কারামুক্ত হলে তাদের পদায়ন করা হবে।’
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের পূর্বঘোষিত কমিটি বর্ধিত করে ৮৯ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তারপরও কিছু নেতা বাদ পড়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্রদলের বিগত কমিটির মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন (ঢাবি), এস এম হল ছাত্রদল ঢাবি শাখার আহ্বায়ক হাবিবুল বাশার, সহ-সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম জাহিদ প্রমুখ।
পদবঞ্চিত নিজাম উদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দ্বিতীয় দফায় ছাত্রদলের কমিটি বর্ধিত করা হলেও আমি বাদ পড়েছি। নেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার অঙ্গীকার করেছেন। তাই অপেক্ষার প্রহর গুনছি আমরা।’
ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পদবঞ্চিতদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজপথে সরকারবিরোধী আন্দোলন চলমান থাকায় সময় বের করা যাচ্ছে না। জেলা ও মহানগর কমিটি করার পর বাদপড়াদের মধ্যে যারা যোগ্য তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকায় বাসার পাশে তিন বছরের শিশু সিদ্দিক আট বছর বয়সী বোন হুমায়রার সঙ্গে খেলছিল। তাদের সঙ্গে আরও ছয় থেকে সাতজন শিশু ছিল। এ সময় ওই শিশুদের কাছে গিয়ে এক ব্যক্তি শিশুদের চকলেট খাওয়ান। এরপর কৌশলে শিশু সিদ্দিককে কোলে নিয়ে পালিয়ে যান। পরে ফেসবুকের একটি গ্রুপের মাধ্যমে শিশুটিকে বিক্রি করে দেন গোপালগঞ্জের এক দম্পতির কাছে। গত ২৬ এপ্রিল দুপুরের এ অপহরণের ঘটনার পর গত বৃহস্পতিবার শিশুটিকে গোপালগঞ্জ থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব-২।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-২ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন খান।
তিনি বলেন, গত ২৬ এপ্রিল দুপুরের এ অপহরণের ঘটনার পর পরিবার মামলা দায়ের করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এরপর গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগ থেকে শিশুটিকে বিক্রি করার মধ্যস্থতাকারী সুজন সুতার (৩২) নামে একজনকে আটক করে র্যাব। পরে শিশু সিদ্দিককে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার সুজনের নিকটাত্মীয় পল্লব কান্তি বিশ্বাস (৫২) ও তার স্ত্রী বেবী সরকারের (৪৬) বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। তাদের গ্রেপ্তারের পর ঢাকার সাভার থেকে মূল হোতা অপহরণকারী পীযূষ কান্তি পাল (২৯), সহযোগী ও স্ত্রী রিদ্ধিতা পাল (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে আম কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে শিশু সিদ্দিককে অপহরণ করে চক্রটি। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ‘সনাতনী উদ্যোক্তা ফোরাম (এসইউএফ)’ নামে একটি গোপন গ্রুপে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। পরে মাত্র ২ লাখ টাকার বিনিময়ে তিন বছরের শিশুটিকে নিয়ে নেয় গোপালগঞ্জের এক দম্পতি।
র্যাব-২ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন খান আরও বলেন, পীযূষ কান্তি পাল শিশুটিকে অপহরণ করে। পরে তার স্ত্রী রিদ্ধিতা পাল সুজন সুতারের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের এক নিঃসন্তান দম্পতি পল্লব কান্তি বিশ্বাস ও বেবী সরকারের কাছে শিশুটিকে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করেন। এর আগে ফেসবুক গ্রুপে পীযূষ দম্পতি সন্তান বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছিল। সেখান থেকেই সুজন সুতার সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাদের।
অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন খান জানান, মূল হোতা পীযূষ কান্তি পাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন পার্ট টাইম স্পা সেন্টারে কাজ করত। সেখান থেকে রিদ্ধিতা পালের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে ২০২০ সালে বিয়ে করে। মূলত স্পা সেন্টারে কাজ করার সময় থেকে সে মানব পাচারে জড়িয়ে পড়ে। গত বছর বনানী থানায় তার বিরুদ্ধে মানব পাচারের মামলা হয়। ওই মামলায় কিছুদিন জেল খেটে জামিনে বের হয়। এ চক্রের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলছে, আরও কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফের) সোর্স সন্দেহে লোঙ্গা খুমী (৪০) নামে রুমা উপজেলায় কর্মরত দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সাংবাদিককে আটক করেছে সেনাবাহিনী। তিনি কেএনএফের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী বৈদেশিকবিষয়ক সম্পাদক বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রুমা থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন। খুমীর বিরুদ্ধে রুমা থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরেই তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
জানা যায়, আটক ব্যক্তি সাংবাদিকতার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফকে তথ্য আদান-প্রদান করতেন। ফলে সেনাবাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন। তার সরাসরি সম্পৃক্ততাবিষয়ক কেএনএফের গোপন অফিশিয়াল নথি সম্প্রতি সেনাবাহিনীর হাতে এলে সেই সূত্র ধরে তাকে আটক করা হয়। গোপন নথিতে কেএনএফের শীর্ষ নেতৃত্বের একটি অফিশিয়াল তালিকা রয়েছে।
আরও জানা গেছে, গতকাল বিকেল ৩টায় লোঙ্গা খুমীকে রুমা থানা পুলিশ বান্দরবান চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে বান্দরবান জেলা কারাগারে পাঠায়। লোঙ্গা খুমী রুমা উপজেলার কুলাইনপাড়া গ্রামের বগামুখ এলাকার ঙাচা খুমীর ছেলে। গত ছয় বছর আগে তিনি মুরং বাজার এলাকায় পল্লী চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি রুমা গির্জাপাড়ায় বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন। তার বড় ভাই লেলুং খুমী বান্দরবানের খুমী জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রথম স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে আলোচিত হন।
এ ব্যাপারে রুমা থানার ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কেএনএফের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে লোঙ্গা খুমীকে আটক করা হয়, তার বিরুদ্ধে থানায় দুটি মামলা থাকায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে কেএনএফের সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন সন্দেহে বান্দরবানের দৈনিক গণকণ্ঠের প্রতিনিধি রিচার্ড বমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে র্যাব। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এমন অভিযোগে নজরদারিতে আছে বান্দরবানের আরও কয়েকজন সংবাদকর্মী।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জাপানের হিরোশিমায় শুরু হওয়া জি-৭-এর শীর্ষ সম্মেলনের শেষ দিনে যোগ দেবেন, সেটা আগে থেকেই ঘোষণা ছিল। গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া সম্মেলনে রাশিয়ার ওপর চাপ আরও বাড়াতে পারমাণবিক যুদ্ধের বিভীষিকার প্রতিশব্দে পরিণত হওয়া শহরটিতে সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে তিনি যোগ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন ইউক্রেনের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার হঠাৎই ভলোদিমির জেলেনস্কি সৌদি আরব সফরে যান। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে এটিই তার প্রথম সফর।
গতকাল সৌদি আরবের বন্দর নগরী জেদ্দায় আরব লিগ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন তিনি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দেশের সমর্থন আদায়ে কূটনৈতিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে তিনি এই সফর করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্মেলনে আরব লিগের ২২টি সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এসব দেশের মধ্যে রাশিয়ার আগ্রাসনের সমর্থনে অবস্থান ব্যক্ত করেছেন শুধু সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। সিরিয়ায় ১২ বছর ধরে চলমান গৃহযুদ্ধে আসাদ সরকারকে ক্রমাগত সমর্থন ও সহায়তা দিয়েছে রাশিয়া। প্রায় এক যুগ আরব লিগের বাইরে থাকার পর এই প্রথমবার সম্মেলনে ভাষণ দেবেন আসাদ।
সেই সম্মেলনে হঠাৎ হাজির হন জেলেনস্কিও। গতকাল টুইটারে নিজের অ্যাকাউন্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলেনস্কি নিজেই। সৌদি আরবের জেদ্দায় চলছে আরব লিগের সম্মেলন। এরই মধ্যে দেশটিতে গেলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে প্রথমবারের মতো সৌদি আরব সফর শুরু করলাম। আরব বিশ্বের সঙ্গে ইউক্রেনের সম্পর্কও এগিয়ে নিতে চাইছি।’
সৌদি আরবে কোন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে চান, তা-ও টুইটারে উল্লেখ করেছেন জেলেনস্কি। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার দখলে থাকা ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের অন্য অঞ্চলগুলোয় আটক রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্ত করা, ইউক্রেনের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনা, যুদ্ধ বন্ধে শান্তি আলোচনা এবং জ্বালানিসংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো।
বিবিসি বলছে, সম্মেলনে জেলেনস্কিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী শক্তি সৌদি আরব। ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে বেশ কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে রাষ্ট্রটি। ইউক্রেন থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারে জাতিসংঘের বিবৃতিকে সমর্থন করে কিয়েভকে প্রায় ৪০ কোটি ডলারের মানবিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রিয়াদ।
সৌদি আরব পৌঁছার আগে জেলেনস্কি ইউক্রেনের মুসলিমদের কথা তুলে ধরেছেন। ক্রিমিয়ার তাতার মুসলিম জনগোষ্ঠীর নেতা মুস্তাফা ডিজেমিলেভকে সঙ্গে এনেছেন তিনি। এর ফলে ধারণা করা হচ্ছে, রুশ আগ্রাসনে ইউক্রেনে মুসলিমরাও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে বলে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর কাছে তুলে ধরবেন তিনি।
জেলেনস্কি বলেছিলেন, রুশ দখলের প্রথম ভুক্তভোগী ক্রিমিয়া। দখলকৃত ক্রিমিয়ায় যারা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগ মুসলিম।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া এবং শরীরচর্চার অভাবের বেশির ভাগ মানুষেরই হার্ট খারাপ হচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে 'খারাপ' কোলেস্টেরল— এ সব মানুষের নিত্যসঙ্গী। তবে রক্তের বিভিন্ন উপাদানের মাত্রা যদি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে যায়, তা হলে ওষুধ তো খেতেই হবে। সঙ্গে পছন্দের প্রায় সব খাবারেই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাবে। তবে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, রোজকার খাবারে কিছু পরিবর্তন আনলেই পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই হার্টের যাবতীয় সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
বিরিয়ানি হোক বা পোলাও সঙ্গে মাটনের কোনো পদ ছাড়া জমে না। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, এ ধরনের 'লাল' মাংস খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাই খাসির বদলে মুরগির মাংস খাওয়া তুলনায় স্বাস্থ্যকর।
অনেক চেষ্টা করেও ভাজাভুজি খাবারের লোভ সামলাতে পারছেন না। এই অভ্যাসের ফলেই কিন্তু অজান্তেই বেশির ভাগ মানুষের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেড়ে চলেছে। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভাজার বদলে যদি বেকড খাবার খাওয়ার অভ্যাস করা যায়, তবে এই সমস্যা অনেকটাই ঠেকিয়ে রাখা যেতে পারে।
সকালের নাশতায় পাউরুটি খান অনেকেই। কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন, পাউরুটির ওপর মাখন দেওয়ার অভ্যাস ছাড়তে হবে। শুধু পাউরুটি খেতে যদি সমস্যা হয়, তবে ডিম ফেটিয়ে তার মধ্যে পাউরুটি ডুবিয়ে, তা বেক করে নিন। স্বাদ এবং স্বাস্থ্য দুই-ই থাকবে।
মন খারাপ হলে মাঝে মধ্যেই আইসক্রিম খেয়ে ফেলেন। তৎক্ষণাৎ মন ভালো করতে এই টোটকা সত্যিই কার্যকর। কিন্তু সমস্যা হলো আইসক্রিম খাওয়ার অভ্যাসে রক্তে বাড়তে থাকে কোলেস্টেরল। পরবর্তীতে যা হৃদরোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
গরমে তেষ্টা মেটাতে বার বার ঠাণ্ডা পানীয়তে চুমুক দিচ্ছেন। কিন্তু এ পানীয়ে থাকা কৃত্রিম শর্করা যে হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করছে, টের পেয়েছেন কী? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এই তেষ্টা মেটাতে এবং স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে নরম পানীয় না খেয়ে ফল থেকে তৈরি রস খেতে পারেন।
পাকিস্তানের প্রস্তাবিত হাইব্রিড মডেলে নয়, এশিয়া কাপ হবে একটি দেশে। আর সেটা শ্রীলংকা। পাকিস্তান তাতে অংশ না নিতে চাইলে তাদেরকে ছাড়াই হবে এশিয়া কাপ।
ভারতের তরফ থেকে পাকিস্তানকে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দা টেলিগ্রাফ।
বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহ যিনি এসিসিরও প্রেসিডেন্ট পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বলেছেন, শ্রীলংকায় এশিয়া কাপ খেলতে রাজি আছে ভারতসহ চার পূর্ণ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে এসিসির নির্বাহী সভায় আলোচনা করা হবে। পাকিস্তান রাজি না হলে ৫ দল নিয়েই হবে এশিয়া কাপ।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ম্যাচ অন্য কোনো দেশে আয়োজনে পিসিবি চেয়ারম্যান নাজমা শেঠির দাবিও নাকচ করে দিয়েছেন জয় শাহ। টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, পাকিস্তানকে ভারতেই খেলতে হবে, না হলে না খেলবে। এ বার্তা পিসিবি এবং আইসিসির দুই কর্মকর্তা যারা সম্প্রতি পাকিস্তান সফর করেন তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।
রিয়াল মাদ্রিদের সংগে ১৪ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলছেন। ৪০ কোটি ইউরো চুক্তিতে সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আলো ইত্তিহাদে যোগ দিচ্ছেন।
ক'দিন ধরে এমন কথা শোনা যাচ্ছিল করিম বেনজেমাকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন -এমন কথাও চাউর হয় স্পেনের সংবাদ মাধ্যমে।
কিন্তু সব কিছুতে জল ঢাললেন ব্যালন ডি অর জয়ী। স্পেনের গণমাধ্যম মার্কার দেয়া মার্কা লিজেন্ড এওয়ার্ড নিতে গিয়ে বললেন, 'আমি যখন রিয়ালেই আছি তখন ভবিষ্যৎ নিয়ে কেনো বলবো। ইন্টারনেটে যা প্রচার হচ্ছে তা ঠিক না। আমি এখানে ভালো আছি। শনিবার রিয়ালের ম্যাচ আছে, সব ফোকাস আমার সেই ম্যাচকে নিয়ে।'
ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে তাকে রিয়ালে আনার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেনজেমা বলেন, '২১ বছরের আমি এই ক্লাবে যোগ দিয়েছিলাম। এই ক্লাবে খেলার মতো আর কিছু হয় না, সান্তিয়াগো বার্নাবু দারুন এক জায়গা।'
রিয়ালের সংগে চুক্তির মেয়াদ এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেনজেমার।
পলিথিন বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, বিভিন্ন ধরনের পলিথিনজাত মিনিপ্যাকের উৎপাদন, ব্যবহার ও এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সবগুলোই সমস্যা। পলিথিন উৎপাদন ও এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে বাতাসে যেমন কার্বন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়, অন্যদিকে এর ব্যবহার প্রাণিকুল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত। প্লাস্টিকের কণা এখন মানুষের রক্তে, মায়ের দুধে, সামুদ্রিক মাছে। শুধু ব্যবহার সম্পর্কিত সমস্যা না, পলিথিনের মাধ্যমে সৃষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও বেশি সমস্যাসংকুল। কারণ এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, কৃষির উৎপাদনশীলতা কমে যাচ্ছে, শহরের নর্দমা বন্ধ করে দিচ্ছে তা আবার রোগ-ব্যাধি ছড়াচ্ছে, জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করছে এবং সবশেষে শহরকে বসবাসের অনুপযোগী করে দিচ্ছে।
এতসব সত্ত্বেও পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ না করা বা বন্ধ করতে না পারার সংকট কোথায় সেটা বুঝতে আমাদের সমস্যা হয়। পলিথিন বন্ধে আইন আছে, নানা ধরনের প্যাকেজিংয়ে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাও অনেক দিন হলো। অন্যদিকে বেশ কিছুদিন ধরে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু তা সহসাই হচ্ছে না। ‘সোনালি ব্যাগ’ নিয়ে অনেক ঢাকঢোল পেটানো হয়েছে কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সেই সোনালি স্বপ্ন কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে আসছে এতদিনে।
পলিথিনের ব্যবহার শহরাঞ্চলে সবচেয়ে বেশি যার অনেকটাই অভ্যাসগত কারণে। শহরের মানুষের পলিথিনের ওপর অভ্যস্ততা যেমন বেশি, তেমনি তারা ভুক্তভোগীও বেশি। রাস্তাঘাট, ড্রেন নোংরা হয়ে তো থাকেই, বাড়তি পাওনা দুর্গন্ধ, তৈরি হয় জলজট ও ডেঙ্গুর মতো রোগবালাই। বাসাবাড়িতে পলিথিনের ব্যবহার তো আছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য, বেকারিজাত পণ্যের পলিথিনের ব্যবহার ও পলিথিনের মোড়ক যত্রতত্র নিক্ষেপই এই অবস্থার জন্য দায়ী। শুধু ঢাকা নয় অন্যান্য ছোট-বড় সব শহরে প্রায় একই অবস্থা। আর এগুলোই হচ্ছে পলিথিন নির্ভর অর্থনীতির অনুষঙ্গ কিন্তু এর অনর্থনীতি হচ্ছে পলিথিনের কারণে পরিবেশদূষণ ও জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি। সাধারণভাবে পলিথিন ব্যবহারের ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক মূল্যমান নির্ধারণ করা হয় না। তবে দূষণের মাত্রা এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে তাতে পলিথিনের অর্থনীতির থেকে এর ক্ষয়ক্ষতির অর্থনীতি যে অনেক বড় তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আসছে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম অনুঘটক হচ্ছে পরিবেশ দূষণ। অর্থমন্ত্রী তার এবারের বাজেট (২০২৩-২৪) বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন উভয় ক্ষেত্রে উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছেন, পরিবেশ সংরক্ষণে পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ এর উল্লেখ করেছেন কিন্তু পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে দৃশ্যমান কোনো রূপকল্প এবারের বাজেটে উল্লেখ করতে সমর্থ হননি। এবারের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে শামিল হই সকলে’। গত বছরের এই দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘একটাই পৃথিবী’। পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের যত্রতত্র ব্যবহার আমাদের এই একমাত্র পৃথিবীকে দূষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে আইন হয়েছে ২০০২-এ এবং আজ ২০২৩ সাল, এই দীর্ঘ ২১ বছরেও এই আইনের বাস্তবায়ন করা যায়নি। যদিও এবারের বাজেট বক্তৃতায় প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার এর মূল্য সংযোজন কর বৃদ্ধি করে ৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানে পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্ল্যাস্টিক সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। ধরেই নেওয়া যায় শুল্ক বৃদ্ধির এই হার কোনোভাবে পলিথিন নিরুৎসাহিত করার জায়গা থেকে না বরঞ্চ কিছুটা বাড়তি কর আদায়ের চিন্তা থেকে।
পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি সস্তা পলিথিনের ব্যবহার টেকসই ভোগের ধারণার জন্যও কোনোভাবে সহায়ক না। বরঞ্চ এটা এমন এক ধরনের মনস্তত্ত্ব তৈরি করে যা শুধু পরিবেশকেই ধ্বংস করে। যদিও বিশ্বব্যাপী টেকসই ভোগের ধারণার ওপর ভিত্তি করে এখন ‘সার্কুলার অর্থনীতির’ ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। সার্কুলার অর্থনীতি শুধু অপচয় কমায় না, প্রাকৃতিক সম্পদের সুরক্ষা, দূষণরোধ, বর্জ্য থেকে তৈরি পরিবেশদূষণ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। তাই পরিবেশগত ঝুঁকি, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের অর্থনীতিকে সার্কুলার অর্থনীতিতে রূপান্তরের জন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলা এবং এ সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট ২০৩০ সমূহ অর্জনে সার্কুলার অর্থনীতি অন্যতম হাতিয়ার।
সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা শহরে রাস্তায় কোনো পেট বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায় না। এর কারণ হচ্ছে এখন পেট বোতলের প্রায় শতভাগ রিসাইকেল করা হয় এবং পেট বোতল সংগ্রহের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে হলেও একটি সংগ্রহ-লাইন তৈরি হয়েছে। কিন্তু পলিথিনের ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যায় না। তবে পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার সার্কুলার ইকোনমির ধারণার সঙ্গেও একেবারে মানানসই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রযুক্তিগতভাবে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন রিসাইকেল করা অসম্ভব না হলেও এটি একটি জটিল এবং অর্থনৈতিকভাবে ব্যয়বহুল যে কারণে পেট বোতলের মতো রাস্তা থেকে পলিথিন সংগ্রহ করতে কাউকে দেখা যায় না উলটো রাস্তাঘাটে এখানে সেখানে পলিথিন পড়ে থাকে।
পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের অনর্থনীতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখন প্রথম দরকার এর ব্যবহার বন্ধ করা, এর ব্যবহারকে অনেক বেশি দামি করে ফেলতে হবে আর এর প্রতিফলন থাকতে হবে বাজেটে। দ্বিতীয়ত, সার্কুলার অর্থনৈতিক চর্চার উৎসাহিত করার জন্য পরিকল্পনা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি, পলিথিনের বিকল্প সোনালি ব্যাগের মতো উদ্যোগগুলোকে সরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ ও বেসরকারি পর্যায় থেকে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় উৎসাহ ও প্রণোদনা প্রদান করতে হবে। সরকার প্রতি বছর বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবেশ দিবস পালন করে কিন্তু দিবস পালন শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলেই হবে না এর উদ্যোগ কতটুকু বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে তার ওপরও নজর দিতে হবে। তা নাহলে পলিথিনের অর্থনীতির নামে শুধু অনর্থনীতিকে বাড়িয়ে তোলা হবে, আর সেটা হবে টেকসই অর্থনীতি তৈরির সম্ভাবনার অপমৃত্যু।
লেখক : উন্নয়নকর্মী ও কলামিস্ট
গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। এমন অবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না কেউ। তাই বলে গরমের ভয়ে ঘরে বসে থাকলে তো আর জীবন চলবে না। শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যেতে হবে। আর কর্মজীবীদের অফিস ও অন্যান্য কর্মস্থলে। অনেকেরই এই গরমেও কাজের প্রয়োজনে সারাদিন কেটে যায় বাইরে ঘুরে ঘুরেই। গরমকে মোকাবিলা করতে সঙ্গে এই প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো রাখলেই গরমের কাছে নিজেকে হার মানতে হবে না।
পানি পান
গরমের সময় শরীর থেকে স্বাভাবিক ভাবে অনেক বেশি ঘাম বের হয়ে থাকে। যার ফলে দেখা দিতে পারে পানি শূন্যতা। শরীরের মধ্যে যদি পানির পরিমাণ কমে যায় তাহলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। পানি শূন্যতা দূর করতে হলে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে।
বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার পাশাপাশি ফলের জুস কিংবা কচি ডাবের পানি খেতে পারেন। দেহের ত্বককে ভালো রাখতে পানি, শরবত বা জুস পানের বিকল্প নেই। গরমে সময় প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার বিশুদ্ধ পানি খেলে ডিহাইড্রেশন এবং পানি শূণ্যতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
খাবার স্যালাইন
গরমের সময় ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ বের হতে থাকে যার ফলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে যায়। এ থেকে মুক্তি পেতে খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। বিকেল বেলা খাবার স্যালাইন খেলে অতিরিক্ত গরমেও শরীরে সতেজতা ফিরে আসে। আবার অনেকেই স্বাদযুক্ত স্যালাইন খান যেমন, টেস্টি স্যালাইন। ভুল করেও এসব খাবেন না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হলো ওরস্যালাইন । তবে আপনাদের মধ্যে যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তারা খাবার স্যালাইন খাওয়ার আগে ভালো কোনো ডাক্তারের মতামত নেওয়া উচিত।
রেড মিট পরিহার করুন
অতিরিক্ত গরমের সময় গরু-ছাগলের মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ গরমের সময় বা অতিরিক্ত গরমের সময় গরুর মাংস খেলে শরীরের তাপমাত্রা অনেকাংশে বেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গরু-ছাগলের মাংস ছেড়ে মাছ খেতে পারেন। আর অতিরিক্ত গরমে অবশ্যই অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন।
সবুজ শাক সবজি
গরমের সময় শরীরকে সুস্থ রাখতে বেশি বেশি করে সবুজ শাক সবজি খেতে পারেন। সবুজ শাক সবজিতে অধিক পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল এবং খনিজ উপাদান থাকে। এতে করে অতিরিক্ত গরমেও শরীর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।তাছাড়াও খেতে পারেন তরমুজ যা শরীরে এনার্জি দিতে পারে।
টক জাতীয় ফল
প্রচুর গরমে সুস্থ থাকার উপায় হিসেবে টক জাতীয় ফল খেতে পারেন। যেমন: কামরাঙ্গা, লেবু, তেতুল, আমরা ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে অতিরিক্ত টক ফল খাওয়া ঠিক নয়। যদি কারো এসিডিটির সমস্যা থেকে থাকে তবে টক জাতীয় ফল খাওয়া হতে বিরত থাকুন। টক জাতীয় ফল খালি পেটে খাওয়া যাবে না। এতে করে আরো বেশী অসুস্থ হয়ে পারতে পাবেন।
টক দই
অতিরিক্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে টক দই খেতে পারেন। যারা করা রোদে কাজ করেন বিশেষ করে তাদের জন্য অনেক উপকারী হলো টক দই। রোদের প্রচুর তাপ থেকে শরীরকে কিছুটা হলেও রক্ষা করবে টক দই। টক দই শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে অনেকাংশে সাহায্য করে।
প্রতিদিন গোসল করুন
গরমের সময় প্রতিদিন এক বার করে হলেও গোসল করতে হবে। যদি পারেন তবে দিনে ২ বার গোসল করতে পারেন। গোসল করার ক্ষেত্রে একটু সাবধান থাকতে হবে। বাহির থেকে এসে সাথে সাথে গোসল করতে যাবেন না। একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল করতে যাবেন। কারণ হঠাৎ করে গরম থেকে এসে গোসল করলে ঠাণ্ডা লাগতে পারে।
ঘরেই অবস্থান করুন
অতিরিক্ত গরমে বিশেষ কোনো প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বাহিরে যাবেন না । যদিও বিভিন্ন কারণে বাহিরে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে রোদ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার করতে পারেন। যতটুকু সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করুন।
শারীরিক পরিশ্রম কম করুন
গরমের সময় অনেকেই আছে অতিরিক্ত ব্যায়াম করে থাকেন এমনটি করা যাবে না কারণ অতিরিক্ত গরমে শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি হয়ে থাকে।
পাতলা সুতি কাপড় পরিধান করা
গরমের সময় পাতলা সুতি কাপড় পরা দরকার। কারণ সাদা কাপড় তাপ শোষণ করতে পারে না বরং তাপের প্রতিফলন ঘটায় ও গরম কম লাগে।
পারফিউম ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
অতিরিক্ত গরমে ঘামের গন্ধ থেকে বেচে থাকার জন্য অনেকেই সুগন্ধি ব্যবহার করে থাকে। তবে অতিরিক্ত গরমে পারফিউম ব্যবহার না করাটাই উত্তম কাজ। কারণ, পারফিউম গরম লাগা বৃদ্ধি করে দেয়।
যদিও ব্যবহার করতে হয় তাহলে হালকা গন্ধের সুগন্ধি ব্যবহার করতে পাবেন। বাজারে কিছু সুগন্ধি পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করলে ঠাণ্ডা লাগে। সেগুলো ব্যবহার করলে আরো ভালো হয়।
ধূমপান পরিত্যাগ করা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা কিনা ধূমপান করে থাকি। ধূমপান করলে শরীরের তাপমাত্রা তুলনামূলক ভাবে বেড়ে যায়। তাই প্রচন্ত গরমে সুস্থ থাকতে হলে ধূমপান পরিত্যাগ করতে হবে। যদিও এই অভ্যাসটি সহজে পরিত্যাগ করা যায় না। তাই যতটুকু পারেন ধূমপান কম করার চেষ্টা করুন।
চা কফি পরিত্যাগ করুন
চা, কফি বা অ্যালকোহল খেলে শরীরের তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। আর যদি অতিরিক্ত গরমে চা, কফি বা অ্যালকোহল খেয়ে থাকেন তাহলে শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাবে যার ফলে হতে পারে হিটস্ট্রোক। তাই গরমের সময় চা কফি বা অ্যালকোহল খাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে।
শান্ত থাকুন
মন মেজাজ গরম থাকলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। রাগের কারণে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং অতিরিক্ত গরমের ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় আর দুই তাপমাত্রা এক সঙ্গে হলে কি অবস্থা হতে পারে একবার হলেও সেটা ভেবে দেখবেন।
বিশেষজ্ঞরা অতিরিক্ত গরমে শান্ত থাকার জন্য মতামত দিয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য শান্ত থাকাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।