
সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থেকে লাখো নাগরিকের তথ্য ফাঁস হওয়া নিয়ে আলোচনার মধ্যেই আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেন, ‘গত তিন দিনে সিআইআইয়ের (স্পর্শকাতর তথ্য অবকাঠামোর) মধ্যে আরও তিনটি প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি।’ গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন কথা বলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পাঁচ কোটি বার্থ রেজিস্ট্রেশন, ডেথ রেজিস্ট্রেশন কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র চুরি হয়েছে বলে যে ধরনের প্রচার হচ্ছে এটা সত্য না। নাম, জন্মতারিখ, ফোন নম্বর এই তথ্যগুলোতে কোনো আক্রমণ হয়নি, কোনো ধরনের তথ্য চুরি যায়নি। আমাদের প্রযুক্তিগত দুর্বলতার কারণে বার্থ এবং ডেথ রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম থেকে যেই অ্যাপ্লিকেশন পোর্টাল আছে, সেখানকার তথ্য দেখা যাচ্ছিল। এ দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে।’
তথ্য ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পর প্রযুক্তিগত কোনো দুর্বলতা আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘আমাদের যে ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সি ঘোষিত ২৯টি ক্রিটিক্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার আছে তাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বসেছিলাম এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং গোয়েন্দা সংস্থা সবাইকে নিয়ে বসে তাদের কাছে যত ধরনের তথ্য-উপাত্ত আছে এবং যত ধরনের সমস্যা চিহ্নিত করা গেছে সেগুলো নিয়ে আমরা প্রায় দীর্ঘ তিন ঘণ্টা বৈঠক করেছি। সেই বৈঠক শেষে আমরা দুটো কমিটি করে দিয়েছি। কমিটি এ ধরনের তথ্য ফাঁসের জন্য আমাদের প্রযুক্তিগত কী দুর্বলতা ছিল সেটা চিহ্নিত করবে।’
কোনো ব্যক্তিপর্যায়ে দায়িত্বে অবহেলা থেকে থাকলে তা চিহ্নিত করে এ ধরনের ঘটনা আগামীতে যাতে না ঘটে তার জন্য প্রযুক্তিগত সক্ষমতা, ব্যক্তিগত দক্ষতা এবং দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত করার জন্য কী কী করণীয় তা ওই দুই কমিটি জানাবে বলে জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম থেকেও কমিটিতে প্রতিনিধি দেওয়া হয়েছে, গোয়েন্দা পুলিশ ও পাশাপাশি আমাদের আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিনিধি দেওয়া হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। ১০ দিনের মধ্যে আমরা উচ্চপর্যায়ে একটা রিপোর্ট পেশ করব এবং প্রেস মিডিয়ার কাছেও আমরা একটা সামারি আকারে তুলে ধরব। কেন কীভাবে কী হয়েছিল।’
বিষয়টি ধরিয়ে দেওয়ার জন্য মারকোপাওলোসকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভিক্টর মারকোপাওলোকে ধন্যবাদ দিই, উনি এটা দেখেছেন, জানিয়েছেন। উনি একজন গবেষক। আমরা ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলেছি। আমরা ওনাকে অফিশিয়ালি ধন্যবাদ জানাতে চাই।’ তবে বিষয়টি আলোচনায় আসার আগে মারকোপাওলোর কাছ থেকে কোনো ইমেইল পাননি বলে দাবি করেন জুনাইদ আহমেদ পলক।
এনআইডির কোনো তথ্য ফাঁস হয়েছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ন্যাশনাল আইডির যে ডেটাবেজ সেটি একদমই সুরক্ষিত ও অক্ষত এবং জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের যে তথ্য সেখান থেকেও এমন কোনো তথ্য যায়নি। প্রাথমিকভাবে আমরা পেয়েছি, নতুন নিবন্ধন কিংবা সংশোধনের বিভিন্ন যেখানে আবেদন হয়, সেখান থেকে আবেদনপত্রগুলো যেখানে সংরক্ষিত থাকে, সেখানে ডেটাগুলো খুব সহজেই পাওয়া যাচ্ছিল। আমাদের ডেটাবেজ থেকে কোনো তথ্য চুরি যায়নি। আমাদের বিশেষজ্ঞরা লিখিত যে তথ্য আমাকে দিয়েছেন, সেখানে এনআইডির কোনো তথ্য চুরি হয়েছে বলে প্রমাণ পায়নি। বার্থ ও ডেথ রেজিস্ট্রেশন থেকে পাঁচ কোটি তথ্য চলে গেছে এমনও পাইনি।’
দুর্বলতার দায় কে নেবে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কমিটি করে দিয়েছি, এ ধরনের ভুলের জন্য কারা কারা দায়ী এবং ভবিষ্যতে যেন এমন না হয় এসব বিষয় প্রতিবেদনে যেন থাকে সে বিষয়ে কমিটিকে বলা হয়েছে।’
নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তার জায়গায় এমন কোনো হুমকি হয়নি। তবে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অবশ্যই ঝুঁকি আছে। কেননা ভবিষ্যতে সে কোনো ধরনের সাইবার ক্রাইম করতে পারে। এখন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কোনো অপরাধী ডার্ক ওয়েবে বিক্রি করে দিয়েছে এমনও আমরা পায়নি। আমরা খুঁজছি ডার্ক ওয়েবে এমন কোনো অকশন হয় কি না। আমরা সার্চ করছি। এমন হলে আমরা জানাব।’
মোট জনসংখ্যার ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ ইটিআইএন গ্রহণ করেছে। গত করবর্ষে ইটিআইএন থাকার পরও মোট করদাতার ৬১ দশমিক ১১ শতাংশ নিয়মিত রিটার্ন জমা দেয়নি। যারা রিটার্ন জমা দেয়নি তাদের অর্ধেকের বেশি প্রায় ৬৫ শতাংশই আয় ও সম্পদের তথ্য গোপন করে নিজেদের করযোগ্য আয় নেই, এমন দাবি করেছে। এর মধ্যে (৬৫ শতাংশ) ইটিআইএন নেওয়ার পর একবারের জন্যও রিটার্ন জমা দেয়নি এমন করদাতার সংখ্যা গড়ে ২৫ শতাংশ। বাকিরা গত করবর্ষে রিটার্ন জমা না দিলেও এর আগে সরকারি-বেসরকারি কাজ করতে অনিয়মিতভাবে রিটার্ন জমা দিয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তৈরি প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের শুরুতেই অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআরের কাছে চিঠি পাঠিয়ে কারা রিটার্ন জমা দেয়নি তাদের চিহ্নিত করতে নির্দেশ দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ সামনে রেখে এরই মধ্যে প্রতিটি কর অঞ্চল নিজেদের কর্মকর্তাদের নিয়ে পৃথক টাস্কফোর্স গঠন করেছে। টাস্কফোর্সের কর্মকর্তারা চলতি সপ্তাহ থেকেই ইটিআইএনের সঙ্গে রিটার্ন জমার তথ্য মিলিয়ে দেখবে। কোনো করদাতা রিটার্ন জমা না দিলে তার আয়-ব্যয় ও সম্পদের তথ্যের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। করযোগ্য আয় থাকার পরও রিটার্ন জমা না দিলে সংশ্লিষ্ট করদাতাকে রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হবে। হিসাব কষে বের করা হবে করদাতা ইটিআইএন গ্রহণের পর থেকে কত করবর্ষ রিটার্ন জমা দেয়নি। এরপর জরিমানাসহ বকেয়া কর পরিশোধ করে রিটার্ন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে। একই সঙ্গে রিটার্ন জমা না দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হবে।
রিটার্নে বড় ধরনের তথ্য গোপন করার প্রমাণ পাওয়া গেলে আরও বিস্তারিত তদন্তের জন্য এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা শাখা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি)-এ ফাইল পাঠানো হবে। এখানে তথ্য গোপনের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পর রাজস্ব ফাঁকিবাজ করদাতার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। তার পরিবারের সদস্যদের রিটার্নের তথ্যও খতিয়ে দেখা হবে। কর এজেন্ট নিয়োগের পর রিটার্নের তথ্য খতিয়ে দেখতে তাদের সহায়তা নেওয়া হবে। তবে কোনো করদাতা কোনোভাবেই রিটার্ন জমা না দিলে তার কর সার্কেল থেকে রিটার্ন ফাইল খুলে দেওয়া হবে। এরপর বকেয়া ও নিয়মিত কর আদায়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট করদাতার হিসাব জব্দ করা হবে। আভিজাত্যপূর্ণ এলাকার বাড়ি, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট এবং বিলাসবহুল গাড়ির মালিকদের রিটার্ন জমার তথ্য টাস্কফোর্সের কর্মকর্তারা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।
এনবিআর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, এখনো এনবিআরের লোকবলের স্বল্পতা রয়েছে। এছাড়া এনবিআরের প্রযুক্তিগত সক্ষমতাও পুরোপুরি হয়নি। তাই সব করদাতার ইটিআইএন ধরে রিটার্ন জমা দিয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা বেশ কঠিন হবে। তবে সীমিত আকারেও যদি এনবিআর তথ্য গোপন করে রিটার্ন জমা দেয়নি এমন করদাতা বের করে শাস্তির আওতায় আনতে পারে তবে অন্যরা এনবিআরের নজরে পড়ার ভয়ে নিয়মিত কর পরিশোধ করে রিটার্ন জমা দিতে এগিয়ে আসবে।
এনবিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে মোট ইটিআইএন ধারীর সংখ্যা ৯০ লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে গত করবর্ষে রিটার্ন জমা দিয়েছে প্রায় ৫৫ লাখ করদাতা।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে জানা যায়, যারা ইটিআইএন নেওয়ার পরও রিটার্ন জমা দেয়নি তাদের রিটার্ন খতিয়ে দেখা গিয়েছে, অনেকে স্ত্রী, সন্তান বা পরিচিতজনের নামে ব্যবসা এবংস্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ করেছে। ব্যবসা থেকে আয় করা অর্থ এসব ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণেই ব্যয় করা হয়েছে। একইভাবে ব্যাংকের হিসাবও এদের নির্দেশেই পরিচালিত হয়েছে। অন্যের নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে অনেকে অর্থপাচারের মতো জঘন্য কাজ করেছে। এনবিআরের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা কম থাকায় এসব ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা বেশিরভাগ সময়ই সম্ভব হয় না।
ইটিআইএন নিয়ে করযোগ্য আয় থাকার পরও রিটার্ন জমা দেয়নি এমন করদাতাদের অনেকে উপজেলা পর্যায়ে বসবাস করে। এরা বছরের পর বছর রিটার্ন জমা না দিয়েও এনবিআরের নজরদারির বাইরেই থাকছে। চলতি অর্থবছরে উপজেলা পর্যায়ে নতুন করে ১৫টির বেশি রাজস্ব দপ্তর স্থাপন করতে করযোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এনবিআরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, মোটা দাগে সব ইটিআইএনধারীর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক এবং নিয়মমাফিক রিটার্ন জমা না দিলে আর্থিক জরিমানার বিধান রয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি করযোগ্য আয় থাকা সত্ত্বেও রিটার্ন জমা না দেন তাহলে সংশ্লিষ্ট কর কর্মকর্তা আয়কর অধ্যাদেশের ৮৪ ধারা অনুযায়ী কর নির্ধারণ করে কর নথি চালু করতে পারেন। করযোগ্য আয় থাকা সত্ত্বেও রিটার্ন জমা না দিলে আয়কর আইন অনুযায়ী জরিমানা, সরল সুদ ও বিলম্ব সুদ আরোপের বিধান রয়েছে।
এর মধ্যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে আয়কর অধ্যাদেশের অনুযায়ী জরিমানা, অতিরিক্ত সরল সুদ এবং বিলম্ব সুদ দিতে হবে। আয়কর অধ্যাদেশে বলা আছে, করদাতা যদি কোনো কারণ ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন দাখিল না করেন, আবার এজন্য অনুমোদনও না নেন, সেজন্য তার পূর্ববর্তী বছর প্রদেয় করের ১০ শতাংশ অর্থ জরিমানা হবে। সেই সঙ্গে যতদিন দেরি হবে, প্রতিদিনের জন্য বাড়তি মাশুল গুনতে হবে। দেরিতে রিটার্ন জমা দিলেও ৪ শতাংশ বিলম্ব সুদ দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবছরে এনবিআরকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অঙ্কের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি আদায় করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রোগীর ভর্তির নতুন রেকর্ড হয়েছে। এ সময় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৮৯ জন রোগী। এ নিয়ে গত তিন দিন ধরে টানা সর্বোচ্চ রোগী ভর্তির রেকর্ড হচ্ছে। এর আগে গত রবিবার ভর্তি হয়েছিল ৮৩৬ ও তার আগের দিন গত শনিবার ৮২০ জন রোগী।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে তিনজন মারা গেছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত এ বছর মারা গেল ৭৬ জন। এর মধ্যে ঢাকার মারা গেছে ৫৯ জন। বাকিরা ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে মারা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৫৭৪ ঢাকার ও ৩১৫ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে ৩ হাজার ২৫৩ জন রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে ঢাকাতেই ২ হাজার ৮০ জন। বাকি ১ হাজার ১৭৩ জন ঢাকার বাইরে অন্য বিভাগে। এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৮৪৩ জন রোগী ভর্তি হলো। গতকালই প্রথম ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৩ হাজারের ঘরে পৌঁছেছে।
বাংলা কবিতায় আল মাহমুদ যে শক্তি নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন, তা রীতিমতো বিস্ময়-জাগানিয়া। রবীন্দ্রবলয় ভেঙে তিরিশের কবিরা বাংলা কবিতার মাস্তুল পশ্চিমের দিকে ঘুরিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন, আল মাহমুদ আধুনিক বাংলা কবিতাকে বাংলার ঐতিহ্যে প্রোথিত করেছেন মৌলিক কাব্যভাষার সহযোগে তার সহযাত্রী শামসুর রাহমান, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখের তুলনায় এইখানে তিনি ব্যতিক্রমী ও প্রাগ্রসর, বাংলাদেশের সোনালি সংস্কৃতি-পানকৌড়ির রক্তমাখা।
আল মাহমুদ মাটিঘেঁষা অনুভূতিতে নিজের অভিজ্ঞতাজাত গ্রামীণ শব্দপুঞ্জ, উপমা-উৎপ্রেক্ষা এবং চিত্রকল্প সংশ্লেষ করে আধুনিক বাংলা কবিতার নতুন দিগন্তরেখা টেনেছিলেন। একই সঙ্গে তিনি কথাসাহিত্যে তার মৌলিকশৈলীর স্বাক্ষর রেখেছেন।
আল মাহমুদ মানেই তো আমার মায়ের সোনার নোলক হারিয়ে যাওয়ার গল্প দিয়ে কবিতার শুরু আল মাহমুদ মানেই তো ‘কবিতা মানে; চুলখোলা আয়েশা আক্তার’ কিংবা ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ দুপুরবেলায় অক্ত/ বৃষ্টি নামে বৃষ্টি কোথায় বরকতের রক্ত/ হাজার যুগের সূর্যতাপে জ¦লবে এমন লাল যে, সেই লোহিতেই লাল হয়েছে কৃষ্ণচূড়ার ডাল যে...
আল মাহমুদের প্রেমের কবিতার জুড়ি মেলা ভার “আমার ঘরের পাশে ফেটেছে কি কার্পাশের ফল?/ গলায় গৃঞ্জার মালা পরো বালা, প্রাণের শবরী,/ কোথায় রেখেছো বলো মহুয়ার মাটির বোতল/ নিয়ে এসো চন্দ্রালোকে তৃপ্ত হয়ে আচমন করি।/ ব্যাধের আদিম সাজে কে বলে যে তোমাকে চিনবো না/ নিষাদ কি কোনদিন পক্ষিণীর গোত্র ভুল করে?” এমন শব্দ জাদুময়তার ভেতর দিয়ে আল মাহমুদ তার পাঠকদের চমকিত করে গেছেন গত পঞ্চাশ বছর ধরে। ‘সোনার দিনার নেই, দেনমোহর চেয়ো না হরিণী’র ‘সোনালী কাবিন’ আল মাহমুদকে এনে দিয়েছে তুমুল কবিখ্যাতি। আল মাহমুদের কবিতা ভিন্ন বাঁক নেয় মূলত ‘মায়াবি পর্দা দুলে ওঠো’র ভেতর দিয়ে। আল মাহমুদের আদর্শগত চেতনারও পরিবর্তন হয় এ সময়। ‘মায়াবি পর্দা দুলে ওঠো’ ও ‘আমি, দূরগামী’তে তিনি মোহামেডানিজম বা ইসলামের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত হয়ে পড়েন। সেই চেতনারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে এ কাব্যে। পরবর্তীকালে ‘প্রহরান্তের পাশ ফেরা’, ‘আরব্য রজনীর রাজহাঁস’, ‘বখতিয়ারের ঘোড়া’ প্রভৃতি কাব্যেও তিনি এ চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটান।
১৯৭১-এ বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের পর তিনি দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। নব্বই দশক থেকে ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে ইসলামের অনুবর্তী হয়ে তিনি দেশের প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীমহলের তীব্র সমালোচনা সহ্য করছেন, মৃত্যুর পরও করছেন।
তবে কী করে অস্বীকার করা যাবে তার কবিতায়-কবিতায় হরফে হরফ ঘষে জ¦ালিয়ে-রাখা তার প্রাণের, প্রেমের, এমনকি সংগ্রামের আগুন, যা আমাদের পরিচিত জনপদের ইতিহাসেই জ¦লতে থাকে, কেবল জ¦লতে থাকে। তার অসাধারণ নান্দনিক গুণসমৃদ্ধ, অতি পরিচিত, মুখে-মুখে-ফেরা কবিতাগুলোর বাইরে গিয়েও তার অনন্য কবিতা বাংলা কবিতার পাঠক ভুলবে না ধ্বংস যদি করবে তবে, শোনো, তুফান/ ধ্বংস করো বিভেদকারী পরগাছাদের;/ পরের শ্রমে গড়ছে যারা মস্ত দালান/ বাড়তি তাদের বাহাদুরী গুঁড়িয়ে ফ্যালো// (বোশেখ, সোনালি কাবিন)
স্পন্দমান আবেগের ভূগোল, দেশজ চেতনা, লোককাহিনি ও ঐতিহাসিক ঘটনাবলির সৌন্দর্যে আপ্লুত আল মাহমুদ একজন মিথলজিক্যাল রোমান্টিক কবি। যেমন তিনি তার শ্রেষ্ঠ কবিতাকর্ম ‘সোনালী কাবিন’-এ মাতৃভূমির ইতিহাস খনন করে তুলে এনেছেন ঐশ্বর্যময় ও বীর্যবান অনুষঙ্গসমূহ। তিনি এখানে শক্তিমত্তার সঙ্গে রোমান্টিসজম প্রবেশ করিয়েছেন যা ‘সোনালী কাবিন’ সনেট গুচ্ছকে করেছে মহিমান্বিত।
“সোনার দিনার নেই, দেন মোহর চেয়ো না হরিণী/ যদি নাও, দিতে পারি কাবিনহীন হাত দুটি/
আত্মবিক্রয়ের স্বর্ণ কোনকালে সঞ্চয় করিনি/ আহত বিক্ষত করে চারদিকে চতুর ভ্রুকুটি;/ ছলনা জানি না বলে আর কোন ব্যবসা শিখিনি।”// ‘সোনালী কাবিন’ সনেটগুচ্ছে কবি উপমা-রূপকের চর্চার কুশলতার যে নিদর্শন রেখেছেন, আমাদের কবিতার ক্ষেত্রে তা নতুন এবং আন্তরিক সততায় উজ্জ্বল। গ্রামের মাটি থেকে বিচিত্র আকুল আগ্রহকে কবি উন্মোচন করেছেন, নদীর চরের প্রতি কৃষাণীর পতির অধিকার প্রতিষ্ঠার রূপকল্পে প্রমাণিত হয়েছে নারীর প্রতি পুরুষের আকাক্সক্ষার ক্ষুধার্ত নদীর উপমায় নর-নারীর কামনার চিত্র ফুটে উঠেছে। এই তো আমাদের আল মাহমুদ এবং তার গ্রামীণ প্রান্তরের উপঢৌকন যেখানে যৌনতার আন্তরিক অভিব্যক্তি ঘটেছে “ক্ষুধার্ত নদীর মতো তীব্র দুটি জলের আওয়াজ/ তুলে মিশে যাই চলো অকর্ষিত উপত্যকায়।”
বাংলাদেশের কবিতার মেজাজ ও মন বুঝতে হলে আল মাহমুদের কবিতার দরজায় কড়া নাড়তেই হবে। কামের প্রকাশে আল মাহমুদ প্রেমিক “তারপর তুলতে চাও কামের প্রসঙ্গ যদি নারী/ খেতের আড়ালে এসে নগ্ন করো যৌবন জরদ/ শস্যের সপক্ষে থেকে যতটুকু অনুরাগ পারি/ তারো বেশী ঢেলে দেবো আন্তরিক রতির দরদ।” (সনেট ১০)
একজন কবির বড়ত্ব তার কাব্যভাষা, চিত্রকল্প এবং ছন্দের নতুনত্বে। আল মাহমুদের বড়ত্ব তার নিজস্ব বাকরীতি প্রবর্তনে এবং অদ্ভুত সুন্দর চিত্রকল্প নির্মাণে। সৌন্দর্য বিভায় উদ্ভাসিত তার কবি হৃদয় সর্বদা সুন্দরের পূজারি। তিনি তার কাব্যে বহু বিচিত্র বিষয়ের চিত্রকল্প নির্মাণ করেছেন আল মাহমুদের নারী অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক, কামোদ্দীপক ও সৌন্দর্যময়; মাটি তার কাছে সেই নারী যে জলসিক্ত সুখদ লজ্জায় নিজেকে উদাম করে। তিনি শুনতে পান মেঘনার জলের কামড়ে ফসলের আদিগন্ত সবুজ চিৎকার। অভাবের অজগর তার টোটেম। যে কিসিমে শিষ্ট ঢেউয়ের পাল রাতের নদীতে ভাসা পানকৌড়ি পাখির ছতরে ছলছল ভাঙে সে কিসিমেই তিনি তার বানুর গতরে ঢালেন চুমো। আল মাহমুদ নারী স্তনের সৌন্দর্য কল্পনা করেন, ‘শঙ্খমাজা স্তন দুটি মনে হবে শ্বেতপদ্ম কলি’ (সিম্ফোনি : লোক লোকান্তর) কিংবা মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো তে তিনি লেখেন ‘তার দুটি মাংসের গোলাপ থেকে নুনের হাল্কা গন্ধ আমার’। যৌনতাকে আল মাহমুদ কবিতায় প্রতীকের মতো জঘন, গহরফলক, উষ্ণ কালসাপ, নরম গুল্মের কৃষ্ণ সানুদেশ, চরের মাটির মতো শরীরের ভাঁজ, ত্রিকোণ কর্দম, গূঢ় রাত, ত্রিকোণ মৃণ¥য়ী, মূত্রভেজা যোনির দেয়াল, যৌবন জরদ এমন সব দারুণ উপমায় সুশোভিত করেছেন।
যৌনতায়, ভালোবাসায় জীবনচর্চায়, বাংলা কবিতার পাঠককে তাই আল মাহমুদকে না পড়ে উপায় নেই। জন্মদিনে কবি আল মাহমুদের প্রতি তাই সেই ভালোবাসারই খণ্ডাংশ, যা তিনি জীবদ্দশায় পেয়েছেন। কীভাকে একজন কবি শুধু তার কবিতার জন্য কতদূর প্রেম পেতে পারেন, একজন কবি কত অনায়াসে ম্যাজিক তৈরি করতে পারেন, একজন কবি কত সহজে তার কৌমসমাজকে স্পষ্ট করতে পারেন একটি মাত্র জীবদ্দশায়, তাকে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। বাংলা কবিতার যে পাঠক-লেখকরা তাকে জীবনে পড়েছেন ও দেখেছেন, সাহচর্য পেয়েছেন তারা ভাগ্যবান, ভাবতে ভালো লাগে তাদের একজন হিসেবে আমারও আছে সেই শ্লাঘা।
লেখক : কবি ও সাংবাদিক
আগামীকাল বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি। এ কর্মসূচি থেকে এক দফার ঘোষণা আসবে বলে জানিয়েছেন নেতারা। এরপর চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রথম ধাপের কর্মসূচির অংশ হিসেবে পদযাত্রার কথা ঘোষণা করা হবে।
গতকাল সোমবার বিএনপি নেতারা দেশ রূপান্তরকে এ কথা জানিয়েছেন। তারা বলেন, বুধবার সমাবেশ থেকে চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা হবে। প্রথম কর্মসূচি হতে পারে ১৫ জুলাইয়ের পদযাত্রা। এরপর সমাবেশ, মানববন্ধন প্রভৃতি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি আসবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সমাবেশ থেকে আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করব। সরকারবিরোধী যেসব রাজনৈতিক দল আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করছে তাদের লিয়াজোঁ কমিটির নেতাদের সঙ্গে আমাদের লিয়াজোঁ কমিটির নেতারা বৈঠক করছেন। তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে। এরপর কর্মসূচি সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে। অন্য দলগুলো একই দিনে তাদের সুবিধামতো সময়ে কর্মসূচি ঘোষণা করবে।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বিএনপি সমাবেশ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করবে। আর আমরা যারা ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারবিরোধী কর্মসূচি পালন করছি তারা পৃথকভাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচি ঘোষণা করব। বিএনপির ২২ জুলাই পর্যন্ত বিভাগীয় সমাবেশ রয়েছে। আর আমাদের পদযাত্রা কর্মসূচি রয়েছে। এরই ফাঁকে প্রথম কর্মসূচি পালন করব। ২২ জুলাইয়ের পর জোরেশোরে কর্মসূচি পালিত হবে।’
বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগামীকাল বুধবার আমরা সমমনা ১২ দল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব। সংবাদ সম্মেলন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করব।’
সমাবেশের অনুমতি চাইতে গতকাল দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন আবুল খায়ের ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ১২ জুলাই সমাবেশের অনুমতির জন্য ডিএমপিতে চিঠি দিয়েছিলাম। আজ ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তিনি আমাদের মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন।’
শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সুস্থ হয়ে উঠছি। আশা করি কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারব। সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেবে।’
বিএনপির অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বিভাগীয় শহরে তারুণ্যের সমাবেশ চলছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, বগুড়া, বরিশাল ও সিলেটে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৭ জুলাই খুলনা এবং সর্বশেষ ২২ জুলাই ঢাকায় সমাবেশ হবে। এ ছাড়া শ্রমিক দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল ও কৃষক দলের উদ্যোগে চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা বিভাগে মেহনতি মানুষের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ১২ জুলাই নোয়াখালী (চট্টগ্রাম বিভাগ) থেকে শুরু হবে কর্মসূচি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ চূড়ান্ত আন্দোলনের পাশাপাশি মেহনতি মানুষের সমাবেশও ফাঁকে ফাঁকে অনুষ্ঠিত হবে। এতে চূড়ান্ত আন্দোলন বাধাগ্রস্ত হবে না।’
সমাবেশ সফল করতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। সন্ধ্যা ৭টায় শাহজাহানপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বাসায় মহানগর বিএনপির নেতাদের প্রস্তুতি বৈঠক বসে। বৈঠকে সমাবেশ সফল করতে করণীয় নির্ধারণে নেতাদের পরামর্শ নেওয়া হয়।
যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সমাবেশ সফল করতে যুবদল কেন্দ্রীয় সংসদের নেতাদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করেছি। এরপর মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাদের নিয়ে প্রস্তুতি সভা করেছি।’
ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সমাবেশ সফল করতে আমরা নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা করেছি। আশা করছি সমাবেশ সফল করতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ থাকবে বেশি।’
গত বছরের ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে সরকার পতনের দাবিতে ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ১০ দফা দাবিতে ২৪ ডিসেম্বর বিএনপি রাজধানী ঢাকার বাইরে সব সাংগঠনিক জেলায় র্যালি করে। এরপর ৩০ ডিসেম্বর সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো রাজধানীতে র্যালি করে পৃথকভাবে। রোজার ঈদের আগে যুগপৎ কর্মসূচি শেষ হয়। এরপর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করে। বুধবারের সমাবেশ থেকে আবার ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা আসবে।
রাজধানীর মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হাতিরঝিল থানা এলাকার দিলু রোডের মুখে কে বা কারা দুটি ককটেল ছুড়ে মারলেও বিস্ফোরিত হয় একটি। এতে স্থানীয় একজন নিরাপত্তা প্রহরী আহত হন বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাতিরঝিল থানার এসআই আল-আমিন। তিনি বলেন, বিস্ফোরণে একজন আহত হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আহত ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি। বিস্ফোরণের পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফ্লাইওভারের ওপর থেকে ককটেল ছোড়া হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী রাসেল আহমেদ বলেন, ‘আমি বাসার মধ্যে ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনি। ফ্লাইওভার থেকে একটা প্যাকেট ফেলা হয়েছে। বাইরে বেরিয়ে দেখতে পাই একজন আহত হয়েছে।’
ঘটনার পরপর সরেজমিনে দেখা যায়, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাস্থলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শন করছেন। বিস্ফোরিত ককটেলের চারপাশে বেঞ্চ ও ইট দিয়ে ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। আর অবিস্ফোরিত ককটেলটি বালতিভর্তি পানির ভেতরে রাখা হয়েছে। ডিএমপির বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, সিটিটিসি, ডিবি এবং হাতিরঝিল ও রমনা থানা পুলিশের কর্মকর্তারা সেখানে কাজ করছিলেন।
ডিএমপির তেজগাঁও ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনের সহকারী কমিশনার এসএম আরিফ রায়হান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তদন্ত করে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’
ভারতের ভিসা পাওয়া নিয়ে পাকিস্তান দল যে জটিলতার মধ্যে ছিল সেটার অবসান হয়েছে। অবশেষে ভারতের সরকার পাকিস্তান দলের জন্য ভিসা অনুমোদন করেছে।
সোমবার ক্রিকেট বিষয়ক ভারতীয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ এই খবর জানিয়েছে। ভিসা অনুমোদনের ফলে বাবর আজমের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান দল এখন বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার জন্য ভারতে ভ্রমণ করতে পারবে। আগামী ৫ অক্টোবর শুরু হতে যাওয়া ১০ দলের আসরে শেষ দল হিসেবে ভিসা পেয়েছে পাকিস্তান।
ওয়ানডে বিশ্বকাপ অংশ নিতে আগামী বুধবার ভারতের উদ্দেশে রওয়ানা হওয়ার কথা রয়েছে পাকিস্তান দলের। তবে যাত্রার ৪৮ ঘণ্টা আগেও ভিসা না পাওয়াকে 'অস্বাভাবিক দেরি' হিসেবে উল্লেখ করে উদ্বেগ জানায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তারা বিষয়টি নিয়ে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির দ্বারস্থও হয়। এর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এসেছে ভিসা অনুমোদনের খবর।
ক্রিকবাজ জানিয়েছে, আইসিসির একটি সূত্র তাদেরকে পাকিস্তান দলের ভারতের ভিসা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ভিসা পেতে দেরি হওয়াকে স্বাভাবিক প্রশাসনিক প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করেছে ওই সূত্র।
সবশেষ এশিয়া কাপের মূল আয়োজক ছিল পাকিস্তান। তবে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে দেশটিতে যেতে চায়নি ভারত। ওই আসরে ভারতের সবগুলো ম্যাচ হয় শ্রীলঙ্কায়। একটি বাদে সুপার ফোরের বাকি সব ম্যাচ আর ফাইনালও অনুষ্ঠিত হয় দ্বীপ দেশটিতে।
ভারত নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় হাইব্রিড মডেলে এশিয়া কাপ আয়োজনের প্রস্তাব আসে পাকিস্তানের কাছ থেকেই। এর আগে ভারত দল পাকিস্তানে না গেলে পাকিস্তানও ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে যাবে না বলে হুমকি দিয়েছিল পিসিবি। যদিও নিজেদের সেই সিদ্ধান্ত থেকে পরে সরে আসে তারা।
বিশ্বকাপের আগে আগামী শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচে মাঠে নামবে পাকিস্তান। তিনদিন পর তাদের আরেকটি প্রস্তুতি ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপে বাবরদের প্রথম ম্যাচ নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। আগামী ৬ অক্টোবর হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি।
বাংলাদেশে ফৌজদারি অপরাধে আইনের যে ধারায় শাস্তি দেওয়ার হয়, দণ্ডবিধি বা পেনাল কোড নামে আইনটি ১৬৩ বছরের পুরনো। বিচারের দিক-নির্দেশক হিসেবে ফৌজদারি কার্যবিধি (দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর বা সিআরপিসি) নামে পদ্ধতিগত আইনটিও ১২৫ বছর আগের তৈরি। এ ছাড়া ১৫১ বছরের বেশি পুরনো (১৮৭২ সাল থেকে প্রচলিত) সাক্ষ্য আইন (অ্যাভিডেন্স অ্যাক্ট)। ব্রিটিশ আমলে তখনকার প্রেক্ষাপট ও পরিস্থিতিতে তৈরি এ আইনগুলোর কাঠামো নিয়ে আপত্তি না থাকলেও আইন ও বিচারসংশ্লিষ্ট বেশিরভাগ মানুষের প্রশ্ন আছে সময়, পরিস্থিতি ও প্রয়োজনে আইনগুলোর সংস্কার এবং যুগোপযোগী না করা নিয়ে। বাংলাদেশসহ এ উপমহাদেশে ৭৬ বছর আগে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়েছে। আইনের সংস্কার নিয়ে বছরের পর বছর দাবি উঠেছে জোরেশোরে। স্বাধীনতার ৫২ বছরে এসব আইনের আলোকে, অনেক বিশেষ আইন হয়েছে। সেগুলোর অনেক ধারাতেও অসংগতি ও অস্পষ্টতার বিষয়টি নানা সময়ে আলোচনায় এসেছে। কিন্তু সংস্কারের বিষয়টি এখনো উপেক্ষিত।
১৮৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত দণ্ডবিধিতে ৫১১ ধারার ৪৫৯টি শাস্তিসংক্রান্ত। এর মধ্যে আটটি ধারায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। ১৮৯৮ সালে তৈরি হওয়া ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬৫ ধারার বেশিরভাগই বিচারের লক্ষ্যে দিকনির্দেশনা সংক্রান্ত। এ ছাড়া ১৫১ বছরের বেশি পুরনো (১৮৭২ সাল থেকে প্রচলিত) ও ১৬৬টি ধারা সংবলিত সাক্ষ্য আইনে (অ্যাভিডেন্স অ্যাক্ট) ধর্ষণের শিকার নারীদের জন্য অবমাননাকর একটি ধারা গত বছর নভেম্বরে বাতিলসহ এ আইনে ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ আমলে নেওয়ার সুযোগ রাখা হয় সংশোধনীতে। আইন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, সাক্ষ্য আইনটিকে আরও যুগোপযোগী ও সংস্কারের অংশ হিসেবে চলতি বছরেই তারা সুপারিশসংক্রান্ত প্রতিবেদন দেবেন।
আইনের সংস্কার প্রশ্নে পাঁচজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে তাদের মতামত নিয়েছে দেশ রূপান্তর। প্রায় অভিন্ন সুরে তারা বলেন, আইনের প্রতিষ্ঠিত নীতিবাক্য হলো ‘দশজন অপরাধী খালাস পেলেও একজন নিরপরাধ ব্যক্তি যেন সাজা না পান’। ফলে বিচারে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশ্লেষণ এবং আইনের ভাষা হতে হয় সহজ ও অযান্ত্রিক। একই সঙ্গে বিচারপ্রত্যাশীর ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হয়। তাদের মতে, প্রায় ২০০ বছরের ঔপনিবেশিক সময়ে মানুষকে প্রজা হিসেবে বিবেচনা করা হতো। এর প্রভাব পড়েছে ওই সময়ে তৈরি আইনগুলোতে। যেখানে শুধু শাস্তিকেই লক্ষ্য করা হয়েছে। অন্যদিকে একশ, দেড়শ বছরে অপরাধের ধরন, ভিন্নতা, অপরাধে প্রযুক্তিগত ব্যবহারসহ বদলেছে অনেক কিছু। বিপরীতে আইনগুলোতে নগণ্য কিছু সংশোধনী ছাড়া সংস্কার হয়নি।
পুরনো আইনের সংস্কার না হওয়াকে মামলাজটের কারণ উল্লেখ করে আইনজীবীরা আরও বলেন, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি, আদালতের সময়সহ বিচারপ্রত্যাশীর অর্থ ও সময় সাশ্রয়, অপরাধীর পুনর্বাসন, সংশোধন ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তেমন কিছুই নেই আইনগুলোতে। অন্যদিকে আইনের অপপ্রয়োগ কিংবা দুর্বলতায় প্রায়ই নির্দোষ ব্যক্তিকে নির্যাতন, জেলে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘মানুষের জন্য আইন। কিন্তু ব্রিটিশরা কর্তৃত্ব ও নিপীড়নমূলক অনেক আইন করেছে মানুষকে শোষণ, শাসন ও লুণ্ঠন করতে। তখন তো আর নাগরিক ও মানবাধিকার নিয়ে এত কথা হতো না। তাদের লক্ষ্যই ছিল কথায় কথায় স্বাধীনতাকামীদের বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া। তিনি বলেন, ‘এখন তো আমরা ব্রিটিশদের উপনিবেশে নেই। কিন্তু ৫৪ (বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার) ১৬৭ ধারার (রিমান্ড) মতো নিপীড়নমূলক আইনগুলোসহ আরও অনেক কিছু রয়ে গেছে। ১৯৭২ সালে মাত্র কয়েক দিনে একটি ভালো সংবিধান হলে এখন মানুষের জন্য যুগোপযোগী আইন কেন হবে না?’
সম্প্রতি ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নিয়োগ পাওয়ার পরদিন গত ১৩ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি মামলাজটকে তার প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন। এ লক্ষ্যে আইনের সংস্কার বড় বিষয় উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘মানুষের দুর্গতি ও কষ্ট লাঘবে সরকার নিশ্চয়ই এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করবে।’ নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা।
আইন সাময়িকী ডিএলআরের সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি যথার্থই বলেছেন। আমরাও আইনের সংস্কার চাই। শুধু ফৌজদারি কিংবা দণ্ডবিধি নয়, এসব আইনের আলোকে আর্থিক অপরাধ, মানি লন্ডারিংসহ এমন কিছু আইন আছে যেগুলোর অনেক কিছুর সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে।’
কিছুদিন আগে ভারত সরকার ব্রিটিশদের তৈরি ফৌজদারি আইন ব্যাপক সংস্কারে উদ্যোগ নিয়েছে।
সংস্কারের রূপরেখা আলোর মুখ দেখেনি : পুরনো ফৌজদারি আইনের সংস্কার নিয়ে ২০১১ সালে একটি রূপরেখা তৈরি করে আইন মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রতিবেদন দিয়েছিল আইন কমিশন। এতে আইনের প্রতিষ্ঠিত নীতিবাক্যটিকে একটু ভিন্নভাবে উপস্থান করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘একজন নির্দোষ ব্যক্তি যাতে সাজা না পায় এবং একজন অপরাধীও যাতে খালাস না পায়।’ আইনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে প্রশ্নের অবতারণা করে সমস্যা চিহ্নিত ও সমাধানে ৩৩টি সুপারিশ করে কমিশন। এর মধ্যে তদন্ত ও বিচারের ত্রুটি কাটাতে ফৌজদারি অপরাধের তদন্ত করতে স্থায়ী, পেশাদার ও দক্ষ পৃথক তদন্ত সংস্থা গঠন, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারায় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য শুধু হাতেকলমে না লিখে টেপ রেকর্ডার, ভিডিওতে রাখা, ১৬৪ ধারায় আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সঙ্গে সাক্ষীর বক্তব্য রেকর্ড করা, মিথ্যা ও তুচ্ছ অভিযোগকারীকে জরিমানা, ক্ষতিপূরণ বা কারাদণ্ড দিতে ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি দায়রা জজকেও ক্ষমতা দেওয়া, বিচারকাজের দীর্ঘসূত্রতা কমাতে মুলতবির সময় সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া, মামলার কার্যক্রম স্থগিতের সময়সীমা ৩০ দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়ার মত গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনের তাগিদ দেয় কমিশন। এ ছাড়া কারাগারের চাপ কমানো এবং আসামিকে সংশোধনের লক্ষ্যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও অভিযোগ গঠনের সময় দোষ স্বীকার করলে সাজা রেয়াত দেওয়া, যুক্তিতর্কের কারণে মামলার কার্যক্রম বিলম্বিত হওয়ায় তা লিখিত আকারে জমা দেওয়া, আদালতের সংখ্যা অনুপাতে আপিল আদালত প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করে কমিশন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কমিশনের ওই সুপারিশ আলোর মুখ দেখেনি।
কমিশনের মুখ্য গবেষণা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোর্শেদ ইমতিয়াজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রতিবেদন দেওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে কমিশন অবহিত নয়।
দণ্ডবিধির অনেক ধারার অসংগতি ও অস্পষ্টতা নিয়ে আইন ও বিচার সংশ্লিষ্টরা বলেন, এই আইনে অনেক কিছুই আছে। কিন্তু গণপিটুনিতে মৃত্যু, অর্থনৈতিক অপরাধের মতো আরও কিছু বিষয়ে আইনে কিছু নেই। অন্যদিকে পুরনো এ আইনে এখনো ১০ টাকা, ১০০ টাকা ও ২০০ টাকার মতো অর্থদণ্ডের বিধান রয়ে গেছে। জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার তিনজন (একজন অবসরে) বিচারক এসব আইনে তাদের বিচারিক অভিজ্ঞতার বিষয়টি দেশ রূপান্তরের কাছে তুলে ধরেন। সংগতকারণে তারা তাদের নাম না প্রকাশের অনুরোধ জানান। একজন বিচারক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আদালত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রসিকিউশনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার সমন্বয়ে একটি ফৌজদারি মামলার বিচার কার্যক্রম হয়। কিন্তু বিচারের দীর্ঘসূত্রতার বিষয়ে শুধু বিচার বিভাগকে শুনতে হয়। পুরনো আইনগুলোতে এমন অনেক কিছু আছে, যা একটু আধুনিক হলে বিচারকাজে আরও গতিশীল হবে।’ অন্য একজন বিচারক বলেন, ‘বিচারকাজের সময় টাইম (আদালত ও বিচারপ্রার্থীর সময়), কস্ট (বিচারপ্রার্থীর খরছ) এবং ভিজিট (বিচারপ্রত্যাশীর আদালতে আসা-যাওয়া) এ তিনটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আইনগুলোতে এসব বিষয়ে স্পষ্ট কিছু দিকনির্দেশনা নেই। সংগতকারণে বিচারপ্রার্থীর প্রতি সিমপ্যাথি (সহানুভূতি) ও ইমপ্যাথি (সহানুভূতির পরিপ্রেক্ষিতে কিছু করা) থাকা সমীচীন।’
আইন সংস্কারের উদ্যোগ থমকে দুই বছর ধরে : ২০২১ সালের ১৯ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফৌজদারি আইন সংস্কার ও আইনটি বাংলা ভাষায় প্রণয়ন করতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হককে নির্দেশ দেন। দুদিন পর ফৌজদারি আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন করে আইনটি যুগোপযোগী, আধুনিক ও বাংলা ভাষায় প্রণয়নের উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এতে চেয়ারপারসন করা হয় মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবিরকে। কমিটিকে অন্যান্য দেশের আইন বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষণা করে সমস্যা চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। তবে মন্ত্রণালয়ের ওয়াকিবহাল একটি সূত্রের তথ্য বলছে, দুই বছর পার হলেও এ বিষয়ে কার্যকর কোনো অগ্রগতি নেই।
এ বিষয়ে জানতে সচিব ময়নুল কবিরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল ধরেননি। সার্বিক বিষয়ে জানতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তার সাড়া মেলেনি। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এএম আমিন উদ্দিন মনে করেন, পুরনো আইনগুলোর আমূল পরিবর্তন কিংবা পুরো সংস্কার নয়, যতটুকু করলে বিচারপ্রার্থীর দ্রুত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে সেটি হতে পারে। দেশ রূপান্তরকে তিনি বলেন, ‘আইনগুলোর প্রসিডিউরে (কার্যপ্রণালি) তেমন ভুল নেই। যেসব ক্ষেত্রে অসংগতি বা অস্পষ্টতা আছে শুধু সেগুলোই আলোচনার মাধ্যমে সংশোধন করা উচিত। এ ক্ষেত্রে অংশীজন হিসেবে অন্যদের সঙ্গে অবশ্যই আইনজীবীদের সম্পৃক্ত রাখা উচিত।’
ন্যায্য পারিশ্রমিক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার সীমিত করার দাবি নিয়ে পাঁচ মাস আগে হলিউডে শুরু হওয়া হট্টগোলের অবসান হচ্ছে। আন্দোলনকারী লেখকরা প্রযোজকদের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর পর ধর্মঘট তুলে নেওয়ার কথা জানান। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানাচ্ছে, পাঁচ মাস আগে লেখক বা চিত্রনাট্যকারদের আন্দোলনের সঙ্গে যোগ দেন অভিনয়শিল্পীরা। যার কারণে হলিউডে একধরনের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। বন্ধ হয়ে যায় অনেক সিনেমার নির্মাণকাজ। তবে স্থানীয় সময় গত রবিবার হলিউডের লেখক ইউনিয়ন বড় স্টুডিওগুলোর সঙ্গে একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছে।
সিএনএন বলছে, এই চুক্তির ফলে হলিউডের ইতিহাসের বড় দুটি ধর্মঘটের মধ্যে একটি পক্ষ কাজে ফিরতে সম্মত হলো। এই ধর্মঘটের ফলে প্রায় পাঁচ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে বেশিরভাগ ফিল্ম ও টেলিভিশন অনুষ্ঠানের চিত্রায়ণ। ক্যালিফোর্নিয়ার অর্থনীতিতে এর প্রভাব বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের। তাই এবার আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে লেখক ও অভিনয়শিল্পীদের কাজে ফেরাতে সচেষ্ট হচ্ছে হলিউডের স্টুডিওগুলো।
লেখকদের সঙ্গে নিষ্পত্তি হলেও এখনই হলিউডের স্টুডিওগুলোর আলো জ্বলছে না। অভিনেতাদের সংগঠন এসএজি-এএফটিআরএ এখনো পারিশ্রমিক ও এআই ইস্যুতে ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছে। এসব দাবির পাশাপাশি লেখকদের পারিশ্রমিক ও লভ্যাংশ ইস্যুতে সংহতি প্রকাশ করে ২ মে থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। এসব বিষয়ে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলে বার্তা সংস্থার আহ্বানে সাড়া দেয়নি দ্য অ্যালায়েন্স অব মোশন পিকচার অ্যান্ড টেলিভিশন প্রডিউসারস, ওয়াল্ট ডিজনি, নেটফ্লিক্স, ওয়ার্নার ব্রস ডিসকভারিসহ অন্যান্য প্রতিনিধিত্বকারী বাণিজ্যিক গোষ্ঠী।
চলতি বছরের ২ মে থেকে শুরু হওয়া ধর্মঘটে ১১ হাজারেরও ফিল্ম এবং টিভি লেখক অংশগ্রহণ করেন, যারা স্ট্রিমিং যুগে উচ্চ বেতন এবং আরও ভালো কাজের দাবি করছেন। তারা যুক্তি দিয়েছেন যে স্টুডিওগুলো স্ট্রিমিং প্ল্যাটফরম থেকে যে আয় করেছে, সেই তুলনায় তাদের ক্ষতিপূরণ মিলছে না। লেখকরা নতুন নিয়মও চান, যাতে এসব স্টুডিও টিভি শোগুলোর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক লেখক নিয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে বড় স্টুডিওগুলোর কাছ থেকে বেশি পারিশ্রমিক চেয়ে একটি চুক্তি করতে চেয়েছিল লেখকদের সংগঠন রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকা (ডব্লিউজিএ)। সেই চুক্তির চেষ্টা ব্যর্থ হওয়াতেই মূলত ধর্মঘটের ডাক দেন লেখকেরা। হলিউড আন্দোলনের কারণে অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে টেলিভিশন শো ও হলিউডের নির্মাণাধীন সিনেমাগুলো।
বিশ্বকাপ যত এগিয়ে আসছে, বাংলাদেশে বিশ্বকাপ নিয়ে নাটক ততই জমে উঠেছে। একদিন পর দল বিশ্বকাপ খেলতে দেশ ছাড়বে, অথচ এখনো ঘোষণা হয়নি বিশ্বকাপের দল।
এমন অবস্থায় সোমবার মাঝরাতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসায় বৈঠকে বসেছিলেন ওয়ানডে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।
বিকেলে বিসিবি সভাপতির পেশাগত কার্যালয়, বেক্সিমকোতে নির্বাচক কমিটির সদস্যসহ বিসিবির বেশ কয়েকজন পরিচালকের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বিসিবি সভাপতি। তারপর সন্ধ্যার দিকে দেশের কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবী করা হয় সাকিব ও তামিম ইকবালের ভেতর নতুন দ্বন্দের খবর।
গণমাধ্যমগুলোর দাবী, তামিম ইকবাল জানিয়েছেন বিশ্বকাপে তিনি পাঁচটি ম্যাচে খেলতে পারবেন। অন্যদিকে তামিমের এই দাবী মানলে বিশ্বকাপে না খেলার হুমকি দিয়ে রাখেন সাকিব।
২০১৯ বিশ্বকাপে চোটজর্জর মাশরাফী বিন মর্তুজা দলে থাকায় এবং সবগুলো ম্যাচে খেলায় অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের পরও দলকে বিশ্বকাপে অষ্টম হতে দেখেছেন সাকিব, তাই এই শর্তে তার নেতৃত্বে না থাকার আশংকাই প্রবল। এই দুই জনকে সমঝোতা করার জন্য মাশরাফীকে পাপন দায়িত্ব দিয়েছেন এমন একটা খবরই দাবী করা হয়। যদিও এসবের পক্ষে কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ধোঁয়া থাকলে আগুন থাকবেই। তাই মধ্যরাতে, পৌনে ১২টায় সাকিবের বিসিবি সভাপতির বাসভবনে ছুটে যাওয়া আর সিডনি থেকে বাংলাদেশে পা রাখার ঘণ্টা তিনেকের মাথায় তাকে গুলশানের আইভি লেগেসিতে ছুটে আসতে দেখার মাধ্যমেই বোঝা যায়, চূড়ান্ত দল ঘোষণার আগে শেষ মুহূর্তে কোনো মারপ্যাঁচ লেগেছে।
প্রায় ৩ মাস পর আন্তর্জাতিক ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে তামিম খেলেছিলেন ৪৪ রানের ইনিংস। পরের ম্যাচে আবার তিনি বিশ্রামে, যেটা বিসিবির মেডিক্যাল বিভাগেরই সুপারিশে।
তাই বিশ্বকাপে তামিম কতটা ফিট হয়ে খেলতে পারবেন, আদৌ খেলতে পারবেন কি না এসব নিয়েই হয়তো হয়েছে শেষ মুহুর্তে মধ্যরাতের আলোচনা।
অধিনায়ক, কোচ আর বিসিবি প্রধান মিলে মিনিট চল্লিশেক বৈঠক করেছেন। আগে বের হয়েছেন হাথুরুসিংহে, তার মিনিট দশেক পর সাকিব। কেউই গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি, গাড়ির কাঁচটাও নামাননি। আর পাপনের বাসায় যখন এসব চলছে, তখন এক বন্ধুর সঙ্গে বাসায় বসে চাউমিন খাচ্ছেন তামিম!
সাকিব-তামিম একজন আরেকজনের সঙ্গে কথা বলেন না, এই খবর পুরাতন। শোনা গেছে সম্প্রতি একটি মোবাইলে আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপণের কাজে দুজনের ভেতর সম্পর্কে তিক্ততা বেড়েছে। তামিমের খেলা, না খেলা এসব নিয়েও জলঘোলা হওয়ার কারণেই নাকি সাকিবের বিরক্তি বেড়েছে।
তবে দুজনের কারো কাছ থেকেই এসব নিয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তামিম অধিনায়ক থাকা অবস্থায় ইংল্যান্ড সিরিজের আগে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন 'নাথিং এলস ম্যাটার্স'। সাকিবও স্বভাবসুলভ ভাবেই পাশ কাটিয়ে গেছেন এসব প্রসঙ্গ।
দল ঘোষণার আগের দিনে, মাঝরাতে বিসিবি প্রেসিডেন্টের বাসভবনে কোচ ও অধিনায়কের বৈঠক হতে পারে শেষ মুহূর্তের বোঝাপড়া। যেহেতু একদিন বাদেই উড়াল দিতে হবে। অথবা তামিম সংক্রান্ত ব্যপারে চূড়ান্ত ফয়সালা। উত্তরটা পেতে অপেক্ষা মাত্র কয়েক ঘণ্টার।
২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচনকেন্দ্রিক সক্রিয় অবস্থানের পর দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের বড় কোনো কর্মসূচি নেই। কর্মসূচি পালন করতে চাইলেও ছাত্রলীগের হামলার মুখে দাঁড়াতেই পারছেন না সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। মাঝেমধ্যে ক্যাম্পাসের আশপাশে ছোটখাটো ঝটিকা মিছিল করেই সারছে দলীয় কর্মসূচি। তবে বিএনপির এক দফা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আবারও ক্যাম্পাসে সরব হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।
জানা যায়, ক্যাম্পাসে সক্রিয় হওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিভিন্ন উপদলে ভাগ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকার বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত আড্ডা এবং কর্মী ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা। আগামীতে ঢাবি ছাত্রদলের নেতৃত্বপ্রত্যাশী নেতারা এসব কর্মকা- পরিচালনা করছেন বলে জানা যায়। আড্ডা দিতে গিয়ে শনিবার রাতে ছাত্রলীগের হামলার শিকারও হন কয়েক জন ছাত্রদল নেতা। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ সক্রিয় দেখা যাচ্ছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের। ‘আমরা দ্রুত ফিরছি, মাত্র কয়দিনের অপেক্ষা’ লিখে স্ট্যাটাস দিতে দেখা যায় তাদের।
এদিকে রবিবার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের দেয়ালে ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ সে্লাগান লিখে আলোচনা তৈরি করে ঢাবি ছাত্রদল। ছাত্রদল নেতা আনিসুর রহমান খন্দকার অনিকের নেতৃত্বে মধুর ক্যানটিন ছাড়াও ডাকসু ক্যাফেটেরিয়া, কলা ভবনসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দেয়ালে ২০টির বেশি দেয়াল লিখন করেছে তারা। এসব দেয়ালে ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’, ‘ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশ’, ‘তারেক রহমান বীরের বেশে আসবে ফিরে বাংলাদেশে’ সে্লাগান লেখা হয়। যদিও এদিন দুপুরের দিকে মধুর ক্যানটিনের লেখা মুছে দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
ঢাবি ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশব্যাপী বিএনপির লংমার্চ শেষে অক্টোবরে ঢাকাকেন্দ্রিক টানা আন্দোলন চলবে। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও পুরোদমে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ছাত্রদল। যত বাধাই আসুক ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক কর্মসূচি ও আন্দোলন করতে চান তারা। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত স্যাংশন ও বিএনপির সরকার পতনের এক দফা কর্মসূচি চূড়ান্ত রূপ লাভের অপেক্ষা থাকায় নেতাকর্মীরা বেশ উজ্জীবিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও তাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন বলে দাবি ছাত্রদলের নেতাদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের এক নেতা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ছাত্রদল ক্যাম্পাসে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। অক্টোবরে তা চূড়ান্ত রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। আপাতত বিভিন্ন ভাগ হয়ে হয়ে আড্ডা, দেয়াল লিখনসহ নানান কর্মসূচি চলছে। নতুন শিক্ষার্থীরাও আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। ছাত্রলীগের দখলদারিত্বের বিনাশ করতে আমরা বদ্ধপরিকর। দেশনায়ক তারেক রহমানের চূড়ান্ত নির্দেশের অপেক্ষায় আছি আমরা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান খন্দকার অনিক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গতকালও ছাত্রলীগ আমাদের ওপর হামলা করেছে। আমরা হামলার জবাব হামলা দিয়ে নয়, কাজের মাধ্যমে জবাব দিতে চাই। সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিনাশ করতে চাই। ক্যাম্পাস কারও একার সম্পত্তি নয়, যেকোনো সময় আমরা আসব। শুধু সময়ের অপেক্ষা। আমরা দেশনায়ক তারেক রহমানের আগমনী বার্তা দিতে চাই।’
ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘যেহেতু সামনে নির্বাচন, নির্বাচনকেন্দ্রিক আমাদের কর্মসূচি চলছে। সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ দিতে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসব। আমরা খুব দ্রুতই আসব। হাইকমান্ডের নির্দেশের অপেক্ষায় আছি। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল প্রস্তুত আছি। ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে, দাবি আদায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে অচিরেই ক্যাম্পাস থেকে আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে আমরা বিজয় নিয়েই ঘরে ফিরব ইনশা আল্লাহ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ক্যাম্পাস থেকে হারিয়ে যায়নি। হামলা-মামলার শিকার হয়েও আমরা নিয়মিত পদচারণা অব্যাহত রেখেছি। আগামীতেও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এই ক্যাম্পাসে সরব অবস্থানে থাকবে। ছাত্রলীগের দখলদারিত্বের অবসান ঘটবে শিগগিরই। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পেলে আমরা চূড়ান্ত কর্মসূচিতে যাব। আমরা প্রস্তুত ইনশা আল্লাহ।’
এদিকে ক্যাম্পাস দখল ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করলে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভোররাতে এসে কেউ যদি দেয়াল লিখন করে, এটা গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলে আমরা মনে করি না। আদালত কর্তৃক ঘোষিত অপরাধীকে তারা দেশনায়ক বলছে, তাদের কর্মকাণ্ড দ্বারা বোঝা যায় তারা কতটা অথর্ব। বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চার একটি কেন্দ্র, এখানে দখলদারিত্বের কোনো বিষয় নেই। যেটি ছাত্রদল বলার চেষ্টা করছে দখল করবে, এই চিন্তা-ভাবনা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক যায় না। এসবে আমরা বিশ্বাস করি না। শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য যা যা করার দরকার, আমরা তা করতে রাজি আছি। ক্যাম্পাসকে কেউ অস্থিতিশীল করতে চাইলে তা প্রতিহত করা হবে।’
পুলিশের পদোন্নতির তালিকায় থাকা পদ কাটছাঁট করায় অসন্তোষ কমছে না। এ নিয়ে পুলিশ কর্তারা একাধিক বৈঠক করছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে এলে পদোন্নতি নিয়ে তার সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। পুলিশের অসন্তোষ ঠেকাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশেষ উদ্যোগও নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিকেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে পদোন্নতির পদ আরও বাড়াতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে। চিঠি পেয়ে জনপ্রশাসনও কাজ শুরু করে দিয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে বলেছেন, পদোন্নতির সংখ্যাটি প্রধানমন্ত্রী ঠিক করে দিয়েছিলেন। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কাটছাঁট করে পুলিশকে বিব্রত করেছে। অন্য ক্যাডাররা একের পর এক পদোন্নতি পেলেও পুলিশ পিছিয়ে আছে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিনিয়র সচিব আশ্বাস দিয়েছেন, বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হবে।
এদিকে ক্যাডারদের পাশাপাশি নন-ক্যাডারদেরও পদোন্নতির বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে। ইতিমধ্যে সাব-ইন্সপেক্টর ও ইন্সপেক্টরদের পদোন্নতির উদ্যোগ নিতে পুলিশ সদর দপ্তর বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে। পদোন্নতির তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তিন দিন আগে পদোন্নতি পেতে বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। ওই সময় রাজধানীর ৫০ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইন্সপেক্টর থেকে এএসপি পদে পদোন্নতির বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পুলিশের ক্যাডার ও নন-ক্যাডারদের পদোন্নতির বিষয়ে আমরা কাজ করছি। যাদের পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্যতা আছে তারা অবশ্যই পদোন্নতি পাবেন। বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তাদের পদোন্নতির পদ বাড়াতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করি শিগগির বিষয়টি সুরাহা হবে। নন-ক্যাডারদের কর্তারাও কিছুদিন আগে আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। তাদের বিষয়টিও সমাধান হবে বলে আশা করছি।’ তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পুলিশের জন্য যা করেছে, অতীতের কোনো সরকারই তা করেনি। পুলিশের কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, পুুলিশের পদোন্নতির তালিকা কাটছাঁটের বিষয়ে গত মঙ্গলবার আইজিপিসহ পুলিশ কর্মকর্তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রের সিনিয়র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওইদিন বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পুলিশের পদোন্নতির বিষয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নুর-এ- মাহবুবা জয়া।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ পুলিশ রাষ্ট্রের আইনশৃক্সক্ষলা রক্ষাবাহিনী প্রধানতম বাহিনী, যা রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত। নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, পেশাদায়িত্ব ও শৃঙ্খলা রক্ষায় তদারকি ও ব্যবস্থাপনা এ বাহিনীর নেতৃত্বের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশ বাহিনীকে নেতৃত্ব প্রদানে পুলিশ সুপার থেকে তদূর্ধ্ব পদে পর্যাপ্তসংখ্যক পদ এবং দক্ষ জনবল থাকা বাঞ্ছনীয়। পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (গ্রেড-৩) ও অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (গ্রেড-২) তুলনামূলক কম। বর্তমান সাংগঠনিক কাঠামোর আলোকে (বিদ্যমান পদে অতিরিক্ত) অতিরিক্ত উপপুলিশ মহাপরিদর্শক হতে উপপুলিশ মহাপরিদর্শক এবং উপপুলিশ মহাপরিদর্শক হতে অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক পদোন্নতি দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হবে। প্রয়োজনীয়সংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি প্রদানের জন্য পদ সংখ্যা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বিদ্যমান পদের অতিরিক্ত সুপারনিউমারারি পদ রাজস্ব খাতে অস্থায়ীভাবে সৃজনের প্রস্তাবে পদের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) থেকে পুলিশ সুপার (এসপি) পর্যন্ত ৭২০ কর্মকর্তার পদোন্নতি পেতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল পুলিশ সদর দপ্তর। তালিকাটি সংশোধন করতে ফেরত পাঠায় মন্ত্রণালয়। পরে পুলিশ সদর দপ্তর ৫২৯টি পদ চূড়ান্ত করে আরেকটি তালিকা পাঠায়। সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দিতে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, গত ১ আগস্ট এ প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় তালিকা কাটছাঁট করেছে। অতিরিক্ত আইজিপি পদে দুজন, ডিআইজি পদে ৫০ জন, অতিরিক্ত ডিআইজি পদে ১৪০ ও পুলিশ সুপার পদে ১৫০ জনকে পদোন্নতি দিতে ১৪ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় জনপ্রশাসন। পুলিশের তালিকায় ছিল অতিরিক্ত আইজিপি (গ্রেড-১) ১৫, অতিরিক্ত আইজিপি (গ্রেড-২) ৩৪, ডিআইজি ১৪০, অতিরিক্ত ডিআইজি ১৫০ ও এসপি ১৯০ পদে পদোন্নতি দিতে। এ তালিকা কাটছাঁট হওয়ায় পুলিশে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ অসন্তোষ এখনো অব্যাহত আছে। অসন্তোষ ঠেকাতে আবার জনপ্রশাসনকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
পুলিশ সদর দপ্তরে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে জানান, পুলিশে সংখ্যাতিরিক্ত (সুপারনিউমারারি) পদোন্নতিতে অতিরিক্ত আইজিপি, ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি ও এসপি পদে পদোন্নতির নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৫২৯টি সুপারনিউমারারি পদ সৃষ্টি করতে গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। পদোন্নতির বিষয়ে সিগন্যাল আসার পর ২০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে এ-সংক্রান্ত একটি সভা হয়েছিল। সভায় অতিরিক্ত সচিবসহ (পুলিশ ও এনটিএমসি) পুলিশের মহাপরিদর্শক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, পুলিশে বর্তমানে একজন অতিরিক্ত আইজিপির পদ খালি রয়েছে। সুপারনিউমারারি পদে অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে ১৫ ও ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। ১৮, ২০, ২১, ২২ ও ২৪তম ব্যাচের প্রায় সবাই ডিআইজি ও অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছেন নীতিনির্ধারকরা। পাশাপাশি ২৭, ২৮ ও ২৯তম ব্যাচের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের এসপি হিসেবে পদোন্নতির বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নন-ক্যাডাররা পদোন্নতি পাবেন। সাব-ইন্সপেক্টর থেকে ইন্সপেক্টর ও ইন্সপেক্টর থেকে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সুপারনিউমারারি পদে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মতোই নন-ক্যাডারদের পদোন্নতি দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হবে। ইন্সপেক্টর থেকে এএসপি পদে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। কারা পাবেন তার তালিকা তৈরি হতে পারে।
বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো ছিল পুলিশ পরিদর্শকদের (ইন্সপেক্টর) ১০ বছর পূর্তিতে ষষ্ঠ গ্রেড দেওয়া। ১০ বছর পূর্তিতে ব্যাজ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রেড পরিবর্তন করা। ১০ বছরের মধ্যে পদোন্নতি না হলে সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দেওয়া। সাব-ইন্সপেক্টরদের (এসআই) ক্ষেত্রেও একই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে এসআই/সার্জেন্ট পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও তাদের র্যাংক ব্যাজের নীল বা লাল ফিতা তুলে নেওয়া। কনস্টেবলদের বিভাগীয় পরীক্ষায় একবার পাস করলে সেখান থেকে প্রমোশন লিস্ট করে ক্রমান্বয়ে পদোন্নতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে মন্ত্রীর কাছে।’
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’
বাংলাদেশের কিছু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ও রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র বলে জানিয়েছেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর আজ শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় বাধাদানকারী ব্যক্তিদের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করার ঘোষণা পর তিনি এ তথ্য জানান। তবে কতজনের ওপর এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, তা তিনি জানাননি ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার বলেছেন, ‘আমরা যখন এই ভিসা নীতি ঘোষণা করেছি, তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার ঘটনাবলির ওপর গভীর দৃষ্টি রাখছে। সতর্কতার সঙ্গে তথ্য-প্রমাণ পর্যালোচনার পর আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দলের সদস্য ও রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করেছি।’
মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্রকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় আসা ব্যক্তিদের নাম যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ করবে কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘না, এসব ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় আসা ব্যক্তিদের নাম আমরা প্রকাশ করব না।’ কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইনে ভিসা রেকর্ড গোপনীয়।
ব্রায়ান শিলার এই কথা বলার ঘণ্টাখানেক আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ (শুক্রবার) স্টেট ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকা বাংলাদেশি ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। এ ব্যক্তিদের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্য রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় তার সমর্থনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত অতিরিক্ত ব্যক্তিরাও ভবিষ্যতে এই নীতির অধীনে মার্কিন ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে। এর মধ্যে বর্তমান এবং প্রাক্তন বাংলাদেশী কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমাদের আজকের পদক্ষেপগুলি শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাংলাদেশের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য এবং বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সমর্থন করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।’
মে মাসে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের স্বার্থে ভিসানীতির ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যান্থনি ব্লিংকেন ওই ঘোষণা দেন।
সামনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আগামী নভেম্বরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তফসিল ঘোষণার পর প্রশাসনে রদবদলের সুযোগ নেই সরকারের। তাই এর আগেই নির্বাচনী প্রশাসনে ধাপে ধাপে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। প্রশাসনে চলছে পদোন্নতি ও রদবদল। ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রশাসন সাজাতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে বদলি-পদায়ন হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিব পদে বড় পদোন্নতি হয়েছে। নির্বাচনের আগে অবসরে যাওয়া কয়েকজন সচিবেরও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে প্রশাসন ক্যাডারের ২৪তম ব্যাচের ২৬ জন, ২৫তম ব্যাচের ২০ জন এবং ২৭তম ব্যাচের ১৮ জন ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিসিএসের ২৪তম ব্যাচের কর্মকর্তারা নিয়োগ পেয়েছিলেন ২০০৫ সালে, ২৫তম ব্যাচ ২০০৬ সালে এবং ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা নিয়োগ পেয়েছিলেন ২০০৮ সালে।
জানা যায়, নির্বাচনের সময় ডিসিরা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকেন। তাদের যে কোনো কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ থেকে শুরু করে বাতিলের ক্ষমতাও থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও থাকে রিটার্নিং কর্মকর্তা তথা ডিসির অধীনে। নির্বাচনের সময় সমন্বয়কারীর ভূমিকায়ও থাকেন ডিসিরা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন তাদের দুটি ব্যাচের কর্মকর্তারা নিয়োগ পেয়েছিলেন বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে। আর সে সময় বিসিএস নিয়ে বেশ বিতর্ক ছিল। বিসিএসে ছিল নানা ধরনের তদবির। ২৪ ও ২৫তম ব্যাচ দুটি বিএনপির সময়ে নিয়োগ পেলেও ২৭তম ব্যাচ নিয়োগ পেয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে। কারণ বিএনপির শেষ সময়ে ২৭তম ব্যাচের নিয়োগে বড় ধরনের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকায় তা বাতিল হয়। পরে ফের পরীক্ষা নিয়ে ২০০৮ সালে এ ব্যাচের নিয়োগ দেয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তবে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ছিল ২৪তম ব্যাচের নিয়োগ নিয়ে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ২৪তম ব্যাচের কয়েকজন কর্মকর্তাকে ডিসির পদ থেকে তুলে আনা হতে পারে। নির্বাচনের সময় যারা ডিসির দায়িত্বে থাকবেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মাধ্যমে তাদের সবার ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে পরিবার ও নিকট আত্মীয়স্বজনদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়গুলো যাচাই করা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে ছাত্রজীবনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে আর ডিসির পদে রাখা হবে না।
এ ছাড়া নির্বাচনে অন্যতম ভূমিকা পালন করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও)। বর্তমানে ৩৩, ৩৪ ও ৩৫তম ব্যাচের কর্মকর্তারা রয়েছেন ইউএনও পদে, যারা আসন্ন নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন। এখন ৩৫তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে ইউএনওর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে; এ ব্যাচে প্রশাসন ক্যাডারের ২৯১ জন কর্মকর্তা রয়েছেন।
জানতে চাইলে সরকারি কর্ম কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ইকরাম আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘পিএসসির নিয়োগ পরীক্ষা হয় যোগ্যতা, মেধা ও দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে। সেখানে ছাত্রজীবনে কে কোন পার্টি করেছিলেন, কোন দল ক্ষমতায় আছে তা বিবেচনা করা হয় না। বিসিএস কর্মকর্তাদের যে ফাউন্ডেশন ট্রেনিং হয়, তাতে তাকে একজন অফিসার হিসেবেই গড়ে তোলা হয়। এরপর এসিআর, সুপিরিয়রের মতামত, সুনাম, দক্ষতা, যোগ্যতার ভিত্তিতেই একজন কর্মকর্তাকে উচ্চতর পদে দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তবে সরকার যে দল পরিচালনা করে তাদের কিছু নীতিমালা ও উদ্দেশ্য থাকে। কর্মকর্তাদের দায়িত্ব সরকারের নেওয়া বৈধ ও জনকল্যাণে গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা। তিনি প্রলুব্ধ হবেন না, নিরপেক্ষ থেকে তার দায়িত্ব পালন করবেন। যদি কোনো নির্বাচনী দায়িত্বও দেওয়া হয়, সেটাও নিরপেক্ষভাবে তিনি পালন করবেন।’
গত মে মাসে অতিরিক্ত সচিব পদে ১১৪ জনের পদোন্নতি হয়। জুলাই মাসে পাঁচ বিভাগে নতুন বিভাগীয় কমিশনার দেওয়া হয়েছে। গত জুলাই মাসেই বদলি ও নতুন মিলিয়ে ৩০টি জেলায় ডিসি পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। উপসচিব পদমর্যাদার এই ডিসি পদে এবারও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর আটজন পিএসকে পদায়ন দেওয়া হয়েছে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ২২১ কর্মকর্তা। এ পদোন্নতিতে মূল বিবেচনায় এসেছে ২২তম ব্যাচ। বর্তমানে যুগ্ম সচিবের স্থায়ী পদ ৫০২টি। এর বিপরীতে পদোন্নতি পাওয়ার পর যুগ্ম সচিবের সংখ্যা হলো ৯৪৬ জন। এর আগে সর্বশেষ গত বছর ২ নভেম্বর ১৭৫ জন কর্মকর্তাকে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল। আর গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২৭০ জন সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
জানা যায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই অন্তত ১০ জন সচিবের স্বাভাবিক অবসরে যাওয়ার কথা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন আগামী ১৩ অক্টোবর অবসরে যেতে পারেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান ১৪ সেপ্টেম্বর, সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কেএম আবদুস সালামের ২৬ সেপ্টেম্বর অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে আবদুস সালামের চাকরি এক বছর বাড়ানো হয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ৯ অক্টোবর, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু বকর ছিদ্দীক ৩০ অক্টোবর, ইআরডি সচিব শরিফা খান ২৪ নভেম্বর, শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এহসানে এলাহী ২৫ নভেম্বর এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের সিনিয়র সচিব কামাল হোসেন ২৯ নভেম্বর অবসরে যাবেন। ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যাচ্ছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মোছাম্মৎ নাসিমা বেগম এবং ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মো. ফয়জুল ইসলাম। এ ১০ জনের মধ্যে কয়েকজন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে পারেন।
গত কয়েক বছরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং মুখ্য সচিব পদে যারা ছিলেন, তাদের অনেকেই স্বাভাবিক অবসরের মেয়াদ শেষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন। সর্বশেষ সাবেক চার মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মধ্যে একমাত্র কবির বিন আনোয়ার ছাড়া বাকি তিনজনই স্বাভাবিক মেয়াদ শেষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন। তারা হলেন মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা, মোহাম্মদ শফিউল আলম ও খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তাই স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনেরও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।
শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের মধ্যে অন্যতম ভিটামিন ডি। অতি প্রয়োজনীয় এই ভিটামিনের প্রধান উৎস সূর্যের আলো। তবে আমাদের ব্যস্ত জীবনে রোদ পোহানের সময় কই। অফিস থেকে বাসা, বাসা থেকে অফিস। এসির ভেতর থাকতে থাকতে শরীরে তৈরি হচ্ছে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি। ফলে কম বয়সে হাড়ক্ষয়, পিঠে-কাঁধে ব্যথা, চুল ঝরে যাওয়া, ঘা শুকোতে দেরি হওয়া, হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা যায়।
রেগুলার অফিসযাত্রীরা ভিটামিন ডি-এর অভাবে সবচেয়ে বেশি ভোগে। এরা রোদে বসার সময় পান না। যে কারণে এদের মধ্যে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি খুব বেশি দেখা যায়। ৫০ বছরের বেশি বয়সের পর শরীরে অনেক ধরনের ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয়, যার মধ্যে ভিটামিন ডিও একটি। এই বয়সে শরীর সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি তৈরি করতে সক্ষম হয় না। যে কারণে এই বয়সের মানুষের শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ করতে হয় অন্যান্য পদ্ধতির মাধ্যমে। এনআইএইচ-এর একটি রিপোর্ট অনুসারে, যাদের বডি মাস ইনডেক্স ৩০-এর বেশি বা তাদের শরীরে চর্বির পরিমাণ বেশি তারাও ভিটামিন ডি-এর অভাবের সম্মুখীন হতে পারেন।
কীভাবে বাড়াবেন ভিটামিন ডি?
মাশরুম
মাশরুমে ভিটামিন ডি থাকে। মাশরুম ইউভি রশ্মির সংস্পর্শে এলে ভিটামিন ডি তৈরি করে। এটি খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। কম তেলে রান্না করলে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
সি ফুড
কিছু মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। রিপোর্ট অনুযায়ী, স্যামন, টুনা এবং ম্যাকেরেল মাছে ভিটামিন ডি থাকে। যদি আমিষভোজী হন তবে আপনি তাদের খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
দুধ
এছাড়াও দুধে অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এতে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি বেশি পরিমাণে ভিটামিন ডি রয়েছে। বিশেষ করে গরুর দুধে, এটা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এর পাশাপাশি সহজে হজম হয়। দই দইয়ে ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন থাকে। দই হাড় মজবুত করে এবং হার্ট ভাল রাখে।
ভিটামিন ডি পাওয়ার সেরা উপায় কি?
রিপোর্ট অনুযায়ী, ভিটামিন ডি পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উৎস হল চর্বিযুক্ত মাছ এবং মাছের তেল। ডিমের কুসুম এবং পনিরে অল্প পরিমাণে পাওয়া যায়। উপরন্তু, কিছু মাশরুমে কিছু ভিটামিন ডি২ থাকে।
ভিটামিন ডি এর জন্য রোদে বসার সঠিক সময় কোনটি?
অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে সকাল ও বিকেল হল রোদে বসার সেরা সময়। দুপুরে ইউভিবি রশ্মি সবচেয়ে শক্তিশালী হয়। এর মানে হল আপনি কম সময়ে বেশি ভিটামিন ডি পাবেন। কমপক্ষে ১০ মিনিট এবং সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট রোদে বসলে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।