
পারমাণবিক জ্বালানি আমদানি, পরিবহন ও সংরক্ষণের লাইসেন্স অনুমোদনের মধ্য দিয়ে আরেকটি মাইলফলক অর্জন করল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাবনার একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বায়রা) এ লাইসেন্স হস্তান্তর করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাঙালি জাতির সক্ষমতার বড় প্রমাণ। আন্তর্জাতিক সব শর্তপূরণ করেই আমরা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছি। এই লাইসেন্সপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে জাতি আজ একটি ঐতিহাসিক দিনের সাক্ষী হলো। কোনো ষড়যন্ত্রই এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন রুখতে পারবে না।’
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আন্তর্জাতিক পরমাণু বিশেষজ্ঞ ড. শৌকত আকবর বলেন, ‘পরমাণুর শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিতে বাংলাদেশ প্রতিটি ধাপে আইএইএর নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করে নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। সব শর্তপূরণ করেই আমরা জ্বালানি আমদানি, সংরক্ষণ ও পরিবহনের জন্য লাইসেন্স পেলাম।’
এই লাইসেন্সের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পারমাণবিক জ্বালানি আমদানির সক্ষমতা অর্জন করল বলে জানিয়েছেন পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিউক্লিয়ার রেগুলেটরি স্ট্রাকচার উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. সত্যজিত ঘোষ।
তিনি বলেন, ‘পরমাণু জ্বালানি ব্যবহারে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন আছে। বাংলাদেশে পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের রেগুলেটিং ও সুপারভিশন করে। পারমাণবিক জ্বালানি আমদানি, পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নে জড়িত সংস্থাগুলোর আমাদের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। রূপপুর প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা লাইসেন্সের জন্য আবেদন করার পর এক বছর ধরে প্রয়োজনীয় শর্তপূরণের নথি জমা দিয়েছেন। বারবার পর্যালোচনা ও মূল্যায়নে সন্তুষ্ট হওয়ার পর বায়রা তাদের এই লাইসেন্স দিতে সম্মত হয়েছে। আমরা লাইসেন্স প্রদান করছি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন ও জ্বালানি পরিবহনে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে। এর মধ্য দিয়ে আগামী সেপ্টেম্বরে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য জ্বালানি আমদানিতে আর কোনো বাধা থাকল না।’
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান, রাশান ফেডারেশনের রোসটেকনাজোরের ডেপুটি চেয়ারম্যান, রোসাটমের ডেপুটি ডিরেক্টর মি এ ওয়াই পেত্রোভ, বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অশোক কুমার পাল প্রমুখ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে প্রথম ইউনিটের কমিশনিংয়ের প্রথম ধাপের কার্যক্রম চলমান আছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) গাইডলাইন মেনে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মূল কমিশনিং পর্যায়ের কাজের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। কমিশনিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে পারমাণবিক চুল্লিতে নিরাপদে পারমাণবিক জ¦ালানি লোড করা, সুষ্ঠুভাবে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ‘ফিজিক্যাল স্টার্টআপ’ কার্যক্রম সম্পন্ন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে গ্রিড লাইনের সিনক্রোনাইজেন বা যুক্ত করা, পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সবশেষে বাণিজ্যিক উৎপাদনের মাধ্যমে এই বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের সাহায্যে গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করা।
আগামী সেপ্টেম্বরে প্রথম ব্যাচের পারমাণবিক জ্বালানি প্রকল্প এলাকায় সরবরাহ করতে নানা রকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। বেশিরভাগ কাজই ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরমাণু শক্তি কমিশন বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের জেনারেল ডিজাইনার ও কন্ট্রাক্টর রাশিয়ার রসাটম করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা।
বাংলাদেশের একক প্রকল্প হিসেবে সবচেয়ে বড় অবকাঠামো এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে ২০২৪ সালে এবং এরপরের বছর দ্বিতীয় ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট করে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হওয়ার কথা রয়েছে।
তবে আগামী নির্বাচনের আগেই প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য জোর প্রচেষ্টা চলছে। এজন্য পিছিয়ে পড়া বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে শেষ করার জন্য পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশকে (পিজিসিবি) তাগিদ দেওয়া হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ শৌকত আকবর দেশ রূপান্তরকে বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কমিশনিং কাজ শেষে উৎপাদন শুরু করতে পরিকল্পনা মোতাবেক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ‘ফুয়েল রেডিনেসের’ (জ্বালানি আমদানির প্রস্তুতি) জন্য চুক্তি সই হয়েছে। জ্বালানি উৎপাদন এবং এটি হ্যান্ডেলিং করতে প্রয়োজনীয় জনবল তৈরিতে কোনো সমস্যা নেই। আইইএর প্রতিনিধিদল নিরাপত্তাসহ অন্যান্য বিষয় সরেজমিনে পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে। প্রকল্পের অগ্রগতি এবং দেশের পারমাণবিক অবকাঠামো উন্নয়নে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছে তারা।
ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের একটি প্রকল্প তিন বছরের কথা বলে ৯ বছরেও শেষ করতে পারেনি বাংলাদেশ রেলওয়ে। বরং আরও তিন বছর সময় বাড়িয়ে ২০২৬ সালে কাজ শেষ করার বলছে তারা। পাঁচবার মেয়াদ বেড়েছে, প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে রেললাইন স্থাপন ও অনুষঙ্গিক কাজ না করার ঘোষণা দিয়েছে ঠিকাদার। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চিঠি চালাচালি, আলোচনা চললেও সুরাহা হয়নি বিষয়টির।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজে ফেরাতে না পারলে প্রকল্প শেষ করতে আরও দেরি হবে। কোনোভাবে তাদের ম্যানেজ করে ২০২৬ সালে কাজ শেষ করলেও ১২ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে সময় লাগবে ১২ বছর।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. এম শামসুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নিষ্কণ্টক জমিতে প্রকল্পের কাজ শেষ হতে এত দেরি হওয়ায় রেলওয়ের সক্ষমতাই প্রশ্নবিদ্ধ। এরপরও ১২ বছরে যা হতে যাচ্ছে তাতে সমস্যা থেকে যাবে। কারণ কোনো ‘গেট সেপারেশন’ রাখা হচ্ছে না। রাস্তার মোড়ে ‘গেট সেপারেশন’ হওয়ার কথা ছিল। এটা না হলে এত বড় বিনিয়োগের সুবিধা পুরো মিলবে না। ট্রেনের গতি ধীরই থাকবে। এই করিডরে যতগুলো সড়ক-মোড় আছে, ততগুলো গেট সেপারেশন রাখার ব্যবস্থা সংসদীয় কমিটি ও রেলওয়ের পরিকল্পনায় ছিল। তা না করেই লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে মানুষের উন্নয়ন যন্ত্রণা ভোগের পরও দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকবে।’
রেলওয়ে সূত্রমতে, ২০১৪ সালের জুলাই মাসে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত বিদ্যমান মিটারগেজ রেললাইনের সমান্তরালে ডুয়েলগেজ লাইন স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ৩৭৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হলেও এখন তা বেড়ে ৬৫৪ কোটি টাকা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। ঠিক সময়ে কাজ শুরু করতে পারায় এর মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত। পরে আরও তিন দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। চতুর্থবার মেয়াদ বাড়ানোর পরও কাজ হয় ৮২ শতাংশ। এবার মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয়েছে ২০২৬ সালের জুন।
জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম রউফ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি স্টেশন নির্মাণ শেষে ফিনিশিংয়ের কাজ চলছে। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট জটিলতা কেটে গেছে। তেমন কোনো সমস্যা নেই। আশা করছি, আগামী ডিসেম্বর থেকে রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’
প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণ জটিলতা ও এ সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে প্রায় দেড় বছর লেগেছে। করোনা মহামারীর কারণেও কিছুটা সময় নষ্ট হয়েছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। নতুন লাইন নির্মাণের পাশাপাশি পুরনো মিটারগেজ লাইন উঠিয়ে সেখানে ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণের কাজ যুক্ত হওয়ায় ব্যয় বেড়েছে।’
অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, ‘রেলের প্রকল্পে অন্যান্য প্রকল্পের মতো জমি অধিগ্রহণের ঝামেলা নেই। রেলওয়ে যদি নিজেদের জমি রক্ষা করতে না পারে তার চেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে? ব্রিটিশরা রেলওয়ের এত জমি রেখে যাওয়ার পরও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাবে সেগুলো নিজেদের দখলে রাখতে পারেনি তারা। এখন নিজেদের জমিই অধিগ্রহণ করতে হচ্ছে।’ প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, দুটি প্যাকেজে এ প্রকল্পে ঠিকাদার হিসেবে চীনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন অব চায়না (পিসিসিসি) লিমিটেড ও কোরিয়ার এলএস ইলেকট্রিক কোম্পানি লিমিটেডকে নিয়োগ দেওয়া হয়। রেললাইন স্থাপন ও অবকাঠামো নির্মাণসহ বেশিরভাগ কাজের দায়িত্বে রয়েছে পিসিসিসি। তারা অবকাঠামো নির্মাণের কাজ করেছে। কিন্তু রেললাইন নির্মাণের আগেই তারা কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে চুক্তি সমাপ্তের চিঠি দিয়েছে রেলওয়েকে।
গত ১৫ মার্চ প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে দেওয়া চিঠিতে তারা বলেছে, সময়মতো প্রকল্পের অর্থ না পাওয়া ও নির্ধারিত জায়গা বুঝিয়ে না দেওয়ার কারণে তাদের কাজে অনেক দেরি হয়েছে। এতে তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক বলেছেন, ‘সর্বশেষ প্রকল্প রিভিশনের সময় ঠিকাদারকে পেমেন্ট দেওয়া সম্ভব হয়নি কিছু নিয়মনীতির কারণে। এখন যেহেতু রিভিশন হয়েছে তাই পেমেন্ট দিতে সমস্যা নেই। এ কথা তাদের জানানো হয়েছে। আশা করছি, তারা কাজ করবে।’
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, এখন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ যে রেললাইন আছে তাতে সারা দিনে ৩২টি ট্রেন চলাচল করতে পারে। ট্রেনের গতিসীমা ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটার। ব্রডগেজ ডাবল লাইন চালু হলে গতি হবে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার। অনেক বেশি যাত্রীও পরিবহন করা যাবে। কোনো ধরনের ক্রসিং করার প্রয়োজন হবে না বলে যাতায়াতে সময় কম লাগবে।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলের ভাড়া মাত্র ১৫ টাকা। এ পথে যাত্রীদের বাসভাড়া গুনতে হয় অন্তত ৫০ টাকা। সাশ্রয়ে ও নিরাপদে দ্রুত যাতায়াতের জন্য এ রেলরুটটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। অনেকেই প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ থেকে ট্রেনে করে ঢাকায় অফিস, ব্যবসা ও অন্যান্য কাজ করেন।
মাগুরা জেলার মহম্মদপুরের রাজাপুর গ্রামের নয়ন মোল্যা, ইকতিয়ার মোল্যা, রেহেনা বেগম ও আজিজ মোল্যারা সবাই পেশায় দিনমজুর ও ভ্যানচালক। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (ইজিপিপি) দ্বিতীয় পর্যায়ের মজুরির টাকার অপেক্ষায় ছিলেন এসব শ্রমজীবী। সেই টাকা এলো মোবাইল ব্যাংকিংয়ে। বিস্ময়করভাবে সেই প্রাপ্য টাকার সঙ্গে অনেকে ১০ গুণ টাকাও পেলেন। আনন্দে শ্রমজীবী মানুষগুলো টাকা তুলেও ফেলেছেন। এখন সেই টাকাই গলার কাঁটা হয়ে গেছে। কারণ, বাড়তি এ টাকা আদায়ের জন্য এখন তাদের ধড়পাকড় করা হচ্ছে। এটা শুধু মাগুরার চিত্র নয়; এ ঘটনা ঘটেছে দেশের বিভিন্ন জেলার ১০টি ভিন্ন ভিন্ন উপজেলায়।
সম্প্রতি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় এ মজুরির টাকা বিতরণ করা হয়। উপকারভোগীদের শ্রম মজুরি গভর্নমেন্ট টু পারসন (জিটুপি) পদ্ধতিতে পরিশোধ করা হয়। মজুরিভোগীরা সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে মোবাইল আর্থিক সেবা নগদের মাধ্যমে ৭ থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত কাজের মজুরি পাওয়ার কথা। আর এখানেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ডেটা এন্ট্রির ভুলে মোবাইল অ্যাকাউন্টে চলে গেছে প্রায় ১০ গুণ টাকা।
যদিও মন্ত্রণালয় বলছে, ভুলটা তাদেরই। আইবাস সিস্টেমের ভুলের কারণে দশমিক বাদ পড়ায় এমনটি ঘটেছে। যে শ্রমিক ৩১৭২.০৫ টাকা পেতেন, মন্ত্রণালয়ের ভুলে দশমিক বাদ পড়ায় নগদ অ্যাকাউন্টে পৌঁছেছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ২০৫ টাকা। এদিকে শ্রমজীবীদের মধ্যে যারা অর্থ উত্তোলন করেছেন, অধিকাংশই তা খরচ করে ফেলেছেন। এখন তাদের টাকা ফেরত দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মোটা অঙ্কের এ টাকা খরচ করে ফেরত দিতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হতদরিদ্র সুবিধাভোগীরা। তারা জানিয়েছেন, তারা আয় করে কিস্তিতে শোধ করবেন। একসঙ্গে তারা এত টাকা দিতে পারবেন না।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমানের কাছে এ ভুলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গত ২৫ জুন আমার কাছে তথ্য আসে, আইবাস সিস্টেমে সমস্যা হয়েছিল। জানার সঙ্গে সঙ্গে সেটি বন্ধ করে দিয়েছি। যে পরিমাণ টাকা চলে গেছে তার ৮৫ শতাংশ ইউএনও, চেয়ারম্যান বা জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এগুলো সমন্বয় করা হচ্ছে। আশা করি শতভাগ সমন্বয় হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, যেহেতু তারা (উপকারভোগীরা) নিয়মিত সুবিধাপ্রাপ্ত। তাদের কাছ থেকে সহজেই টাকা উত্তোলন করা গেছে। একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। মূল ঘটনা তারা বের করে আমাকে রিপোর্ট দেবে। আগামীতে যাতে এ ধরনের ভুল না হয় সেটি নিশ্চিত করা হবে।
১০ উপজেলায় ৯ হাজার ৮৪৬ জন শ্রমিকের বিপরীতে চাহিদা এসেছিল ৮ কোটি ৫৩ লাখ ১০ হাজার টাকা। এ চাহিদাপত্রের কপি দেশ রূপান্তরের হাতে আছে। এরপর সরকারের দিক থেকে প্রতি এক হাজারে ৭ টাকা ক্যাশআউট চার্জ যোগ করা হয়। ফলে এ অঙ্ক দাঁড়ায় ৮ কোটি ৫৯ লাখ ৭ হাজার ৪৭২ টাকা। কিন্তু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ভুলের কারণে আসলে শ্রমিকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ৮২ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ৪২৭ টাকা।
চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপচিালক মো. মিজানুর রহমানের স্বাক্ষরে ৮২ কোটি ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ৪২৭ টাকার কথা উল্লেখ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়। এ চিঠির কপি দেশ রূপান্তরের হাতে রয়েছে। পরে এই একই অঙ্ক উল্লেখ করে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থাগুলোর কাছে টাকা ছাড় করার জন্য চিঠি পায়।
অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ডেটা এন্ট্রির গড়বড়ের কারণেই সরকারের এত বেশি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের একাধিক উপপরিচালক এবং পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে এক্সেল ফাইলে ডেটা এন্ট্রি দেওয়া হয়, সেখানে দশমিকের পরও দুই ঘর ছিল। কিন্তু যে এক্সেল ফাইলসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সরকারের অনুমোদনের জন্য তোলে সেখানে কোনো দশমিকের ঘর ছিল না। অনেক শ্রমিকের মূল পাওনা ছিল ২ হাজার ৮১৯ দশমিক ৬ টাকা। কিন্তু তিনি পেয়ে গেছেন ২৮ হাজার ১৯৬ টাকা।
গত ২৫ জুন ডাক বিভাগের মোবাইল আর্থিক সেবা নগদের মাধ্যমে এ টাকা বিতরণ করা হয়। এ বিতরণের কিছুক্ষণের মধ্যেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর তাদের ভুলের বিষয়টি বুঝতে পারে এবং মজুরি বিতরণ হওয়া অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করার জন্য নগদকে নির্দেশ দেয়। তারপর থেকে ওই অ্যাকাউন্ট বন্ধ রয়েছে। তবে এরই মধ্যে অনেক অ্যাকাউন্ট থেকে বেশ কিছু টাকা ক্যাশআউট হয়ে গেছে।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামানন্দ পাল বলেন, ‘টাকা ফেরত আনার বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর চিঠি দিয়েছে। সেই আলোকে আমরা ইউপি চেয়ারম্যানদের চিঠি দিয়েছি। অতিরিক্ত টাকা ফেরত আনতে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সহযোগিতায় টাকা ফেরত আনার কাজ চলছে।’
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নগদের পাবলিক কমিউনিকেশনস বিভাগের প্রধান জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের সরকারি বিতরণে কোনো মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানই বিতরণ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট থাকে না। ফলে কাকে কত টাকা দেওয়া হচ্ছে, তা প্রতিষ্ঠানটি আগে জানতে পারে না। বিতরণ সম্পন্ন হলে তারা এসব তথ্য জানতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, এ ভুলের কোনো পর্যায়েই আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রয়োজনে সরকার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি করে বিষয়টি যাচাই করতে পারে।’ নগদ একই সঙ্গেও বলছে যে, প্রায় ১০ গুণ বরাদ্দের ফাইলে মহাপরিচালকের স্বাক্ষর রয়েছে, ফলে তিনিই বলতে পারবেন কোথায় কীভাবে টাকার অঙ্ক এত বেশি হয়েছে।
থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বদলের ডাক দিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন মুভ ফরোয়ার্ড পার্টির নেতা পিটা লিমজারোয়েনরাট। জনমত জরিপের ফলাফলকে টেক্কা দিয়ে দেশটির যেকোনো দলের তুলনায় পিটার দল আসন ও ভোট দুটোই বেশি পেয়েছিল। সেনাবাহিনীর মদদপুষ্ট দলগুলোর ভরাডুবি হওয়ায় ভোটে দ্বিতীয় হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পেতোংতার্ন সিনাওয়াত্রার
নেতৃত্বাধীন পুয়ে থাই পার্টিও তার সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গঠন করবে বলে আশাও করা হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল রাজতন্ত্র আর সেনাবাহিনীর প্রভাব বলয়ে থাকা রাজনীতির মাঠে দারুণ নৈপুণ্য দেখানো পিটা লিমজারোয়েনরাটের হাত ধরেই থাই রাজনীতিতে আসবে নতুন সকাল। কিন্তু শেষ অবধি সেটা হলো না। খুব কাছে গিয়েও দেশটির সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হতে পারছেন না থাই রাজনীতির তরুণ তুর্কি পিটা।
বিবিসি জানাচ্ছে, জন রায় পেলেও পার্লামেন্টের সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের ভোট না পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী হতে পারছেন না পিটা লিমজারোয়েনরাট। দেশটির নিয়ম অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীকে অবশ্যই ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির উচ্চ ও নিম্ন দুটো কক্ষেরই সম্মিলিত ভোটে জিততে হয়। উচ্চ ও নিম্ন দুটো কক্ষেরই সম্মিলিত ভোট ৭৫০ (৫০০ এমপি ও ২৫০ সিনেটর)। প্রধানমন্ত্রী হতে এর মধ্যে কমপক্ষে ৩৭৬ জনের সমর্থন পেতে হতো পিটাকে। কিন্তু উচ্চকক্ষ সিনেটের ২৫০ সদস্য সেনাবাহিনীতে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় সেটা পাননি। ফলে মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি ও পুয়ে থাই পার্টি দুই দল মিলে প্রতিনিধি পরিষদের ৫০০টির মধ্যে ২৯৩টি আসন পেলেও প্রধানমন্ত্রী হওয়া হলো না পিটার।
বিবিসি বলছে, সিনেটের ভোটে হারের পাশাপাশি পিটার বিরুদ্ধে ছিল ভোটের নিয়ম ভাঙার অভিযোগও। যদিও পিটা তা অস্বীকার করেছেন। তবে সিনেটের ভোটের ফলাফল মেনে নিয়েছেন তিনি। বলেছেন, প্রথম দফার এ ফল আমি মেনে নিচ্ছি। তবে আমি সব কিছু ছেড়ে দিচ্ছি না এখনই। কারণ আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। আমি আমার লক্ষ্য অর্জনে সামনের দিনগুলোতে লড়ে যাব।
পিটা লিমজারোয়েনরাট এক ধনী পরিবারের সদস্য। তার পরিবারের সঙ্গে রাজনীতির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। পিটার বাবা ছিলেন থাইল্যান্ডের কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। পাশাপাশি তার চাচা ছিলেন দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার ঘনিষ্ঠ সহযোগী। পিটা নিউজিল্যান্ডে স্কুলের ছাত্র থাকাকালেই রাজনীতিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। থাইল্যান্ডের থামাসাট বিশ^বিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি নেওয়া পিটা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক পলিসিতে স্নাতকোত্তর করেন। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে এমবিএ করেছেন পিটা।
ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে পিটা তার বাবার ব্যবসায় যোগ দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। ২০১৯ সালে ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টির এমপি হিসেবে পার্লামেন্টে যাওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল পিটার। ধনকুবের ও সেনাবাহিনীর কট্টর সমালোচক থানাথর্ন জুয়ানগ্রুনগ্রুয়াংকির প্রতিষ্ঠিত এ দলটি সেবারের নির্বাচনে বেশ ভালো ফল করেছিল; পরিবর্তনের দাবি তুলে নাড়িয়ে দিয়েছিল থাই রাজনৈতিক অঙ্গনকে। বিতর্কিত সব অভিযোগে পরের বছর বিলুপ্ত করে দেওয়া হয় ফিউচার ফরোয়ার্ড পার্টিকে। তবে এর প্রতিবাদে হাজার হাজার তরুণ সে বছর থাইল্যান্ডের সড়কগুলোতে নেমে এসেছিল। দাবি তুলেছিল, সংবিধান সংশোধন, নতুন নির্বাচন এবং মানবাধিকারকর্মী ও রাষ্ট্রের সমালোচকদের হয়রানি বন্ধের। সেই তারুণ্যের শক্তি নিয়েই গঠিত হয় মুভ ফরোয়ার্ড পার্টি। পিটা হন দলটির নেতা। ক্ষুরধার বক্তব্যের জন্য আগেই থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে উদীয়মান তারকা খ্যাতি পেয়েছিলেন তিনি। রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর প্রভাব কমানো এবং রাজতন্ত্র সংশ্লিষ্ট আইনের সংস্কারের মতো দলের সাহসী সব প্রতিশ্রুতি তার জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে দেয়।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে তোলা ছবি পাঠানোর প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গত বুধবার নতুন একটি ছবি প্রকাশ করেছে নাসা। নক্ষত্র সৃষ্টির সময়ের এ ছবি রো অফিউচি নামের ক্লাউড কমপ্লেক্স থেকে তোলা। ছবির নিচের অংশে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের স্টেলার নার্সারি বা আঁতুড়ঘরে (নতুন নক্ষত্র গঠনের স্থান) নবগঠিত একটি নক্ষত্র জ্বলজ্বল করছে
এ বছর ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে তরুণ বয়সী এবং শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে তরুণ বয়সী ছেলে-মেয়ে, যা মোট আক্রান্তের ৪৬ শতাংশ বা ৭ হাজার ৪২৬ জন। এরপর সবচেয়ে বেশি ভর্তি হয়েছে শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা, যা মোট আক্রান্তের ৩২ শতাংশ বা ৫ হাজার ১৬৬ জন।
অন্যদিকে নারী-পুরুষের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে পুরুষ, যা মোট ভর্তির ৫৯ শতাংশ এবং নারী ভর্তি হয়েছে ৪১ শতাংশ। অর্থাৎ ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি পুরুষের সংখ্যা ৯ হাজার ৫২৪ জন ও নারী ৬ হাজার ৬১৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ গত বুধবার পর্যন্ত সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র পেয়েছে। সেদিন পর্যন্ত এ বছরের মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ১৪৩ জন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ভর্তি হয়েছে ১১ হাজার ১ জন ও ঢাকার বাইরে ৫ হাজার ১৪২ জন। সেদিন পর্যন্ত মোট মারা গেছে ৮৮ জন।
বয়সভেদে আক্রান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. খলিলুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, বাচ্চারা দিনে ঘুমায় বেশি, মশারি ছাড়া ঘুমায়। কিশোর-কিশোরীরা বাসার নিচে খেলাধুলা করে, বিভিন্ন জায়গায় ঘোরে। এ কারণে এই বয়সীরা আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। আর ১৯-৩৯ বছরের তরুণ-তরুণীরা সবচেয়ে সক্রিয়। এরা বিভিন্ন জায়গায় আসছে, যাচ্ছে। তারা অন্য এলাকা থেকে ডেঙ্গু নিয়ে আসছে। এ কারণে এই বয়সীরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত। বয়স্করা অতটা সক্রিয় না। বাসায় থাকে, মশারি ব্যবহার করে না। ফলে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে নারীদের মধ্যে তরুণ বয়সী নারীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
এই পরিচালক বলেন, তরুণরা আক্রান্ত হওয়ার একটা ভালো দিক হলো তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি ও মৃত্যুহার কম। এই গ্রুপের ছেলে-মেয়েরা সঠিক সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে মৃত্যু একেবারেই হবে না। তবে ভয় শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে। এই শ্রেণির আক্রান্তের মৃত্যুহার বেশি। কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। বিশেষ করে বয়স্কদের ডেঙ্গুর পাশাপাশি অন্য রোগও থাকে। এই গ্রুপ বেশি আক্রান্ত হলে খারাপ বেশি। এ ছাড়া ৫ বছরের নিচের বয়সী বাচ্চারাও ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে শিশু ও বয়স্কদের ব্যাপারে আমাদের নজর বেশি দিতে হবে। এরা দিনে ঘুমালেও যেন মশারি ব্যবহার করে, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) দেশে ডেঙ্গুতে নতুন করে আরও ১ হাজার ২৩৯ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ও মারা গেছে ৫ জন। ভর্তির সংখ্যা আগের দিন বুধবারের চেয়ে ৭ জন কম। তবে আগের দিন মৃত্যু ছিল ৫। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত এ বছর ডেঙ্গু নিয়ে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৭ হাজার ৩৮২ জন ও মৃত্যু ৯৩ জন। নতুন রোগীদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৫৬ জন ও ঢাকার বাইরে ৪৮৩ জন।
১৯-২৯ বছর বয়সীরা আক্রান্তের শীর্ষে : গত বুধবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে যত ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে তাদের মধ্যে ১৯-২৯ বছর বয়সীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, ২৮ শতাংশ। অর্থাৎ মোট ভর্তি রোগীর মধ্যে ৪ হাজার ৪২০ জনই এই বয়সী। এরপর আক্রান্তের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ৩০-৩৯ বছর বয়সী মানুষ। তাদের সংখ্যা ২ হাজার ৯০৬ জন, যা মোট ভর্তি রোগীর ১৮ শতাংশ। অর্থাৎ ১৯-৩৯ বছর বয়সী তরুণরাই এবার এখন পর্যন্ত আক্রান্তের শীর্ষে রয়েছে, যা মোট ভর্তি রোগীর ৪৬ শতাংশ।
দ্বিতীয় অবস্থানে শিশুরা : বয়স বিবেচনায় মোট ভর্তি রোগীদের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ১০-১৮ বছরের শিশুরা। এই বয়সী ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৭৪৪ জন, যা মোট রোগীর ১৭ শতাংশ। শিশুদের মধ্যে ৫-৯ বছর বয়সী ১ হাজার ৪৫৩ জন, যা মোট ভর্তি রোগীর ৯ শতাংশ ও ১-৪ বছরের মধ্যে ৯৬৯ জন বা ৬ শতাংশ। সে হিসাবে ১-১৮ বছর বয়সী শিশুরা আক্রান্তের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে, যা মোট ভর্তি রোগীর ৩২ শতাংশ। ১ বছরের নিচে শিশু ভর্তি হয়েছে ১ শতাংশ বা ১৬১ জন।
এ ছাড়া বয়স বিবেচনায় সর্বোচ্চ আক্রান্তের চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ৪০-৪৯ বছর বয়সী মানুষ। হাসপাতালে ভর্তিদের মধ্যে এই বয়সীর সংখ্যা ১ হাজার ৬১৪ জন, যা মোট ভর্তি রোগীর ১০ শতাংশ।
৫০-৬০ বছর ঊর্ধ্ব ১১% : শ্রেণি বিবেচনায় মধ্যবয়সী থেকে বয়স্ক মানুষ সর্বোচ্চ আক্রান্তের চতুর্থ নম্বরে রয়েছে। এই শ্রেণির মানুষ মোট ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৭৭৬ জন, যা মোট ভর্তি রোগীর ১১ শতাংশ। তবে এই বয়সী মানুষের মধ্যে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ৫০-৬০ বছরের মধ্যে ১ হাজার ১৩০ জন, যা মোট ভর্তি রোগীর ৭ শতাংশ এবং ষাটোর্ধ্ব বয়সী মানুষ আক্রান্ত হয়েছে ৪ শতাংশ, যা মোট ভর্তি রোগীর মধ্যে ৬৪৬ জন।
৭৯% মৃত্যু ভর্তির ১-৩ দিনের মধ্যে : স্বাস্থ্য অধিপ্তরের পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৭৯ শতাংশই মারা গেছে হাসপাতালে ভর্তির এক থেকে তিন দিনের মধ্যে। এ পর্যন্ত মোট ৮৮ জনের মৃত্যুর মধ্যে (গত বুধবার পর্যন্ত) সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বা ২২ জন মারা গেছে রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এই হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. নিয়াতুজ্জামান বলেন, এবার রোগীরা দেরিতে হাসপাতালে আসছে। ডেঙ্গু শনাক্তের আগে তারা বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালে আসছে একেবারে শেষদিকে খুব জটিল অবস্থা নিয়ে। তখন আর আমাদের কিছু করার থাকে না। রোগীরা মারা যায়। আর যারা বেঁচে যায় তাদের দীর্ঘদিন হাসপাতালে থাকতে হয়।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই গুরুতর। গত সোমবার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার। আবেদনটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ে আছে। গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত তাকে অনুমতি দেওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে খালেদা জিয়ার একান্ত সহকারী জানিয়েছেন।
পাশাপাশি সরকারের অনুমতি পেলে দ্রুততম সময়ে তাকে বিদেশে নিতে ভিসা-প্রক্রিয়া শুরু থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রয়োজনীয় সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। সরকারের সবুজ সংকেত না পাওয়ায় ভিসা করানো যাচ্ছে না।
গতকাল শুক্রবার দেশ রূপান্তরকে এসব কথা জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার মেজো বোন সেলিমা ইসলাম।
তিনি বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের খোঁজখবর নিচ্ছেন যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান। শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ থাকলে প্রথমে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হতে পারে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নত হলে অন্য দেশে নেওয়া হবে।
সেলিমা ইসলাম বলেন, ‘আমার বোন হেঁটে জেলে গেলেন। জেলে থাকাবস্থায় অসুস্থ হলে তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। এরপর করোনার কারণে সরকার তাকে দুটি শর্তে মুক্তি দেয়। তখন থেকেই আমরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে আবেদন করে আসছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকার তাকে মুক্তি দেয়নি। বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে না পারায় দিনের পর দিন তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেছে। এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে আমার বোন।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এবিএম আব্দুস সাত্তার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বিএনপি নেতারা সার্বক্ষণিক চেয়ারপারসনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আমরা সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি। সরকার অনুমতি দিলে আমরা দ্রুততম সময়ে চেয়ারপারসনকে বিদেশে পাঠাতে পারব।’
জিয়া পরিবারের সদস্যরা গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তারা সরকারের দিকে তাকিয়ে আছেন। অনুমতি পাওয়া মাত্র সব ধরনের পদক্ষেপ নেবেন। ইতিমধ্যে ভিসা প্রস্তুতিসহ অন্যান্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। বিদেশে নেওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন তার পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান, ব্যক্তিগত সহকারী ফাতেমা ও ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার। ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসেন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি। তখন থেকেই তিনি হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সেবায় সার্বক্ষণিক থাকছেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বিএনপি গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আজ (গতকাল শুক্রবার) ম্যাডাম শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে বিকেলে তাকে তৃতীয়বারের মতো কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। রাতে আবার তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হওয়ায় হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল। পরে অবস্থার উন্নতি হলে তাকে ফের কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বিএনপি গঠিত চিকিৎসক দলের সদস্যরা জানান, খালেদা জিয়া ২০২১ সালের ১১ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। একই বছরের নভেম্বরে তার চিকিৎসকরা জানান, তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত দলীয় মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা তখন জানিয়েছিলেন, তাদের সাধ্য অনুযায়ী যতটুকু করার ছিল, তারা তা করেছেন। পরবর্তী চিকিৎসা যুক্তরাজ্য, জার্মানি অথবা যুক্তরাষ্ট্রে করার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরিবারকে বলেছেন। পরের বছর জুন মাসে খালেদা জিয়ার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর মধ্যে একটিতে রিং পরানো হয়। এখনো তার হার্টে দুটি ব্লক রয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে পরিবারের পাশাপাশি আমরা বিএনপি নেতারা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চেয়ারপারসনের পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। সরকার অনুমতি দিলে দ্রুতই চেয়ারপারসনকে বিদেশে পাঠানো হবে।’
গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহিলা দলের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যে মানুষটি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, তাকে আজ সরকার গৃহবন্দি করে রেখেছে। তিনি গুরুতর অসুস্থ হলেও তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। আমরা আশা করি, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে তার পরিবার যে আবেদন করেছে, তা সরকার বাস্তবায়ন করবে।’
সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে। কারণ উনি মুক্ত থাকলে ওনাদের ক্ষমতায় থাকা কঠিন হয়ে যাবে। উনি মুক্ত থাকলে দেশের গণতন্ত্র মুক্ত থাকবে। উনি মুক্ত থাকলে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না।’
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী, সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছে। ফলে এখন জেলে যাওয়া বা আদালতের আশ্রয় নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। ওই ৪০১ ধারাতেই বলা আছে, নির্বাহী আদেশে শর্ত ছাড়াই মুক্তি দেওয়া যায়। এমনকি সরকার সাজা মওকুফও করতে পারে। ফলে সরকারই শর্তহীন মুক্তি দিয়ে খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে।’
গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর বিষয়ে দুই-তিন দিন আগে তার ভাই শামীম এস্কান্দার এসেছিলেন। তিনি আবেদন জমা দিলে তা আইনমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে ব্যাখ্যার জন্য।
আবেদনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে থাকা বিএনপি নেতারা।
তারা গত বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছেন। খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। তারাও অপেক্ষা করছেন যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাবেন ওই নেতারা।
খালেদা জিয়াকে জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়ে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশে^র যে কয়েকটি দেশে সম্ভব, জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরপর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এর আগেও অবশ্য খালেদা জিয়াকে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্রে জটিলতা, ফুসফুস, চোখ ও দাঁতের নানা সমস্যায় ভুগছেন। এ ছাড়া তার মেরুদ-, হাত ও হাঁটুতে বাতের সমস্যাসহ আরও কিছু শারীরিক জটিলতা রয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার সাজা হয়। সেদিন থেকে প্রায় দুই বছর কারাবন্দি ছিলেন তিনি। এ ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আরও সাত বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনা মহামারির শুরুতে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দিয়েছিল সরকার। এরপর থেকে তার মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস করে বাড়ানো হচ্ছে।
প্রাচীন সময় থেকে মানুষের খাদ্যতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে চীজ বা পনির। গরুর দুধের তৈরি পনিরে শরীরকে সুস্থ রাখার প্রয়োজনীয় সব উপাদান পাওয়া যায়।
বর্তমানে সময়ের সাথে সাথে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পনিরের ব্যবহার। আর তাই বিস্কিট থেকে শুরু করে পাউরুটি, পাস্তা, পিৎজা অনেক কিছুতেই পনির ব্যবহার হয়।
পনিরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের মতে, ১০০ গ্রাম পনিরের মধ্যে রয়েছে:
শক্তি - ৩৬২ কিলোক্যালরি
প্রোটিন – ৫.১৭ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট - ৫০ গ্রাম
ক্যালসিয়াম - ৬৯ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম - ১৮১ মিলিগ্রাম
স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড – ৩.৪৫ গ্রাম
কোলেস্টেরল - ৩৪ মিলিগ্রাম
এটি প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন কে এবং ক্যালসিয়ামের একটি সমৃদ্ধ উৎস। পনিরের বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সুবিধা রয়েছে।
পনির ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এবং প্রোটিনের একটি সমৃদ্ধ উৎস। এটি বয়স্ক, শিশু, গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে অনেক উপকারি। পনিরে থাকা ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পনির খেলে অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করা যায়।
পনির ক্যালসিয়ামের একটি সমৃদ্ধ উৎস যা শক্তিশালী ও মজবুত দাঁত তৈরিতে অবদান রাখে। পনিরে থাকা কেসিন ফসফোপেপটাইড উপাদান দাঁতের গহ্বর কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া চিউইং চিজ মুখের পিএইচ মাত্রা বাড়াতে পারে এবং সামগ্রিক মৌখিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
পনিরে অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড যেমন কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিডের সমৃদ্ধ উৎস। কোরিয়া ইউনিভার্সিটি এবং ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারা এক গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ফ্যাটি অ্যাসিডে ক্যান্সার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ ছাড়া এই ফ্যাটি অ্যাসিড এথেরোস্ক্লেরোসিস এর বিকাশ রোধ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে।
পনিরে কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড এবং স্ফিংগোলিপিড রয়েছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে স্ফিংগোলিপিড মানুষের কোলন ক্যান্সারকে বাধা দিতে পারে।
এ ছাড়া পনিরে থাকা ক্যালসিয়াম নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে খাদ্যতালিকাগত ক্যালসিয়াম কোলোরেক্টাল ক্যান্সার প্রতিরোধে বেশ উপকারি।
পনিরে থাকা ক্যালসিয়াম গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুবই উপকারি। এটি প্রসবের সময় সংকোচনকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া উকের দুধ পান করানোর সময় ক্যালসিয়াম পুষ্টির ঘাটতিও পূরণ করে পনির। এটি গর্ভবতী মহিলাদের ভ্রূণের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে।
কিছু ধরণের পনির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কার্যকারিতা বাড়াতে পরিচিত। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে পনির শরীরের প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এটি অসুস্থতা এবং রোগ কমাতে পারে।
প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সুরক্ষিত পনির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এটি বয়স্কদেরমধ্যে ইমিউনোসেনেসেন্স (প্রতিরোধ ব্যবস্থার ধীরে ধীরে দুর্বল হওয়া) প্রতিরোধ করতে পারে।
পনির সেলেনিয়ামের একটি সমৃদ্ধ উৎস যা থাইরয়েড ফাংশন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সেলেনিয়ামের থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনে সহায়তা করে ভাইরাসের বিকাশকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে।
চেডার পনির হল এক ধরনের হার্ড পনির। এটি খাদ্যতালিকায় যোগ করলে তা থাইরয়েড রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
পনিরের আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলির মধ্যে একটি হল মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করা। বিশেষ করে ক্যামেমবার্ট জাতের পনির এই ধরনের কাজ করে থাকে। ক্যামেমবার্ট পনির প্রদাহজনক সাইটোকাইনের মাত্রা কমাতে পারে। এটি আলঝাইমার রোগের ঝুঁকি কমায় এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে।
পনির ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। এতে থাকা ভিটামিন বি কোষের বিপাক এবং বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফলে এটি উজ্জ্বল ত্বকের পাশাপাশি ত্বকের দাগ কমাতেও সাহায্য করতে পারে।
যাদের গরুর দুধে অ্যালার্জি আছে তাদের পনির এড়ানো উচিত। এটি অ্যালার্জি, ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাইগ্রেন এবং মাথাব্যথার কারণ ও হতে পারে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার (অতিরিক্ত পনির খাওয়া) কার্ডিওভাসকুলার রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের কারণ হতে পারে।
পনিরের স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ও রয়েছে। যেমন,
কিছু লোকের দুধের প্রোটিন যেমন কেসিনে অ্যালার্জি থাকে। এটি সারা শরীর জুড়ে একটি প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এবং ত্বকে ফুসকুড়ি, সাইনাস কনজেশন এবং ব্রণ জ্বলতে পারে।
অনেকের ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা থাকে। সেক্ষেত্রে তাদের পনির না খাওয়াই শ্রেয়। কারণ ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা গ্যাস, পেট ফোলাভাব এবং ডায়রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। অনেক সময় এর কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যও হতে পারে।
প্রচুর পরিমাণে পনির খাওয়ার ফলে মাইগ্রেন এবং মাথাব্যথা হতে পারে। পুরনো পনিরে থাকা টাইরামিন উপাদান কিছু ব্যক্তির মধ্যে মাইগ্রেনকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
যারা মোনোমাইন অক্সিডেস ইনহিবিটরস (MOIs) গ্রহণ করছেন তাদের পনির খাওয়া এড়ানো উচিত। এই ওষুধগুলি হতাশার চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। এসব ওষুধ পুরনো বা বয়স্ক পনিরে থাকা উপাদান টাইরামিনের সাথে বিক্রিয়া করতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।
নিজের গান দিয়ে ইউটিউব চ্যানেলের যাত্রা শুরু করলেন ক্লোজআপ তারকা নোলক বাবু।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বনশ্রীর এক রেস্তোরায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলের উদ্বোধন করেন এ গায়ক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার মা।
নোলক বাবুর ইউটিউব চ্যানেলে উন্মুক্ত হয়েছে তার নতুন গান 'মানুষ'। গানের কথা লিখেছেন তরুন সিং, সুর করেছেন শিল্পী নিজেই। গানটির সংগীতায়োজন হৃষিকেশ রকি।
নোলক বাবু বলেন, গানটি গাইতে পেরে আমি মুগ্ধ।
চলমান সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগে খেলতে নেমে দুই দলের মাঝে হাতাহাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিজেদের শেষ ম্যাচে আজ শুক্রবার রাত দশটার দিকে মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামের ক্রিজে নেমেছিলেন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ ও দীপঙ্কর দীপনের টিম।
খেলা চলাকালীন সময়ে দীপঙ্কর দীপনের দলের খেলোয়াড়দেরকে প্রথমে উস্কানি দিতে থাকে রাজের টিম। এরপর তাদের দলের লোকজন এসে দীপনের টিমের এক প্লেয়ারকে মাঠ থেকে তুলে নিয়ে মারধর করতে থাকে। এরপর দীপনের টিমের খেলোয়াড়রা উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং চেয়ার ছুঁড়াছুড়ি শুরু করে। এক পর্যায়ে দুই দলের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।
দীপনের দলের খেলোয়াড়দের একজন অভিনেতা মনির হোসেন শিমুল অভিযোগ তুলে বলেন, তারা বাইরে থেকে সন্ত্রাসী এনে আমাদের উপর আক্রমণ শুরু করে। এটা কোন ধরণের সিসিএল খেলা?
অন্যদিকে একই দলের আরেক খেলোয়াড় চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী বলেন, রাজ ভাইয়ের টিম থেকে আমাদের দলের উপর আক্রমণ শুরু করে। তারা বাইরে থেকে লোকজন নিয়ে এসেছে। আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে একজনকে তুলে নিয়ে মারধর করতে শুরু করে। এরমধ্যে মৌসুমী হামিদ আহত হন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোস্তফা কামাল রাজের দলের পক্ষ থেকে অভিযোগটি অস্বীকার করা হয়। তারা জানান, প্রয়োজন মনে করলে তারা পরে মন্তব্য দেবেন।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে উৎসাহ দিতে তিনদিন ব্যাপী সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগ (সিসিএল) আয়োজন করা হয়েছে। এতে মোট ১৬ টি দল অংশ নিয়েছে। আগামীকাল ফাইনালের মধ্য দিয়ে এ আসর সমাপ্ত হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হবে ২ নভেম্বর। পরবর্তী উপাচার্য কে হচ্ছেন তা নিয়ে এখন চলছে আলোচনা, কানাঘুষা; শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ।
বর্তমান উপাচার্যই আবার দায়িত্ব পাবেন নাকি নতুন কাউকে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হবে এ আলোচনাই চলছে এখন। আলোচিত হচ্ছে কয়েকজন শিক্ষকের নামও। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন কানাঘুষারও অবসান হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ পদে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের মধ্য থেকেই কাউকে বাছাই করার বিষয়টি একপ্রকার নিশ্চিত। বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের এ বিষয়ে আগ্রহ নেই। গুণী কোনো শিক্ষক উপাচার্যবিষয়ক আলোচনার মধ্যে নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সিনেটে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা হবে কি না, এ বিষয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশের ১১(১) ধারা অনুযায়ী, উপাচার্য নিয়োগে তিন সদস্যবিশিষ্ট প্যানেল নির্বাচনের দায়িত্ব সিনেটের। সিনেট নির্বাচিত তিনজনের মধ্য থেকে একজনকে উপাচার্য নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এবং রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। রাষ্ট্রপতি তাকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেন।
রীতি অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের জন্য সিনেটের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করা হয়। কিন্তু এবার সিনেট অধিবেশন হওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। উপাচার্য অধিবেশন ডাকবেন কি ডাকবেন না; ওপর মহলের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কেউ কিছু জানেন না। উপাচার্য নিজেও বিষয়টি খোলাসা করছেন না।
অধ্যাদেশের ১১(২) ধারা অনুযায়ী, কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যেমন অসুস্থতা, ছুটি, অপসারণ বা অন্য কোনো কারণে উপাচার্যের পদ শূন্য হলে একজনকে অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা বলছেন, অধ্যাদেশের নিয়ম অনুসরণ করে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন করা হোক। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে এবং আগামী নির্বাচনেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। নতুন উপাচার্যের গ্রহণযোগ্যতাও বাড়বে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক বলেন, ‘ভিসি প্যানেল নিয়ে আলোচনা নেই। উপাচার্যও কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে আমাদের জানা নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট সদস্য ও শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল সবচেয়ে বেশি আলোচিত। তাদের মধ্য থেকেই কারোর পরবর্তী উপাচার্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এ বিষয়ক আলোচনায় রয়েছেন।
অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পান। পরে প্যানেল নির্বাচনের মাধ্যমে ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর উপাচার্য পদে পুনর্নিয়োগ পান তিনি। সাত বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সামলাচ্ছেন তিনি। দুই মেয়াদের বেশি উপাচার্য থাকার নজির নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই তার দায়িত্ব পালনের শেষ দেখছেন অনেকে। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে শিক্ষকদের মধ্যেও তাকে নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী চাইলে পুনরায় নিয়োগ পেতে পারেন তিনি।
ইমেরিটাস অধ্যাপক বা অন্য কোনো গুণী শিক্ষক নেই উপাচার্য নিয়োগের আলোচনায়। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গুণী শিক্ষকদের সামনে আনার যে ধরনের কাঠামো থাকা উচিত তা নেই। যারা তোশামোদ করতে পারে, অন্ধ আনুগত্য প্রকাশ করতে পারে, তাদেরই প্রশাসনের শীর্ষ পদে নিয়ে আসা হয়। সত্যিকারের গুণী শিক্ষক এবং অনেক ভালো গবেষক আছেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারা কখনো প্রশাসনের দায়িত্বে আসতে পারেন না। তারা ব্যক্তিত্বের জলাঞ্জলি দিতেও রাজি নন।’
অতীতে উপাচার্যদের মধ্যে অ্যাকাডেমিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে একটা ভারসাম্য ছিল। এখন তা নেই। এখন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও আনুগত্যের ভিত্তিতে প্রশাসনিক পদগুলো দেওয়া হয়।
পরবর্তী উপাচার্য কে হচ্ছেন বা ভিসি প্যানেল নিয়ে আগ্রহ নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের। বিএনপিঘোষিত এক দফাতেই তারা মগ্ন। যদিও সিনেটে তিনজন প্রতিনিধি থাকায় সুযোগ তাদেরও রয়েছে। সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সরকার পরিবর্তন না হলে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিষয়ে ভাবছি না। এ বিষয়ে আমাদের ফোকাস নেই। আমাদের ফোকাস হচ্ছে এ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। জাতীয় রাজনীতিতে পরিবর্তন হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও পরিবর্তন আসবে।’
শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও সাংগঠনিকভাবে আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার। দেশ রূপান্তরকে তিনি বলেন, ‘আমরা নীল দল এখনো এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করিনি। যথাসময়ে দলের সভায় এ নিয়ে কথা হবে। মনোনয়ন কে পাবেন, তার আলোচনাও সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে। বর্তমান প্রশাসনের শীর্ষ তিনজন বিশেষভাবে আলোচনায় থাকবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই দায়িত্ব দেবেন। আমরা উনাদের সমর্থন করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ীই সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে।’
বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আইনের গতি অনুযায়ীই সব চলবে। এ বিষয়ে যাদের ভাবা প্রয়োজন তারা অবশ্যই ভাববেন।’ সিনেটের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিশেষ অধিবেশন ডাকার প্রয়োজন হলে আমরা ডাকি।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিএনপি নেতারা।
তারা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জার্মানিতে নেওয়ার কথা ছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সে সময় শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। এবার চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছি। জার্মানিতে খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে আমরা তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাব। জার্মানিতে তার ভালো চিকিৎসা হবে।’
এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সম্ভব জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তার স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ফলে তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লিভার সমস্যার কারণে ম্যাডামের শ্বাস কষ্ট হয়। ইতোমধ্যে তাকে দুইবার করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল। লিভার প্রতিস্থাপন করতে পারলে শ্বাসকষ্টটা হতো না।’
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ না থাকায় তার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি এখন সামনে এসেছে।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়া হতে পারে এমন খবরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও খোঁজখবর নিচ্ছেন জার্মান বিএনপি নেতারা।
জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়া বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জার্মানিতে ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হতে পারে বলে জানতে পেরেছি। আমরা খুবই খুশি। কারণ জার্মানিতে আসলে আমরা তার চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করতে পারব। চেয়ারপারসনের যে চিকিৎসা দরকার তা সকল ব্যবস্থা জার্মানিতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের মুক্তি, তার উন্নত চিকিৎসা ও গণতন্ত্র ফেরাতে দেশে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জার্মানিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৯ অক্টোবর আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। জার্মান বিএনপির উদ্যোগে রোডমার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব জার্মান পার্লামেন্টের সামনে। ’
আকুল মিয়া বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন বিদেশে নেওয়ার আলোচনা চলছিল তখনও জার্মানিতে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় তারেক রহমানের সেবা করতে না পারলেও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সেবা করতে পারব বলে আশা করছি। তার চিকিৎসা জার্মানিতে করতে পারলে আমরা ধন্য হবো।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামত জানতে চেয়ে আবেদনের কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রাতটা পোহালেই বাংলাদেশ দল উড়াল দেবে ভারতের গোয়াহাটিতে। তবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি দল। বিসিবি জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে চলমান তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচ শেষেই জানানো হবে বিশ্বকাপের দল।
প্রচুর আলোচনা ও জল্পনা–কল্পনার পর আজ বিশ্বকাপে নিজেদের স্কোয়াড ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির ফেসবুক পেজে আজ দুপুর ১টা ২৮ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায় বিসিবির লোগোসংবলিত বক্সে করে গুরুত্বপুর্ণ কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিডিও–র শেষে প্রশ্ন করা হয়েছে, বলুন তো ভেতরে কি?
বিকেল ৫টা ৪৩ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় সন্ধ্যা পৌণে ৬টায় ঘোষণা করা হবে দল। কিন্তু ৫টা ৪০ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় তৃতীয় ওয়ানডের শেষেই দল ঘোষনা করা হবে।
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালও জামিনের আবেদন করছেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কারাগারে থাকা হেলালের বিরুদ্ধে আছে অন্তত এক ডজন মামলা। বেশিরভাগ মামলায় জামিন হয়ে গেছে। এই দুজনের মতোই কারা হাজতে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসেন না আদালতে। তারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। অনেকেই অসুস্থ না হয়েও বছরের পর বছর হাসপাতালে আরামে
থাকছেন। বাইরে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকছে। এই সহযোগীরাই তাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছেন।
পুলিশের তালিকায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম আছে যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এই তালিকায় সুইডেন আসলাম নেই। তালিকা করা হয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন। কারাগারে আছেন ৬ জন, মারা গেছেন ৩ জন। একজনের কোনো হদিস নেই।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটজনকে ১ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান র্যাবের ক্রসফায়ার, গণপিটুনিতে আলাউদ্দিন ও কামাল পাশা ওরফে পাশা কারাগারে মারা গেছেন। কালা জাহাঙ্গীর বেঁচে আছেন নাকি আত্মগোপনে, কেউ বলতে পারছেন না। পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল ও কিলার আব্বাস কারাগারে আছেন। খোরশেদ আলম ওরফে রাশু কিছুদিন আগে ছাড়া পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আবার আটক করেছে। মশিউর রহমান কচি, সুব্রত বাইন, আমিন রসুল সাগর. ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ, শামীম আহমেদ, হারিস আহমেদ, তানভিরুল ইসলাম জয়, জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ এক পথচারী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্ডারওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব কটি ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারাগার কর্তৃপক্ষকেও হাজতি ও বন্দি সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তাদের একটি তালিকা করেছে একটি সংস্থা। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তারা কারাগারকেই নিরাপদ মনে করছে।
কারা সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম একটি মামলায় জামিন না নেওয়ায় কারাগারে আছেন। বাকি সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। ২৭ বছরের কারাজীবনে তার দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কেটে যাচ্ছে হাসপাতালে থেকেই। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করেন সব সময়। মোবাইল ফোনে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করেন সহযোগীদের সঙ্গে। তার স্ত্রী আয়েশা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সুইডেন আসলামের বিষয়ে তার এক আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে বলেন, এলাকায় তার যখন একক আধিপত্য ছিল, তখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তারাই এখন তার বিরুদ্ধে। সুইডেন আসলাম বের হয়ে এলে প্রতিপক্ষরাই তাকে মেরে ফেলবে, এমন শঙ্কা আছে। এসব দিক বিবেচনা করেই তিনি বের হতে চাইছেন না। কারাগারেই তিনি ভালো আছেন।
জানা গেছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায় না। ১৯৮৬ সালে তিনি অপরাধ জগতে যুক্ত হন। ওই বছর পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যাকা-সহ নানা অপরাধের তথ্য বের হয়ে আসে। এরই মধ্যে নিজেকে রক্ষা করতে সুইডেন চলে যান। বছর পাঁচেক ওই দেশে থেকে আবার ফিরে আসেন দেশে। তারপর সুইডেন শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৪ সাক্ষীর মধ্যে পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। বাকিরা আর আসেননি এবং এই মামলায় তিনি জামিনও নেননি।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও আসলাম মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। স্ত্রী আয়েশা আকতার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বলা চলে রাজার হালেই আছেন তিনি।
মিরপুর ও কাফরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ২২ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি মামলার জামিন হয়েছে। একটি মামলার জামিন হতে বাকি আছে। তা ছাড়া কমিশনার নিউটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ হলেও উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আরেকটি মামলার শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিলার আব্বাসের এক সহযোগী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করে আসি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছেন না। জামিন চাইলে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু ভাই তা করবেন না। কারণ প্রতিপক্ষ সক্রিয় আছে। তার প্রাণ শঙ্কা আছে। আমরা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় জামিন নিয়ে ভাইকে বের করে আনতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেক সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও প্রায় সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। শুধু একটা মামলার জামিন বাকি আছে। তিনি যখন কারাগারে, তখন বিএনপি তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। অথচ হেলাল বিএনপির রাজনীতি করেন। জেলে বসেই মোহাম্মদপুর, আদাবর ও ধানম-ি, মিরপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদতের ভালো যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন তারা। তার আরেক সহযোগী হাবিবুর রহমান তাজ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। মামলার সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। ইচ্ছে করে জামিনও নিচ্ছেন না তাজ। গ্রেপ্তারের আগে দীর্ঘদিন ভারত পালিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীর কাফরুলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তা ছাড়া কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে মোমিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত তাজ। মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলামের আশ্রয়-প্রশয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক বছর আগে ওসি রফিক মারা যান।’
মতিঝিলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে আটক আছেন তিনি। একবার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে ফেলে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা বাদে সব কটিতে জামিন পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে ইচ্ছা করে জামিন নিচ্ছেন না বলে তার এক স্বজন জানিয়েছেন।
সেভেন স্টার গ্রুপের একসময়ের সদস্য ফ্রিডম সোহেল ধানম-ি ৩২ নম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। সাজা কমিয়ে কারাগারেই থাকার চেষ্টা করছেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি মামলায় সাজা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জামিন নিচ্ছেন না।
তার সহযোগী পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসী রাশু কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। তার এক স্বজন দেশ রূপান্তরকে জানান, মাস দুয়েক আগে সর্বশেষ মামলায় জামিন হয় রাশুর। তার কোনো ইচ্ছা ছিল না কারাগার থেকে বের হওয়ার। আর এ কারণে ইচ্ছা করেই একটি সংস্থাকে কারাগার থেকে বের হওয়ার তথ্য দিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। কারণ তিনি বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মেরে ফেলবে এমন আশঙ্কা ছিল। আরেক সন্ত্রাসী লম্বু সেলিম একটি মামলা বাদে সব মামলায় জামিনে আছেন। ভারতের কলকাতা থেকে তাকে পুশব্যাক করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে থাকেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে জেল থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসীদের কর্মকা- রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কৌশলে কাজ করছে। তারা সরগরম হলেও কাজ হবে না। যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা চলছে। যারা দেশে আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ-র্যাব কাজ করছে। তবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কেউ বিশ্ঙ্খৃলা তৈরি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী জামিন না নিলে এটা আমাদের করার কিছু নেই। তবে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চোরাকারবারিসহ ভিন্ন ধরনের অপরাধীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছেন। তাদের নির্দেশে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছেন তারা। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ডের পেছনে বিদেশ কানেকশন।
২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে আত্মগোপন করে আছেন। টিপু হত্যাকান্ডের পর তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। দুবাইয়ে থাকলেও ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তার। জিসানের সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক ভারতে পালিয়ে আছেন। কিন্তু দেশে তার দখলবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইন ভারতে থেকে সক্রিয় আছেন। তানভীর ইসলাম জয়ও সক্রিয় আছেন। কলকাতা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ঘুরে তার অবস্থান এখন থাইল্যান্ডে। সেখানে বসেই তিনি কলকাঠি নাড়ছেন।
লাক্সারিয়াস জীবন পাওয়ার জন্য এখন মানুষ দিনরাত শুধুই কাজ করে চলেছেন। যার মধ্যে অফিস ডেস্কে বসে কাজ করেন এমন মানুষের সংখ্যা একেবারে কম নয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেয়ারে বসে ল্যাপটপের সামনে তাকিয়ে থাকা রীতিমতো যন্ত্রণাদায়ক।
শুধু তাই নয়, এটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। যারা অফিসে ডেস্কে কাজ করেন তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
সারাদিন যারা ডেস্কে বসে কাজ করেন তাদের অন্যতম অভিযোগও এটি। তারা বলে থাকেন, চেয়ারে বসে কাজ করে মোটা হয়ে যাচ্ছি! তবে এই অজুহাতকে একেবারে সত্য বলার সুযোগ নেই। কারণ ডেস্কে বসে কাজ করেও স্লিম ও ফিট থাকা সম্ভব। এজন্য মেনে চলুন পাঁচটি টিপস।
হাঁটুনফিট ও কর্মক্ষম থাকতে নিয়মিত হাঁটুন। দিনের পর দিন দীর্ঘ সময় বসে থাকলে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। সুস্থ থাকতে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। এমনকি কাজের ফাঁকেও ১০ মিনিটের ব্রেক নিয়ে হেঁটে আসতে পারেন।
সোজা হয়ে বসুনচেয়ারে মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসুন। মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলোতে অনেক চাপ পড়ে, সেই সঙ্গে চাপ পড়ে মেরুদণ্ডের পাশের মাংসপেশি ও লিগামেন্টের ওপর। কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় মনিটরটি চোখের সমান স্তরে রাখুন। মাউস ব্যবহার করার সময় শুধু আপনার কব্জি নয় পুরো হাত ব্যবহার করুন।
চাপ এড়িয়ে চলুনএটা খুব কঠিন কাজ, চাপমুক্ত থাকা। বিশেষ করে যখন চারপাশ থেকে নানা ধরনের চাপ আসতে থাকে। তবে মানসিক স্থিরতা ধরে রাখুন, নিজেকে মোটিভেট করুন। কোনও চাপই বেশি দিন থাকে না, এগুলো নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে নিজের কাজে মনোযোগ বাড়ান। এক্ষেত্রে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে অনলাইনে কিছু যোগা শিখে অভ্যাস করুন।
চোখের যত্নকম্পিউটারে কাজ করার সময় স্ক্রিনে একটানা ১০-১৫ মিনিটের বেশি তাকিয়ে থাকবেন না। নিয়মিত চোখের পাতা ফেলুন। স্ক্রিনে পর্যাপ্ত আলো রাখুন, যেন চোখের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে।
হাড়ের যত্ন বসে থাকার ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ক্যালসিয়ামের ঘাটতিও হতে পারে। এজন্য নজর দিতে হবে প্রতিদিনের খাবারে স্বাভাবিক খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ডিম, দুধ, দই ও বাদাম রাখুন।