
সকাল থেকে শুরু করে হরদম কেনাকাটা চলছে মার্কেটে, লাগাতার পণ্যের দাম হাঁকতে ব্যস্ত ক্রেতা-বিক্রেতারা। অথচ যে স্থানে বসে বেচাবিক্রি চলছে, ওই ভবনের স্থায়িত্বই অনিশ্চিত। যেকোনো সময়ই ভেঙে গুঁড়িয়ে যেতে পারে শত মানুষের রুটিরুজির উৎস দোকানসহ মানুষের জীবন। ২০১৩ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশন ৩৪টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। পরে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল নতুন আরও তিনটি ভবন চিহ্নিত করে। এতে ৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করে সিটি করপোরেশন। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন শুধু চিহ্নিত করেই দায়সারা দায়িত্ব পালন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। তবে ভবন ভাঙতেও নারাজ ওইসব ভবনের মালিকরা। ফলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
জানা যায়, বরিশাল সিটি করপোরেশন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরি করেছে ২০১৩ সালে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকার মধ্যে রয়েছে, নগরীর কাউনিয়ায় জানুকিসিংহ রোডসংলগ্ন মতি লস্করের ভবন; পূর্ব বগুড়া রোডের কাজি অফিসের পেছনে রবীন্দ্রনাথ সেনের ভবন; আগরপুর রোডের মহিলা কলেজের দক্ষিণ পাশে মনু মিয়ার গং দেব ভবন; ফজলুল হক অ্যাভিনিউর আবদুর রউফ হায়দারের ‘হোটেল বাহাদুর’; সার্কুলার রোডের সৈয়দ মনছুর আহমেদের ভবন; ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়কের (সদর রোড) ফাতেমা খাতুনের ‘শাকুর ম্যানশন’; ঈশ্বরবসু রোডের অ্যাডভোকেট ওশিদা আক্তার চম্পার ‘সৈয়দ মঞ্জিল’; হাসপাতাল রোডের অমৃত কলেজর দক্ষিণ পাশে মান্নান মৃধার ভবন; কালুশাহ সড়কের জালাল আহমেদের ভবন; মেজর এম এ জলিল সড়কের (নবগ্রাম রোড) হাতেম আলী কলেজর হোটেলের পুরাতন ভবন; তাজউদ্দিন ‘ক্ষনিকা’ মেডিকেল কলেজ লেনের মো. ফরিদ উদ্দিনের ভবন; সরকারি বিএম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সুরেন্দ্র ভবন ছাত্রাবাস; বগুড়া রোড মোড়ে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর রোডের সালাম চেয়ারম্যানের পুরাতন ভবনসহ বেশ কিছু ভবন।
কাঠপট্টি এলাকার ব্যবসায়ীদের দাবি, মার্কেটে যুগের পর যুগ ধরে তারা ব্যবসা করে আসছেন। চুন-সুরকির এই ভবনগুলো পুরাতন হওয়া সত্ত্বেও ঝুঁকিপূর্ণ না। একটি মহল পেছনে বসে ষড়যন্ত্র করছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাঠপট্টি এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মার্কেট কর্মচারী বলেন, ‘এখন থেকে দু-তিনটি ভবন বেশ পুরাতন। যে কেউ দেখলইে বুঝবে। কিন্তু কতটা ঝুঁকি বলতে পারব না। শুনেছি সিটি করপোরেশন ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছে। তাই এখন ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছি।’
অন্যদিকে সরকারি ব্রজমোহন কলেজের (বিএম) সুরেন্দ্র ভবন ছাত্রাবাস যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন পর্যন্ত দাঁড়িয়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। কলেজ কর্র্তৃপক্ষ এবং সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তহীনতায় যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে মনে করেন স্থানীয়রা এবং ভবনটির পাশে বসবাস করা শিক্ষার্থীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সুরেন্দ্র ভবন ছাত্রাবাসের চারপাশ ভুতুড়ে অবস্থা। নড়বড়ে ভবনটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এই স্থানে আমার টাকাপয়সা কম লাগে বিধায় বসবাস করি। আমাদের কলেজ কর্তৃপক্ষ এটার দিকে নজর দেয় না। শুনেছি প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এ অবস্থায় আছে।’
বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো দ্রুত অপসারণ না করলে ভবিষ্যতে যেকোনো সময় মারাত্মক কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের গুরুত্ব বাড়ানো উচিত।’
এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের স্থপতি মো. হাসিবুর রহমান টিপু দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা বরিশাল নগরীর মধ্যে ৩৭টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছি। এর মধ্যে অধিকাংশ ভবনেই মানুষ বসবাস করছে। এ ছাড়া কয়েকটি ভবনের বাসিন্দা নেই; তারা দূরে থাকেন। সব ভবন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, সিটি করপোরেশন থেকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের ডাকে না। অনেকে নোটিস পেয়ে মামলাও করেছেন। কিন্তু ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ; সেগুলোর ব্যাপারে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি।’ তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভাঙার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে এবং আগামী মাসের মধ্যে সদর রোডের ‘শাকুর ম্যানশন’ নামে একটি ভবন ভাঙা হবে।
১০ বছর ধরে বরিশালের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে বসবাস করে আসছে মানুষ, অন্যদিকে চলছে মার্কেট। কিন্তু এই ভবনগুলো ভাঙতে বাধা কোথায়Ñ এমন প্রশ্নের উত্তরে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভবনগুলো ভাঙতে আমাদের কোথাও বাধা নেই। ভাঙতে পারব। আমরা চলতি বছর নতুনভাবে তালিকা তৈরি করেছি। ভবন মালিকদের নোটিস দিয়েছি। এখন আমরা ব্যবস্থা নেব। বর্তমানে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চিকিৎসার জন্য ভারতে আছেন। তিনি বরিশালে আসামাত্রই আমরা ভবনগুলো ভাঙার ব্যবস্থা করব।’
বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদে পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়ে মহাকাশে রওনা হয়েছে ভারতের চন্দ্রযান-৩। গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৩৫ মিনিট ১৭ সেকেন্ডে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে এলভিএম-৩ রকেটে চন্দ্রযানের সফল উৎক্ষেপণ হয়। এর ল্যান্ডার আগামী ২৩ বা ২৪ আগস্ট চাঁদে অবতরণ করবে বলে আশা করছেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর বিজ্ঞানীরা। এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের মহাকাশযান নিরাপদে চাঁদের মাটিতে নামতে পেরেছে। অভিযান সফল হলে অবশ্য বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহের দক্ষিণ মেরুর কাছে একটি রোবটযান নামাতে সক্ষম হবে ভারত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, চাঁদে পৌঁছানোর চেষ্টায় এর আগে দুটো অভিযান চালিয়েছে ভারত। ২০০৮ সালে প্রথম অভিযানে চন্দ্রযান-১ পৌঁছেছিল চাঁদের কক্ষপথে। চাঁদের ভূপৃষ্ঠের গঠন ও পানির উপস্থিতি নিয়ে বড় পরিসরে গবেষণা চালানো হয় সে সময়। ২০১৯ সালের দ্বিতীয় অভিযান আংশিকভাবে সফল হয়েছিল। চন্দ্রযান-২ এর অরবিটার আজও চাঁদের চারপাশ প্রদক্ষিণ করছে এবং তথ্য পাঠাচ্ছে। কিন্তু এর ল্যান্ডার অবতরণের সময় শেষ মুহূর্তের জটিলতায় চাঁদের মাটিতে বিধ্বস্ত হয়।
এনডিটিভি বলছে, গতকাল রকেট উড্ডয়নের ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে ভারতের শতকোটি মানুষের চোখ ছিল টেলিভিশন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ঐতিহাসিক এই উৎক্ষেপণ নিজের চোখে দেখতে বিপুল সংখ্যক মানুষ ভিড় করেছিলেন শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্রের বাইরে। অনেকে হাতে থাকা ভারতীয় পতাকা দোলাচ্ছিলেন বাতাসে।
বিবিসি জানিয়েছে, স্পেস মিশন নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কাউন্ট ডাউন কমতে কমতে শূন্য সেকেন্ডে আসার পর বিপুল ধোঁয়ার মেঘের মধ্যে লঞ্চপ্যাড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাকাশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এলভিএম-৩ রকেট। নিয়ন্ত্রণ কক্ষে থাকা বিজ্ঞানী ও ভারতীয় কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বাইরে জমায়েত হওয়া দর্শকরা করতালিতে ফেটে পড়েন। এরপর সবকিছু ঠিকভাবেই চলে। জ্বালানি শেষ হয়ে গেলে রকেটের সঙ্গে থাকা দুটো বুস্টার নির্ধারিত সময়ে আলাদা হয়ে সমুদ্রে পড়ে যায়। বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে থাকে চন্দ্রযান-৩। এক পর্যায়ে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, চন্দ্রযান-৩ কে সফলভাবে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দিয়ে আলাদা হয়ে গেছে এলভিএম-৩ রকেট। ভারতের মহাকাশ বিভাগের সচিব শ্রীধারা সোমনাথ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে উপস্থিত বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানান এবং সবার সঙ্গে হাত মেলাতে থাকেন। তিনি বলেন, চাঁদের পথে যাত্রা শুরু করেছে চন্দ্রযান-৩।
৩৯০০ কেজি ওজনের চন্দ্রযান-৩ বানাতে খরচ হয়েছে ৬.১ বিলিয়ন রুপি (সাড়ে ৭ কোটি ডলার)। ভারতের তৃতীয় চন্দ্রাভিযানের এই মহাকাশযান তৈরি হয়েছে অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার এই তিনটি অংশ নিয়ে। ইসরোর প্রতিষ্ঠাতার নামে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডারের নাম রাখা হয়েছে বিক্রম, যার ওজন প্রায় দেড় হাজার কেজি। ওই বিক্রমই তার পেটের মধ্যে বহন করবে ২৬ কেজি ওজনের রোভার বা রোবটযান প্রজ্ঞানকে।
এই মহাকাশযান চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করতে সময় লাগবে ১৫ থেকে ২০ দিন। বিজ্ঞানীরা এরপর ধীরে ধীরে গতি কমিয়ে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মহাকাশযানকে নিয়ে যাবেন, যেখান থেকে বিক্রমের অবতরণপর্ব শুরু হবে। নির্দিষ্ট সময়ে চন্দ্রযান-৩ এর অরবিটার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চাঁদের মাটিতে নেমে যাবে ল্যান্ডার বিক্রম। অবতরণের সময়টা হতে হবে একেবারে নির্দিষ্ট, চাঁদের কোনো এক দিনের ঠিক সূচনায়। কারণ ল্যান্ডার আর রোভারের ব্যাটারি চার্জ হতে সূর্যালোক দরকার হবে। বিক্রম ঠিকঠাক চাঁদে নামতে পারলে এর পেট থেকে বেরিয়ে আসবে ছয় চাকার প্রজ্ঞান। চাঁদের পৃষ্ঠে ঘুরে ঘুরে সে পৃথিবীতে পাঠাবে তথ্য আর ছবি।
ইসরো প্রধান শ্রীধরা পানিকার সোমনাথ আশা করছেন, এই অভিযানে নতুন কিছু খুঁজে পাবেন তারা। কারণ চাঁদের যে অংশে চন্দ্রযান পৌঁছাতে চায়, সেই দক্ষিণ মেরু নিয়ে মানুষের গবেষণা খুব বেশি এগোয়নি। ছায়ায় ঢাকা ওই অঞ্চল চাঁদের উত্তর মেরুর চেয়ে অনেকটা বড়। ধারণা করা হয়, সবসময় অন্ধকারে থাকা ওই অঞ্চলে পানির অস্তিত্ব থাকতেও পারে।
সোমনাথ বলেন, আমরা যদি নতুন কিছুর সন্ধান পেতে চাই, তাহলে আমাদের চাঁদের এমন জায়গায় যেতে হবে, যে এলাকা নিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি। চাঁদের দক্ষিণ মেরু আমাদের সেই সুযোগ দিতে পারে। তবে ওই অংশে অবতরণের ঝুঁকিও অনেক বেশি।
অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার। কোনো কোনো পণ্যের দর রেকর্ড গড়েছে; বিশেষ করে আমদানিনির্ভর অনেক পণ্যের দাম ছাড়িয়ে যায় অতীতের সব রেকর্ড। গত মাসের শেষের দিকে প্রতি কেজি মরিচের দাম ছাড়িয়ে যায় হাজার টাকা। এর আগে থেকেই পেঁয়াজ, আদার দামেও অস্থিরতা চলছিল। মাঝে বাজার স্বাভাবিক রাখতে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। সে সময় হঠাৎ করেই নেমে আসে পেঁয়াজের দাম। পরে কাঁচা মরিচের ক্ষেত্রেও একই দৃশ্য দেখা যায়। তবে দাম কমার সেই সুফল পাননি ক্রেতারা। কারণ আমদানি শুরু হওয়ার পর বাজারে পণ্যের দর কমলে আমদানিকারকরা আমদানি বন্ধ করে দিচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজার তদারকি সংস্থার দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পণ্যের চাহিদা বাড়ান ব্যবসায়ীরা। সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে যথাযথ আমদানি না করে স্বেচ্ছাচারিতা চালান আমদানিকারকরা। ফলে ভোক্তার কোনো লাভ হয় না, বাজারেও খুব একটা প্রভাব পড়ে না।
এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার পণ্য আমদানির অনুমতি দিয়ে থাকে বাজারব্যবস্থাকে স্থিতিশীল রাখার জন্য। স্বভাবতই আমদানির অনুমতি নিয়ে ব্যবসায়ী তার লভ্যাংশের কথা চিন্তা করে আমদানি করবেন। কাউকে দিয়ে জোর করে আমদানি করানো ঠিক হবে না। তবে পণ্য আমদানির অনুমতি নিয়ে দাম কমলে আমদানি বন্ধ রাখা অন্যায়।
তিনি বলেন, বছরে পণ্যের চাহিদা কতটা রয়েছে, এর মধ্যে কৃষক কতটা উৎপাদন করতে পারছেন, কতটা ঘাটতি রয়েছে, সেই ঘাটতি কোন সময়ে শুরু হতে পারে, সে সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ঘাটতি থাকা পণ্য আমদানির অনুমোদন দিতে হবে। এর জন্য সরকারের মাঠপর্যায়ে গবেষণা করা উচিত। গবেষণা না থাকার কারণে কৃষক ও ভোক্তা সব সময় ঠকছেন। মাঝখান থেকে সুবিধা নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের তদারকির জন্য সংশ্লিষ্ট যে সংস্থ্যাগুলো রয়েছে তাদের জোরালো কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে বাজারব্যবস্থা নাজুক অবস্থায় রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর ১৫৫টি আমদানি অনুমতির বিপরীতে ৫৩ হাজার ৮০ মেট্রিকটন কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। বিপরীতে মাত্র ১ হাজার ৪২ টন মরিচ আমদানি করেছেন আমদানিকারকরা। একইভাবে পেঁয়াজের ক্ষেত্রে ৮৬১টি আমদানি অনুমতির বিপরীতে ৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৭৩ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আমদানি অনুমতির পরিপ্রেক্ষিতে মাত্র ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৭৩ মেট্রিকটন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইংয়ের পরিচালক ড. মো. রেজাউল করিম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভোগ্যপণ্যের বাজার স্বাভাবিক রাখতে ব্যবসায়ীদের পণ্য আমদানির জন্য আমরা আমদানিন অনুমোদন দিচ্ছি। দেখা যাচ্ছে কোনো অজানা কারণে আমদানির অনুমোদনের বিপরীতে খুবই কম আমদানি হচ্ছে। আইপি নিয়ে ব্যবসায়ীরা কেন পণ্য আমদানি করছেন তা ক্ষতিয়ে দেখার জন্য আমাদের এখতিয়ার নেই। যদি সেই অনুমোদন থাকত নিশ্চয়ই আমরা তা ক্ষতিয়ে দেখতাম। বাজারে পণ্যের দাম কমলে কেন ব্যবসায়ীরা আমদানি কমিয়ে বা বন্ধ করে দিচ্ছেন। তবে বাজার সমন্বয় করার জন্য আমাদের আলাদা বিভাগ রয়েছে। এ বিষয়ে তারা ভালো বলতে পারবেন।’
অবশ্য আনোয়ার হোসেন নামের এক আমদানিকারক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এবার ভারতের স্থানীয় বাজারে কাঁচা মরিচের দাম একটু বেশি। কাঁচা মরিচের তুলনায় পেঁয়াজের দাম অনেক কম। প্রতি কেজি মরিচ ১৪৫-১৫০ টাকায় আমদানি করে আমরা বিক্রি করি ১৭০ টাকায়। এর মধ্যে ২০ টন মরিচ আনলে পথেই ২-৩ টন নষ্ট হয়ে যায়। যার কারণে আমরা ১৫০ টাকার মরিচ ১৭০ টাকায় বিক্রি করি। এ ছাড়া আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করছি ২১-২২ টাকায়। তবে এই দুটি পণ্য খুচরা বাজারে ডাবল দামে বিক্রি হচ্ছে কেন সেই বিষয়ে আমাদের ধারণা নেই। সম্ভবত খুচরা ব্যবসায়ীরাই দাম বাড়িয়ে বিক্রি করেন।’ এই ব্যবসায়ী অবশ্য দাম কমার পর আমদানি কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজার সংযোগ সহকারী পরিচালক প্রণব কুমার সাহা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা পাইকারি মূল্যের ওপর যৌক্তিক মূল্য প্রদর্শন করে থাকি। সেই অনুযায়ী যেন বাজারে পণ্য বিক্রি হয় আমরা তার জন্য বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে থাকি। বছরজুড়ে আমরা মাঠপর্যায়ে ভোক্তা অধিকারসহ আমাদের জেলা শহরের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত হয়।’
তিনি বলেন, ‘যেকোনো কৃষিপণ্য আমদানি বিন্যাস বছরজুড়ে থাকে। এটি এমন নয় যে তারা সব পণ্য একবারে আমদানি করবেন। তবে যেসব ব্যবসায়ী আইপি অনুমোদন নিয়ে পণ্য আমদানি করছেন না, তাদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। বাজারে যেসব ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন তাদের বিষয় আমরা খুবই সতর্ক রয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবে অধিদপ্তর।’
তখন লোক লোকান্তর অথবা সোনালী কাবিন কাব্যগ্রন্থের সব কবিতা পড়ে ফেলেছি। পড়ে ফেলেছি বললে ভুল বলা হবে, প্রায় মুখস্থ করে ফেলেছি। তখন অল্পস্বল্প কবিতা লেখার চেষ্টা করি। তার কবিতা পড়তে পড়তে আমার মনে হতো অচেনা মেঘে মোড়ানো এক অভিযাত্রায় হারিয়ে যাচ্ছি। আল মাহমুদের সঙ্গে রাজনৈতিক মতের বিরোধ ছিল। কিন্তু তার কবিতা রীতিমতো শিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। আজও আল মাহমুদের কবিতা পাঠ করলে সেই একই অনুভূতি হয়। ৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে জেনারেল এরশাদের সরকার দেশ শাসন করছে। ছাত্র আন্দোলন আর বিরোধিতায় উন্মাতাল দেশ। আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলা চলছে বাংলা একাডেমিতে। ওই সময়ে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় সপ্তাহের সাহিত্য আয়োজনে চালু হয় ‘শামসুর রাহমান মনোনীত কবিতা’ বিভাগ। সেই বিভাগে একবার ছাপা হলো জেনারেল এরশাদের কবিতা। প্রায় সামরিক ফরমানের মতো হাজির হওয়া তার কবিতা সাপ্তাহিক বিচিত্রা ছাপতে বাধ্য হয়েছিল। ওই কবিতা ছাপা হওয়ার পর কবি শামসুর রাহমান গেছেন বইমেলায়। হঠাৎ কয়েকজন তরুণ রাজনৈতিক কর্মী এবং কবি তাকে ঘেরাও করে মেলায়। তাদের প্রশ্ন ছিল, এরশাদের কবিতা কেন শামসুর রাহমানের সম্পাদনায় ছাপা হয়েছে? আমি ঠিক ওই সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত। ঘটনার উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। আমি নিজেও ঘটনার আকস্মিকতায় অসহায়। ঠিক তখন সেই ব্যুহের মধ্যে প্রবেশ করেন কবি আল মাহমুদ। তিনি সেদিন উত্তেজিত তরুণদের ঘেরাও ভেঙে শামসুর রাহমানকে উদ্ধার করে বের হয়ে যান। অনেক পরে শামসুর রাহমান আর আল মাহমুদের পাল্টাপাল্টি কবি শিবিরের বিরোধিতার সময়ে আল মাহমুদকে ঘটনাটার কথা মনে করালে তিনি মৃদু হেসেছিলেন। তিনি মাঝে মাঝে মজা করে শামসুর রাহমানকে শামসু মিয়া বলে সম্বোধন করতেন। প্রশ্ন করতেন, ‘তোমাদের শামসু মিয়ার খবর কী?’ বছর চল্লিশ আগে সেই শহরে কবিদের মধুর বিরোধও ছিল। বড় বড় কবিরা ‘পদাবলী’ আর ‘কবি কণ্ঠ’ নামে দুটি সংগঠনে বিভক্ত হয়ে একে অপরের দিকে দূর থেকে বিদ্রুপের কামান দাগতেন।
মাহমুদ ভাইয়ের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতার সূত্রপাত একটা সাহিত্য পত্রিকার লেখা জোগাড় করার মধ্য দিয়ে। তিনি তখন শিল্পকলা একাডেমির একজন পরিচালক। দুপুরবেলা লেখা আনতে যাওয়ার কথা। আমি সময়মতো হাজির। দেখি তার দপ্তরের দরজা খোলা কিন্তু তিনি নেই। আশপাশের লোকজনকে প্রশ্ন করে জানতে পারি কবি আছেন, তবে আশপাশে কোথাও গেছেন। আমি একাডেমি প্রাঙ্গণে খানিক পায়চারি করে আবার তার কক্ষের সামনে উপস্থিত হয়ে দেখি দরজায় তালা ঝুলছে। হঠাৎ কেন জানি না আমার মনে সন্দেহ জেগে উঠল। একটু আড়ালে সরে গিয়ে দেখি মাহমুদ ভাইয়ের পিয়ন একটু পরে এসে দরজার তালা খুলে দিল। তখন ভেতরে কবি নিজের চেয়ারে উপবিষ্ট। বুঝলাম লেখাটা তৈরি হয়নি তাই আমাকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য এত কলাকৌশল। কিন্তু আমি পাওনাদারের মতো তার দরজায় গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম সেদিন। মাহমুদ ভাই ধরা পড়ে যাওয়ার সলজ্জ ভঙ্গিতে হেসে বলেছিলেন, ‘শোনো, তোমার লেখাটা এখনো শেষ করতে পারিনি। কাল একবার এসো।’
আমাকে বসিয়ে চা খাওয়াতে ভোলেননি তিনি সেদিন। কবিতা, লেখালেখি নিয়ে নানান কথা বলেছিলেন। লেখাটা সময়মতো না পাওয়ার বেদনা কেটে গিয়েছিল আমার।
আল মাহমুদ কালো আঙুর আর গরুর হালিম খেতে পছন্দ করতেন। রোজার মাসে তাকে দেখেছি পত্রিকা অফিসে বসে উপন্যাস লিখছেন। ইফতারের আগেই জেনে নিচ্ছেন এই দুটো আইটেম আছে কি না। সাপ্তাহিক পূর্ণিমা অফিসে ঈদ সংখ্যার জন্য উপন্যাস লিখতেন ওই অফিসে বসে। পুরান ঢাকার স্টারের গরুর মাংসের হালিম তার ইফতারের জন্য ছিল বাঁধা।
কবি আল মাহমুদের মধ্যে এক ধরনের অদ্ভুত ছেলেমানুষী ছিল। একদিন তার মগবাজারের বাসায় গেছি। উদ্দেশ্য, একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার জন্য সাক্ষাৎকার নেওয়া। কলম কাগজ গুছিয়ে বসতেই মাহমুদ ভাইয়ের হঠাৎ প্রশ্ন, ‘তুমি আমাকে নিউ মার্কেট নিয়ে যাবে?’ একটু থতমত খেয়ে গেলেও এক কথায় রাজি হয়ে গেলাম। সেদিন রিকশায় বাংলা কবিতার অসাধারণ পুরুষের সঙ্গে রিকশা ভ্রমণ সত্যিই ছিল অপূর্ব। মাহমুদ ভাই সেই শীতকালের রোদমাখা ছিমছাম সকালে সত্যি সত্যি আমার সঙ্গে রিকশায় চড়ে নিউ মার্কেট গেলেন। যেতে যেতে ঢাকা শহরে তার পুরনো স্মৃতি নিয়ে এলোমেলো অনেক গল্প করলেন। নিউ মার্কেটে গিয়ে সোজা ঢুকলেন জিনাত বুক সাপ্লাই দোকানটাতে। ঘুরে ঘুরে কিছুক্ষণ বই দেখে তারপর বললেন, ‘চলো, ফিরতে হবে।’ সেদিন সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল। রিকশায় যেতে যেতে অনেক কথা বলেছিলেন মাহমুদ ভাই। আমার আর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়নি। কিন্তু শোনা হয়েছিল কবির অবিশ্রান্ত অনেক কথা। মনে পড়ে তিনি বলেছিলেন, ‘শোন, কবিতা হচ্ছে অবিশ্রান্ত এক নদীর মতো। তুমি সেখান থেকে জল তুলতে চাইবে কিন্তু উঠবে না। শুধু সেই শূন্যতা, সেই না-পাওয়াটুকু কবিতা হয়ে থাকবে।’
আজ মাহমুদ ভাইয়ের স্মৃতি লিখতে গিয়ে মনে হলো, কবিতা এমনই এক প্রবাহ হয়ে আছে আমার কাছে। জল ওঠে না কিন্তু লেখা হয়ে যায় কবিতা। বাংলা কবিতার সেই রাজপুরুষের সঙ্গে পরেও আমার অনেক সাক্ষাৎ হয়েছে, গল্প হয়েছে। কিন্তু সেই সকালের স্মৃতি আজও আশ্চর্য হয়ে ফুটে আছে মনের আকাশে।
কবি আল মাহমুদের জন্মদিন ১১ জুলাই অতিক্রান্ত হলো। তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানাই আবারও।
পুলিশি তদন্তে ভাটা পড়ার সুযোগে সারা দেশে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইনে জুয়া চক্রের সদস্যরা। মোস্টবেট নামে একটি অনলাইন জুয়ার সাইট এরই মধ্যে বাংলাদেশকে টার্গেট করে প্রচারণা চালিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানী থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। অনলাইন জুয়াড়িদের এ সিন্ডিকেট মূলত করোনা মহামারীর সময় গোপনে বিভিন্ন ধাপে এজেন্ট নিয়োগ করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছিল। আর সেই অর্থ বিদেশে পাচারের তথ্যও উঠে আসে।
পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এ জুয়াড়ি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে। বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে আটজনকে গ্রেপ্তার করেন সিআইডি কর্মকর্তারা। ২০২১ সালে সিআইডির এ অভিযানে পর মোস্টবেটের তৎপরতা থেমে যায়। অন্যদিকে সিআইডির তদন্ত কার্যক্রমেও ভাটা পড়ে, যা এখনো গতি পায়নি। আর এ সুযোগে ধীরে ধীরে আবারও সক্রিয় হয় মোস্টবেট।
২০২১ সালে একইভাবে বেশ কিছু জুয়ার সাইটের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছিল সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি)। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সাইবার শাখাসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে সক্রিয় ছিল। তখন দেশে অনলাইন জুয়ার অবৈধ কর্মকাণ্ড অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তবে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে ওই জুয়াড়ি প্রতিষ্ঠানগুলো। ইউটিউব, ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানাভাবে চালানো হচ্ছে প্রচারণা। আবার প্রচারের জন্য বানানো কনটেন্ট বিভিন্ন অঞ্চল ও উঠতি বয়সীদের টার্গেট করে বুস্ট করাও হচ্ছে ব্যাপকভাবে। ফলে অনেকেই জুয়ায় আসক্ত হয়ে একদিকে তারা যেমন অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠছে, অন্যদিকে তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া টাকা পাচার হচ্ছে বিভিন্ন দেশে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশনস দলের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জুয়ার বিভিন্ন সাইটের বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া জুয়ার সাইটগুলো আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। শিগগিরই আমরা এসব জুয়ার সাইটের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করব।’
সিআইডির তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে তারা পাঁচটি মামলার তদন্ত করছেন। একটির তদন্ত শেষ হয়েছে, শিগগিরই আরও দুটি মামলার তদন্ত শেষ হবে। এ ছাড়া ওয়ানএক্সবেট, মোস্টবেটের মতো বেশ কিছু সাইট নিয়ে অনুসন্ধান চলছে। বর্তমানে জনপ্রিয় শতাধিক জুয়ার সাইট চলমান রয়েছে। জুয়ার সাইট মোস্টবেটের বিষয়ে জোরালোভাবে তদন্ত চলছে বলে জানান তারা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোস্টবেটের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা বর্তমানে জামিনে রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, জামিনে বের হয়ে তারা আবারও জুয়া পরিচালনায় যুক্ত হয়েছে। তদন্তে এ জুয়াড়ি প্রতিষ্ঠানটির তিনজন হোতাকে শনাক্ত করা হয়েছে। যারা মূলত এ সাইট পরিচালনায় পেছন থেকে কাজ করছে। তবে তারা এখন রাশিয়ায় অবস্থান করছে। এজন্য তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না।
সিআইডি জানিয়েছে, জুয়ার সাইটগুলোর মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা পাচারের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারা হুন্ডি, ক্রিপ্টোকারেন্সিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা পাচার এবং লেয়ারিং (অর্থ পর্যায়ক্রমে জটিল লেনদেনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরে সরিয়ে অর্থের উৎস গোপন) করেছে। অর্থ পাচারের তদন্তের জন্য নির্ধারিত ইউনিট সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম। অর্থ পাচারের প্রাথমিক প্রমাণের তথ্য তাদের পাঠানো হয়েছে। তবে এসব জুয়ার সাইটের বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত শুরু করেনি সিআইডির ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
গত বছর সংশ্লিষ্টরা এ প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন, মোস্টবেটে ব্যবহার করা কিছু মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের লেনদেন পর্যালোচনা করেছে বাংলাদেশে ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ডিএফআইইউ)। গত বছর জানুয়ারি থেকে ছয় মাসের লেনদেনে দেখা যায়, প্রতিটি এমএফএস অ্যাকাউন্টে মাসে গড়ে ৫০ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী নমুনায় থাকা পাঁচটি নম্বরে ছয় মাসে নেওয়া হয়েছে আনুমানিক ১৫ কোটি টাকা। ধারণা করা হচ্ছে, এভাবে শতকোটি টাকা একটি সাইটের মাধ্যমেই নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মোস্টবেটের সঙ্গে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তারের পর সে প্রায় ১ কোটি টাকা পাচার করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
সাইবার পুলিশের কর্মকর্তারা বলেন, প্রথমে জুয়াড়িরা এমএফএসের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে জুয়া সাইটের নিজস্ব কারেন্সি কেনে। এরপর সেই টাকা এমএফএসের ডিএসওর সঙ্গে যোগসাজশ করে ক্যাশ (নগদায়ন) করে জুয়ার এজেন্ট। পরে এজেন্ট চক্রের মূল হোতারা নিয়ন্ত্রিত লোকদের মাধ্যমে এ অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে।
অনলাইন জুয়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পেছনে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এসব অনলাইন প্ল্যাটফর্মে জুয়ার নানা ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বিটিআরসিকে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে বিকাশ, নগদ, রকেট, এমক্যাশসহ মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে যাতে জুয়ার অর্থ পরিশোধ করতে না পারে, সে বিষয়ে নির্দেশনা জারি করতে বলা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে। এর আগে এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে টিভি চ্যানেল ও সব অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে জুয়ার বিজ্ঞাপন অপসারণ ও প্রচার বন্ধে ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর ওই রুল জারি করা হয়, যা এখনো বিচারাধীন।
চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার থানাগুলোতে গত প্রায় ১৪ বছরে (২০০৯-১২ জুলাই, ২০২৩) নাশকতার অভিযোগে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হওয়া ১ হাজার ৯৪৩টি মামলার একটিও নিষ্পত্তি হয়নি। যদিও চলতি বছর ১৭ জানুয়ারি কাজীর দেউড়ি এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে কোতোয়ালি থানায় চারটি এবং সর্বশেষ গত ১৫ জুন জামালখান এলাকায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুরের অভিযোগে নগরীর চকবাজার ও কোতোয়ালি থানায় করা দুটি মামলা ছাড়া অবশিষ্ট মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দিয়েছে পুলিশ।
আদালতসংশ্লিষ্টরা বলেছেন, যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন না দেওয়া, সাক্ষী হাজির করতে না পারা এবং মামলার তারিখ নির্ধারণের ক্ষেত্রে সময় দেওয়া যথাসময়ে বিচারের পথে অন্তরায় হচ্ছে। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এসব মামলার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার তাগিদ থাকলেও ধীরগতিতে এগোচ্ছে বিচার কার্যক্রম। এ প্রসঙ্গে মহানগর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুর রশিদ বলেন, ‘নাশকতার মামলাগুলোর দ্রুত বিচার সম্পন্ন করে দোষীদের যাতে শাস্তির আওতায় আনা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নাশকতার অভিযোগে করা অধিকাংশ মামলা ট্রায়ালে (বিচার) আছে। রাষ্ট্রপক্ষ অপরাধ প্রমাণিত করবে। তবে এখন পর্যন্ত একটি মামলাও নিষ্পত্তি করা যায়নি।’
পুলিশ ও আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে চলতি বছরের ১২ জুলাই পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগর ও জেলার থানাগুলোয় বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর ৩৯ হাজার ৪৫৫ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ১ হাজার ৯৪৩টি। বেশি মামলা হয়েছে ২০১৩ ও ২০১৫ সালে সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে। মামলা হয়েছে জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে এসব মামলা হয়। যদিও নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এসব মামলা করেছে। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নেতাকর্মীদের ভয় দেখিয়ে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার জন্য এসব মামলা হয়েছে। বিগত ১৪ বছরে শুধু আমার বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে শতাধিক মামলা। এসব মামলায় হাজিরা দিতে কেটে যায় পুরো মাস, বছর।’
অবশ্য পুলিশের দাবি, রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো মামলা করা হয় না। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অন্যতম এক শীর্ষ কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো মামলা হয় না। কোনো ব্যক্তি বা দল যখন সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও জনগণের জানমালের ক্ষতিসাধন করে থাকে, তখনই এ ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে মামলা হয়। চট্টগ্রাম নগর বিএনপি বা জামায়াত-শিবিরের বেলায়ও তাই হয়েছে। এটা আমলযোগ্য অপরাধ।’
বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে হওয়া মামলার বিচারকাজ দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা চলছে বলে জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, ‘পুলিশকে যে গতিতে নাশকতার বিরুদ্ধে মামলা করতে দেখা যায়, তদারকি করার ক্ষেত্রে তেমন গতি দেখা যায় না।’
এদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির মামলা ও তথ্য সংরক্ষণবিষয়ক কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন খান জানান, গত প্রায় ১৪ বছরে চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ১৩ হাজার ৫২২টি। এসব মামলায় আসামি হয়েছে ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩৫ জন। সারা দেশে গত ১৪ বছরে নাশকতার অভিযোগে মামলা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬৭টি। এসব মামলায় আসামি ৪৯ লাখ ৮০ হাজার ৮২৬ জন। যার মধ্যে অগ্নিসংযোগ, বাস পোড়ানো, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস, পুলিশ পিটিয়ে হত্যা, বাসে আগুন লাগিয়ে মানুষ ও পশু হত্যা ইত্যাদি ধরনের নাশকতামূলক মামলা রয়েছে।
নাশকতার মামলায় জমা দেওয়া একাধিক চার্জশিট বিশ্লেষণ করে সিএমপির প্রসিকিউশন শাখার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রায় ১৪ বছরে নাশকতার একটি মামলাও নিষ্পত্তি হয়নি। অধিকাংশ মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়েছে অনেকটা দায়সারা। এসব মামলায় আদালতে শক্ত যুক্তি-সাক্ষী দাঁড় করানো যাবে না। বেশ কিছু মামলা ট্রায়ালে থাকলেও সেসব মামলায় যথাসময়ে সাক্ষী আদালতে উপস্থিত করতেও পারছে না তদন্তকারী সংস্থা। লম্বা তারিখ পড়ছে মামলাগুলোর। ফলে দীর্ঘদিনেও বিচারকাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না।
জানা গেছে, নাশকতার অভিযোগে নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনের বিরুদ্ধে আছে ১০৪টি মামলা। নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেমের বিরুদ্ধে আছে ৭২টি মামলা। নগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী সিরাজ উল্লাহর বিরুদ্ধে আছে ১৩৫টি মামলা। নগর বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, পুলিশ আদালতে চার্জশিট দিলেও অনেক মামলার তদন্ত ছাড়াই চার্জশিট হিসেবে পুরো এজাহার তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে সিএমপি কর্র্তৃপক্ষ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
চলমান সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগে খেলতে নেমে দুই দলের মাঝে হাতাহাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিজেদের শেষ ম্যাচে আজ শুক্রবার রাত দশটার দিকে মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামের ক্রিজে নেমেছিলেন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ ও দীপঙ্কর দীপনের টিম।
খেলা চলাকালীন সময়ে দীপঙ্কর দীপনের দলের খেলোয়াড়দেরকে প্রথমে উস্কানি দিতে থাকে রাজের টিম। এরপর তাদের দলের লোকজন এসে দীপনের টিমের এক প্লেয়ারকে মাঠ থেকে তুলে নিয়ে মারধর করতে থাকে। এরপর দীপনের টিমের খেলোয়াড়রা উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং চেয়ার ছুঁড়াছুড়ি শুরু করে। এক পর্যায়ে দুই দলের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।
দীপনের দলের খেলোয়াড়দের একজন অভিনেতা মনির হোসেন শিমুল অভিযোগ তুলে বলেন, তারা বাইরে থেকে সন্ত্রাসী এনে আমাদের উপর আক্রমণ শুরু করে। এটা কোন ধরণের সিসিএল খেলা?
অন্যদিকে একই দলের আরেক খেলোয়াড় চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী বলেন, রাজ ভাইয়ের টিম থেকে আমাদের দলের উপর আক্রমণ শুরু করে। তারা বাইরে থেকে লোকজন নিয়ে এসেছে। আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে একজনকে তুলে নিয়ে মারধর করতে শুরু করে। এরমধ্যে মৌসুমী হামিদ আহত হন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোস্তফা কামাল রাজের দলের পক্ষ থেকে অভিযোগটি অস্বীকার করা হয়। তারা জানান, প্রয়োজন মনে করলে তারা পরে মন্তব্য দেবেন।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে উৎসাহ দিতে তিনদিন ব্যাপী সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগ (সিসিএল) আয়োজন করা হয়েছে। এতে মোট ১৬ টি দল অংশ নিয়েছে। আগামীকাল ফাইনালের মধ্য দিয়ে এ আসর সমাপ্ত হবে।
মূল লড়াইয়ের আগে গা গরমের খেলা। সেখানে ব্যাটসম্যানরা ছিলেন আগ্রাসী। তাতে পাকিস্তান পায় ৩৪৫ রানের বড় সংগ্রহ। তারপরও জিততে পারল না। নিউজিল্যান্ড জয় তুলে নিয়েছে ৩৮ বল হাতে রেখেই।
পাকিস্তানের ব্যাটারদের মধ্যে সেঞ্চুরি পেয়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৯৪ বলে ১০৩ রান করে অবসর নেন তিনি। এছাড়া বাবর আজম ৮০ ও সৌদ শাকিল ৭৫ রান সংগ্রহ করেছেন।
পাকিস্তানের দেয়া ৩৪৬ রানের জবাব দিতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে নিউজিল্যান্ড।
কিউই ব্যাটারদের মধ্যে ওপেনিংয়ে নামা রাচিন রবীন্দ্র ৭২ বলে ৯৭ রান সংগ্রহ করে দলের জয়ে বড় অবদান রাখেন। এছাড়া দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা কেন উইলিয়ামসন ৫৪, ড্যারেল মিচেল ৫৯ আর মার্ক চাপম্যান ৬৫ রান করে দলকে ৫ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন।
নিজের গান দিয়ে ইউটিউব চ্যানেলের যাত্রা শুরু করলেন ক্লোজআপ তারকা নোলক বাবু।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বনশ্রীর এক রেস্তোরায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলের উদ্বোধন করেন এ গায়ক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার মা।
নোলক বাবুর ইউটিউব চ্যানেলে উন্মুক্ত হয়েছে তার নতুন গান 'মানুষ'। গানের কথা লিখেছেন তরুন সিং, সুর করেছেন শিল্পী নিজেই। গানটির সংগীতায়োজন হৃষিকেশ রকি।
নোলক বাবু বলেন, গানটি গাইতে পেরে আমি মুগ্ধ।
গোটা দেশ এখন দুই ভাগে বিভক্ত। একদল সাকিব আল হাসানকে শূলে চড়াচ্ছে, অন্যরা তামিম ইকবালকে। অথচ জাতীয় ক্রিকেট দল ভারতে গেছে বিশ্বকাপ খেলতে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে খোঁচাখুঁচি। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ খেলতে নেমেছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে। যে উদ্বোধনী জুটি নিয়ে এত দ্বিধা আর সংকোচ, যে কারণে তামিম না থাকায় এত হাহাকার, সেখানেই কিনা বাজিমাত করে পুরো জাতিকে অন্য এক বার্তা দিলেন তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস।
বিশ্বকাপের দলে যে তামিম ইকবাল থাকছেন না, সেটা জানা গিয়েছিল আগের দিনেই। তবু ক্রিকেট ভক্তদের মনের এক কোণে ক্ষীণ আশা ছিল। ওপেনারদের টানা ব্যর্থতার কথা বিবেচনায় হলেও এই ব্যাটসম্যান থাকবেন বলে ছিল তাদের। কিন্তু সেই আশার গুড়ে বালি। তাকে দলে না রাখায় অবশ্য রাস্তায় জনতার ঢল নামেনি, রাজপথে হয়নি কোনো সভা-সমাবেশ। তবে নতুন যুগের দেয়ালে দেয়ালে ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবাদী নিন্দার বাণী। হাল জামানায় যাকে ‘টাইমলাইন’ বলে সম্বোধন করা হয়।
সেই সব প্রতিবাদী স্ট্যাটাসও দুই ভাগে বিভক্ত। কেউ সাকিব আল হাসানের পক্ষে, কেউবা তামিম ইকবালের। একদল পরিসংখ্যান-পর্যালোচনা দিয়ে বোঝাতে ব্যস্ত যে এই যুগে তামিমের কৌশল ‘ওল্ড স্কুল’। ওসব এখন আর চলে না। অন্য দল ১৭ বছরের ইতিহাস আর আবেগ নিয়ে হাজির। তাদের কাছেও আছে পরিসংখ্যান। সেটা গত কয়েক বছরের তামিমের ওপেনার সঙ্গীদের একটা তালিকা। তারাই শূলে চড়াচ্ছেন সাকিব-হাথুরু থেকে শুরু করে বিসিবির শীর্ষ কর্তাদের।
বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে সাকিব ক্রীড়াভিত্তিক একটি টিভি চ্যানেলকে দিয়ে গেছেন সাক্ষাৎকার। সেখানে তিনি সরাসরি তামিমের সমালোচনা করেছেন। এই ওপেনার যে দলের প্রয়োজনে পজিশন পরিবর্তনে রাজি হতে চান না, সেই মানসিকতা বাচ্চাদের মতো বলে সমালোচনা করেছেন টাইগার অধিনায়ক। এমনকি তার স্পোর্টসম্যানশিপ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তার আগে তামিম নিজে একটা ভিডিও বার্তায় বলেছেন তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা। মাশারফী বিন মোর্ত্তজাও ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। তাতে করে ক্রিকেটাঙ্গনে এখন যেন ভিডিও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ক্রিকেট নিয়ে জাতির অবস্থা যখন এমন, তখন ভারতের গোয়াহাটিতে বাংলাদেশের ক্রিকেট দল। আসাম রাজ্যের রাজধানীর বরষাপাড়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম উদ্বোধনী ম্যাচ খেলতে নেমেছিল তারা। ছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, নাজমুল হোসেন শান্তও ছিলেন না থাকার মতো করেই। প্রথম গা গরমের ম্যাচে তাই নেতৃত্ব দেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
টসভাগ্যে মিরাজের পরাজয়ের পর বল হাতে নামে বাংলাদেশ। টানা ৪০ ওভার টাইগারদের বোলারদের যেন শাসন করছিলেন লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। ঐ সময় পর্যন্ত ৫ উইকেট হারালেও তারা করে ২০২ রান। তারপরই যেন ঘুরে দাঁড়ান টাইগার বোলাররা। শেষ ১০ ওভারের ৫ বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। ২৬৩ রানের বেশি তারা করতে পারেনি।
২৬৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নামা বাংলাদেশের হালটা যে সুখকর হবে না, মুহূর্তেই ধসে পড়বে ব্যাটিং লাইনআপ। সিনিয়রদের কাউকে এসে হাল ধরে নিয়ে টেনে নিয়ে যেতে হবে দলকে। খাঁদের কিনারা থেকে টেনে তুলে হয় জয়, নয়তো সম্মানজনক হার! এমনটাই ছিল অনুমিত। আমরা যে এতেই অভ্যস্ত।
কিন্তু তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস সব অনুমান ভুল প্রমাণ করে দেন। যে ওপেনিং জুটি বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছিল, যে সমস্যার কারণে চোট প্রবণ তামিম ইকবালকেও সবাই চাইছিলেন দলে। সেটাই কিনা তারা প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে ভুলিয়ে দিলেন! উদ্বোধনীতে তারা গড়েন ১৩১ রানের জুটি। তাতে ১৩ ম্যাচ পর বাংলাদেশ ওপেনিংয়ে শতরানের জুটি দেখতে পেয়েছে। হোক সেটা প্রস্তুতি ম্যাচ, তবুও তো লড়াই!
সবচেয়ে বড় স্বস্তি লিটন-তানজিদের রানে ফেরা। এশিয়া কাপের আগে জ্বরে ভুগছিলেন লিটন। সেই জ্বরের ধকল কাটিয়ে উঠতে তার সময় লেগেছে। মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে যেতে হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর চোটের কারণে। কিন্তু নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। এই টুর্নামেন্টে ২ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তানজিদ। কিন্তু তিনিও প্রত্যাশা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজেও।
তাই বিশ্বকাপের দলে তামিম ইকবালকে বাদ দেওয়াতে ঝড় উঠেছিল। সেই ঝড় চলমান ছিল আজ দুপুর অবধি। অনেকেই ভেবে রেখেছিলেন, এই জুটি ব্যর্থ হবে। যা ধারাবাহিক থাকবে টুর্নামেন্টের শুরুতেও। তারপর বিশ্বকাপের মাঝপথে আচমকা ডাক পেয়ে তামিম ইকবাল উড়াল দেবেন ভারতে। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলে। সেবার জাভেদ মিয়াঁদাদকে ছাড়াই তারা বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিল। কিন্তু ব্যাটারদের ব্যর্থতার কারণে তাকে মাঝপথে উড়িয়ে নেওয়া হয়েছিল, এবং বিশ্বকাপ জিতেছিল।
এমন স্বপ্ন বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটভক্তরাও দেখতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু তানজিদ তামিম আর লিটনের জুটি বদলে দিয়েছে সব হিসেব-নিকেশ। তামিমের ফেরার প্রত্যাশায় যারা গুনছিলেন প্রহর, তাদের মাথায় যেন এবার আকাশ ভেঙে পড়েছে। কারণ তারা যে রানে ফিরেছেন। যুববিশ্বকাপজয়ী তামিম খেলেছেন ৮৪ রানের একটি ইনিংস। ৮৮ বলে যা সাজানো ছিল ১০টি চার ও ২টি ছক্কায়। অন্যপ্রান্তে লিটন ৫৬ বলে ১০ চারে খেলেছেন ৬১ রানের ইনিংস। শুধু কি তাই! এদিন তিনে নেমেছিলেন মিরাজ। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬৭ রান। ৬৪ বলের হার না মানা ইনিংসটি সাজানো ছিল ৫ চার ও ২ ছক্কায়।
পঞ্চপান্ডবের পরের প্রজন্ম তো তারাই। যাদের ব্যাটে শুক্রবার বরষাপাড়ায় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তাদের রানে ফেরা যেন নতুন দিনের বার্তা দেয়। যে বার্তা আগামীর পথচলার। যেখানে পুরনোকে আকড়ে ধরে রাখার প্রবণতা ক্ষীণ হয়ে আসার বার্তা। সহজ কথায়, তরুণদের রানে ফেরাতে মিয়াঁদাদ হওয়ার সুযোগ আর হচ্ছে না তামিম ইকবালের।
আল নাসরে প্রথম মৌসুমটা ভালো না কাটলেও দ্বিতীয় মৌসুমের শুরু থেকেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো আছেন দারুণ ছন্দে। নিজে গোল করে দলকে জেতাচ্ছেন, সতীর্থদের দিয়ে গোল করাচ্ছেন।
শুক্রবারও সৌদি প্রো লিগে আল তা’য়ির বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে আল নাসর। এ ম্যাচেও রোনালদো গোল করেছেন এবং করিয়েছেন। তবে তাঁকে নিয়ে বেশি আলোচনা তালিসকার গোলটিতে অসাধারণ এক অ্যাসিস্টের জন্য। অ্যাসিস্টটিতে যে সবার মন ভরিয়ে দিয়েছেন রোনালদো।
তা’য়ির মাঠে আল নাসর গতকাল শুরুটা করেছে দারুণ। একের পর এক আক্রমণে স্বাগতিক দলের রক্ষণ করে দিয়েছে এলোমেলো। ম্যাচের শুরুর দিকেই রোনালদোর দুর্দান্ত একটি প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন তা’য়ির গোলকিপার। এ ছাড়া রোনালদোও খুব কাছ থেকে পাওয়া একটি সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি।
তবে ৩২ মিনিটে এগিয়ে যায় আল নাসর। গোলটি করেছেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার অ্যান্ডারসন তালিসকা। গোলটিতে রোনালদো অ্যাসিস্ট করেছেন অসাধারণ এক বাই-সাইকেল কিকে। সৌদি প্রো লিগে এ মৌসুমে এটা রোনালদোর পঞ্চম অ্যাসিস্ট।
খেলার স্রোতের বিপরীতে ৭৯ মিনিটে সমতায় ফেরে তা’য়ি। কিন্তু সমতা বেশিক্ষণ থাকেনি। ৩ মিনিট পরই পেনাল্টি থেকে আল নাসরের জয়সূচক গোলটি করেছেন রোনালদো। সৌদি প্রো লিগে এ মৌসুমে এটা ৭ ম্যাচে তার ১০ নম্বর গোল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৫ ম্যাচ খেলে করেছেন ১৬ গোল।
এই জয়ের পর ৮ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে আল নাসর। আল ফেইহার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করা আল ইত্তিহাদ সমান ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে। ৮ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে আল তা’য়ি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিএনপি নেতারা।
তারা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জার্মানিতে নেওয়ার কথা ছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সে সময় শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। এবার চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছি। জার্মানিতে খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে আমরা তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাব। জার্মানিতে তার ভালো চিকিৎসা হবে।’
এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সম্ভব জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তার স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ফলে তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লিভার সমস্যার কারণে ম্যাডামের শ্বাস কষ্ট হয়। ইতোমধ্যে তাকে দুইবার করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল। লিভার প্রতিস্থাপন করতে পারলে শ্বাসকষ্টটা হতো না।’
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ না থাকায় তার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি এখন সামনে এসেছে।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়া হতে পারে এমন খবরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও খোঁজখবর নিচ্ছেন জার্মান বিএনপি নেতারা।
জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়া বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জার্মানিতে ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হতে পারে বলে জানতে পেরেছি। আমরা খুবই খুশি। কারণ জার্মানিতে আসলে আমরা তার চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করতে পারব। চেয়ারপারসনের যে চিকিৎসা দরকার তা সকল ব্যবস্থা জার্মানিতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের মুক্তি, তার উন্নত চিকিৎসা ও গণতন্ত্র ফেরাতে দেশে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জার্মানিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৯ অক্টোবর আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। জার্মান বিএনপির উদ্যোগে রোডমার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব জার্মান পার্লামেন্টের সামনে। ’
আকুল মিয়া বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন বিদেশে নেওয়ার আলোচনা চলছিল তখনও জার্মানিতে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় তারেক রহমানের সেবা করতে না পারলেও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সেবা করতে পারব বলে আশা করছি। তার চিকিৎসা জার্মানিতে করতে পারলে আমরা ধন্য হবো।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামত জানতে চেয়ে আবেদনের কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রাতটা পোহালেই বাংলাদেশ দল উড়াল দেবে ভারতের গোয়াহাটিতে। তবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি দল। বিসিবি জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে চলমান তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচ শেষেই জানানো হবে বিশ্বকাপের দল।
প্রচুর আলোচনা ও জল্পনা–কল্পনার পর আজ বিশ্বকাপে নিজেদের স্কোয়াড ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির ফেসবুক পেজে আজ দুপুর ১টা ২৮ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায় বিসিবির লোগোসংবলিত বক্সে করে গুরুত্বপুর্ণ কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিডিও–র শেষে প্রশ্ন করা হয়েছে, বলুন তো ভেতরে কি?
বিকেল ৫টা ৪৩ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় সন্ধ্যা পৌণে ৬টায় ঘোষণা করা হবে দল। কিন্তু ৫টা ৪০ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় তৃতীয় ওয়ানডের শেষেই দল ঘোষনা করা হবে।
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালও জামিনের আবেদন করছেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কারাগারে থাকা হেলালের বিরুদ্ধে আছে অন্তত এক ডজন মামলা। বেশিরভাগ মামলায় জামিন হয়ে গেছে। এই দুজনের মতোই কারা হাজতে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসেন না আদালতে। তারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। অনেকেই অসুস্থ না হয়েও বছরের পর বছর হাসপাতালে আরামে
থাকছেন। বাইরে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকছে। এই সহযোগীরাই তাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছেন।
পুলিশের তালিকায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম আছে যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এই তালিকায় সুইডেন আসলাম নেই। তালিকা করা হয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন। কারাগারে আছেন ৬ জন, মারা গেছেন ৩ জন। একজনের কোনো হদিস নেই।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটজনকে ১ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান র্যাবের ক্রসফায়ার, গণপিটুনিতে আলাউদ্দিন ও কামাল পাশা ওরফে পাশা কারাগারে মারা গেছেন। কালা জাহাঙ্গীর বেঁচে আছেন নাকি আত্মগোপনে, কেউ বলতে পারছেন না। পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল ও কিলার আব্বাস কারাগারে আছেন। খোরশেদ আলম ওরফে রাশু কিছুদিন আগে ছাড়া পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আবার আটক করেছে। মশিউর রহমান কচি, সুব্রত বাইন, আমিন রসুল সাগর. ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ, শামীম আহমেদ, হারিস আহমেদ, তানভিরুল ইসলাম জয়, জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ এক পথচারী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্ডারওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব কটি ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারাগার কর্তৃপক্ষকেও হাজতি ও বন্দি সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তাদের একটি তালিকা করেছে একটি সংস্থা। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তারা কারাগারকেই নিরাপদ মনে করছে।
কারা সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম একটি মামলায় জামিন না নেওয়ায় কারাগারে আছেন। বাকি সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। ২৭ বছরের কারাজীবনে তার দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কেটে যাচ্ছে হাসপাতালে থেকেই। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করেন সব সময়। মোবাইল ফোনে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করেন সহযোগীদের সঙ্গে। তার স্ত্রী আয়েশা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সুইডেন আসলামের বিষয়ে তার এক আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে বলেন, এলাকায় তার যখন একক আধিপত্য ছিল, তখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তারাই এখন তার বিরুদ্ধে। সুইডেন আসলাম বের হয়ে এলে প্রতিপক্ষরাই তাকে মেরে ফেলবে, এমন শঙ্কা আছে। এসব দিক বিবেচনা করেই তিনি বের হতে চাইছেন না। কারাগারেই তিনি ভালো আছেন।
জানা গেছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায় না। ১৯৮৬ সালে তিনি অপরাধ জগতে যুক্ত হন। ওই বছর পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যাকা-সহ নানা অপরাধের তথ্য বের হয়ে আসে। এরই মধ্যে নিজেকে রক্ষা করতে সুইডেন চলে যান। বছর পাঁচেক ওই দেশে থেকে আবার ফিরে আসেন দেশে। তারপর সুইডেন শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৪ সাক্ষীর মধ্যে পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। বাকিরা আর আসেননি এবং এই মামলায় তিনি জামিনও নেননি।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও আসলাম মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। স্ত্রী আয়েশা আকতার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বলা চলে রাজার হালেই আছেন তিনি।
মিরপুর ও কাফরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ২২ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি মামলার জামিন হয়েছে। একটি মামলার জামিন হতে বাকি আছে। তা ছাড়া কমিশনার নিউটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ হলেও উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আরেকটি মামলার শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিলার আব্বাসের এক সহযোগী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করে আসি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছেন না। জামিন চাইলে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু ভাই তা করবেন না। কারণ প্রতিপক্ষ সক্রিয় আছে। তার প্রাণ শঙ্কা আছে। আমরা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় জামিন নিয়ে ভাইকে বের করে আনতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেক সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও প্রায় সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। শুধু একটা মামলার জামিন বাকি আছে। তিনি যখন কারাগারে, তখন বিএনপি তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। অথচ হেলাল বিএনপির রাজনীতি করেন। জেলে বসেই মোহাম্মদপুর, আদাবর ও ধানম-ি, মিরপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদতের ভালো যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন তারা। তার আরেক সহযোগী হাবিবুর রহমান তাজ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। মামলার সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। ইচ্ছে করে জামিনও নিচ্ছেন না তাজ। গ্রেপ্তারের আগে দীর্ঘদিন ভারত পালিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীর কাফরুলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তা ছাড়া কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে মোমিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত তাজ। মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলামের আশ্রয়-প্রশয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক বছর আগে ওসি রফিক মারা যান।’
মতিঝিলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে আটক আছেন তিনি। একবার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে ফেলে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা বাদে সব কটিতে জামিন পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে ইচ্ছা করে জামিন নিচ্ছেন না বলে তার এক স্বজন জানিয়েছেন।
সেভেন স্টার গ্রুপের একসময়ের সদস্য ফ্রিডম সোহেল ধানম-ি ৩২ নম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। সাজা কমিয়ে কারাগারেই থাকার চেষ্টা করছেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি মামলায় সাজা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জামিন নিচ্ছেন না।
তার সহযোগী পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসী রাশু কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। তার এক স্বজন দেশ রূপান্তরকে জানান, মাস দুয়েক আগে সর্বশেষ মামলায় জামিন হয় রাশুর। তার কোনো ইচ্ছা ছিল না কারাগার থেকে বের হওয়ার। আর এ কারণে ইচ্ছা করেই একটি সংস্থাকে কারাগার থেকে বের হওয়ার তথ্য দিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। কারণ তিনি বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মেরে ফেলবে এমন আশঙ্কা ছিল। আরেক সন্ত্রাসী লম্বু সেলিম একটি মামলা বাদে সব মামলায় জামিনে আছেন। ভারতের কলকাতা থেকে তাকে পুশব্যাক করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে থাকেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে জেল থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসীদের কর্মকা- রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কৌশলে কাজ করছে। তারা সরগরম হলেও কাজ হবে না। যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা চলছে। যারা দেশে আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ-র্যাব কাজ করছে। তবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কেউ বিশ্ঙ্খৃলা তৈরি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী জামিন না নিলে এটা আমাদের করার কিছু নেই। তবে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চোরাকারবারিসহ ভিন্ন ধরনের অপরাধীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছেন। তাদের নির্দেশে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছেন তারা। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ডের পেছনে বিদেশ কানেকশন।
২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে আত্মগোপন করে আছেন। টিপু হত্যাকান্ডের পর তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। দুবাইয়ে থাকলেও ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তার। জিসানের সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক ভারতে পালিয়ে আছেন। কিন্তু দেশে তার দখলবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইন ভারতে থেকে সক্রিয় আছেন। তানভীর ইসলাম জয়ও সক্রিয় আছেন। কলকাতা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ঘুরে তার অবস্থান এখন থাইল্যান্ডে। সেখানে বসেই তিনি কলকাঠি নাড়ছেন।
লাক্সারিয়াস জীবন পাওয়ার জন্য এখন মানুষ দিনরাত শুধুই কাজ করে চলেছেন। যার মধ্যে অফিস ডেস্কে বসে কাজ করেন এমন মানুষের সংখ্যা একেবারে কম নয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেয়ারে বসে ল্যাপটপের সামনে তাকিয়ে থাকা রীতিমতো যন্ত্রণাদায়ক।
শুধু তাই নয়, এটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। যারা অফিসে ডেস্কে কাজ করেন তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
সারাদিন যারা ডেস্কে বসে কাজ করেন তাদের অন্যতম অভিযোগও এটি। তারা বলে থাকেন, চেয়ারে বসে কাজ করে মোটা হয়ে যাচ্ছি! তবে এই অজুহাতকে একেবারে সত্য বলার সুযোগ নেই। কারণ ডেস্কে বসে কাজ করেও স্লিম ও ফিট থাকা সম্ভব। এজন্য মেনে চলুন পাঁচটি টিপস।
হাঁটুনফিট ও কর্মক্ষম থাকতে নিয়মিত হাঁটুন। দিনের পর দিন দীর্ঘ সময় বসে থাকলে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। সুস্থ থাকতে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। এমনকি কাজের ফাঁকেও ১০ মিনিটের ব্রেক নিয়ে হেঁটে আসতে পারেন।
সোজা হয়ে বসুনচেয়ারে মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসুন। মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলোতে অনেক চাপ পড়ে, সেই সঙ্গে চাপ পড়ে মেরুদণ্ডের পাশের মাংসপেশি ও লিগামেন্টের ওপর। কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় মনিটরটি চোখের সমান স্তরে রাখুন। মাউস ব্যবহার করার সময় শুধু আপনার কব্জি নয় পুরো হাত ব্যবহার করুন।
চাপ এড়িয়ে চলুনএটা খুব কঠিন কাজ, চাপমুক্ত থাকা। বিশেষ করে যখন চারপাশ থেকে নানা ধরনের চাপ আসতে থাকে। তবে মানসিক স্থিরতা ধরে রাখুন, নিজেকে মোটিভেট করুন। কোনও চাপই বেশি দিন থাকে না, এগুলো নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে নিজের কাজে মনোযোগ বাড়ান। এক্ষেত্রে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে অনলাইনে কিছু যোগা শিখে অভ্যাস করুন।
চোখের যত্নকম্পিউটারে কাজ করার সময় স্ক্রিনে একটানা ১০-১৫ মিনিটের বেশি তাকিয়ে থাকবেন না। নিয়মিত চোখের পাতা ফেলুন। স্ক্রিনে পর্যাপ্ত আলো রাখুন, যেন চোখের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে।
হাড়ের যত্ন বসে থাকার ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ক্যালসিয়ামের ঘাটতিও হতে পারে। এজন্য নজর দিতে হবে প্রতিদিনের খাবারে স্বাভাবিক খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ডিম, দুধ, দই ও বাদাম রাখুন।