
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান। গত ১৩ বছর ধরে একই পদে চাকরি করছেন। একই উপজেলার দৌলখাঁড় গ্রামের মৃত আবদুল কাদেরের ছেলে তিনি। নিজ এলাকায় কর্মস্থল হওয়ার সুবিধা নিয়ে দাপটের সঙ্গে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১০ সালের ২৫ আগস্ট নাঙ্গলকোট উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন মোহাম্মদ শাহজাহান। সরকারি বিধি অনুযায়ী তিন বছর পরপর বদলির বিধান থাকলেও কোনো এক অদৃশ্য শক্তির কারণে নিজ উপজেলায় এক কর্মস্থলে ১৩ বছর রয়েছেন বহাল তবিয়তে। আর নিজ এলাকা কর্মস্থল হওয়াই ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েন নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে। তার বিরুদ্ধে রয়েছে যুবকদের প্রশিক্ষণের ভাতা আত্মসাৎ এবং ঋণ পেতে প্রতি লাখে ৫ হাজার টাকার ঘুষ-বাণিজ্যের।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে যুব অধিদপ্তরের মাধ্যমে উপজেলার ২৪ থেকে ৩৫ বছর বয়সী বেকার যুবক-যুবতীদের ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিজন প্রশিক্ষণার্থীকে মাসে ৬ হাজার টাকা ভাতা প্রদান করা হয়। কিন্তু এ প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া থেকে বাদ যায়নি ১৬-১৭ বছরের কিশোর ও চল্লিশোর্ধ্বরাও। ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া একাধিক যুবক অভিযোগ করে বলেন, নামে-বেনামে ও আত্মীয়স্বজনের নামে এ কর্মসূচির ভাতার টাকা উত্তোলন করেন শাহজাহান। আর এসব দুর্নীতির মাধ্যমে কামানো টাকা দিয়ে নাঙ্গলকোট পৌর সদরের কোরবান আলী বেকারির পেছনে ১৮ শতক জায়গা কেনেন তিনি। যার বাজারমূল্য কমপক্ষে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ ছাড়া কুমিল্লা কর্ণফুলী হাউজিংয়ে কিনেছেন ৮ শতক জায়গা। যার দাম কমপক্ষে ১ কোটি টাকা। আর গ্রামের বাড়িতে গড়েছেন আলিশান দালান ঘর, যদিও শাহজাহানের দাবি, বাড়িটি তার ভাইয়ের। এর বাইরেও নিজ এলাকায় নামে-বেনামে তিনি আরও জায়গা কিনেছেন বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক ব্যক্তি। তারা বলেন, আপন ছোট ভাই ইমাম হোসেনকে ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে দৌলখাঁড় ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করেন শাহজাহান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুবক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘শাহজাহান স্যার আমাদের কাছ থেকে প্রতিটি যুব লোনের (ঋণ) জন্য ৫ হাজার টাকা করে নেন। টাকা না দিলে কোনো লোন হবে না বলে ফিরিয়ে দেন। আবার প্রশিক্ষণ ভাতার টাকাও কম দেন।’
ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় চাকরি করা আরেকজন যুবক বলেন, ‘শাহজাহান স্যারের বাড়ি এখানে। সেজন্য ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচির আওতায় নিজের স্ত্রী, বোন ও ভাইকে চাকরি দেন। নামে-বেনামে চাকরি দিয়ে অনেক টাকা উত্তোলন করেন তিনি।’
তবে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে একটি লোন দিয়েছি বা প্রশিক্ষণের টাকা আত্মসাৎ করেছি কেউ প্রমাণ দিতে পারলে অফিস করব না আর।’
বিভিন্ন জায়গায় জমি কেনার টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাড়িতে আমার একটি ঘরও নেই। অন্যের ঘরে থাকতে হয়। পৌরসভাতে একটু জায়গা কিনি, এর বাইরে আর কিছু না।’
নিজ উপজেলায় এবং টানা ১৩ বছর একই কর্মস্থলের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শাহজাহান বলেন, ‘এটি আমার ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের বিষয়। তারা যখন বদলি করবে তখনই চলে যাব। আর আপনারা সাংবাদিকরা চাইলে আজকেই চলে যাব।’
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান মেহেবুব বলেন, ‘আমি এখানে নতুন আসছি। তারপরও কেউ অভিযোগ দিলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহজাহানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কুমিল্লা জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সামছুজ্জামান বলেন, ‘১৩ বছর এক কর্মস্থলেÑ এটা অধিদপ্তরের বিষয়। তার (মোহাম্মদ শাহজাহান) বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলে তা জানালে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’ পরে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আজহারুল ইসলাম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা-১৭ আসনের নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে মারধরের ঘটনায় সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে এতটা দেওলিয়া হয়ে গেছে যে, হিরো আলমকে পর্যন্ত তারা সহ্য করতে পারে না। গতকাল সোমবার বিকেলে খুলনা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো সোনালী ব্যাংক চত্বরে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা- ১৭ আসনের নির্বাচনে ওখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আছে একজন। হেভিভোল্টেজ প্রার্থী হচ্ছেন আরাফাত। আওয়ামী লীগের থিংক ট্যাংকের প্রধান নেতা, প্রফেসর আবার ডক্টরও। আরেকজনও প্রার্থী আছেন, তিনি নিজে প্রার্থী হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাকে আপনারা সবাই চেনেন, তিনি হলেন হিরো আলম। তাকে বাংলাদেশের মানুষ একটু ভিন্নভাবে চেনেন, জানেন। প্রথমে তাকে বেআইনি ঘোষণা করল। পরে তিনি হাইকোর্ট গিয়ে প্রার্থিতা ফিরিয়ে নিয়ে আসলেন ইলেকশন করার জন্য।
তিনি বলেন, উনি (হিরো আলম) একটি কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। কেন্দ্রেতেও কোনো ভোটার নেই। সব কেন্দ্রেই খালি পড়ে আছে। প্রার্থীদের তো কেন্দ্রে যেতে হয়। সেই কেন্দ্রে ভোট দিতে গেছে আওয়ামী লীগের সেসব বিখ্যাত সন্ত্রাসী, যারা আওয়ামী লীগকে পাহারা দেয়, তারা বেচারা হিরো আলমকে তাড়িয়ে দিয়েছে। শুধু তাড়িয়েই দেয়নি, তাকে বাইরে এসে রাস্তায় মাটিতে ফেলে বেধড়ক পিটিয়েছে। সে এখন হাসপাতালে। কিছুক্ষণ আগে সোশ্যাল মিডিয়াই এ ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। আমি এ কথাটি এজন্য বলছি যে, বাংলাদেশে তারা কী করুণ তামাশার সৃষ্টি করেছে। কী তামাশা গণতন্ত্রকে নিয়ে। আবার এরা চিৎকার করে বলে গণতন্ত্র তাদের কাছেই নাকি নিরাপদ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন শুধু কাজ আর কাজ। আমাদের কাজ হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষকে সংগঠিত করে অবৈধ জোর করে ক্ষমতায় বসে থাকা সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানো। এ সরকারকে না সরালে শুধু ভোট নয়, বাংলাদেশের অস্তিত্বই থাকবে না। হাসিনার অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু আমাদের দল থেকে নয়, ৩৬ দলের পক্ষ থেকে বলেছি, এ অবৈধ সরকারের অধীনে আমরা কোনো নির্বাচনে যাব না। পরিষ্কার কথা, নির্বাচনকালীন যদি নিরপেক্ষ সরকার না থাকে তাহলে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। আমরা বলেছি, এই মুহূর্তে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। যারা যোগ্য তাদের আসতে হবে। নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে। রাষ্ট্রীয় মেরামতের যে ৩১ দফা কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে, সেই কর্মসূচি সব দলের সঙ্গে আলাপ করে একটি জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করে সেটাকে বাস্তবায়ন করা হবে। আমাদের এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ। এ কথা না শুনলে ফয়সালা হবে রাজপথে।
তারুণ্যে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও বিশেষ বক্তা ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী। এ ছাড়া আরও বক্তৃতা করেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমির এজাজ খান।
সমাবেশ পরিচালনা করেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।
বেলা ৩টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও দুপুর ১২টার মধ্যেই খুলনা বিভাগের ১০ জেলা ও এক মহানগরীসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সমাবেশস্থল ভরে যায়। সমাবেশে নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে আসেন। বেলা ১১টার মধ্যে খুলনা মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুর নেতৃত্বে তার অনুসারীরা মঞ্চের সামনে স্থান নেন।
রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালের দুই চিকিৎসকের মুক্তির দাবিতে গতকাল সোমবার অধিকাংশ চিকিৎসক তাদের ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখেননি এবং অস্ত্রোপচারও করেননি। এতে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয় রোগীদের। অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়েও চিকিৎসক দেখাতে এবং অস্ত্রোপচার করাতে না পেরে উদ্বেগও দেখা গেছে রোগীদের মধ্যে। তবে এসব রোগীর বেশির ভাগই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
রাজধানীর গ্রিন রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের একজন সহযোগী অধ্যাপক ও জাতীয় হৃদরোগ হাসপাতালের একজন সহকারী অধ্যাপক ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখেন। প্রতিদিন এই দুই চিকিৎসক গড়ে রোগী দেখেন ১৫-২০ জন করে। কিন্তু গতকাল তারা কোনো রোগী দেখেননি এবং নির্ধারিত রোগীদের এক দিন পর আগামীকাল বুধবার আসতে বলেছেন।
এ সময় সহযোগী অধ্যাপকের চেম্বারে কথা হয় মিরপুর থেকে আসা রোগী আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে। তার বয়স ৪৫ বছর। তিনি জানান, তার হার্টে দুটি ছিদ্র ধরা পড়েছে। এই চিকিৎসক তাকে আসতে বলেছেন। কিন্তু তাদের ধর্মঘট থাকায় রোগী দেখছেন না। বলেছেন বুধবার আসতে। চিন্তিত আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কী যে হয়। কিছুই বুঝতে পারছি না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই চিকিৎসক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা চেম্বারে রোগী দেখছি না। কিন্তু জরুরি রোগী দেখা এবং হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। এমনকি জরুরি অস্ত্রোপচারও করা হচ্ছে। তবে রুটিন অস্ত্রোপচার, যেগুলো দুই-তিন দিন পরেও করা যাবে, সেগুলো করা হচ্ছে না। এতে রোগীদের খুব বেশি সমস্যা হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, তদন্ত করার আগেই দুজন চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হলো, এটা খুবই অন্যায়। এভাবে চলতে থাকলে চিকিৎসক ও রোগীদের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি হবে।
এই হাসপাতাল ছাড়াও রাজধানীর গ্রিন রোড, মগবাজার ও শান্তিনগরের কয়েকটি হাসপাতালে আরও কয়েকজন চিকিৎসকের চেম্বারেও একই অবস্থা দেখা গেছে। এসব হাসপাতালে এসে রোগীদের ফিরে যেতে দেখা গেছে।
এই কর্মসূচিকে ‘অমানবিক’ বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের স্বাস্থ্য সচিব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। গতকাল মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা মানবিক নয়। চিকিৎসকদের মানবিক হওয়া খুব জরুরি। বড় চিকিৎসক হওয়ার চেয়ে মানবিক চিকিৎসক হওয়া খুব জরুরি। তাদের বোঝা উচিত, যে কাজটি করছেন, সেটি সঠিক হচ্ছে কি না। রোগী জিম্মি করা, এটা তো কোনো বিষয়ের মধ্যে পড়ে না। চিকিৎসকদের মানবিক হতে হবে, রোগী ক্ষতিগ্রস্ত হবে কেন? আমি মনে করি, তাদের এখান থেকে ফিরে আসা জরুরি।’
সেন্ট্রাল হাসপাতালের ঘটনা প্রসঙ্গ টেনে স্বাস্থ্য সচিব বলেন, ‘সেখানে কী কী বিষয় আছে, সেটা আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি। খুব শিগগর আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব– এ কথা আমরা চিকিৎসকদের বলেছি। তারপরও তারা কর্মসূচি দিয়েছেন। তবে আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলো চালু আছে, সব ধরনের সেবা চালু আছে। আমার বিশ^াস, এই সমস্যা থাকবে না। এই সমস্যা দু-এক দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। আমরা কথা বলেছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’
গত শনিবার সেন্ট্রাল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা ও ডা. মুনা সাহাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনিকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) এই কর্মসূচি ঘোষণা করে। পরে কর্মসূচিতে একাত্মতা জানায় চিকিৎসকদের অন্যান্য সংগঠনও; অর্থাৎ চিকিৎসা খাতের প্রায় সব চিকিৎসক তাদের ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা এবং অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখবেন এই দুদিন। ফলে আজ মঙ্গলবারও দেশের বেশির ভাগ মানুষ চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসাসেবা পাবেন না। তবে হাসপাতালের সেবা যথারীতি চলবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এই কর্মসূচির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমও। তিনি বলেন, এটা শুধু চিকিৎসকদের চেম্বারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা চালু থাকবে এবং অস্ত্রোপচারও হবে। তবে জরুরি পরিস্থিতিতে রোগী ফেরানো হবে না। এখন ডেঙ্গুর প্রকোপ চলছে, এটা সবাইকে মাথায় রাখতে হবে।
এ ব্যাপারে ওজিএসবির নেতারা জানান, এখন পর্যন্ত চিকিৎসকদের প্রায় সব সংগঠনই এই কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। এর আগে কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত রবিবার দেশজুড়ে মানববন্ধন করেছেন গাইনি চিকিৎসকরা। আজ মঙ্গলবার কর্মবিরতির শেষে আবার বিএমএর সঙ্গে বসে পরবর্তী আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রায় সাড়ে তিনশ বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া পাখি নিয়ে একটি প্রবাদই চালু হয়ে গেছে। চিরদিনের জন্য চলে গেছে, যা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয় এমন কোনো কিছু বোঝাতে ‘ডেড এজ এ ডোডো’ প্রবাদটি ব্যবহৃত হয়। তবে ভবিষ্যতে হয়তো আর এ কথাটি বলা যাবে না। কারণ, সেই পাখিকে আবারও ফিরিয়ে আনতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা। ডোডো ছাড়াও লোমশ ম্যামথ বা হাতি এবং তাসমানিয়ান বাঘ ফিরিয়ে আনতে চান তারা।
ভারত মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত মরিশাসে একসময় ডোডোরা ছিল। তারা পাখি হলেও উড়তে পারত না। ১৬ শতকে মরিশাসে ইউরোপীয় জাহাজ আসার পর নানান শিকারিদের খপ্পরে পড়ে ডোডোরা। ফলে ৭০ বছরের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যায় পাখিটি। বিজ্ঞানীরা এখন তাদের ফিরিয়ে আনতে চাইছেন।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের খবরে বলা হয়েছে, কলোসাল বায়োসায়েন্সেস কোম্পানির বিজ্ঞানীরা ডোডো ছাড়াও লোমশ ম্যামোথ বা হাতি এবং তাসমানিয়ান বাঘ ফিরিয়ে আনতে চান। কলোসাল বায়োসায়েন্সেস কোম্পানির কর্মকর্তা টম গিলবার্ট বলেন, অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ, যার সমাধান করতে হবে তা হলো, একটি জীবের অনেকগুলো মিউটেশন আসলে কীভাবে একে অপরের ওপর নির্ভর করতে পারে, তা নির্ধারণ করা। আপনি হয়তো একটি জিন পরিবর্তন করতে চাইতে পারেন, অর্থাৎ একটি ফিনোটাইপ দেওয়ার জন্য একটি মিউটেশন। এটা সরাসরি কাজ করতে পারে। এ ছাড়া আরও অনেক অজানা সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা আপনাকে পরিবর্তন করতে হবে।
তবে এভুলিউশনারি জেনেটিসিস্ট বেঞ্জামিন ভ্যার্নট বলেন, প্রযুক্তির কথা ভাবলে মনে হবে, এটা যেন একটা মজার প্রকল্প। এটা আসলে খুবই উচ্চাকাক্সক্ষী একটা প্রকল্প। কখনো সফল হবে কি না, তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। আমার মনে হয় ডোডোর মতো দেখতে একটা কিছু তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আমি নিশ্চিত নই, তারা আসল ডোডো ফিরিয়ে আনতে পারবেন কি না।
যদিও টিকে থাকা ও বিলুপ্ত হওয়া কোনো প্রজাতিকে তাদের জেনেটিক কোড দিয়ে চেনা যায়, যা ডিএনএতে লেখা থাকে। একটি প্রাণীর বেড়ে ওঠা থেকে শুরু করে তার আচরণ কেমন হবে, সব নির্ধারণ করে এই কোড। তাই বিলুপ্ত প্রাণী ফিরিয়ে আনার একটি উপায় হতে পারে, সংরক্ষিত নমুনা থেকে ডিএনএ নিয়ে কাছাকাছি কোনো প্রজাতির ডিম্বাণুতে বসানো এবং তারপর সেই ডিম একটি সারোগেটে ইমপ্ল্যান্ট করা। তবে ক্লোনিং নামের এই প্রক্রিয়া ডোডো ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কাজ করবে না।
টম গিলবার্ট বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, দুটি কারণে আমরা ক্লোনিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারব না। প্রথমত, বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে ক্লোনিং করা বিষয়টি শুনতে যতটা সহজ মনে হয়, আসলে ততটা নয়। এ ছাড়া বেঁচে আছে এমন কোনো ডোডো নেই, যার ভেতরে ছোট ডোডো বসানো যাবে। দ্বিতীয়ত, কোনো প্রজাতির ক্লোনিং করতে আপনার কার্যকর কোষ লাগবে, যা এখনো জীবিত। কিন্তু আমাদের কাছে এমন কোনো উপাদান নেই। ফলে ডোডো ফিরিয়ে আনতে ক্লোনিং করা সম্ভব নয়। মৃত্যুর পর জীবন্ত কোষগুলো পচে যেতে থাকে। ডিএনএ-ও ভেঙে ছোট ছোট অংশে পরিণত হয়। সংরক্ষিত নমুনায় যা আছে, তা দিয়ে বিলুপ্ত হওয়া জেনেটিক কোড জোড়া লাগানোর চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু যখন বিজ্ঞানীরা এই কাজ করা শুরু করবেন তখন সব সময়ই এমন কিছু ফাঁকা জায়গা থেকে যাবে, যা কখনো পূরণ করা যাবে না।
কলোসাল বায়োসায়েন্সেস কোম্পানি তাই অন্য একটি পথ অনুসরণ করছে। তারা বিলুপ্ত প্রাণীর সবচেয়ে কাছাকাছি প্রাণীর ডিএনএ নিয়ে কাজ করছে। যেমন লোমশ ম্যামোথের জেনেটিক কোডের সঙ্গে এশিয়ান হাতির কোডের ৯৯ শতাংশের বেশি মিল আছে। সে কারণে বিজ্ঞানীরা একটি হাতির কোষের ডিএনএ নিয়ে কাজ করছেন এবং তার সঙ্গে ম্যামোথের জিন যোগ করছেন। তারা আশা করছেন, এর ফলে যে ভ্রুণ তৈরি হবে সেটা পরে শিশু হাতিতে পরিণত হবেÑ যে হাতিতে ম্যামোথের কিছু বৈশিষ্ট্য থাকবে, যেমন ছোট কান বা লোমশ শরীর।
গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিট। বুড়িগঙ্গা নদীর শ্যামবাজার মসজিদ ঘাট ও কেরানীগঞ্জের তৈলঘাট ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ছোট-বড় প্রায় ৬০টি ডিঙি নৌকা যাত্রী নিয়ে দ্রুতগতিতে ছুটে চলেছে। প্রতিটি নৌকায় দুই থেকে সাতজন পর্যন্ত যাত্রী রয়েছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে বুড়িগঙ্গার পূর্বদিক থেকে ধেয়ে আসতে দেখা যায় একটি মালবাহী কার্গো, একটি ছোট লঞ্চ ও একটি বালুবোঝাই বাল্কহেড। ডিঙি নৌকাগুলোর মাঝ দিয়ে দ্রুতগতিতে বুড়িগঙ্গার পশ্চিম দিকে চলে যায় এসব নৌযান। ডিঙি নৌকাগুলো তড়িঘড়ি করে তাদের যাওয়ার পথ করে দেয়। তখন পানিতে সৃষ্ট ঢেউয়ে দুলতে থাকা নৌকার অনেক যাত্রী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এভাবেই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা পার হন কয়েক হাজার মানুষ। মাঝেমধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা, ঝরে প্রাণ।
গত রবিবার রাতে এই ‘শ্যামবাজার মসজিদ ঘাট’ থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী একটি ওয়াটার বাস ‘তৈলঘাট ঘাট’ যাওয়ার পথে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় ডুবে গেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মারা গেছে তিনজন। নিখোঁজ রয়েছে অনেকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওয়াটার বাস ও বাল্কহেড দুটোই বেপরোয়া গতিতে চলছিল। ওয়াটার বাস দ্রুতগতিতে বাল্ক হেডটিকে অতিক্রম করে ঘাটে ভেড়ার চেষ্টা করে। তখন ওয়াটার বাসের পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয় বাল্কহেড আর এতেই উল্টে যায় ওয়াটার বাসটি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বুড়িগঙ্গা নিরাপদে পারাপারের লক্ষ্যেই বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্র্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) চালু করেছে ওয়াটার বাস। আর বিআইডব্লিউটিএ’র স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, সূর্যাস্তের পর বাল্কহেড নদীতে চলতে পারবে না। কিন্তু বুড়িগঙ্গার ঝুঁকিপূর্ণ এ অংশের নিরাপত্তায় সংস্থাটি কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয় না।
শ্যামবাজার মসজিদ ঘাটের টোল আদায়ের কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা মো. মুসা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বালুবোঝাই বাল্কহেডগুলো বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। তাদের রাতে চলার নিয়ম নেই, তবু স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তারা চলাচল করে। রাতে তাদের পর্যাপ্ত আলোও থাকে না। কিছু প্রভাবশালী ভূমিদস্যু এসব বাল্কহেডে বালু নিয়ে জমি ভরাট করে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বুড়িগঙ্গাতে মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো নৌদুর্ঘটনা ঘটে, যা কেউ খোঁজও রাখে না। ভুক্তভোগীদের উদ্ধারেও প্রশাসনের কোনো তৎপরতা থাকে না। নৌযান চলাচলে শৃঙ্খলা আনতেও কোনো উদ্যোগ নেই।’
কেরানীগঞ্জের কালিগঞ্জের বাসিন্দা মো. মনির গত ২০ বছর ধরে প্রতিদিন বুড়িগঙ্গা পার হয়ে সদরঘাটে আসেন গাড়িতে মালামাল লোড আনলোড করতে। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আগে ডিঙি নৌকায় নদী পার হতাম। কিন্তু ওয়াটার বাস চালু হলে এটাতে যাতায়াত করি। কিন্তু খুবই দ্রুতগতিতে চালায় ওয়াটার বাস। চালক আশপাশে না দেখেই চালাতে থাকে। দুই মিনিটেই নদী পার করে ফলে ভয়ে থাকে অধিকাংশ যাত্রী।’
গতকাল বুড়িগঙ্গার দুই পাশের শ্যামবাজার মসজিদ ঘাট, ওয়াইজ ঘাট, নাগরমহল ঘাট, তৈলঘাট ঘাটসহ অন্যান্য ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নৌ-চলাচলে ‘হ-য-ব-র-ল’ অবস্থা। ছোট ডিঙি নৌকার পাশাপাশি ইঞ্জিনচালিত নৌকাতেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। সদরঘাটকেন্দ্রিক বেশিরভাগ মানুষের বাস কেরানীগঞ্জে। কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, শুভাঢ্যা ও আগানগর ইউনিয়নের প্রায় চার লাখ মানুষের পারাপারের অন্যতম বাহন বুড়িগঙ্গার এসব ছোট নৌকা। তারা প্রতিদিন বুড়িগঙ্গা নদী পারাপারে সেতুর বদলে নৌপথ ব্যবহার করেন। চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এ পথকেই বেছে নেন। কয়েক হাজার ছোট ডিঙি নৌকা প্রতিদিন ক্ষ্যাপ মারে বুড়িগঙ্গার এক ঘাট থেকে আরেক ঘাটে। একই পথে বালুবোঝাই বাল্কহেড, লঞ্চ, কার্গো জাহাজ প্রভৃতি নৌযান চলায় নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয়রা বলছেন, বুড়িগঙ্গার দুই তীরে আলম মার্কেট, তৈলঘাট, পিনসন, বাদামতলী, সোয়ারিঘাট, ব্রিজঘাট, ফেরিঘাট, মিটফোর্ডসহ প্রায় অর্ধশত ঘাট দিয়ে চলাচল করে মানুষ। সন্ধ্যার পর বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে নৌঘাটের পুরো এলাকা। ঝুঁকি নিয়ে গভীর রাতেও চলে নৌযানগুলো। সিংহভাগ দুর্ঘটনা এ সময়ই ঘটছে। রাত যত গভীর হয়, দুর্ঘটনার আশঙ্কা তত বাড়ে। ব্যস্ততম সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকায় ডিঙি নৌকায় পারাপারে সরকারি কোনো বিধিনিষেধও নেই। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্র্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) টেন্ডারের মাধ্যমে নৌঘাট ইজারা দিচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিরাপদে নদী পার হওয়ার ব্যবস্থা না করেই নৌকাগুলোর চলাচলে অনুমতি দিয়ে আসছে বিআইডব্লিউটিএ।
স্থানীয়রা বলেন, বেপরোয়া গতিতে চলা লঞ্চ, বাল্কহেড, কার্গো ও ওয়াটার বাসগুলোর জন্য এ নৌপথ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সদরঘাটে বুড়িগঙ্গার এ অংশ সরু হলেও বরিশাল, পটুয়াখালী, চাঁদপুর থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চগুলো এখান দিয়ে বেপরোয়া গতিতে চলে, মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে। ২০২০ সালের ২৯ জুন মুন্সীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা মর্নিং বার্ড লঞ্চটি সদরঘাট কাঠপট্টি ঘাটে ভেড়ানোর আগমুহূর্তে চাঁদপুরগামী ময়ূর-২ লঞ্চটি ধাক্কায় ডুবে যায়, মারা যায় ৩৪ জন।
বুড়িগঙ্গার সদরঘাট এলাকাটির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে সদরঘাট নৌথানা পুলিশ। তাদের ভাষ্য, নদীর এ অংশে নৌ-চলাচলের শৃঙ্খলা ফেরানোর সুযোগ তাদের নেই। ফলে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। জানতে চাইলে সদরঘাট নৌথানার ওসি শফিকুর রহমান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘এখানে নৌযান চলাচলে আইনে কোনো নিষেধ নেই, বিআইডব্লিউটিএ থেকেও কোনো নিষেধ নেই। ফলে ডিঙি নৌকা, জাহাজসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল করছে। এটা তো রাস্তা না যে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করব।’ তিনি বলেন, ‘যদি এরা (চালকরা) নিজেরা সতর্ক না হয়, তাহলে এখানে নৌদুর্ঘটনা ঠেকানো সম্ভব নয়।’
বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (স্টেট ও ল) আরিফ উদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সূর্যাস্তের পর বাল্কহেড চলা নিষেধ। কিন্তু এরপরও তারা চলাচল করছে। এদের ঠেকাতে বিআইডব্লিউটিএ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌপরিবহন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
ওয়াটার বাসটি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৬
কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ডুবে যাওয়া ওয়াটার বাসটি গতকাল সোমবার সকালে উদ্ধার করা হয়েছে। দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা চেষ্টার পর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ওয়াটার বাসটি টেনে তীরে তোলা হয়। ওয়াটার বাসটি উদ্ধার অভিযানে গতকাল সকাল সাড়ে ৬টায় যোগ দেয় বিআইডব্লিউটিএর উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম। এর আগে একটি লঞ্চ দুর্ঘটনায় উদ্ধার অভিযানে পোস্তগোলা ব্রিজ পার হওয়ার সময় ব্রিজের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে রুস্তম এবার আর পোস্তগোলা ব্রিজ পার হয়নি। ওয়াটার বাসটি ডুবন্ত অবস্থায় পোস্তগোলা ব্রিজের অপর পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ২ ঘণ্টা চেষ্টা করে ওয়াটার বাসটি তীরে টেনে নিয়ে আসে রুস্তম। তীরে আনার পর ওয়াটার বাসটিতে কোনো মরদেহ পাওয়া যায়নি।
এদিকে ডুবে যাওয়ার আগে ওয়াটার বাসটিকে ধাক্কা দেওয়া বাল্কহেডের ৬ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে নৌপুলিশ। তারা হলেনÑ বাল্কহেডের মাস্টার শরিফুল ইসলাম, চালক আনসার, সুকানি সজিব সরদার, লস্কর সিয়াম ও মো. সফিউল গাজী এবং মাসুদ মুন্সি।
জুয়েলারি রপ্তানি করে তৈরি পোশাকের চার গুণ বিদেশি মুদ্রা আয় করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) ৫৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে বাজুসের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে কমিটির চেয়ারম্যান ও বাজুসের সাবেক সভাপতি কাজী সিরাজুল ইসলাম, বাজুসের সাবেক সভাপতি ও উদযাপন কমিটির কো-চেয়ারম্যান ডা. দীলিপ কুমার রায় ও উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বাজুসের সহসভাপতি গুলজার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এ বছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য ‘সোনায় বিনিয়োগ ভবিষ্যতের সঞ্চয়’।
আহমেদ আকবর সোবহান বলেন, জুয়েলারি শিল্পকে আরও শক্তিশালী হতে হবে। যারা স্বর্ণালংকার বিক্রি করেন তারা সবাই রপ্তানির মাধ্যমে শিল্পপতি হতে পারেন। জুয়েলারি শিল্পমালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা রপ্তানির জন্য জুয়েলারি কারখানা করেন, আমি জায়গা দেব। রাজধানীর কেরানীগঞ্জে ৪০ হাজার স্কয়ার ফিটের একটি জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন এক কনটেইনার তৈরি পোশাক রপ্তানি করলে আসে ২০ হাজার ডলার। আর এক কনটেইনার স্বর্ণালংকার রপ্তানি করলে আসবে ২০ মিলিয়ন ডলার। কয়েক বছর ধরে বাজুস ফেয়ার হচ্ছে তিন দিন। আইসিসিবিতে আগামীতে বাজুস ফেয়ার হবে সাত দিন এবং মেলায় অংশ নেওয়া কোনো দোকানকে ভাড়া দিতে হবে না।
বাজুসের অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখায় সাত জুয়েলারি ব্যবসায়ীর হাতে সম্মাননা তুলে দেন আহমেদ আকবর সোবহান।
চলমান সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগে খেলতে নেমে দুই দলের মাঝে হাতাহাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিজেদের শেষ ম্যাচে আজ শুক্রবার রাত দশটার দিকে মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামের ক্রিজে নেমেছিলেন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ ও দীপঙ্কর দীপনের টিম।
খেলা চলাকালীন সময়ে দীপঙ্কর দীপনের দলের খেলোয়াড়দেরকে প্রথমে উস্কানি দিতে থাকে রাজের টিম। এরপর তাদের দলের লোকজন এসে দীপনের টিমের এক প্লেয়ারকে মাঠ থেকে তুলে নিয়ে মারধর করতে থাকে। এরপর দীপনের টিমের খেলোয়াড়রা উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং চেয়ার ছুঁড়াছুড়ি শুরু করে। এক পর্যায়ে দুই দলের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।
দীপনের দলের খেলোয়াড়দের একজন অভিনেতা মনির হোসেন শিমুল অভিযোগ তুলে বলেন, তারা বাইরে থেকে সন্ত্রাসী এনে আমাদের উপর আক্রমণ শুরু করে। এটা কোন ধরণের সিসিএল খেলা?
অন্যদিকে একই দলের আরেক খেলোয়াড় চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী বলেন, রাজ ভাইয়ের টিম থেকে আমাদের দলের উপর আক্রমণ শুরু করে। তারা বাইরে থেকে লোকজন নিয়ে এসেছে। আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে একজনকে তুলে নিয়ে মারধর করতে শুরু করে। এরমধ্যে মৌসুমী হামিদ আহত হন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোস্তফা কামাল রাজের দলের পক্ষ থেকে অভিযোগটি অস্বীকার করা হয়। তারা জানান, প্রয়োজন মনে করলে তারা পরে মন্তব্য দেবেন।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে উৎসাহ দিতে তিনদিন ব্যাপী সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগ (সিসিএল) আয়োজন করা হয়েছে। এতে মোট ১৬ টি দল অংশ নিয়েছে। আগামীকাল ফাইনালের মধ্য দিয়ে এ আসর সমাপ্ত হবে।
মূল লড়াইয়ের আগে গা গরমের খেলা। সেখানে ব্যাটসম্যানরা ছিলেন আগ্রাসী। তাতে পাকিস্তান পায় ৩৪৫ রানের বড় সংগ্রহ। তারপরও জিততে পারল না। নিউজিল্যান্ড জয় তুলে নিয়েছে ৩৮ বল হাতে রেখেই।
পাকিস্তানের ব্যাটারদের মধ্যে সেঞ্চুরি পেয়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৯৪ বলে ১০৩ রান করে অবসর নেন তিনি। এছাড়া বাবর আজম ৮০ ও সৌদ শাকিল ৭৫ রান সংগ্রহ করেছেন।
পাকিস্তানের দেয়া ৩৪৬ রানের জবাব দিতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে গেছে নিউজিল্যান্ড।
কিউই ব্যাটারদের মধ্যে ওপেনিংয়ে নামা রাচিন রবীন্দ্র ৭২ বলে ৯৭ রান সংগ্রহ করে দলের জয়ে বড় অবদান রাখেন। এছাড়া দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা কেন উইলিয়ামসন ৫৪, ড্যারেল মিচেল ৫৯ আর মার্ক চাপম্যান ৬৫ রান করে দলকে ৫ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন।
নিজের গান দিয়ে ইউটিউব চ্যানেলের যাত্রা শুরু করলেন ক্লোজআপ তারকা নোলক বাবু।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বনশ্রীর এক রেস্তোরায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলের উদ্বোধন করেন এ গায়ক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার মা।
নোলক বাবুর ইউটিউব চ্যানেলে উন্মুক্ত হয়েছে তার নতুন গান 'মানুষ'। গানের কথা লিখেছেন তরুন সিং, সুর করেছেন শিল্পী নিজেই। গানটির সংগীতায়োজন হৃষিকেশ রকি।
নোলক বাবু বলেন, গানটি গাইতে পেরে আমি মুগ্ধ।
গোটা দেশ এখন দুই ভাগে বিভক্ত। একদল সাকিব আল হাসানকে শূলে চড়াচ্ছে, অন্যরা তামিম ইকবালকে। অথচ জাতীয় ক্রিকেট দল ভারতে গেছে বিশ্বকাপ খেলতে। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে খোঁচাখুঁচি। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ খেলতে নেমেছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে। যে উদ্বোধনী জুটি নিয়ে এত দ্বিধা আর সংকোচ, যে কারণে তামিম না থাকায় এত হাহাকার, সেখানেই কিনা বাজিমাত করে পুরো জাতিকে অন্য এক বার্তা দিলেন তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস।
বিশ্বকাপের দলে যে তামিম ইকবাল থাকছেন না, সেটা জানা গিয়েছিল আগের দিনেই। তবু ক্রিকেট ভক্তদের মনের এক কোণে ক্ষীণ আশা ছিল। ওপেনারদের টানা ব্যর্থতার কথা বিবেচনায় হলেও এই ব্যাটসম্যান থাকবেন বলে ছিল তাদের। কিন্তু সেই আশার গুড়ে বালি। তাকে দলে না রাখায় অবশ্য রাস্তায় জনতার ঢল নামেনি, রাজপথে হয়নি কোনো সভা-সমাবেশ। তবে নতুন যুগের দেয়ালে দেয়ালে ছড়িয়ে পড়ে প্রতিবাদী নিন্দার বাণী। হাল জামানায় যাকে ‘টাইমলাইন’ বলে সম্বোধন করা হয়।
সেই সব প্রতিবাদী স্ট্যাটাসও দুই ভাগে বিভক্ত। কেউ সাকিব আল হাসানের পক্ষে, কেউবা তামিম ইকবালের। একদল পরিসংখ্যান-পর্যালোচনা দিয়ে বোঝাতে ব্যস্ত যে এই যুগে তামিমের কৌশল ‘ওল্ড স্কুল’। ওসব এখন আর চলে না। অন্য দল ১৭ বছরের ইতিহাস আর আবেগ নিয়ে হাজির। তাদের কাছেও আছে পরিসংখ্যান। সেটা গত কয়েক বছরের তামিমের ওপেনার সঙ্গীদের একটা তালিকা। তারাই শূলে চড়াচ্ছেন সাকিব-হাথুরু থেকে শুরু করে বিসিবির শীর্ষ কর্তাদের।
বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে সাকিব ক্রীড়াভিত্তিক একটি টিভি চ্যানেলকে দিয়ে গেছেন সাক্ষাৎকার। সেখানে তিনি সরাসরি তামিমের সমালোচনা করেছেন। এই ওপেনার যে দলের প্রয়োজনে পজিশন পরিবর্তনে রাজি হতে চান না, সেই মানসিকতা বাচ্চাদের মতো বলে সমালোচনা করেছেন টাইগার অধিনায়ক। এমনকি তার স্পোর্টসম্যানশিপ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তার আগে তামিম নিজে একটা ভিডিও বার্তায় বলেছেন তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা। মাশারফী বিন মোর্ত্তজাও ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। তাতে করে ক্রিকেটাঙ্গনে এখন যেন ভিডিও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ক্রিকেট নিয়ে জাতির অবস্থা যখন এমন, তখন ভারতের গোয়াহাটিতে বাংলাদেশের ক্রিকেট দল। আসাম রাজ্যের রাজধানীর বরষাপাড়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম উদ্বোধনী ম্যাচ খেলতে নেমেছিল তারা। ছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, নাজমুল হোসেন শান্তও ছিলেন না থাকার মতো করেই। প্রথম গা গরমের ম্যাচে তাই নেতৃত্ব দেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
টসভাগ্যে মিরাজের পরাজয়ের পর বল হাতে নামে বাংলাদেশ। টানা ৪০ ওভার টাইগারদের বোলারদের যেন শাসন করছিলেন লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। ঐ সময় পর্যন্ত ৫ উইকেট হারালেও তারা করে ২০২ রান। তারপরই যেন ঘুরে দাঁড়ান টাইগার বোলাররা। শেষ ১০ ওভারের ৫ বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। ২৬৩ রানের বেশি তারা করতে পারেনি।
২৬৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নামা বাংলাদেশের হালটা যে সুখকর হবে না, মুহূর্তেই ধসে পড়বে ব্যাটিং লাইনআপ। সিনিয়রদের কাউকে এসে হাল ধরে নিয়ে টেনে নিয়ে যেতে হবে দলকে। খাঁদের কিনারা থেকে টেনে তুলে হয় জয়, নয়তো সম্মানজনক হার! এমনটাই ছিল অনুমিত। আমরা যে এতেই অভ্যস্ত।
কিন্তু তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস সব অনুমান ভুল প্রমাণ করে দেন। যে ওপেনিং জুটি বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছিল, যে সমস্যার কারণে চোট প্রবণ তামিম ইকবালকেও সবাই চাইছিলেন দলে। সেটাই কিনা তারা প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে ভুলিয়ে দিলেন! উদ্বোধনীতে তারা গড়েন ১৩১ রানের জুটি। তাতে ১৩ ম্যাচ পর বাংলাদেশ ওপেনিংয়ে শতরানের জুটি দেখতে পেয়েছে। হোক সেটা প্রস্তুতি ম্যাচ, তবুও তো লড়াই!
সবচেয়ে বড় স্বস্তি লিটন-তানজিদের রানে ফেরা। এশিয়া কাপের আগে জ্বরে ভুগছিলেন লিটন। সেই জ্বরের ধকল কাটিয়ে উঠতে তার সময় লেগেছে। মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে যেতে হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর চোটের কারণে। কিন্তু নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। এই টুর্নামেন্টে ২ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তানজিদ। কিন্তু তিনিও প্রত্যাশা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজেও।
তাই বিশ্বকাপের দলে তামিম ইকবালকে বাদ দেওয়াতে ঝড় উঠেছিল। সেই ঝড় চলমান ছিল আজ দুপুর অবধি। অনেকেই ভেবে রেখেছিলেন, এই জুটি ব্যর্থ হবে। যা ধারাবাহিক থাকবে টুর্নামেন্টের শুরুতেও। তারপর বিশ্বকাপের মাঝপথে আচমকা ডাক পেয়ে তামিম ইকবাল উড়াল দেবেন ভারতে। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলে। সেবার জাভেদ মিয়াঁদাদকে ছাড়াই তারা বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিল। কিন্তু ব্যাটারদের ব্যর্থতার কারণে তাকে মাঝপথে উড়িয়ে নেওয়া হয়েছিল, এবং বিশ্বকাপ জিতেছিল।
এমন স্বপ্ন বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটভক্তরাও দেখতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু তানজিদ তামিম আর লিটনের জুটি বদলে দিয়েছে সব হিসেব-নিকেশ। তামিমের ফেরার প্রত্যাশায় যারা গুনছিলেন প্রহর, তাদের মাথায় যেন এবার আকাশ ভেঙে পড়েছে। কারণ তারা যে রানে ফিরেছেন। যুববিশ্বকাপজয়ী তামিম খেলেছেন ৮৪ রানের একটি ইনিংস। ৮৮ বলে যা সাজানো ছিল ১০টি চার ও ২টি ছক্কায়। অন্যপ্রান্তে লিটন ৫৬ বলে ১০ চারে খেলেছেন ৬১ রানের ইনিংস। শুধু কি তাই! এদিন তিনে নেমেছিলেন মিরাজ। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬৭ রান। ৬৪ বলের হার না মানা ইনিংসটি সাজানো ছিল ৫ চার ও ২ ছক্কায়।
পঞ্চপান্ডবের পরের প্রজন্ম তো তারাই। যাদের ব্যাটে শুক্রবার বরষাপাড়ায় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তাদের রানে ফেরা যেন নতুন দিনের বার্তা দেয়। যে বার্তা আগামীর পথচলার। যেখানে পুরনোকে আকড়ে ধরে রাখার প্রবণতা ক্ষীণ হয়ে আসার বার্তা। সহজ কথায়, তরুণদের রানে ফেরাতে মিয়াঁদাদ হওয়ার সুযোগ আর হচ্ছে না তামিম ইকবালের।
আল নাসরে প্রথম মৌসুমটা ভালো না কাটলেও দ্বিতীয় মৌসুমের শুরু থেকেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো আছেন দারুণ ছন্দে। নিজে গোল করে দলকে জেতাচ্ছেন, সতীর্থদের দিয়ে গোল করাচ্ছেন।
শুক্রবারও সৌদি প্রো লিগে আল তা’য়ির বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছে আল নাসর। এ ম্যাচেও রোনালদো গোল করেছেন এবং করিয়েছেন। তবে তাঁকে নিয়ে বেশি আলোচনা তালিসকার গোলটিতে অসাধারণ এক অ্যাসিস্টের জন্য। অ্যাসিস্টটিতে যে সবার মন ভরিয়ে দিয়েছেন রোনালদো।
তা’য়ির মাঠে আল নাসর গতকাল শুরুটা করেছে দারুণ। একের পর এক আক্রমণে স্বাগতিক দলের রক্ষণ করে দিয়েছে এলোমেলো। ম্যাচের শুরুর দিকেই রোনালদোর দুর্দান্ত একটি প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন তা’য়ির গোলকিপার। এ ছাড়া রোনালদোও খুব কাছ থেকে পাওয়া একটি সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি।
তবে ৩২ মিনিটে এগিয়ে যায় আল নাসর। গোলটি করেছেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার অ্যান্ডারসন তালিসকা। গোলটিতে রোনালদো অ্যাসিস্ট করেছেন অসাধারণ এক বাই-সাইকেল কিকে। সৌদি প্রো লিগে এ মৌসুমে এটা রোনালদোর পঞ্চম অ্যাসিস্ট।
খেলার স্রোতের বিপরীতে ৭৯ মিনিটে সমতায় ফেরে তা’য়ি। কিন্তু সমতা বেশিক্ষণ থাকেনি। ৩ মিনিট পরই পেনাল্টি থেকে আল নাসরের জয়সূচক গোলটি করেছেন রোনালদো। সৌদি প্রো লিগে এ মৌসুমে এটা ৭ ম্যাচে তার ১০ নম্বর গোল। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৫ ম্যাচ খেলে করেছেন ১৬ গোল।
এই জয়ের পর ৮ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে আল নাসর। আল ফেইহার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করা আল ইত্তিহাদ সমান ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে। ৮ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে আল তা’য়ি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিএনপি নেতারা।
তারা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জার্মানিতে নেওয়ার কথা ছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সে সময় শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। এবার চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছি। জার্মানিতে খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে আমরা তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাব। জার্মানিতে তার ভালো চিকিৎসা হবে।’
এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সম্ভব জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তার স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ফলে তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লিভার সমস্যার কারণে ম্যাডামের শ্বাস কষ্ট হয়। ইতোমধ্যে তাকে দুইবার করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল। লিভার প্রতিস্থাপন করতে পারলে শ্বাসকষ্টটা হতো না।’
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ না থাকায় তার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি এখন সামনে এসেছে।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়া হতে পারে এমন খবরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও খোঁজখবর নিচ্ছেন জার্মান বিএনপি নেতারা।
জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়া বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জার্মানিতে ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হতে পারে বলে জানতে পেরেছি। আমরা খুবই খুশি। কারণ জার্মানিতে আসলে আমরা তার চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করতে পারব। চেয়ারপারসনের যে চিকিৎসা দরকার তা সকল ব্যবস্থা জার্মানিতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের মুক্তি, তার উন্নত চিকিৎসা ও গণতন্ত্র ফেরাতে দেশে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জার্মানিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৯ অক্টোবর আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। জার্মান বিএনপির উদ্যোগে রোডমার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব জার্মান পার্লামেন্টের সামনে। ’
আকুল মিয়া বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন বিদেশে নেওয়ার আলোচনা চলছিল তখনও জার্মানিতে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় তারেক রহমানের সেবা করতে না পারলেও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সেবা করতে পারব বলে আশা করছি। তার চিকিৎসা জার্মানিতে করতে পারলে আমরা ধন্য হবো।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামত জানতে চেয়ে আবেদনের কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রাতটা পোহালেই বাংলাদেশ দল উড়াল দেবে ভারতের গোয়াহাটিতে। তবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি দল। বিসিবি জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে চলমান তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচ শেষেই জানানো হবে বিশ্বকাপের দল।
প্রচুর আলোচনা ও জল্পনা–কল্পনার পর আজ বিশ্বকাপে নিজেদের স্কোয়াড ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির ফেসবুক পেজে আজ দুপুর ১টা ২৮ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায় বিসিবির লোগোসংবলিত বক্সে করে গুরুত্বপুর্ণ কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিডিও–র শেষে প্রশ্ন করা হয়েছে, বলুন তো ভেতরে কি?
বিকেল ৫টা ৪৩ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় সন্ধ্যা পৌণে ৬টায় ঘোষণা করা হবে দল। কিন্তু ৫টা ৪০ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় তৃতীয় ওয়ানডের শেষেই দল ঘোষনা করা হবে।
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালও জামিনের আবেদন করছেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কারাগারে থাকা হেলালের বিরুদ্ধে আছে অন্তত এক ডজন মামলা। বেশিরভাগ মামলায় জামিন হয়ে গেছে। এই দুজনের মতোই কারা হাজতে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসেন না আদালতে। তারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। অনেকেই অসুস্থ না হয়েও বছরের পর বছর হাসপাতালে আরামে
থাকছেন। বাইরে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকছে। এই সহযোগীরাই তাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছেন।
পুলিশের তালিকায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম আছে যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এই তালিকায় সুইডেন আসলাম নেই। তালিকা করা হয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন। কারাগারে আছেন ৬ জন, মারা গেছেন ৩ জন। একজনের কোনো হদিস নেই।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটজনকে ১ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান র্যাবের ক্রসফায়ার, গণপিটুনিতে আলাউদ্দিন ও কামাল পাশা ওরফে পাশা কারাগারে মারা গেছেন। কালা জাহাঙ্গীর বেঁচে আছেন নাকি আত্মগোপনে, কেউ বলতে পারছেন না। পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল ও কিলার আব্বাস কারাগারে আছেন। খোরশেদ আলম ওরফে রাশু কিছুদিন আগে ছাড়া পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আবার আটক করেছে। মশিউর রহমান কচি, সুব্রত বাইন, আমিন রসুল সাগর. ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ, শামীম আহমেদ, হারিস আহমেদ, তানভিরুল ইসলাম জয়, জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ এক পথচারী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্ডারওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব কটি ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারাগার কর্তৃপক্ষকেও হাজতি ও বন্দি সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তাদের একটি তালিকা করেছে একটি সংস্থা। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তারা কারাগারকেই নিরাপদ মনে করছে।
কারা সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম একটি মামলায় জামিন না নেওয়ায় কারাগারে আছেন। বাকি সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। ২৭ বছরের কারাজীবনে তার দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কেটে যাচ্ছে হাসপাতালে থেকেই। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করেন সব সময়। মোবাইল ফোনে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করেন সহযোগীদের সঙ্গে। তার স্ত্রী আয়েশা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সুইডেন আসলামের বিষয়ে তার এক আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে বলেন, এলাকায় তার যখন একক আধিপত্য ছিল, তখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তারাই এখন তার বিরুদ্ধে। সুইডেন আসলাম বের হয়ে এলে প্রতিপক্ষরাই তাকে মেরে ফেলবে, এমন শঙ্কা আছে। এসব দিক বিবেচনা করেই তিনি বের হতে চাইছেন না। কারাগারেই তিনি ভালো আছেন।
জানা গেছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায় না। ১৯৮৬ সালে তিনি অপরাধ জগতে যুক্ত হন। ওই বছর পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যাকা-সহ নানা অপরাধের তথ্য বের হয়ে আসে। এরই মধ্যে নিজেকে রক্ষা করতে সুইডেন চলে যান। বছর পাঁচেক ওই দেশে থেকে আবার ফিরে আসেন দেশে। তারপর সুইডেন শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৪ সাক্ষীর মধ্যে পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। বাকিরা আর আসেননি এবং এই মামলায় তিনি জামিনও নেননি।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও আসলাম মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। স্ত্রী আয়েশা আকতার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বলা চলে রাজার হালেই আছেন তিনি।
মিরপুর ও কাফরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ২২ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি মামলার জামিন হয়েছে। একটি মামলার জামিন হতে বাকি আছে। তা ছাড়া কমিশনার নিউটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ হলেও উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আরেকটি মামলার শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিলার আব্বাসের এক সহযোগী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করে আসি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছেন না। জামিন চাইলে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু ভাই তা করবেন না। কারণ প্রতিপক্ষ সক্রিয় আছে। তার প্রাণ শঙ্কা আছে। আমরা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় জামিন নিয়ে ভাইকে বের করে আনতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেক সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও প্রায় সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। শুধু একটা মামলার জামিন বাকি আছে। তিনি যখন কারাগারে, তখন বিএনপি তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। অথচ হেলাল বিএনপির রাজনীতি করেন। জেলে বসেই মোহাম্মদপুর, আদাবর ও ধানম-ি, মিরপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদতের ভালো যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন তারা। তার আরেক সহযোগী হাবিবুর রহমান তাজ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। মামলার সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। ইচ্ছে করে জামিনও নিচ্ছেন না তাজ। গ্রেপ্তারের আগে দীর্ঘদিন ভারত পালিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীর কাফরুলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তা ছাড়া কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে মোমিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত তাজ। মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলামের আশ্রয়-প্রশয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক বছর আগে ওসি রফিক মারা যান।’
মতিঝিলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে আটক আছেন তিনি। একবার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে ফেলে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা বাদে সব কটিতে জামিন পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে ইচ্ছা করে জামিন নিচ্ছেন না বলে তার এক স্বজন জানিয়েছেন।
সেভেন স্টার গ্রুপের একসময়ের সদস্য ফ্রিডম সোহেল ধানম-ি ৩২ নম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। সাজা কমিয়ে কারাগারেই থাকার চেষ্টা করছেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি মামলায় সাজা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জামিন নিচ্ছেন না।
তার সহযোগী পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসী রাশু কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। তার এক স্বজন দেশ রূপান্তরকে জানান, মাস দুয়েক আগে সর্বশেষ মামলায় জামিন হয় রাশুর। তার কোনো ইচ্ছা ছিল না কারাগার থেকে বের হওয়ার। আর এ কারণে ইচ্ছা করেই একটি সংস্থাকে কারাগার থেকে বের হওয়ার তথ্য দিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। কারণ তিনি বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মেরে ফেলবে এমন আশঙ্কা ছিল। আরেক সন্ত্রাসী লম্বু সেলিম একটি মামলা বাদে সব মামলায় জামিনে আছেন। ভারতের কলকাতা থেকে তাকে পুশব্যাক করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে থাকেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে জেল থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসীদের কর্মকা- রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কৌশলে কাজ করছে। তারা সরগরম হলেও কাজ হবে না। যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা চলছে। যারা দেশে আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ-র্যাব কাজ করছে। তবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কেউ বিশ্ঙ্খৃলা তৈরি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী জামিন না নিলে এটা আমাদের করার কিছু নেই। তবে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চোরাকারবারিসহ ভিন্ন ধরনের অপরাধীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছেন। তাদের নির্দেশে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছেন তারা। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ডের পেছনে বিদেশ কানেকশন।
২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে আত্মগোপন করে আছেন। টিপু হত্যাকান্ডের পর তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। দুবাইয়ে থাকলেও ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তার। জিসানের সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক ভারতে পালিয়ে আছেন। কিন্তু দেশে তার দখলবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইন ভারতে থেকে সক্রিয় আছেন। তানভীর ইসলাম জয়ও সক্রিয় আছেন। কলকাতা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ঘুরে তার অবস্থান এখন থাইল্যান্ডে। সেখানে বসেই তিনি কলকাঠি নাড়ছেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে পুলিশ। নির্বাচনে কী উপায়ে নিরাপত্তা দেওয়া হবে তার চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। তবে সরকারের হাইকমান্ড থেকে পুলিশ সদর দপ্তরে তথ্য এসেছে, ঘাপটি মেরে থাকা পুলিশের কিছু কর্মকর্তা ও সদস্য সরকারবিরোধীদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছে। পুলিশের একটি প্রতিবেদনেও তথ্য এসেছে সারা দেশে অন্তত আড়াইশো কর্মকর্তা আছেন তারা সরকারবিরোধী হিসেবে পরিচিত। তাদের পুরো কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এদিকে, চলতি মাস ও আগামী মাসের মধ্যে পুলিশে আরও বড় ধরনের রদবদল করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে তালিকাও করা হয়েছে। পাশাপাশি উন্নতমানের আগ্নেয়াস্ত্রসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদিও কেনার চেষ্টা করছে পুলিশ সদর দপ্তর।
সংশ্লিষ্টরা দেশ রূপান্তরকে জানান, সামনের দিনগুলোতে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। এ নিয়ে কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা আগাম সতর্কবার্তাও দিয়েছে। যেকোনো বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ করতে কিছুদিন আগে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পুলিশের সবকটি ইউনিট প্রধান ও জেলার এসপিদের কাছে বার্তা পাঠানো হয়েছে। বার্তায় বলা হয়েছে রাজনৈতিক দুবৃর্ত্তায়নের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি পুলিশের মধ্যে কোনো সদস্য সরকারবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার তথ্য পেলে জানাতে বলা হয়েছে। ঢাকাসহ সারা দেশেই সব পুলিশ সদস্যকে সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচনকালীন যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। পেশাদার সন্ত্রাসীসহ অন্য অপরাধীদের ধরতে বিশেষ অভিযান চালাতে হবে।
এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, ঘাপটি মেরে থাকা পুলিশের কিছু সদস্যের কর্মকান্ড নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে। এই সংখ্যা প্রায় আড়াইশো মতো হবে। সংখ্যা আরও বাড়তেও পারে। ইতিমধ্যে তালিকা করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে সরকারের হাইকমান্ডকে অবহিতও করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যেকোনো পরিস্থিতির জন্য পুলিশকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশে উদ্বেগ আছে। বৈধ অস্ত্রের সংখ্যার খোঁজ নেওয়া, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও অস্ত্র কারবারিদের গ্রেপ্তার করতে বিশেষ অভিযান চালাতে ইতিমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযানের নির্দিষ্ট তারিখ এখনো ঠিক হয়নি। হুট করেই আমরা বিশেষ অভিযান শুরু করব। কেপিআই স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন যথাসময়ে হবে বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। নির্বাচন নিয়ে যাতে কোনো মহল বা চক্র নাশকতামূলক কর্মকান্ড চালাতে না পারে সে জন্য মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সতর্ক আছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (অপারেশন) আনোয়ার হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশের সবধরনের প্রস্তুতি আছে। দাগি সন্ত্রাসীসহ অন্য অপরাধীদের ধরা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে দ্রুত সময়ের মধ্যে বড় ধরনের অভিযান চালানোর পরিকল্পনা আছে আমাদের।
পুলিশ সূত্র জানায়, আড়াইশো পুলিশ কর্মকর্তার কর্মকান্ড নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। তাদের মোবাইল নম্বর সার্বক্ষণিক ট্র্যাকিং করা হচ্ছে। এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যদেরও খোঁজ রাখা হচ্ছে। নজরদারির মধ্যে থাকা বেশ কয়েকজন পুলিশ সুপার, অ্যাডিশনাল পুলিশ সুপার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, ইন্সপেক্টর, সাব-ইন্সপেক্টর আছেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দপ্তরের অ্যাডিশনাল ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল বা নেতাদের সাপোর্ট দেওয়া আমাদের কাজ না। জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আমাদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের জন্য উন্নতমানের আগ্নেয়াস্ত্র ও যানবাহন ক্রয় করা হচ্ছে। পাশাপাশি ৫০ লাখের মতো রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড কেনা হচ্ছে। আগামী মাসের মধ্যে এসব সরঞ্জাম বাংলাদেশে আসবে বলে আশা করছি। ডিএমপি, সিএমপি, কেএমপি, আরএমপি, বিএমপি, এসএমপি, আরপিএমপি, জিএমপি কমিশনার, বিশেষ শাখা (এসবি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), অপরাধ তদন্ত বিভাগ, পিবিআই, টুরিস্ট পুলিশ, এটিইউ, রেলওয়ে পুলিশ, নৌপুলিশ, এপিবিএন, হাইওয়ে, শিল্পাঞ্চল পুলিশ প্রধান, সব অ্যাডিশনাল আইজিপি, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও রংপুর রেঞ্জে নতুন আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি পাঠানো হবে। ইতিমধ্যে ইউনিট প্রধানরা পুলিশ সদর দপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছেন। বিষয়টি আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকারবিরোধীরা নানা ষড়যন্ত্র করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে উঠেপড়ে লেগেছে তারা। বিএনপি আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও করছে। তারা পুলিশের ওপর হামলা করছে। যানবাহনে আগুন দিচ্ছে। আর এসব মোকাবিলা করতে পুলিশকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে পুলিশ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। অপরাধীদের ধরতে পুলিশের বিশেষ অভিযান শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।