
প্রিমিয়াম মেগা গেটেড কমিউনিটি রূপায়ণ সিটি উত্তরার গ্রাহকদের ফাইভ স্টার মানের সেবা দেবে ইউনিক গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হানসা ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। এ লক্ষ্যে রূপায়ণ সিটি উত্তরা ও হানসা ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আলোকে রূপায়ণ সিটি উত্তরার ফেজ-১ রূপায়ণ গ্রান্ড প্রিমিয়াম কন্ডোর গ্রাহকদের কোয়ালিটি ফ্যাসিলিটি ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস দেবে প্রতিষ্ঠানটি।
বিকেলে রূপায়ণ সিটি উত্তরায় প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। হানসা ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের পক্ষে চিফ অপারেটিং অফিসার মোহাম্মদ সাহেদুল হক ও রূপায়ণ সিটি উত্তরার পক্ষে হেড অব এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিন এইচ এম ফরিদুর রহমান, সিনিয়র ম্যানেজার ও ফ্যাসিলিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রধান মো. কামাল হোসেন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খাঁন মুকুল, ইউনিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহা. নূর আলী, কুয়েত বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মুকাই আলী লুৎফর রহমান, ইউনিক গ্রুপের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সৈয়দ ছানোয়ারুল হক, এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিন বিভাগের জিএম মেজর নাসিমুল হক (অব.), রূপায়ণ সিটি উত্তরার সিইও মো. মাহবুবুর রহমান, সিবিও গৌতম তরফদার, হেড অব এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিন এইচ এম ফরিদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় রূপায়ণ সিটি উত্তরা সিইও মো. মাহবুবুর জানান, বাংলাদেশের প্রথম প্রিমিয়াম মেগা গেটেড সিটি রূপায়ণ সিটি উত্তরার রূপায়ণ গ্রান্ড গ্রাহকদের মাঝে হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত। চলতি মাস থেকেই এখানে বসবাস করবেন গ্রাহকরা। এ লক্ষ্যে ফাইভ স্টার মানের সার্ভিস নিশ্চিত করতে হানসা ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর ও তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশে হোটেল, রিসোর্টে ফাইভ স্টার মানের সেবা দিয়ে আসছে হানসা ম্যানেজমেন্ট লিমিটড। আর তাই রূপায়ণ সিটি উত্তরার রূপায়ণ গ্রান্ডের গ্রাহকদের ফাইভ স্টার মানের সেবা নিশ্চিতে প্রতিষ্ঠানটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রূপায়ণ সিটি উত্তরার সিইও মো. মাহবুবুর রহমান।
কক্সবাজারের তিনটি উন্নয়ন প্রকল্পের কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির মামলায় জড়িতদের সম্পদের অনুসন্ধান নথিতেই সীমাবদ্ধ। মামলার দুই বছর পার হয়ে গেছে। জড়িতদের মধ্যে প্রভাবশালী রাজনীতিক, আইনজীবী, সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিরা রয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে; তাদের সংখ্যা প্রায় ৫০। ভূমি অধিগ্রহণ শাখাকে ঘিরে গড়ে ওঠা এ চক্রের সম্পদের অনুসন্ধানে চলছে ইঁদুর-বিড়াল খেলা।
২০২০ সালে তিনটি প্রকল্প নিয়ে দুদকের সাবেক এক কর্মকর্তার তদন্তে লুটপাটের বিস্ফোরক তথ্য উঠে এলেও জড়িত ৪৮ জনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি দুদক। বরং তদন্ত প্রতিবেদন নাকচ করে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আরেক কর্মকর্তাকে পুনঃতদন্তের ভার দেওয়া হয়। কিন্তু দেড় বছরেও লুটপাটে জড়িতদের সম্পদের অনুসন্ধানের জন্য নোটিস জারি করেনি দুদক। প্রকল্পগুলো হলো, কক্সবাজারের পিবিআই অফিসসংক্রান্ত প্রকল্প, এসপিএম প্রকল্প ও পানি শোধনাগার প্রকল্প।
মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দীন আলোচ্য তিন প্রকল্পের দুর্নীতি তদন্তের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। এ ব্যাপারে তিনি দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ কর্মকর্তা) মুহাম্মদ আরিফ সাদেকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। ২৪ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে এ বিষয়ে কথা বলার সুযোগ নেই বলে জানান মুহাম্মদ আরিফ সাদেক।
২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার শহরের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সার্ভেয়ার মোহাম্মদ ওয়াসিম খানকে ৯৩ লাখ ৬০ হাজার টাকাসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে আরও দুই দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে সাত বস্তা নথি উদ্ধার করা হয়। এতে ছিল জমি অধিগ্রহণের জন্য দেওয়া ক্ষতিপূরণের চেক, জমির মালিকদের করা আবেদন ও ভূমিসংক্রান্ত নথি। তিন প্রকল্পে দুর্নীতির জন্য পৃথক তিনটি মামলা করে দুদক। ২০২০ সালেই মামলাগুলোর তদন্ত শুরু করেন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। ২০২১ সালের ৩০ জুন দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের তৎকালীন উপপরিচালক মাহবুবুল আলমের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন তিনি।
গ্রেপ্তার হওয়া তিন সার্ভেয়ার ফেরদৌস খান, মো. ওয়াসিম খান ও মো. ফরিদ উদ্দিনের আদালতে দেওয়া জবানবন্দি ও দুদকের তদন্তে বেরিয়ে আসে ওই চক্রের সঙ্গে থাকা কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ২৩ কর্মকর্তাসহ ৪৮ প্রভাবশালী রাজনীতিক, আইনজীবী, সাংবাদিক, পুলিশ ও জনপ্রতিনিধির নাম। তাদের মধ্যে আছেন কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইটি, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কক্সবাজার সদর, পিবিআইর পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তাদের সম্পদবিবরণী অনুসন্ধানের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন শরীফ। তিন প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণে ৭৮ কোটি টাকার দুর্নীতির কথা বলা হয়।
যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ, নথি ও আসামিদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির পরও দাখিলকৃত চার্জশিটগুলোর অনুমোদন না নিয়ে ফের তদন্তের কথা বলেন উপপরিচালক মাহবুবুল আলম। ২০২২ সালে নতুন করে তদন্ত শুরু করেন কক্সবাজার জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন।
দুদকের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলে কমিশন সেটি পর্যালোচনা করে এবং আইনগত দিক খতিয়ে দেখে। কোথাও ঘাটতি থাকলে অধিকতর তদন্ত হতে পারে। কয়েকটি বিষয়ে শরীফ উদ্দিন এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে চাকরিবিধি লঙ্ঘন করেছেন।
শরীফ উদ্দিনের প্রতিবেদনে উল্লিখিত বিষয়গুলো হচ্ছে ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধের ক্ষেত্রে কমিশন আদায় করা, একজনের জমি অন্যজনের নামে দেখানো, বেশি দামে জমি কেনা, সরকারি সংস্থার অধিগ্রহণ করা জমি নতুন করে অধিগ্রহণ করা।
কক্সবাজার সদরের মো. আল আমীন, ইমতিয়াজ হোসেন, আবদুর শুক্কুর প্রমুখ ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা বলেন জেলা প্রশাসনের প্রভাবশালী আমলা, রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে এত বড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে তারা দেখছেন না।
ভূমি অধিগ্রহণের দুর্নীতির প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি। যখন এসব দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল, তখনকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখন সেখানে নেই। কারও কারও পদোন্নতি হয়েছে। তারা রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত আছেন।
শরীফের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জালিয়াতি করে পানি শোধনাগার প্রকল্পে প্রস্তাবিত বাঁকখালী নদীর উত্তর পাড়ের জমি অধিগ্রহণ না করে নদীর দক্ষিণ পাড়ে দশগুণ বেশি দামের জায়গা প্রকল্পের জন্য নির্ধারণ করা হয়। স্থাবর সম্পত্তি হুকুম দখল আইন ২০১৭ লঙ্ঘন করা হয়। কক্সবাজার পৌরসভাপ্রত্যাশী সংস্থা না হওয়া সত্ত্বেও সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমানকে প্রত্যাশী সংস্থা সাজিয়ে বেশ কিছু তারিখবিহীন প্রত্যয়নপত্র ওই জমির ওপর গ্রহণ করা হয়। ভূমি বরাদ্দ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আলোচ্য ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।
ওই প্রকল্পে পরে সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমানের স্ত্রী ফারহানা আকতার ও শ্যালক মিজানুর রহমানকে অধিগ্রহণকৃত জমিতে কক্সবাজার সদর উপজেলার তৎকালীন দুজন এসিল্যান্ডের যোগসাজশে দখল দেখিয়ে ছয়টি নামজারি খতিয়ান করা হয়। আগের নামজারির মূলনথিও গায়েব করে দেওয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রত্যাশী সংস্থার প্রতিনিধি না হয়েও সরেজমিনে পরিদর্শন ছাড়াই ফিল্ড বুকে স্বাক্ষর করা, অধিগ্রহণ নথির নোটশিটে মামলার কথা রয়েছে জেনেও তা নিষ্পত্তি না করা, প্রত্যাশী সংস্থা ঠিক না করেই সাবেক মেয়র মুজিবুর রহমানের সঙ্গে যোগসাজশে ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রাক্কলন প্রত্যাশী সংস্থার কাছে পাঠানো হয়। একটি রিট পিটিশনের ওপর হাইকোর্টের আদেশকে মিসগাইড করে, রিটের যথাযথ নিষ্পত্তি না করেই ২০২০ সালের ৯ জুলাই ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭ কোটি ১৬ লাখ ৮৯ হাজার ৭৯৪ টাকা অবৈধভাবে সাবেক মেয়রকে পরিশোধ করা হয়।
অভিযুক্ত সাবেক জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হয়ে এক সার্ভেয়ার (যিনি আসামি) ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করা ৬৬ লাখ ৭৫ হাজার ৫৫০ টাকা গচ্ছিত রেখে মানি লন্ডারিং আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে তদন্ত প্রতিবেনে বলা হয়েছে। ওই ৪৮ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট-২ দাখিলের অনুমোদন দেওয়ার সুপারিশও করেন দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন।
এ ছাড়া আসামি সেলিম উল্যার ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে উল্লিখিত এবং তদন্তে জ্ঞাত ৯০ জন মধ্যস্বত্বভোগীর সম্পদের প্রাথমিক অনুসন্ধানের অনুমতি দেওয়ার সুপারিশও করেন শরীফ উদ্দিন। র্যাবের জব্দ করা চারটি এলএ মামলার নথির বিষয়ে (এসব মামলায় ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করা হয়েছে) নতুন অনুসন্ধানের সুপারিশও করা হয়।
কক্সবাজারের চকরিয়া থানার বাসিন্দা মো. আনিস উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারে জড়িত। তিনি নিয়মিত ট্রাকের ভেতর বিশেষ কায়দায় ইয়াবা এনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করেন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে তাকে ২৫ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ (ডিবি)। এ ঘটনায় ডিএমপির রমনা মডেল থানায় হওয়া মামলার তদন্তে নেমে অবৈধ অস্ত্র কারবারে জড়িত একটি চক্রের খোঁজ পায় ডিবি।
ডিবি বলছে, চক্রটি মাদকের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র সরবরাহ করে আসছিল। চক্রের হোতা টেকনাফে বসে অস্ত্রের কারবার নিয়ন্ত্রণ করে। তার লোকেরা সারা দেশে সরবরাহ করে অস্ত্র। চক্রটি হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রামের মতো এনক্রিপটেড অ্যাপ ব্যবহার করে কারবার নিয়ন্ত্রণ করে।
জানতে চাইলে তদন্তসংশ্লিষ্ট ডিবি গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) বার্নার্ড এরিক বিশ্বাস দেশ রূপান্তরের কাছে দাবি করেন, ‘ইয়াবা ট্যাবলেটসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তারের পর আমরা বড় একটি অস্ত্র কারবারি চক্রের সন্ধান পেয়েছি। এ চক্রের কাছ থেকে অস্ত্র কেনার তথ্য পাওয়ার পর আমরা ছয়জনকে গ্রেপ্তার করি। পরে জানতে পারি তারা ছাত্রদলের নেতা।’
তবে গত ১৯ আগস্ট রাজধানীর লালবাগ থানা এলাকায় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার দেখানো ছাত্রদলের ওই ছয় নেতা নিখোঁজ ছিলেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। দলটি দাবি করে, এক নেতাকে খুঁজতে গিয়ে আরও পাঁচ নেতা নিখোঁজ হন। পরবর্তী সময়ে তাদের অস্ত্রসহ আটকের নাটক সাজায় পুলিশ।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অস্ত্র কারবারের এ চক্রটির দলনেতা টেকনাফের মুন্না ওরফে মামা এবং পাবনার আরিফ বঙ্গাল। তারা মাদকের সঙ্গে অস্ত্রের চালান পাঠায়। অস্ত্রের অর্ডার নেয় বিভিন্ন অ্যাপসে। এসব অস্ত্রের দামও সস্তা। ক্ষেত্রবিশেষ ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে এসব অস্ত্র বেচাকেনা হয়।
তদন্ত সূত্র বলছে, মাদকসহ মো. আনিস উদ্দিনকে মগবাজার থেকে আটকের পর একটি অডিও রেকর্ড পায় ডিবি। যেখানে বলতে শোনা যায়, ‘একটি মাল রেখে আসিছ।’ এর সূত্রেই অস্ত্রের সন্ধান পায়।
ডিবি দাবি করেছে, ছাত্রদলের ওই ছয় নেতাকে গ্রেপ্তারের পর তাদের ফোন ঘেঁটে ডিবি জানতে পেরেছে, গত ২১ জুন থেকে বিভিন্ন সময় এসব অস্ত্রের সরবরাহ হয়। ১১টি অস্ত্র কেনার কথা থাকলেও আটটি নেওয়া হয়েছে। এ মধ্যে পাঁচটি অস্ত্র এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
এ বিষয়ে ডিবি গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আরও কিছু অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে রয়েছে। আমরা সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, ‘অপরাধীর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে না। আমরা রাজনৈতিক পরিচয় দেখে আসামি গ্রেপ্তার করিনি।’
ডিএমপির ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ডিবি অস্ত্রধারী ও অস্ত্র কারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। এটা চলমান থাকবে। অস্ত্রধারীরা কোনো দলের হতে পারে না।
সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইলে যমুনার নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে রয়েছে। গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্রের পানিও বইছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে। এতে জেলার নদীতীরের নিচু এলাকা তলিয়ে হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে দুই নদীর ভাঙনে বগুড়া ও টাঙ্গাইলে শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
আমাদের সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্টে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের বাঐতারা গ্রামের অর্ধশত বাড়িঘর ও ছাতিয়ানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও শ্রেণিকক্ষের নিচতলা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। ফলে এ বিদ্যালয়ের নিচতলায় ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে। দোতলায় ক্লাস চলছে। এ ছাড়া নদী তীরবর্তী এলাকার অনেক বাড়িঘর বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়ায় মানুষজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার হাসান মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
যমুনা নদীবেষ্টিত কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের নিচু জমির তিল, কাউন বাদাম, আখ ও সবজিক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। ফলে এসব এলাকার কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শাহজাদপুর উপজেলার খুকনি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম ও আরকান্দির আরও আট বাড়িঘর বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এ ছাড়া উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের অধিকাংশ নিচু গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। নিচু রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। বন্যার পানিতে গোচারণ ভূমি ডুবে যাওয়ায় কৃষকরা তাদের গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে নদীপাড়ের অসহায় মানুষ।
চৌহালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হেকমত আলী জানান, উপজেলার ২ হাজার ১৯০টি পরিবারের সাড়ে আট হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, গতকাল বিকেল ৩টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের নদের পানি ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরে নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। তিস্তার পানি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার ও করতোয়ার পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালি পয়েন্টে ৪৫ সেন্টিমিটার পানি হ্রাস পেয়েছে।
পানি বৃদ্ধির কারণে ফুলছড়ি উপজেলার কটিয়ারভিটা, গুনভড়ি, রতনপুর, উড়িয়া, দক্ষিণ উড়িয়া, সদর উপজেলার নয়ারহাট, সোনারগুড়া, কাটিহারা, কুমারগাড়ী, চরেরগ্রাম, ফকিরপাড়া, সাঘাটার উত্তর শাতালিয়া, দক্ষিণ শাতালিয়া হাসেলকান্দি, বুগারপটলসহ বিভিন্ন এলাকায় আবারও পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এসব এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
জামালপুর সংবাদদাতা জানান, উজানের বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জামালপুর জেলার যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার যমুনার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
গতকাল সকালে সরেজমিনে দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, যমুনার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হয়েছে। যমুনা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারীদের অনেকের ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার কিছু কিছু রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া ইসলামপুর উপজেলার কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বন্যার কারণে ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে করে ৮ হাজার ২৩০টি পরিবারের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ওই দুই উপজেলায় দুটি আশ্রয়ণকেন্দ্রে ১০৫টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে ২৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়।
দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ীসহ ছয়টি উপজেলার ১৩২৮ হেক্টর রোপা আমনের ক্ষেত বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
বগুড়া প্রতিনিধি জানান, যমুনার বাঁধে ভাঙন দেখা দিলে ইছামারা গ্রামের একাংশের শতাধিক বাড়ি ঘণ্টাখানেকের মধ্যে মিলিয়ে গেল যমুনার নদীতে। বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে বগুড়া জেলা সারিয়াকান্দি উপজেলা কামালপুর ইউনিয়নের ইছামারা গ্রামে।
গতকাল সকালে ওই এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাতের মধ্যে আরও অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। নিজের বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য বর্ণনা করছিলেন স্বপ্না বেওয়া। তিনি বলেন, ‘হামাগিরে ঘরবাড়ি কয় মিনিটের মদ্দ্যে যমুনা লিয়ে লিলো। বাড়িঘরের জিনিস গুলান বাচাবার জন্নি যমুনাত লাপ দিনু। তারপরও পারনু না।’
একইভাবে ভাঙনে শিকার লিভা আক্তার বলেন, ‘দেকতে দেকতে লিমিষে দুডা ঘর জিনিসপত্রসহ যমুনা লদীত বিলীন হয়া গেল।’
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সারিয়াকান্দিতে মথুরাপাড়া পয়েন্টে গতকাল বিকেল ৩টায় যমুনার পানি বিপদসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সারিয়াকান্দির ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুজ কুমার বসাক বলেন, ভাঙনকবলিত এলাকায় বড় আকারের জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ভাঙনের শিকার এলাকাবাসীকে স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাময়িকভাবে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা জানান, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত কয়েক দিন ধরে টাঙ্গাইলের যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভূঞাপুরের যমুনা পূর্বপাড়ের নিকরাইল ইউনিয়নের পাটিতাপাড়া এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি, ঈদগাহ মাঠ ও কবরস্থানের অর্ধেক জায়গা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় গত ২৪ আগস্ট ভূঞাপুর-বঙ্গবন্ধু সেতু আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আশ্বাসে অবরোধ তুলে নিলেও এখন পর্যন্ত ভাঙন রোধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় হতাশ ভাঙনকবলিত এলাকাবাসী।
পাটিতাপাড়া ভাঙনকবলিত এলাকার সেকাম শেখ, সিরাজুল ইসলাম, সজলসহ অনেকে বলেন, যমুনার পানি বেড়ে যাওয়ায় গত কয়েক দিন ধরে ভাঙন শুরু হয়েছে। কয়েক দিনে অনেক ঘরবাড়ি নদীতে চলে গেছে। প্রায় ৫০ বছর আগের কবরস্থান ও ঈদগাহ মাঠ নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বারবার বলা সত্ত্বেও তারা ভাঙনকবলিত এলাকা দেখতে আসেন না। কর্মকর্তারা ১০০ মিটার জায়গায় জিও ব্যাগ ফেলার জন্য ৩০ হাজার টাকা ঘুষ চায়। তা না হলে জিও ব্যাগ ফেলা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন জানান, ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হবে বিধায় টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার বলা সত্ত্বেও তারা ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার জন্য কেউ যদি টাকা চায় বা নেয়, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কিছুদিন আগে ভাঙন রোধে কয়েক দফায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। স্থায়ী বাঁধের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। অনুমতি পেলে কাজ শুরু করা হবে।
ঘড়িতে রাত প্রায় ১২টা। ঢাকা শহরের এলিফ্যান্ট রোড এলাকা। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা তখনো একটু রাত গভীর হলেই বাধ্য শিশুর মতো ঘুমাতে যেত। রাস্তার দুধারে দোকানপাট সব বন্ধ। নামানো সাটারের গায়ে কোথাও রাস্তার আলো, কোথাও জমাট অন্ধকার জড়ো হয়ে আছে। আমি অপেক্ষা করছিলাম একজন পেশাদার খুনির জন্য।
তখন প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করি অন্বেষা নামে একটি সাপ্তাহিক কাগজে। প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ সম্পাদনা করতেন পত্রিকাটি। মাহফুজউল্লাহর কাছে আমার সাংবাদিকতা শেখার শুরু সাপ্তাহিক বিচিত্রায়। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি শহরে বেশ কয়েকটি খুনের ঘটনা আলোড়ন তোলে। পেশাদার খুনি অথবা প্রফেশনাল কিলারদের নাম শোনা যেতে থাকে রাজধানীর সর্বত্র। সম্পাদকের আগ্রহে এই খুনিদের নিয়ে কাজ করতে শুরু করি।
সেই রাতে আমার এক রাজনৈতিক সোর্স আমাকে একজন পেশাদার খুনির সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার জন্য নিয়ে যায় এলিফ্যান্ট রোডে। ওই এলাকায় তখন একটি ক্লাব শহরের অন্ধকার জগতের মানুষদের বিচরণ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল। সেখানে রাজনৈতিক ক্যাডারদের আনাগোনাও ছিল। সোর্সকে নিয়ে আরও আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর সেদিন সেই খুনি চরিত্রটির দেখা পেয়েছিলাম। মধ্য রাতে সোর্সের বাসার বারান্দায় বসে কিছুক্ষণ কথা হয়েছিল আমাদের। শহরে আলোচিত কয়েকটা খুনের সঙ্গে কারা জড়িত, কোনো খুনের ঘটনা ঘটল এসব নিয়ে ছাড়া ছাড়া কিছু কথার পর সেই মানুষটা বিদায় নেয়। আর যাওয়ার আগে আমাকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে যায় পত্রিকায় এসব বিষয় নিয়ে লেখালেখি না করার জন্য।
গল্প উপন্যাসে খুনিদের যে রকম নাটকীয় বিবরণ থাকে তার সঙ্গে তার অবয়ব বা আচরণে কোনো মিল ছিল না। শুধু এক ধরনের অস্থিরতা লক্ষ্য করেছিলাম তার আচরণে। খুব বেশি কথা বলার ক্ষেত্রে তার খুবই অনাগ্রহ ছিল। তাই আমাদের সাক্ষাৎ জমেনি। পরে তাকে আরও কয়েকবার পাকড়াও করার চেষ্টা করলেও সে আর ধরা দেয়নি। সম্ভবত খুনের ঘটনার পর্দার আড়ালে থাকা গডফাদার আর টাকার উৎসকেও সে আড়াল করতে চেয়েছিল।
খুনিদের জীবন নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছিলাম নাটকীয়তার খোঁজে। এক শিহরণময় রক্তাক্ত জীবনের চালচিত্র তুলে আনার জন্য। কিন্তু সেরকম কিছু খুঁজে পাইনি সেই ভয়ংকর মানুষগুলোর মধ্যে। শুধু তারা আমাকে দিয়েছিল রুদ্ধশ্বাস অনুভূতি। এ রকম আরেকজন পেশাদার হত্যাকারীর দেখা পাই ওই সময়ে। সাংবাদিকতা, রাজনীতি আর অন্ডারওয়ার্ল্ডের মানুষদের কারও কারও সঙ্গে যোগাযোগ থাকায় তাকে আমি আগে থেকেই চিনতাম। ছাত্ররাজনীতির এক সক্রিয় কর্মীকে খুন করার অভিযোগ তখন তার মাথার ওপর। সেই কর্মীটি ছিল আমার বিশেষ পরিচিত। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় তার পলাতক রাতের জীবনে আমি ছিলাম একজন সঙ্গী। একই বিছানায় ঘুমিয়েছি, বহু রাত জেগে আড্ডা দিয়েছি। এক রাতে সেই শহরে অজ্ঞাত আততায়ীদের গুলিতে সেই বন্ধুটি প্রাণ হারায়। রাস্তায় রক্তের দাগ একটা সময়ে শুকিয়ে যায়। পুলিশের তদন্তের খাতাও বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের নাম তখন অপরাধ জগতে এক কান থেকে অন্য কানে ভেসে বেড়ায়। সেই পূর্বপরিচিত মানুষটির নাম তখন পেশাদার খুনি হিসেবে বেশ আলোচিত বিশেষ মহলে। হঠাৎ এক হাসপাতালে রাতেরবেলা দেখা হয়ে যায় আমাদের। তখন ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের আবাসিক কোয়ার্টারে আশ্রয় নিয়েছে সেই শহরের আলোচিত এক বন্দুকবাজ ছাত্রনেতা। পেশাগত কারণে তার সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েই আচমকা সেই পেশাদার খুনির সঙ্গে দেখা হয়ে যায়।
উত্তেজনাহীন এক জোড়া চোখের মালিক মানুষটি খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে আমার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করে। আমিও প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া সেই রিপোর্টের খাতাটা আবার খুলে বসি। সেই বন্ধু খুন হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে সে সহজ ভাষায় জানায়, আমার সেই বন্ধুটিকে মরতেই হতো। অপরাধ জগতের নানান জায়গায় অনেকের পথের কাঁটা হয়ে উঠেছিল সে। তাই তাকে চিরকালের জন্য ছুটি দেওয়া।
কত টাকা ছিল আমার সেই বন্ধুর মাথার মূল্য? প্রশ্নটার উত্তর সে হেসে এড়িয়ে গিয়েছিল সেদিন। সেদিন খুব রাগ হয়েছিল আমার সেই পেশাদার খুনির ওপর? হয়েছিল। কত সাধারণভাবে, কোনো উত্তেজনা ছাড়াই একজন আরেকজনকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলা যায়! যে মানুষটি খুন হয় সে আর কিছুই জানতে পারে না। কিন্তু তার অনুপস্থিতির প্রতিক্রিয়া কিছু মানুষের মধ্যে রয়ে যায় আরও অনেক দিন। একটা সংসারে কারও অনুপস্থিতিতে জায়গা করে নেয় হাহাকার আর বেদনার অন্য এক প্রচ্ছন্ন সংসার।
রিপোর্টটা আমার আর করা হয়নি। সংবাদপত্রের পৃষ্ঠায় রগরগে, উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনার ঠাঁই হয় বোল্ড টাইপে। আমি সেরকম কোনো স্টোরি খনন করে বের করতে পারিনি। শুধু টের পেয়েছিলাম, শহরের অপরাধ জগতে এ এক অদৃশ্য জাল, যার আয়ত্তে রয়েছে বহু মানুষ। খুন আর পেশাদার খুনিদের রক্তাক্ত গল্পের মাঝখানে একজন মানুষের চির অনুপস্থিতি ডামাডোলের মধ্যে হারিয়ে যায়। পরে কৌতূহলবশত আরও কিছুদিন পেশাদার খুনিদের রক্তাক্ত পায়ের ছাপ অনুসরণ করেছিলাম। কিন্তু গডফাদারদের ছত্রছায়ায় থাকা সেই ভয়ংকর মানুষদের পূর্ণাঙ্গ ছবি তুলে আনা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কারণ তারা খুব সাধারণ ভিড়ের মধ্যে মিশে থেকে কাজ করে। তবু আজও চোখ বন্ধ করলে দেখতে পাই, এই জনারণ্যে নিঃশব্দ আর সতর্ক পায়ে হেঁটে চলেছে পেশাদার খুনিরা। হয়তো হাত বদল হয়েছে তাদের সাম্রাজ্য, পাল্টে গেছে বন্দুকের নিশানা। কিন্তু অদৃশ্য চরিত্র হয়ে, খুব সাধারণ অবয়ব নিয়ে তারা আজও রাজত্ব করছে এক অন্ধকার পৃথিবীতে।
দরপত্র আহ্বান ছাড়াই সড়ক ও পার্কিং স্পেস তৈরির কাজ শুরু করেছে গণপূর্ত অধিদপ্তর। নতুন ইট-রাবিশে কাজ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ব্যবহার করছে পুরনো ইট-রাবিশ। গণপূর্ত অধিদপ্তরসংলগ্ন গণপূর্ত রমনা স্টোরের সড়ক ও পার্কিং স্পেস তৈরিতে এসব করা হচ্ছে।
জানা গেছে, রমনা পার্কের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মারজিয়া এন্টারপ্রাইজ রমনা স্টোরের সড়ক ও পার্কিং স্পেস তৈরির কাজ করছে। পুরনো ইট-রাবিশে রমনা স্টোরের ম্যাকাডাম তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। কিছুদিনে পিচ ঢালাই দেওয়া হবে।
গত বুধবার সরেজমিনে দেখা গেছে, গণপূর্তের রমনা স্টোরের সড়ক ও পার্কিং স্পেস তৈরির কাজ করছে শ্রমিকরা। পুরনো ইট-রাবিশ ব্যবহার করা হচ্ছে কেন জানতে চাইলে তারা বলেন, ‘কন্ট্রাক্টর যেভাবে বলেছেন আমরা সেভাবে কাজ করছি। নতুন ইট-রাবিশ দিলে ব্যবহার করতাম, দিয়েছে পুরনো ইট-রাবিশ, তাই ব্যবহার করছি।’
মারজিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মোস্তফা হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রমনা পার্কের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর পুরনো ইটগুলো আমি কিনে নিয়েছি। গণপূর্ত আমাকে বলেছে রমনা স্টোরের সড়ক ও পার্কিং স্পেস তৈরি করতে। আমার কাছে যে ইট ছিল তা দিয়েই কাজ শুরু করেছি। ইট-রাবিশগুলো পুরনো হলেও ভালো আছে। তাই ব্যবহার করছি।’
তিনি বলেন, ‘দরপত্র ছাড়া কাজ করা যায় না এটা কে বলেছে? গণপূর্তের সিটি ডিভিশনে এমন অনেক কাজ হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে এসব কাজ করা হয়। কাজটি খুব বড় নয়, ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার বেশি হবে না।’
গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী স্বর্ণেন্দু শেখর মন্ডল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘রমনা পার্কের আধুনিকায়নের কাজ চলছে। ওই জায়গার কিছু পুরনো ইট-রাবিশ ছিল, সেগুলো রমনা স্টোরের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর জন্য আলাদা খরচ ধরা হবে না।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কেনা ইট-রাবিশ ব্যবহার করছেন কেন? জবাবে প্রকৌশলী বলেন, ‘বিষয়টি তো এমন হওয়ার কথা নয়।’ এরপর কোনো কথা না বলে ব্যস্ততার অজুহাতে টেলিফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
গণপূর্তে উন্নয়ন ও সংস্কার কাজে অনিয়ম নতুন কিছু নয়। প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে। রমনা স্টোরের সড়ক ও পার্কিং স্পেসে পুরনো ইট-রাবিশ ব্যবহার এমনই একটি ঘটনা।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই গুরুতর। গত সোমবার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার। আবেদনটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ে আছে। গতকাল রাত ৮টা পর্যন্ত তাকে অনুমতি দেওয়ার কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে খালেদা জিয়ার একান্ত সহকারী জানিয়েছেন।
পাশাপাশি সরকারের অনুমতি পেলে দ্রুততম সময়ে তাকে বিদেশে নিতে ভিসা-প্রক্রিয়া শুরু থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রয়োজনীয় সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। সরকারের সবুজ সংকেত না পাওয়ায় ভিসা করানো যাচ্ছে না।
গতকাল শুক্রবার দেশ রূপান্তরকে এসব কথা জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার মেজো বোন সেলিমা ইসলাম।
তিনি বলেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের খোঁজখবর নিচ্ছেন যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান। শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ থাকলে প্রথমে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হতে পারে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নত হলে অন্য দেশে নেওয়া হবে।
সেলিমা ইসলাম বলেন, ‘আমার বোন হেঁটে জেলে গেলেন। জেলে থাকাবস্থায় অসুস্থ হলে তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। এরপর করোনার কারণে সরকার তাকে দুটি শর্তে মুক্তি দেয়। তখন থেকেই আমরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে আবেদন করে আসছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকার তাকে মুক্তি দেয়নি। বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দিতে না পারায় দিনের পর দিন তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেছে। এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে আমার বোন।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী এবিএম আব্দুস সাত্তার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘বিএনপি নেতারা সার্বক্ষণিক চেয়ারপারসনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আমরা সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি। সরকার অনুমতি দিলে আমরা দ্রুততম সময়ে চেয়ারপারসনকে বিদেশে পাঠাতে পারব।’
জিয়া পরিবারের সদস্যরা গতকাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তারা সরকারের দিকে তাকিয়ে আছেন। অনুমতি পাওয়া মাত্র সব ধরনের পদক্ষেপ নেবেন। ইতিমধ্যে ভিসা প্রস্তুতিসহ অন্যান্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। বিদেশে নেওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন তার পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান, ব্যক্তিগত সহকারী ফাতেমা ও ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার। ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসেন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি। তখন থেকেই তিনি হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সেবায় সার্বক্ষণিক থাকছেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বিএনপি গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আজ (গতকাল শুক্রবার) ম্যাডাম শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে বিকেলে তাকে তৃতীয়বারের মতো কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। রাতে আবার তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হওয়ায় হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল। পরে অবস্থার উন্নতি হলে তাকে ফের কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় বিএনপি গঠিত চিকিৎসক দলের সদস্যরা জানান, খালেদা জিয়া ২০২১ সালের ১১ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। একই বছরের নভেম্বরে তার চিকিৎসকরা জানান, তিনি লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত দলীয় মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা তখন জানিয়েছিলেন, তাদের সাধ্য অনুযায়ী যতটুকু করার ছিল, তারা তা করেছেন। পরবর্তী চিকিৎসা যুক্তরাজ্য, জার্মানি অথবা যুক্তরাষ্ট্রে করার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরিবারকে বলেছেন। পরের বছর জুন মাসে খালেদা জিয়ার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর মধ্যে একটিতে রিং পরানো হয়। এখনো তার হার্টে দুটি ব্লক রয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে পরিবারের পাশাপাশি আমরা বিএনপি নেতারা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চেয়ারপারসনের পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। সরকার অনুমতি দিলে দ্রুতই চেয়ারপারসনকে বিদেশে পাঠানো হবে।’
গতকাল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহিলা দলের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যে মানুষটি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, তাকে আজ সরকার গৃহবন্দি করে রেখেছে। তিনি গুরুতর অসুস্থ হলেও তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। আমরা আশা করি, খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে তার পরিবার যে আবেদন করেছে, তা সরকার বাস্তবায়ন করবে।’
সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে। কারণ উনি মুক্ত থাকলে ওনাদের ক্ষমতায় থাকা কঠিন হয়ে যাবে। উনি মুক্ত থাকলে দেশের গণতন্ত্র মুক্ত থাকবে। উনি মুক্ত থাকলে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না।’
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী, সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছে। ফলে এখন জেলে যাওয়া বা আদালতের আশ্রয় নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। ওই ৪০১ ধারাতেই বলা আছে, নির্বাহী আদেশে শর্ত ছাড়াই মুক্তি দেওয়া যায়। এমনকি সরকার সাজা মওকুফও করতে পারে। ফলে সরকারই শর্তহীন মুক্তি দিয়ে খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে।’
গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর বিষয়ে দুই-তিন দিন আগে তার ভাই শামীম এস্কান্দার এসেছিলেন। তিনি আবেদন জমা দিলে তা আইনমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে ব্যাখ্যার জন্য।
আবেদনের বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে থাকা বিএনপি নেতারা।
তারা গত বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছেন। খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। তারাও অপেক্ষা করছেন যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাবেন ওই নেতারা।
খালেদা জিয়াকে জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়ে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশে^র যে কয়েকটি দেশে সম্ভব, জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতার কারণে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরপর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এর আগেও অবশ্য খালেদা জিয়াকে বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্রে জটিলতা, ফুসফুস, চোখ ও দাঁতের নানা সমস্যায় ভুগছেন। এ ছাড়া তার মেরুদ-, হাত ও হাঁটুতে বাতের সমস্যাসহ আরও কিছু শারীরিক জটিলতা রয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার সাজা হয়। সেদিন থেকে প্রায় দুই বছর কারাবন্দি ছিলেন তিনি। এ ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আরও সাত বছরের সাজা হয় খালেদা জিয়ার। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ করোনা মহামারির শুরুতে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দিয়েছিল সরকার। এরপর থেকে তার মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস করে বাড়ানো হচ্ছে।
প্রাচীন সময় থেকে মানুষের খাদ্যতালিকায় জায়গা করে নিয়েছে চীজ বা পনির। গরুর দুধের তৈরি পনিরে শরীরকে সুস্থ রাখার প্রয়োজনীয় সব উপাদান পাওয়া যায়।
বর্তমানে সময়ের সাথে সাথে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পনিরের ব্যবহার। আর তাই বিস্কিট থেকে শুরু করে পাউরুটি, পাস্তা, পিৎজা অনেক কিছুতেই পনির ব্যবহার হয়।
পনিরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের মতে, ১০০ গ্রাম পনিরের মধ্যে রয়েছে:
শক্তি - ৩৬২ কিলোক্যালরি
প্রোটিন – ৫.১৭ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট - ৫০ গ্রাম
ক্যালসিয়াম - ৬৯ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম - ১৮১ মিলিগ্রাম
স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড – ৩.৪৫ গ্রাম
কোলেস্টেরল - ৩৪ মিলিগ্রাম
এটি প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন কে এবং ক্যালসিয়ামের একটি সমৃদ্ধ উৎস। পনিরের বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য সুবিধা রয়েছে।
পনির ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এবং প্রোটিনের একটি সমৃদ্ধ উৎস। এটি বয়স্ক, শিশু, গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে অনেক উপকারি। পনিরে থাকা ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পনির খেলে অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করা যায়।
পনির ক্যালসিয়ামের একটি সমৃদ্ধ উৎস যা শক্তিশালী ও মজবুত দাঁত তৈরিতে অবদান রাখে। পনিরে থাকা কেসিন ফসফোপেপটাইড উপাদান দাঁতের গহ্বর কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া চিউইং চিজ মুখের পিএইচ মাত্রা বাড়াতে পারে এবং সামগ্রিক মৌখিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
পনিরে অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড যেমন কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিডের সমৃদ্ধ উৎস। কোরিয়া ইউনিভার্সিটি এবং ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারা এক গবেষণায় দেখা গেছে যে এই ফ্যাটি অ্যাসিডে ক্যান্সার প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ ছাড়া এই ফ্যাটি অ্যাসিড এথেরোস্ক্লেরোসিস এর বিকাশ রোধ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে।
পনিরে কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড এবং স্ফিংগোলিপিড রয়েছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে স্ফিংগোলিপিড মানুষের কোলন ক্যান্সারকে বাধা দিতে পারে।
এ ছাড়া পনিরে থাকা ক্যালসিয়াম নির্দিষ্ট ধরণের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে খাদ্যতালিকাগত ক্যালসিয়াম কোলোরেক্টাল ক্যান্সার প্রতিরোধে বেশ উপকারি।
পনিরে থাকা ক্যালসিয়াম গর্ভবতী মহিলাদের জন্য খুবই উপকারি। এটি প্রসবের সময় সংকোচনকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া উকের দুধ পান করানোর সময় ক্যালসিয়াম পুষ্টির ঘাটতিও পূরণ করে পনির। এটি গর্ভবতী মহিলাদের ভ্রূণের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে।
কিছু ধরণের পনির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কার্যকারিতা বাড়াতে পরিচিত। এক গবেষণায় দেখা গেছে যে পনির শরীরের প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এটি অসুস্থতা এবং রোগ কমাতে পারে।
প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সুরক্ষিত পনির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এটি বয়স্কদেরমধ্যে ইমিউনোসেনেসেন্স (প্রতিরোধ ব্যবস্থার ধীরে ধীরে দুর্বল হওয়া) প্রতিরোধ করতে পারে।
পনির সেলেনিয়ামের একটি সমৃদ্ধ উৎস যা থাইরয়েড ফাংশন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সেলেনিয়ামের থাইরয়েড হরমোন উৎপাদনে সহায়তা করে ভাইরাসের বিকাশকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে।
চেডার পনির হল এক ধরনের হার্ড পনির। এটি খাদ্যতালিকায় যোগ করলে তা থাইরয়েড রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
পনিরের আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলির মধ্যে একটি হল মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করা। বিশেষ করে ক্যামেমবার্ট জাতের পনির এই ধরনের কাজ করে থাকে। ক্যামেমবার্ট পনির প্রদাহজনক সাইটোকাইনের মাত্রা কমাতে পারে। এটি আলঝাইমার রোগের ঝুঁকি কমায় এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে।
পনির ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। এতে থাকা ভিটামিন বি কোষের বিপাক এবং বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফলে এটি উজ্জ্বল ত্বকের পাশাপাশি ত্বকের দাগ কমাতেও সাহায্য করতে পারে।
যাদের গরুর দুধে অ্যালার্জি আছে তাদের পনির এড়ানো উচিত। এটি অ্যালার্জি, ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাইগ্রেন এবং মাথাব্যথার কারণ ও হতে পারে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার (অতিরিক্ত পনির খাওয়া) কার্ডিওভাসকুলার রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের কারণ হতে পারে।
পনিরের স্বাস্থ্য উপকারিতা থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ও রয়েছে। যেমন,
কিছু লোকের দুধের প্রোটিন যেমন কেসিনে অ্যালার্জি থাকে। এটি সারা শরীর জুড়ে একটি প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এবং ত্বকে ফুসকুড়ি, সাইনাস কনজেশন এবং ব্রণ জ্বলতে পারে।
অনেকের ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা থাকে। সেক্ষেত্রে তাদের পনির না খাওয়াই শ্রেয়। কারণ ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা গ্যাস, পেট ফোলাভাব এবং ডায়রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। অনেক সময় এর কারণে কোষ্ঠকাঠিন্যও হতে পারে।
প্রচুর পরিমাণে পনির খাওয়ার ফলে মাইগ্রেন এবং মাথাব্যথা হতে পারে। পুরনো পনিরে থাকা টাইরামিন উপাদান কিছু ব্যক্তির মধ্যে মাইগ্রেনকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
যারা মোনোমাইন অক্সিডেস ইনহিবিটরস (MOIs) গ্রহণ করছেন তাদের পনির খাওয়া এড়ানো উচিত। এই ওষুধগুলি হতাশার চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। এসব ওষুধ পুরনো বা বয়স্ক পনিরে থাকা উপাদান টাইরামিনের সাথে বিক্রিয়া করতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।
নিজের গান দিয়ে ইউটিউব চ্যানেলের যাত্রা শুরু করলেন ক্লোজআপ তারকা নোলক বাবু।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বনশ্রীর এক রেস্তোরায় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলের উদ্বোধন করেন এ গায়ক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার মা।
নোলক বাবুর ইউটিউব চ্যানেলে উন্মুক্ত হয়েছে তার নতুন গান 'মানুষ'। গানের কথা লিখেছেন তরুন সিং, সুর করেছেন শিল্পী নিজেই। গানটির সংগীতায়োজন হৃষিকেশ রকি।
নোলক বাবু বলেন, গানটি গাইতে পেরে আমি মুগ্ধ।
চলমান সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগে খেলতে নেমে দুই দলের মাঝে হাতাহাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিজেদের শেষ ম্যাচে আজ শুক্রবার রাত দশটার দিকে মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামের ক্রিজে নেমেছিলেন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ ও দীপঙ্কর দীপনের টিম।
খেলা চলাকালীন সময়ে দীপঙ্কর দীপনের দলের খেলোয়াড়দেরকে প্রথমে উস্কানি দিতে থাকে রাজের টিম। এরপর তাদের দলের লোকজন এসে দীপনের টিমের এক প্লেয়ারকে মাঠ থেকে তুলে নিয়ে মারধর করতে থাকে। এরপর দীপনের টিমের খেলোয়াড়রা উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং চেয়ার ছুঁড়াছুড়ি শুরু করে। এক পর্যায়ে দুই দলের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।
দীপনের দলের খেলোয়াড়দের একজন অভিনেতা মনির হোসেন শিমুল অভিযোগ তুলে বলেন, তারা বাইরে থেকে সন্ত্রাসী এনে আমাদের উপর আক্রমণ শুরু করে। এটা কোন ধরণের সিসিএল খেলা?
অন্যদিকে একই দলের আরেক খেলোয়াড় চিত্রনায়ক জয় চৌধুরী বলেন, রাজ ভাইয়ের টিম থেকে আমাদের দলের উপর আক্রমণ শুরু করে। তারা বাইরে থেকে লোকজন নিয়ে এসেছে। আমাদের খেলোয়াড়দের মধ্যে একজনকে তুলে নিয়ে মারধর করতে শুরু করে। এরমধ্যে মৌসুমী হামিদ আহত হন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোস্তফা কামাল রাজের দলের পক্ষ থেকে অভিযোগটি অস্বীকার করা হয়। তারা জানান, প্রয়োজন মনে করলে তারা পরে মন্তব্য দেবেন।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে উৎসাহ দিতে তিনদিন ব্যাপী সেলিব্রিটি ক্রিকেট লিগ (সিসিএল) আয়োজন করা হয়েছে। এতে মোট ১৬ টি দল অংশ নিয়েছে। আগামীকাল ফাইনালের মধ্য দিয়ে এ আসর সমাপ্ত হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হবে ২ নভেম্বর। পরবর্তী উপাচার্য কে হচ্ছেন তা নিয়ে এখন চলছে আলোচনা, কানাঘুষা; শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ।
বর্তমান উপাচার্যই আবার দায়িত্ব পাবেন নাকি নতুন কাউকে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হবে এ আলোচনাই চলছে এখন। আলোচিত হচ্ছে কয়েকজন শিক্ষকের নামও। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন কানাঘুষারও অবসান হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ পদে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের মধ্য থেকেই কাউকে বাছাই করার বিষয়টি একপ্রকার নিশ্চিত। বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের এ বিষয়ে আগ্রহ নেই। গুণী কোনো শিক্ষক উপাচার্যবিষয়ক আলোচনার মধ্যে নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সিনেটে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা হবে কি না, এ বিষয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশের ১১(১) ধারা অনুযায়ী, উপাচার্য নিয়োগে তিন সদস্যবিশিষ্ট প্যানেল নির্বাচনের দায়িত্ব সিনেটের। সিনেট নির্বাচিত তিনজনের মধ্য থেকে একজনকে উপাচার্য নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য এবং রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। রাষ্ট্রপতি তাকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেন।
রীতি অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের জন্য সিনেটের বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করা হয়। কিন্তু এবার সিনেট অধিবেশন হওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। উপাচার্য অধিবেশন ডাকবেন কি ডাকবেন না; ওপর মহলের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কেউ কিছু জানেন না। উপাচার্য নিজেও বিষয়টি খোলাসা করছেন না।
অধ্যাদেশের ১১(২) ধারা অনুযায়ী, কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যেমন অসুস্থতা, ছুটি, অপসারণ বা অন্য কোনো কারণে উপাচার্যের পদ শূন্য হলে একজনকে অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা বলছেন, অধ্যাদেশের নিয়ম অনুসরণ করে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন করা হোক। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে এবং আগামী নির্বাচনেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। নতুন উপাচার্যের গ্রহণযোগ্যতাও বাড়বে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক বলেন, ‘ভিসি প্যানেল নিয়ে আলোচনা নেই। উপাচার্যও কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে আমাদের জানা নেই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট সদস্য ও শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল সবচেয়ে বেশি আলোচিত। তাদের মধ্য থেকেই কারোর পরবর্তী উপাচার্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এ বিষয়ক আলোচনায় রয়েছেন।
অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাময়িকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পান। পরে প্যানেল নির্বাচনের মাধ্যমে ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর উপাচার্য পদে পুনর্নিয়োগ পান তিনি। সাত বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সামলাচ্ছেন তিনি। দুই মেয়াদের বেশি উপাচার্য থাকার নজির নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাই তার দায়িত্ব পালনের শেষ দেখছেন অনেকে। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে শিক্ষকদের মধ্যেও তাকে নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী চাইলে পুনরায় নিয়োগ পেতে পারেন তিনি।
ইমেরিটাস অধ্যাপক বা অন্য কোনো গুণী শিক্ষক নেই উপাচার্য নিয়োগের আলোচনায়। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘গুণী শিক্ষকদের সামনে আনার যে ধরনের কাঠামো থাকা উচিত তা নেই। যারা তোশামোদ করতে পারে, অন্ধ আনুগত্য প্রকাশ করতে পারে, তাদেরই প্রশাসনের শীর্ষ পদে নিয়ে আসা হয়। সত্যিকারের গুণী শিক্ষক এবং অনেক ভালো গবেষক আছেন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারা কখনো প্রশাসনের দায়িত্বে আসতে পারেন না। তারা ব্যক্তিত্বের জলাঞ্জলি দিতেও রাজি নন।’
অতীতে উপাচার্যদের মধ্যে অ্যাকাডেমিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে একটা ভারসাম্য ছিল। এখন তা নেই। এখন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও আনুগত্যের ভিত্তিতে প্রশাসনিক পদগুলো দেওয়া হয়।
পরবর্তী উপাচার্য কে হচ্ছেন বা ভিসি প্যানেল নিয়ে আগ্রহ নেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের। বিএনপিঘোষিত এক দফাতেই তারা মগ্ন। যদিও সিনেটে তিনজন প্রতিনিধি থাকায় সুযোগ তাদেরও রয়েছে। সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সরকার পরিবর্তন না হলে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিষয়ে ভাবছি না। এ বিষয়ে আমাদের ফোকাস নেই। আমাদের ফোকাস হচ্ছে এ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। জাতীয় রাজনীতিতে পরিবর্তন হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও পরিবর্তন আসবে।’
শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিষয়টি আলোচনায় থাকলেও সাংগঠনিকভাবে আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার। দেশ রূপান্তরকে তিনি বলেন, ‘আমরা নীল দল এখনো এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করিনি। যথাসময়ে দলের সভায় এ নিয়ে কথা হবে। মনোনয়ন কে পাবেন, তার আলোচনাও সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে। বর্তমান প্রশাসনের শীর্ষ তিনজন বিশেষভাবে আলোচনায় থাকবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই দায়িত্ব দেবেন। আমরা উনাদের সমর্থন করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ীই সব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে।’
বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আইনের গতি অনুযায়ীই সব চলবে। এ বিষয়ে যাদের ভাবা প্রয়োজন তারা অবশ্যই ভাববেন।’ সিনেটের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিশেষ অধিবেশন ডাকার প্রয়োজন হলে আমরা ডাকি।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিতে চায় তার পরিবার। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছেন জার্মান বিএনপি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর বিএনপি নেতারা।
তারা বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জার্মানিতে নেওয়ার কথা ছিল উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সে সময় শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। এবার চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে আনার কথা শুনছি। জার্মানিতে খালেদা জিয়ার যে চিকিৎসা দরকার তার আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা জার্মানিতে রয়েছে। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি যদি চেয়ারপারসনকে জার্মানিতে আনা হয় তাহলে আমরা তার জন্য কিছু করার সুযোগ পাব। জার্মানিতে তার ভালো চিকিৎসা হবে।’
এর অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জার্মান দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) জান রল্ফ জানোস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন। জবাবে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত জানোস্কি বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া যে ধরনের সমস্যায় ভুগছেন তার সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে সম্ভব জার্মানি তার অন্যতম। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে জার্মানিতে তার সুচিকিৎসা হতে পারে।’
গত ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দেড় মাসের বেশি সময় ধরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় খালেদা জিয়া ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে আসছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার হৃদ্যন্ত্র ও কিডনির জটিলতা বেড়েছে। তিনি হাসপাতালে কখনো কিছুটা ভালো থাকছেন, পরক্ষণেই তার স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। ফলে তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লিভার সমস্যার কারণে ম্যাডামের শ্বাস কষ্ট হয়। ইতোমধ্যে তাকে দুইবার করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছিল। লিভার প্রতিস্থাপন করতে পারলে শ্বাসকষ্টটা হতো না।’
এদিকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ না থাকায় তার পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি এখন সামনে এসেছে।
খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নেওয়া হতে পারে এমন খবরে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও খোঁজখবর নিচ্ছেন জার্মান বিএনপি নেতারা।
জার্মান বিএনপির সভাপতি আকুল মিয়া বৃহস্পতিবার দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘জার্মানিতে ম্যাডামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আনা হতে পারে বলে জানতে পেরেছি। আমরা খুবই খুশি। কারণ জার্মানিতে আসলে আমরা তার চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করতে পারব। চেয়ারপারসনের যে চিকিৎসা দরকার তা সকল ব্যবস্থা জার্মানিতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাডামের মুক্তি, তার উন্নত চিকিৎসা ও গণতন্ত্র ফেরাতে দেশে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে জার্মানিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। আগামী ৯ অক্টোবর আমাদের কর্মসূচি রয়েছে। জার্মান বিএনপির উদ্যোগে রোডমার্চ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করব জার্মান পার্লামেন্টের সামনে। ’
আকুল মিয়া বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন বিদেশে নেওয়ার আলোচনা চলছিল তখনও জার্মানিতে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়েছিল। সে সময় তারেক রহমানের সেবা করতে না পারলেও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সেবা করতে পারব বলে আশা করছি। তার চিকিৎসা জার্মানিতে করতে পারলে আমরা ধন্য হবো।’
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার খালেদা জিয়ার ছোট ভাই সাঈদ ইস্কান্দার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামত জানতে চেয়ে আবেদনের কপি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে করা আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। খালেদা জিয়ার ভাইয়ের আবেদনটি অল্প সময়ের মধ্যে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত অভিযোগে দেশের কিছু ব্যক্তির ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পাল্টা বক্তব্য দিতেও শুরু করেছে। এতে বিরোধীপক্ষেরই ঝুঁকি দেখছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সবপক্ষই চাপে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান নিয়ে রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা হলেও মূলত নির্বাচনী রাজনীতিতে এক ধরনের পরিবর্তন আসবে। একপক্ষ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিলেও সেই পথ থেকে তাদেরও সরতে হবে। আবার সরকারপক্ষ যেনতেন নির্বাচন করে ক্ষমতায় বসে যাবে সেই সুযোগও থাকছে না। যে যাই বলুক নির্বাচনী রাজনীতিতে সামনের দিনগুলোতে এ পরিবর্তন আসতেই হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সবপক্ষের জন্য। তাদের অবস্থানে বিএনপি উৎফুল্ল হয়ে যাবে, আর আওয়ামী লীগ ধরাশায়ী হয়ে যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। বরং এতে এক ধরনের সমাধানের পথ খুলে যেতে পারে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ না দিলেও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে এমন আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কিন্তু গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে আসছে। তাদের একাধিক প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করে সরকার ও বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে। সুষ্ঠু নির্বাচনে সমর্থনের কথা জানিয়ে গত ২৪ মে বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রয়োগের কথা জানানো হলো গত শুক্রবার।
এর আগে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তা ও র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ভিসানীতি প্রয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার অনড় অবস্থানের বিষয়টি আবার জানাল। দেশটির এ অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দেখছে দুভাবে। একটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা। দ্বিতীয়টি হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা বিএনপিকে নির্বাচনে আনা। এর বাইরে অন্য কোনো বিরূপ প্রভাব দেখছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার এত দিন যেটা চেয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র সেটাই আশা করছে।
তবে বিএনপি ভিসানীতির জন্য সরকারকে দায়ী করেছে এবং সেটা তাদের নেতাকর্মীদের এক দফা আন্দোলনে আরও উজ্জীবিত করবে, এমন দাবি করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কারণে আগামী নির্বাচন যেনতেনভাবে হয়ে যাবে সেটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রস্তুতি সবাইকে নিতে হবে। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, বাহিনী ও সরকারি কর্মকর্তা যেই হোক শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করা বা একপেশে করার চিন্তা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে চাইলে, পড়তে হবে ভিসানীতির আওতায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এখন পর্যন্ত সেটাই ইঙ্গিত করে।’
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে এক দফা দিয়ে আন্দোলনে আছে বিএনপি। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার জন্য এক দফা ঘোষণা করেছে। তারাও শান্তি-সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকারও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেটা নিশ্চিত করতে তারা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ এটাও বলে আসছে, তাদের সরকারের চাওয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া একই।
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনড় অবস্থানকে আওয়ামী লীগ দুভাবে দেখলেও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা রকম কানাঘুষা রয়েছে। ভেতরে-ভেতরে ‘ভেঙে পড়লেও’ ওপরে শক্ত মনোভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নতুন কিছু নয়। দুপক্ষের অবস্থান একই বলেও দাবি করেন ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘নির্বাচনে বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে আমেরিকার যে অবস্থান তাতে বিএনপিরই ক্ষতি, কারণ তারা ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন হতে দেবে না।’ তিনি বলেন, সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা ও আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় সরকার। সেখানে সব দল নির্বাচনে আসুক সেই আহ্বানও জানানো হয়েছে।
শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলারের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত এবং সহযোগিতা করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ওই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা রয়েছেন। শান্তিপূর্ণ উপায়ে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা জোরালোভাবে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তো বিএনপির দাবি সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেনি। যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান সেখানে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এসব বলা হয়নি। ফলে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করায় আওয়ামী লীগ বা সরকার কেন বেকায়দায় পড়বে? আমরা মনে করি, বিএনপিই তো বেকায়দায় রয়েছে। কারণ, তাদের দাবি অসাংবিধানিক। আর অসাংবিধানিক উপায় অবলম্বন করছে। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই অনড় অবস্থান বিএনপির বিরুদ্ধে গেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খানের দাবি, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি। তারা তো বিএনপির একটা দাবির কথাও বলে নাই।’ সরকার বা আওয়ামী লীগ ভীত ও শঙ্কিত নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উচিত বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানা।’
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেমন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই, আমেরিকারও একই রকম চাওয়া।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। যুক্তরাষ্ট্র যে এমন কিছু করবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। এটা সিম্পল ব্যাপার আমাদের জন্য।’
ভিসা বিধিনিষেধের আওতায় বিরোধী দল আছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে যে বক্তব্য এসেছে সে সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিবৃতিতে কোন বিরোধী দলের কথা বলা হয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে আজকে দেশে গণতন্ত্রের যে সংকট তার জন্য সরকার এককভাবে দায়ী। তা ছাড়া এর আগে বাইডেন প্রশাসন তাদের দেশে যে গণতন্ত্রের সম্মেলন করেছে তাতে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি।’
ভিসানীতি প্রয়োগের জন্য সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ বিগত দুটি বিতর্কিত সংসদ নির্বাচন করার পর আবারও আগামী নির্বাচন একতরফা করতে যে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সে কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। এর দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে নিতে হবে। আজকে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনু মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ আগের ঘোষণার ধারাবাহিকতা। প্রথমদিকে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সাধারণ মানুষের ভেতর যে বড় ধাক্কা মনে হয়েছিল, ঘোষণা আসার পর সেটা মনে হয়নি। তবে কোনো একটা সমীকরণ থেকেই যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর প্রভাব কত দূর যাবে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনে কী বার্তা যাবে সেটা পরিষ্কার নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা তাদের বৈশি^ক চর্চারই অংশ। মূল কথা হলো, এটা সবার জন্যই চাপ।’
বিশ্বকাপের দল ঘোষণা নিয়ে চলছে নানা নাটকীয়তা। রাতটা পোহালেই বাংলাদেশ দল উড়াল দেবে ভারতের গোয়াহাটিতে। তবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি দল। বিসিবি জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে চলমান তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচ শেষেই জানানো হবে বিশ্বকাপের দল।
প্রচুর আলোচনা ও জল্পনা–কল্পনার পর আজ বিশ্বকাপে নিজেদের স্কোয়াড ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির ফেসবুক পেজে আজ দুপুর ১টা ২৮ মিনিটে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায় বিসিবির লোগোসংবলিত বক্সে করে গুরুত্বপুর্ণ কিছু নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিডিও–র শেষে প্রশ্ন করা হয়েছে, বলুন তো ভেতরে কি?
বিকেল ৫টা ৪৩ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় সন্ধ্যা পৌণে ৬টায় ঘোষণা করা হবে দল। কিন্তু ৫টা ৪০ মিনিটে আরেকটি পোস্টে জানানো হয় তৃতীয় ওয়ানডের শেষেই দল ঘোষনা করা হবে।
তার নাম শেখ মোহাম্মদ আসলাম। একসময় সুইডেন ছিলেন বলে পরিচিত হয়ে ওঠেন স্ইুডেন আসলাম নামে। তেজগাঁও এলাকার এই শীর্ষ সন্ত্রাসী একসময় ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড বা অপরাধ জগৎ কাঁপাতেন। ২৭ বছর ধরে আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। হত্যাসহ ১৭ মামলার একটি ছাড়া বাকিগুলোতে জামিন পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বহু দিনের পুরনো প্রতিপক্ষের হাতে প্রাণ হারানোর শঙ্কায় জামিনের জন্য আবেদন করছেন না তিনি।
মোহাম্মদপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান হেলাল ওরফে পিচ্চি হেলালও জামিনের আবেদন করছেন না। প্রায় ২০ বছর ধরে কারাগারে থাকা হেলালের বিরুদ্ধে আছে অন্তত এক ডজন মামলা। বেশিরভাগ মামলায় জামিন হয়ে গেছে। এই দুজনের মতোই কারা হাজতে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছেন না। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষ্যও দিতে আসেন না আদালতে। তারা বছরের পর বছর ধরে কারাগারে থাকলেও সমস্যা হচ্ছে না। অনেকেই অসুস্থ না হয়েও বছরের পর বছর হাসপাতালে আরামে
থাকছেন। বাইরে থাকা তাদের সহযোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ থাকছে। এই সহযোগীরাই তাদের হয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করছেন।
পুলিশের তালিকায় ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম আছে যাদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। অবশ্য এই তালিকায় সুইডেন আসলাম নেই। তালিকা করা হয় ২০০১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। এদের মধ্যে ১৩ জন বিদেশে আত্মগোপন করে আছেন। কারাগারে আছেন ৬ জন, মারা গেছেন ৩ জন। একজনের কোনো হদিস নেই।
এই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আটজনকে ১ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর মধ্যে পিচ্চি হান্নান র্যাবের ক্রসফায়ার, গণপিটুনিতে আলাউদ্দিন ও কামাল পাশা ওরফে পাশা কারাগারে মারা গেছেন। কালা জাহাঙ্গীর বেঁচে আছেন নাকি আত্মগোপনে, কেউ বলতে পারছেন না। পিচ্চি হেলাল, টিটন, ফ্রিডম সোহেল ও কিলার আব্বাস কারাগারে আছেন। খোরশেদ আলম ওরফে রাশু কিছুদিন আগে ছাড়া পেলেও কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আবার আটক করেছে। মশিউর রহমান কচি, সুব্রত বাইন, আমিন রসুল সাগর. ইমাম হোসেন, প্রকাশ কুমার বিশ্বাস, মোল্লা মাসুদ, শামীম আহমেদ, হারিস আহমেদ, তানভিরুল ইসলাম জয়, জাব্বার মুন্না, জাফর আহমেদ, কামরুল হাসান হান্নান ওরফে ছোট হান্নান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি করা আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তাদের ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডে একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে গাড়ি থামিয়ে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ভাগ্যক্রমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও গুলিবিদ্ধ এক পথচারী সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আছেন। এ ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমন জড়িত বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আন্ডারওয়ার্ল্ড উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও। দেশের বাইরে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের সহযোগীদের মাধ্যমে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। এমনকি কারাগারে থাকা সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে বার্তা দিচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হতে চাইছে। যে কারণে সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর সব কটি ইউনিট, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলার এসপিদের বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সদর দপ্তরে আত্মগোপনে থাকা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে নতুন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কারাগার কর্তৃপক্ষকেও হাজতি ও বন্দি সন্ত্রাসীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, যেসব সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে আটক আছে, তাদের একটি তালিকা করেছে একটি সংস্থা। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তারা জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে না। তারা কারাগারকেই নিরাপদ মনে করছে।
কারা সূত্র জানায়, শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম একটি মামলায় জামিন না নেওয়ায় কারাগারে আছেন। বাকি সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। ২৭ বছরের কারাজীবনে তার দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কেটে যাচ্ছে হাসপাতালে থেকেই। হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করেন সব সময়। মোবাইল ফোনে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করেন সহযোগীদের সঙ্গে। তার স্ত্রী আয়েশা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
সুইডেন আসলামের বিষয়ে তার এক আত্মীয় দেশ রূপান্তরকে বলেন, এলাকায় তার যখন একক আধিপত্য ছিল, তখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল। তারাই এখন তার বিরুদ্ধে। সুইডেন আসলাম বের হয়ে এলে প্রতিপক্ষরাই তাকে মেরে ফেলবে, এমন শঙ্কা আছে। এসব দিক বিবেচনা করেই তিনি বের হতে চাইছেন না। কারাগারেই তিনি ভালো আছেন।
জানা গেছে, সুইডেন আসলামের বিরুদ্ধে মামলাগুলোতে কোনো সাক্ষীও পাওয়া যায় না। ১৯৮৬ সালে তিনি অপরাধ জগতে যুক্ত হন। ওই বছর পূর্ব রাজাবাজারে স্কুলের সামনে কিশোর শাকিলকে গুলি করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারপর থেকে তার বিরুদ্ধে একের পর এক হত্যাকা-সহ নানা অপরাধের তথ্য বের হয়ে আসে। এরই মধ্যে নিজেকে রক্ষা করতে সুইডেন চলে যান। বছর পাঁচেক ওই দেশে থেকে আবার ফিরে আসেন দেশে। তারপর সুইডেন শব্দটি নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের ২৩ মার্চ গালিব খুন হন। এ ঘটনায় আসলামসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৯৯৮ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২৪ সাক্ষীর মধ্যে পুলিশ চারজনকে আদালতে হাজির করতে পেরেছে। বাকিরা আর আসেননি এবং এই মামলায় তিনি জামিনও নেননি।
দীর্ঘদিন কারাগারে থাকলেও আসলাম মোবাইল ফোনে সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন। স্ত্রী আয়েশা আকতার নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। বলা চলে রাজার হালেই আছেন তিনি।
মিরপুর ও কাফরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাস ২২ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। তার বিরুদ্ধে থাকা ১১টি মামলার জামিন হয়েছে। একটি মামলার জামিন হতে বাকি আছে। তা ছাড়া কমিশনার নিউটন হত্যা মামলায় ফাঁসির আদেশ হলেও উচ্চ আদালতে খালাস পেয়েছেন তিনি। আরেকটি মামলার শুনানি চলছে উচ্চ আদালতে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিলার আব্বাসের এক সহযোগী দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে মাঝেমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে গিয়ে দেখা করে আসি। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তিনি কারাগার থেকে বের হতে চাচ্ছেন না। জামিন চাইলে তিনি জামিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু ভাই তা করবেন না। কারণ প্রতিপক্ষ সক্রিয় আছে। তার প্রাণ শঙ্কা আছে। আমরা ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় জামিন নিয়ে ভাইকে বের করে আনতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেক সন্ত্রাসী পিচ্চি হেলালেরও প্রায় সব মামলার জামিন হয়ে গেছে। শুধু একটা মামলার জামিন বাকি আছে। তিনি যখন কারাগারে, তখন বিএনপি তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করেছিল। অথচ হেলাল বিএনপির রাজনীতি করেন। জেলে বসেই মোহাম্মদপুর, আদাবর ও ধানম-ি, মিরপুর এলাকার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন। মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড দখল ও চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন। তার সঙ্গে মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদতের ভালো যোগাযোগ। মোবাইল ফোনে নিয়মিত কথা বলেন তারা। তার আরেক সহযোগী হাবিবুর রহমান তাজ ১৩ বছর ধরে কারাগারে আটক আছেন। মামলার সাক্ষীদের হাজির করতে পারছে না রাষ্ট্রপক্ষ। ইচ্ছে করে জামিনও নিচ্ছেন না তাজ। গ্রেপ্তারের আগে দীর্ঘদিন ভারত পালিয়ে ছিলেন। ২০০৮ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়ার কয়েক মাস পর তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাজধানীর কাফরুলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তা ছাড়া কলেজছাত্র কামরুল ইসলাম ওরফে মোমিন হত্যার সঙ্গেও জড়িত তাজ। মতিঝিল থানার সাবেক ওসি এ কে এম রফিকুল ইসলামের আশ্রয়-প্রশয়ে থাকতেন তিনি। কয়েক বছর আগে ওসি রফিক মারা যান।’
মতিঝিলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে হত্যা করে আলোচনায় আসে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী ঈদুল। প্রায় ১৫ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগারে আটক আছেন তিনি। একবার পঙ্গু হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে আটক করে ফেলে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা থাকলেও দুটি মামলা বাদে সব কটিতে জামিন পেয়েছেন। বাকি মামলাগুলোতে ইচ্ছা করে জামিন নিচ্ছেন না বলে তার এক স্বজন জানিয়েছেন।
সেভেন স্টার গ্রুপের একসময়ের সদস্য ফ্রিডম সোহেল ধানম-ি ৩২ নম্বরে গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। সাজা কমিয়ে কারাগারেই থাকার চেষ্টা করছেন সোহেল। তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা আছে। ৯টি মামলায় জামিন পেয়েছেন। একটি মামলায় সাজা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জামিন নিচ্ছেন না।
তার সহযোগী পুরস্কারঘোষিত সন্ত্রাসী রাশু কিছুদিন আগে কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। তার এক স্বজন দেশ রূপান্তরকে জানান, মাস দুয়েক আগে সর্বশেষ মামলায় জামিন হয় রাশুর। তার কোনো ইচ্ছা ছিল না কারাগার থেকে বের হওয়ার। আর এ কারণে ইচ্ছা করেই একটি সংস্থাকে কারাগার থেকে বের হওয়ার তথ্য দিয়ে আবার গ্রেপ্তার হন। কারণ তিনি বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে মেরে ফেলবে এমন আশঙ্কা ছিল। আরেক সন্ত্রাসী লম্বু সেলিম একটি মামলা বাদে সব মামলায় জামিনে আছেন। ভারতের কলকাতা থেকে তাকে পুশব্যাক করা হয়েছিল। প্রায় আট বছর ধরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে থাকেন। নিরাপত্তাহীনতার কারণে জেল থেকে বের হচ্ছেন না তিনি।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, সন্ত্রাসীদের কর্মকা- রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নানা কৌশলে কাজ করছে। তারা সরগরম হলেও কাজ হবে না। যারা দেশের বাইরে আছে, তাদের চিহ্নিত করে ইন্টারপোলের মাধ্যমে ধরার চেষ্টা চলছে। যারা দেশে আছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনতে পুলিশ-র্যাব কাজ করছে। তবে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কেউ বিশ্ঙ্খৃলা তৈরি করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসী জামিন না নিলে এটা আমাদের করার কিছু নেই। তবে তাদের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চোরাকারবারিসহ ভিন্ন ধরনের অপরাধীরা দুবাই, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছেন। তাদের নির্দেশে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনাও ঘটাচ্ছেন তারা। মতিঝিলে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকান্ডের পেছনে বিদেশ কানেকশন।
২০০৩ সালে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশের দুই সদস্যকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইয়ে আত্মগোপন করে আছেন। টিপু হত্যাকান্ডের পর তিনি আলোচনায় এসেছিলেন। দুবাইয়ে থাকলেও ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডে সবচেয়ে বেশি প্রভাব তার। জিসানের সহযোগী জাফর আহমেদ মানিক ওরফে ফ্রিডম মানিক ভারতে পালিয়ে আছেন। কিন্তু দেশে তার দখলবাজি, টেন্ডারবাণিজ্য ও চাঁদাবাজিতে নিয়ন্ত্রণ এখনো আছে। মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইন ভারতে থেকে সক্রিয় আছেন। তানভীর ইসলাম জয়ও সক্রিয় আছেন। কলকাতা, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ঘুরে তার অবস্থান এখন থাইল্যান্ডে। সেখানে বসেই তিনি কলকাঠি নাড়ছেন।
লাক্সারিয়াস জীবন পাওয়ার জন্য এখন মানুষ দিনরাত শুধুই কাজ করে চলেছেন। যার মধ্যে অফিস ডেস্কে বসে কাজ করেন এমন মানুষের সংখ্যা একেবারে কম নয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেয়ারে বসে ল্যাপটপের সামনে তাকিয়ে থাকা রীতিমতো যন্ত্রণাদায়ক।
শুধু তাই নয়, এটা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। যারা অফিসে ডেস্কে কাজ করেন তাদের মোটা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
সারাদিন যারা ডেস্কে বসে কাজ করেন তাদের অন্যতম অভিযোগও এটি। তারা বলে থাকেন, চেয়ারে বসে কাজ করে মোটা হয়ে যাচ্ছি! তবে এই অজুহাতকে একেবারে সত্য বলার সুযোগ নেই। কারণ ডেস্কে বসে কাজ করেও স্লিম ও ফিট থাকা সম্ভব। এজন্য মেনে চলুন পাঁচটি টিপস।
হাঁটুনফিট ও কর্মক্ষম থাকতে নিয়মিত হাঁটুন। দিনের পর দিন দীর্ঘ সময় বসে থাকলে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। সুস্থ থাকতে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। এমনকি কাজের ফাঁকেও ১০ মিনিটের ব্রেক নিয়ে হেঁটে আসতে পারেন।
সোজা হয়ে বসুনচেয়ারে মেরুদণ্ড সোজা রেখে বসুন। মেরুদণ্ডের ডিস্কগুলোতে অনেক চাপ পড়ে, সেই সঙ্গে চাপ পড়ে মেরুদণ্ডের পাশের মাংসপেশি ও লিগামেন্টের ওপর। কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় মনিটরটি চোখের সমান স্তরে রাখুন। মাউস ব্যবহার করার সময় শুধু আপনার কব্জি নয় পুরো হাত ব্যবহার করুন।
চাপ এড়িয়ে চলুনএটা খুব কঠিন কাজ, চাপমুক্ত থাকা। বিশেষ করে যখন চারপাশ থেকে নানা ধরনের চাপ আসতে থাকে। তবে মানসিক স্থিরতা ধরে রাখুন, নিজেকে মোটিভেট করুন। কোনও চাপই বেশি দিন থাকে না, এগুলো নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে নিজের কাজে মনোযোগ বাড়ান। এক্ষেত্রে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে অনলাইনে কিছু যোগা শিখে অভ্যাস করুন।
চোখের যত্নকম্পিউটারে কাজ করার সময় স্ক্রিনে একটানা ১০-১৫ মিনিটের বেশি তাকিয়ে থাকবেন না। নিয়মিত চোখের পাতা ফেলুন। স্ক্রিনে পর্যাপ্ত আলো রাখুন, যেন চোখের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে।
হাড়ের যত্ন বসে থাকার ফলে হাড় দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ক্যালসিয়ামের ঘাটতিও হতে পারে। এজন্য নজর দিতে হবে প্রতিদিনের খাবারে স্বাভাবিক খাবারের সঙ্গে নিয়মিত ডিম, দুধ, দই ও বাদাম রাখুন।