‘ওপারের বন্ধুরা নন্টে-ফন্টেকে চেনে, এপারের কেউ মাসুদ রানাকে চেনে না’
অনলাইন ডেস্ক | ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ২০:৫১
গত মঙ্গলবার বাঁটুল, নন্টে-ফন্টের স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ মারা গেছেন। তার একদিন পরে গতকাল বুধবার মারা গেছেন মাসুদ রানার স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন।
দুই বাংলার লেখক-শিল্পীদের ‘মূল্যায়ন’ নিয়ে ফেসবুকে আলোচনা রয়েছে। অনেকের অভিযোগ, ওপার বাংলার (পশ্চিমবঙ্গ) লেখক-শিল্পীদের যতটা গুরুত্বের সঙ্গে বাংলাদেশে দেখা হয়, ততটা গুরুত্ব বাংলাদেশের লেখক-শিল্পীরা পশ্চিমবঙ্গে পান না।
দুই বাংলার জনপ্রিয় দুই লেখকের মৃত্যুর পর সেই অভিযোগটিই ব্যাখ্যা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ডক্টরাল ক্যান্ডিডেট শাহনাওয়াজ আলী রায়হান।
গতকাল বুধবার তিনি তার ফেসবুকে এ বিষয়ে লিখেছেন। তার ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে দেয়া হলো-
‘গতকাল (মঙ্গলবার) এপারে (পশ্চিমবঙ্গ) নারায়ণ দেবনাথ মারা গেলেন। ফেসবুকে ওপারের বন্ধুদের অসংখ্য পোস্ট দেখে বুঝতে পারলাম বাঁটুল, নন্টে-ফন্টের পাঠক ওপারেও (বাংলাদেশ) কম না। আজকে ঢাকায় জনপ্রিয় ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন মারা গেলেন। একটাও এপারের বন্ধুকে দেখলাম না কেউ ‘মাসুদ রানাকে’ চেনে। অথচ ১৯৬৬ থেকে এ পর্যন্ত এই সিরিজের চারশটি সংখ্যা বেরিয়েছে।
বছর তিনেক আগের শীতের দুপুরে ভিক্টরিয়ার লনে ‘বাংলার গোয়েন্দা’ শীর্ষক কলকাতার লিটারেরি মিটের আলোচনাটি ইউটিউবে দেখুন, দুনিয়ার সব গোয়েন্দা-চরিত্রের নাম এসেছে আলোচকদের মুখে, শুধু মাসুদ রানা বাদ! অথচ সংখ্যার বিচার করলে হয়তো দেখা যাবে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি পঠিত বাংলা গোয়েন্দা চরিত্র ব্যোমকেশ বা ফেলুদা না- মাসুদ রানা-ই।
ফেলুদার পর্যবেক্ষণ হল ‘কলকাতার বাবুদের ছোঁয়াছুঁয়ি-এঁটোকাঁটার বিচারে আজও ওপারটা অচ্ছুৎই রয়ে গেল রে তোপসে। নেহাত জনপ্রিয়তা আর বাজারের কাটতি উপেক্ষা করতে পারেনি বলেই হুমায়ূন ঢুকে পড়েছে। তাও তসলিমার মত মুক্তচিন্তার সদর দরজা দেখিয়ে ধর্মীয়-বিদ্বেষের পেছন গেট দিয়ে না। সামনের গেটে হিমুকে নিয়েই। বাকিদের সে সুযোগ নেই।’
মিত্তির কি বামুন পদবি? ঢাকা কিন্তু তাঁকে আপন করতে সেসব বিচার করেনি। হবে নাকি একটা কার্টুন যেখানে সত্যজিৎ রায় আনোয়ার হোসেনকে বলছে, ‘এত দেরি করে এলেন, মাসুদ-ফেলুরা মিলেমিশে আছে তো?’
আজকে (মঙ্গলবার) বাংলাদেশের পত্রিকায় ঠিকই ‘নন্টে ফন্টের নারায়ণ দেবনাথের খবর আছে। তবে, আগামীকাল (বুধবার) দেখবেন কলকাতার একটা কাগজও আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর খবর করবে না।’
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ২০:৫১

গত মঙ্গলবার বাঁটুল, নন্টে-ফন্টের স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ মারা গেছেন। তার একদিন পরে গতকাল বুধবার মারা গেছেন মাসুদ রানার স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন।
দুই বাংলার লেখক-শিল্পীদের ‘মূল্যায়ন’ নিয়ে ফেসবুকে আলোচনা রয়েছে। অনেকের অভিযোগ, ওপার বাংলার (পশ্চিমবঙ্গ) লেখক-শিল্পীদের যতটা গুরুত্বের সঙ্গে বাংলাদেশে দেখা হয়, ততটা গুরুত্ব বাংলাদেশের লেখক-শিল্পীরা পশ্চিমবঙ্গে পান না।
দুই বাংলার জনপ্রিয় দুই লেখকের মৃত্যুর পর সেই অভিযোগটিই ব্যাখ্যা করেছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ডক্টরাল ক্যান্ডিডেট শাহনাওয়াজ আলী রায়হান।
গতকাল বুধবার তিনি তার ফেসবুকে এ বিষয়ে লিখেছেন। তার ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে দেয়া হলো-
‘গতকাল (মঙ্গলবার) এপারে (পশ্চিমবঙ্গ) নারায়ণ দেবনাথ মারা গেলেন। ফেসবুকে ওপারের বন্ধুদের অসংখ্য পোস্ট দেখে বুঝতে পারলাম বাঁটুল, নন্টে-ফন্টের পাঠক ওপারেও (বাংলাদেশ) কম না। আজকে ঢাকায় জনপ্রিয় ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন মারা গেলেন। একটাও এপারের বন্ধুকে দেখলাম না কেউ ‘মাসুদ রানাকে’ চেনে। অথচ ১৯৬৬ থেকে এ পর্যন্ত এই সিরিজের চারশটি সংখ্যা বেরিয়েছে।
বছর তিনেক আগের শীতের দুপুরে ভিক্টরিয়ার লনে ‘বাংলার গোয়েন্দা’ শীর্ষক কলকাতার লিটারেরি মিটের আলোচনাটি ইউটিউবে দেখুন, দুনিয়ার সব গোয়েন্দা-চরিত্রের নাম এসেছে আলোচকদের মুখে, শুধু মাসুদ রানা বাদ! অথচ সংখ্যার বিচার করলে হয়তো দেখা যাবে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি পঠিত বাংলা গোয়েন্দা চরিত্র ব্যোমকেশ বা ফেলুদা না- মাসুদ রানা-ই।
ফেলুদার পর্যবেক্ষণ হল ‘কলকাতার বাবুদের ছোঁয়াছুঁয়ি-এঁটোকাঁটার বিচারে আজও ওপারটা অচ্ছুৎই রয়ে গেল রে তোপসে। নেহাত জনপ্রিয়তা আর বাজারের কাটতি উপেক্ষা করতে পারেনি বলেই হুমায়ূন ঢুকে পড়েছে। তাও তসলিমার মত মুক্তচিন্তার সদর দরজা দেখিয়ে ধর্মীয়-বিদ্বেষের পেছন গেট দিয়ে না। সামনের গেটে হিমুকে নিয়েই। বাকিদের সে সুযোগ নেই।’
মিত্তির কি বামুন পদবি? ঢাকা কিন্তু তাঁকে আপন করতে সেসব বিচার করেনি। হবে নাকি একটা কার্টুন যেখানে সত্যজিৎ রায় আনোয়ার হোসেনকে বলছে, ‘এত দেরি করে এলেন, মাসুদ-ফেলুরা মিলেমিশে আছে তো?’
আজকে (মঙ্গলবার) বাংলাদেশের পত্রিকায় ঠিকই ‘নন্টে ফন্টের নারায়ণ দেবনাথের খবর আছে। তবে, আগামীকাল (বুধবার) দেখবেন কলকাতার একটা কাগজও আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুর খবর করবে না।’