চুয়াডাঙ্গার পুলিশ কর্মকর্তার গাড়িতে বোমা হামলায় ছাত্রলীগ কর্মী
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি | ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৬:৩৭
চুয়াডাঙ্গায় বোমা হামলার পর গুলিবিদ্ধ ছাত্রলীগকর্মী টিটু। ছবি: দেশ রূপান্তর
চুয়াডাঙ্গায় সহকারী পুলিশ সুপার আবু রাসেলের গাড়িতে বোমা হামলার পর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক খালিদুজ্জামান টিটু ছাত্রলীগ কর্মী। তবে হামলার ঘটনায় তার যুক্ত থাকার বিষয়টি ‘অবিশ্বাস্য’ বলছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। পরিবারের পক্ষ থেকেও একই দাবি করা হয়।
পুলিশি পাহারায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে খালিদুজ্জামানকে। রোববার রাতে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠাতে বলে।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
দর্শনা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জেল হোসেন তপু দাবি করেছেন, পুলিশের হাতে আটক হওয়া দর্শনা সরকারি কলেজের সন্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র খালিদুজ্জামান টিটু ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী নন। বিভিন্ন কর্মসূচিতে টিটুকে অংশগ্রহণ করতে দেখা যেত।
রোববার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গার উথলীতে সড়ক দুর্ঘটনায় চারজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চুয়াডাঙ্গা ফিরছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার আবু রাসেলসহ চার কনস্টেবল।
সহকারী পুলিশ সুপার আবু রাসেল বলেন, রাত ৯টার দিকে জীবননগর -চুয়াডাঙ্গা সড়কের দর্শনা ফিলিং স্টেশনের কাছে পৌঁছালে মোটরসাইকেল আরোহী দু’জন আমার গাড়ি লক্ষ্ করে বোমা ছুঁড়ে।
তিনি জানান, নিক্ষিপ্ত বোমাটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলে গাড়ির ডানদিকের গ্লাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় পুলিশ হামলাকারীদের ধাওয়া করলে তারা পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ গুলি ছুড়লে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে খালিদুজ্জামান টিটু নামে এক যুবক আটক হয়।
পরে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। খালেদুজ্জামান টিটু দামুড়হুদা দর্শনা ইসলাম বাজারের বাসিন্দা।
রাতেই চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম তাৎক্ষণিক এক প্রেস বিফ্রিং এ সাংবাদিকদের জানান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার গাড়িতে হামলা চালিয়ে বড় ধরনের অঘটন ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল হামলাকারীদের।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আওলিয়ার রহমান জানান, গুলিতে তার ডান পা ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। এ ছাড়া তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই তাকে ঢাকায় পাঠাতে পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে সোমবারও তাকে ঢাকাতে নেওয়া হয়নি। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেখেই তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সিরাজুল আলম ঝন্টু জানান, টিটুকে আমরা ছোটকাল থেকে চিনি ও জানি। সে ছাত্রলীগের কোনো পদে না থাকলেও সব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করত। তার পরিবারও আওয়ামী পরিবার হিসেবে পরিচিত।
তিনি আরো জানান, টিটু পুলিশের গাড়িতে বোমা হামলা চালাবে এটি বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। ঘটনাটি আমাদের কাছে ধোঁয়াশা মনে হচ্ছে। সঠিকভাবে তদন্ত করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানান তিনি।
আটক ছাত্রলীগ কর্মী খালিদুজ্জামান টিটুর চাচা ফারুক হোসেনের দাবি, টিটু ছোট থেকেই নম্র, ভদ্র। সে পুলিশের এএসপির গাড়িতে বোমা হামলা চালাবে এটা মানতে পারি না।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সে উথলীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের দেখতে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপরও পুলিশের হাতে আটক হওয়ার খবর পাই আমরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন খাঁন জানান, অপরাধীর রং ও বর্ণ থাকে না। সে কোন দলের কোন মতের এটা আমাদের কাছে মুখ্য বিষয় না। বোমা হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি | ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ১৬:৩৭

চুয়াডাঙ্গায় সহকারী পুলিশ সুপার আবু রাসেলের গাড়িতে বোমা হামলার পর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক খালিদুজ্জামান টিটু ছাত্রলীগ কর্মী। তবে হামলার ঘটনায় তার যুক্ত থাকার বিষয়টি ‘অবিশ্বাস্য’ বলছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। পরিবারের পক্ষ থেকেও একই দাবি করা হয়।
পুলিশি পাহারায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে খালিদুজ্জামানকে। রোববার রাতে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠাতে বলে।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
দর্শনা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জেল হোসেন তপু দাবি করেছেন, পুলিশের হাতে আটক হওয়া দর্শনা সরকারি কলেজের সন্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র খালিদুজ্জামান টিটু ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী নন। বিভিন্ন কর্মসূচিতে টিটুকে অংশগ্রহণ করতে দেখা যেত।
রোববার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গার উথলীতে সড়ক দুর্ঘটনায় চারজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে চুয়াডাঙ্গা ফিরছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার আবু রাসেলসহ চার কনস্টেবল।
সহকারী পুলিশ সুপার আবু রাসেল বলেন, রাত ৯টার দিকে জীবননগর -চুয়াডাঙ্গা সড়কের দর্শনা ফিলিং স্টেশনের কাছে পৌঁছালে মোটরসাইকেল আরোহী দু’জন আমার গাড়ি লক্ষ্ করে বোমা ছুঁড়ে।
তিনি জানান, নিক্ষিপ্ত বোমাটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলে গাড়ির ডানদিকের গ্লাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ সময় পুলিশ হামলাকারীদের ধাওয়া করলে তারা পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ গুলি ছুড়লে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে খালিদুজ্জামান টিটু নামে এক যুবক আটক হয়।
পরে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। খালেদুজ্জামান টিটু দামুড়হুদা দর্শনা ইসলাম বাজারের বাসিন্দা।
রাতেই চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম তাৎক্ষণিক এক প্রেস বিফ্রিং এ সাংবাদিকদের জানান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার গাড়িতে হামলা চালিয়ে বড় ধরনের অঘটন ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল হামলাকারীদের।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আওলিয়ার রহমান জানান, গুলিতে তার ডান পা ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। এ ছাড়া তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতেই তাকে ঢাকায় পাঠাতে পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে সোমবারও তাকে ঢাকাতে নেওয়া হয়নি। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেখেই তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সিরাজুল আলম ঝন্টু জানান, টিটুকে আমরা ছোটকাল থেকে চিনি ও জানি। সে ছাত্রলীগের কোনো পদে না থাকলেও সব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করত। তার পরিবারও আওয়ামী পরিবার হিসেবে পরিচিত।
তিনি আরো জানান, টিটু পুলিশের গাড়িতে বোমা হামলা চালাবে এটি বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। ঘটনাটি আমাদের কাছে ধোঁয়াশা মনে হচ্ছে। সঠিকভাবে তদন্ত করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানান তিনি।
আটক ছাত্রলীগ কর্মী খালিদুজ্জামান টিটুর চাচা ফারুক হোসেনের দাবি, টিটু ছোট থেকেই নম্র, ভদ্র। সে পুলিশের এএসপির গাড়িতে বোমা হামলা চালাবে এটা মানতে পারি না।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় সে উথলীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের দেখতে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপরও পুলিশের হাতে আটক হওয়ার খবর পাই আমরা।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার হোসেন খাঁন জানান, অপরাধীর রং ও বর্ণ থাকে না। সে কোন দলের কোন মতের এটা আমাদের কাছে মুখ্য বিষয় না। বোমা হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।