জেলার ও তার স্ত্রী-সন্তান-শ্যালকের অ্যাকাউন্টে ১৫ কোটি টাকা!
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১২ জুন, ২০১৯ ০৯:৪৯
চট্টগ্রামের সেই জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসসহ তার স্ত্রী, সন্তান ও শ্যালকের ২৬টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে দুদক। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও যশোরের বিভিন্ন শাখার এসব ব্যাংক হিসাবে জমা আছে কোটি কোটি টাকা। এমনটাই জানিয়েছেন ময়মনসিংহের দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা।
বর্তমানে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ময়মনসিংহ দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধরকে।
এর আগে এই মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং পরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল উপ-পরিচালক ফারুক আহমেদকে। মামলাটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তদন্তের জন্য নানা কারণে বার বার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
জব্দ করা ২৬টি হিসেবে ১০/১৫ কোটি টাকা লেনদেনের সন্ধান পেয়েছে দুদক। তবে সঠিক হিসেব পেতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোতে দুদকের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যই ১২টি ব্যাংকের হিসাব বিবরণী তদন্তকারী কর্মকর্তার হাতে পৌঁছেছে বলে জানান তিনি।
জেলার সোহেল রানাসহ তার স্ত্রী সন্তান ও শ্যালকের নামের ব্যাংক হিসাব জানতে দুদকের কর্মকর্তা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলে ২৬টি ব্যাংক হিসেবের তালিকা প্রেরণ করে। তারপর কিশোরগঞ্জ আদালতের অনুমতিক্রমে উক্ত হিসাবগুলোর লেনদেন জব্দ করে দেয় দুদক।
গত বছরের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, আড়াই কোটি টাকার ব্যাংক এফডিআর, ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার বিভিন্ন ব্যাংকের চেক ও ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ ভৈরব রেলওয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন।
এসময় টাকার উৎস জানাতে না পারায় তার বিরুদ্ধে ভৈরব রেলওয়ে থানায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করে।
এরপর মাদক আইনে করা মামলাটি রেলওয়ে পুলিশ তদন্ত করে ইতোমধ্যেই কিশোরগঞ্জ আদালতে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। অপরদিকে, মানি লান্ডারিং আইনে দায়ের করা মামলাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ময়মনসিংহ দুদকে তদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
গত ৮ মাস ধরে মামলাটির তদন্ত চলছে। ঘটনার পর পর তাকে কর্তৃপক্ষ সাময়িক বরখাস্ত করে এবং ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে, জেলার গ্রেপ্তারের দুদিন পরই আটককৃত আড়াই কোটি টাকার এফডিআরের মধ্যে ১ কোটি টাকা তার শ্যালক ও স্ত্রী ময়মনসিংহের দুটি ব্যাংক থেকে প্রতারণার মাধ্যমে উত্তোলন করে ফেলে। এক কোটি টাকা তার স্ত্রী ও শ্যালক কোথা থেকে পেল এবং টাকার উৎস কি তাও তদন্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বর্তমানে সোহেল রানা কিশোরগঞ্জ কারাগারে বন্দি আছে। অভিযোগ রয়েছে কারাগারে জেলার তাকে জামাই আদরে বন্দি জীবন-যাপন করছে।
এদিকে আরও জানা গেছে এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের পৃথক তদন্ত কমিটি ঘটনার সাথে আর ৪৮ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে যার তদন্ত রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ময়মনসিংহ দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, “তদন্ত কমিটির রিপোর্টটি পেতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করেছি। এই মামলাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অনেক তথ্য-প্রমাণ ও সাক্ষীর বক্তব্য নিতে হচ্ছে। তাই মামলাটির চার্জশিট আদালতে দিতে আরও দু’মাস সময় লাগতে পারে।”
শেয়ার করুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১২ জুন, ২০১৯ ০৯:৪৯

চট্টগ্রামের সেই জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসসহ তার স্ত্রী, সন্তান ও শ্যালকের ২৬টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে দুদক। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও যশোরের বিভিন্ন শাখার এসব ব্যাংক হিসাবে জমা আছে কোটি কোটি টাকা। এমনটাই জানিয়েছেন ময়মনসিংহের দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা।
বর্তমানে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ময়মনসিংহ দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধরকে।
এর আগে এই মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং পরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল উপ-পরিচালক ফারুক আহমেদকে। মামলাটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তদন্তের জন্য নানা কারণে বার বার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হচ্ছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
জব্দ করা ২৬টি হিসেবে ১০/১৫ কোটি টাকা লেনদেনের সন্ধান পেয়েছে দুদক। তবে সঠিক হিসেব পেতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোতে দুদকের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যই ১২টি ব্যাংকের হিসাব বিবরণী তদন্তকারী কর্মকর্তার হাতে পৌঁছেছে বলে জানান তিনি।
জেলার সোহেল রানাসহ তার স্ত্রী সন্তান ও শ্যালকের নামের ব্যাংক হিসাব জানতে দুদকের কর্মকর্তা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলে ২৬টি ব্যাংক হিসেবের তালিকা প্রেরণ করে। তারপর কিশোরগঞ্জ আদালতের অনুমতিক্রমে উক্ত হিসাবগুলোর লেনদেন জব্দ করে দেয় দুদক।
গত বছরের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, আড়াই কোটি টাকার ব্যাংক এফডিআর, ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার বিভিন্ন ব্যাংকের চেক ও ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ ভৈরব রেলওয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন।
এসময় টাকার উৎস জানাতে না পারায় তার বিরুদ্ধে ভৈরব রেলওয়ে থানায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করে।
এরপর মাদক আইনে করা মামলাটি রেলওয়ে পুলিশ তদন্ত করে ইতোমধ্যেই কিশোরগঞ্জ আদালতে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়। অপরদিকে, মানি লান্ডারিং আইনে দায়ের করা মামলাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ময়মনসিংহ দুদকে তদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
গত ৮ মাস ধরে মামলাটির তদন্ত চলছে। ঘটনার পর পর তাকে কর্তৃপক্ষ সাময়িক বরখাস্ত করে এবং ঘটনায় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে, জেলার গ্রেপ্তারের দুদিন পরই আটককৃত আড়াই কোটি টাকার এফডিআরের মধ্যে ১ কোটি টাকা তার শ্যালক ও স্ত্রী ময়মনসিংহের দুটি ব্যাংক থেকে প্রতারণার মাধ্যমে উত্তোলন করে ফেলে। এক কোটি টাকা তার স্ত্রী ও শ্যালক কোথা থেকে পেল এবং টাকার উৎস কি তাও তদন্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বর্তমানে সোহেল রানা কিশোরগঞ্জ কারাগারে বন্দি আছে। অভিযোগ রয়েছে কারাগারে জেলার তাকে জামাই আদরে বন্দি জীবন-যাপন করছে।
এদিকে আরও জানা গেছে এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের পৃথক তদন্ত কমিটি ঘটনার সাথে আর ৪৮ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে যার তদন্ত রিপোর্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ময়মনসিংহ দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, “তদন্ত কমিটির রিপোর্টটি পেতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করেছি। এই মামলাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অনেক তথ্য-প্রমাণ ও সাক্ষীর বক্তব্য নিতে হচ্ছে। তাই মামলাটির চার্জশিট আদালতে দিতে আরও দু’মাস সময় লাগতে পারে।”