কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে ইন্টারনেটে প্রচার, গ্রেপ্তার ১২
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি | ১১ নভেম্বর, ২০১৯ ১৯:১৯
ছবি: দেশ রূপান্তর
ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।
রবিবার সকালে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বিকেলে আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের শেষে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই কলেজ ছাত্রী ঈশ্বরদীর সলিমপুর ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
আটককৃতরা হলো- ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর গ্রামের মানজুর রহমান এর ছেলে মেহেদী হাসান (২২), রেজাউল মণ্ডল এর ছেলে রাজিব মণ্ডল, আজিজুল ফকির এর ছেলে রাসেল (২০), দিয়াড় সাহাপুর গ্রামের মৃত আক্তার হোসেনের ছেলে রাব্বি হোসেন (২০), তরিকুল ইসলাম এর ছেলে শিহাব হোসেন (১৯), কেদু শাহ এর ছেলে শামিম হোসেন (২২), সোলাইমান হোসেন এর ছেলে সৈকত হোসেন (২২), রাজ্জাক আহমেদ এর ছেলে রাজু আহমেদ (২০), সিদ্দিকুর রহমান এর ছেলে শফিউল ইসলাম সালমান (২১), সাহাপুরের দেবেন মহলদারের ছেলে ইমন আলী (২১), আশরাফুল ইসলামের ছেলে আশিক (২১) ও ঈশ্বরদী পৌর এলাকার সাঁড়া গোপালপুর গ্রামের মাহাবুব আহমেদ এর ছেলে মাহফুজ আহমেদ (২০)।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জহুরুল হক জানান, চলতি বছরের ১৮ আগস্ট ঈশ্বরদী পৌর এলাকার সাঁড়াগোপালপুর গ্রামের শামিম হোসেনের সাথে ওই কলেজ পড়ুয়া মেয়ের বিয়ে হয়।
বিয়ের আগে থেকেই ওই মেয়েকে সাহাপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর গ্রামের মানজুর রহমানের ছেলে মেহেদি হাসান নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতো। চলতি বছরের ৬ জুন বাড়ির সামনে কলেজ ছাত্রীকে একা পেয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে তার বাড়িতে নিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে এবং কৌশলে ওই ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ধারণ করে রাখে। এই ঘটনা কাউকে জানালে ওই দৃশ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়াসহ হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে সেই দৃশ্য মামলার দ্বিতীয় আসামি রাজিব তার কম্পিউটারে সংরক্ষণ করে রাখে। ঘটনাটি মেয়ের পরিবার জানার পর পরই তাকে ঈশ্বরদী পৌর এলাকার সাঁড়া গোপালপুর গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে মো. শামীম হোসেন এর সাথে বিয়ে দেয়।
বিয়ের পর থেকেই লম্পট মেহেদি হাসান বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি প্রদর্শন করে পুনরায় ওই কলেজ ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেয়। এতে ওই কলেজ ছাত্রী তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বখাটে মেহেদি সেই দৃশ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
এক পর্যায়ে কলেজ ছাত্রীর স্বামী ভিডিওটি দেখে ওই কলেজ ছাত্রীর ওপর শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে তাকে তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।
পরে রবিবার মেয়েটি তার বাবাকে সঙ্গে করে থানায় এসে লিখিত অভিযোগ করে। লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী জানান, অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সদ্য বিবাহিত এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করে কৌশলে সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে। তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার কারণে ওই গৃহবধূর সংসার ভেঙে গেছে। তার স্বামী তাকে তালাক দিয়েছে। এটি একটি সামাজিক অপরাধ। তাই লিখিত অভিযোগ পেয়েই পুলিশ ১২ জনকে আটক করেছে। এই ব্যাপারে ৩টি আইনের ধারা সংযোজন করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল আইনে মামলা নথিভুক্ত করে তাদের পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শেয়ার করুন
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি | ১১ নভেম্বর, ২০১৯ ১৯:১৯

ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেওয়ার অপরাধে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।
রবিবার সকালে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বিকেলে আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের শেষে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই কলেজ ছাত্রী ঈশ্বরদীর সলিমপুর ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।
আটককৃতরা হলো- ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর গ্রামের মানজুর রহমান এর ছেলে মেহেদী হাসান (২২), রেজাউল মণ্ডল এর ছেলে রাজিব মণ্ডল, আজিজুল ফকির এর ছেলে রাসেল (২০), দিয়াড় সাহাপুর গ্রামের মৃত আক্তার হোসেনের ছেলে রাব্বি হোসেন (২০), তরিকুল ইসলাম এর ছেলে শিহাব হোসেন (১৯), কেদু শাহ এর ছেলে শামিম হোসেন (২২), সোলাইমান হোসেন এর ছেলে সৈকত হোসেন (২২), রাজ্জাক আহমেদ এর ছেলে রাজু আহমেদ (২০), সিদ্দিকুর রহমান এর ছেলে শফিউল ইসলাম সালমান (২১), সাহাপুরের দেবেন মহলদারের ছেলে ইমন আলী (২১), আশরাফুল ইসলামের ছেলে আশিক (২১) ও ঈশ্বরদী পৌর এলাকার সাঁড়া গোপালপুর গ্রামের মাহাবুব আহমেদ এর ছেলে মাহফুজ আহমেদ (২০)।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জহুরুল হক জানান, চলতি বছরের ১৮ আগস্ট ঈশ্বরদী পৌর এলাকার সাঁড়াগোপালপুর গ্রামের শামিম হোসেনের সাথে ওই কলেজ পড়ুয়া মেয়ের বিয়ে হয়।
বিয়ের আগে থেকেই ওই মেয়েকে সাহাপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর গ্রামের মানজুর রহমানের ছেলে মেহেদি হাসান নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতো। চলতি বছরের ৬ জুন বাড়ির সামনে কলেজ ছাত্রীকে একা পেয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাকে তার বাড়িতে নিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে এবং কৌশলে ওই ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ধারণ করে রাখে। এই ঘটনা কাউকে জানালে ওই দৃশ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়াসহ হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে সেই দৃশ্য মামলার দ্বিতীয় আসামি রাজিব তার কম্পিউটারে সংরক্ষণ করে রাখে। ঘটনাটি মেয়ের পরিবার জানার পর পরই তাকে ঈশ্বরদী পৌর এলাকার সাঁড়া গোপালপুর গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে মো. শামীম হোসেন এর সাথে বিয়ে দেয়।
বিয়ের পর থেকেই লম্পট মেহেদি হাসান বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি প্রদর্শন করে পুনরায় ওই কলেজ ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দেয়। এতে ওই কলেজ ছাত্রী তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বখাটে মেহেদি সেই দৃশ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
এক পর্যায়ে কলেজ ছাত্রীর স্বামী ভিডিওটি দেখে ওই কলেজ ছাত্রীর ওপর শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে তাকে তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়।
পরে রবিবার মেয়েটি তার বাবাকে সঙ্গে করে থানায় এসে লিখিত অভিযোগ করে। লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী জানান, অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সদ্য বিবাহিত এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করে কৌশলে সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে। তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার কারণে ওই গৃহবধূর সংসার ভেঙে গেছে। তার স্বামী তাকে তালাক দিয়েছে। এটি একটি সামাজিক অপরাধ। তাই লিখিত অভিযোগ পেয়েই পুলিশ ১২ জনকে আটক করেছে। এই ব্যাপারে ৩টি আইনের ধারা সংযোজন করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল আইনে মামলা নথিভুক্ত করে তাদের পাবনা জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।