‘চিকিৎসার অভাবে’ মারা গেলেন তাজরিনের আন্দোলনরত শ্রমিক
সাভার প্রতিনিধি | ২৫ নভেম্বর, ২০২০ ১৭:১৭
সাভারের আশুলিয়ায় নিশ্চিন্তপুরে তাজরিন ফ্যাশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত শারমিন আক্তার নামে অসুস্থ এক শ্রমিক মারা গেছেন। তিনি তাজরিনে আগুন লাগার ঘটনায় আহত শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। তার স্বজন ও শ্রমিক নেতারা এসব তথ্য জানান।
তারা বলেন, বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আশুলিয়ার ইয়ারপুর টানপাড়া এলাকায় তার নানার বাড়িতে শ্রমিক শারমিন আক্তার মারা যান।
শারমিনের পরিবার ও স্থানীয় শ্রমিক নেতারা বলেন, শারমিন তাজরিন ফ্যাশনের চতুর্থ তলায় সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তার ১৩ ও ৮ বছরের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। স্বামী আব্দুল করিম দিনমজুর। শা আশুলিয়ার ইয়ারপুর টানপাড়া এলাকায় নানা সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে থাকতেন।
নিহতের পরিবার জানায়, দীর্ঘ আট বছর ধরে চিকিৎসার অভাবে অসুস্থতায় ভুগছিলেন শারমিন আক্তার। বুধবার সকালে তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের সহকর্মী তাজরিনের ফ্যাশনের শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শী নাছিমা আক্তার জানান, শারমিন ও তিনি তাজরিনের চার তলায় একই ফ্লোরে কাজ করতেন। ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আগুন লাগার পর ওই ফ্লোর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। তখন শারমিন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই তিনি অসুস্থ ছিলেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস টেইলার্স ওয়ার্কাস লীগের সাভার-আশুলিয়া শাখার সভাপতি রাকিবুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘তাজরিনের আহত শ্রমিক শারমিন আক্তার বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় মারা গেছেন। তাজরিন গার্মেন্ট দুর্ঘটনার পর থেকে এই শ্রমিক অসুস্থ ছিলেন। তিনি কোনো চিকিৎসা পাননি। কোনো সাহায্য-সহযোগিতাও পাননি। আমরা খবর পেয়ে তার বাড়িতে এসেছি।’
নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে এই শ্রমিক নেতা বলেন, ‘তাজরিনের এই শ্রমিক আট বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাজরিনের অন্য শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে গত ৭০ দিনের বেশি সময় ধরে চলমান অনশনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পরে সেখানে অসুস্থ হয়ে গেলে সহকর্মীরা তাকে আশুলিয়ায় বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এরপর এলাকার লোকের কাছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু ভালো চিকিৎসা না পেয়ে বুধবার সকালে শারমিন মারা যায়।’
বিপ্লবী গার্মেন্ট-শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অরবিন্দু বেপারী বিন্দু বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য আজ আমরা তাজরিনের আরো এক বোনকে হারালাম! সুচিকিৎসা ও আর্থিক সংকটের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। কেন এই শ্রমিক বিনা চিকিৎসায় মারা গেল? কারখানা মালিক ও বিজিএমইএ’র কাছে এর জবাব চাই। ধিক্কার জানাই এরকম মালিক ও বিজিএমইএর প্রতি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি’।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
সাভার প্রতিনিধি | ২৫ নভেম্বর, ২০২০ ১৭:১৭

সাভারের আশুলিয়ায় নিশ্চিন্তপুরে তাজরিন ফ্যাশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত শারমিন আক্তার নামে অসুস্থ এক শ্রমিক মারা গেছেন। তিনি তাজরিনে আগুন লাগার ঘটনায় আহত শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। তার স্বজন ও শ্রমিক নেতারা এসব তথ্য জানান।
তারা বলেন, বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আশুলিয়ার ইয়ারপুর টানপাড়া এলাকায় তার নানার বাড়িতে শ্রমিক শারমিন আক্তার মারা যান।
শারমিনের পরিবার ও স্থানীয় শ্রমিক নেতারা বলেন, শারমিন তাজরিন ফ্যাশনের চতুর্থ তলায় সুইং অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তার ১৩ ও ৮ বছরের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। স্বামী আব্দুল করিম দিনমজুর। শা আশুলিয়ার ইয়ারপুর টানপাড়া এলাকায় নানা সিরাজুল ইসলামের বাড়িতে থাকতেন।
নিহতের পরিবার জানায়, দীর্ঘ আট বছর ধরে চিকিৎসার অভাবে অসুস্থতায় ভুগছিলেন শারমিন আক্তার। বুধবার সকালে তার মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের সহকর্মী তাজরিনের ফ্যাশনের শ্রমিক ও প্রত্যক্ষদর্শী নাছিমা আক্তার জানান, শারমিন ও তিনি তাজরিনের চার তলায় একই ফ্লোরে কাজ করতেন। ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আগুন লাগার পর ওই ফ্লোর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। তখন শারমিন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই তিনি অসুস্থ ছিলেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস টেইলার্স ওয়ার্কাস লীগের সাভার-আশুলিয়া শাখার সভাপতি রাকিবুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘তাজরিনের আহত শ্রমিক শারমিন আক্তার বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় মারা গেছেন। তাজরিন গার্মেন্ট দুর্ঘটনার পর থেকে এই শ্রমিক অসুস্থ ছিলেন। তিনি কোনো চিকিৎসা পাননি। কোনো সাহায্য-সহযোগিতাও পাননি। আমরা খবর পেয়ে তার বাড়িতে এসেছি।’
নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে এই শ্রমিক নেতা বলেন, ‘তাজরিনের এই শ্রমিক আট বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তাজরিনের অন্য শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে গত ৭০ দিনের বেশি সময় ধরে চলমান অনশনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পরে সেখানে অসুস্থ হয়ে গেলে সহকর্মীরা তাকে আশুলিয়ায় বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এরপর এলাকার লোকের কাছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু ভালো চিকিৎসা না পেয়ে বুধবার সকালে শারমিন মারা যায়।’
বিপ্লবী গার্মেন্ট-শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অরবিন্দু বেপারী বিন্দু বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য আজ আমরা তাজরিনের আরো এক বোনকে হারালাম! সুচিকিৎসা ও আর্থিক সংকটের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। কেন এই শ্রমিক বিনা চিকিৎসায় মারা গেল? কারখানা মালিক ও বিজিএমইএ’র কাছে এর জবাব চাই। ধিক্কার জানাই এরকম মালিক ও বিজিএমইএর প্রতি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি’।