আসছে ভিটামিন এ আয়রনসমৃদ্ধ ধান
গাজীপুর প্রতিনিধি | ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০১:১১
প্রতিষ্ঠা লাভের পর এ পর্যন্ত ১০৫টি বিভিন্ন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। এর মধ্য গত দুই বছরে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবন করেছে ১১টি উচ্চফলনশীল জাত। ব্রি পূর্ববর্তী গত ১০ বছরে ৫০টি উফশী ধানের জাতসহ বেশ কিছু প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উন্নয়ন করেছে।
এ ছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রেক্ষাপটে নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলার লক্ষ্যে ব্রি বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত নয়টি লবণসহিষ্ণু, দুটি জলমগ্নতাসহিষ্ণু, তিনটি খরাসহিষ্ণু, একটি খরা পরিহারকারী, দুটি শীত সহনশীল ও চারটি জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। ১৪ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠিত ব্রির বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়।
কর্মশালায় আরও জানানো হয়, বিভিন্ন ধরনের বৈরী পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার উপযোগী আরও ধানের জাত উদ্ভাবনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ধানের গুণাগুণ বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন এ ও আয়রনসমৃদ্ধ ধান উদ্ভাবনের কাজও চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে। ব্রি উদ্ভাবিত সরু ও সুগন্ধযুক্ত বোরো মৌসুমের জাত ব্রি ধান৫০ বা বাংলামতি রপ্তানি সম্ভাবনাময়।
বর্তমানে দেশের ৮০ শতাংশ জমিতে ব্রি উদ্ভাবিত ধানের জাতের চাষাবাদ হয় এবং এর থেকে আসে দেশের মোট ধান উৎপাদনের শতকরা ৯১ ভাগ।
ব্রি উদ্ভাবিত এই জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে লবণাক্ততাসহনশীল বোরো জাত ব্রি ধান৬১ ও ব্রি ধান৬৭, জিঙ্কসমৃদ্ধ ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৬৪, ব্রি ধান৭২ ও ব্রি ধান৭৪, ঐতিহ্যবাহী বালাম চালের অনুরূপ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এবং সরু বালাম নামে পরিচিত জাত ব্রি ধান৬৩, সরাসরি বপনযোগ্য আগাম আউশ ধানের জাত ব্রি ধান৬৫, খরাসহনশীল ও উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ বোরো জাত ব্রি ধান৬৬, বোরো মৌসুমের আদর্শ উফশী জাত ব্রি ধান৬৮ এবং কম খরচে আবাদযোগ্য উফশী জাত ব্রি ধান৬৯। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রি উদ্ভাবিত জাতের মধ্যে আরও আছে ব্রি ধান২৯-এর সমপর্যায়ের গুণাগুণসম্পন্ন ব্রি ধান৫৮ এবং আমন মৌসুমের জনপ্রিয় বিআর১১-এর সমতুল্য ব্রি ধান৪৯।
তবে এটি ব্রি ধান২৯-এর চেয়ে প্রায় এক সপ্তাহ আগাম। গত দুই বছরে মোট ১১টি উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে এবং এর মাধ্যমে ব্রি উদ্ভাবিত মোট ধান জাতের সংখ্যা হলো ১০৫টি। এর মধ্যে সাতটি হাইব্রিড ধানের জাত রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্রি উদ্ভাবিত নতুন ধানের জাতগুলো হলো ব্রি ধান৯০, ব্রি ধান৯১, ব্রি ধান৯২, ব্রি ধান৯৩, ব্রি ধান৯৪, ব্রি ধান৯৫, ব্রি ধান৯৬, ব্রি ধান৯৭, ব্রি ধান৯৮ ও ব্রি ধান৯৯। রোপা আমন, রোপা আউশ ও বোরো মৌসুমের জন্য উদ্ভাবিত এসব ধানের গড় ফলন প্রতি হেক্টরে পাঁচ থেকে সাড়ে আট টন।
এ ছাড়া ব্রি এ পর্যন্ত ছয়টি হাইব্রিডসহ মোট ১০০টি উফশী ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে; যার মধ্যে বেশ কটি প্রতিকূল পরিবেশসহনশীল এবং উন্নত পুষ্টিগুণসম্পন্ন। এগুলো কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয় হবে এবং সামগ্রিকভাবে ধান উৎপাদন বাড়বে বলে আশা প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীদের।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
গাজীপুর প্রতিনিধি | ২৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০১:১১

প্রতিষ্ঠা লাভের পর এ পর্যন্ত ১০৫টি বিভিন্ন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। এর মধ্য গত দুই বছরে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবন করেছে ১১টি উচ্চফলনশীল জাত। ব্রি পূর্ববর্তী গত ১০ বছরে ৫০টি উফশী ধানের জাতসহ বেশ কিছু প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উন্নয়ন করেছে।
এ ছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রেক্ষাপটে নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলার লক্ষ্যে ব্রি বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত নয়টি লবণসহিষ্ণু, দুটি জলমগ্নতাসহিষ্ণু, তিনটি খরাসহিষ্ণু, একটি খরা পরিহারকারী, দুটি শীত সহনশীল ও চারটি জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন। ১৪ জানুয়ারি থেকে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠিত ব্রির বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়।
কর্মশালায় আরও জানানো হয়, বিভিন্ন ধরনের বৈরী পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার উপযোগী আরও ধানের জাত উদ্ভাবনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ধানের গুণাগুণ বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন এ ও আয়রনসমৃদ্ধ ধান উদ্ভাবনের কাজও চ‚ড়ান্ত পর্যায়ে। ব্রি উদ্ভাবিত সরু ও সুগন্ধযুক্ত বোরো মৌসুমের জাত ব্রি ধান৫০ বা বাংলামতি রপ্তানি সম্ভাবনাময়।
বর্তমানে দেশের ৮০ শতাংশ জমিতে ব্রি উদ্ভাবিত ধানের জাতের চাষাবাদ হয় এবং এর থেকে আসে দেশের মোট ধান উৎপাদনের শতকরা ৯১ ভাগ।
ব্রি উদ্ভাবিত এই জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে লবণাক্ততাসহনশীল বোরো জাত ব্রি ধান৬১ ও ব্রি ধান৬৭, জিঙ্কসমৃদ্ধ ব্রি ধান৬২, ব্রি ধান৬৪, ব্রি ধান৭২ ও ব্রি ধান৭৪, ঐতিহ্যবাহী বালাম চালের অনুরূপ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এবং সরু বালাম নামে পরিচিত জাত ব্রি ধান৬৩, সরাসরি বপনযোগ্য আগাম আউশ ধানের জাত ব্রি ধান৬৫, খরাসহনশীল ও উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ বোরো জাত ব্রি ধান৬৬, বোরো মৌসুমের আদর্শ উফশী জাত ব্রি ধান৬৮ এবং কম খরচে আবাদযোগ্য উফশী জাত ব্রি ধান৬৯। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রি উদ্ভাবিত জাতের মধ্যে আরও আছে ব্রি ধান২৯-এর সমপর্যায়ের গুণাগুণসম্পন্ন ব্রি ধান৫৮ এবং আমন মৌসুমের জনপ্রিয় বিআর১১-এর সমতুল্য ব্রি ধান৪৯।
তবে এটি ব্রি ধান২৯-এর চেয়ে প্রায় এক সপ্তাহ আগাম। গত দুই বছরে মোট ১১টি উচ্চফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে এবং এর মাধ্যমে ব্রি উদ্ভাবিত মোট ধান জাতের সংখ্যা হলো ১০৫টি। এর মধ্যে সাতটি হাইব্রিড ধানের জাত রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ব্রি উদ্ভাবিত নতুন ধানের জাতগুলো হলো ব্রি ধান৯০, ব্রি ধান৯১, ব্রি ধান৯২, ব্রি ধান৯৩, ব্রি ধান৯৪, ব্রি ধান৯৫, ব্রি ধান৯৬, ব্রি ধান৯৭, ব্রি ধান৯৮ ও ব্রি ধান৯৯। রোপা আমন, রোপা আউশ ও বোরো মৌসুমের জন্য উদ্ভাবিত এসব ধানের গড় ফলন প্রতি হেক্টরে পাঁচ থেকে সাড়ে আট টন।
এ ছাড়া ব্রি এ পর্যন্ত ছয়টি হাইব্রিডসহ মোট ১০০টি উফশী ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে; যার মধ্যে বেশ কটি প্রতিকূল পরিবেশসহনশীল এবং উন্নত পুষ্টিগুণসম্পন্ন। এগুলো কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয় হবে এবং সামগ্রিকভাবে ধান উৎপাদন বাড়বে বলে আশা প্রতিষ্ঠানটির বিজ্ঞানীদের।