মহেশখালীতে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ
মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া-কুতুবদিয়া | ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৫:০৯
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ফকিরাকাটা সড়কের ২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরে আগস্টে বড় মহেশখালীর ফকিরাকাটা বেড়িবাঁধ সড়কটি নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়।
সড়ক নির্মাণে বরাদ্দ হয় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পায় মেসার্স আইয়ুব কনস্ট্রাকশন নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার মালিক পার্শ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঠিকাদার গিয়াস উদ্দিন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করে ঠিকাদার। কাজের শুরুতে নিম্নমানের ইট, বালু দিয়ে কাজ শুরু করলে স্থানীয়রা বাধা দিলে তোপের মুখে পড়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
পরে মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িতরা এসে কাজ সঠিক ভাবে করার জন্য ঠিকাদারকে সতর্ক করে। এরপরেও নিম্নমানের ইট আর বালু দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদার।
মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী সড়কের বেডকাটিং করার পর ৬-৭ ইঞ্চি বালু ফেলে মজবুত করতে হবে। এরপর হাফ ইঞ্চি পর পর ইটের সলিং বিছিয়ে তারপর বালু দেয়া হয়। বালুর ওপরে এক নম্বর ইট দিয়ে হেরিংবন্ড সম্পন্ন করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই সলিং হাফ ইঞ্চির বেশি কিংবা দুই নম্বর ইট ব্যবহার করা যাবে না’। কিন্তু দেখা ঠিকাদার অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে যেখানে বালু দিচ্ছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ইঞ্চি। আর কিছু নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ঠিকাদারকে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদার তড়িঘড়ি করেই হাফ ইঞ্চির জায়গায় এক ইঞ্চি থেকে দুই ইঞ্চি গ্যাপ রেখে এবং কিছু নিম্নমানের ইট দিয়ে সলিং নির্মাণের কাজ করছেন। এমনকি সলিং নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে বালু দিয়ে সলিং ঢেকে দিয়ে হেরিংবন্ডের কাজ করা হচ্ছে।
বড় মহেশখালীর ফকিরাকাটার ফরিদুল আলম জানান, বেড়িবাঁধবাসী অনেক দিন পর একটি সড়ক পেয়েছি। কিন্তু যেভাবে অনিয়ম করে দুই নম্বর ইট দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এর জন্য আমরা স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলেও কাজ হচ্ছে না।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ইটভাটা থেকে ইট নিয়ে আসার সময় কিছু খারাপ ইট আসতে পারে। তবে খারাপ ইট সড়কে ব্যবহার করা হচ্ছে না। সড়কের কাজে তিনি সরকারি শিডিউল মোতাবেক কাজ করছেন। তিনি কোন ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নাই বলেও দাবি করেছেন।’
মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে বলেন, সড়কের কাজ শুরুর দিকে দুই গাড়ি নিম্নমানের ইট আনলে তা আমরা সঙ্গে সঙ্গে ফেরত দিই এবং নিম্নমানের কোন কাজ করা যাবে না বলে ঠিকাদারকে সতর্ক করি। সড়ক নির্মাণে তদারকি আরও বাড়ানো হয়েছে। কাজে কোনো রকম অনিয়ম পেলে আমরা কাজ বুঝিয়ে নেব না এবং বিল আটকিয়ে দেওয়াসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া-কুতুবদিয়া | ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৫:০৯

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ফকিরাকাটা সড়কের ২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণকাজে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরে আগস্টে বড় মহেশখালীর ফকিরাকাটা বেড়িবাঁধ সড়কটি নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়।
সড়ক নির্মাণে বরাদ্দ হয় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি পায় মেসার্স আইয়ুব কনস্ট্রাকশন নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার মালিক পার্শ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঠিকাদার গিয়াস উদ্দিন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করে ঠিকাদার। কাজের শুরুতে নিম্নমানের ইট, বালু দিয়ে কাজ শুরু করলে স্থানীয়রা বাধা দিলে তোপের মুখে পড়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
পরে মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িতরা এসে কাজ সঠিক ভাবে করার জন্য ঠিকাদারকে সতর্ক করে। এরপরেও নিম্নমানের ইট আর বালু দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদার।
মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী সড়কের বেডকাটিং করার পর ৬-৭ ইঞ্চি বালু ফেলে মজবুত করতে হবে। এরপর হাফ ইঞ্চি পর পর ইটের সলিং বিছিয়ে তারপর বালু দেয়া হয়। বালুর ওপরে এক নম্বর ইট দিয়ে হেরিংবন্ড সম্পন্ন করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই সলিং হাফ ইঞ্চির বেশি কিংবা দুই নম্বর ইট ব্যবহার করা যাবে না’। কিন্তু দেখা ঠিকাদার অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে যেখানে বালু দিচ্ছে ৫ থেকে সাড়ে ৫ইঞ্চি। আর কিছু নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ঠিকাদারকে বারবার সতর্ক করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদার তড়িঘড়ি করেই হাফ ইঞ্চির জায়গায় এক ইঞ্চি থেকে দুই ইঞ্চি গ্যাপ রেখে এবং কিছু নিম্নমানের ইট দিয়ে সলিং নির্মাণের কাজ করছেন। এমনকি সলিং নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে বালু দিয়ে সলিং ঢেকে দিয়ে হেরিংবন্ডের কাজ করা হচ্ছে।
বড় মহেশখালীর ফকিরাকাটার ফরিদুল আলম জানান, বেড়িবাঁধবাসী অনেক দিন পর একটি সড়ক পেয়েছি। কিন্তু যেভাবে অনিয়ম করে দুই নম্বর ইট দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এর জন্য আমরা স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলেও কাজ হচ্ছে না।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ইটভাটা থেকে ইট নিয়ে আসার সময় কিছু খারাপ ইট আসতে পারে। তবে খারাপ ইট সড়কে ব্যবহার করা হচ্ছে না। সড়কের কাজে তিনি সরকারি শিডিউল মোতাবেক কাজ করছেন। তিনি কোন ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নাই বলেও দাবি করেছেন।’
মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে বলেন, সড়কের কাজ শুরুর দিকে দুই গাড়ি নিম্নমানের ইট আনলে তা আমরা সঙ্গে সঙ্গে ফেরত দিই এবং নিম্নমানের কোন কাজ করা যাবে না বলে ঠিকাদারকে সতর্ক করি। সড়ক নির্মাণে তদারকি আরও বাড়ানো হয়েছে। কাজে কোনো রকম অনিয়ম পেলে আমরা কাজ বুঝিয়ে নেব না এবং বিল আটকিয়ে দেওয়াসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।