হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ শিশু গৃহকর্মী ২২ ঘণ্টা পর উদ্ধার
সাইফুর রহমান মিরণ, বরিশাল | ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৮:১৯
বরিশালে চিকিৎসকের স্ত্রীর নির্মম নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মী নিপা বাড়ৈ উজিরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ২২ ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অভিযোগ উঠেছে ঘটনা ধামাচাপা দিতেই শিশু গৃহকর্মীকে হাসপাতাল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।
নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে। চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতালে থেকে নিয়ে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শনিবার ভোররাত ৪ টার দিকে উপজেলার আশোয়ার গ্রামের জনৈক বিমলের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
ঢাকার অর্থোপেডিক ও ট্রমা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সিএইচ রবিনের বাসায় ৬ মাস পূর্বে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে নীপা বাড়ৈ। শুরু থেকে রবিনের স্ত্রী রাখি দাস শিশুটিকে নির্যাতন করে আসছে। শুক্রবার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিপাকে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উজিরপুর মডেল থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান জানান, শিশুটি হাসপাতাল থেকে নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর থেকেই পুলিশ তার সন্ধানে নামে। এরপর ওই শিশুটির কাকা পরিচয়দানকারী তপন বাড়ৈর মামা শ্বশুর বিমলের বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির গ্রামের বাড়ির পাশেই তপন বাড়ৈর বাসা। যিনি শিশুটির সম্পর্কে কাকা (চাচা) হন। তিনিই শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়াসহ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য শুরু থেকেই জড়িত ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে আর্থিক প্রলোভনে নির্যাতনকারীদের পক্ষ হয়ে শিশুটিকে নিয়ে যান তিনি। চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতালে থেকে নিয়ে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বেলা ১১ টায় বরিশালের উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শামসুদ্দোহা তাওহিদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত চাচা পরিচয়ে এক ব্যক্তি নির্যাতনের শিকার শিশু নিপাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা চালান। তবে শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় তার সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত এবং বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় পুলিশকে না জানিয়ে তাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দিতে রাজি হয়নি। পরে ভোর ৫ টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিশুটি এবং তার সাথে থাকা বড় মা পরিচয়দানকারী নারীকে আর দেখা যায়নি। শিশুটির পাশের বেডের রোগীরা জানিয়েছেন, সারা রাত ওই শিশুটির স্বজনদের মোবাইলে অনেক কল আসে এবং তারা সারা রাত সজাগই ছিলেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শিশুটি নিখোঁজের ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হয়ে তিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
উল্লেখ্য গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে নির্যাতনের শিকার শিশু নিপা বাড়ৈকে উজিরপুরের উত্তর জামবাড়ি এলাকার একটি দোকানের সামনে রেখে চলে যায় জনৈক ব্যক্তি। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। শিশুটি জানায়, ঢাকার অর্থোপেডিক ও ট্রমা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সিএইচ রবিনের বাসায় ৬ মাস পূর্বে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে সে। শুরু থেকে রবিনের স্ত্রী রাখি দাস শিশুটিকে নির্যাতন করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে লোক মারফত নিপাতে গ্রামের বাড়ির এলাকায় রেখে পালিয়ে যায়।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
সাইফুর রহমান মিরণ, বরিশাল | ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৮:১৯

বরিশালে চিকিৎসকের স্ত্রীর নির্মম নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মী নিপা বাড়ৈ উজিরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ২২ ঘণ্টা পর তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অভিযোগ উঠেছে ঘটনা ধামাচাপা দিতেই শিশু গৃহকর্মীকে হাসপাতাল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।
নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে। চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতালে থেকে নিয়ে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
শনিবার ভোররাত ৪ টার দিকে উপজেলার আশোয়ার গ্রামের জনৈক বিমলের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
ঢাকার অর্থোপেডিক ও ট্রমা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সিএইচ রবিনের বাসায় ৬ মাস পূর্বে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে নীপা বাড়ৈ। শুরু থেকে রবিনের স্ত্রী রাখি দাস শিশুটিকে নির্যাতন করে আসছে। শুক্রবার এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নিপাকে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উজিরপুর মডেল থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান জানান, শিশুটি হাসপাতাল থেকে নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর থেকেই পুলিশ তার সন্ধানে নামে। এরপর ওই শিশুটির কাকা পরিচয়দানকারী তপন বাড়ৈর মামা শ্বশুর বিমলের বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির গ্রামের বাড়ির পাশেই তপন বাড়ৈর বাসা। যিনি শিশুটির সম্পর্কে কাকা (চাচা) হন। তিনিই শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়াসহ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য শুরু থেকেই জড়িত ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে আর্থিক প্রলোভনে নির্যাতনকারীদের পক্ষ হয়ে শিশুটিকে নিয়ে যান তিনি। চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতালে থেকে নিয়ে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বেলা ১১ টায় বরিশালের উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শামসুদ্দোহা তাওহিদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত চাচা পরিচয়ে এক ব্যক্তি নির্যাতনের শিকার শিশু নিপাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা চালান। তবে শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় তার সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত এবং বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় পুলিশকে না জানিয়ে তাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দিতে রাজি হয়নি। পরে ভোর ৫ টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই শিশুটি এবং তার সাথে থাকা বড় মা পরিচয়দানকারী নারীকে আর দেখা যায়নি। শিশুটির পাশের বেডের রোগীরা জানিয়েছেন, সারা রাত ওই শিশুটির স্বজনদের মোবাইলে অনেক কল আসে এবং তারা সারা রাত সজাগই ছিলেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শিশুটি নিখোঁজের ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হয়ে তিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
উল্লেখ্য গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে নির্যাতনের শিকার শিশু নিপা বাড়ৈকে উজিরপুরের উত্তর জামবাড়ি এলাকার একটি দোকানের সামনে রেখে চলে যায় জনৈক ব্যক্তি। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। শিশুটি জানায়, ঢাকার অর্থোপেডিক ও ট্রমা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সিএইচ রবিনের বাসায় ৬ মাস পূর্বে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে সে। শুরু থেকে রবিনের স্ত্রী রাখি দাস শিশুটিকে নির্যাতন করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে লোক মারফত নিপাতে গ্রামের বাড়ির এলাকায় রেখে পালিয়ে যায়।