পঞ্চম দফার প্রথম অংশে ২০ বাসে ভাসানচরে যাচ্ছে ১ হাজার রোহিঙ্গা
শহিদুল ইসলাম উখিয়া থেকে | ২ মার্চ, ২০২১ ১৬:৩১
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪ টি রোহিঙ্গা শিবির রয়েছে। এখানে বসবাস সাড়ে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে প্রায় চার হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু স্বেচ্ছায় নোয়াখালীর ভাসানচরে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুর একটার দিকে পঞ্চম দফার প্রথম অংশে ২০ টি বাস করে প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গা নর, নারী ও পুরুষ নিয়ে উখিয়া থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন। রোহিঙ্গাদের বহনকারী বাস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বাসও তাদের সঙ্গে যেতে দেখা যায়।
এদিন সকাল থেকে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে মিনিবাসে করে রোহিঙ্গাদের আনা হয়। উখিয়া কলেজ মাঠে অস্থায়ী ক্যাম্প ও ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের এনে সকাল ও দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। বাসে ওঠার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সোমবার বিকেলে ও মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত নিবন্ধনের পর তাদের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্প উখিয়া কলেজ মাঠে আনা হয়। সেখান থেকে বাসযোগে প্রথমে চট্টগ্রাম এবং পরে নৌবাহিনীর জাহাজে করে ভাসানচরে নেওয়া হবে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, কয়েক ধাপে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে গেছেন। তারা সেখানে এই শিবিরগুলোর চেয়ে অনেক ভালো পরিবেশে রয়েছে। এটি সরকারের একটি চলমান প্রক্রিয়া। পর্যায়ক্রমে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নেওয়া হবে ভাসানচরে।
রোহিঙ্গা মাঝিরা বলেন, স্বেচ্ছায় রাজি হয়ে এর আগে যে রোহিঙ্গারা ভাসানচর গিয়েছেন তারা সেখানকার পরিবেশ, থাকা খাওয়ার সুবিধার কথা জানিয়েছে। তাদের কাছ থেকে শুনে উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা যেতে রাজি হয়েছে। তাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়।
রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ উল্লাহ বলেন, বর্তমান জীবন-যাপনের চেয়ে অনেকটা উন্নত ভাসানচর। আমরা সাধারণ রোহিঙ্গা ভাইদের বোঝাচ্ছি যাতে তারা নিজ ইচ্ছায় যেন ভাসানচর যায়। সেখানে তারা ভালো থাকবেন। যারা ভাসানচরে গেছে তারা অনেক ভালো আছে বলে শুনছি।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সরকারের দমন-পীড়নে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সাড়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বর্তমানে টেকনাফ ও উখিয়ার ক্যাম্পগুলোতে বসবাস করছে। তাদের নিজ দেশে সসম্মানে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। তবে এখানকার ঘিঞ্জি পরিবেশ থেকে আপাতত নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে সেখানে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা চলে গেছে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
শহিদুল ইসলাম উখিয়া থেকে | ২ মার্চ, ২০২১ ১৬:৩১

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪ টি রোহিঙ্গা শিবির রয়েছে। এখানে বসবাস সাড়ে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে প্রায় চার হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু স্বেচ্ছায় নোয়াখালীর ভাসানচরে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুর একটার দিকে পঞ্চম দফার প্রথম অংশে ২০ টি বাস করে প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গা নর, নারী ও পুরুষ নিয়ে উখিয়া থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন। রোহিঙ্গাদের বহনকারী বাস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বাসও তাদের সঙ্গে যেতে দেখা যায়।
এদিন সকাল থেকে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে মিনিবাসে করে রোহিঙ্গাদের আনা হয়। উখিয়া কলেজ মাঠে অস্থায়ী ক্যাম্প ও ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের এনে সকাল ও দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। বাসে ওঠার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সোমবার বিকেলে ও মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত নিবন্ধনের পর তাদের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্প উখিয়া কলেজ মাঠে আনা হয়। সেখান থেকে বাসযোগে প্রথমে চট্টগ্রাম এবং পরে নৌবাহিনীর জাহাজে করে ভাসানচরে নেওয়া হবে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, কয়েক ধাপে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে গেছেন। তারা সেখানে এই শিবিরগুলোর চেয়ে অনেক ভালো পরিবেশে রয়েছে। এটি সরকারের একটি চলমান প্রক্রিয়া। পর্যায়ক্রমে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নেওয়া হবে ভাসানচরে।
রোহিঙ্গা মাঝিরা বলেন, স্বেচ্ছায় রাজি হয়ে এর আগে যে রোহিঙ্গারা ভাসানচর গিয়েছেন তারা সেখানকার পরিবেশ, থাকা খাওয়ার সুবিধার কথা জানিয়েছে। তাদের কাছ থেকে শুনে উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা যেতে রাজি হয়েছে। তাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে স্থানান্তর করা হয়।
রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ উল্লাহ বলেন, বর্তমান জীবন-যাপনের চেয়ে অনেকটা উন্নত ভাসানচর। আমরা সাধারণ রোহিঙ্গা ভাইদের বোঝাচ্ছি যাতে তারা নিজ ইচ্ছায় যেন ভাসানচর যায়। সেখানে তারা ভালো থাকবেন। যারা ভাসানচরে গেছে তারা অনেক ভালো আছে বলে শুনছি।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সরকারের দমন-পীড়নে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সাড়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বর্তমানে টেকনাফ ও উখিয়ার ক্যাম্পগুলোতে বসবাস করছে। তাদের নিজ দেশে সসম্মানে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। তবে এখানকার ঘিঞ্জি পরিবেশ থেকে আপাতত নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে সেখানে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা চলে গেছে।