ইউএনও বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি | ১৯ মে, ২০২২ ২১:০০
টাঙ্গাইলের বাসাইলের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও প্রতারণার মাধ্যমে শারীরিক সম্পর্ক করার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
তদন্তে নিয়োজিত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা টাঙ্গাইল অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজত্ব) সোহানা নাসরিন তদন্ত প্রতিবেদনে সত্যতা পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
এ ছাড়া শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার কথা জানান তিনি।
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এক কলেজছাত্রী যৌন হয়রানি ও প্রতারণার অভিযোগ করেন। প্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠপ্রশাসন শৃঙ্খলা অধিশাখা থেকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসককে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য বলা হয়। জেলা প্রশাসক ১৪ মার্চ টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহানা নাসরিনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেন এবং মতামতসহ প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেন।
গত ৭ এপ্রিল টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অভিযোগকারী কলেজছাত্রী, বাসাইলের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনজুর হোসেন, তার গাড়ি চালক বুলবুল মোল্লাসহ ছয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
তদন্ত শেষে সোহানা নাসরিন জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বৃহস্পতিবার জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) কাছ থেকে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন তিনি। ১০ দিন আগে ওই প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছর ২০ অক্টোবর ওই ছাত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগে বলেছেন, ২০২১ সালে বাসাইলের ইউএনও মো. মনজুর হোসেনের সঙ্গে তার সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। বিয়ের কথা হলে ইউএনও তার সরকারি বাসভবনে ডেকে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন। কলেজছাত্রী পারিবারিকভাবে অন্যত্র বিয়ে ঠিক হলে তিনি বিয়ের জন্য ইউএনওকে বলতে থাকেন। ইউএনও বিয়ের কথা বলে তাকে বাড়ি থেকে চলে আসতে বলেন এবং টাঙ্গাইল শহরের পাওয়ার হাউসের কাছে একটি বাসা ভাড়া নেন। সেই বাসায় তারা দুই মাস থাকেন।
লিখিত অভিযোগে কলেজছাত্রী আরও বলেছেন, গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে বেনাপোল হয়ে ওই ছাত্রীকে নিয়ে ইউএনও ভারতে কলকাতা যান। সেখান থেকে উড়োজাহাজে করে হায়দরাবাদ যান। সেখানে তারা দুজন চিকিৎসা নেন। ইউএনওর পাসপোর্ট দেখে তিনি জানতে পারেন মনজুর হোসেন বিবাহিত। সেখানে থাকার সময় তার ফোন থেকে তাদের দুজনের ভিডিও ও কথোপকথন মুছে ফেলেন ইউএনও। ভারতে ১২ দিন অবস্থানের পর ৫ অক্টোবর তারা দেশে ফিরে আসেন। তারপর থেকে ইউএনও তাকে এড়িয়ে চলতে থাকেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত বছর নভেম্বরে ইউএনও মো. মনজুর হোসেনকে বাসাইল থেকে ঢাকায় বদলি করা হয়। পরে এ বছর ৪ মার্চ কিশোরগঞ্জের ইউএনও হিসেবে তাকে পদায়ন করা হয়। কলেজছাত্রীর অভিযোগের এই বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর তাকে সেখান থেকে গত এপ্রিলে প্রত্যাহার করা হয়।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি | ১৯ মে, ২০২২ ২১:০০

টাঙ্গাইলের বাসাইলের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে কলেজছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও প্রতারণার মাধ্যমে শারীরিক সম্পর্ক করার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
তদন্তে নিয়োজিত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা টাঙ্গাইল অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজত্ব) সোহানা নাসরিন তদন্ত প্রতিবেদনে সত্যতা পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।
এ ছাড়া শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার কথা জানান তিনি।
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এক কলেজছাত্রী যৌন হয়রানি ও প্রতারণার অভিযোগ করেন। প্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠপ্রশাসন শৃঙ্খলা অধিশাখা থেকে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসককে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য বলা হয়। জেলা প্রশাসক ১৪ মার্চ টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহানা নাসরিনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করেন এবং মতামতসহ প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশনা দেন।
গত ৭ এপ্রিল টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অভিযোগকারী কলেজছাত্রী, বাসাইলের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনজুর হোসেন, তার গাড়ি চালক বুলবুল মোল্লাসহ ছয়জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
তদন্ত শেষে সোহানা নাসরিন জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বৃহস্পতিবার জানান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) কাছ থেকে তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন তিনি। ১০ দিন আগে ওই প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছর ২০ অক্টোবর ওই ছাত্রী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগে বলেছেন, ২০২১ সালে বাসাইলের ইউএনও মো. মনজুর হোসেনের সঙ্গে তার সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। বিয়ের কথা হলে ইউএনও তার সরকারি বাসভবনে ডেকে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন। কলেজছাত্রী পারিবারিকভাবে অন্যত্র বিয়ে ঠিক হলে তিনি বিয়ের জন্য ইউএনওকে বলতে থাকেন। ইউএনও বিয়ের কথা বলে তাকে বাড়ি থেকে চলে আসতে বলেন এবং টাঙ্গাইল শহরের পাওয়ার হাউসের কাছে একটি বাসা ভাড়া নেন। সেই বাসায় তারা দুই মাস থাকেন।
লিখিত অভিযোগে কলেজছাত্রী আরও বলেছেন, গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে বেনাপোল হয়ে ওই ছাত্রীকে নিয়ে ইউএনও ভারতে কলকাতা যান। সেখান থেকে উড়োজাহাজে করে হায়দরাবাদ যান। সেখানে তারা দুজন চিকিৎসা নেন। ইউএনওর পাসপোর্ট দেখে তিনি জানতে পারেন মনজুর হোসেন বিবাহিত। সেখানে থাকার সময় তার ফোন থেকে তাদের দুজনের ভিডিও ও কথোপকথন মুছে ফেলেন ইউএনও। ভারতে ১২ দিন অবস্থানের পর ৫ অক্টোবর তারা দেশে ফিরে আসেন। তারপর থেকে ইউএনও তাকে এড়িয়ে চলতে থাকেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত বছর নভেম্বরে ইউএনও মো. মনজুর হোসেনকে বাসাইল থেকে ঢাকায় বদলি করা হয়। পরে এ বছর ৪ মার্চ কিশোরগঞ্জের ইউএনও হিসেবে তাকে পদায়ন করা হয়। কলেজছাত্রীর অভিযোগের এই বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর তাকে সেখান থেকে গত এপ্রিলে প্রত্যাহার করা হয়।