মোহনগঞ্জে শতাধিক কার্ডধারীর টিসিবি পণ্য নিয়ে গেছে অন্যজন!
নেত্রকোনা প্রতিনিধি | ২ জুলাই, ২০২২ ১০:৩২
বন্যাকবলিত নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে ভর্তুকি মূল্যের টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশ) পণ্য পাননি শতাধিক কার্ডধারী মানুষ। তাদের পণ্য নিয়ে গেছে অন্যজন।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলার সমাজ-সহিলদেও ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
এদিন ইউনিয়নের ৫নং, ৬নং, ৭নং ও ৮নং এই চারটি ওয়ার্ডের ৭৯০ জন কার্ডধারীর কাছে টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হয়। এ সময় শতাধিক কার্ডধারী মানুষ পণ্য না পেয়ে ক্ষোভ দেখান।
কার্ডধারী হয়েও পণ্য নিতে পারেননি রামজীবনপুর গ্রামের সুফিয়া আক্তার, পাইলাটি গ্রামের মনু মিয়া, দুলাল মিয়া, হিমা আক্তার, রতন মিয়াসহ শতাধিক মানুষ।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত রমজানে টিসিবি পণ্য নেওয়ার সময় আমাদের কার্ডগুলো জমা নিয়েছিল। এবার সেগুলো আর ফেরত দেয়নি। মেম্বার বলেছে কার্ড হারিয়ে গেছে। এবার আমাদের কার্ড দিয়ে অন্যরা পণ্য নিয়ে গিয়েছে। এই বন্যার সময়ে আমরা পণ্যগুলো পেলে উপকৃত হতাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবার দুই লিটার সয়াবিন তেল এবং দুই কেজি করে ডাল ও চিনি চারশো দশ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সমাজ-সহিলদেও ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার সাজন মিয়া বলেন, দামে খুব একটা তফাত না থাকায় এবং ওই সময়ে ধান কাটার মৌসুমের কারণে গত রমজানে অনেক কার্ডধারীই পণ্য নেননি।
এবার বন্যার কারণে সবাই পণ্য নিতে চাইছেন। কার্ডগুলো ডিলারের কাছে ছিল। সেখানেই এমন এলোমেলো লেগেছে। তাই এ কারণে এবার অনেক মানুষ কার্ডের পণ্য নিতে পারেননি। পরেরবার এ সমস্যা হবে না কার্ডগুলো সংগ্রহ করে বাড়িতে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে জানান তিনি।
একই বক্তব্য ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আনাম মিয়া ও ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য দুলাল মিয়ার।
তারা বলেন, গত বিলের সময় কার্ডগুলো ডিলার তার কাছে রেখে দিয়েছিল। সে কারণে কার্ডধারী হয়েও এবার অনেক মানুষ পণ্য নিতে পারেননি। পরেরবার আর এমন হবে না। আগেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টিসিবি পণ্যের ডিলার নয়ন মিয়া বলেন, আমি ৭৯০টি কার্ডের পণ্য বিতরণ করেছি। মেম্বাররা কার্ড হয়তো লোকজনের কাছে ঠিকমতো পৌঁছায়নি। আমি কার্ড দেখে দেখেই পণ্য দিয়েছি। এ সময় সঙ্গে ট্যাগ অফিসারও ছিল। শেষে ৭৯০টি কার্ডই অফিসে বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি। বরং এবার পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে আমার লোকসান হয়েছে। কারণ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে পানি থাকায় একটি দোকানে রেখে পণ্য দিতে গিয়ে দোকানের ভাড়া দিতে হয়েছে।
এ বিষয়ে সমাজ-সহিলদেও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম খান সোহেল বলেন, ডিলার কার্ডগুলো তার কাছে রেখে দেওয়াতে এমন সমস্যা হয়েছে।
এ ছাড়া গত রমজানে অনেকে পণ্য নেননি। একজনের কার্ড অন্যজনকে দিয়েছেন। সব মিলিয়ে একটু এলোমেলোই বলা চলে। পরেরবার আগেই কার্ডধারীকে কার্ড বুঝিয়ে দিয়ে মাস্টার রোল তৈরি করে পণ্য দেওয়ার জন্য মেম্বারদের বলেছি।
বিষয়টি অবগত করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাব্বির আহম্মেদ আকুঞ্জি বলেন, কার্ড তো ইউনিয়ন পরিষদে থাকার কথা। মেম্বাররা এগুলো পণ্য দেওয়ার আগেই উপকারভোগীদের কাছে পৌঁছে দেবেন। কার্ড দেখিয়ে উপকারভোগীরা পণ্য নেবেন। চেনার জন্য কার্ডে উপকারভোগী ছবিও আছে। এরপর এমন অনিয়ম হওয়ার কথা নয়। কেন এমন হলো বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নেত্রকোনা প্রতিনিধি | ২ জুলাই, ২০২২ ১০:৩২

বন্যাকবলিত নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে ভর্তুকি মূল্যের টিসিবির (ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশ) পণ্য পাননি শতাধিক কার্ডধারী মানুষ। তাদের পণ্য নিয়ে গেছে অন্যজন।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলার সমাজ-সহিলদেও ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
এদিন ইউনিয়নের ৫নং, ৬নং, ৭নং ও ৮নং এই চারটি ওয়ার্ডের ৭৯০ জন কার্ডধারীর কাছে টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হয়। এ সময় শতাধিক কার্ডধারী মানুষ পণ্য না পেয়ে ক্ষোভ দেখান।
কার্ডধারী হয়েও পণ্য নিতে পারেননি রামজীবনপুর গ্রামের সুফিয়া আক্তার, পাইলাটি গ্রামের মনু মিয়া, দুলাল মিয়া, হিমা আক্তার, রতন মিয়াসহ শতাধিক মানুষ।
ভুক্তভোগীরা জানান, গত রমজানে টিসিবি পণ্য নেওয়ার সময় আমাদের কার্ডগুলো জমা নিয়েছিল। এবার সেগুলো আর ফেরত দেয়নি। মেম্বার বলেছে কার্ড হারিয়ে গেছে। এবার আমাদের কার্ড দিয়ে অন্যরা পণ্য নিয়ে গিয়েছে। এই বন্যার সময়ে আমরা পণ্যগুলো পেলে উপকৃত হতাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবার দুই লিটার সয়াবিন তেল এবং দুই কেজি করে ডাল ও চিনি চারশো দশ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সমাজ-সহিলদেও ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার সাজন মিয়া বলেন, দামে খুব একটা তফাত না থাকায় এবং ওই সময়ে ধান কাটার মৌসুমের কারণে গত রমজানে অনেক কার্ডধারীই পণ্য নেননি।
এবার বন্যার কারণে সবাই পণ্য নিতে চাইছেন। কার্ডগুলো ডিলারের কাছে ছিল। সেখানেই এমন এলোমেলো লেগেছে। তাই এ কারণে এবার অনেক মানুষ কার্ডের পণ্য নিতে পারেননি। পরেরবার এ সমস্যা হবে না কার্ডগুলো সংগ্রহ করে বাড়িতে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে জানান তিনি।
একই বক্তব্য ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আনাম মিয়া ও ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য দুলাল মিয়ার।
তারা বলেন, গত বিলের সময় কার্ডগুলো ডিলার তার কাছে রেখে দিয়েছিল। সে কারণে কার্ডধারী হয়েও এবার অনেক মানুষ পণ্য নিতে পারেননি। পরেরবার আর এমন হবে না। আগেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টিসিবি পণ্যের ডিলার নয়ন মিয়া বলেন, আমি ৭৯০টি কার্ডের পণ্য বিতরণ করেছি। মেম্বাররা কার্ড হয়তো লোকজনের কাছে ঠিকমতো পৌঁছায়নি। আমি কার্ড দেখে দেখেই পণ্য দিয়েছি। এ সময় সঙ্গে ট্যাগ অফিসারও ছিল। শেষে ৭৯০টি কার্ডই অফিসে বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি। বরং এবার পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে আমার লোকসান হয়েছে। কারণ ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে পানি থাকায় একটি দোকানে রেখে পণ্য দিতে গিয়ে দোকানের ভাড়া দিতে হয়েছে।
এ বিষয়ে সমাজ-সহিলদেও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম খান সোহেল বলেন, ডিলার কার্ডগুলো তার কাছে রেখে দেওয়াতে এমন সমস্যা হয়েছে।
এ ছাড়া গত রমজানে অনেকে পণ্য নেননি। একজনের কার্ড অন্যজনকে দিয়েছেন। সব মিলিয়ে একটু এলোমেলোই বলা চলে। পরেরবার আগেই কার্ডধারীকে কার্ড বুঝিয়ে দিয়ে মাস্টার রোল তৈরি করে পণ্য দেওয়ার জন্য মেম্বারদের বলেছি।
বিষয়টি অবগত করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাব্বির আহম্মেদ আকুঞ্জি বলেন, কার্ড তো ইউনিয়ন পরিষদে থাকার কথা। মেম্বাররা এগুলো পণ্য দেওয়ার আগেই উপকারভোগীদের কাছে পৌঁছে দেবেন। কার্ড দেখিয়ে উপকারভোগীরা পণ্য নেবেন। চেনার জন্য কার্ডে উপকারভোগী ছবিও আছে। এরপর এমন অনিয়ম হওয়ার কথা নয়। কেন এমন হলো বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।