
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট কাজী খান (৫৩) হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে তিনি মারা যান। বুধবার সকালে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রীপুরে শোকের ছায়া নেয়ে আসে। কলেজশাখা ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সঙ্গে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। মৃত্যুকালে তার দুটি মেয়ে ও স্ত্রীসহ অসংখ্যা গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
অ্যাডভোকেট কাজী খান শ্রীপুরের বেড়াইদেরচালা গ্রামের মৃত ইমাম উদ্দিন বেপারীর ছেলে। রাজনীতির পাশাপাশি কাজী খান ছিলেন গাজীপুর জজ কোর্টের আইনজীবী। তিনি শ্রীপুর পৌরশহরের রেলওয়ে স্টেশরের পূর্বপাশে সবুজবাগের নিজস্ব বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন।
অ্যাডভোকেট কাজী খানের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
স্বজনেরা জানান, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ তার বুকে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত করেন। পরে তাকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনরা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
শ্রীপুর পৌর ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দীন মৃধা জানান, কাজী খান শ্রীপুর পৌর বিএনপির নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। এর আগে ছাত্রদলে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে তার রাজনীতির শুরু। তিনি শ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজের নির্বাচিত জিএস ছিলেন। তিনি দুই মেয়ে রেখে গেছেন। তার বড় মেয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ছোট মেয়ে ক্লাস নাইনে পড়ে। তিনি খুবই কর্মীবান্ধব রাজনীতিবিদ ছিলেন।
বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম জানান, সর্বশেষ শ্রীপুর পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট কাজী খান। তার প্রথম জানাজার নামাজ আজ বাদ জোহর শ্রীপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। পরে তার জন্মস্থান বেড়াইদের চালা গ্রামে তার দ্বিতীয় জানাজার নামাজ বাদ আসর ধনাই বেপারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর (খোকন সেরনিয়বাত) জন্য ভোট চাইলেন বড় ভাই আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও দুই ভাইয়ের অনুসারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে খুশির আমেজ।
শনিবার (৩ জুন) বিকেলে খোকন সেরনিয়বাতকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে এক বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় মেয়র প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত উপস্থিত হলে অনুষ্ঠানের সভাপতি ও তার বড় ভাই আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ তাকে বুকে টেনে নেন।
এদিকে বর্ধিত সভায় দুই ভাইয়ের আলিঙ্গনের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে। তাদের অনুসারীরা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার দিয়ে নৌকায় ভোট চাইছেন । আবার অনেকে লিখেছেন, ‘দীর্ঘ সময়ের পরে দুই ভাইয়ের এমন মিলনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত।’
আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা সবাই একত্র হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমার ছোট ভাই আবুল খায়ের আব্দুল্লাহকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করব। এ সময় সকলের সামনে ছোট ভাইয়ের হাত উঁচিয়ে বিজয়ী করার জন্য সকলকে ওয়াদা করতে বলেন।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গির কবির নানক বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে যার বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়েছেন, আজকে এই সমন্বয় সভায় খোকন সেরনিয়বাতের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে সকল অপপ্রচারকারী এবং ষড়যন্ত্রকারীদের মুখে চুনকালি মেখে দিয়ে- আজ এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।
খোকন সেরনিয়বাত বলেন,জননেত্রী শেখ হাসিনা তার বিবেচনায় আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এখানে যারা উপস্থিত রয়েছেন তাদের কাছে আমার আবেদন- আপনাদের আত্মীয়-স্বজন এবং এলাকাবাসীকে আমার জন্য এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। এই আশাবাদ ব্যক্ত করি।
সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান এমপি, যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, বরিশাল মহানগর আওয়ামি লীগের সভাপতি ও বরিশাল জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গিরসহ বরিশাল বিভাগের পাঁচ জেলার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
চৌদ্দ বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে ট্রেনের ধাক্কায় সোহাগ (৩৫) ও তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। সোহাগ পেশায় একজন সিএনজি চালক।
শনিবার (৩ জুন) বিকেলে কুমিল্লার সদর দক্ষিণে ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা দুমরে-মুচড়ে গিয়ে মারা যান তারা। উপজেলার জেলখানা বাড়ি রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হন। নিহত সোহাগ উপজেলার পাকামারা গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে।
লাকসাম জিআরপি থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিজের সিএনজিতে ছেলেকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি লাকসাম উপজেলার মুদাফফরগঞ্জে বেড়াতে আসেন সোহাগ। শনিবার দুপুরের খাবার খেয়ে ছেলেকে নিয়ে নিজ বাড়ি পাকামারা গ্রামে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ সিএনজি যোগে রওয়ানা করেন সোহাগ। পথিমধ্যে জেলখানা বাড়ি রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজিটি দুমরে-মুচড়ে গিয়ে প্রায় আদা কিলোমিটার দুরে গিয়ে পড়ে। এতে সিএনজিতে থাকা মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বাবা- ছেলের মৃত্যু হয়। এ ঘটনা নিহতের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।
এ বিষয়ে লাকসাম জিআরপি থানার ওসি মো. জসিম উদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ঘটনাটি শুনার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করেন। থানায় অপমৃত্যুর মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে এ জেলখানা বাড়ি রেলক্রসিংয়ে কোন গেইট ম্যান না থাকায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্মাণাধীন ভবনের ১২ তলার ছাদ থেকে স্টিলের পাইপ পড়ে এক সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। পাইপটি সেনা সদস্যের মাথায় পড়লে তিনি ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়েন। দ্রুত তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শনিবার (৩ জুন) বিকালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সেনা সদস্যের নাম দেলোয়ার হোসেন। তিনি ল্যান্স কর্পোরাল পদে সেনাবাহিনীর ৫০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ১৭ ডিভিশন, সিলেটে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি মেহেরপুর জেলার রাংনি থানার রায়পুর গ্রামে।
তাৎক্ষনিকভাবে জানা গেছে, ওই ভবনে নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই নির্মাণ কাজ চলছিল। এ দিকে ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে সিটি করপোরেশন। কমিটিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কোম্পানির ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীসূত্র জানায়, নগরীর বন্দরবাজারে সিটি করপোরেশনের বহুতল ভবনের কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কোম্পানি এই কাজ করছে। বর্তমানে ভবনের ১১ ও ১২ তলায় কাজ চলছে। শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে ওই ভবন সংলগ্ন সিটি সুপার মার্কেটে যান সেনা সদস্য দেলোয়ার হোসেন। আকষ্মিক নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে স্টিলের পাইপ এসে তার মাথায় পড়ে মৃত্যু হয়েছে তার।
ঘটনার পরপরই সেখানে উপস্থিত হন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এসময় তিনি জানান, নগর ভবনের ১১ ও ১২ তলায় নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজ চলাকালেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। মেয়র বলেন, অনাকাঙ্খিত এ ঘটনা তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই ওই ভবনে নির্মাণ কাজ চলছিল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। নিহত সেনা সদস্যের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনা তদন্তে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কমিটি গঠনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘কমিটিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্যরা হলেন- গণপূর্ত বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিপন কুমার রায়, শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল হাকিম, সিসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর, সিসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান খান, সিসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আলম ও রাজি উদ্দিন খান।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ রেস্তোরাঁ বাবুর্চি বিল্লাল হাওলাদার নিহতের ঘটনায় শাওনকে (২৩) গ্রেপ্তার করেছে জেলা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
শনিবার (৩ জুন) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল। এ সময় আসামির কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
শুক্রবার (২ জুন) নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের মাসাবো এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মো. শাওন রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভার মো. মোতাহার হোসেনের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রূপগঞ্জ থানার তারাবো পৌরসভাধীন মাসাবো এলাকার নিজ বসতবাড়ির সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাসাবো তার নিজ বসতবাড়ির দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির নিচে বিশেষ কায়দায় লুকানো সাদা রংয়ের শপিং টিস্যু ব্যাগ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় একটি বিদেশি পয়েন্ট টুটু বোরের রিভলবার উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জানায়, ওই আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে সে গুলি করেছিল। আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় এসআই মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করেছেন।
বিল্লাল হাওলাদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় গত বুধবার তার স্ত্রী সাজেদা বেগম বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় তারাব পৌর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান সোহানসহ ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় আবু সুফিয়ানের নাম সোহান বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (৩০ মে) বিকেলে বরপা এলাকায় রিফাত নামে এক তরুণের মোটরসাইকেলের সঙ্গে একটি মাইক্রোবাসের ধাক্কা লাগে। পরে রিফাত ওই মাইক্রোবাস চালককে মারধর করেন। তারাব পৌরসভা যুবলীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক বায়েজিদ সাউদ প্রিন্স হোটেলে বসে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। সেই বৈঠকে রিফাতের পক্ষে ছাত্রলীগ নেতা আবু সুফিয়ান সোহান রিফাতের পক্ষে অংশ নেয়। বৈঠকে বায়েজিদের সঙ্গে রিফাতের তর্কবিতর্ক হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তর্কের এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। মারামারিতে তাদের অনুসারীরাও যুক্ত হয়। হোটেলটি ভাঙচুর করা হয়। এ সময় সোহান বায়জিদ সাউদকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছুঁড়লে সেই গুলি বিল্লাল হোসেনের গায়ে লাগে। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় করা মামলাতেও আবু সুফিয়ান ওরফে সোহানের গুলি করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ শনিবার শুরু হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের মহাসাধক শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ১৩৩তম তিরোধান উৎসব।
এ উপলক্ষে মেলা আয়োজনে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা অমান্য করে জুয়ার আসর ও মেলা বসানোর অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মনিরুজ্জামান মনিরের বিরুদ্ধে। এ জন্য দোকান প্রতি আদায় করা হয়েছে ৫-৭হাজার টাকা ।
অপর দিকে বারদী প্লাজায় আব্দুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বে আবদুল লতিফ,জয়নাল, কিরণসহ ১০/১৫জনের একটি সিন্ডিকেট দোকান প্রতি আদায় করা হয়েছে ১০ থেকে ২০হাজার টাকা।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রমে প্রতি বছর তিরোধান উৎসবে দেশ-বিদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক ভক্ত আসেন। ঐ মেলা আয়োজন নিয়ে প্রায়ই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যে বারদী এলাকায় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেই কারণে এবারও মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
স্থানিয় সূত্র জানায়, ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাই মো. শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০-১২জনের একটি সিন্ডিকেট প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ এক নেতার ছত্রছায়ায় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেলা আয়োজনে করছে।
অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি সন্ধ্যায় ডেকে আমাকে মেলার আয়োজন করতে বলেছেন। অনুমোদন নিতে হবে না বলে জানিয়েছেন। অনেক দোকানদার মেলায় এসে দোকান বসতে না দেওয়ায় হতাশ হয়েছেন। এ কারণে তিনি মেলার আয়োজন করতে বলেছেন। তবে মেলার দোকান থেকে কোন টাকা নেওয়া হচ্ছে না।
নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামসুল আলম সামসু বলেন, মেলার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, প্রতি বছর লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তীরোধান উৎসবে তিনদিন ব্যাপী মেলা বসে। এ বছর মেলার কোন অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। ফলে মেলার আসা দোকান মালিকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তবে মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, মেলার কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। খোঁজ নিয়ে আয়োজকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজধানীর সরকারি কবি নজরুল সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এম ওয়াসিম রানার (৩০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছেন তার বন্ধুরা। শুক্রবার (০২ জুন) রাত সাড়ে ১২টার দিকে চানখারপুলের একটি বাসায় তার বন্ধুরা তাকে দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রানার বন্ধু ইমরান হোসেন বাবু জানান, 'রানা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায়। কয়েক দিন যাবৎ রানার খু্ব মন খারাপ ছিল। একাকী থাকতে চাইত। চুপচাপ থাকত। তবে কী চিন্তা করত সে ব্যাপারে কিছু বলত না। তাই আমি তাকে বলেছিলাম- বন্ধু, তুমি কিছুদিনের জন্য কক্সবাজার ঘুরে আস।'
ঘটনার পরপরই রানার স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে রাত দেড়টার সময় সানজিদা নামে এক মেয়েকে আহাজারি করতে দেখা যায়। সানজিদা আক্তার (জান্নাতি) কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সানজিদা আক্তারের প্রতিবেশী মাইদুল ইসলাম জানান, 'সানজিদা আপুকে আমরা জান্নাতি আপু বলে ডাকি। রানা ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে অনেকদিন আগে। রাজনৈতিক কারণে বিষয়টি জানাজানি হয়নি। জান্নাতি আপু ডেমরা রূপগঞ্জের তারাবো এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক সহসভাপতি বলেন, 'আমরা জানতাম, সানজিদার সঙ্গে প্রেম ছিল। বিয়ে হয়েছিল কি-না তা সঠিক জানি না।' মৃত্যুর কারণ যা-ই হোক, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল রহস্য উন্মোচন করে বিচারের দাবি জানান তিনি।
রানার মৃত্যুর খবরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং তারা শোক জানান। আজ (০৩ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
টেস্ট ক্রিকেটে সিলেটের পথচলা শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। অভিজাত সংস্করণে যা ছিল দেশের অষ্টম ভেন্যু। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে পা রাখে দেশের সবচেয়ে সুন্দর এই স্টেডিয়ামটি। তবে মাঠের অভিষেক ম্যাচেই হেরে যায় বাংলাদেশ। তারপর আর কোনো পাঁচ দিনের খেলা গড়ায়নি এই মাঠে। এ নিয়ে স্থানীয়দের আক্ষেপের শেষ নেই।
অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরাচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও টেস্ট ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, ‘আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে আমরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্ট আয়োজন করতে পারব বলে আশা করছি। এটি আমাদের জন্য খুব একটি উপলক্ষ হবে। কারণ পাঁচ বছর পর সিলেটের মাঠে টেস্ট ক্রিকেট ফিরবে।’
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল সিলেট সফর করেছে। তারা সেখানকার মাঠসহ সব সুযোগ সুবিধা পরিদর্শন করেছেন। পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। সবকিছু দেখে তারা এখানে আরও বেশি ম্যাচ আয়োজনের জন্য উন্মুখ বলে জানিয়েছেন বিসিবির নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান নাদেল।
তিনি যোগ করেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধি দল আমাদের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বেশ মুগ্ধ। তাদের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয়েছে আমরা তাদের সব প্রত্যাশা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারব।’
এফটিপি সূচি অনুযায়ী চলতি বছর বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে ও দুই টেস্ট ম্যাচের সিরিজে খেলার কথা নিউজিল্যান্ডের। তবে সিরিজটি হবে দুই ভাগে। প্রথম ভাগে সেপ্টেম্বরের শেষভাগে বাংলাদেশের সঙ্গে ওয়ানডে খেলবে কিউইরা। এই সিরিজ খেলেই বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে দুই দল।
বিশ্বকাপের পর হবে দুই দলের টেস্ট সিরিজ। নভেম্বরের শেষ দিকে আবারও বাংলাদেশে আসবে কিউইরা। বিসিবি প্রস্তাবিত সূচি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর ঢাকায় পা রাখার কথা সফরকারীদের। এরপর একটি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে দলটি। ২৮ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর হবে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টেস্ট।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ করে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রকাশিত গেজেটে কয়েকটি আসনে পরিবর্তন এসেছে।
গত বৃহস্পতিবার ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত গেজেট শনিবার (৩ জুন)বিজি প্রেসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১-এর ধারা ৬-এর উপধারা (৩)-এর অধীনে সংসদের পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার প্রাথমিক তালিকা গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং ওই বিজ্ঞপ্তির অনুচ্ছেদ ৩-এর অধীন পুনর্নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকার বিষয়ে দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত আহ্বান করা হয়।
আরও বলা হয়, পরে নির্ধারিত সময়সূচি মোতাবেক প্রাপ্ত দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামতের ওপর কমিশন কর্তৃক প্রকাশ্য শুনানি গ্রহণ করা হয়। নির্বাচন কমিশন উক্ত আইনের ধারা ৬-এর উপধারা (৪) অনুযায়ী দাবি/আপত্তি/সুপারিশ/মতামত পর্যালোচনা করে প্রাথমিক তালিকায় প্রকাশিত নির্বাচনী এলাকার প্রয়োজনীয় সংশোধন করে সংযুক্ত তপশিল মোতাবেক জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করল।
চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চাপ চাপ রক্ত, ছেঁড়া জামাকাপড়, খাবার, ব্যাগপত্র, রক্তমাখা দেহ। এসবের মাঝেই ভাঙা লাইনের উপর পাওয়া গেলো ছোপ ছোপ রক্তমাখা একটি কবিতার খাতা।
খাতায় লেখা বিভিন্ন রকমের ভালোবাসার কবিতা, মাঝে মাঝে আবার নকশাও আঁকা। হাতে নিয়ে পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল,
‘‘অল্প অল্প মেঘ থেকে হালকা হালকা বৃষ্টি হয়, ছোট্ট ছোট্ট গল্প থেকে ভালোবাসা সৃষ্টি হয়....’’
পাতা উল্টাতেই চোখে পড়ল আরও একটি কবিতা। তার শুরুতে লেখা,
‘ভালোবাসা এই মন তোকে চায় সারাক্ষণ,
আছিস তুই মনের মাঝে
পাশে থাকিস সকাল সাঁঝে।
কী করে তোকে ভুলবে এই মন,
তুই যে আমার জীবন...’
কবিতাটি লেখক কে, কার জন্য এই কবিতা লিখা, তা জানার উপায় নেই। সম্ভবত, কবিতার খাতার মালিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিতেই ছিলেন। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই বেশি ছিল যে, সেই কবিতার খাতা ছিটকে এসে পড়েছে ভাঙা লাইনে।
কবিতার খাতার মালিক সুস্থ, আহত না মৃত, তাও জানা সম্ভব হয়নি। যিনি লিখেছেন, তিনি পুরুষ না মহিলা তা-ও জানা সম্ভব হয়নি। তবে লেখা পড়ে বোঝা যায়, কবিতাটি প্রিয় কারও উদ্দেশে লেখা। যাঁর উদ্দেশে এই কবিতা লেখা, এই কবিতার খাতা কি তাঁর কাছেও কোনও দিন পৌঁছাবে! তাও জানার উপায় নেই।
ভারতের ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলে এই কবিতার খাতা হাতে পায় আনন্দবাজারের প্রতিনিধি। এভাবেই এক প্রতিবেদনে বর্ণনা তুলে ধরে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির তথ্যমতে, শনিবার ভোর পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৩৩। আহত ৯০০ জনের বেশি। ভেতরে এখনও আটকে আছে অনেক মানুষ।
প্রথম দুই সেটই গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। প্রথমটি নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫ মিনিটে। দ্বিতীয়টিও টাইব্রেকারে। সেটির নিষ্পত্তি ঘণ্টার ওপরে। দুটোতেই জয় নোভাক জকোভিচের। তারপরেরটিও জিতে যান এই সার্বিয়ান। ১৪তম ফ্রেঞ্চ ওপেনের খেলায় স্পেনের আলেজান্দ্রো ফোকিনার সঙ্গে ৩-০ সেটে জয়লাভ করেন তিনি। যে জয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন তিনি।
৩৬ বছর বয়সী এই নাম্বার ওয়ান টেনিস তারকা প্রথম সেটে কিছুটা ছন্দহীন ছিলেন। তবে চ্যাম্পিয়নদের ঘুরে দাঁড়াতে তো সময় বেশি লাগে না। জকোভিচও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারপর ফোকিনাকে কোনো সেট জিততে না দিয়েই ম্যাচ শেষ করেন তিনি।
প্রায় ৪ ঘণ্টাব্যাপী চলা এই ম্যাচটিতে এক পেশে জয় হলেও প্রতিটি সেটেই উত্তেজনার পারদ ছড়িয়েছেন দুজন। সমর্থকেরাও বারবার হয়েছেন রোমাঞ্চিত। তবে শেষ পর্যন্ত নোভাক জকোভিচের সমর্থকেরাই হাসি নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আগামী সোমবার জকোভিচ শেষ ষোলোর ম্যাচ খেলতে নামবেন। সেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে কার্লোস আলকারাজকে পেতে পারেন তিনি।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতিতে জোর করে হারানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভিন্ন কোনো জটিলতার সৃষ্টি হলে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে গাজীপুরের যেকোনো আসন থেকে মনোনয়ন পাবেন তিনি। সে ক্ষেত্রে গাজীপুর সিটির ভোটে যে সংসদ সদস্য দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার তথ্য মিলবে তাকেই বাদ দেওয়া হবে। এ সিটি ভোটে হারের কারণ জানতে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব একটি সংস্থাকে নির্ভুল তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্বাচনকালীন সরকারে মন্ত্রীর দায়িত্বও পেতে পারেন আজমত, ওই সূত্র দাবি করে। সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
নানা অব্যবস্থাপনায় এগোচ্ছে না প্রাথমিক শিক্ষা। প্রায় শতভাগ শিশু ভর্তির আওতায় এসেছে অনেক আগে। এরপর মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতের কাজ অনেকটাই আটকে আছে। খোদ সরকারি সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে প্রাথমিকে চরম দুরবস্থার কথা। গবেষয়ণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাক্সিক্ষত মানের চেয়ে শিশুরা অনেক পিছিয়ে আছে। কিছু শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু কাজ করার চেষ্টা করলেও কথায় কথায় তাদের ওপর নেমে আসছে শাস্তির খড়গ। মানের উন্নয়ন না হলেও ঠিকই অধিদপ্তরে বসে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন কর্মকর্তারা।
প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় সম্প্রতি এই গবেষণা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সেখানে দেখা যায়, করোনা সংক্রমণের আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা গড়ে ইংরেজি বিষয়ে যতটা শিখত, করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ফলে তা সাড়ে ১২ শতাংশ কমে গেছে। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের হার কমেছে প্রায় সাড়ে ১৬ শতাংশ। আর তৃতীয় শ্রেণির বাংলায় কমেছে ১৫ শতাংশের মতো।
গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার আগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজিতে শিখন অর্জনের গড় হার ছিল প্রায় ৪৯ শতাংশ। করোনাকালে বন্ধের প্রভাবে এই হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৬ শতাংশ। একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ^পরিচয় বিষয়ে শিখন অর্জনের গড় হার ৫১ শতাংশের বেশি, যা আগে ছিল ৬৮ শতাংশের মতো। পঞ্চম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও বিজ্ঞানেও ক্ষতি বেড়েছে।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার ঘাটতি পূরণে এ ধরনের গবেষণার দরকার ছিল। আন্তর্জাতিক মানদ- বজায় রেখেই তা করা হয়েছে। আমরা এই গবেষণা প্রতিবেদন দু-এক দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমরা অন্তত এক বছরের জন্য রেমিডিয়াল ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছি। মন্ত্রণালয় সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রাথমিক শিক্ষা দিন দিন পিছিয়ে পড়লেও সেদিকে তেমন একটা নজর নেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের। তারা ব্যস্ত আছে লাখ লাখ শিক্ষক এবং মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন নিয়ে। কেউ কথা বললেই তার ওপর নেমে আসছে শাস্তি। ফলে শিক্ষকরাও দিন দিন তাদের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন; কোনো রকমে দিন পার করছেন।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষায় উদ্ভাবনী ও অনন্য অবদানের জন্য ২০১৯ সালে সারা দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হন রাজবাড়ী জেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শফিকুল ইসলাম। একই বছর রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিক নির্বাচিত হন। সাধারণত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসব শিক্ষকের হাতে পদক তুলে দেন। শিক্ষকদের পাশাপাশি সেরা শিক্ষার্থীদের পদক দেওয়া হয় একই অনুষ্ঠানে। কিন্তু করোনাকালে তাদের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষক পদক তুলে দেওয়া যায়নি। গত ১২ মার্চ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তাদের হাতে এ পদক তুলে দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তাই অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে স্বাভাবিকভাবে তারা দাবি তুলেছিলেন, দেরি হলেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে তারা পদক নেবেন; যা তাদের সারা জীবনের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেটা না হওয়ায় তারা প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে ঠিকই পদক নেন। তবে এর ৬৮ দিনের মাথায় এই শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবি তোলায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একই ঘটনায় জয়পুরহাটের হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমানকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কারণ তার বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এ পদক নিতে ১১ মার্চ ঢাকা এসেছিল। ওই শিক্ষকও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেওয়ার দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও তাদের কাউকে শোকজ করা হয়নি; যা বিধিবহির্ভূত বলছেন শিক্ষকরা।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবদুল আজিজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের পরবর্তী যে প্রক্রিয়া আছে, সেদিকেই আমরা যাব।’ এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সঙ্গে এসব ব্যাপারে কথা বলার জন্য গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেওয়া একজন শিক্ষকের জীবনে সেরা প্রাপ্তি। এ জন্য শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, প্রত্যাশা থাকতেই পারে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না। শিক্ষকদের যেভাবে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তা মোটেও ঠিক হয়নি বলে আমার মনে হয়। এর প্রভাব অন্যান্য শিক্ষকের মধ্যেও পড়বে, এটাই স্বাভাবিক।’
শুধু তা-ই নয়, করোনাকালে বন্ধ থাকা প্রাথমিক শিক্ষা চালু রাখতে কিছু শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কিছু কর্মকর্তা স্বউদ্যোগে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম চালু করেন; যাতে অনলাইন ক্লাস, শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনাসহ নানা কাজ করা হয়। এতে প্রতিটি ফেসবুক গ্রুপে লাখ থেকে হাজারো শিক্ষক যুক্ত হয়েছেন। এখনো সেসব গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। কিন্তু সেই গ্রুপগুলোকেই এখন শায়েস্তা করার হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহারের অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে যুক্ত থাকা অনেক শিক্ষক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাকেই দেওয়া হচ্ছে কারণ দর্শানো নোটিস (শোকজ)। সরকার যেখানে শিক্ষকদের ডিজিটালি আপডেট হওয়ার কথা বলছে, সেখানে প্রায় অনেকটাই উল্টো পথে হাঁটছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
শিক্ষকরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে দীর্ঘদিন ধরে আসন গেড়ে বসেছেন কিছু কর্মকর্তা। অনেকেই ৬ থেকে ১২ বছর ধরে একই দপ্তরে চাকরি করছেন। তাদের যে দায়িত্বই থাক না কেন যত লাভজনক কাজ আছে, সেগুলোতেই তারা হাত দিচ্ছেন। যোগ্য কর্মকর্তাকে অধিদপ্তরে আনলে তাদের সরে যেতে হবে, এ জন্য তারা নানাভাবে ঊর্ধ্বতনদের ভুল বুঝিয়ে মাঠপর্যায়ে শাস্তি দিয়ে সবাইকে ভীত করে তুলছেন। এতে পিছিয়ে পড়ছে প্রাথমিক শিক্ষার মান।
প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর গত মার্চ-এপ্রিলে অনলাইনে প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি করা হয়। যদিও নিয়ম ছিল, অনলাইনে নির্দিষ্ট মানদন্ড পূরণ ছাড়া কেউ বদলি হতে পারবেন না। কিন্তু তা মানেনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ম ভেঙে কয়েক শো শিক্ষকের বদলির আদেশ জারি করা হয়। আর এই বদলি-পদায়নে বড় অঙ্কের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের; যা ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে। আবার অনেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বদলিতেও সমন্বয়হীনতা দেখা দিচ্ছে। কাউকে ক্ষোভের বশবর্তী হয়েও অনেক দূরে বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন।
জানা যায়, চলতি বছর থেকে প্রথম শ্রেণিতে চালু হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম। আর আগামী বছর থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণিতে এবং ২০২৫ সাল থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। কিন্তু তা পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও নেই অধিদপ্তরের। শিক্ষকদের নামমাত্র প্রশিক্ষণেই দায়িত্ব শেষ করা হয়েছে। আসলে এই শিক্ষাক্রম শিক্ষার্থীরা কতটুকু আত্মস্থ করতে পারছে বা এ জন্য আর কী করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে তেমন নজর নেই।
এ ছাড়া এখনো প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেডে। দুই ধরনের প্রায় চার লাখ শিক্ষকই ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবি করে আসছেন। এ ছাড়া সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারাও দীর্ঘদিন ধরে নবম গ্রেডের দাবি করছেন। আর মাঠে কাজ করা এসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার পদোন্নতিও নেই বললেই চলে। কিন্তু এগুলো সমাধানেও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের; যা প্রাথমিকের মান উন্নীতের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
প্রবীণ শিক্ষক নেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান আরও বলেন, ‘এখনো মফস্বলে বা দুর্গম অঞ্চলের অনেক স্কুলেই এক-দুজন শিক্ষক। অনেক স্কুলে শিক্ষকের পদ তিন-চার বছর ধরে শূন্য। শিক্ষক না থাকলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপরও পড়ে। এ ছাড়া সরকারি প্রাথমিকে সাধারণত দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা আসে। তাদের একটু আলাদা যতœ নেওয়া প্রয়োজন। সেগুলোও হচ্ছে না। শিক্ষকরাও তাদের বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট নন। সব মিলিয়ে আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় কাক্সিক্ষত মান অর্জন করতে পারছি না।’
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে।
গণভবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সূত্র দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজমত উল্লা খানকে ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে। ওই আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আকবর হোসেন পাঠান (নায়ক ফারুক) গত ১৫ মে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায় ওই শূন্য আসনে আজমতকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।
গাজীপুরের দ্বিধা-বিভক্ত রাজনীতি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই দফায় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ভোটে পরাজিত করে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্যাগী, দক্ষ, মেধাবী ও ভাবমূর্তি সম্পন্ন আজমত উল্লাকে বরং আরও ওপরে রাখতে চেষ্টা করছেন। দলীয় সভাপতি টের পেয়েছেন মেয়র প্রার্থী আজমত হারেননি, তাকে গাজীপুরের দলীয় রাজনীতি জোর করে হারানো হয়েছে।
গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরাজিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লাকে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ডেকে পাঠান। আজমতের সঙ্গে গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন চক্রান্তের ব্যাপারগুলো শেখ হাসিনা জানেন এবং জানান। গণভবনে পরাজিত প্রার্থী আজমতকে বোঝান পরাজয়ের কারণ আমরাই। বিএনপি-জামায়াত তাদের প্রার্থী দেয়নি গাজীপুরের সিটি ভোটে। তারা নৌকা হারাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে জাহাঙ্গীর আলম। এর সঙ্গে দলেরও কেউ কেউ রসদ জুগিয়েছে। এতে রাজনীতি শেষ হয়ে গেছে এমন নয়।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রী যার ওপর ক্ষুব্ধ হন তার যেমন শাস্তি দেন তেমনি যার ওপর সন্তুষ্ট ও যিনি ধৈর্য ধারণ করেন তাকে একই সঙ্গে সব দেন। গত ১৫ বছরে বহুজন এর উদাহরণ। গাজীপুরে মেয়র পদে আজমতকে হারা বা হারানোয়, প্রধানমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা জাহাঙ্গীরের ভোটকে ঘিরে যে নাটকীয় আচরণ করেছেন সে সম্পর্কে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি আজমতকে নিয়ে যে খেলাধুলায় মেতেছে সে আজমতকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন আরও ওপরে।
প্রয়াত সংসদ সদস্য নায়ক ফারুক গাজীপুরের কালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। আজমতও টঙ্গী কালিগঞ্জের। তা ছাড়া ঢাকা লাগোয়া এই জেলার বাসিন্দা আজমত। গাজীপুরের অনেক মানুষ ওই আসনে বসবাসও করেন। এসব মিলিয়ে আজমত প্রায়োরিটি পেতে যাচ্ছেন ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে।
আজমতের বিভিন্ন ঘনিষ্ঠজনেরা এসব তথ্য দিলেও আজমত উল্লা খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, এসব ব্যাপারে তার কোনো কিছুই জানা নেই। চিন্তাও করেন না তিনি।
দুই দশকেরও বেশি ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক-টেলিছবি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন, উপহার দিয়েছেন হিট প্রোডাকশন। নিজেকে শুধু রোমান্টিক জনরায় আটকে না রেখে কাজ করেছেন বহুমাত্রিক ঘরানায়। নিজেকে প্রমাণ করেছেন সব্যসাচী নির্মাতা হিসেবে। নিজেকে শুধু টেলিভিশনেই আটকে রাখেননি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও পাল্টেছেন প্লাটফর্ম এবং সেখানেও দেখিয়েছেন নিজের মুন্সিয়ানা।
সর্বশেষ গেল ঈদে তুমুল সাড়া ফেলেছে তার নির্মিত স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। সাফল্যের পর কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এর সাকসেস পার্টি যেখানে উপস্থিত ছিলেন টিমের কলাকুশলী থেকে শুরু করে অন্যান্য নির্মাতা ও শিল্পীরা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তিনি নিয়ে আসছেন সিরিজটির সিক্যুয়াল। শুধু তাই নয়, একসঙ্গে একাধিক সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে আসছেন জনপ্রিয় নির্মাতা।
শিহাব শাহীন বলেন, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ নিয়ে এতটা প্রত্যাশা ছিল না কিন্তু সে সাড়া পেয়েছি তা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। দর্শকরাই কাজটিকে গ্রহণ করেছেন আর তাই এখন এর সিক্যুয়াল নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। স্পিন অফে দেখিয়েছি অ্যালেন স্বপনের পেছনের গল্প। সিন্ডিকেটে তাকে আমরা দেখিয়েছিলাম ২০২২ সালে, সে ঢাকায় আসার পর এর মাঝের সময়টার গল্পই থাকবে সিক্যুয়ালে। যেটার সংযোগ থাকতে পারে ‘সিন্ডিকেট ২’-তে। ঈদের পরপর এটার শুট করার সম্ভাবনা রয়েছে।
এই সিক্যুয়াল ছাড়াও আরও বেশ কিছু সিরিজ ও ফিল্ম নিয়ে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে বলেও জানান এ নির্মাতা। তিনি বলেন, মোস্তফা সরয়ার ফারুকির তত্ত্বাবধানে ওটিটি প্লাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অফ লাভ’ সিরিজের একটা কনটেন্ট করবো। এখনও কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। এছাড়া হইচইয়ের একটি সিরিজ ও বিঞ্জের একটি ফিল্ম করা হবে। নাম চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটোতেই জিয়াউল ফারুক অপূর্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
মাঝে শোনা গিয়েছিল, আফরান নিশোকে নিয়ে ‘সিন্ডিকেট ২’ নাকি হবে না, এটা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে শিহাব শাহীন বলেন, এটা ভূয়া তথ্য। ডিসেম্বরের শেষ দিকে ‘সিন্ডিকেট ২’ করবো তার আগে সেপ্টেম্বরে শুরু করবো ‘রসু খাঁ’।
জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমাচ্ছেন শিহাব শাহীন। দেশে ফিরবেন মাসের শেষ নাগাদ এরপর কাজে নামবেন।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল দেখতে কুমিল্লায় উড়ে গেছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে আজ বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছে ম্যাচটি। সালাউদ্দিন ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে কুমিল্লায় পৌঁছান।
ঢাকা থেকে সড়ক পথে কুমিল্লায় পাড়ি দিতে মাত্র দুই ঘণ্টা সময় লাগে। তবে সালাউদ্দিন দূরত্বটা পাড়ি দিয়েছেন হেলিকপ্টারে করে। যা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
টাকার অভাবে কদিন আগে নারী ফুটবলারদের অলিম্পিক বাছাইয়ে পাঠায়নি বাফুফে। অথচ ঢাকা থেকে কুমিল্লায় যেতে বাফুফে সভাপতি বেছে নিলেন হেলিকপ্টার।
হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে কুমিল্লার এই যাত্রায় বাফুফে সভাপতির সঙ্গী হয়েছেন সংস্থার নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।