ভক্ত-শ্রোতাদের মাতাল ‘সোনার বাংলা সার্কাস’
অনলাইন ডেস্ক | ২৯ নভেম্বর, ২০২১ ১৪:৪৬
‘সোনার বাংলা সার্কাস’— তিন শব্দের এই নাম শুনে হয়তো আপনার মনে প্রথমে চলে আসতে পারে দূর অতীতে দেখা কোনো সার্কাসের স্মৃতি। যারা গ্রামীণ পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন সার্কাস শিল্পীদের বিভিন্ন শারীরিক কলাকৌশল, ভাঁড়ামি, মূকাভিনয়, হাস্যরস, ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল প্রদর্শনী দেখেননি তেমন লোক কম পাওয়া যাবে।
দ্য লায়ন সার্কাস বা দ্য আজাদ সার্কাসের নাম হয়তো শুনেও থাকতে পারেন। এবার চলুন পরিচিত হওয়া যাক সোনার বাংলা সার্কাসের সঙ্গে। অবশ্য তাদের নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছুই নেই। সার্কাস বলতে আমরা যা বুঝি তার থেকে একেবারে ভিন্ন তাদের কাজ-কারবার। তবে এই রঙের দুনিয়ায় তারাও সঙ।
সোনার বাংলা সার্কাস বাংলাদেশের নতুন রক ব্যান্ড। যাদের গানে রয়েছে কাব্যিক লিরিকের সাইকেডেলিক স্বাদ। ব্যান্ড গঠনের প্রায় বছর চারেকের মধ্যে রকপ্রেমীদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ব্যান্ডটি। শ্রোতাদের মাঝে তুমুল সাড়া ফেলেছে তাদের প্রথম অ্যালবাম ‘হায়েনা এক্সপ্রেস’ও।
নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলে অ্যালবাম মুক্তির ১৯ মাস পর ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে হয়ে গেল সোনার বাংলা সার্কাসের প্রথম একক কনসার্ট ‘হায়েনা এক্সপ্রেস এক্সপেরিয়েন্স’।
করোনার কারণে এতদিন ব্যান্ডটির ভোকাল প্রবর রিপনকে ভক্তদের গান শোনাতে হয়েছে ফেসবুক লাইভে এসে। মহামারি পরবর্তী জীবন পরিস্থিতি স্বাভাবিকরূপে ফিরতেই কনসার্ট; আর তার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন অগণিত ভক্ত-শ্রোতা। ৪০০ টাকার টিকিট কেটে সবাই কখনো গলা মিলিয়েছেন কখনো মাথা দুলিয়েছেন প্রবর রিপনের গানে।
সন্ধ্যা সাতটায় কনসার্ট শুরুর কথা থাকলেও ৪০ মিনিট পরে গিটার, ড্রাম, কি-বোর্ডের গমগমে আওয়াজে ভরে ওঠে হলরুম। ‘এপিটাফ, ‘অন্ধ দেয়াল, ‘আমার নাম অসুখ’, ‘মৃত্যু উৎপাদন কারখানা’— প্রবর রিপন যে গানই গাইলেন না কেন, সঙ্গে গলা মেলাল দর্শক-শ্রোতারা। দেখে মনে হচ্ছিল, এ যেন তাদেরই গান! প্রবর রিপন লিরিক ভুলে গেলেও গান থামায়নি ভক্তরা। অ্যালবামের প্রতিটি গান যেন মুখস্থ হয়ে গেছে তাদের ইতোমধ্যে।
পুরো কনসার্টে ভোকাল-গিটারিস্ট প্রবর রিপনকে দারুণ সহযোগিতা দিয়ে গেছেন পাণ্ডুরাঙ্গা ব্লুমবার্গ (গিটারিস্ট), এনামুল হাসান (ড্রামার), শাকিল হক (বেজ গিটার) ও সাদ চৌধুরী (কি-বোর্ড)। সাউন্ড ইঞ্জিনিয়াররা তো ছিলেনই।
একদিক থেকে এই কনসার্টের প্রকাশেও ছিল নতুনত্ব ও ভিন্নতা। কেবল গানই ছিল না; কনসার্টের ফাঁকে দর্শকসারিতে ছিল দুটি ছোট সার্কাসের প্রদর্শনী। এছাড়া সোনার বাংলা সার্কাসের প্যাভিলিয়নে বিক্রি হয়েছে অ্যালবাম, গানের লিরিক লেখা গলার লকেট, চাবির রিং, পোস্টার, টি–শার্ট। করোনার কারণে দীর্ঘদিন যে ঘরবন্দী জীবন কাটিয়েছে শ্রোতারা, তা পুষিয়ে দেওয়ার জন্যই যেন নতুন কার্যক্রম শুরু করেছে ব্যান্ডটি।
পুরো বাংলাদেশ ট্যুরের পরিকল্পনা করছে সোনার বাংলা সার্কাস। আগামী ডিসেম্বরে দলবল নিয়ে হয়তো বন্দর নগরী চট্টগ্রামে যেতে পারে এই সার্কাসের সঙরা। কনসার্ট শেষে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সম্পর্কে আত্মতৃপ্তির সঙ্গে এমনটাই জানালেন প্রবর রিপন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ২৯ নভেম্বর, ২০২১ ১৪:৪৬

‘সোনার বাংলা সার্কাস’— তিন শব্দের এই নাম শুনে হয়তো আপনার মনে প্রথমে চলে আসতে পারে দূর অতীতে দেখা কোনো সার্কাসের স্মৃতি। যারা গ্রামীণ পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন সার্কাস শিল্পীদের বিভিন্ন শারীরিক কলাকৌশল, ভাঁড়ামি, মূকাভিনয়, হাস্যরস, ঝুঁকিপূর্ণ কৌশল প্রদর্শনী দেখেননি তেমন লোক কম পাওয়া যাবে।
দ্য লায়ন সার্কাস বা দ্য আজাদ সার্কাসের নাম হয়তো শুনেও থাকতে পারেন। এবার চলুন পরিচিত হওয়া যাক সোনার বাংলা সার্কাসের সঙ্গে। অবশ্য তাদের নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছুই নেই। সার্কাস বলতে আমরা যা বুঝি তার থেকে একেবারে ভিন্ন তাদের কাজ-কারবার। তবে এই রঙের দুনিয়ায় তারাও সঙ।
সোনার বাংলা সার্কাস বাংলাদেশের নতুন রক ব্যান্ড। যাদের গানে রয়েছে কাব্যিক লিরিকের সাইকেডেলিক স্বাদ। ব্যান্ড গঠনের প্রায় বছর চারেকের মধ্যে রকপ্রেমীদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে ব্যান্ডটি। শ্রোতাদের মাঝে তুমুল সাড়া ফেলেছে তাদের প্রথম অ্যালবাম ‘হায়েনা এক্সপ্রেস’ও।
নিজেদের ইউটিউব চ্যানেলে অ্যালবাম মুক্তির ১৯ মাস পর ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অডিটোরিয়ামে হয়ে গেল সোনার বাংলা সার্কাসের প্রথম একক কনসার্ট ‘হায়েনা এক্সপ্রেস এক্সপেরিয়েন্স’।

করোনার কারণে এতদিন ব্যান্ডটির ভোকাল প্রবর রিপনকে ভক্তদের গান শোনাতে হয়েছে ফেসবুক লাইভে এসে। মহামারি পরবর্তী জীবন পরিস্থিতি স্বাভাবিকরূপে ফিরতেই কনসার্ট; আর তার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন অগণিত ভক্ত-শ্রোতা। ৪০০ টাকার টিকিট কেটে সবাই কখনো গলা মিলিয়েছেন কখনো মাথা দুলিয়েছেন প্রবর রিপনের গানে।
সন্ধ্যা সাতটায় কনসার্ট শুরুর কথা থাকলেও ৪০ মিনিট পরে গিটার, ড্রাম, কি-বোর্ডের গমগমে আওয়াজে ভরে ওঠে হলরুম। ‘এপিটাফ, ‘অন্ধ দেয়াল, ‘আমার নাম অসুখ’, ‘মৃত্যু উৎপাদন কারখানা’— প্রবর রিপন যে গানই গাইলেন না কেন, সঙ্গে গলা মেলাল দর্শক-শ্রোতারা। দেখে মনে হচ্ছিল, এ যেন তাদেরই গান! প্রবর রিপন লিরিক ভুলে গেলেও গান থামায়নি ভক্তরা। অ্যালবামের প্রতিটি গান যেন মুখস্থ হয়ে গেছে তাদের ইতোমধ্যে।
পুরো কনসার্টে ভোকাল-গিটারিস্ট প্রবর রিপনকে দারুণ সহযোগিতা দিয়ে গেছেন পাণ্ডুরাঙ্গা ব্লুমবার্গ (গিটারিস্ট), এনামুল হাসান (ড্রামার), শাকিল হক (বেজ গিটার) ও সাদ চৌধুরী (কি-বোর্ড)। সাউন্ড ইঞ্জিনিয়াররা তো ছিলেনই।
একদিক থেকে এই কনসার্টের প্রকাশেও ছিল নতুনত্ব ও ভিন্নতা। কেবল গানই ছিল না; কনসার্টের ফাঁকে দর্শকসারিতে ছিল দুটি ছোট সার্কাসের প্রদর্শনী। এছাড়া সোনার বাংলা সার্কাসের প্যাভিলিয়নে বিক্রি হয়েছে অ্যালবাম, গানের লিরিক লেখা গলার লকেট, চাবির রিং, পোস্টার, টি–শার্ট। করোনার কারণে দীর্ঘদিন যে ঘরবন্দী জীবন কাটিয়েছে শ্রোতারা, তা পুষিয়ে দেওয়ার জন্যই যেন নতুন কার্যক্রম শুরু করেছে ব্যান্ডটি।
পুরো বাংলাদেশ ট্যুরের পরিকল্পনা করছে সোনার বাংলা সার্কাস। আগামী ডিসেম্বরে দলবল নিয়ে হয়তো বন্দর নগরী চট্টগ্রামে যেতে পারে এই সার্কাসের সঙরা। কনসার্ট শেষে ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সম্পর্কে আত্মতৃপ্তির সঙ্গে এমনটাই জানালেন প্রবর রিপন।