বিএনপি রাজনীতিকে অপরাধ জগতে নিয়ে গেছে : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২২:০৭
শুক্রবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে রাজধানীর রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস
যুদ্ধাপরাধী ও তাদের পরিবারের সদস্য, জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত ব্যক্তি এবং হত্যা ও দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের মনোনয়ন দেওয়ায় বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার বলেছেন, বিএনপি রাজনীতিকে অপরাধ জগতে নিয়ে গেছে।
বাসসের খবরে বলা হয়, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য একটি রাজনৈতিক দল যত রকমের অপরাধের সাথে যুক্ত। কেউ পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর দোসর কেউ মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে বা তাদের পরিবারের সদস্য, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আসামি- তাদের মনোনয়ন দিয়েছে।’
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমার প্রশ্ন হচ্ছে যারা এ ধরনের মানবতাবিরোধী কাজ করেছে তাদের নির্বাচিত করে তারা দেশটাকে কোথায় নিয়ে যাবে?
তিনি বলেন, আমেরিকার কংগ্রেস থেকে একটি তালিকা পাঠিয়েছে সেখানেও জঙ্গিবাদী হিসেবে এদের নাম রয়েছে এবং ইতোমধ্যেই কানাডার আদালত বিএনপিকে একটি জঙ্গিবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা যদি নির্বাচিত হয়ে দেশের ক্ষমতায় আসে তাহলে সেই দেশের অবস্থা কোথায় দাঁড়াবে, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা কীভাবে থাকবে, এদেশে শান্তি কীভাবে থাকবে, অগ্রগতি কীভাবে হবে, কোনওদিনও হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, দলের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পরভীন জাহান কল্পনা সভায় বক্তৃতা করেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা.আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা.নুজহাত চৌধুরী এবং শহিদ শহীদুল্লাহ কায়সারের মেয়ে শমী কায়সারও বক্তৃতা করেন। সভা পরিচালনা করেন দলের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওয়াদা ছিল জাতির কাছে ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব। সে অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল করে ’৭১ এর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করি এবং অনেকের বিচারের রায় ও কার্যকর হয়েছে।
তিনি বলেন, কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আজকে আমরা দেখি যারা এই মানবাধিকারবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত তাদের পরিবারকে, আপনজনকে নিয়ে বিএনপিসহ জোট করা হয়েছে। সেই জোটে অনেকেই এখন আছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দলত্যাগ করে এবং আদর্শবিচ্যুত হয়ে কিছু নেতার ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনের সমালোচনা করে বলেন, ‘তাদের কাছে আমার প্রশ্ন যারা এতবড় অপরাধ করল, যে পাকিস্তানী বাহিনীকে আমরা পরাজিত করলাম তাদেরই দোসরদের ধানের শীষ দেওয়া হলো। আর যারা একসময় আমাদের সঙ্গে ছিল, আজ চলে গেছে তারা কীভাবে নির্বাচন করবে। আর কীভাবেই বা নির্বাচন করে। এ প্রশ্নের উত্তর তারা জাতির কাছে দিতে পারবে কিনা আমি জানি না।
শেখ হাসিনা দেশবাসীর কাছে এসব চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী, তাদের দোসর এবং জঙ্গিবাদ এবং হত্যাকাণ্ডে সঙ্গে যুক্তদের প্রত্যাখ্যান করারও উদাত্ত আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি দেশবাসীকে বলব অপরাধীদের ভোট দেবেন না, এই অপরাধীরা বাংলাদেশে যেন আর কখনও নির্বাচনে প্রতিনিধি হয়ে আসতে না পারে । যেসব এলাকায় তারা দাঁড়িয়েছে (নির্বাচনে) তাদের চিহ্নিত করুন এবং তাদের একেবারে বয়কট করে দিন। ’
তিনি বলেন, এরা ক্ষমতায় আসলে এদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, দেশের অগ্রগতি ব্যহত হবে, এদেশের ভাগ্য গড়ার জন্য আজকে যে অর্থনৈতিক উন্নয়নটা হচ্ছে সেটাও থেমে যাবে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ২২:০৭

যুদ্ধাপরাধী ও তাদের পরিবারের সদস্য, জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত ব্যক্তি এবং হত্যা ও দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের মনোনয়ন দেওয়ায় বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার বলেছেন, বিএনপি রাজনীতিকে অপরাধ জগতে নিয়ে গেছে।
বাসসের খবরে বলা হয়, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য একটি রাজনৈতিক দল যত রকমের অপরাধের সাথে যুক্ত। কেউ পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর দোসর কেউ মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে বা তাদের পরিবারের সদস্য, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার আসামি- তাদের মনোনয়ন দিয়েছে।’
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমার প্রশ্ন হচ্ছে যারা এ ধরনের মানবতাবিরোধী কাজ করেছে তাদের নির্বাচিত করে তারা দেশটাকে কোথায় নিয়ে যাবে?
তিনি বলেন, আমেরিকার কংগ্রেস থেকে একটি তালিকা পাঠিয়েছে সেখানেও জঙ্গিবাদী হিসেবে এদের নাম রয়েছে এবং ইতোমধ্যেই কানাডার আদালত বিএনপিকে একটি জঙ্গিবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা যদি নির্বাচিত হয়ে দেশের ক্ষমতায় আসে তাহলে সেই দেশের অবস্থা কোথায় দাঁড়াবে, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা কীভাবে থাকবে, এদেশে শান্তি কীভাবে থাকবে, অগ্রগতি কীভাবে হবে, কোনওদিনও হবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, দলের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পরভীন জাহান কল্পনা সভায় বক্তৃতা করেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা.আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা.নুজহাত চৌধুরী এবং শহিদ শহীদুল্লাহ কায়সারের মেয়ে শমী কায়সারও বক্তৃতা করেন। সভা পরিচালনা করেন দলের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওয়াদা ছিল জাতির কাছে ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব। সে অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল করে ’৭১ এর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করি এবং অনেকের বিচারের রায় ও কার্যকর হয়েছে।
তিনি বলেন, কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আজকে আমরা দেখি যারা এই মানবাধিকারবিরোধী অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত তাদের পরিবারকে, আপনজনকে নিয়ে বিএনপিসহ জোট করা হয়েছে। সেই জোটে অনেকেই এখন আছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দলত্যাগ করে এবং আদর্শবিচ্যুত হয়ে কিছু নেতার ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনের সমালোচনা করে বলেন, ‘তাদের কাছে আমার প্রশ্ন যারা এতবড় অপরাধ করল, যে পাকিস্তানী বাহিনীকে আমরা পরাজিত করলাম তাদেরই দোসরদের ধানের শীষ দেওয়া হলো। আর যারা একসময় আমাদের সঙ্গে ছিল, আজ চলে গেছে তারা কীভাবে নির্বাচন করবে। আর কীভাবেই বা নির্বাচন করে। এ প্রশ্নের উত্তর তারা জাতির কাছে দিতে পারবে কিনা আমি জানি না।
শেখ হাসিনা দেশবাসীর কাছে এসব চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী, তাদের দোসর এবং জঙ্গিবাদ এবং হত্যাকাণ্ডে সঙ্গে যুক্তদের প্রত্যাখ্যান করারও উদাত্ত আহবান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি দেশবাসীকে বলব অপরাধীদের ভোট দেবেন না, এই অপরাধীরা বাংলাদেশে যেন আর কখনও নির্বাচনে প্রতিনিধি হয়ে আসতে না পারে । যেসব এলাকায় তারা দাঁড়িয়েছে (নির্বাচনে) তাদের চিহ্নিত করুন এবং তাদের একেবারে বয়কট করে দিন। ’
তিনি বলেন, এরা ক্ষমতায় আসলে এদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, দেশের অগ্রগতি ব্যহত হবে, এদেশের ভাগ্য গড়ার জন্য আজকে যে অর্থনৈতিক উন্নয়নটা হচ্ছে সেটাও থেমে যাবে।