আজ রাতে সিএমএইচের হিমঘরে থাকবেন সৈয়দ আশরাফ
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৫ জানুয়ারি, ২০১৯ ২১:২৭
শনিবার সন্ধ্যায় কফিনে ঢাকা পৌঁছার পর বিমানবন্দর থেকে নিজের বাসা বেইলি রোড হয়ে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) উদ্দেশে রওনা হয়েছে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কফিন। সেখানকার হিমঘরে আজ রাতে তিনি থাকবেন। রোববার কয়েক দফা জানাজার পর তাকে সমাহিত করা হবে বনানীর কবরস্থানে।
এর আগে বাংলাদেশ বিমানের মেঘদূতে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নিথর দেহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ব্যাংকক থেকে মেঘদূত বিমানটি যখন বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণ করে তখন আওয়ামী লীগের কয়েক শ নেতাকর্মী অপেক্ষায় ছিলেন তাকে গ্রহণ করতে।
অনন্ত যাত্রার এই ক্ষণিকের বিরতিতে কেউ যেন প্রিয় নেতাকে এক মুহূর্তের জন্য দেখার সুযোগ হারাতে চাননি। বিমান থেকে কাঁধে বয়ে প্রিয় নেতার কফিনটি বয়ে নিয়ে আনেন কয়েকজন নেতা।
মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নেয়া এ নেতার কফিনটি মুড়ে দেওয়া হয়েছিল লাল-সবুজের পতাকায়।
সাদা ফুলের তোড়ায় এ যাত্রা বিরতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয় সৈয়দ আশরাফকে। আমৃত্যু যে দলের দায়িত্বে ছিলেন, সেই দলের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা জানানো হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন, সেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শ্রদ্ধা জানান হয়, বাংলাদেশ বিমান ও বিমান শ্রমিক লীগের পক্ষ থেকেও। এরপর বাংলাদেশ পুলিশের একটি লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে ২১ বেইলি রোডের বাসভবনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে তার কফিন।
এর আগে বেলা সাড়ে চারটা থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে উপস্থিত হতে থাকেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, মোশাররফ হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, নুরুল ইসলাম নাহিদ, আব্দুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে পরপর দুইবার দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তার চলে যাওয়া দলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। রাজনীতি অনেকেই করেন এদের মধ্যে ভালো মানুষের সংখ্যা খুবই কম। সৈয়দ আশরাফ তাদের মধ্যে বিরল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে রোববার বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে। জনপ্রশাসনমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা একে এম সাজ্জাদ হোসেন শাহীন দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, এরপর ৬ জানুয়ারি রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় সংসদ ভবনের সংসদ প্লাজায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। গার্ড অব অনার দেওয়া হবে তাকে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দলের নেতারা শেষ বারের মতো শ্রদ্ধা জানাবেন তার কফিনে।
তিনি আরো জানান, এরপর সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মরদেহ জন্মস্থান কিশোরগঞ্জে ও কৈশোরে বড়ে ওঠা শহর ময়মনসিংহ নেওয়া হবে। কিশোরগঞ্জের পুরাতন স্টেডিয়াম মাঠে বেলা ১২টায় দ্বিতীয় জানাজা ও ময়মনসিংহ ঈদগাহ মাঠে বেলা ২টায় সর্বশেষ জানাজা শেষে ঢাকায় বনানী কবরস্থানে দাফন করে শেষ বিদায় জানানো হবে রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে।
ফুসফুসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ব্যাংকের একটি হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মীর প্রিয় নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার ঢাকার সময় রাত পৌনে ১০টায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৫ জানুয়ারি, ২০১৯ ২১:২৭

শনিবার সন্ধ্যায় কফিনে ঢাকা পৌঁছার পর বিমানবন্দর থেকে নিজের বাসা বেইলি রোড হয়ে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) উদ্দেশে রওনা হয়েছে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কফিন। সেখানকার হিমঘরে আজ রাতে তিনি থাকবেন। রোববার কয়েক দফা জানাজার পর তাকে সমাহিত করা হবে বনানীর কবরস্থানে।
এর আগে বাংলাদেশ বিমানের মেঘদূতে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নিথর দেহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ব্যাংকক থেকে মেঘদূত বিমানটি যখন বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণ করে তখন আওয়ামী লীগের কয়েক শ নেতাকর্মী অপেক্ষায় ছিলেন তাকে গ্রহণ করতে।
অনন্ত যাত্রার এই ক্ষণিকের বিরতিতে কেউ যেন প্রিয় নেতাকে এক মুহূর্তের জন্য দেখার সুযোগ হারাতে চাননি। বিমান থেকে কাঁধে বয়ে প্রিয় নেতার কফিনটি বয়ে নিয়ে আনেন কয়েকজন নেতা।
মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে অংশ নেয়া এ নেতার কফিনটি মুড়ে দেওয়া হয়েছিল লাল-সবুজের পতাকায়।
সাদা ফুলের তোড়ায় এ যাত্রা বিরতিতে শ্রদ্ধা জানানো হয় সৈয়দ আশরাফকে। আমৃত্যু যে দলের দায়িত্বে ছিলেন, সেই দলের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা জানানো হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন, সেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।
শ্রদ্ধা জানান হয়, বাংলাদেশ বিমান ও বিমান শ্রমিক লীগের পক্ষ থেকেও। এরপর বাংলাদেশ পুলিশের একটি লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে ২১ বেইলি রোডের বাসভবনের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে তার কফিন।
এর আগে বেলা সাড়ে চারটা থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে উপস্থিত হতে থাকেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, মোশাররফ হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, নুরুল ইসলাম নাহিদ, আব্দুল মতিন খসরু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে পরপর দুইবার দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তার চলে যাওয়া দলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। রাজনীতি অনেকেই করেন এদের মধ্যে ভালো মানুষের সংখ্যা খুবই কম। সৈয়দ আশরাফ তাদের মধ্যে বিরল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে রোববার বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে। জনপ্রশাসনমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা একে এম সাজ্জাদ হোসেন শাহীন দেশ রূপান্তরকে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, এরপর ৬ জানুয়ারি রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় সংসদ ভবনের সংসদ প্লাজায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। গার্ড অব অনার দেওয়া হবে তাকে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দলের নেতারা শেষ বারের মতো শ্রদ্ধা জানাবেন তার কফিনে।
তিনি আরো জানান, এরপর সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মরদেহ জন্মস্থান কিশোরগঞ্জে ও কৈশোরে বড়ে ওঠা শহর ময়মনসিংহ নেওয়া হবে। কিশোরগঞ্জের পুরাতন স্টেডিয়াম মাঠে বেলা ১২টায় দ্বিতীয় জানাজা ও ময়মনসিংহ ঈদগাহ মাঠে বেলা ২টায় সর্বশেষ জানাজা শেষে ঢাকায় বনানী কবরস্থানে দাফন করে শেষ বিদায় জানানো হবে রাজনীতির উজ্জ্বল নক্ষত্র সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে।
ফুসফুসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ব্যাংকের একটি হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মীর প্রিয় নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার ঢাকার সময় রাত পৌনে ১০টায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।