অবসরে যা করবেন মুহিত
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৭:৩৪
অবসরে লেখালেখি ও বই পড়ে সময় কাটাবেন বলে জানিয়েছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। রাজনীতি থেকে অবসরের পর মন্ত্রিসভা থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিলেন মুহিত। ১০ বছর অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে মন্ত্রণালয় থেকে বিদায় নেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়ের সমাপ্তি টানলেন তিনি।
বিদায় অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘অবসরের পর কি করব, অনেকে এমনটা জানতে চান। আমার বিশাল একটা পাঠাগার আছে। এতোবড় পাঠাগার সম্ভবত দেশে আর কারও নেই। ৫০ হাজার বই আছে সেখানে। সেখানকার অনেক বই এখনো আমার পড়া হয়নি। সেগুলো পড়ার মধ্যে থাকব, লেখালেখি করব। বিভিন্ন কাজে, অনুষ্ঠানে আমাকে পাবেন।’
সোমবার মন্ত্রী হিসেবে আবুল মাল আবদুল মুহিতের শেষ কর্মদিবসে কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় দেন তাকে। বিদায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফজলে কবির, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিজিএ) মুসলিম চৌধুরীসহ অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে গত ১০ বছর কাজের স্মৃতিচারণ করেন।
বিদায়বেলায় মুহিত হাস্যোজ্জ্বল মুখে বলেন, ‘আগামী ২৫ জানুয়ারি আমার বয়স ৮৬ হবে। এই বয়সে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো একটি জটিল মন্ত্রণালয়ের জটিল কাজ করার সক্ষমতা আমাকে আল্লাহতায়ালা দিয়েছেন। ঝেঁটিয়ে বিদায় হওয়ার চেয়ে অবসরে যাওয়া অনেক ভালো। তবে আমার কোন অসুখ-বিসুখ নাই। স্বাস্থ্য ঠিক আছে। ঠিকমতো হাঁটতে পারি, কথা বলতে পারি। আমার একটাই অসুখ, সেটা হলো বার্ধক্য। এটাতো আর কমানোর উপায় নেই। ’
২০০৯-২০১৪ মেয়াদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথম যখন অবসরে যেতে চেয়েছিলাম, প্রধানমন্ত্রী বললেন এখন অবসরের কথা বলবেন না। ২০১৪ সালে যখন বললাম, তখন তিনি বলেছিলেন, আপনি এখনো বেশ শক্তপোক্ত আছেন। এই মেয়াদ আমার সঙ্গে আপনি থাকবেন।
পাঁচ বছরের সহকারী ও নতুন সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে অভিনন্দন জানিয়ে মুহিত বলেন, সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার সময়ই আমি বলেছি, এটা আমার অবসর নয়। জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছি। আজ সে অধ্যায়ের সমাপ্তি হচ্ছে। গত ১০ বছরে দেশের গ্রাম-গঞ্জে অনেক পরিবর্তন এসেছে। সব শ্রেণির মানুষ ও প্রশাসন উন্নত হয়েছে। আমরা কোথাও গেলে সারা বিশ্ব আমাদের ভিক্ষুক মনে করত, এখন আর সেভাবে বলার সাহস নেই।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান মুহিত সম্পর্কে বলেন, তার সঙ্গে কাজ করার জন্য আমি মুখিয়ে ছিলাম। তার ছায়াতলে, সুরক্ষিত অবস্থায় থেকে কাজ করা উপভোগ করেছি আমি।
উল্লেখ্য, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম ও অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার গত সপ্তাহে মুহিতের সঙ্গে দেখা করে তাকে আরও এক বছর দায়িত্বে থাকার অনুরোধ করেন। ওই সময় ‘তা সম্ভব’ বলে সচিবদের আশ্বস্ত করেছিলেন তিনি। তবে নতুন সরকারে আ হ ম মুস্তফা কামালকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৭:৩৪
.jpg)
অবসরে লেখালেখি ও বই পড়ে সময় কাটাবেন বলে জানিয়েছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। রাজনীতি থেকে অবসরের পর মন্ত্রিসভা থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিলেন মুহিত। ১০ বছর অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে মন্ত্রণালয় থেকে বিদায় নেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়ের সমাপ্তি টানলেন তিনি।
বিদায় অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘অবসরের পর কি করব, অনেকে এমনটা জানতে চান। আমার বিশাল একটা পাঠাগার আছে। এতোবড় পাঠাগার সম্ভবত দেশে আর কারও নেই। ৫০ হাজার বই আছে সেখানে। সেখানকার অনেক বই এখনো আমার পড়া হয়নি। সেগুলো পড়ার মধ্যে থাকব, লেখালেখি করব। বিভিন্ন কাজে, অনুষ্ঠানে আমাকে পাবেন।’
সোমবার মন্ত্রী হিসেবে আবুল মাল আবদুল মুহিতের শেষ কর্মদিবসে কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় দেন তাকে। বিদায় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফজলে কবির, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিজিএ) মুসলিম চৌধুরীসহ অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে গত ১০ বছর কাজের স্মৃতিচারণ করেন।
বিদায়বেলায় মুহিত হাস্যোজ্জ্বল মুখে বলেন, ‘আগামী ২৫ জানুয়ারি আমার বয়স ৮৬ হবে। এই বয়সে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো একটি জটিল মন্ত্রণালয়ের জটিল কাজ করার সক্ষমতা আমাকে আল্লাহতায়ালা দিয়েছেন। ঝেঁটিয়ে বিদায় হওয়ার চেয়ে অবসরে যাওয়া অনেক ভালো। তবে আমার কোন অসুখ-বিসুখ নাই। স্বাস্থ্য ঠিক আছে। ঠিকমতো হাঁটতে পারি, কথা বলতে পারি। আমার একটাই অসুখ, সেটা হলো বার্ধক্য। এটাতো আর কমানোর উপায় নেই। ’
২০০৯-২০১৪ মেয়াদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথম যখন অবসরে যেতে চেয়েছিলাম, প্রধানমন্ত্রী বললেন এখন অবসরের কথা বলবেন না। ২০১৪ সালে যখন বললাম, তখন তিনি বলেছিলেন, আপনি এখনো বেশ শক্তপোক্ত আছেন। এই মেয়াদ আমার সঙ্গে আপনি থাকবেন।
পাঁচ বছরের সহকারী ও নতুন সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে অভিনন্দন জানিয়ে মুহিত বলেন, সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার সময়ই আমি বলেছি, এটা আমার অবসর নয়। জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছি। আজ সে অধ্যায়ের সমাপ্তি হচ্ছে। গত ১০ বছরে দেশের গ্রাম-গঞ্জে অনেক পরিবর্তন এসেছে। সব শ্রেণির মানুষ ও প্রশাসন উন্নত হয়েছে। আমরা কোথাও গেলে সারা বিশ্ব আমাদের ভিক্ষুক মনে করত, এখন আর সেভাবে বলার সাহস নেই।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান মুহিত সম্পর্কে বলেন, তার সঙ্গে কাজ করার জন্য আমি মুখিয়ে ছিলাম। তার ছায়াতলে, সুরক্ষিত অবস্থায় থেকে কাজ করা উপভোগ করেছি আমি।
উল্লেখ্য, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম ও অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার গত সপ্তাহে মুহিতের সঙ্গে দেখা করে তাকে আরও এক বছর দায়িত্বে থাকার অনুরোধ করেন। ওই সময় ‘তা সম্ভব’ বলে সচিবদের আশ্বস্ত করেছিলেন তিনি। তবে নতুন সরকারে আ হ ম মুস্তফা কামালকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।