পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ: বিশ্বব্যাংক
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ২৩:৪৮
অনেক ক্ষেত্র সাফল্য আসলেও পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রতিবছর ২ মিলিয়ন লোক চাকরির বাজারে প্রবেশ করছে। এ জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এই চ্যালেঞ্জের কথা জানান বিশ্বব্যাংকে ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমদ এবং বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডাইরেক্টর চিমিয়াও ফান।
চিমিয়াও ফান বলেন, বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। বিশেষ করে গত দুই দশকে প্রবৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র্য নিরসন, মানব সম্পদ উন্নয়ন হয়েছে ব্যাপক। তবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, কর্ম সংস্থান সৃষ্টি বড় চ্যালেঞ্জ। আর এই কর্ম সংস্থানের ক্ষেত্রে তিনিটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাব, মানসম্মত কর্মসংস্থানের অভাব এবং কর্মসংস্থানে নারীদের পিছিয়ে থাকা।
চুক্তি অনুসারে বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা পাচ্ছে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে সরকারের সঙ্গে সংস্থাটির ২৫ কোটি ডলার বা ২ হাজার ১০০ কোটি টাকার ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তবে আগামী ৩ বছর ধাপে ধাপে ৭৫ কোটি ডলার প্রদান করবে।
চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য দেওয়া অর্থ ‘জব ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট’ নামের কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যয় করা হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা অবকাঠামো, শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে উন্নতি করেছি। তবে কর্মসংস্থানে কিছুটা পিছিয়ে আছি। সরকার অবকাঠামো সুবিধাসহ বেসরকারি খাতকে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিচ্ছে। তারা ব্যাপক বিনিয়োগ করবে। ফলে বিভিন্ন খাতভিত্তিক বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠিত হলে কর্মসংস্থান বাড়বে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, আমাদের রাজস্ব, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে সংস্কার করা হবে। আমাদের ৬০ শতাংশ কর্মক্ষম জনশক্তি রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশ জনসংখ্যার বোনাসকাল ভোগ করতে পারবে। দেশের অর্থনীতি সঠিক পথেই আছে। আগে ওঠানামা থাকলেও এখন ধারাবাহিক উন্নতি হচ্ছে। নির্বাচনী ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে তরুণদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা আমরা বাস্তবায়ন করব।
মনোয়ার আহমেদ বলেন, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এ ঋণটি প্রক্রিয়াকরণ করে চুক্তি করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে এটিই প্রমাণিত হয় যে আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের দেওয়া এ বাজেট সহায়তা ৫ বছরের রেয়াতকাল (গ্রেস পিরিয়ড)সহ ৩০ বছরে পরিশোধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উত্তোলিত অর্থের ওপর শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ এবং ১ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে সুদসহ মোট ২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে।
এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন অর্থ বিভাগের সচিব আবদুর রউফ তালুকদার ও ইআরডির অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা বেগম। প্রকল্প সম্পর্কে উপস্থাপন করেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আজিজুল আলম।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ২৩:৪৮

অনেক ক্ষেত্র সাফল্য আসলেও পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রতিবছর ২ মিলিয়ন লোক চাকরির বাজারে প্রবেশ করছে। এ জন্য পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এই চ্যালেঞ্জের কথা জানান বিশ্বব্যাংকে ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমদ এবং বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডাইরেক্টর চিমিয়াও ফান।
চিমিয়াও ফান বলেন, বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। বিশেষ করে গত দুই দশকে প্রবৃদ্ধি অর্জন, দারিদ্র্য নিরসন, মানব সম্পদ উন্নয়ন হয়েছে ব্যাপক। তবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, কর্ম সংস্থান সৃষ্টি বড় চ্যালেঞ্জ। আর এই কর্ম সংস্থানের ক্ষেত্রে তিনিটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের অভাব, মানসম্মত কর্মসংস্থানের অভাব এবং কর্মসংস্থানে নারীদের পিছিয়ে থাকা।
চুক্তি অনুসারে বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা পাচ্ছে বাংলাদেশ। এর অংশ হিসেবে সরকারের সঙ্গে সংস্থাটির ২৫ কোটি ডলার বা ২ হাজার ১০০ কোটি টাকার ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তবে আগামী ৩ বছর ধাপে ধাপে ৭৫ কোটি ডলার প্রদান করবে।
চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য দেওয়া অর্থ ‘জব ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট’ নামের কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যয় করা হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা অবকাঠামো, শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে উন্নতি করেছি। তবে কর্মসংস্থানে কিছুটা পিছিয়ে আছি। সরকার অবকাঠামো সুবিধাসহ বেসরকারি খাতকে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিচ্ছে। তারা ব্যাপক বিনিয়োগ করবে। ফলে বিভিন্ন খাতভিত্তিক বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠিত হলে কর্মসংস্থান বাড়বে বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, আমাদের রাজস্ব, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে সংস্কার করা হবে। আমাদের ৬০ শতাংশ কর্মক্ষম জনশক্তি রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশ জনসংখ্যার বোনাসকাল ভোগ করতে পারবে। দেশের অর্থনীতি সঠিক পথেই আছে। আগে ওঠানামা থাকলেও এখন ধারাবাহিক উন্নতি হচ্ছে। নির্বাচনী ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রী যেভাবে তরুণদের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা আমরা বাস্তবায়ন করব।
মনোয়ার আহমেদ বলেন, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এ ঋণটি প্রক্রিয়াকরণ করে চুক্তি করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে এটিই প্রমাণিত হয় যে আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের দেওয়া এ বাজেট সহায়তা ৫ বছরের রেয়াতকাল (গ্রেস পিরিয়ড)সহ ৩০ বছরে পরিশোধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উত্তোলিত অর্থের ওপর শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ এবং ১ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে সুদসহ মোট ২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে।
এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন অর্থ বিভাগের সচিব আবদুর রউফ তালুকদার ও ইআরডির অতিরিক্ত সচিব মাহমুদা বেগম। প্রকল্প সম্পর্কে উপস্থাপন করেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আজিজুল আলম।