এরশাদকে স্পিকারের ‘স্বীকৃতি’
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১০ জানুয়ারি, ২০১৯ ২২:২২
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের অনুমোদন দিয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার সংসদ সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে, কার্যপ্রণালি বিধি ও এ সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী স্পিকার এ অনুমোদন দিয়েছেন।
সংসদ সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় সংসদে ‘সরকারি দলের বিরোধীতাকারী’ সর্বোচ্চ সংখ্যক সদস্য নিয়ে গঠিত সংসদীয় দলের নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী বিরোধী দলের নেতা এবং গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে রিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ‘স্বীকৃতি’ প্রদান করেছেন।
একইসঙ্গে প্রজ্ঞাপনে জিএম কাদেরকে সংসদীয় বিরোধী দলের উপনেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বুধবার এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে জানান এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী।
এর আগে সংসদীয় বিরোধী দলের নেতা প্রশ্নে জাপায় অস্থিরতা দেখা দেয়।
অনেকে ভেবেছিলেন দশম সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবারও বিরোধীদলীয় নেতা হতে পারেন। শপথ নেওয়ার পর পার্লামেন্টারি পার্টির অনির্ধারিত বৈঠকে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে এরশাদ নিজেকে বিরোধীদলীয় নেতা ও ছোট ভাই জিএম কাদেরকে বিরোধী দলের উপনেতা ঘোষণা দেন।
গত ৫ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদে মহাজোটের অংশীদার জাতীয় পার্টিকে (জাপা) বিরোধী দল ঘোষণা দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংসদের স্পিকারকে চিঠি দেন দলটির চেয়ারম্যান এরশাদ। ওই চিঠিতে তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদে আপনি স্পিকারের দায়িত্ব গ্রহণ করায় প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনি অবগত আছেন যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার জাতীয় পার্টি ২২টি আসনে বিজয় লাভ করে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল তথা প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা লাভ করেছে। নির্বাচনের এই ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দলের গঠনতান্ত্রিকভাবে পদাধিকার বলে আমি জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি পার্টির সভাপতি। এই প্রেক্ষাপটে আমি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ (রংপুর-৩) প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা এবং পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (লালমনিহাট-৩) বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’
গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়া না-যাওয়া নিয়ে এরশাদ ও তার স্ত্রী রওশন এরশাদকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টিতে দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছিল। রওশন ছিলেন নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। শেষ পর্যন্ত জাপা নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিরোধী দল হওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রিসভারও অংশ হয়।
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর টানা তৃতীয়বারের মত সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। সেদিন ভোট হওয়া ২৯৮ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৫৭টি আসন পায়। আর তাদের জোটসঙ্গীদের মধ্যে জাতীয় পার্টি ২২টি ও শরিক অন্য দলগুলো আটটি আসন পায়।
অন্যদিকে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সব মিলিয়ে সাতটি আসন পাওয়ায় তাদের সংসদে প্রধান বিরোধী দল হওয়ার সম্ভাবনাও শেষ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ ও শরিক দলের নির্বাচিতরা গত ৩ জানুয়ারি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলেও ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করা বিএনপি ও তাদের শরিকরা শপথ না নেওয়ার কথা বলে আসছে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১০ জানুয়ারি, ২০১৯ ২২:২২

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের অনুমোদন দিয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার সংসদ সচিবালয় থেকে জানানো হয়েছে, কার্যপ্রণালি বিধি ও এ সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী স্পিকার এ অনুমোদন দিয়েছেন।
সংসদ সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় সংসদে ‘সরকারি দলের বিরোধীতাকারী’ সর্বোচ্চ সংখ্যক সদস্য নিয়ে গঠিত সংসদীয় দলের নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকে সংসদের কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী বিরোধী দলের নেতা এবং গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে রিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ‘স্বীকৃতি’ প্রদান করেছেন।
একইসঙ্গে প্রজ্ঞাপনে জিএম কাদেরকে সংসদীয় বিরোধী দলের উপনেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বুধবার এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে বলে জানান এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী।
এর আগে সংসদীয় বিরোধী দলের নেতা প্রশ্নে জাপায় অস্থিরতা দেখা দেয়।
অনেকে ভেবেছিলেন দশম সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবারও বিরোধীদলীয় নেতা হতে পারেন। শপথ নেওয়ার পর পার্লামেন্টারি পার্টির অনির্ধারিত বৈঠকে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে এরশাদ নিজেকে বিরোধীদলীয় নেতা ও ছোট ভাই জিএম কাদেরকে বিরোধী দলের উপনেতা ঘোষণা দেন।
গত ৫ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদে মহাজোটের অংশীদার জাতীয় পার্টিকে (জাপা) বিরোধী দল ঘোষণা দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংসদের স্পিকারকে চিঠি দেন দলটির চেয়ারম্যান এরশাদ। ওই চিঠিতে তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদে আপনি স্পিকারের দায়িত্ব গ্রহণ করায় প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনি অবগত আছেন যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার জাতীয় পার্টি ২২টি আসনে বিজয় লাভ করে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল তথা প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা লাভ করেছে। নির্বাচনের এই ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দলের গঠনতান্ত্রিকভাবে পদাধিকার বলে আমি জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি পার্টির সভাপতি। এই প্রেক্ষাপটে আমি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ (রংপুর-৩) প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা এবং পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (লালমনিহাট-৩) বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’
গত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়া না-যাওয়া নিয়ে এরশাদ ও তার স্ত্রী রওশন এরশাদকে কেন্দ্র করে জাতীয় পার্টিতে দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছিল। রওশন ছিলেন নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। শেষ পর্যন্ত জাপা নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিরোধী দল হওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রিসভারও অংশ হয়।
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের পর টানা তৃতীয়বারের মত সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। সেদিন ভোট হওয়া ২৯৮ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ এককভাবে ২৫৭টি আসন পায়। আর তাদের জোটসঙ্গীদের মধ্যে জাতীয় পার্টি ২২টি ও শরিক অন্য দলগুলো আটটি আসন পায়।
অন্যদিকে বিএনপিকে নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সব মিলিয়ে সাতটি আসন পাওয়ায় তাদের সংসদে প্রধান বিরোধী দল হওয়ার সম্ভাবনাও শেষ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ ও শরিক দলের নির্বাচিতরা গত ৩ জানুয়ারি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিলেও ভোটের ফল প্রত্যাখ্যান করা বিএনপি ও তাদের শরিকরা শপথ না নেওয়ার কথা বলে আসছে।