সপ্তম দিনে শ্রমিক বিক্ষোভ, অর্ধশতাধিক কারখানায় ছুটি
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি | ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ১২:৩৯
মজুরি বৈষম্যের অভিযোগ তুলে তা দ্রুত সংশোধনের দাবিতে টানা সপ্তম দিনের মতো বিক্ষোভ করেছে শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ার তৈরি পোশাক শ্রমিকরা।
রোববার সকালে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানার তৈরি পোশাক শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করলেও কাজ না করে কার্ড পাঞ্চ করে বের হয়ে যান।
পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।
এ সময় পুলিশ সদস্যরা শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে উভয়পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও জলকামান ব্যবহার করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মহাসড়কের বিভিন্ন সংযোগ সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।
এসময় পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ২০ শ্রমিক আহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প এলাকা কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হলে শ্রমিকরা ধীরে ধীরে বাসায় ফিরে যান।
আশুলিয়ার বেরন এলাকার শারমিন গ্রুপের এম ডিজাইন কারখানার এইচআর অ্যাডমিন ম্যানেজার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কারখানায় কোনো শ্রমিক বিক্ষোভ নাই। সকালে কারখানার শ্রমিকরা শান্তভাবে ভেতরে প্রবেশ করে কাজে যোগ দেয়।
তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ পর বহিরাগত একটি গ্রুপ এসে আমাদের কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালায়। এ সময় আমরা বাধ্য হয়ে কারখানাটি ছুটি দিলে শ্রমিকরা বের হয়ে চলে যায়।’
তৈরি পোশাক কারখানার এই কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের কারখানার শ্রমিকরা স্বাভাবিকভাবে কাজ করে আসছে। কিন্তু ভুঁইফোড় কিছু শ্রমিক সংগঠনের নামে একটি গ্রুপ দেশের পোশাকশিল্প খাতকে অস্থিতিশীল করতে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করছে।’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক কারখানা মালিকদের এমন অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘আমরা কারো প্ররোচনায় নয়, নিজেদের স্বার্থে যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছি।’
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ রেজাউল হক দিপু বলেন, শ্রমিকরা সকালে কারখানা থেকে একযোগে বের হয়ে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক, জিরাবো বিশমাইল সড়কসহ বিভিন্ন শাখা সড়কে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে শ্রমিকরা ভাঙচুরের চেষ্টা করলে আমরা তাদেরকে প্রতিহত করি।
তিনি জানান, শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনায় অর্ধশতাধিক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি বিজিবির টহল অব্যাহত রয়েছে।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি | ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ১২:৩৯

মজুরি বৈষম্যের অভিযোগ তুলে তা দ্রুত সংশোধনের দাবিতে টানা সপ্তম দিনের মতো বিক্ষোভ করেছে শিল্পাঞ্চল সাভার-আশুলিয়ার তৈরি পোশাক শ্রমিকরা।
রোববার সকালে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার বিভিন্ন কারখানার তৈরি পোশাক শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করলেও কাজ না করে কার্ড পাঞ্চ করে বের হয়ে যান।
পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।
এ সময় পুলিশ সদস্যরা শ্রমিকদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে উভয়পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও জলকামান ব্যবহার করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মহাসড়কের বিভিন্ন সংযোগ সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে।
এসময় পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ২০ শ্রমিক আহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প এলাকা কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হলে শ্রমিকরা ধীরে ধীরে বাসায় ফিরে যান।

আশুলিয়ার বেরন এলাকার শারমিন গ্রুপের এম ডিজাইন কারখানার এইচআর অ্যাডমিন ম্যানেজার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কারখানায় কোনো শ্রমিক বিক্ষোভ নাই। সকালে কারখানার শ্রমিকরা শান্তভাবে ভেতরে প্রবেশ করে কাজে যোগ দেয়।
তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ পর বহিরাগত একটি গ্রুপ এসে আমাদের কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাঙচুর চালায়। এ সময় আমরা বাধ্য হয়ে কারখানাটি ছুটি দিলে শ্রমিকরা বের হয়ে চলে যায়।’
তৈরি পোশাক কারখানার এই কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের কারখানার শ্রমিকরা স্বাভাবিকভাবে কাজ করে আসছে। কিন্তু ভুঁইফোড় কিছু শ্রমিক সংগঠনের নামে একটি গ্রুপ দেশের পোশাকশিল্প খাতকে অস্থিতিশীল করতে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি করছে।’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক কারখানা মালিকদের এমন অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘আমরা কারো প্ররোচনায় নয়, নিজেদের স্বার্থে যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছি।’
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ রেজাউল হক দিপু বলেন, শ্রমিকরা সকালে কারখানা থেকে একযোগে বের হয়ে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক, জিরাবো বিশমাইল সড়কসহ বিভিন্ন শাখা সড়কে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে শ্রমিকরা ভাঙচুরের চেষ্টা করলে আমরা তাদেরকে প্রতিহত করি।
তিনি জানান, শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনায় অর্ধশতাধিক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শিল্প এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি বিজিবির টহল অব্যাহত রয়েছে।