সোনার বাংলা গড়তে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
অনলাইন ডেস্ক | ৩০ জানুয়ারি, ২০১৯ ২০:৪৪
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সমুন্নত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জ্বল রাখতে দেশ থেকে সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূলের মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ-প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে বাঙালি জাতিকে আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’
বুধবার জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব এ দেশ ও জাতির অগ্রযাত্রাকে বেগবান করা। একাত্তরের শহীদদের কাছে আমাদের অপরিশোধ্য ঋণ রয়েছে। আসুন, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে এবং দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার মধ্য দিয়ে আমরা লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।’
রাষ্ট্রপতি জনগণের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, কর্মচঞ্চল, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সকলের কাম্য। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার সফল বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি ১৮৭ পৃষ্ঠার বক্তব্যে বিভিন্ন খাতে সরকারের সাফল্য ও উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরে বলেন, ‘২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর তারিখে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের বিপুল সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য-আয়ের বাংলাদেশ গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু হয়। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে জননন্দিত নির্বাচনী ইশতেহার ‘দিনবদলের সনদ’ রূপকল্প-২০২১-এর বাস্তবায়নে শুরু হয় উন্নয়নের মহাসড়কে অভিযাত্রা। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৪ উপলক্ষে বিরোধী শক্তি নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নানা অপতৎপরতা শুরু করে। বিভিন্ন প্রতিকূলতা প্রতিহত করে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। শুরু হয় ‘উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে বিশ্বের বিস্ময় বাংলাদেশ’-এর সুদীপ্ত অগ্রযাত্রা।’
চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্যবৃন্দ ও দেশবাসীকে তিনি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
আবদুল হামিদ বলেন, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিচার বিভাগের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বচ্ছ পদ্ধতিতে উচ্চ আদালত ও অধস্তন আদালতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারক নিয়োগ, যৌক্তিক বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ এবং দেশে-বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থায় গতি সঞ্চারিত হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জাতীয় জীবনে নতুন প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছে। আশা করি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত উদ্যোগ আরও সুসংহত ও গতিশীল হবে। ২০২০ সালে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে মধ্য-আয়ের দেশ হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে। খবর বাসস
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
অনলাইন ডেস্ক | ৩০ জানুয়ারি, ২০১৯ ২০:৪৪

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সমুন্নত ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জ্বল রাখতে দেশ থেকে সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূলের মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ-প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে বাঙালি জাতিকে আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।’ বুধবার জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব এ দেশ ও জাতির অগ্রযাত্রাকে বেগবান করা। একাত্তরের শহীদদের কাছে আমাদের অপরিশোধ্য ঋণ রয়েছে। আসুন, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে এবং দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে জাতির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার মধ্য দিয়ে আমরা লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি।’ রাষ্ট্রপতি জনগণের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, কর্মচঞ্চল, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সকলের কাম্য। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার সফল বাস্তবায়নে সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ১৮৭ পৃষ্ঠার বক্তব্যে বিভিন্ন খাতে সরকারের সাফল্য ও উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরে বলেন, ‘২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর তারিখে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের বিপুল সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য-আয়ের বাংলাদেশ গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু হয়। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে জননন্দিত নির্বাচনী ইশতেহার ‘দিনবদলের সনদ’ রূপকল্প-২০২১-এর বাস্তবায়নে শুরু হয় উন্নয়নের মহাসড়কে অভিযাত্রা। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৪ উপলক্ষে বিরোধী শক্তি নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নানা অপতৎপরতা শুরু করে। বিভিন্ন প্রতিকূলতা প্রতিহত করে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। শুরু হয় ‘উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে বিশ্বের বিস্ময় বাংলাদেশ’-এর সুদীপ্ত অগ্রযাত্রা।’ চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্যবৃন্দ ও দেশবাসীকে তিনি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। আবদুল হামিদ বলেন, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিচার বিভাগের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বচ্ছ পদ্ধতিতে উচ্চ আদালত ও অধস্তন আদালতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারক নিয়োগ, যৌক্তিক বেতন কাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ এবং দেশে-বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থায় গতি সঞ্চারিত হয়েছে। তিনি বলেন, নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর জাতীয় জীবনে নতুন প্রাণ সঞ্চারিত হয়েছে। আশা করি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত উদ্যোগ আরও সুসংহত ও গতিশীল হবে। ২০২০ সালে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে মধ্য-আয়ের দেশ হিসেবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে। খবর বাসস