লাশ রাখতে হিমশিম খাচ্ছে ঢাকা মেডিকেল
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১২:১৯
পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের লাশ রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডাক্তার সোহেল মাহমুদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, “মর্গের পাঁচটি ফ্রিজের ৩টি গত পাঁচ ছয় মাস ধরে নষ্ট রয়েছে। যে দুটি ভালো আছে তার একটি আবার জঙ্গিদের লাশ রাখার জন্য। বাকিটিতে চারটি লাশ রাখা যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “যে সকল লাশ শনাক্ত করতে ডিএনএ টেস্টের প্রয়োজন হবে সেগুলো সংরক্ষণে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতালের সহায়তা লাগতে পারে।”
“আমরা ফ্রিজ ঠিক করার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার বললেও কোন লাভ হয়নি”- বললেন সোহেল মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে চকবাজার থানার ওসি (তদন্ত) মুরাদুল ইসলাম বলছেন, ৬৭টি লাশের হিসাব আছে আমাদের কাছে। এর মধ্যে ২১টি চিহ্নিত করা গেছে।
এদিকে নিহত-আহতদের পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজদের খবর নিতে হাসপাতালে ভিড় করেছেন স্বজনরা।
পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকায় বুধবার রাত ১০টার দিকে এ আগুন লাগে। বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের পাশাপাশি কাজ করে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার।
এ ঘটনা আহত হয়েছেন আরও অর্ধশত। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুড়িহাট্টা মসজিদ গলির রাজ্জাক ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা যায়। আগুন লাগার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও সরু গলি হওয়ায় ভবনের কাছে যেতে সক্ষম হয়নি। ফলে রাত সাড়ে ১২টার পর পাশের আরও প্রায় চারটি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, চকবাজার থানার সামনে গাড়ি রেখে সেখান থেকেই পাইপের মাধ্যমে পানি নেওয়া হয়। এ ছাড়া আশপাশের ভবনের পানির ট্যাংক থেকেও পানি সংগ্রহ করে ফায়ার সার্ভিস। রাত ৩টায় আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
এদিকে আগুন লাগার পর চকবাজার এলাকার গ্যাসলাইন থেকেও ওই সময় আগুন বের হচ্ছিল। এ সময় ওই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, রাজ্জাক ভবনের নিচতলায় রাসায়নিক দ্রব্যের কারখানা ছিল। ভবনের পাশেই ছিল বেশ কিছু রেস্তোরাঁ। সেগুলোর প্রতিটিতে চার থেকে পাঁচটি করে গ্যাসের সিলিন্ডার রয়েছে। আগুন ছড়িয়ে যাওয়ায় এসব গ্যাস সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে এক কেমিক্যাল গুদামে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জনের প্রাণহানি হয়।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১২:১৯

পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের লাশ রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডাক্তার সোহেল মাহমুদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, “মর্গের পাঁচটি ফ্রিজের ৩টি গত পাঁচ ছয় মাস ধরে নষ্ট রয়েছে। যে দুটি ভালো আছে তার একটি আবার জঙ্গিদের লাশ রাখার জন্য। বাকিটিতে চারটি লাশ রাখা যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “যে সকল লাশ শনাক্ত করতে ডিএনএ টেস্টের প্রয়োজন হবে সেগুলো সংরক্ষণে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতালের সহায়তা লাগতে পারে।”
“আমরা ফ্রিজ ঠিক করার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার বললেও কোন লাভ হয়নি”- বললেন সোহেল মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে চকবাজার থানার ওসি (তদন্ত) মুরাদুল ইসলাম বলছেন, ৬৭টি লাশের হিসাব আছে আমাদের কাছে। এর মধ্যে ২১টি চিহ্নিত করা গেছে।
এদিকে নিহত-আহতদের পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজদের খবর নিতে হাসপাতালে ভিড় করেছেন স্বজনরা।
পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকায় বুধবার রাত ১০টার দিকে এ আগুন লাগে। বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিটের পাশাপাশি কাজ করে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার।
এ ঘটনা আহত হয়েছেন আরও অর্ধশত। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুড়িহাট্টা মসজিদ গলির রাজ্জাক ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা যায়। আগুন লাগার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও সরু গলি হওয়ায় ভবনের কাছে যেতে সক্ষম হয়নি। ফলে রাত সাড়ে ১২টার পর পাশের আরও প্রায় চারটি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, চকবাজার থানার সামনে গাড়ি রেখে সেখান থেকেই পাইপের মাধ্যমে পানি নেওয়া হয়। এ ছাড়া আশপাশের ভবনের পানির ট্যাংক থেকেও পানি সংগ্রহ করে ফায়ার সার্ভিস। রাত ৩টায় আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
এদিকে আগুন লাগার পর চকবাজার এলাকার গ্যাসলাইন থেকেও ওই সময় আগুন বের হচ্ছিল। এ সময় ওই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, রাজ্জাক ভবনের নিচতলায় রাসায়নিক দ্রব্যের কারখানা ছিল। ভবনের পাশেই ছিল বেশ কিছু রেস্তোরাঁ। সেগুলোর প্রতিটিতে চার থেকে পাঁচটি করে গ্যাসের সিলিন্ডার রয়েছে। আগুন ছড়িয়ে যাওয়ায় এসব গ্যাস সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে এক কেমিক্যাল গুদামে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জনের প্রাণহানি হয়।