৫ দিনের মধ্যে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে : বিমান প্রতিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ২০:৪৪
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টার আসল ঘটনা পাঁচ দিনের মধ্যে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
সোমবার দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা রয়েছে। সেই নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে ওই অস্ত্রধারী কীভাবে প্রবেশ করল- তা নিয়ে আমরা রীতিমতো হতবাক। এই জন্য একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের শাহ আমানতে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনায় কম্বিং অপারেশন থেকে শুরু করে যা কিছু ঘটেছে সব প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে হয়েছে’।
তিনি বলেন, ঘটনাটি আমার কানে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাই। তিনি তাৎক্ষণিক বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সফলভাবে অভিযান চালানোর নির্দেশনা দেন। তার নির্দেশনা মতে জাতি বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে।
মন্ত্রী এ ঘটনা নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এই দেশ ও এই বিমানবন্দর আপনাদেরই। অতএব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নেতিবাচক সংবাদ পৌঁছে ক্ষতি হয়, এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করবেন না’।
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক বলেন, আমরা সাংবাদিকদের নিরাপত্তার সব বেষ্টনী এবং ধাপগুলো ঘুরে ঘুরে দেখিয়েছি। এখানে যে কোনো বস্তু স্ক্যানারে ধরা পড়ার কথা। তার সঙ্গে কিছু ছিল না- আপাতত আমরা এটা বলতে পারি। এই ধরনের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পিস্তল নিয়ে বিমানে ওঠা সম্ভব নয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি কোনো খেলনা পিস্তল ছিল কি না- এই মুহূর্তে এটিও বলা ঠিক হবে না। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মোসাদ্দিক আহমেদ, বেবিচক সদস্য (অপারেশন) এয়ার কমোডর মোস্তাফিজুর রহমান, বিমানের গ্রাহকসেবা বিভাগের পরিচালক মোমিনুল ইসলাম, ফ্লাইট অপারেশনের পরিচালক ফারহাত হাসান জামিল প্রমুখ।
কমিটি গঠন: রবিবারের বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনা তদন্ত করার জন্য পাঁচ সদস্যের তদন্ত দল গঠন করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। কমিটিকে বিমানের বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটে সংগঠিত ঘটনার কারণ উদঘাটন করতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় কী তা সুপারিশ করতে বলা হয়েছে কার্যপরিধিতে। আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনকে আহ্বায়ক করে গঠিত তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পরিচালক উইং কমান্ডার চৌধুরী মো. জিয়াউল কবীর, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক এয়ার কমোডর (অব.) মাহবুব জাহান খান ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সিনিয়র সিকিউরিটি কনসালট্যান্ট গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) মো. আলমগীর।
ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’ উড়োজাহাজ রোববার ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল। প্রায় দুই ঘণ্টার টানটান উত্তেজনার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটি ছিনতাই চেষ্টার অবসান হয়।
কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজে থাকা অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হন। টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল।
এর আগে উড়োজাহাজটি থেকে যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় বিমানবন্দর এলাকায় ভিড় করে অসংখ্য মানুষ। এ ঘটনায় সাতটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল করা হয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর রাত ১০টার দিকে বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ২০:৪৪

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ ছিনতাই চেষ্টার আসল ঘটনা পাঁচ দিনের মধ্যে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
সোমবার দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা রয়েছে। সেই নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে ওই অস্ত্রধারী কীভাবে প্রবেশ করল- তা নিয়ে আমরা রীতিমতো হতবাক। এই জন্য একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের শাহ আমানতে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টার ঘটনায় কম্বিং অপারেশন থেকে শুরু করে যা কিছু ঘটেছে সব প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে হয়েছে’।
তিনি বলেন, ঘটনাটি আমার কানে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাই। তিনি তাৎক্ষণিক বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সফলভাবে অভিযান চালানোর নির্দেশনা দেন। তার নির্দেশনা মতে জাতি বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছে।
মন্ত্রী এ ঘটনা নিয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এই দেশ ও এই বিমানবন্দর আপনাদেরই। অতএব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নেতিবাচক সংবাদ পৌঁছে ক্ষতি হয়, এমন কোনো সংবাদ প্রকাশ করবেন না’।
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক বলেন, আমরা সাংবাদিকদের নিরাপত্তার সব বেষ্টনী এবং ধাপগুলো ঘুরে ঘুরে দেখিয়েছি। এখানে যে কোনো বস্তু স্ক্যানারে ধরা পড়ার কথা। তার সঙ্গে কিছু ছিল না- আপাতত আমরা এটা বলতে পারি। এই ধরনের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পিস্তল নিয়ে বিমানে ওঠা সম্ভব নয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি কোনো খেলনা পিস্তল ছিল কি না- এই মুহূর্তে এটিও বলা ঠিক হবে না। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মোসাদ্দিক আহমেদ, বেবিচক সদস্য (অপারেশন) এয়ার কমোডর মোস্তাফিজুর রহমান, বিমানের গ্রাহকসেবা বিভাগের পরিচালক মোমিনুল ইসলাম, ফ্লাইট অপারেশনের পরিচালক ফারহাত হাসান জামিল প্রমুখ।
কমিটি গঠন: রবিবারের বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনা তদন্ত করার জন্য পাঁচ সদস্যের তদন্ত দল গঠন করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। কমিটিকে বিমানের বিজি-১৪৭ নম্বর ফ্লাইটে সংগঠিত ঘটনার কারণ উদঘাটন করতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় কী তা সুপারিশ করতে বলা হয়েছে কার্যপরিধিতে। আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনকে আহ্বায়ক করে গঠিত তদন্ত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হচ্ছেন একই মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পরিচালক উইং কমান্ডার চৌধুরী মো. জিয়াউল কবীর, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক এয়ার কমোডর (অব.) মাহবুব জাহান খান ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সিনিয়র সিকিউরিটি কনসালট্যান্ট গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) মো. আলমগীর।
ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’ উড়োজাহাজ রোববার ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিল। প্রায় দুই ঘণ্টার টানটান উত্তেজনার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটি ছিনতাই চেষ্টার অবসান হয়।
কমান্ডো অভিযানে উড়োজাহাজে থাকা অস্ত্রধারী তরুণ নিহত হন। টিকিটে তার নাম মো. মাজিদুল বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছিল।
এর আগে উড়োজাহাজটি থেকে যাত্রী-ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ সময় বিমানবন্দর এলাকায় ভিড় করে অসংখ্য মানুষ। এ ঘটনায় সাতটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাতিল করা হয়। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর রাত ১০টার দিকে বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়।