মুক্তিযোদ্ধা ও পণ্ডিত ব্যক্তির নামে অবকাঠামোর নামকরণের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১৮:০৮
এখন থেকে দেশে যেসব সেতু বা অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে সেগুলো স্থানীয় কোনো মুক্তিযোদ্ধা বা পণ্ডিত ব্যক্তির নামে, অথবা নদীর নামে তাদের নামকরণ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১৩টি উন্নয়ন প্রকল্প। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হবে ১২ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৯ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ১৫৪ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা খরচ করা হবে।
দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্প বাতিলের বিষয়ে এমএ মান্নান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি ছিল ফ্ল্যাট না দিয়ে নিজস্ব ভিটায় একই টাকা খরচ করে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার। সে জন্য এখন নতুন করে ঘর নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হবে। যাদের ভিটা নেই তাদের পার্শ্ববর্তী খাস জমিতে ঘর করে দেওয়া হবে।
এ ছাড়া চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণে একাধিক প্রকল্প ওভারলেপিং না করতে উচ্চক্ষমতার একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রী।
সভায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের বিজ্ঞানীদের ৫০ ভাগ ভাতা বাড়ানো হবে বলে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে বলে তাদের এই ভাতা দেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।
‘মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এই জন্য একটা প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৮৪৬ কোটি টাকা।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুতের এই চাহিদা পূরণ, লোড শেডিং কমানো এবং ২০২১ সালের মধ্যে দেশের সকল মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে তিন দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ১২০ কিলোমিটার ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট উচ্চ ভোল্টেজের সঞ্চালন লাইন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এ জন্য ‘বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণ ১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটি চলতি সময় থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)। লাইনটি নির্মিত হলে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া হয়ে সহজে ভারত, নেপাল ও ভুটান দিয়ে বিদ্যুৎ আমদানি করা যাবে।
বিদ্যুতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, যে এলাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, তারা যেন একটু অগ্রাধিকার পায়। যে এলাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করলাম, তার আশপাশ এলাকা অন্ধকার থাকবে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে, বরিশাল পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর ওপর পায়রা সেতু (লেবুখালী সেতু) নির্মাণ, এতে ব্যয় ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের ২ লেন অংশে (মহিপাল হতে চৌমুহনী পূর্ব বাজার পর্যন্ত)-৪ লেনে উন্নীতকরণ, এতে ব্যয় হবে ৭৪৭ কোটি টাকা। মোংলা বন্দরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্রপাতি/সরঞ্জাম সংগ্রহ,এতে ব্যয় হবে ৪৩৫ কোটি টাকা। ঢাকা শহরে ডাক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, এতে ব্যয় ৩৭৬ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা/জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন, এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৬২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। কুড়িগ্রামের চিলমারী ও উলিপুর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীরে ভাঙনরোধ, এতে ব্যয় ৩০২ কোটি টাকা। সোনাগাজী ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল সংযোগ সড়কে ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ, এতে ব্যয় ৬৬২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ, খরচ ২৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধি, খরচ ১ হাজার ৫৩৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং গোপালগঞ্জ এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের তৃতীয় শাখা কারখানা স্থাপন প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৭৯৯ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, দেশের সব মহাসড়ককে ধীরে ধীরে ৪ লেনে উন্নীত করবে সরকার। তবে বর্তমানে সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতার কারণে সড়ক নষ্ট হয়েছে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ভবিষ্যতে সব ধরনের ৪ লেন সড়ক প্রকল্পে ড্রেন ও জলাধার করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাস্তার পাশে ড্রেন ও জলাধার যেন থাকে সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেছেন এবং খালগুলো যাতে ধ্বংস না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া, সড়ক থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে টয়লেট, প্রসাধন, চা পান ও বিশ্রাম নেওয়ার পর্যাপ্ত জায়গা রাখার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী আরও কয়েকটি প্রকল্পের নির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে মোংলা বন্দরকে সার্বক্ষণিক ড্রেজিংয়ের আওতায় রাখা, সুন্দরবনের জলাশয় রক্ষাসহ পরিবেশ রক্ষা করা, দেশের সব সড়কের নকশা প্রণয়নসহ বেশ কিছু অনুশাসন তুলে ধরেন।
এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) বা এই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করার সময় জনবসতিপূর্ণ এলাকায় জমি অধিগ্রহণ না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মোংলা সমুদ্র বন্দর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, মোংলা বন্দরকে সার্বক্ষণিক ড্রেজিংয়ের আওতায় রাখতে হবে। যেসব নদীতে প্রাণীরা বসবাস করে, তারা যাতে নিরাপদে থাকতে পারে, নিরাপদে খেতে পারে, বাঘ থাকতে পারে, প্রজনন করতে পারে – সেই পরিবেশটাকে সুরক্ষা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘হালদায় মাছের পোনা যেখানে ছাড়ে, সুন্দরবনের কিছু খাল আছে যেখানে বাঘেরা পানি খায়, তারা যেন নিরাপদে পানি খেতে পারে, এসব খাল-নদীতে হাত দেওয়া যাবে না।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ‘ভয়ংকর খিটখিটে একটা ব্যাপার আছে আমাদের প্রশাসনে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় বলেন, পদ বিন্যাস, পদ সৃষ্টি, নিয়োগ বিধি ইত্যাদি খিটখিটে অনেক বিষয় আছে। এগুলোকে সুসংহত করতে হবে। একেবারে শেষ করতে না পারি, কিন্তু এটাকে কমিয়ে আনতে হবে’।
এমএ মান্নান আরও বলেন, আমাদের ওষুধ উন্নত দেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের ওষুধের সুনাম বিশ্ব জুড়ে। তাই ওষুধের মান সুরক্ষার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ১৮:০৮

এখন থেকে দেশে যেসব সেতু বা অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে সেগুলো স্থানীয় কোনো মুক্তিযোদ্ধা বা পণ্ডিত ব্যক্তির নামে, অথবা নদীর নামে তাদের নামকরণ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশনা দেন। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১৩টি উন্নয়ন প্রকল্প। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হবে ১২ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৯ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ১৫৪ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ২ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা খরচ করা হবে।
দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্প বাতিলের বিষয়ে এমএ মান্নান বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি ছিল ফ্ল্যাট না দিয়ে নিজস্ব ভিটায় একই টাকা খরচ করে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার। সে জন্য এখন নতুন করে ঘর নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হবে। যাদের ভিটা নেই তাদের পার্শ্ববর্তী খাস জমিতে ঘর করে দেওয়া হবে।
এ ছাড়া চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণে একাধিক প্রকল্প ওভারলেপিং না করতে উচ্চক্ষমতার একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রী।
সভায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের বিজ্ঞানীদের ৫০ ভাগ ভাতা বাড়ানো হবে বলে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে বলে তাদের এই ভাতা দেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।
‘মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। এই জন্য একটা প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৮৪৬ কোটি টাকা।
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বিদ্যুতের চাহিদা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিদ্যুতের এই চাহিদা পূরণ, লোড শেডিং কমানো এবং ২০২১ সালের মধ্যে দেশের সকল মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে তিন দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ১২০ কিলোমিটার ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট উচ্চ ভোল্টেজের সঞ্চালন লাইন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এ জন্য ‘বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ৩ হাজার ৩২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণ ১ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা। প্রকল্পটি চলতি সময় থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)। লাইনটি নির্মিত হলে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া হয়ে সহজে ভারত, নেপাল ও ভুটান দিয়ে বিদ্যুৎ আমদানি করা যাবে।
বিদ্যুতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, যে এলাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, তারা যেন একটু অগ্রাধিকার পায়। যে এলাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করলাম, তার আশপাশ এলাকা অন্ধকার থাকবে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে, বরিশাল পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর ওপর পায়রা সেতু (লেবুখালী সেতু) নির্মাণ, এতে ব্যয় ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ফেনী-নোয়াখালী জাতীয় মহাসড়কের ২ লেন অংশে (মহিপাল হতে চৌমুহনী পূর্ব বাজার পর্যন্ত)-৪ লেনে উন্নীতকরণ, এতে ব্যয় হবে ৭৪৭ কোটি টাকা। মোংলা বন্দরের জন্য অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্রপাতি/সরঞ্জাম সংগ্রহ,এতে ব্যয় হবে ৪৩৫ কোটি টাকা। ঢাকা শহরে ডাক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, এতে ব্যয় ৩৭৬ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, জলমগ্নতা/জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশন উন্নয়ন, এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৬২০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। কুড়িগ্রামের চিলমারী ও উলিপুর উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীরে ভাঙনরোধ, এতে ব্যয় ৩০২ কোটি টাকা। সোনাগাজী ও মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল সংযোগ সড়কে ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ, এতে ব্যয় ৬৬২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ধান, গম ও পাট বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ, খরচ ২৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধি, খরচ ১ হাজার ৫৩৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং গোপালগঞ্জ এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের তৃতীয় শাখা কারখানা স্থাপন প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৭৯৯ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, দেশের সব মহাসড়ককে ধীরে ধীরে ৪ লেনে উন্নীত করবে সরকার। তবে বর্তমানে সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতার কারণে সড়ক নষ্ট হয়েছে যাচ্ছে। এই অবস্থায় ভবিষ্যতে সব ধরনের ৪ লেন সড়ক প্রকল্পে ড্রেন ও জলাধার করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাস্তার পাশে ড্রেন ও জলাধার যেন থাকে সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেছেন এবং খালগুলো যাতে ধ্বংস না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া, সড়ক থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে টয়লেট, প্রসাধন, চা পান ও বিশ্রাম নেওয়ার পর্যাপ্ত জায়গা রাখার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী আরও কয়েকটি প্রকল্পের নির্দেশনা দিয়েছেন। এর মধ্যে মোংলা বন্দরকে সার্বক্ষণিক ড্রেজিংয়ের আওতায় রাখা, সুন্দরবনের জলাশয় রক্ষাসহ পরিবেশ রক্ষা করা, দেশের সব সড়কের নকশা প্রণয়নসহ বেশ কিছু অনুশাসন তুলে ধরেন।
এম এ মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) বা এই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করার সময় জনবসতিপূর্ণ এলাকায় জমি অধিগ্রহণ না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মোংলা সমুদ্র বন্দর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, মোংলা বন্দরকে সার্বক্ষণিক ড্রেজিংয়ের আওতায় রাখতে হবে। যেসব নদীতে প্রাণীরা বসবাস করে, তারা যাতে নিরাপদে থাকতে পারে, নিরাপদে খেতে পারে, বাঘ থাকতে পারে, প্রজনন করতে পারে – সেই পরিবেশটাকে সুরক্ষা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘হালদায় মাছের পোনা যেখানে ছাড়ে, সুন্দরবনের কিছু খাল আছে যেখানে বাঘেরা পানি খায়, তারা যেন নিরাপদে পানি খেতে পারে, এসব খাল-নদীতে হাত দেওয়া যাবে না।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, ‘ভয়ংকর খিটখিটে একটা ব্যাপার আছে আমাদের প্রশাসনে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় বলেন, পদ বিন্যাস, পদ সৃষ্টি, নিয়োগ বিধি ইত্যাদি খিটখিটে অনেক বিষয় আছে। এগুলোকে সুসংহত করতে হবে। একেবারে শেষ করতে না পারি, কিন্তু এটাকে কমিয়ে আনতে হবে’।
এমএ মান্নান আরও বলেন, আমাদের ওষুধ উন্নত দেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের ওষুধের সুনাম বিশ্ব জুড়ে। তাই ওষুধের মান সুরক্ষার নির্দেশও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’