আমার আজ সরকারি দলে থাকার কথা ছিল: সুলতান মনসুর
বিশেষ প্রতিনিধি | ৭ মার্চ, ২০১৯ ২৩:১৭
শপথ নেওয়ার পরপরই বৃহস্পতিবার সংসদ অধিবেশনে যোগ দেন সুলতান মনসুর আহমেদ।
অধিবেশনে যোগ দিয়েই এক অনির্ধারিত আলোচনায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, আমার আজকে সরকারি দলে থাকার কথা ছিল। ওই জোটের (সরকারি দলের জোট) পক্ষেই তো আমি রাজনীতি করতাম। আজ থেকে ১৮ বছর আগে এই সংসদে আসার সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস গত ১৮ বছর একটি রাজনৈতিক কারাগারের মধ্যে ছিলাম।
শপথ নেওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে দল থেকে বহিস্কারও করা হয়। এর আগে সকাল ১১টা স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে শপথ নেন সুলতান মনসুর। তার কয়েকঘণ্টা পর দল গণফোরাম থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হয় জাতীয় সংসদের বৈঠক।
তখনই তাকে দেখা যায় অধিবেশন কক্ষে। স্পিকারের আসনের বাম পাশে বিরোধী দলের আসনের দ্বিতীয় সারিতে সুলতান মনসুরকে স্থান দেওয়া হয়েছে। ১৯৯৬ সালে এই সংসদেই আওয়ামী লীগের সাংসদ হিসেবে সরকারি দলের আসনে ছিলেন তিনি। গণফোরামের এই নেতা এবারের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত হন।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে আলোচনায় দাঁড়িয়ে সুলতান মনসুর বলেন, এই সংসদে ৯৯ শতাংশ হচ্ছে একজোটে। আর আমি অন্য জোট থেকে রাজনীতি করছি। কিন্তু জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে কোনো আপস নেই। বাংলাদেশ জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু নামে পরিচিত। এখানে অনেকে অনেক কথা বলবেন। অনেক কথা বলেছেন। আগামী দিনের ইতিহাস নির্ণয় করবে আমরা সবাই কীভাবে যাব।
যে লক্ষ্যকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সেই পথে যাচ্ছেন মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, সংসদের নেত্রী জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন। কাজেই সেই জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা ও বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করে বঙ্গবন্ধুর মতো জাতীয় মনোভাব নিয়ে এগিয়ে গিয়ে জনগণের আশা-আকাঙক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে হবে।
সুলতান মনসুর বলেন, আজ যাকে নিয়ে আলোচনা ১৯৬৭-৬৮ সালে স্কুলছাত্র থাকা অবস্থায় যার নামে স্লোগান দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলাম, সেই বিশ্বাস থেকে ব্যক্তিগতভাবে বিচ্যুত হইনি। যদিও জোটগতভাবে বা রাজনৈতিকভাবে বা আমার আজকের অবস্থানে হয়ত আমাদের নেতাদের ওই জোটে নেই; কিন্তু ৫২ বছর আগে যে বিশ্বাস নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছিলাম, সেই বিশ্বাসের জায়গা থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অবস্থানে থেকে নির্বাচন করে এই সংসদে এসেছি।
সুলতান মনসুর বলেন, মহাজোটের বিরোধী বিএনপিসহ অন্যরা আমাকে ভোট দিয়েছে, এটা ঠিক। কিন্তু বঙ্গবন্ধু-জাতির পিতার অনুসারী সর্বস্তরের জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে এই সংসদে পাঠিয়েছেন। মহাজোটের বিরোধী অন্য জোটের একজন ব্যক্তি হয়ে স্বাধীনভাবে জনগণ ও বাংলার মানুষের কথা যেন বলতে পারি, সাদাকে সাদা, কালোকে কালো যেন বলতে পারি এবং জনগণের কথা বলে সারাজীবন রাজনীতি যেন করতে পারি, সেই সহযোগিতা পাব বলে আশা করি।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
বিশেষ প্রতিনিধি | ৭ মার্চ, ২০১৯ ২৩:১৭

শপথ নেওয়ার পরপরই বৃহস্পতিবার সংসদ অধিবেশনে যোগ দেন সুলতান মনসুর আহমেদ।
অধিবেশনে যোগ দিয়েই এক অনির্ধারিত আলোচনায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, আমার আজকে সরকারি দলে থাকার কথা ছিল। ওই জোটের (সরকারি দলের জোট) পক্ষেই তো আমি রাজনীতি করতাম। আজ থেকে ১৮ বছর আগে এই সংসদে আসার সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস গত ১৮ বছর একটি রাজনৈতিক কারাগারের মধ্যে ছিলাম।
শপথ নেওয়ায় বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে দল থেকে বহিস্কারও করা হয়। এর আগে সকাল ১১টা স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে শপথ নেন সুলতান মনসুর। তার কয়েকঘণ্টা পর দল গণফোরাম থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হয় জাতীয় সংসদের বৈঠক।
তখনই তাকে দেখা যায় অধিবেশন কক্ষে। স্পিকারের আসনের বাম পাশে বিরোধী দলের আসনের দ্বিতীয় সারিতে সুলতান মনসুরকে স্থান দেওয়া হয়েছে। ১৯৯৬ সালে এই সংসদেই আওয়ামী লীগের সাংসদ হিসেবে সরকারি দলের আসনে ছিলেন তিনি। গণফোরামের এই নেতা এবারের নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত হন।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে আলোচনায় দাঁড়িয়ে সুলতান মনসুর বলেন, এই সংসদে ৯৯ শতাংশ হচ্ছে একজোটে। আর আমি অন্য জোট থেকে রাজনীতি করছি। কিন্তু জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে কোনো আপস নেই। বাংলাদেশ জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু নামে পরিচিত। এখানে অনেকে অনেক কথা বলবেন। অনেক কথা বলেছেন। আগামী দিনের ইতিহাস নির্ণয় করবে আমরা সবাই কীভাবে যাব।
যে লক্ষ্যকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু দেশকে স্বাধীন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সেই পথে যাচ্ছেন মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, সংসদের নেত্রী জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন। কাজেই সেই জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা ও বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা করে বঙ্গবন্ধুর মতো জাতীয় মনোভাব নিয়ে এগিয়ে গিয়ে জনগণের আশা-আকাঙক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে হবে।
সুলতান মনসুর বলেন, আজ যাকে নিয়ে আলোচনা ১৯৬৭-৬৮ সালে স্কুলছাত্র থাকা অবস্থায় যার নামে স্লোগান দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলাম, সেই বিশ্বাস থেকে ব্যক্তিগতভাবে বিচ্যুত হইনি। যদিও জোটগতভাবে বা রাজনৈতিকভাবে বা আমার আজকের অবস্থানে হয়ত আমাদের নেতাদের ওই জোটে নেই; কিন্তু ৫২ বছর আগে যে বিশ্বাস নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছিলাম, সেই বিশ্বাসের জায়গা থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অবস্থানে থেকে নির্বাচন করে এই সংসদে এসেছি।
সুলতান মনসুর বলেন, মহাজোটের বিরোধী বিএনপিসহ অন্যরা আমাকে ভোট দিয়েছে, এটা ঠিক। কিন্তু বঙ্গবন্ধু-জাতির পিতার অনুসারী সর্বস্তরের জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে এই সংসদে পাঠিয়েছেন। মহাজোটের বিরোধী অন্য জোটের একজন ব্যক্তি হয়ে স্বাধীনভাবে জনগণ ও বাংলার মানুষের কথা যেন বলতে পারি, সাদাকে সাদা, কালোকে কালো যেন বলতে পারি এবং জনগণের কথা বলে সারাজীবন রাজনীতি যেন করতে পারি, সেই সহযোগিতা পাব বলে আশা করি।