নারীকে নিজেদেরই সক্ষমতা অর্জন করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৯ মার্চ, ২০১৯ ১৬:৪৫
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নারী দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা রাখেন। ছবি: বাসস
বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়নে সমাজের সর্বস্তরে পুরুষের পাশাপাশি তাদের সমঅধিকার নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নারী সমাজকে নিজের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে নিজেদেরই সক্ষমতা অর্জনের আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘যদিও ক্ষমতা দিয়েছি (স্থানীয় সরকারে) তবুও তারা সব জায়গায় ক্ষমতাটি প্রয়োগ করতে পারেন না। যারা দায়িত্বে আছেন (স্থানীয় সরকারে) তাদের নিজেদের ক্ষমতাটা নিজেদের অর্জন করে নিতে হবে। কেউ (ক্ষমতা) কখনও হাতে তুলে দেয় না, এটা হলো বাস্তবতা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার আইনে আমরা এক তৃতীয়াংশ নারী আসনের ব্যবস্থা করেছি। ইউনিয়ন এবং উপজেলাসহ সব জায়গায় একজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইউএনডিপি’র প্রতিনিধি মিয়া সেপো বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা কথা মনে রাখত হবে, শুধু আইন করলেই নারীর প্রতি সহিংসতা এবং বৈষম্য দূর হবে না। এজন্য সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি করা একান্তভাবে দরকার। এক্ষেত্রে আমাদের সকলের মা-বোনেরা যেখানে যারা আছেন সকলকেই এক হয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, একটা সমাজকে যদি গড়ে তুলতে হয় আর সেই সমাজের যেখানে অর্ধেকই নারী, তাদেরকে বাদ রেখে একটা সমাজ কখনও গড়ে উঠতে পারে না। কাজেই সেক্ষেত্রে সকলকে এক হয়ে কাজ করা- এটাই সব থেকে বেশি প্রয়োজন।
শিশু এবং নারী ধর্ষণকে অত্যন্ত গর্হিত একটি অপরাধ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ সময় ধর্ষিতা নারীর পরিচয় গোপন রেখে ধর্ষণকারিকে সমাজের সকলের কাছে তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, যারা (ধর্ষণ) করে তাদের প্রতি ঘৃণা এবং আমি বলবো তাদের নাম, পরিচয় ভালোভাবে প্রচার করা কর্তব্য, যাতে করে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ তাকে ঘৃণার চোখে দেখে। তাছাড়া আইগত ব্যবস্থা তো তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হবেই।
এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে সরকার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলেও তিনি জানান।
তিনি বলেন, ‘এটা কেবল বাংলাদেশের সমস্যা নয়, উন্নত সভ্য দেশেও এই সমস্যা রয়েছে। কাজেই এর বিরুদ্ধে আরো জনমত সৃষ্টি করা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কন্যা শিশুরা যেন কোনোভাবে বৈষম্যের শিকার না হয় সেই সচেতনতাটা আমাদের সমাজে ইতোমধ্যেই এসে গেছে। আর আমি এটাই মনে করি সমাজকে গড়ে তুলতে হলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার একান্তভাবে কাজ করা দরকার।
‘বিশ্বে যা কিছু সৃষ্টি চিরকল্যাণ কর, অর্ধেক তার আনিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর,’
কাজী নজরুলের কবিতার এই পংক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ যে সমঅধিকার সেই অধিকারের কথা তিনি স্পষ্টভাবে বলে গেছেন। কাজেই সমাজ ও দেশেকে কল্যাণময় করতে হলে নারী-পুরুষের একসঙ্গে কাজ করাটা জরুরি।’
খবর বাসস
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৯ মার্চ, ২০১৯ ১৬:৪৫

বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়নে সমাজের সর্বস্তরে পুরুষের পাশাপাশি তাদের সমঅধিকার নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নারী সমাজকে নিজের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে নিজেদেরই সক্ষমতা অর্জনের আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘যদিও ক্ষমতা দিয়েছি (স্থানীয় সরকারে) তবুও তারা সব জায়গায় ক্ষমতাটি প্রয়োগ করতে পারেন না। যারা দায়িত্বে আছেন (স্থানীয় সরকারে) তাদের নিজেদের ক্ষমতাটা নিজেদের অর্জন করে নিতে হবে। কেউ (ক্ষমতা) কখনও হাতে তুলে দেয় না, এটা হলো বাস্তবতা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার আইনে আমরা এক তৃতীয়াংশ নারী আসনের ব্যবস্থা করেছি। ইউনিয়ন এবং উপজেলাসহ সব জায়গায় একজন চেয়ারম্যানের সঙ্গে ভাইস চেয়ারম্যানের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইউএনডিপি’র প্রতিনিধি মিয়া সেপো বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা কথা মনে রাখত হবে, শুধু আইন করলেই নারীর প্রতি সহিংসতা এবং বৈষম্য দূর হবে না। এজন্য সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি করা একান্তভাবে দরকার। এক্ষেত্রে আমাদের সকলের মা-বোনেরা যেখানে যারা আছেন সকলকেই এক হয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, একটা সমাজকে যদি গড়ে তুলতে হয় আর সেই সমাজের যেখানে অর্ধেকই নারী, তাদেরকে বাদ রেখে একটা সমাজ কখনও গড়ে উঠতে পারে না। কাজেই সেক্ষেত্রে সকলকে এক হয়ে কাজ করা- এটাই সব থেকে বেশি প্রয়োজন। শিশু এবং নারী ধর্ষণকে অত্যন্ত গর্হিত একটি অপরাধ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ সময় ধর্ষিতা নারীর পরিচয় গোপন রেখে ধর্ষণকারিকে সমাজের সকলের কাছে তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, যারা (ধর্ষণ) করে তাদের প্রতি ঘৃণা এবং আমি বলবো তাদের নাম, পরিচয় ভালোভাবে প্রচার করা কর্তব্য, যাতে করে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ তাকে ঘৃণার চোখে দেখে। তাছাড়া আইগত ব্যবস্থা তো তাদের বিরুদ্ধে নেয়া হবেই।
এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে সরকার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘এটা কেবল বাংলাদেশের সমস্যা নয়, উন্নত সভ্য দেশেও এই সমস্যা রয়েছে। কাজেই এর বিরুদ্ধে আরো জনমত সৃষ্টি করা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কন্যা শিশুরা যেন কোনোভাবে বৈষম্যের শিকার না হয় সেই সচেতনতাটা আমাদের সমাজে ইতোমধ্যেই এসে গেছে। আর আমি এটাই মনে করি সমাজকে গড়ে তুলতে হলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার একান্তভাবে কাজ করা দরকার।
‘বিশ্বে যা কিছু সৃষ্টি চিরকল্যাণ কর, অর্ধেক তার আনিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর,’ কাজী নজরুলের কবিতার এই পংক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ যে সমঅধিকার সেই অধিকারের কথা তিনি স্পষ্টভাবে বলে গেছেন। কাজেই সমাজ ও দেশেকে কল্যাণময় করতে হলে নারী-পুরুষের একসঙ্গে কাজ করাটা জরুরি।’
খবর বাসস