মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষণের প্রকৃত সংখ্যা ৫ লাখ: মুনতাসীর মামুন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৯ মার্চ, ২০১৯ ২১:৩৫
মুনতাসীর মামুন
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যা দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।
তিনি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় সরকারি হিসেবে নারী ধর্ষণের হিসাব দুই লাখে নেমে এসেছে। কিন্তু আমার গবেষণায় তা পাঁচ লাখের ওপরে। হাইকোর্টের এক রায়েও তা উল্লেখ করা হয়েছে।
এর জন্য ১৯৭৫ সালের পর সামরিক সরকারগুলো দায়ী জানিয়ে তিনি বলেন, তারা মূলত পাকিস্তানের এজেন্ডা পালন করতে চেয়েছে। গণহত্যার চেয়ে বিজয়ের ওপর তারা জোর দিয়েছে।
শনিবার রাজধানীর এশিয়াটিক সোসাইটিতে‘গণহত্যার রাজনীতি’ শীর্ষক এক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
মুনতাসীর মামুন বলেন, যদি সময়ের মাপকাঠিতে বিচার করা হয় তাহলে এটি পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যা। পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যা, অথচ এটি চোখের আড়ালে চলে গেল কীভাবে? এর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র জড়িত।
এ গবেষক বলেন, প্রত্যেক গণহত্যার একটি রাজনীতি আছে। সেটিকে রাজনীতি না বলে অপরাজনীতি বলা যায়। অজুহাত তৈরি করা হয় গণহত্যা অস্বীকারের। ১৮টি জেলায় গণহত্যার সংখ্যা ৪ হাজার ১৯০টি। শুধু চুকনগরে একটি গণহত্যায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ শহীদ হয়। বদ্ধভূমির সংখ্যা ৫৯৬টি, গণকবর ৪৫১টি ও নির্যাতন কেন্দ্র ২২৫টি। চারটির যোগফল ৫ হাজার ৬৯০। অনেক গণহত্যা বধ্যভূমি বা গণকবর বিস্মৃতির আড়ালে চলে গেছে। কিন্তু ১৮টি জেলায় যদি এই চারটির হিসাব দাঁড়ায় ৫ হাজার ৬৯০ টি তাহলে ৬৪ জেলায় এ সংখ্যা কেমন হতে পারে? এতে গণহত্যার মাত্রা ও তীব্রতা অনুমান করা যায়।
মুনতাসীর মামুন আরও বলেন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখা দরকার সরকার ও গবেষকদের। এ সম্পর্কিত বইপত্র বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা ও তা ছড়িয়ে দেওয়া, বিদেশি শিক্ষাবিদদের এ বার্তা পৌঁছে দেওয়া যে পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যা এখানেই হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সত্য বিকশিত হলে এবং গণহত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরাধীদের শাস্তি হলে আজ রোহিঙ্গা গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটাতে মিয়ানমার সাহস পেত না।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৯ মার্চ, ২০১৯ ২১:৩৫

মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যা দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।
তিনি বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় সরকারি হিসেবে নারী ধর্ষণের হিসাব দুই লাখে নেমে এসেছে। কিন্তু আমার গবেষণায় তা পাঁচ লাখের ওপরে। হাইকোর্টের এক রায়েও তা উল্লেখ করা হয়েছে।
এর জন্য ১৯৭৫ সালের পর সামরিক সরকারগুলো দায়ী জানিয়ে তিনি বলেন, তারা মূলত পাকিস্তানের এজেন্ডা পালন করতে চেয়েছে। গণহত্যার চেয়ে বিজয়ের ওপর তারা জোর দিয়েছে।
শনিবার রাজধানীর এশিয়াটিক সোসাইটিতে‘গণহত্যার রাজনীতি’ শীর্ষক এক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
মুনতাসীর মামুন বলেন, যদি সময়ের মাপকাঠিতে বিচার করা হয় তাহলে এটি পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যা। পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যা, অথচ এটি চোখের আড়ালে চলে গেল কীভাবে? এর সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র জড়িত।
এ গবেষক বলেন, প্রত্যেক গণহত্যার একটি রাজনীতি আছে। সেটিকে রাজনীতি না বলে অপরাজনীতি বলা যায়। অজুহাত তৈরি করা হয় গণহত্যা অস্বীকারের। ১৮টি জেলায় গণহত্যার সংখ্যা ৪ হাজার ১৯০টি। শুধু চুকনগরে একটি গণহত্যায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ শহীদ হয়। বদ্ধভূমির সংখ্যা ৫৯৬টি, গণকবর ৪৫১টি ও নির্যাতন কেন্দ্র ২২৫টি। চারটির যোগফল ৫ হাজার ৬৯০। অনেক গণহত্যা বধ্যভূমি বা গণকবর বিস্মৃতির আড়ালে চলে গেছে। কিন্তু ১৮টি জেলায় যদি এই চারটির হিসাব দাঁড়ায় ৫ হাজার ৬৯০ টি তাহলে ৬৪ জেলায় এ সংখ্যা কেমন হতে পারে? এতে গণহত্যার মাত্রা ও তীব্রতা অনুমান করা যায়।
মুনতাসীর মামুন আরও বলেন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রাখা দরকার সরকার ও গবেষকদের। এ সম্পর্কিত বইপত্র বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা ও তা ছড়িয়ে দেওয়া, বিদেশি শিক্ষাবিদদের এ বার্তা পৌঁছে দেওয়া যে পৃথিবীর বৃহত্তম গণহত্যা এখানেই হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সত্য বিকশিত হলে এবং গণহত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত অপরাধীদের শাস্তি হলে আজ রোহিঙ্গা গণহত্যার মতো ঘটনা ঘটাতে মিয়ানমার সাহস পেত না।