দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে: শিক্ষামন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৪ মার্চ, ২০১৯ ০১:১৯
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের সব কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দ্বার খুলে গেছে। আর এ থেকেই উৎসাহিত হয়ে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন আয়োজন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিগত ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে। তবে আমরা কারও ওপর কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না।
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিশুকাল থেকে গণতন্ত্রের চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে ১৪ মার্চ থেকে সারা দেশে ২২ হাজার ৯৬১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় স্কুল কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবারের মতো এবারও দেশের আট বিভাগ ও আটটি মহানগরের আওতাধীন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় (ষষ্ঠ-দশম শ্রেণি) কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এবার ১৬ হাজার ২৪৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবং ছয় হাজার ৭১৬ দাখিল মাদার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মাধ্যমিক পর্যায়ে এক লাখ ২৯ হাজার ৯৬০টি পদের জন্য দুই লাখ ৩১ হাজার ১২৬ এবং মাদ্রাসা পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৭২৮টি পদের জন্য ৯৩ হাজার ৭১০ শিক্ষার্থী এ নির্বাচনে অংশ নিবে। ২৪ মার্চ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ২টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ হবে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে কেবলমাত্র মাধ্যমিক পর্যায়ের (৬ষ্ঠ-দশম শ্রেণি) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন আয়োজন করা হবে। তবে অন্য কোনো পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (যেমন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ এবং আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা) এ নির্বাচনের আওতায় বলে বিবেচিত হবে না।
অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসেন, মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক এবং ঢাকা ও মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।
যে প্রক্রিয়ায় হবে স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন
শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে আট সদস্যের স্টুডেন্ট কেবিনেট। ষষ্ঠ-দশম শ্রেণির যে কোনো শিক্ষার্থী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে। একজন ভোটার সর্বোচ্চ আটটি ভোট দেবে। এর মধ্যে প্রতি শ্রেণিতে একটি করে এবং যেকোনো তিন শ্রেণিতে সর্বোচ্চ দুটি করে ভোট দিতে পারবে। প্রতি শ্রেণি থেকে একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। পাঁচ শ্রেণিতে পাঁচজন নির্বাচনের পর তাদের মধ্য হতে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত তিনজন নির্বাচিত হবে।
নির্বাচনী প্রচারের জন্য কোনো রকম পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ব্যবহার ও দেয়াল লেখন করা যাবে না। তবে শিক্ষার্থীদের হাতে লেখা পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ব্যবহার করতে পারবে। নির্বাচনী প্রচার প্রতিষ্ঠানের সীমানা বা চত্বরের বাইরে করা যাবে না।
স্টুডেন্ট কেবিনেটের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রথম সভায় একজন প্রধান প্রতিনিধি মনোনীত করবে। একই সঙ্গে প্রত্যেকের দায়িত্ব বণ্টন এবং সারা বছরের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। পাশাপাশি প্রতিটি শ্রেণি থেকে দুজন করে সহযোগী সদস্য মনোনীত করতে হবে, যারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সহায়তা করবে। তাদের ভোটাধিকার থাকবে না।
প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ সংরক্ষণ যেমন, বিদ্যালয়, আঙিনা ও টয়লেট পরিষ্কার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পুস্তক ও শিখন সামগ্রী, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহপাঠ কার্যক্রম, পানিসম্পদ, বৃক্ষ রোপণ ও বাগান তৈরি, বিভিন্ন দিবস ও অনুষ্ঠান উদ্যাপন, অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন এবং আইসিটি এ আট প্রধান দায়িত্বে আটজন নির্বাচিত প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করবে বলে মন্ত্রণালয় জানায়।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৪ মার্চ, ২০১৯ ০১:১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের সব কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দ্বার খুলে গেছে। আর এ থেকেই উৎসাহিত হয়ে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন আয়োজন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিগত ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা হবে। তবে আমরা কারও ওপর কিছু চাপিয়ে দিতে চাই না।
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিশুকাল থেকে গণতন্ত্রের চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে ১৪ মার্চ থেকে সারা দেশে ২২ হাজার ৯৬১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় স্কুল কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবারের মতো এবারও দেশের আট বিভাগ ও আটটি মহানগরের আওতাধীন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাখিল মাদ্রাসায় (ষষ্ঠ-দশম শ্রেণি) কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এবার ১৬ হাজার ২৪৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এবং ছয় হাজার ৭১৬ দাখিল মাদার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মাধ্যমিক পর্যায়ে এক লাখ ২৯ হাজার ৯৬০টি পদের জন্য দুই লাখ ৩১ হাজার ১২৬ এবং মাদ্রাসা পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৭২৮টি পদের জন্য ৯৩ হাজার ৭১০ শিক্ষার্থী এ নির্বাচনে অংশ নিবে। ২৪ মার্চ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ২টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ হবে।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে কেবলমাত্র মাধ্যমিক পর্যায়ের (৬ষ্ঠ-দশম শ্রেণি) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন আয়োজন করা হবে। তবে অন্য কোনো পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (যেমন নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ এবং আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা) এ নির্বাচনের আওতায় বলে বিবেচিত হবে না।
অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসেন, মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক এবং ঢাকা ও মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।
যে প্রক্রিয়ায় হবে স্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন
শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবে আট সদস্যের স্টুডেন্ট কেবিনেট। ষষ্ঠ-দশম শ্রেণির যে কোনো শিক্ষার্থী নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে। একজন ভোটার সর্বোচ্চ আটটি ভোট দেবে। এর মধ্যে প্রতি শ্রেণিতে একটি করে এবং যেকোনো তিন শ্রেণিতে সর্বোচ্চ দুটি করে ভোট দিতে পারবে। প্রতি শ্রেণি থেকে একজন করে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে। পাঁচ শ্রেণিতে পাঁচজন নির্বাচনের পর তাদের মধ্য হতে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত তিনজন নির্বাচিত হবে।
নির্বাচনী প্রচারের জন্য কোনো রকম পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ব্যবহার ও দেয়াল লেখন করা যাবে না। তবে শিক্ষার্থীদের হাতে লেখা পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেট ব্যবহার করতে পারবে। নির্বাচনী প্রচার প্রতিষ্ঠানের সীমানা বা চত্বরের বাইরে করা যাবে না।
স্টুডেন্ট কেবিনেটের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা প্রথম সভায় একজন প্রধান প্রতিনিধি মনোনীত করবে। একই সঙ্গে প্রত্যেকের দায়িত্ব বণ্টন এবং সারা বছরের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করবে। পাশাপাশি প্রতিটি শ্রেণি থেকে দুজন করে সহযোগী সদস্য মনোনীত করতে হবে, যারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সহায়তা করবে। তাদের ভোটাধিকার থাকবে না।
প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ সংরক্ষণ যেমন, বিদ্যালয়, আঙিনা ও টয়লেট পরিষ্কার এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পুস্তক ও শিখন সামগ্রী, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহপাঠ কার্যক্রম, পানিসম্পদ, বৃক্ষ রোপণ ও বাগান তৈরি, বিভিন্ন দিবস ও অনুষ্ঠান উদ্যাপন, অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন এবং আইসিটি এ আট প্রধান দায়িত্বে আটজন নির্বাচিত প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করবে বলে মন্ত্রণালয় জানায়।