পাঠ্যবইয়ে ‘আমার বই’, ‘আমার পতাকা’ জাতীয় শব্দচয়ন না করার পরামর্শ
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৬ মার্চ, ২০১৯ ১৯:৩৮
বাংলাদেশের অনেক সমস্যার মধ্যে ‘আমিত্ব’ একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, সবাইকে ‘আমিই বড়’ ‘আমিই শ্রেষ্ঠ’ এই মানসিকতা পরিহার করতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, শিশুদের পাঠ্যবইয়ে ‘আমার বই’ কিংবা ‘আমার পতাকা’ এজাতীয় শব্দচয়ন না করে আমাদের বই, আমাদের পতাকা লিখলে হয়তো শিশু হৃদয়ে আমিত্বের বীজ অঙ্কুরিত নাও হতে পারত।
মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যে যেখানে আছেন, সে সেখানে নিজেকে রাজা মনে করবেন, এটা হতে পারে না। বরং যে যত বড় দায়িত্বে রয়েছেন তার আচরণ ততোধিক নমনীয় হওয়া উচিত’।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশনে যারা কাজ করেন তারা প্রত্যেকই একই সঙ্গে একই সমতলে অবস্থান করেন। ভুল করলে তা স্বীকার করার মানসিকতাও থাকতে হবে। আমরা সবাই যদি ভুল স্বীকার করার মানসিকতা পোষণ না করি কিংবা আমিত্ব পরিহার না করি তাহলে এই দেশ এই জাতি এগোবে না।
কমিশনের প্রতিরোধ অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ২৭ হাজার সততা সংঘ এবং ২ হাজার সততা ইউনিট গঠন করার মাধ্যমে আপনাদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে। এখন প্রতিটি সততা সংঘ ও সততা স্টোরের কার্যক্রম আপনাদেরকে নিবিড়ভাবে মনিটরিং করতে হবে। কারণ আজকের শিক্ষার্থীরাই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে, তাই তাদের আচরণে-মননে সততা ও নৈতিকতার যে অমূল্য মূল্যবোধ জাগরিত হচ্ছে তা বিকশিত করতে হলে এ সকল কার্যক্রম মনিটরিংয়ের কোনো বিকল্প নেই।
চেয়ারম্যান বলেন, দুদক আইন অনুসারে কমিশনের একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিধি রয়েছে। কমিশন এই কর্মপরিধির বাইরে গিয়ে একটি কাজও করবে না। প্রতিটি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অহংবোধ থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে, তা না হলে সংস্থাগুলোও এগোবে না, দেশও এগোবে না।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মীই সমান গুরুত্বের। মহান স্বাধীনতা দিবসের মুহূর্তে আসুন, আমরা সম্মিলিতভাবে দুর্নীতি দমন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় একই সমতলে থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করি।
আলোচনা সভায় দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘আপনি আচরি ধর্ম, পরেরে শেখাও’ এই নীতি মেনে আমরা যদি আমাদের অন্তর্দৃষ্টি, আচরণ এবং দৃষ্টিভঙ্গিকে সমন্বিত করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে উচ্চকিত হই, তবেই সোনার বাংলা বিনির্মাণ করা সহজ হবে।
কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমরা যেন আমাদের কর্মে চর্চা করি এবং সবাই মিলেমিশে দেশ গঠনে কাজ করি।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত, মহাপরিচালক (মানিলন্ডারিং) আনম আল ফিরোজ, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. আকতার হোসেন, পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৬ মার্চ, ২০১৯ ১৯:৩৮

বাংলাদেশের অনেক সমস্যার মধ্যে ‘আমিত্ব’ একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, সবাইকে ‘আমিই বড়’ ‘আমিই শ্রেষ্ঠ’ এই মানসিকতা পরিহার করতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, শিশুদের পাঠ্যবইয়ে ‘আমার বই’ কিংবা ‘আমার পতাকা’ এজাতীয় শব্দচয়ন না করে আমাদের বই, আমাদের পতাকা লিখলে হয়তো শিশু হৃদয়ে আমিত্বের বীজ অঙ্কুরিত নাও হতে পারত।
মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যে যেখানে আছেন, সে সেখানে নিজেকে রাজা মনে করবেন, এটা হতে পারে না। বরং যে যত বড় দায়িত্বে রয়েছেন তার আচরণ ততোধিক নমনীয় হওয়া উচিত’।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশনে যারা কাজ করেন তারা প্রত্যেকই একই সঙ্গে একই সমতলে অবস্থান করেন। ভুল করলে তা স্বীকার করার মানসিকতাও থাকতে হবে। আমরা সবাই যদি ভুল স্বীকার করার মানসিকতা পোষণ না করি কিংবা আমিত্ব পরিহার না করি তাহলে এই দেশ এই জাতি এগোবে না।
কমিশনের প্রতিরোধ অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ২৭ হাজার সততা সংঘ এবং ২ হাজার সততা ইউনিট গঠন করার মাধ্যমে আপনাদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে। এখন প্রতিটি সততা সংঘ ও সততা স্টোরের কার্যক্রম আপনাদেরকে নিবিড়ভাবে মনিটরিং করতে হবে। কারণ আজকের শিক্ষার্থীরাই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবে, তাই তাদের আচরণে-মননে সততা ও নৈতিকতার যে অমূল্য মূল্যবোধ জাগরিত হচ্ছে তা বিকশিত করতে হলে এ সকল কার্যক্রম মনিটরিংয়ের কোনো বিকল্প নেই।
চেয়ারম্যান বলেন, দুদক আইন অনুসারে কমিশনের একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিধি রয়েছে। কমিশন এই কর্মপরিধির বাইরে গিয়ে একটি কাজও করবে না। প্রতিটি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অহংবোধ থেকে বেরিয়ে আসতেই হবে, তা না হলে সংস্থাগুলোও এগোবে না, দেশও এগোবে না।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমি প্রথম থেকেই বলে আসছি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কর্মীই সমান গুরুত্বের। মহান স্বাধীনতা দিবসের মুহূর্তে আসুন, আমরা সম্মিলিতভাবে দুর্নীতি দমন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় একই সমতলে থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করি।
আলোচনা সভায় দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘আপনি আচরি ধর্ম, পরেরে শেখাও’ এই নীতি মেনে আমরা যদি আমাদের অন্তর্দৃষ্টি, আচরণ এবং দৃষ্টিভঙ্গিকে সমন্বিত করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে উচ্চকিত হই, তবেই সোনার বাংলা বিনির্মাণ করা সহজ হবে।
কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমরা যেন আমাদের কর্মে চর্চা করি এবং সবাই মিলেমিশে দেশ গঠনে কাজ করি।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখ্ত, মহাপরিচালক (মানিলন্ডারিং) আনম আল ফিরোজ, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. আকতার হোসেন, পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।