মৃত্যুহীন প্রাণ ফায়ারম্যান সোহেল
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৮ এপ্রিল, ২০১৯ ১৪:৪৩
প্রাকৃতিক কিংবা মনুষ্যসৃষ্ট- একেকটি দুর্যোগ মাঝে-মধ্যেই গোটা জাতিকে নাড়া দিয়ে যায়। আবার এরই মধ্যে কিছু মানুষের আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেরণা জোগায়। এমনই একজন ফায়ারম্যান সোহেল রানা।
গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীতে এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশনের ফায়ারম্যান সোহেল রানা সঙ্গীয় টিম নিয়ে সেদিন প্রাণপণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং আটকে পড়াদের উদ্ধারে কাজ করেন।
উঁচু ল্যাডারে (মই) উঠে আগুন নেভানো এবং আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারের সময় সোহেলের শরীরে লাগানো নিরাপত্তা হুকটি মইয়ের সঙ্গে আটকে যায়। তিনি মই থেকে পিছলে পড়ে বিপজ্জনকভাবে ঝুলছিলেন। এ সময় তার একটি পা ভেঙে যায়। পেটেও জখম পান।
বনানীর ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৬ জন নিহত হন। আহত হন আরও ৭০ জন। জীবন বাজি রেখে ভবনে আটকে পড়া অনেককে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে সেদিন বাঁচিয়েছিলেন ফায়ারম্যান সোহেল।
গুরুতর আহত সোহেল রানাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার দাবি ওঠে সামাজিক মাধ্যমে। পরে গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সোহেলকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়।
কিন্তু সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন সোহেল। বাংলাদেশ সময় রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার এই মৃত্যুর শোক ছুঁয়ে গেছে নেটিজেনদেরও।
লুৎফুল কবির রনি নামে একজন তার ফেসবুকে লিখেছেন, “... অন্যের জীবন বাঁচাতে নিজের জীবন বাজি রাখা ফায়ার কর্মী সোহেল রানা সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। ... নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।”
শ্রী চন্দন নামে একজন তার ফেসবুকে লিখেছেন, “এ সময়ের বীরশ্রেষ্ঠ ফায়ারম্যান সোহেল রানা। বীরেরা কখনো মরে না বেঁচে থাকে অন্তরে।”
অবশ্য সময়মতো সোহেল রানাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে না নেওয়ায় ক্ষোভও প্রকাশ করেছে কেউ কেউ। রাজনীতি ও সমাজ আন্দোলনকর্মী মিজানুর রহমান বলেন, “মারাত্মক আহত হওয়ার পরেও সোহেল রানাকে কেন ৭ দিন পর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হলো?”
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৮ এপ্রিল, ২০১৯ ১৪:৪৩

প্রাকৃতিক কিংবা মনুষ্যসৃষ্ট- একেকটি দুর্যোগ মাঝে-মধ্যেই গোটা জাতিকে নাড়া দিয়ে যায়। আবার এরই মধ্যে কিছু মানুষের আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত ঘুরে দাঁড়ানোর প্রেরণা জোগায়। এমনই একজন ফায়ারম্যান সোহেল রানা।
গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীতে এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশনের ফায়ারম্যান সোহেল রানা সঙ্গীয় টিম নিয়ে সেদিন প্রাণপণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং আটকে পড়াদের উদ্ধারে কাজ করেন।
উঁচু ল্যাডারে (মই) উঠে আগুন নেভানো এবং আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারের সময় সোহেলের শরীরে লাগানো নিরাপত্তা হুকটি মইয়ের সঙ্গে আটকে যায়। তিনি মই থেকে পিছলে পড়ে বিপজ্জনকভাবে ঝুলছিলেন। এ সময় তার একটি পা ভেঙে যায়। পেটেও জখম পান।
বনানীর ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৬ জন নিহত হন। আহত হন আরও ৭০ জন। জীবন বাজি রেখে ভবনে আটকে পড়া অনেককে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে সেদিন বাঁচিয়েছিলেন ফায়ারম্যান সোহেল।
গুরুতর আহত সোহেল রানাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার দাবি ওঠে সামাজিক মাধ্যমে। পরে গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সোহেলকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়।
কিন্তু সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন সোহেল। বাংলাদেশ সময় রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার এই মৃত্যুর শোক ছুঁয়ে গেছে নেটিজেনদেরও।
লুৎফুল কবির রনি নামে একজন তার ফেসবুকে লিখেছেন, “... অন্যের জীবন বাঁচাতে নিজের জীবন বাজি রাখা ফায়ার কর্মী সোহেল রানা সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। ... নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই।”
শ্রী চন্দন নামে একজন তার ফেসবুকে লিখেছেন, “এ সময়ের বীরশ্রেষ্ঠ ফায়ারম্যান সোহেল রানা। বীরেরা কখনো মরে না বেঁচে থাকে অন্তরে।”
অবশ্য সময়মতো সোহেল রানাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে না নেওয়ায় ক্ষোভও প্রকাশ করেছে কেউ কেউ। রাজনীতি ও সমাজ আন্দোলনকর্মী মিজানুর রহমান বলেন, “মারাত্মক আহত হওয়ার পরেও সোহেল রানাকে কেন ৭ দিন পর উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো হলো?”