আখাউড়া-সিলেট ডুয়েল গেজ রেলপথ প্রকল্প অনুমোদন
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৯ এপ্রিল, ২০১৯ ২১:২৯
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটি আখাউড়া-সিলেট মিটার গেজ রেলপথকে ডুয়েল গেজে পরিবর্তন করার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৬ হাজার ১০৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ব্রিফিং এ জানান, একনেক বৈঠকে ১৮ হাজার ১৯১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার মোট সাতটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অনুমোদনকৃত প্রকল্প ব্যয়ের ৬ হাজার ৬২২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে এবং অবশিষ্ট ১১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বিদেশি সাহায্য হিসেবে জোগান দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। অনুমোদিত সাতটি প্রকল্পই নতুন প্রকল্প।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আখাউড়া-সিলেট অঞ্চলের রেলপথকে ডুয়েল গেজে রূপান্তরিত করণ প্রকল্পটি আগামী ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। এটি বাস্তবায়নে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে জি টু জি এর আওতায় ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা চীন থেকে নেওয়া হবে।
প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান ২২৫ কিলোমিটার আখাউড়া-সিলেট অঞ্চলের মিটার গেজ রেলপথ ২৩৯ দশমিক ১৪ কিলোমিটার ডুয়েল গেজে রূপান্তরিত করা হবে।
পাশাপাশি, অপর প্রধান প্রকল্পের আওতায় ৪৯টি বড়, ২৩৭ টি ছোট রেলসেতু, ২২টি স্টেশনের সিগনালিং ব্যবস্থা, ১৬৬৯০ বর্গমিটার আবাসিক ভবন নির্মাণ, ব্যারাক ও ডরমিটরি এবং ২০০ দশমিক ৩০ একর ভূমি অধিগ্রহণ রয়েছে।
এসময় মন্ত্রী জানান, চলতি অর্থ বছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার ৪৭.২৪ শতাংশ। এর আগের বছরে এই একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৪৫.৬৫ শতাংশ।
তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা যাতে তাদের কাজে পূর্ণ মনোনিবেশ দিতে পারেন, এ জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা তাদের নিজ নিজ এলাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে যাতে বসবাস করেন, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
একনেক সভায় দেশে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ৯১৯.৮৫ কোটি টাকার ভারতীয় অর্থনৈতিক জোনের অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) অধীন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষ (বেপজা) ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এটি বাস্তবায়নে ভারতের তৃতীয় ক্রেডিট লাইন থেকে ৯১৯.৮৫ কোটি টাকা পাওয়া যাবে।
প্রধান প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রায় ১৫২ লাখ কিউবিক মিটার ভূমি উন্নয়ন, পানি সরবরাহ ও ড্রেজিং নিশ্চিত করতে ফেনী নদী থেকে ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপ লাইন স্থাপন, দশ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক স্থাপন, একটি পাম্প স্টেশন স্থাপন, একটি জলাধার, ইন্টারনাল লিংকেজ, বহির্ড্রেন লাইন নির্মাণ, ৫ হাজার মিটার সীমানা দেয়াল নির্মাণ, ১৬৮০ বর্গমিটার প্রশাসনিক ভবন, ২০৬০৩ বর্গফিট নিরাপত্তা শেড ও অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন।
অন্যান্য প্রকল্পসমূহ হচ্ছে- ২৪৪.৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প, মাগুরা-শ্রীপুর মহাসড়ক সম্প্রসারণ, ১৩৯.৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নতুন অফিস ভবন নির্মাণ এবং ৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বিসিএসআইআর’র ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শুঁটকি মাছ প্রক্রিয়াকরণ এবং ইনডোর কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ৯ এপ্রিল, ২০১৯ ২১:২৯

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) নির্বাহী কমিটি আখাউড়া-সিলেট মিটার গেজ রেলপথকে ডুয়েল গেজে পরিবর্তন করার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৬ হাজার ১০৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ব্রিফিং এ জানান, একনেক বৈঠকে ১৮ হাজার ১৯১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার মোট সাতটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অনুমোদনকৃত প্রকল্প ব্যয়ের ৬ হাজার ৬২২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে এবং অবশিষ্ট ১১ হাজার ৫৬৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা বিদেশি সাহায্য হিসেবে জোগান দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। অনুমোদিত সাতটি প্রকল্পই নতুন প্রকল্প।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আখাউড়া-সিলেট অঞ্চলের রেলপথকে ডুয়েল গেজে রূপান্তরিত করণ প্রকল্পটি আগামী ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। এটি বাস্তবায়নে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে জি টু জি এর আওতায় ১০ হাজার ৬৫৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা চীন থেকে নেওয়া হবে।
প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান ২২৫ কিলোমিটার আখাউড়া-সিলেট অঞ্চলের মিটার গেজ রেলপথ ২৩৯ দশমিক ১৪ কিলোমিটার ডুয়েল গেজে রূপান্তরিত করা হবে।
পাশাপাশি, অপর প্রধান প্রকল্পের আওতায় ৪৯টি বড়, ২৩৭ টি ছোট রেলসেতু, ২২টি স্টেশনের সিগনালিং ব্যবস্থা, ১৬৬৯০ বর্গমিটার আবাসিক ভবন নির্মাণ, ব্যারাক ও ডরমিটরি এবং ২০০ দশমিক ৩০ একর ভূমি অধিগ্রহণ রয়েছে।
এসময় মন্ত্রী জানান, চলতি অর্থ বছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার ৪৭.২৪ শতাংশ। এর আগের বছরে এই একই সময়ে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ৪৫.৬৫ শতাংশ।
তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তারা যাতে তাদের কাজে পূর্ণ মনোনিবেশ দিতে পারেন, এ জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা তাদের নিজ নিজ এলাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে যাতে বসবাস করেন, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
একনেক সভায় দেশে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ৯১৯.৮৫ কোটি টাকার ভারতীয় অর্থনৈতিক জোনের অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) অধীন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষ (বেপজা) ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এটি বাস্তবায়নে ভারতের তৃতীয় ক্রেডিট লাইন থেকে ৯১৯.৮৫ কোটি টাকা পাওয়া যাবে।
প্রধান প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রায় ১৫২ লাখ কিউবিক মিটার ভূমি উন্নয়ন, পানি সরবরাহ ও ড্রেজিং নিশ্চিত করতে ফেনী নদী থেকে ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপ লাইন স্থাপন, দশ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক স্থাপন, একটি পাম্প স্টেশন স্থাপন, একটি জলাধার, ইন্টারনাল লিংকেজ, বহির্ড্রেন লাইন নির্মাণ, ৫ হাজার মিটার সীমানা দেয়াল নির্মাণ, ১৬৮০ বর্গমিটার প্রশাসনিক ভবন, ২০৬০৩ বর্গফিট নিরাপত্তা শেড ও অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন।
অন্যান্য প্রকল্পসমূহ হচ্ছে- ২৪৪.৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প, মাগুরা-শ্রীপুর মহাসড়ক সম্প্রসারণ, ১৩৯.৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নতুন অফিস ভবন নির্মাণ এবং ৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বিসিএসআইআর’র ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শুঁটকি মাছ প্রক্রিয়াকরণ এবং ইনডোর কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন।