বাংলাদেশ-ভুটান পাঁচ চুক্তি স্বাক্ষর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ এপ্রিল, ২০১৯ ১৮:২৮
কৃষি, স্বাস্থ্য, জাহাজ চলাচল, পর্যটন ও জনপ্রশাসন প্রশিক্ষণ বিষয়ে সহযোগিতা জোরদারে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে পাঁচটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। এ ছাড়া উভয় দেশ পণ্য আমদানি রপ্তানিতে পরস্পরকে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা দেওয়ার বিষয়েও ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
শনিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢাকা সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যকার বৈঠকে এসব চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রসচিব শহিদুল হক।
পররাষ্ট্রসচিব জানান, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে পরিবহন ও ট্রানজিট কার্গো চলাচলে অভ্যন্তরীণ জলপথ ব্যবহারের বিষয়ে দা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। নৌ পরিবহন সচিব আবদুস সামাদ এবং ভুটানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব দাশো ইয়েসি ভাংদি এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
দুই দেশের কৃষি খাত উন্নয়নের জন্য গবেষণা ও তথ্য আদান প্রদানের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এবং ভুটানের কৃষি বিভাগের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ভুটানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা চুক্তিতে (এমওইউ) স্বাক্ষর করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম এবং ভুটানের স্বাস্থ্য সচিব উগানদা দফু।
দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়াতে বাংলাদেশ জনপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) এবং ভুটানের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের (আরআইএম) মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পাশাপাশি, দু দেশের মধ্যে পর্যটন খাতে সহযোগিতার বিষয়ে ভুটানের পর্যটন কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এদিকে পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশ ও ভুটানের বাজারে উভয় দেশের বেশ কিছু পণ্যের শুল্ক ও কোটা মুক্ত প্রবেশাধিকার নিয়ে কাজ করার ব্যাপারে রাজী হয়েছে দুই দেশ। শহিদুল হক জানান, আলোচনায় ভুটান বাংলাদেশের বাজারে দেশটির ১৬টি পণ্যের শুল্ক এবং কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার চেয়েছে, আর বাংলাদেশ চেয়েছে তাঁদের বাজারে ১০টি বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটা মুক্ত প্রবেশাধিকার। পররাষ্ট্রসচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী ভুটানের প্রস্তাব বিবেচনার বিষয়ে ডা. লোটে শেরিংকে আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে শিগগিরই আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে শহিদুল হক। শহিদুল হক বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ এবং স্বাস্থ্য খাতের বিষয়ে আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। ট্রানজিটের বিষয়ে তিনি বলেন, এই অঞ্চলে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (বিবিআইএন) সড়ক এবং রেল যোগাযোগের বিষয়টি একটি বড় উদ্যোগ।
তিনি বলেন, যদিও সকল দেশই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে তথাপি ভুটানের সংসদে এটি অনুসমর্থিত হয়নি। তবে, ভুটানের নতুন সরকার বলেছে এই উদ্যোগ সংক্রান্ত বিলটি তাদের সিনেটের উচ্চকক্ষে আলোচনার জন্য আবারও উত্থাপিত হবে। ভুটানের সংসদে বিলটি অনুমোদিত হলে আলোচ্য চারটি দেশের মধ্যে যোগাযোগ আরও শক্তিশালী হবে, বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৩ এপ্রিল, ২০১৯ ১৮:২৮

কৃষি, স্বাস্থ্য, জাহাজ চলাচল, পর্যটন ও জনপ্রশাসন প্রশিক্ষণ বিষয়ে সহযোগিতা জোরদারে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে পাঁচটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। এ ছাড়া উভয় দেশ পণ্য আমদানি রপ্তানিতে পরস্পরকে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা দেওয়ার বিষয়েও ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
শনিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢাকা সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যকার বৈঠকে এসব চুক্তি স্বাক্ষর হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রসচিব শহিদুল হক।
পররাষ্ট্রসচিব জানান, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে পরিবহন ও ট্রানজিট কার্গো চলাচলে অভ্যন্তরীণ জলপথ ব্যবহারের বিষয়ে দা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। নৌ পরিবহন সচিব আবদুস সামাদ এবং ভুটানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব দাশো ইয়েসি ভাংদি এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
দুই দেশের কৃষি খাত উন্নয়নের জন্য গবেষণা ও তথ্য আদান প্রদানের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এবং ভুটানের কৃষি বিভাগের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ভুটানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা চুক্তিতে (এমওইউ) স্বাক্ষর করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম এবং ভুটানের স্বাস্থ্য সচিব উগানদা দফু।
দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রশাসনিক দক্ষতা বাড়াতে বাংলাদেশ জনপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) এবং ভুটানের রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের (আরআইএম) মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পাশাপাশি, দু দেশের মধ্যে পর্যটন খাতে সহযোগিতার বিষয়ে ভুটানের পর্যটন কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
এদিকে পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশ ও ভুটানের বাজারে উভয় দেশের বেশ কিছু পণ্যের শুল্ক ও কোটা মুক্ত প্রবেশাধিকার নিয়ে কাজ করার ব্যাপারে রাজী হয়েছে দুই দেশ। শহিদুল হক জানান, আলোচনায় ভুটান বাংলাদেশের বাজারে দেশটির ১৬টি পণ্যের শুল্ক এবং কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার চেয়েছে, আর বাংলাদেশ চেয়েছে তাঁদের বাজারে ১০টি বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটা মুক্ত প্রবেশাধিকার। পররাষ্ট্রসচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী ভুটানের প্রস্তাব বিবেচনার বিষয়ে ডা. লোটে শেরিংকে আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে শিগগিরই আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে শহিদুল হক। শহিদুল হক বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ এবং স্বাস্থ্য খাতের বিষয়ে আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে। ট্রানজিটের বিষয়ে তিনি বলেন, এই অঞ্চলে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (বিবিআইএন) সড়ক এবং রেল যোগাযোগের বিষয়টি একটি বড় উদ্যোগ।
তিনি বলেন, যদিও সকল দেশই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে তথাপি ভুটানের সংসদে এটি অনুসমর্থিত হয়নি। তবে, ভুটানের নতুন সরকার বলেছে এই উদ্যোগ সংক্রান্ত বিলটি তাদের সিনেটের উচ্চকক্ষে আলোচনার জন্য আবারও উত্থাপিত হবে। ভুটানের সংসদে বিলটি অনুমোদিত হলে আলোচ্য চারটি দেশের মধ্যে যোগাযোগ আরও শক্তিশালী হবে, বলে তিনি উল্লেখ করেন।