জট নিরসনে প্রয়োজন সঠিক মামলা ব্যবস্থাপনা: প্রধান বিচারপতি
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ এপ্রিল, ২০১৯ ২২:১৪
মামলাজট নিরসনে শুধু বিচারক বাড়ানো ও অবকাঠামো উন্নয়নই যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, প্রয়োজন সঠিক মামলা ব্যবস্থাপনা। এছাড়া, বিচারপ্রার্থীরা যেন স্বল্প ব্যয়ে ও দ্রুত সময়ে ন্যায়বিচার পান সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে ‘ন্যাশনাল জাস্টিস অডিটের ফলাফল উপস্থাপনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। এতে সভাপতিত্ব করেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী।
সুপ্রিম কোর্টের জুডিশিয়াল রিফর্ম কমিটি ও জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন বাংলাদেশ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। জার্মান সরকারের কারিগরি সহায়তায় বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এই পদ্ধতিগত নিরীক্ষণ ও সমীক্ষাটি সম্পন্ন হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে বলেন, ‘বিচারক সংকট, অবকাঠামোর অপ্রতুলতা মামলাজটের অন্যতম কারণ মনে হলেও, শুধুমাত্র বিচারক বা অবকাঠামো বৃদ্ধির মাধ্যমে এ অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন সঠিক মামলা ব্যবস্থাপনা যা নিশ্চিত করতে আমাদের দুটি ধাপে কাজ করতে হবে। প্রথমত: মামলা দায়েরের পূর্ববর্তীতে প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় মামলা দায়েরের হার যাতে কম হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত: মামলা দায়ের পরবর্তীতে প্রতিটি পর্যায়ে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে স্বল্পব্যয়ে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘স্বল্প খরচে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, বিকল্প পদ্ধতিতে স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ মীমাংসা এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় নতুন মামলার অন্তর্ভুক্তি হ্রাস করা মামলা ব্যবস্থাপনার অপরিহার্য উপাদান হিসাবে বিবেচনা করতে হবে।’
বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় নতুন মামলার অন্তর্ভুক্তি রোধে বিকল্পভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির প্রচলিত আইনি বিধানাবলি আরও সূক্ষ্মভাবে প্রয়োগ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি, আদালতের জটবদ্ধ পুরোনো মামলাগুলো যাতে দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘লক্ষ্য রাখতে হবে বিচার প্রার্থীগণ যেন স্বল্পব্যয়ে ও দ্রুততর সময়ে ন্যায়বিচার লাভ করেন।’
সভায় জাস্টিস অডিটের তথ্যমতে ৬৮ শতাংশ মানুষ আনুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় ন্যায়বিচার পাবেন বলে বিশ্বাস করেন। কিন্তু বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে আগ্রহী। অর্থাৎ মাত্র ১৩ শতাংশ বিচারপ্রার্থীর প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় দ্বারস্থ হওয়ার প্রেক্ষিতে আদালতে ৩৪ লক্ষ মামলার জট তৈরি হয়েছে। বিচার ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল জনমুখী করতে ব্যবস্থার জন্য যথাযথ বাজেট বরাদ্দের জন্য সুপারিশ করা হয়।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৭ এপ্রিল, ২০১৯ ২২:১৪

মামলাজট নিরসনে শুধু বিচারক বাড়ানো ও অবকাঠামো উন্নয়নই যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, প্রয়োজন সঠিক মামলা ব্যবস্থাপনা। এছাড়া, বিচারপ্রার্থীরা যেন স্বল্প ব্যয়ে ও দ্রুত সময়ে ন্যায়বিচার পান সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে ‘ন্যাশনাল জাস্টিস অডিটের ফলাফল উপস্থাপনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। এতে সভাপতিত্ব করেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী।
সুপ্রিম কোর্টের জুডিশিয়াল রিফর্ম কমিটি ও জার্মান ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন বাংলাদেশ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। জার্মান সরকারের কারিগরি সহায়তায় বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এই পদ্ধতিগত নিরীক্ষণ ও সমীক্ষাটি সম্পন্ন হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে বলেন, ‘বিচারক সংকট, অবকাঠামোর অপ্রতুলতা মামলাজটের অন্যতম কারণ মনে হলেও, শুধুমাত্র বিচারক বা অবকাঠামো বৃদ্ধির মাধ্যমে এ অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন সঠিক মামলা ব্যবস্থাপনা যা নিশ্চিত করতে আমাদের দুটি ধাপে কাজ করতে হবে। প্রথমত: মামলা দায়েরের পূর্ববর্তীতে প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় মামলা দায়েরের হার যাতে কম হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত: মামলা দায়ের পরবর্তীতে প্রতিটি পর্যায়ে সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে স্বল্পব্যয়ে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘স্বল্প খরচে মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি, বিকল্প পদ্ধতিতে স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ মীমাংসা এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় নতুন মামলার অন্তর্ভুক্তি হ্রাস করা মামলা ব্যবস্থাপনার অপরিহার্য উপাদান হিসাবে বিবেচনা করতে হবে।’
বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় নতুন মামলার অন্তর্ভুক্তি রোধে বিকল্পভাবে বিরোধ নিষ্পত্তির প্রচলিত আইনি বিধানাবলি আরও সূক্ষ্মভাবে প্রয়োগ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি, আদালতের জটবদ্ধ পুরোনো মামলাগুলো যাতে দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘লক্ষ্য রাখতে হবে বিচার প্রার্থীগণ যেন স্বল্পব্যয়ে ও দ্রুততর সময়ে ন্যায়বিচার লাভ করেন।’
সভায় জাস্টিস অডিটের তথ্যমতে ৬৮ শতাংশ মানুষ আনুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় ন্যায়বিচার পাবেন বলে বিশ্বাস করেন। কিন্তু বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থাশীল হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ স্থানীয় পর্যায়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে আগ্রহী। অর্থাৎ মাত্র ১৩ শতাংশ বিচারপ্রার্থীর প্রাতিষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় দ্বারস্থ হওয়ার প্রেক্ষিতে আদালতে ৩৪ লক্ষ মামলার জট তৈরি হয়েছে। বিচার ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল জনমুখী করতে ব্যবস্থার জন্য যথাযথ বাজেট বরাদ্দের জন্য সুপারিশ করা হয়।