বিধি বহির্ভূত ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলছে সংসদীয় কমিটি
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৯ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:১৩
রাজধানীতে আইন ভঙ্গ করে নির্মাণ করা ভবনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাজউকে বলেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
রবিবার সংসদ ভবনে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এই বৈঠকে এ কথা বলা হয়।
পুরান ঢাকার চকবাজার ও বনানীর একটি টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বিষয়টি উঠে আসলে কমিটি এ ধরনের নির্দেশনা দেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ও সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অপেক্ষায় আছি, কবে নিয়মবহির্ভূতভাবে গড়ে ওঠা ভবনগুলো ভাঙা হবে। এগুলোর মধ্যে একটাও যদি ভাঙে তবে সেটা অনুকরণীয় হবে, যা সবার জন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘সিভিল এভিয়েশন বলেছে ১৫ তলার বেশি করা যাবে না। অথচ ওই এলাকায় এমনও অনেক ভবন আছে, যেগুলো সুউচ্চ। কীভাবে এগুলো হলো? এসব ভবন কোনো একটি সরকারের আমলে হয়নি। ৪৮ বছর ধরে হয়েছে। তবে আর চলতে দেওয়া যায় না।’
মোশাররফ হোসেন জানান, রাজউক বলেছে নিয়মবহির্ভূত ভবন নির্ধারণে তারা ২৪টি দল করেছে। তাদের এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন কমিটিতে জমা দিতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, কমিটি রাজউকের তৃণমূল পর্যায়ের কর্মরতদের পাশাপাশি চেয়ারম্যানসহ পদস্থ ব্যক্তিদের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নিতে বলেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত একাধিক সদস্য জানান, দীর্ঘ সময় ধরে চলা এ বৈঠকের এক পর্যায়ে বনানীতে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি উঠে আসে।
সেখানে উপস্থিত স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি কমিটিকে অবহিত করে বলেন, বনানী যে টাওয়ারে আগুনের ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনটি নির্মাণের সময় সেই সময়কার আইন মেনেই নির্মিত হয়েছে। কিন্তু বর্হিগমনের সিঁড়ি ব্যবহারে কিছুটা বাধা-বিপত্তি ছিল। পরে কমিটির সভাপতি রাজউকের কাছে ভবনের ১৮ থেকে ২৩ তলা পর্যন্ত পাস হওয়া নকশার বিষয়টি জানতে চান। উত্তরে রাজউক চেয়ারম্যান জানান, এ বিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে।
কমিটির সভাপতি এক পর্যায়ে বলেন, এসব অবৈধ ভবন তো একদিনে তৈরি হয়নি। রাজউক সেই সময় কি করেছে? এখন রাজউক কয়কটি ভবন ভাঙতে পারে তা দেখার অপেক্ষায় আছে কমিটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, কমিটিতে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কমিটি বলেছে, অবৈধ সব ভবনের বিষয়ে রাজউক যেন ব্যবস্থা গ্রহন করে। আমরা সেই লক্ষে কাজ করবো।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে বর্তমান বিল্ডিং কোড যুগোপযোগী করা, অনুমোদনহীন বহুতল ভবনের উচ্চতা বাড়ানো রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ ইমারত নীতিমালা মেনে ভবন নির্মাণের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া বহুতল ভবনে দুর্ঘটনা রোধে অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি ও গণমাধ্যমে প্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, বজলুল হক হারুন, জিল্লুল হাকিম, মনোয়ার হোসেন, আনোয়ারুল আশরাফ খান, সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন ও ফরিদা খানম, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ২৯ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:১৩

রাজধানীতে আইন ভঙ্গ করে নির্মাণ করা ভবনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাজউকে বলেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
রবিবার সংসদ ভবনে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এই বৈঠকে এ কথা বলা হয়।
পুরান ঢাকার চকবাজার ও বনানীর একটি টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বিষয়টি উঠে আসলে কমিটি এ ধরনের নির্দেশনা দেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ও সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অপেক্ষায় আছি, কবে নিয়মবহির্ভূতভাবে গড়ে ওঠা ভবনগুলো ভাঙা হবে। এগুলোর মধ্যে একটাও যদি ভাঙে তবে সেটা অনুকরণীয় হবে, যা সবার জন্য শিক্ষা হয়ে থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘সিভিল এভিয়েশন বলেছে ১৫ তলার বেশি করা যাবে না। অথচ ওই এলাকায় এমনও অনেক ভবন আছে, যেগুলো সুউচ্চ। কীভাবে এগুলো হলো? এসব ভবন কোনো একটি সরকারের আমলে হয়নি। ৪৮ বছর ধরে হয়েছে। তবে আর চলতে দেওয়া যায় না।’
মোশাররফ হোসেন জানান, রাজউক বলেছে নিয়মবহির্ভূত ভবন নির্ধারণে তারা ২৪টি দল করেছে। তাদের এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন কমিটিতে জমা দিতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, কমিটি রাজউকের তৃণমূল পর্যায়ের কর্মরতদের পাশাপাশি চেয়ারম্যানসহ পদস্থ ব্যক্তিদের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নিতে বলেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত একাধিক সদস্য জানান, দীর্ঘ সময় ধরে চলা এ বৈঠকের এক পর্যায়ে বনানীতে ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি উঠে আসে।
সেখানে উপস্থিত স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি কমিটিকে অবহিত করে বলেন, বনানী যে টাওয়ারে আগুনের ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, ভবনটি নির্মাণের সময় সেই সময়কার আইন মেনেই নির্মিত হয়েছে। কিন্তু বর্হিগমনের সিঁড়ি ব্যবহারে কিছুটা বাধা-বিপত্তি ছিল। পরে কমিটির সভাপতি রাজউকের কাছে ভবনের ১৮ থেকে ২৩ তলা পর্যন্ত পাস হওয়া নকশার বিষয়টি জানতে চান। উত্তরে রাজউক চেয়ারম্যান জানান, এ বিষয়ে এখনো তদন্ত চলছে।
কমিটির সভাপতি এক পর্যায়ে বলেন, এসব অবৈধ ভবন তো একদিনে তৈরি হয়নি। রাজউক সেই সময় কি করেছে? এখন রাজউক কয়কটি ভবন ভাঙতে পারে তা দেখার অপেক্ষায় আছে কমিটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান দেশ রূপান্তরকে বলেন, কমিটিতে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কমিটি বলেছে, অবৈধ সব ভবনের বিষয়ে রাজউক যেন ব্যবস্থা গ্রহন করে। আমরা সেই লক্ষে কাজ করবো।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে বর্তমান বিল্ডিং কোড যুগোপযোগী করা, অনুমোদনহীন বহুতল ভবনের উচ্চতা বাড়ানো রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ ইমারত নীতিমালা মেনে ভবন নির্মাণের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া বহুতল ভবনে দুর্ঘটনা রোধে অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি ও গণমাধ্যমে প্রচারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, বজলুল হক হারুন, জিল্লুল হাকিম, মনোয়ার হোসেন, আনোয়ারুল আশরাফ খান, সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন ও ফরিদা খানম, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানসহ মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।