ফণীর কারণে ৩৮ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে: কৃষিমন্ত্রী
বিশেষ প্রতিনিধি | ৭ মে, ২০১৯ ২৩:০৮
ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে ৩৮ কোটি ৫৪ লাখ দুই হাজার ৫০০ টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। এছাড়া, দেশের চাহিদা মেটানোর পর উদ্বৃত্ত থাকায় সরকার ৫ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন বোরো চাল রপ্তানির চিন্তা করছে বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।
ফণীর কারণে কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানাতে মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এই তথ্য জানান।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বোরো ধান কাটা হয়ে গেলে ১৫-২০ দিন পর সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব এবার ৫-১০ লাখ টন চাল রপ্তানি করা যায় কি না। এই চাল রপ্তানি করলে কোনো অসুবিধা হবে না। আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে পারব, দেশের ভাবমূর্তিও বাড়বে। তবে চাল রপ্তানির পর কোনো কারণে সংকট দেখা দিলে আমদানিও করা যাবে বলে মত দেন কৃষিমন্ত্রী।
বর্তমানে ধান উদ্বৃত্ত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বোরো সঠিকভাবে ঘরে তুলতে পারলে আরও উদ্বৃত্ত হবে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে উদ্বৃত্ত ধান রপ্তানি করতে পারব। কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকার এ বছর ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ বোরো চাল কিনছে প্রতিকেজি ৩৬ টাকায়, যা গতবারের থেকে দুই টাকা কম।
সংবাদ সম্মেলনে ফণীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, দেশের ৩৫ জেলার ২০৯টি উপজেলার ৬৩ হাজার হেক্টর জমির বোরো, সবজি, ভুট্টা, পাট ও পান ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ হাজার ৬০৯ হেক্টর জমির বোরো ধান, তিন হাজার ৬৬০ হেক্টরের সবজি, ৬৭৭ হেক্টর জমির ভুট্টা, ২ হাজার ৩৮২ হেক্টর জমির পাট এবং ৭৩৫ হেক্টর জমির পানের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ১৩ হাজার ৬৩১ জন কৃষকের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য সরকারের হাতে এসেছে। কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রণোদনামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১ কোটি ১০ লাখ একর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়, এ থেকে ১ কোটি ৮০ লাখ টন ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। এর মধ্যে ৫৫ হাজার ৬০৯ হেক্টর জমির বোরো ধান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফণীর কারণে নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, গাইবান্ধা, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরিয়তপুর, বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এসব এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় বীজ, সার ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান রাজ্জাক।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
বিশেষ প্রতিনিধি | ৭ মে, ২০১৯ ২৩:০৮

ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে ৩৮ কোটি ৫৪ লাখ দুই হাজার ৫০০ টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। এছাড়া, দেশের চাহিদা মেটানোর পর উদ্বৃত্ত থাকায় সরকার ৫ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন বোরো চাল রপ্তানির চিন্তা করছে বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।
ফণীর কারণে কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য জানাতে মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এই তথ্য জানান।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বোরো ধান কাটা হয়ে গেলে ১৫-২০ দিন পর সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব এবার ৫-১০ লাখ টন চাল রপ্তানি করা যায় কি না। এই চাল রপ্তানি করলে কোনো অসুবিধা হবে না। আমরা আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে পারব, দেশের ভাবমূর্তিও বাড়বে। তবে চাল রপ্তানির পর কোনো কারণে সংকট দেখা দিলে আমদানিও করা যাবে বলে মত দেন কৃষিমন্ত্রী।
বর্তমানে ধান উদ্বৃত্ত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বোরো সঠিকভাবে ঘরে তুলতে পারলে আরও উদ্বৃত্ত হবে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে উদ্বৃত্ত ধান রপ্তানি করতে পারব। কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকার এ বছর ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ বোরো চাল কিনছে প্রতিকেজি ৩৬ টাকায়, যা গতবারের থেকে দুই টাকা কম।
সংবাদ সম্মেলনে ফণীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, দেশের ৩৫ জেলার ২০৯টি উপজেলার ৬৩ হাজার হেক্টর জমির বোরো, সবজি, ভুট্টা, পাট ও পান ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ হাজার ৬০৯ হেক্টর জমির বোরো ধান, তিন হাজার ৬৬০ হেক্টরের সবজি, ৬৭৭ হেক্টর জমির ভুট্টা, ২ হাজার ৩৮২ হেক্টর জমির পাট এবং ৭৩৫ হেক্টর জমির পানের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ১৩ হাজার ৬৩১ জন কৃষকের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য সরকারের হাতে এসেছে। কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি প্রণোদনামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১ কোটি ১০ লাখ একর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়, এ থেকে ১ কোটি ৮০ লাখ টন ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। এর মধ্যে ৫৫ হাজার ৬০৯ হেক্টর জমির বোরো ধান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফণীর কারণে নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, গাইবান্ধা, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরিয়তপুর, বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এসব এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় বীজ, সার ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান রাজ্জাক।