২৫০ বছর পর কারাগারের নাশতায় উন্নতি
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৬ জুন, ২০১৯ ১৭:০৯
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দীদের সকালের নতুন নাশতা তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ছবি সংগৃহীত।
ব্রিটিশ আমল থেকে কারাগারের বন্দী ও হাজতিদের জন্য সকালের নাশতা ছিল রুটি ও সামান্য গুড়। প্রায় ২৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও কারাবন্দীদের নাশতার কোনো উন্নতি হয়নি।
তবে সে অবস্থার পরিবর্তন হলো রবিবার।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল রোববার সকালে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সকালের নাশতার খাবার পরিবর্তন কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন।
তিনি নিজ হাতে বন্দীদের মধ্যে নতুন নির্ধারিত খাবার তুলে দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারাগারে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশনা মোতাবেক আজ থেকেই সারা দেশের কারাগারে খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বললেন, ‘হাজতি ও দণ্ডপ্রাপ্ত যারা আসামি রয়েছেন, তাদের সবার জন্য দুই দিন সবজি খিচুড়ি, এক দিন হালুয়া রুটি, বাকি দিনগুলোতে সবজি রুটি দেওয়া হবে। এখন আমরা একজনের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ খাবার দিচ্ছি। শুধু সকালে নয়, দুপুরে ও রাতে স্বাস্থ্যসম্মত সুষম খাবার দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, বিশেষ দিনগুলোয় আগে যে বিশেষ খাবার দেওয়া হতো, সে খাবার দেওয়া অব্যাহত রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কারাগারগুলোকে আমরা মনে করি এটা সংশোধনাগার। বন্দীদের ৩৮টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কাউকে বেকারি, কাউকে ফ্যাশন, কাউকে ফার্নিচারসহ নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যাতে করে এখান থেকে তারা বের হয়ে তারা পুরোনো পেশায় ফিরে না যায়, এ জন্য কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।’
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘এখান থেকে বন্দীরা যদি জ্ঞানলাভ নিজেদের সংশোধন করতে পারে, তবে ভবিষ্যতে তারা আর অপকর্মে জড়াবে না। বন্দীদের সঙ্গে যাতে আত্মীয়স্বজনদের যোগাযোগ থাকে, সে জন্য কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছি। বন্দীরা যাতে স্বজনদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে পারে, এ জন্য স্বজন নামে মোবাইল লিংক পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু করা হয়েছে। এ প্রকল্পটি সারা দেশে চালু করা হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কারাগারে ধারণ ক্ষমতা ৪০ হাজার ৬৬৪ জন। বর্তমানে সারা বাংলাদেশে ৮১ হাজার ১৮৩ জন কারাবন্দী রয়েছে। এদের সংখ্যা আরও কমিয়ে আনার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। কারাগারে রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন এনজিও কাজ করছে। খাদ্যের মান উন্নয়ন বিষয়ে তারা পরামর্শ দিচ্ছে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারাগারের জ্বালানি সমস্যা সমাধানের জন্য এলপি গ্যাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কারাবন্দীদের নিরাপত্তায় কারাগারে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের বেশির ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব শহিদুল ইসলাম, কারাগার মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) মোস্তফা কামাল পাশা, কারাগার উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) টিপু সুলতান, ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান, ঢাকা জেলা জেল সুপার ইকবাল কবীর চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) রামানন্দ সরকার প্রমুখ।
শেয়ার করুন
এই পাতার আরো খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৬ জুন, ২০১৯ ১৭:০৯

ব্রিটিশ আমল থেকে কারাগারের বন্দী ও হাজতিদের জন্য সকালের নাশতা ছিল রুটি ও সামান্য গুড়। প্রায় ২৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও কারাবন্দীদের নাশতার কোনো উন্নতি হয়নি।
তবে সে অবস্থার পরিবর্তন হলো রবিবার।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল রোববার সকালে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সকালের নাশতার খাবার পরিবর্তন কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন।
তিনি নিজ হাতে বন্দীদের মধ্যে নতুন নির্ধারিত খাবার তুলে দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারাগারে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশনা মোতাবেক আজ থেকেই সারা দেশের কারাগারে খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বললেন, ‘হাজতি ও দণ্ডপ্রাপ্ত যারা আসামি রয়েছেন, তাদের সবার জন্য দুই দিন সবজি খিচুড়ি, এক দিন হালুয়া রুটি, বাকি দিনগুলোতে সবজি রুটি দেওয়া হবে। এখন আমরা একজনের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ খাবার দিচ্ছি। শুধু সকালে নয়, দুপুরে ও রাতে স্বাস্থ্যসম্মত সুষম খাবার দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, বিশেষ দিনগুলোয় আগে যে বিশেষ খাবার দেওয়া হতো, সে খাবার দেওয়া অব্যাহত রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কারাগারগুলোকে আমরা মনে করি এটা সংশোধনাগার। বন্দীদের ৩৮টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কাউকে বেকারি, কাউকে ফ্যাশন, কাউকে ফার্নিচারসহ নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যাতে করে এখান থেকে তারা বের হয়ে তারা পুরোনো পেশায় ফিরে না যায়, এ জন্য কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।’
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘এখান থেকে বন্দীরা যদি জ্ঞানলাভ নিজেদের সংশোধন করতে পারে, তবে ভবিষ্যতে তারা আর অপকর্মে জড়াবে না। বন্দীদের সঙ্গে যাতে আত্মীয়স্বজনদের যোগাযোগ থাকে, সে জন্য কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছি। বন্দীরা যাতে স্বজনদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে পারে, এ জন্য স্বজন নামে মোবাইল লিংক পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু করা হয়েছে। এ প্রকল্পটি সারা দেশে চালু করা হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কারাগারে ধারণ ক্ষমতা ৪০ হাজার ৬৬৪ জন। বর্তমানে সারা বাংলাদেশে ৮১ হাজার ১৮৩ জন কারাবন্দী রয়েছে। এদের সংখ্যা আরও কমিয়ে আনার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। কারাগারে রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন এনজিও কাজ করছে। খাদ্যের মান উন্নয়ন বিষয়ে তারা পরামর্শ দিচ্ছে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারাগারের জ্বালানি সমস্যা সমাধানের জন্য এলপি গ্যাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কারাবন্দীদের নিরাপত্তায় কারাগারে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের বেশির ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব শহিদুল ইসলাম, কারাগার মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) মোস্তফা কামাল পাশা, কারাগার উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) টিপু সুলতান, ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান, ঢাকা জেলা জেল সুপার ইকবাল কবীর চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) রামানন্দ সরকার প্রমুখ।